Friday 16 August 2019

ইমাম বারবাহারী প্রণীত “শারহুস সুন্নাহ” কিতাবের নিন্দাকারীদের ব্যাপারে সত্যকথন


আলজেরিয়ার প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, ড. মুহাম্মাদ ‘আলী ফারকূস (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৭৪ হি./১৯৫৪ খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—
প্রশ্ন: “আল-বারবাহারী’র “শারহুস সুন্নাহ” বইটির ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী? যে ব্যক্তি বইটির নিন্দা করে তার ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী?”
উত্তর: “যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ’র জন্য। দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর ওপর, যাঁকে আল্লাহ প্রেরণ করেছেন বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ, এবং দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর পরিবার পরিজন, সঙ্গিবর্গ ও কেয়ামত অবধি আসতে থাকা তাঁর ভ্রাতৃমণ্ডলীর ওপর।
অতঃপর: আল-বারবাহারী হলেন আবূ মুহাম্মাদ আল-হাসান বিন ‘আলী বিন খালাফ। তিনি স্বীয় যুগে ইরাকের ‘শাইখুল হানাবিলাহ (হাম্বালীদের শাইখ)’ ছিলেন। তিনি একাধারে মুহাদ্দিস, হাফিয ও ফাক্বীহ ছিলেন। তিনি ৩২৯ হিজরী সনে মারা গেছেন। [১] তাঁর লিখনসমগ্রের মধ্যে “শারহুস সুন্নাহ” অন্যতম। যে বইটির মধ্যে তিনি ‘আক্বীদাহগত বিভিন্ন বিষয়ে—যেসব বিষয় আল্লাহ’র সত্তা, নাম ও গুণাবলির সাথে এবং ঈমানের মাসায়েলের সাথে সংশ্লিষ্ট—আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মানহাজ আলোকপাত করেছেন।
নিঃসন্দেহে যে লোক আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মানহাজ ও ‘আক্বীদাহর নিন্দা করে এবং তাদের সাথে অন্যায় আচরণ করে, সে প্রবৃত্তিপূজারী বিদ‘আতীদের ‘আক্বীদাহ পোষণকারী ব্যক্তি। কেননা “বিদ‘আতীদের নিদর্শন হলো আহলুল আসার তথা সালাফীদের আক্রমণ করা (বা তাদের নামে কুৎসা রটানো)।” [২]
প্রশ্নে উল্লিখিত কথা (অর্থাৎ, বইটির নিন্দা) একজন জাহিল অথবা হঠকারী বিদ্বেষী ছাড়া আর কারও নিকট থেকে প্রকাশিত হতে পারে না। তাই শরিয়ত নির্ধারিত নীতিমালা অনুসরণ করে এবং মন্দকাজ ও তা সংঘটনকারী ব্যক্তিদের—নিচু মর্যাদার কারণে তাদেরকে—নিয়ে মশগুল না হওয়ার মাধ্যমে সুন্নাহকে প্রকাশিত করা, সুন্নাহ সম্পর্কে মুসলিমদেরকে অবগত করা, আর বিদ‘আতকে নির্মূল করা বাঞ্ছনীয়। অতএব মুসলিমের কর্তব্য হলো সুমহান বিষয়াদি সম্পর্কে অবগত হওয়া, যা তাকে দ্বীনী মর্যাদা অর্জনে সহয়তা করবে, আর লাঞ্ছনা ও অবমাননার কারণ থেকে বেঁচে থাকা। “আর যাবতীয় মর্যাদা তো আল্লাহ’র, তাঁর রাসূলের এবং মু’মিনদের।” [৩]
বস্তুত প্রকৃত ‘ইলম আল্লাহ’র নিকট রয়েছে। সর্বোপরি যাবতীয় প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালকের জন্য। হে আল্লাহ, আমাদের নাবী মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার পরিজন, সাহাবীবর্গ ও কেয়ামত অবধি আসতে থাকা তাঁর ভ্রাতৃবর্গের ওপর আপনি দয়া ও শান্তি বর্ষণ করুন।”
·
পাদটীকা:
[১]. তাঁর জীবনী জানতে পড়ুন ইবনুল ‘ইমাদের “শাযারাতুয যাহাব” (২/৩১৯) এবং কাহহালাহ’র “মু‘জামুল মু’আল্লিফীন” (৩/২৫৩)।
[২]. এটি ইমাম আবূ হাতিম (রাহিমাহুল্লাহ)’র উক্তি, যাঁর মৃত্যুসন ২৭৭ হিজরী। দ্রষ্টব্য: ইমাম আবূ ‘উসমান আস-সাবূনী (রাহিমাহুল্লাহ), ‘আক্বীদাতুস সালাফ ওয়া আসহাবিল হাদীস; পৃষ্ঠা: ৩০৪; দারুল ‘আসিমাহ, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৯ হি./১৯৯৮ খ্রি. (২য় প্রকাশ)।
[৩]. সূরাহ মুনাফিকূন, ৮ নং আয়াত।
·
তথ্যসূত্র:
·
অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...