প্রশ্নোত্তর

যে যে সময়ে নামায নিষিদ্ধ


দিবারাত্রে পাঁচটি সময়ে নামায পড়া নিষিদ্ধ; মহানবী (সাঃ) বলেন,
(১) “আসরের নামাযের পর সূর্য না ডোবা পর্যন্ত আর কোন নামায নেই এবং
(২) ফজরের নামাযের পর সূর্য না ওঠা পর্যন্ত আর কোন নামায নেই।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১০৪১ নং)
উক্ববা বিন আমের (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাঃ) আমাদেরকে তিন সময়ে নামায পড়তে এবং মুর্দা দাফন করতে নিষেধ করতেন;
(৩) ঠিক সূর্য উদয় হওয়ার পর থেকে একটু উঁচু না হওয়া পর্যন্ত,
(৪) সূর্য ঠিক মাথার উপর আসার পর থেকে একটু ঢলে না যাওয়া পর্যন্ত এবং
(৫) সূর্য ডোবার কাছাকাছি হওয়া থেকে ডুবে না যাওয়া পর্যন্ত। (মুসলিম, আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, মিশকাত ১০৪০ নং) যেহেতু এই সময়গুলিতে সাধারণত: কাফেররা সূর্যের পূজা করে থাকে তাই। (মুসলিম, মিশকাত ১০৪২ নং)
নামায নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে এটি হল সাধারণ নির্দেশ। কিন্তু অন্যান্য হাদীস দ্বারা কিছু সময়ে কিছু নামাযকে ব্যতিক্রম করা হয়েছে। যেমন:-
১। ফরয নামায বাকী থাকলে তা আদায় করার সুযোগ হওয়া মাত্র যে কোন সময়ে সত্বর পড়ে নেওয়া জরুরী। মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি সূর্য ডোবার পূর্বে আসরের এবং সূর্য ওঠার পূর্বে ফজরের এক রাকআত নামায পেয়ে যায়, সে (যথাসময়ে) নামায পেয়ে যায়।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৬০১নং)
তিনি আরো বলেন, “যে ব্যক্তি সূর্য ডোবার পূর্বে আসরের এক রাকআত নামায পায়, সে যেন (সূর্য ডুবে গেলেও) তার বাকী রাকআত নামায সম্পন্ন করে নেয়। আর যে ব্যক্তি সূর্য ওঠার পূর্বে ফজরের এক রাকআত নামায পায়, সে যেন (সূর্য উঠে গেলেও) তার বাকী রাকআত নামায সম্পন্ন করে নেয়।” (বুখারী, মিশকাত ৬০২নং)
২। অনুরুপ কোন ফরয নামায পড়তে ভুলে গিয়ে থাকলে তা স্মরণ হওয়া মাত্র সত্বর যে কোন সময়ে অথবা ঘুমিয়ে গিয়ে থাকলে জাগার পর উঠে সত্বর যে কোন সময়ে আদায় করা জরুরী। মহানবী (সাঃ) বলেন, “কেউ ঘুমিয়ে গেলে তা তার শৈথিল্য নয়। শৈথিল্য তো জাগ্রত অবস্থাতেই হয়ে থাকে। সুতরাং যখন কেউকোন নামায পড়তে ভুলে যাবে অথবা ঘুমিয়ে যাবে, তখন তার উচিত, তা স্মরণ (বা জাগ্রত) হওয়া মাত্র পড়ে নেওয়া। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেন, “আমাকে স্মরণ করার উদ্দেশ্যে তুমি নামায কায়েম কর।” (মুসলিম, মিশকাত ৬০৪নং, কুরআন মাজীদ ২০/১৪)

