Sunday 23 August 2020

কিয়ামতের দিন শাফায়াত লাভের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ আমল:

 

▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
হাদিসের আলোকে কিয়ামতের দিন শাফায়াত লাভের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ আমল তুলে ধরা হল:
◈ ১) একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহর ইবাদত করা ও তাওহিদ বাস্তবায়ন করা:
আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
« أَسْعَدُ النَّاسِ بِشَفَاعَتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ، خَالِصًا مِنْ قَلْبِهِ أَوْ نَفْسِهِ »
”কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত লাভে সেই ব্যক্তি সৌভাগ্য মণ্ডিত হবে, যে আন্তরিকভাবে বলবে: `লাইলাহা ইল্লাল্লাহ' তথা আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই।"(সহীহ বুখারী, অনুচ্ছেদ,হাদীসের প্রতি আগ্রহ,হাদীস নং ৯৯,শামেলা)
◈ ২) কুরআন পাঠ করা:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
اقْرَءُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيعًا لِأَصْحَابِهِ
"তোমরা কুরআন পাঠ কর। কেননা,কুরআন কিয়ামতের দিন তার পাঠকদের জন্য সুপারিশ কারী হবে।" (সহীহ মুসলিম)
◈ ৩) রোযা রাখা:
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই হওয়া সাল্লাম বলেছেন:
« الصِّيَامُ وَالْقُرْآنُ يَشْفَعَانِ لِلْعَبْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَقُولُ الصِّيَامُ أَىْ رَبِّ مَنَعْتُهُ الطَّعَامَ وَالشَّهَوَاتِ بِالنَّهَارِ فَشَفِّعْنِى فِيهِ. وَيَقُولُ الْقُرْآنُ مَنَعْتُهُ النَّوْمَ بِاللَّيْلِ فَشَفِّعْنِى فِيهِ. قَالَ فَيُشَفَّعَانِ
”রোযা এবং কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোযা বলবে, হে প্রভু, আমি তাকে দিনের বেলায় খাদ্য ও প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণে বাধা দিয়েছিলাম। অত:এব আপনি তার ব্যাপারে আমার শাফায়ত কবুল করুন। আর কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বাধা দিয়েছিলাম। অতএব,তার ব্যাপারে আমার শাফায়ত কবুল করুন। অত:পর তাদের শাফায়াত কবুল করা হবে।” (মুসনাদ আহমদ, মুসনাদ আব্দুল্লাহ ইবনে আমর হাদীস নং ৬৭৮৫, শামেলা, সনদ সহীহ)
◈ ৪) আযানের দুয়া পাঠ করা:
আলী ইবনু আইয়াশ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা:) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আজান শোনার পর এ দোয়া পড়বে:
«اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ،آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِى وَعَدْتَهُ، حَلَّتْ لَهُ شَفَاعَتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
"হে আল্লাহ,এ পরিপূর্ণ আহবান এবং প্রতিষ্ঠিত সালাত এর প্রতিপালক, মুহাম্মদ কে ওসিলা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান কর। প্রতিষ্ঠিত কর তাকে মাকামে মাহমুদে, যার ওয়াদা তাঁকে তুমি দিয়েছ।"
কিয়ামতের দিন তার জন্য আমার শাফায়াত অনিবার্য হয়ে যাবে।
এ হাদিসটি হামযা ইবনু আবদুল্লাহ তার পিতা থেকে,তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন) (সহীহ বুখারি (ইফা),অধ্যায়: ৫২/ তাফসীর, হাদীস নাম্বার: 4360)
◈ ৫) মদীনা মুনাওয়ারার কষ্টে ধৈর্য ধারণ করা ও সেখানে মৃত্যু বরণ করা:
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ أَبِى سَعِيدٍ مَوْلَى الْمَهْرِىِّ أَنَّهُ جَاءَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِىَّ لَيَالِىَ الْحَرَّةِ فَاسْتَشَارَهُ فِى الْجَلاَءِ مِنَ الْمَدِينَةِ وَشَكَا إِلَيْهِ أَسْعَارَهَا وَكَثْرَةَ عِيَالِهِ وَأَخْبَرَهُ أَنْ لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَى جَهْدِ الْمَدِينَةِ وَلأْوَائِهَا. فَقَالَ لَهُ وَيْحَكَ لاَ آمُرُكَ بِذَلِكَ إِنِّى سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَقُولُ « لاَ يَصْبِرُ أَحَدٌ عَلَى لأْوَائِهَا فَيَمُوتَ إِلاَّ كُنْتُ لَهُ شَفِيعًا أَوْ شَهِيدًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِذَا كَانَ مُسْلِمًا ».
