Sunday 25 August 2019

বিদ‘আতীদের খণ্ডন করা আবশ্যক, আর তাদের ব্যাপারে চুপ থাকা নিষিদ্ধ


·
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর:
এটি সুবিদিত যে, বিদ‘আত একটি গর্হিত অপরাধ এবং অন্যায় কাজ। বিদ‘আতের ভয়াবহতা উপলব্ধি করার জন্য এই দুটি হাদীসই যথেষ্ট, ইনশাআল্লাহ:
ক. নাবী ﷺ বলেছেন, “(দ্বীনের মধ্যে) যাবতীয় নবআবিষ্কৃত বিষয় থেকে সাবধান! কারণ প্রত্যেক নবআবিষ্কৃত বিষয় হলো বিদ‘আত, আর প্রত্যেক বিদ‘আত হলো ভ্রষ্টতা।” [আবূ দাউদ, হা/৪৬০৭; সনদ: সাহীহ]
·
খ. নাবী ﷺ বলেছেন, “আমি তোমাদের আগে হাউযের নিকট পৌঁছব। যে আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করবে, সে হাউযের পানি পান করবে। আর যে পান করবে সে কখনো পিপাসার্ত হবে না। নিঃসন্দেহে কিছু সম্প্রদায় আমার সামনে (হাউযে) উপস্থিত হবে। আমি তাদেরকে চিনতে পারব আর তারাও আমাকে চিনতে পারবে। এরপর আমার এবং তাদের মাঝে আড়াল করে দেয়া হবে। আমি তখন বলব, এরা তো আমারই উম্মত। তখন বলা হবে, আপনি তো জানেন না আপনার পরে এরা (দ্বীনের মধ্যে) কী সব নতুন নতুন কথা ও কাজ (বিদ‘আত) সৃষ্টি করেছে। রাসূল ﷺ বলেছেন, তখন আমি বলব, আমার পরে যারা দ্বীনের ভিতর পরিবর্তন এনেছে, তারা দূর হও, দূর হও!” [সাহীহ বুখারী, হা/৬৫৮৩-৬৫৮৪]
আর মহান আল্লাহ বলেছেন, لُعِنَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ بَنِي إِسْرائيلَ عَلَى لِسَانِ دَاوُدَ وَعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ ذَلِكَ بِمَا عَصَوْا وَكَانُوا يَعْتَدُونَ كَانُوا لا يَتَنَاهَوْنَ عَنْ مُنْكَرٍ فَعَلُوهُ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ، كَانُواْ لاَ يَتَنَاهَوْنَ عَن مُّنكَرٍ فَعَلُوهُ لَبِئْسَ مَا كَانُواْ يَفْعَلُونَ “বানী ইসরাঈলের মধ্যে যারা অবিশ্বাস করেছিল, তারা দাঊদ ও মারইয়াম তনয় ‘ঈসা কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিল। কেননা তারা ছিল অবাধ্য ও সীমালঙ্ঘনকারী। তারা যেসব গর্হিত কাজ করত তা থেকে তারা একে অন্যকে নিষেধ করত না। নিশ্চয় তারা যা করত তা কতইনা নিকৃষ্ট!” [সূরাহ মাইদাহ: ৭৮-৭৯]
·
ত্বারিক্ব ইবনু শিহাব (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেছেন,
أَوَّلُ مَنْ بَدَأَ بِالْخُطْبَةِ يَوْمَ الْعِيدِ قَبْلَ الصَّلاَةِ مَرْوَانُ فَقَامَ إِلَيْهِ رَجُلٌ فَقَالَ الصَّلاَةُ قَبْلَ الْخُطْبَةِ.‏ فَقَالَ قَدْ تُرِكَ مَا هُنَالِكَ‏.‏ فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ أَمَّا هَذَا فَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يَقُولُ: مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ.
“মারওয়ান সর্বপ্রথম ‘ঈদের দিন সালাতের পূর্বে খুত্ববাহ দেয়ার (বিদ‘আতী) প্রথা প্রচলন করেন। এ সময় এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, খুত্ববাহ’র আগে সালাত (সম্পন্ন করুন)। মারওয়ান বললেন, এখন থেকে সে নিয়ম পরিত্যাগ করা হল। তখন সাহাবী আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বললেন, ওই ব্যক্তি তার কর্তব্য পালন করেছে। আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ গৰ্হিত কাজ হতে দেখলে সে যেন স্বহস্তে (শক্তি প্রয়োগে) তা পরিবর্তন করে, যদি তার সে ক্ষমতা না থাকে, তবে জবান দ্বারা তা পরিবর্তন করবে। আর যদি সে সাধ্যও না থাকে, তখন অন্তর দ্বারা করবে, তবে এটা ঈমানের সবচেয়ে দুর্বলতম অবস্থা।” [সাহীহ মুসলিম, হা/৪৯; ‘ঈমান’ অধ্যায়; পরিচ্ছেদ- ২০]

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...