SATURDAY, 12 SEPTEMBER 2015

বেশি বেশি হজ্জ করবে; নাকি একবার হজ্জ আদায় করাই যথেষ্ট



প্রশ্ন: একাধিকবার হজ্জ করা উত্তম; নাকি একবার হজ্জ করাটাই উত্তম?
উত্তর:
আলহামদুলিল্লাহ।
ফরজ হওয়ার দিক থেকে হজ্জ জীবনে একবার করাই ফরজ। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার খোতবা দিলেন এবং বললেন: হে লোকসকল, আল্লাহ তোমাদের উপর হজ্জ ফরজ করেছেন; অতএব আদায় কর। এক ব্যক্তি বলল: হে আল্লাহর রাসূল, প্রতি বছর? তিনি চুপ করে থাকলেন। এমনকি সে লোক কথাটি তিনবার উচ্চারণ করল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: আমি যদি হ্যাঁ বলি তাহলে ফরজ হয়ে যাবে; কিন্তু তোমরা আদায় করতে পারবে না। এরপর বললেন: আমি যদি কোন বিষয় এড়িয়ে যাই তোমরা সে বিষয়ে প্রশ্ন করো না। তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতেরা তাদের অধিক প্রশ্নের কারণে এবং নবীদের সাথে মতভেদ করার কারণে ধ্বংস হয়েছে। আমি যখন তোমাদেরকে কোন নির্দেশ প্রদান করি তখন যতদূর সম্ভব সেটা বাস্তবায়ন কর; আর যা কিছু থেকে তোমাদেরকে বারণ সেটা থেকে বিরত থাক।[সহিহ মুসলিম (১৩৩৭)]
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, আকরা বিন হাবেস (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামক জিজ্ঞেস করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ, হজ্জ কি প্রতিবছর; নাকি একবার মাত্র? তিনি বললেন: একবার মাত্র। যে ব্যক্তি একাধিকবার করবে সেটা নফল।”[সুনানে আবু দাউদ (১৭২১) আলবানি হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
আর উত্তমতার প্রশ্নে মুসলমান যতবেশি হজ্জ করতে পারে সেটা উত্তম। এমনকি কেউ যদি প্রতিবছর হজ্জ করতে পারে সেটাও ভাল। বেশি বেশি হজ্জ আদায় করার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। যেমন-

হজ্জ বা উমরাতে নিয়ত উচ্চারণ



প্রশ্ন: নিয়ত উচ্চারণ করা বিদআত হলে হজ্জ ও উমরার ক্ষেত্রে নিয়ত উচ্চারণ করার গূঢ় রহস্য কি?
উত্তর:
আলহামদুলিল্লাহ।
নিয়তের স্থান হচ্ছে- কলব বা অন্তর। নিয়ত উচ্চারণ করা বিদআত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীবর্গ থেকে সাব্যস্ত হয়নি যে, তারা কোন ইবাদতের পূর্বে নিয়ত উচ্চারণ করেছেন। হজ্জ ও উমরার তালবিয়া নিয়ত নয়।
শাইখ বিন বায (রহঃ) বলেন:
নিয়ত উচ্চারণ করা বিদআত। সজোরে নিয়ত পড়া কঠিন গুনাহ। সুন্নাহ হচ্ছে- মনে মনে নিয়ত করা। কারণ আল্লাহ তাআলা গোপন ও সঙ্গোপনের সবকিছু জানেন। আল্লাহ তাআলা বলেন: “বলুনঃ তোমরা কি তোমাদের ধার্মিকতা আল্লাহকে অবহিত করছ? অথচ ভূমণ্ডলে ও নভোমণ্ডলে যা কিছু আছে সব আল্লাহ জানেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।”[সূরা হুজুরাত, আয়াত: ১৬]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, কিংবা তাঁর সাহাবীবর্গ কিংবা অনুসরণযোগ্য ইমামদের থেকে ‘নিয়ত উচ্চারণ করা’ সাব্যস্ত হয়নি। সুতরাং জানা গেল যে, এটি শরিয়তে সিদ্ধ নয়। বরং নবপ্রচলিত বিদআত। আল্লাহই তাওফিকদাতা।[ইসলামী ফতোয়াসমগ্র (২/৩১৫)]
শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন:
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নামায, তাহারাত (পবিত্রতা), রোজা কিংবা অন্য কোন ইবাদতের ক্ষেত্রে নিয়ত উচ্চারণ করা বর্ণিত হয়নি। এমনকি হজ্জ-উমরার ক্ষেত্রেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন না যে, ‘আল্লাহু্ম্মা ইন্নি উরিদু কাযা ওয়া কাযা...’ (অর্থ- হে আল্লাহ, আমি অমুক অমুক আমল করার সংকল্প করেছি...)।

ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ বিষয়াবলী



প্রশ্ন: ইহরাম অবস্থায় মুহরিমকে কোন কোন বিষয় থেকে বিরত থাকতে হবে?
উত্তর:
আলহামদুলিল্লাহ।
ইহরামের নিষিদ্ধ বিষয়াবলী: ইহরামের কারণে ব্যক্তিকে যে বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকতে হয়। যেমন:
১. মাথার চুল মুণ্ডন করা। দলিল হচ্ছে আল্লাহ তাআলার বাণী: “আর তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মাথা মুণ্ডন করবে না, যতক্ষণ না কোরবানীর পশু যথাস্থানে পৌঁছে যাবে।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৯৬] আলেমগণ মাথার চুলের সাথে শরীরের সমস্ত চুলকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অনুরূপভাবে নখ কাটা ও ছোট করাকেও এর অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
২. ইহরাম বাঁধার পর সুগন্ধি ব্যবহার করা; কাপড়ে হোক কিংবা শরীরে  হোক; খাবারদাবারে হোক কিংবা গোসলের সামগ্রীতে হোক কিংবা অন্য যে কোন কিছুতে হোক। অর্থাৎ ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার করা হারাম। দলিল হচ্ছে- যে ব্যক্তিকে একটি উট পায়ের নীচে চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছে সে ব্যক্তি সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “তাকে পানি ও বরই পাতা দিয়ে গোসল দাও। দুই কাপড়ে তাকে কাফন দাও। তার মাথা ঢাকবে না। তাকে হানুত দিবে না”। হানুত হচ্ছে- এক জাতীয় সুগন্ধির মিশ্রণ যা মৃত ব্যক্তির গায়ে লাগানো হয়।
৩. সহবাস করা: দলিল হচ্ছে আল্লাহর বাণী: “অর্থ- হজ্বের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি সেসব মাসে নিজের উপর হজ্ব অবধারিত করে নেয় সে হজ্বের সময় কোন যৌনাচার করবে না, কোন গুনাহ করবে না এবং ঝগড়া করবে না।”[সূরা বাকারা, আয়াত ২: ১৯৭]
৪. উত্তেজনাসহ স্ত্রীকে ছোঁয়া। যেহেতু এটি আল্লাহ তাআলার বাণী: فَلَا رَفَثَ (অর্থ- যৌনাচার নেই) এর অধীনে পড়বে। কারণ মুহরিম ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা কিংবা বিয়ের প্রস্তাব দেয়া জায়েয নেই। সুতরাং ছোঁয়া জায়েয না হওয়াটা আরও স্বাভাবিক।
৫. কোন শিকার হত্যা করা। দলিল আল্লাহ তাআলার বাণী: “অর্থ- হে ঈমানদারগণ, তোমরা ইহরাম অবস্থায় শিকার বধ করো না”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ৯৫] গাছ কর্তন করা মুহরিম ব্যক্তির জন্য হারাম নয়; তবে মক্কার হারামের সীমানার ভেতরের কোন গাছ হলে হারাম হবে এবং সেটি মুহরিম ব্যক্তি, মুহরিম নয় এমন ব্যক্তি- সবার জন্য হারাম। তাই আরাফার মাঠে মুহরিম ব্যক্তির জন্যেও গাছ উপড়ানো জায়েয। কারণ গাছ কর্তনের বিষয়টি হারাম এলাকার সাথে সম্পৃক্ত; ইহরামের সাথে নয়।

অন্যের খরচে হজ্জ আদায় করা



প্রশ্ন: আমি আমার ছেলের সাথে হজ্জ আদায় করেছি। হজ্জের যাবতীয় খরচ সে বহন করেছে। আমার ইচ্ছা ছিল আমার নিজ খরচে হজ্জ আদায় করব। এটা কি হজ্জের শুদ্ধতার উপর কোন প্রভাব ফেলবে না?
উত্তর:
আলহামদুলিল্লাহ।
অন্যের খরচে কারো হজ্জ আদায় করতে কোন অসুবিধা নেই। সেই অন্য ব্যক্তি তার ছেলে হোক, ভাই হোক অথবা বন্ধু হোক...। এটি হজ্জের শুদ্ধতার উপর কোন প্রভাব ফেলবে না। হজ্জ শুদ্ধ হওয়ার জন্য এমন কোন শর্ত নেই যে, ব্যক্তি তার নিজের অর্থ থেকেই খরচ করতে হবে।
স্থায়ী কমিটিকে এমন এক নারী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যার নিমন্ত্রণকারী তার হজ্জের যাবতীয় খরচ বহন করেছে।

কিভাবে আপনার হজ্জটি মকবুল হজ্জ হবে?



প্রশ্ন: আল্লাহ চাহেত কারো হজ্জ মকবুল হওয়ার জন্য একজন হাজীসাহেবের যে বিষয়গুলো জানা থাকা প্রয়োজন
উত্তর: 
আলহামদুলিল্লাহ।
হজ্জটি হজ্জে মকবুল হওয়ার জন্য একজন হাজীসাহেবের যে বিষয়গুলো জানা থাকা প্রয়োজন: হজ্জের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়ত করা। এটাই হচ্ছে- ইখলাস। এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী হজ্জ আদায় করা। এটাকে বলা হয়- মুতাবাআ (অনুসরণ)। যে কোন নেক কাজ এ দুটি র্শত পূর্ণ হওয়া ছাড়া কবুল হয় না: ইখলাস ও মুতাবাআ (রাসূলের অনুসরণ)। দলিল হচ্ছে- আল্লাহর বাণী: “তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা শিরকমুক্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম।[সূরা আল-বাইয়্যেনা, আয়াত: ৫] এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “সকল আমল নিয়্যত অনুযায়ী হয়ে থাকে। এবং প্রত্যেক ব্যক্তির যা নিয়ত করেন তিনি সেটাই পাবেন” এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করবে যার অনুমোদন আমাদের শরিয়তে নেই সেটা প্রত্যাখ্যাত।”
সুতরাং একজন হাজী সাহেব যার উপর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করবেন সেটা হচ্ছে- ইখলাস ও নবীর অনুসরণ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায়ী হজ্জকালে বলতেন: “তোমরা আমার নিকট থেকে তোমাদের হজ্জের পদ্ধতি জেনে নাও।”