ঐতিহাসিক হাররার ঘটনার সময় আবু সাঈদ মাওলা আল মাহরী আবু সাঈদ খুদরীর রা. এর নিকট এসে মদীনা থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য পরামর্শ চাইলেন। তিনি অভিযোগ করলেন, মদীনার আসবাব-পত্র ও পণ্যের দাম বেশি এবং তার সন্তান-সন্ততির সংখ্যাও প্রচুর। এও বললেন, মদীনার এই দু:খ ও কষ্টে ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা তার নেই। আবু সাঈদ খুদরী তাকে বললেন,আফসোস! তোমাকে এ পরামর্শ দিতে পারি না। কারণ, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি:
"যে ব্যক্তি মদীনার দু:খ-কষ্টে ধৈর্য ধারণ করে এবং সেখানেই মৃত্যু বরণ করে কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য শুপারিশকারী বা সাক্ষী হব যদি সে মুসলিম হয়।"
(সহীহ মুসলিম,অনুচ্ছেদ: মদীনায় বসবাস করা ও সেখানকার দু:খ কষ্টে ধৈর্য ধারণ করার ব্যাপারে উৎসাহ দান,হাদীস নং ৩৪০৫,শামেলা)
◈ ৬) অধিক পরিমাণে সেজদা দেয়া তথা নফল সালাত আদায় করা:
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِمَّا يَقُولُ لِلْخَادِمِ : أَلَكَ حَاجَةٌ ؟ قَالَ : حَتَّى كَانَ ذَاتَ يَوْمٍ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، حَاجَتِي قَالَ : وَمَا حَاجَتُكَ ؟ قَالَ : حَاجَتِي أَنْ تَشْفَعَ لِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ، قَالَ : وَمَنْ دَلَّكَ عَلَى هَذَا ؟ قَالَ : رَبِّي قَالَ : إِمَّا لاَ ، فَأَعِنِّي بِكَثْرَةِ السُّجُودِ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার খাদেমকে লক্ষ্য করে যে সব কথা বলতেন সেগুলোর মধ্যে একটি কথা হল, “তোমার কি কোন দরকার আছে?”
একদিন তিনি তার খাদেমকে এ কথাটি বললে-
খাদেম: হে আল্লাহর রাসূল,আমার একটি জিনিস দরকার।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "তোমার কী জিনিস দরকার?"
খাদেম: আপনি কিয়ামতের দিন আমার জন্য সুপারিশ করবেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "কে তোমাকে এ বিষয়টির সন্ধান দিলো?"
