১ম পর্বের লিংক এখানে
আগের পোস্টে নামাযের যেই জিনিসগুলো বলা বাকী ছিলোঃ
১. নামাযে সানা পড়া সুন্নত। কিন্তু তাই বলে সানা না পড়ে নামায পড়ার চিন্তা করবেন না, সুন্নতগুলো হচ্ছে নামাযের সৌন্দর্য। তাই অন্তত ছোট-বড় যেকোন সানা পড়েই নামায শুরু করবেন ইন শা’ আল্লাহ।
২. নামাযে ভুল আমলঃ
আমাদের দেশে নামায শিক্ষা দেওয়ার সময় বলা হয় – নামাযে “কিয়াম” বা দাঁড়ানো অবস্থায় পুরুষেরা দুই পায়ের মাঝে ৪ আঙ্গুল ফাকা রাখবে আর নারীরা দুই পা মিশিয়ে রাখবে। এইটা সম্পূর্ণ বানোয়াট একটা কথা, কুরআন অথবা সহীহ হাদীসের কোথাও এই কথা লিখা নাই। সঠিক হচ্ছে নারী অথবা পুরুষ নিজের শরীরের গঠন অনুযায়ী আরাম ও স্বস্তিদায়ক হয় এমন পরিমান জায়গা দুই পায়ের মাঝে ফাঁকা রাখবে। এতে সে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করবে, খুব বেশি ফাঁকা রাখবেনা আবার দুই পা এমনভাবে মিশিয়েও রাখবেনা যাতে করে দাড়াতেই কষ্ট হয়
৩. নামাযে সুরা ফাতেহা কিভাবে পড়তে হবে?
http://porokalerjonnokaaj.blogspot.com/2014/09/blog-post_193.html
____________________________________
রুকুঃ
সুরা ফাতিহা ও কিরাত পড়া শেষ করে একটু থামবেন (অন্তত এক শ্বাস নেওয়ার সমপরিমান সময়) যাতে করে কিরাত ও রুকুর মাঝে একটু বিচ্ছিন্নতা আসে। এর পরে তাকবীর বলে রুকুতে যাবেন। রুকুতে যাওয়ার আগে ও রুকু থেকে উঠার পরে “তাকবীরের তাহরীমার” মতো দুই হাত কাধ/কান পর্যন্ত তুলে ইশারা করা বা “রাউফুল ইয়াদাইন” করা সুন্নত। রুকুতে যাওয়ার আগে ও রুকু থেকে উঠার পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুর আগে পর্যন্ত রাউফুল ইয়াদাইন করতেন, এই কথা অসংখ্য সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত। যারা বলে এই বিধান রহিত হয়ে গেছে, তাদের পক্ষে সহীহ কোন হাদীসের দলীল নেই। আবু দাউদের ২-১টা হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যেই হাদীসে বলে রাউফুল ইয়াদাইন করতে হবেনা, ইমাম আবু দাউদ নিজেই সেই হাদীসের ব্যপারে মন্তব্য করেছেন যে হাদীসটা সহীনা, যয়ীফ। আর এই জয়ীফ হাদীসের বিপরীতে রাউফুল ইয়াদাইন যে করতে হবে এর পক্ষে একেবারে সহীহ হাদীস আছে অসংখ্য, বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী – এমন কোন হাদীসের কিতাব নাই যে নাই। তাই জয়ীফ হাদীসের উপর ভিত্তি করে অসংখ্য সহীহ হাদীসকে বাদ দেওয়া অত্যন্ত অনুচিত।
আর যারা বলে সাহাবীরা প্রথম যুগে হাতের নিচে মূর্তি রাখতো এইজন্য রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রাউফুল ইয়াদাইন করতেন, কিন্তু পরে করতেন না – এই লোকটা ডাহা মিথ্যুক, দাজ্জাল। সাহাবীরা মূর্তি নিয়ে নামায পড়তো – এইরকম কথা সহীহতো দূরের কথা, এমনকি কোন জাল হাদীসেও নাই! শুধুমাত্র রাউফুল ইয়াদাইনের সুন্নতকে ক্যানসেল করার জন্য কোন হিংসুক লোক সম্মানিত সাহাবীদের নামে এইরকম জঘন্য মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, আল্লাহ তাদের বিচার করুন।