SUNDAY, 16 AUGUST 2015

উমরা করার পদ্ধতি



প্রশ্ন: আমি উমরা করার পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে জানতে চাই।
উত্তর:

আলহামদুলিল্লাহ।

দুইটি শর্ত পূরণ হওয়া ছাড়া কোন ইবাদত আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না:

১. আল্লাহর জন্য মুখলিস (একনিষ্ঠ) হওয়া। অর্থাৎ সে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালকে উদ্দেশ্য করা; প্রদর্শনেচ্ছা বা প্রচারপ্রিয়তার উদ্দেশ্যে না করা অথবা অন্য কোন দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে না করা।

২. কথা ও কাজে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ বা আদর্শ জানা ছাড়া তাঁকে অনুসরণ করা সম্ভব নয়। সুতরাং যে ব্যক্তি উমরা, হজ্ব বা অন্য কোন ইবাদত পালনের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে চায় তার কর্তব্য হলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ শিখে নেয়া; যাতে তার আমল রাসূলের সুন্নাহ মোতাবেক হয়। নিম্নে আমরা সুন্নাহর আলোকে উমরা আদায়ের পদ্ধতি সংক্ষেপে তুলে ধরব। উমরার কাজ চারটি:

এক: ইহরাম

ইহরাম মানে হচ্ছে- নুসুকে তথা হজ্ব বা উমরাতে প্রবেশের নিয়ত।

কেউ যদি ইহরাম করতে চায় তখন সুন্নত হচ্ছে- সে ব্যক্তি কাপড়-চোপড় ছেড়ে ফরজ গোসলের মত গোসল করবে, মাথা বা দাঁড়িতে মিসক বা অন্য যে সুগন্ধি তার কাছে থাকে সেটা লাগাবে। সুগন্ধির আলামত যদি ইহরাম করার পরেও থেকে যায় তাতে কোন অসুবিধা নেই। যেহেতু সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইহরাম করতে চাইতেন তখন নিজের কাছে সবচেয়ে ভাল যে সুগন্ধিটা আছে সেটা ব্যবহার করতেন। ইহরাম করার পরে আমি তাঁর মাথা ও দাঁড়িতে সে সুগন্ধির ঝিলিক দেখতে পেতাম।[সহিহ বুখারি (২৭১) ও সহিহ মুসলিম (১১৯০)] নর-নারী উভয়ের ক্ষেত্রে ইহরামের জন্য গোসল করা সুন্নত। এমনকি হায়েয ও নিফাসগ্রস্ত নারীদের ক্ষেত্রেও। কেননা আসমা বিনতে উমাইস (রাঃ) নিফাসগ্রস্ত ছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে ইহরামের জন্য গোসল করার ও রক্ত প্রবাহের স্থান একটি কাপড় দিয়ে বেঁধে নিয়ে ইহরাম করার নির্দেশ দিয়েছেন।[সহিহ মুসলিম (১২০৯)]

যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করেনি তার হজ্জ কি শুদ্ধ হবে?



প্রশ্ন: আমি ১৪২২হিঃ সালে হজ্জ আদায় করেছি। তবে আমার নিকট কিছু মানুষের ঋণ আছে। কারণ হচ্ছে- আমি কিছু মানুষকে কর্জে হাসানা (ঋণ) দিয়েছিলাম; তারা আমার সাথে প্রতারণা করেছে, এখন এ অর্থ পরিশোধ করার দায় আমার উপর। আমি একজন শাইখকে জিজ্ঞেস করেছিলাম: আমি তো ঋণ পরিশোধ করিনি; এমতাবস্থায় হজ্জ করা জায়েয হবে কিনা? শাইখ বলেছেন: জায়েয হবে। কারণ আপনি জানেন যে, আপনি অচিরেই ঋণ পরিশোধ করে দিবেন, ইনশাআল্লাহ।
একই বিষয়ে আপনাদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিপরীত তথ্য পেলাম। এমতাবস্থায় আমার হজ্জ কি কবুল হয়েছে? কারণ আমি ঋণ পরিশোধ না করে হজ্জে গেছি, পাওনাদারদের কাছ থেকে অনুমতি নেইনি। যদি আমার হজ্জ মাকবুল না হয়; তাহলে আমার করণীয় কি? আমার প্রথম হজ্জ কি ফরজ এবং দ্বিতীয় হজ্জ কি সুন্নত?