খাদেম: আমার প্রতিপালক।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "এটাই যদি তোমার চাওয়া হয় তবে অধিক পরিমাণ সেজদা করা তথা বেশি বেশি নফল সালাত আদায়ের মাধ্যমে আমাকে (এ ব্যাপারে) সাহায্য করো।" (মুসনাদ আহমদ,হাদীস নং ১৬৫০২,শামেলা)
এ প্রসঙ্গে আরেকটি হাদীস:
عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ كَعْبٍ الْأَسْلَمِيِّ -رضي الله عنه- قَالَ: كُنْتُ أَبِيتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ -صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- فَأَتَيْتُهُ بِوَضُوئِهِ وَحَاجَتِهِ فَقَالَ لِي: (سَلْ) فَقُلْتُ: أَسْأَلُكَ مُرَافَقَتَكَ فِي الْجَنَّةِ، قَالَ: (أَوْ غَيْرَ ذَلِكَ؟) قُلْتُ: هُوَ ذَاكَ، قَالَ: (فَأَعِنِّي عَلَى نَفْسِكَ بِكَثْرَةِ السُّجُودِ)
রাবীয়া বিন কা'ব আসলামী রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের (খেদমতের উদ্দেশ্যে) তাঁর সাথেই রাতে থাকতাম। (একদিন) আমি তার জন্য ওযুর পানি ও তার প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস নিয়ে তার নিকট হাজির হলে তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বললেন: চাও।
আমি: আমি জান্নাতে আপনার সাথে থাকতে চাই।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: এটা ছাড়া অন্য কিছু?
আমি: এটাই।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "তোমার এ বিষয়ে আমাকে সাহায্য করো অধিক পরিমাণে সেজদা করার মাধ্যমে অর্থাৎ বেশি বেশি নফল সালাত আদায় করার মাধ্যমে।
(সহীহ মুসলিম, অনুচ্ছেদ: সেজদা করার মর্যাদা ও তাতে উদ্বুদ্ধ করণ, হাদীস নং ১১২২)
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে কিয়ামতের দিন প্রিয় নবীর শাফাআত লাভে ধন্য করুন। আমিন।
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব

প্রশ্ন: আশুরা তথা মুহররমের ১০ তারিখে রোযা রাখার ফযিলত কি? এ দিন ভালো খাবারের আয়োজন করলে সারা বছর ভালো খাওয়া যায়-এ কথা কি ঠিক?


▬▬▬◄❖►▬▬▬
উত্তর:
◈◈ আশুরার রোযা রাখার ফযিলত:
বিশুদ্ধ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আশুরা তথা মুহররম মাসের ১০ তারিখে রোযা রাখলে আশা করা যায়, আল্লাহ তাআলা পেছনের এক বছরের গুনাহ মোচন করে দিবেন। যেমন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:
আবু কাতাদা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করে বলেন:
ثَلاثٌ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَرَمَضَانُ إِلَى رَمَضَانَ فَهَذَا صِيَامُ الدَّهْرِ كُلِّهِ صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ وَصِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ
“প্রতি মাসে তিন দিন এবং এক রমাযান থেকে আরেক রমাযান পর্যন্ত রোযা রাখলে সারা বছর রোযা রাখার সাওয়াব অর্জিত হয়। আরাফার দিন রোযা রাখলে আল্লাহর নিকট আশা করি যে, তিনি এর বিনিময়ে পেছনের এক বছরের এবং সামনেরে এক বছরের (মোট দু বছরের) গুনাহ মোচন করবেন। আর আশুরার দিন (মুহররম মাসের ১০ তারিখে) রোযা রাখলে আল্লাহর নিকট আশা করি যে, তিনি এর বিনিময়ে পেছনের এক বছরের গুনাহ মোচন করবেন।” (সহীহ মুসলিম হা/১১৬২)
➤ উল্লেখ্য যে, ৯ ও ১০- দু দিন রোযা রাখা অধিক উত্তম। তবে কোনো কারণে ৯ তারিখে রোযা রাখা সম্ভব না হলে ১০ ও ১১ তারিখে রাখা জায়েজ।
ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহঃ বলেন: ”মাসের শুরু চিনতে অসুবিধা হলে (৯, ১০ ও ১১ এ) তিন দিন রোযা রাখবে। যেন ৯ ও ১০ তারিখে রোযা নিশ্চিতভাবে সম্পন্ন করা যায়। (মুগনী ৩/১৭৪)
◈◈ আশুরার দিন ভালো খাবারের আয়োজন করা:
‘আশুরার দিন ভালো খাবার খেলে বা মানুষকে খাওয়ালে সারা বছর ভালো খাওয়া যাবে’ এটি একটি বাতিল ও কুসংস্কার পূর্ণ কথা। আল্লাহর দুশমন শিয়া রাফেযী সম্প্রদায়ের পক্ষ এ সব কথা আবিষ্কার করে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে আর দ্বীনের বিশুদ্ধ জ্ঞান বঞ্চিত অজ্ঞ-মূর্খ মানুষেরা এ সব কথায় বিশ্বাস করে। জাহেল বিদআতিরা শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত (কথিত শবে বরাত) সম্পর্কেও এ ধরণের কথাবার্তা বলে থাকে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ সব কথা ভিত্তিহীন ও বাতিল।
মোটকথা, ‘এক দিন ভালো খাবার খেলে সারা বছর ভালো খাবার খাওয়া যাবে’- এই জাতীয় কথা ইসলাম আদৌ সমর্থন করে না-উপলক্ষ যাই হোক না কেন।
উল্লেখ্য যে, আশুরার দিন নিজের জন্য বা পরিবারের জন্য খোলা হাতে খরচ করা বা ভালো খাবার-দাবারের আয়োজন করার ব্যাপারে কিছু হাদিস পাওয়া যায় কিন্তু সেগুলো একটিও সহিহ নয় বরং সবগুলো জঈফ বা দুর্বল।
------------------------
🌀 শাইখ আব্দুল্লাহ বিন বায রহঃ কে প্রশ্ন করা হল:
প্রশ্ন: শিয়ারা আশুরার দিন যে খাবার রান্না করে তা কি খাওয়া জায়েজ হবে? উল্লেখ্য যে, তারা বলে, এই খাবারটা আল্লাহর উদ্দেশ্যে কিন্তু খাবারের সওয়াব হুসাইন রা. এর উদ্দেশ্য।
আরেকটি কথা হল, আমি যদি তাদের খাবারটা গ্রহণ না করি, তাহলে এতে আমার সমস্যা বা বিপদ হতে পারে। কারণ আমি ইরাকে আছি। আর আপনারা জানেন, তারা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ এর সাথে কেমন আচরণ করে।
◈ উত্তরে তিনি বলেন:
"هذا منكر شنيع وبدعة منكرة ، يجب تركه ولا تجوز المشاركة فيه ، ولا يجوز الأكل مما يقدم فيه من الطعام ".
وقال : " ولا تجوز المشاركة فيه , ولا الأكل من هذه الذبائح ، ولا الشرب من هذه المشروبات ، وإن كان الذابح ذبحها لغير الله من أهل البيت أو غيرهم فذلك شرك أكبر ؛ لقول الله سبحانه : ( قُلْ إِنَّ صَلاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ - لا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ) الأنعام/162-163،
وقوله سبحانه : ( إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ ) الكوثر /1-2 "
انتهى من "فتاوى الشيخ عبد العزيز ابن باز" (8/320)
“এটি একটি মারাত্মক অন্যায় ও জঘন্য বিদআত। এটি বর্জন করা ওয়াজিব (অবশ্য কর্তব্য)। এতে অংশ গ্রহণ করা জায়েজ নাই এবং এ দিন যে খাবার পরিবেশন করা হয় তা খাওয়া জায়েজ নাই।
তিনি আরও বলেন:
“এতে অংশ গ্রহণ করা জায়েজ নাই। তাদের এ এসব জবেহ কৃত প্রাণীর গোস্ত খাওয়া বা পানীয় পান করা জায়েজ নাই। আর যদি পশুগুলো জবেহ করে গাইরুল্লাহ তথা আহলে বাইত বা অন্য কারো উদ্দেশ্যে তাহলে এটি শিরকে আকবর (বড় শিরক)। আল্লাহ তাআলা বলেন:
قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّـهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ - لَا شَرِيكَ لَهُ ۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ
“আপনি বলুন: আমার সালাত, আমার কুরবানি এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে। তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি তাই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম আনুগত্য শীল।” (সূরা আনআম: ১৬২)
