বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
সালাত (নামাজ) হচ্ছে মুসলমান জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। আর এ ইবাদত ঐভাবেই করতে হবে যেভাবে নবী (সাঃ) করে দেখিয়ে গেছেন। এজন্য নবী (সাঃ) বলেছেন-“তোমরা সালাত (নামাজ)পড়, যেভাবে আমাকে পড়তে দেখ”(বুখারী ও মুসলিম)।
আমাদের বাংলাভাষী মুসলমান সমাজ না জেনেই মাযহাবী দোহাই দিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সহীহ সুন্নাত পরিত্যাগ করি, যা অত্যান্ত অবাঞ্চনীয়। আমাদের দেশে অধিকাংশ মুসলমান বলে থাকেন ‘রাফয়িল ইয়াদাইন’ হানাফী মাজহাবে নেই। শাফী এবং হাম্বলী মাজহাবের।আমাদের দেশের মুসলিম সমাজের আলেমগণ ও সাধারণ মুসুল্লীগণ তাকবীরে তাহরীমা ব্যতিত উভয়হাত উত্তোলন করাকে বলে থাকেন উল্টা তাকবীর, আসলে তাকবীর কিভাবে উল্টা হয় আমার বোধগম্য নয়। আপনারা একটু চিন্তা করুন, যদি তাকবীর উল্টা হয় যেমন- আল্লাহু আকবর (আল্লাহ মহান বা আল্লাহ বড়)এর উল্টা কি হবে বা এর ভাবার্থই কি হবে ভেবে দেখুন। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদেরকে এথেকে ক্ষমা করুন। যাতে আমরা উল্টা তাকবীর না বলি বা না দেই। এখানে সঠিক কথা হচ্ছে আমরা যখন সালাতে দাঁড়াই এবং প্রথম তাকবীর ব্যতিত অন্য সব তাকবীরের সময় (হাদীসে বর্ণিত স্থানে)উভয়হাত উত্তোলন করাকে ‘রাফয়িল’ (উঠানো বা উত্তোলন) ‘ইয়াদাইন’ (হস্তদ্বয় বা উভয়হাত), বলুন এটাকে কিভাবে উল্টা তাকবীর বলে। এব্যাপারে কিছুলোক এও বলে যে, ঐ সময় (ইসলামের প্রথমযুগে) লোকেরা নাকি বগলের নিচে মূর্তি নিয়ে সালাত পড়তো, এজন্য উভয়হাত উঠাতো। নাউজুবিল্লাহ- এটা সাহাবীদের বিরুদ্ধে চরম মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই না। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে এথেকে বিরত রাখুন। আচ্ছা ধরুন, কেউ যদি বগলের নিচে মূর্তি নিয়ে সালাতে অংশগ্রহণ করে থাকে, তাহলেতো প্রথম তাকবীরেই হাত উঠানোর সময় এটা পরে যেত, কেন অন্যান্য তাকবীরের সময় হাত উঠানোর ব্যাপারে এ কথা বলেন। উচ্চস্বরে আমীন বলার ব্যাপারে বলে থাকেন, সালাতকালীন সময় নাকি কিছুলোক পিছন থেকে পলায়ন করত এজন্য উচ্চস্বরে আমীন বলত। সহীহ এবং সুনান হাদীসগ্রন্থগুলোর কোথাও পাবেন না এই ধরনের কথাবার্তা বা হাদীস রহিত হয়ে গেছে। এটাও সাহাবীদের বিরুদ্ধে চরম বেয়াদবী ছাড়া আর কি বলা যায়। আপনি উক্ত সুন্নাত পালন করতে চান না সেটা আপনার অভিরুচি, সে জন্য কেন সাহাবীদের বিরুদ্ধে এ মিথ্যাচার তা আমার ভাবতে অবাক লাগে।