 উত্তর:
আলহামদুলিল্লাহ।

কোন প্রশ্নকারীর ইবাদত কবুল হওয়া সম্পর্ক প্রশ্ন করা এবং উত্তরদাতার এ সম্পর্কে উত্তর দেয়া উচিত নয়। কারণ ইবাদত কবুল হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর নিকট। বরং প্রশ্ন করতে হবে ও উত্তর দিতে হবে ইবাদত শুদ্ধ হওয়া সম্পর্কে, ইবাদতের শর্তাবলি ও রুকনগুলো পরিপূর্ণ হওয়া সম্পর্কে।

যে ব্যক্তি হজ্জ আদায় করল কিন্তু তার জিম্মাদারিতে অন্যদের পাওনা ঋণ রয়ে গেছে তার হজ্জ সহিহ হবে; যদি হজ্জের রুকন ও শর্তগুলো পরিপূর্ণভাবে আদায় করা হয়। সম্পদের সাথে বা ঋণের সাথে হজ্জের শুদ্ধতার কোন সম্পর্ক নেই। তবে যে ব্যক্তির ঋণ আছে সে ব্যক্তির জন্য হজ্জ না করা উত্তম। যে অর্থ সে হজ্জ আদায়ে খরচ করবে সে অর্থ ঋণ আদায়ে খরচ করা উত্তম এবং শরয়ি বিবেচনায় সে সামর্থ্যবান নয়। এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির আলেমগণের ফতোয়া নিম্নরূপ:

WEDNESDAY, 15 JULY 2015

ঈদের বিধিবিধান



بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وعلى آله وصحبه أجمعين. أما بعد:
ভূমিকা: অবারিত আনন্দের বার্তা নিয়ে যখন ঈদের এক ফাঁলি চাঁদ পশ্চিম দিগন্তে ভেসে উঠে তখন সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ে বয়ে যায় আনন্দের বন্যা। শিশু-কিশোরগণ আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে প্রজাবতীর মত ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়। এই ঈদ আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বড় নে’য়ামত। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,
প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় আগমন করে দেখলেন, মদীনাবাসী খেলা-ধূলার মধ্য দিয়ে দুটি দিবস উদযাপন করে থাকে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ দুটি দিবস কি? তারা বলল, এ দুটি দিবস জাহেলী যুগে আমরা খেলা-ধুলার মধ্যদিয়ে উদযাপন করতাম। তিনি বললেন, “আল্লাহ তোমাদের জন্য এর থেকে উত্তম দুটি দিবসের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, একটি হল, ঈদুল আযহা এবং অপরটি হল, ঈদুল ফিতর।” (সুনান আবূদাঊদ, হাদীস নং ৯৫৯ সনদ-সহীহ, আলবানী রহঃ)
ইসলামী দিক নির্দেশনা অনুযায়ী যদি আমরা ঈদ ঊদ্যাপন করি তবে একদিকে যেমন ঈদের অনাবিল আনন্দে ভরে উঠবে আমাদের পার্থিব জীবন অন্যদিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে ধন্য হবে আমাদের পরকালিন জিন্দেগী।

ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর ছাড়া অন্য কোন ঈদ-উৎসব পালন করা:
উপরোল্লিখিত হাদীস থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, ইসলামী শরীয়তে ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর ব্যতিরেকে তৃতীয় কোন ঈদ বা উৎসব পালন করার সুযোগ নেই। অথচ আমাদের মুসলিম সমাজে বর্তমানে কত ধরণের ঈদ ও ঊৎসব জমজমাট ভাবে পালন করা হচ্ছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। যেমন, ঈদে মিলাদুন নবী বা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্ম উৎসব। বরং এটাকে ‘সকল ঈদের শ্রেষ্ঠ ঈদ’ বলে জোরেশোরে প্রচার করা হচ্ছে। যা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাদীসের সুস্পষ্ট বিরোধী। অনুরূপভাবে তথাকথিত পহেলা বৈশাখ, খৃষ্ট নববর্ষ, এপ্রিল ফুল, বড় দিন (Xmas Day), ইত্যাদি অগণিত উৎসব আমদের মুসলানগণ অবলিলায় পালন করে যাচ্ছে কিন্তু একবারও চিন্তা করে দেখে না যে, আসলে এগুলোর উৎস কোথায়? এসব মূলত: হিন্দু ও খৃষ্টানদের থেকে আমদানিকৃত সংষ্কৃতি যার সাথে মুসলমানের কোন সম্পর্ক থাকতে পারে না। রাসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলে গেছেন,
“যে ব্যক্তি অন্য কোন জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করল সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।” (আবূদাউদ হাদীস নং ৩৫১২, সনদ-সহীহ, আলবানী)
ইসলাম স্বীকৃত দুটি ঈদ ছাড়া অন্য কোন ঈদ বা উৎসব পালন করা, তাতে অংশগ্রহণ করা বা সে উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করা মুসলমানদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে ইসলামের সরল-সোজা, সুন্দর ও আলোকময় পথ ধরে চলার তাওফীক দান করুন। আমীন!