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন:
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ
“অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কুরবানি করুন।” (সূরা কাওসার: ২) [ফাতাওয়া শাইখ বিন বায ৮/৩২০]
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬◄❖►▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল, সৌদি আরব

হুসাইন রা. এর শাহাদাত এবং আশুরার শোক পালন প্রসঙ্গে এক ঝলক


▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃
▐ ▌ মুহাররম মাসের দশ তারিখ আশুরার দিন হিসেবে পরিচিত। ৬১ হিজরির ১০ মুহররম তারিখে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হুসাইন রা. কে শাহাদাতের মর্যাদায় ভূষিত করেছিলেন। এই শাহাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তার মর্যাদা অনেক উন্নীত করেছেন। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাসান ও হুসাইন রা. এর ব্যাপারে এ শুভ সংবাদ প্রদান করে গেছেন যে, তারা হবেন জান্নাতের যুবকদের নেতা। আর এ কথা চির সত্য, যে যত বড় মর্যাদা লাভ করে তাকে তত বড় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করা হল, মানব জাতির মধ্যে কে সব চেয়ে বেশি পরীক্ষা ও বিপদাপদের সম্মুখীন হয়েছিলেন? তিনি বললেন, নবীগণ, তারপর আল্লাহর নেককার বান্দাগণ। তারপর অন্যদের মধ্যে যারা যে পরিমাণ ঈমান ও পরহেযগারিতার অধিকারী তারা সে পরিমাণ পরীক্ষা সম্মুখীন হয়েছেন। মানুষ তার দীনদারী অনুযায়ী পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। কেউ যদি মজবুত দ্বীনের অধিকারী হয় তবে সে বেশি পরিমাণ পরীক্ষার মুখোমুখি হয়। আর কারো দ্বীনদারীতে কমতি থাকলে তার বিপদাপদ কম আসে এবং পরীক্ষাও কম হয়। মুমিন বান্দা যতদিন পৃথিবীতে চলা ফেরা করে ততদিন তার উপর বিপদাপদ পতিত হতে থাকে এবং এভাবে তার আর কোন গুনাহ বাকী থাকে না।” (মুসনাদ আহমদ ও তিরমিযী, সনদ হাসান)
আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তাদের এই মর্যাদা পূর্বেই নির্ধারণ করে রাখা হয়েছিল। তারা তাদের পূর্বপুরুষদের মতই বিপদাপদের সম্মুখীন হয়েছেন। ইসলামের মর্যাদা নিয়েই তারা দুনিয়াতে আগমন করেছেন এবং ইসলাম প্রদত্ত মর্যাদা সহকারে তারা প্রতিপালিত হয়েছেন। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সংস্পর্শ, স্নেহ-মমতা, আদর ও ভালবাসা পেয়ে তাদের জীবন সৌভাগ্য মণ্ডিত হয়েছে। যার কারণে মুসলমানগণ তাদের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করে থাকেন।
রাসূল যখন ইহজগৎ ত্যাগ করেন তখন তাঁরা ভাল-মন্দ বুঝার বয়সে উপনীত হননি।
আল্লাহ তাআলা তাদেরকে এমন নিয়ামত দিয়েছেন যার মাধ্যমে তারা তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে গিয়ে মিলিত হতে পারে। কারণ, তাদের চেয়ে যিনি বেশি মর্যাদার অধিকারী তথা তাদের পিতা আলী রা. ও শহীদ অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছেন।
হুসাইন রা. এর নিহত হওয়ার ঘটনায় জনমানুষের মাঝে ফেতনা-ফ্যাসাদের বিস্তার ঘটে। যেমন উসমান রা. এর নিহত হওয়ার ঘটনা বিরাট বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। যার কারণে আজ পর্যন্ত মুসলিম জাতি বিভক্ত।
▐ ▌
খারেজী সম্প্রদায়ের আব্দুর রহমান বিন মুলজিম আলী রা. কে হত্যা করার পর সাহাবীদের একাংশ হাসান রা. এর হাতে বাইআত নিলেন। তার ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আমার এই ছেলে মুসলমানদের দুটি বড় বড় বিবদমান দলের মধ্যে সমাধান করবেন।” তিনি রাষ্ট্র ক্ষমতা ছেড়ে দিলেন। এর মাধ্যমে মুয়াবিয়া রা. এবং হাসান রা. এর সমর্থক দু দলের মধ্যে সমাধান হল। অতঃপর তিনি ইহজগৎ ত্যাগ করলেন। এরপর বেশ কিছু মানুষ হুসাইন রা. এর নিকট চিঠির পর চিঠি লেখা শুরু করল। তারা বলল, যদি হুসাইন রা. ক্ষমতা গ্রহণ করেন তবে তাঁকে তারা সাহায্য-সহযোগিতা করবে। অথচ তারা এ কাজের যোগ্য ছিল না।
▐ ▌
অতঃপর হুসাইন রা. যখন তাদের নিকট তার চাচাত ভাই মুসলিম ইবনে আকীল ইবনে আবু তালিবকে পাঠালেন তখন তারা তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তার দুশমনকে তাকে প্রতিহত করতে এবং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করল।
এদিকে বিচক্ষণ সাহাবীগণ এবং হুসাইন রা. এর হিতাকাঙ্খী যেমন ইবনে আব্বাস রা., ইবনে উমর রা. প্রমুখ তারা সবাই হুসাইন রা. কে ঐ সকল লোকদের ডাকে না যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিলেন। তারা বললেন: হুসাইন রা. সেখানে যাওয়াতে কোন লাভ নেই। এতে কোন কল্যাণ বয়ে আসবে না। পরে ঘটনা যা ঘটার তাই ঘটল। আল্লাহর ইচ্ছাই বাস্তবায়িত হল।
▐ ▌
হুসাইন রা. বিজ্ঞ সাহাবীগণের পরামর্শ উপেক্ষা করে যখন বের হলেন তখন দেখলেন, অবস্থা পরিবর্তন হয়ে গেছে। তিনি তাদের নিকট আবেদন করলেন, তাকে ছেড়ে দেয়া হোক তিনি যেন তিনি ফিরে যেতে পারেন অথবা কোন সীমান্ত প্রহরায় অংশ গ্রহণ করতে পারেন। অথবা তাকে যেন তার চাচাত ভাই ইয়াজিদের সাথে সাক্ষাত করতে দেয়া হয়। কিন্তু তারা তার কোন প্রস্তাব গ্রহণ করল না। বরং তাকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলে যুদ্ধ করতে বাধ্য করল। তিনি এবং তার সঙ্গীগণ যুদ্ধ করে পরিশেষে শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করলেন।
এই শাহাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ তাকে মর্যাদার সুউচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করলেন এবং তাঁর অন্যান্য পূত-পবিত্র পরিবার বর্গের সাথে মিলিত করলেন এবং তাঁর উপর যারা এহেন নিষ্ঠুর আচরণ করল তাদেরকে লাঞ্ছিত করলেন।
ইতিহাসের এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড জনমানুষের মধ্যে অত্যন্ত খারাপ প্রভাব ফেলল। মানুষ দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেল। এ নিয়ে অনেক মানুষ মুনাফেফী, মূর্খতা এবং গোমরাহির মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগল। একদল মানুষ এই আশুরার দিন কে মাতম, আহাজারি, কান্নাকাটি এবং শোক দিবস হিসেবে গ্রহণ করল। তারা সেদিন জাহেলী যামানার বিভিন্ন আচরণ প্রদর্শনী শুরু করল। তারা সে দিন, শোক র্যালি, কালো পতাকা মিছিল, নিজের শরীরে চাবুক, তলোয়ার ইত্যাদি ধারালো অস্ত্র দ্বারা দিয়ে জখম, নিজেদের গালে আঘাত, শরীরের কাপড় ছেড়া, জামার পকেট ছেড়া, চুল ছেড়া ইত্যাদি বিভিন্ন জাহেলী প্রথা অনুযায়ী শোক দিবস পালন করে থাকে। যা আজ পর্যন্ত পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। প্রতিবছর আশুরার দিন তারা ইসলামী শরীয়তের সম্পূর্ণ বিপরীত এহেন কার্যকলাপ করে থাকে। তারা মনে করে এ সব কাজ করার মাধ্যমে তারা হুসাইন রা. এর আহলে বাইত তথা পরিবার বর্গের প্রতি ভালবাসা এবং সমবেদনা প্রকাশ করে!!