ঈদের প্রকৃত অর্থ কি:
শুধু দামী পোশাক, রঙ্গিন জামা, হরেক রকম সুস্বাদু খাবার আর নানা ধরণের আনন্দ-উৎসবের নাম ঈদ নয়। ঈদের উদ্দেশ্য কি তা আল্লাহ তা’আলা নিন্মোক্ত আয়াতের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন:
﴿وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ﴾
”আর যেন তোমরা নির্ধারিত সংখ্যা পূরণ করতে পার এবং তোমাদেরকে যে সুপথ দেখিয়েছেন, তার জন্যে তোমরা আল্লাহর মমত্ব প্রকাশ কর এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা হও ।” (সূরা বাকারাঃ ১৮৫)
এই আয়াত থেকে প্রমাণিত হচ্ছে, ঈদের উদ্দেশ্য হল দুটি:
১) আল্লাহর বড়ত্ব মমত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা।
২) আল্লাহ যে নেয়ামত দান করেছেন তার জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা।

FRIDAY, 3 JULY 2015

কুরআনের সূরা/আয়াত এর ওয়ালম্যাট ঘরে ঝুলিয়ে রাখা যাবে কি



প্রশ্ন : আমাকে একজন “সুরা ইয়াসিন” লেখা একটা ওয়ালম্যাট গিফট দিসে। আমি কি ওই ওয়ালম্যাট টা আমার ঘরে টাঙ্গিয়ে রাখতে পারবো? কুরআন ও সহিহ হাদীসের আলোকে জানাবেন কি প্লিজ।

উত্তর : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য ।

কুরআনের কোন আয়াত বা সূরা লিখে ঘরের বা মসজিদের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা বৈধ নয়। ঘরের বা মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি অথবা অন্য যে কোন উদ্দেশ্যেই হোক। কারণ রাসূল (সাঃ), সাহাবী কিংবা তাবেয়ীদের যুগে মসজিদের দেয়ালে বা ঘরের দেয়ালে কুরআনের আয়াত ঝুলিয়ে রাখা হতনা। ঘরের আসবাব-পত্রের সাথে কিংবা দেয়ালে কুরআনের আয়াত লিখে ঝুলিয়ে রাখলে অন্যান্য জিনিষের মতই কুরআনের আয়াতের প্রতি অসম্মান প্রদর্শেনের সম্ভাবনা রয়েছে। শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল উছাইমীন এই কাজকে বিদআত বলেছেন।

বরকতের আশায় ঝুলিয়ে রাখার যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা সহীহ হাদীছে কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে বরকত হাসিলের কথা এসেছে। রাসূল (সাঃ) বলেনঃ যে ঘরে সূরা বাকারা পাঠ করা হয়, সে ঘর থেকে শয়তান পালিয়ে যায়। (সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং-২১২)

কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য হচ্ছে তা তিলাওয়াত করা হবে, তা নিয়ে গবেষণা করা হবে এবং তার বিধানগুলোর অনুসরণ করা হবে। ঝুলিয়ে রেখে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নয়।

তবে যে স্থানে কুরআনের আয়াতের প্রতি অমর্যাদা প্রদর্শনের সম্ভাবনা নেই, সেখানে স্মরণ রাখার জন্য, শিক্ষার জন্য এবং উপদেশ গ্রহণের জন্য কুরআনের আয়াত বা হাদীছ লিখে রাখলে সে ব্যাপারে আলেমদের দু’টি মত পাওয়া যায়। কেউ কেউ এটিকেও অপছন্দ করেছেন। কিন্তু লাজনায়ে দায়েমা (সৌদি আরবের ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি) এটিকে জায়েয বলেছেন।

প্রশ্নকারী যেহেতু সূরা ইয়াসীন এর কথা উল্লেখ করেছেন, তাই এখানে আরেকটি কথা বলে রাখা দরকার। তা হচ্ছে, সূরা ইয়াসীনের ফজীলতে যত হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তার কোনটিই সহীহ নয়।

আল্লাহই ভাল জানেন।

আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালিহ আল উসাইমীন (রাহ:) এর ফতোয়া:

THURSDAY, 11 JUNE 2015

চাঁদ দেখে রোযা রাখা ও ঈদ করা নিয়ে শ্রেষ্ট দুইজন আলেমের ফাতওয়াঃ



আল্লামাহ বিন বাজ রাহিমাহুল্লাহর ফাতওয়া...