▐ ▌
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রাহ. বলেন:
হুসাইন রা. এর হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে শয়তান মানুষের মধ্যে দুটি বিদআত আবিষ্কার করল। একটি হল, আশুরার দিন শোক ও কান্নাকাটি করার বিদআত। যে দিন শরীরে আঘাত করা, চিৎকার করে কান্নাকাটি করা, পিপাষার্ত থাকা, মর্সিয়া পালন ইত্যাদি কার্যক্রম করা হয়ে থাকে। শুধু তাই নয় বরং এ দিন পূর্বপুরুষদেরকে গালাগালি করা হয়, তাদের উপর অভিশাপ দেয়া হয় এবং এমন সব লোকদেরকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হয় যারা প্রকৃতপক্ষে অপরাধী নয় এবং হুসাইন রা. এর মৃত্যু সংক্রান্ত এমন সব কাহিনী বয়ান করা হয় যেগুলো অধিকাংশই মিথ্যা এবং বানোয়াট।
যারা এসবের সূচনা করেছিল তাদের উদ্দেশ্য ছিল ফেতনা-ফ্যাসাদের দরজা উন্মুক্ত করা এবং মুসলিম উম্মাহকে বিভক্ত করা। এসব কাজ তো মুসলামানদের ঐকমত্যে ওয়াজিব নয়, মুস্তাহাবও নয় বরং এতে শুধু অতীতের বিপদাপদকে কেন্দ্র করে ধৈর্যহীনতা এবং কান্নাকাটি নতুন করে করা হয়। অথচ তা আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসূল কর্তৃক শক্তভাবে নিষিদ্ধ জিনিস।”
ধৈর্য হীনতা প্রকাশ করা বা চিৎকার-কান্নাকাটি করা ইসলামী শরীয়তের পরিপন্থী। বিপদে-মসিবতে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ হল, ধৈর্যের পরিচয় দেয়া, ‘ইন্নাল্লিাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন’ পাঠ করার পাশাপাশি আল্লাহর নিকট সওয়াবের আশা করা। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন: “…আর ধৈর্য ধারণকারীদেরকে শুভ সংবাদ দাও। যারা বিপদ এলে বলে: “ইন্নাল্লিাহি ওয়া ইন্নালিল্লাইহি রাজিঊন। এদের উপরই আল্লাহর পক্ষ থেকে দয়া ও করুণা বর্ষিত হয় এবং এরাই সুপথে প্রতিষ্ঠিত।” (সূরা বাকারা: ১৫৫)
সহীহ বুখারীতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন: যে ব্যক্তি গালে চপেটাঘাত করে, পকেট ছিঁড়ে এবং জাহেলিয়াতের মত আহবান করে আমাদের দলভূক্ত নয়।” (মজমু ফাতাওয়া শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া ২৫/৩০২, ৩০৭)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে মহিলা (বিপদ-মুসিবতে) চিৎকার করে, মাথা মুণ্ডন করে, কাপড় ছিঁড়ে তার থেকে আমি সম্পর্ক মুক্ত।” (সহীহ মুসলিম)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন: বিলাপকারীনী মহিলা যদি তওবা করার আগে মৃত্যু বরণ করে তবে সে কিয়ামতের দিন আলকাতরা মাখানো পায়জামা আর ঘা বিশিষ্ট বর্ম পরিহিত অবস্থায় উঠবে।” (সহীহ মুসলিম, জানাইয অধ্যায়)
সহীহ বুখারীতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: যে মুসলিম বিপদ আপতিত হলে বলে: ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইল্লাইহি রাজিঊন, আল্লাহুম্মা আজিরনী ফী মুসীবাতী ওয়াখলুফ লাহু খাইরান মিনহা। অর্থাৎ নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য নিবেদিত এবং তার কাছেই ফিরে যাব। হে আল্লাহ, বিপদে আমাকে প্রতিদান দাও এবং এর থেকে উত্তম বিকল্প দান কর।” তাকে আল্লাহ তাকে তার বিপদে উত্তম প্রতিদান দিবেন এবং তদাপেক্ষা ভালো বিকল্প ব্যবস্থা করবেন।” (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল জানাইয)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: আমার উম্মতের মধ্যে চারটি জিনিস জাহেলিয়াতের কাজ যেগুলো তারা ছাড়বে না। বংশ আভিজাত্য দিয়ে গর্ব করা, অন্যের বংশকে দোষারোপ করা, তারকার সাহায্যে বৃষ্টি প্রার্থনা করা এবং মানুষের মৃত্যুতে বিলাপ করা। (সহীহ মুসলিম, বিতাবুল জানাইয)
সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি হুসাইন রা. এর নিহত হওয়ার ঘটনায় অন্য মুমিনদের প্রতি জুলুম করে, তাদেরকে গালাগালি করে বা তাদের উপর অভিশাপ দেয় এবং দ্বীনের দুশমন ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কাজে সাহায্য করা সহ অসংখ্য অন্যায় কাজে জড়িত হয় তাদের পরিণতি কী হতে পারে?
শয়তান গোমরাহ লোকদের জন্যে আশুরার দিনকে শোক ও মাতম প্রকাশের দিন হিসেবে সুসজ্জিত ভাবে তুলে ধরেছে। যার কারণে এ সব লোক আশুরা আসলে কান্নাকাটি, দুঃখের কাওয়ালী গাওয়া, বানোয়াট কেচ্ছা-কাহিনী বর্ণনা ইত্যাদি কার্যক্রম শুরু করে দেয়। এতে কি কিছু লাভ হয়? যা হয় তা হল, মানুষের মাঝে হিংসা-বিদ্বেষ এবং গোঁড়ামির বিষবাষ্প ছড়ানো, মুসলামানদের মাঝে ফেতনা-ফ্যাসাদ জাগ্রত করা এবং অতীত মানুষদের গালাগালি করা। এভাবে দ্বীনের মধ্যে অসংখ্য ফেতনা ছড়ানো হয় এবং মিথ্যার পরিচর্চা করা হয়।
ইসলামের ইতিহাসে এত ফেতনা-ফ্যাসাদ, দ্বীনের নামে মিথ্যাচার এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফেরদেরকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে এ শিয়া সম্প্রদায়দায়টির চেয়ে অগ্রগণ্য আর কোন মানুষ দেখা যায় নি।...
●●●●●●●●●●●●
উৎস: শাইখ আব্দুল আযীয বিন আহমদ আত তুওয়াইজিরী কর্তৃক রচিত
‘আল বিদা আল হাওলিয়া’ (মাস্টার্স এর থিসিস)
সংক্ষেপায়ন ও অনুবাদ: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...