নিজ দেশের লোকদের সাথে রোযা রাখবেনা চাঁদ দেখা যে কোনো দেশের সাথে?
প্রশ্নঃ যদি কোনো ইসলামি রাষ্ট্রে চাঁদ দেখা যায়,আর  আমি যে দেশে বসবাস করিসেখানে শাবান ও রমজান মাস ত্রিশ দিনে পুরো করা হয়তাহলে আমি কী করবরমজান প্রসঙ্গে মানুষের মতপার্থক্যের কারণ কী?

উত্তরঃ আলহামদুলিল্লাহআপনার জন্য রোযা আপনার দেশের লোকদের সাথে থাকাই আবশ্যক। তারা যদি রোযা রাখে তাদের সাথে রোযা রাখবেনআর তারা যদি রোযা না রাখে তবে আপনিও তাদের সাথে রোযা রাখবেন না। কারণ,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

«الصَّوْمُ يَوْمَ تَصُومُونَ، وَالفِطْرُ يَوْمَ تُفْطِرُونَ، وَالأَضْحَىيَوْمَ تُضَحُّونَ»

‘‘তোমরা যেদিন রোযা রাখবে সেদিনই রোযা,যেদিন ইফতার করবে সেদিনই ইফতারআর তোমরা যেদিন কোরবানি করবে সেদিনই কোরবানি।’’ [তিরমিযী : ৬৯৭]

রমজান বিষয়ক একগুচ্ছ ফাইল

নামায নষ্ট করলে সিয়াম কবুল হয় না

সেহেরির সময়ে পড়তে হয় ইসলামী শরিয়তে এমন কোন দুআ আছে কী?

যে ব্যক্তি শিংগা লাগায় এবং যাকে শিংগা লাগানো হয় উভয়ের সাওমই বিনষ্ট

দাঊদ (আ:) এর সাওম

রমজান মাসে একজন মুসলিমের জন্য প্রস্তাবিত রুটিন।

ছিয়াম সম্পর্কিত অতি গুরুত্বপূর্ন ফতোওয়া (১ম-পর্ব)

ছিয়াম সম্পর্কিত অতি গুরুত্বপূর্ন ফতোওয়া (২য়-পর্ব)

প্রসংগঃ “তারাবীহ” এর সালাত....

তারাবীহর রাকায়াত সংখ্যা ৮ না ২০?

কাজকে ‘না’ বলুন; রোযাকে নয়

প্রত্যেক মাসে তিনটি করে রোযা রাখা মুস্তাহাব

কোনো এক স্থানের চাঁদ দেখা সারা বিশ্বের জন্য প্রযোজ্য কি?

মুনাজাতের জন্য জরুরী আরবী দুয়া সমূহ


কেউ যদি তার যিম্মায় থাকা (ছুটে যাওয়া) সালাতের ও ফরয সাওমের সংখ্যা মনে করতে না পারে, তবে সে কী করবে?

রমাদান মাসের ৩০ আমল

মাহে রমযান : তাৎপর্য ও কর্তব্য

সিয়াম, তারাবীহ ও যাকাত বিষয়ে কয়েকটি অধ্যায়

চাঁদ উঠার বিভিন্ন উদয়স্থল সংক্রান্ত মতভেদ কি বিবেচনাযোগ্য? এ ব্যাপারে অমুসলিম দেশে মুসলিম কমিউনিটির অবস্থান

রমজান বিষয়ক ফতোয়া

মুমিনদের জন্য মাহে রমজানের হাদিয়া

নিজ দেশের লোকদের সাথে রোযা রাখবে, না চাঁদ দেখা যে কোনো দেশের সাথে?

প্রশ্নোত্তরে রমযান ও ঈদ (২য় পর্ব)

প্রশ্নোত্তরে রমযান ও ঈদ (১ম পর্ব)

প্রশ্নোত্তরে সিয়াম (২য় পর্ব)

প্রশ্নোত্তরে সিয়াম (১ম পর্ব)

সুস্বাগত মাহে রমযান

রোজাদার বোনদের প্রতি...

রোজার আদব

তারাবীহ্‌ সালাতের রাকা‘আত : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ

ফতোওয়া সিয়াম: রোযা সম্পর্কে অতি গুরুত্বপূর্ণ ৫৬টি প্রশ্নোত্তর

তারবীহর রাকায়াত সংখ্যা ৮ না ২০?

তারাবীহর নামাযের রাকআত সংখ্যা

কুরআনের আলোকে যাকাতের বিধান

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদিস : শিক্ষা ও মাসায়েল (৪র্থ পর্ব)

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদিস : শিক্ষা ও মাসায়েল (৩য় পর্ব)

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদিস : শিক্ষা ও মাসায়েল (২য় পর্ব)

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদিস : শিক্ষা ও মাসায়েল (১ম পর্ব)

মাহে রামাযান: অসংখ্য কল্যাণের হাতছানি

সাধারণ ভুল যেগুলো রমজানের সময় আমরা করে থাকি

সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল (২য় পর্ব)

সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল (১ম পর্ব)

রমযান মাসে যদি সব শয়তান শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকে তাহলে এ মাসে মানুষ নিয়মিতভাবে পাপ করতে থাকে কীভাবে?

রাসূল যেভাবে রমজান যাপন করেছেন (২য় পর্ব)

রাসূল যেভাবে রমজান যাপন করেছেন (১ম পর্ব)

যাকাত ও যাকাতের উপকারিতা প্রসঙ্গে

ফতোওয়া যাকাত: যাকাত বিষয়ক অতি গুরুত্বপূর্ণ ৩৭টি প্রশ্নোত্তর

জাকাতের গুরুত্ব, ফজিলত ও ব্যয়ের খাতসমূহ

রামাযানের ভুল-ত্রুটি

মাহে রামাজানের বিশটি স্পেশাল আমল

সিয়াম বিষয়ক নির্বাচিত ফাতওয়া (৩য় পর্ব)

সিয়াম বিষয়ক নির্বাচিত ফাতওয়া (২য় পর্ব)

সিয়াম বিষয়ক নির্বাচিত ফাতওয়া (১ম পর্ব)

সদকাতুল ফিতর

বইঃ সালাতুত তারাবীহ - ফ্রি ডাউনলোড

বইঃ রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল - ফ্রি ডাউনলোড

রামাযানের শেষ দশক এবং হাজার মাসের চেয়েও সেরা একটি রাত

বইঃ তারাবীহ ও ই’তিকাফ - ফ্রি ডাউনলোড

বইঃ সিয়াম - রাসূলুল্লাহ্‌র রোজা (ফ্রি ডাউনলোড)

যাকাতুল ফিতর বা ফিতরা

‘লাইলাতুল্ কদর’ এ কি কি ইবাদত করবেন?

ফিতরা প্রদানরে সময়সীমা ও বণ্টন পদ্ধতি

রমজান ও পরবর্তী সময়ে করণীয়

ঈদের বিধিবিধান

রমযান মাসের সমাপ্তি

লাইলাতুল কদর: রমাদানের উপহার

আমল কবুলের কতিপয় উপায় ও রমযানের পরে করণীয়

ঈদুল ফিতর ও যাকাতুল ফিতর এর সংক্ষিপ্ত বিধি বিধান

কুরআন ও সুন্নাহ্‌র আলোকে রাতের সালাত

তারাবীহ -এর সালাতের রাক্‌‘আত সংখ্যা

রমযানে কিয়ামুল লাইলের বিধান

রোযার ফযীলত ও শিক্ষা: আমাদের করণীয়

SUNDAY, 7 JUNE 2015

মাহে রমযান : তাৎপর্য ও কর্তব্য



রমযানে সিয়াম সাধনা : কর্তব্য ও তাৎপর্য

সাওম ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ আরবী এ সাওম শব্দটি আমাদের দেশে রোযা নামে সমধিক পরিচিত, যা মূলত ফারসী শব্দ। সাওম অর্থ বিরত থাকা যেহেতু পানাহার ও যৌন সম্পর্ক সাধারণত প্রবৃত্তির লিপ্সা ও খাহেশাতের লালসাকে উদ্দীপ্ত করে তাই ইসলাম এ সাওমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে থাকে কিন্তু সাওমের মূল লক্ষ্য ও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল লাভ করতে হলেঅবশ্যই বৈধ পানাহার ও স্ত্রীর সঙ্গে যৌনক্রিয়া থেকে বিরত থাকার সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ্য সব ধরনের পাপাচার ও অপ্রকাশ্য মন্দাচার থেকেও অন্তর ও দেহ তথা সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে রক্ষা করতে হবে এদিকে ইঙ্গিত করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, (হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু হতে)
«مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ وَالْجَهْلَ فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ».
যে ব্যক্তি সাওম পালন করতে গিয়ে মিথ্যা কথা ও মিথ্যা কথা মত কাজ করা এবং মূর্খতা (সুলভ আচরণ) থেকে বিরত থাকলো না, তার খাদ্য ও পানীয় ত্যাগে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই [বুখারী : ১৯০৩; আবূ দাউদ : ২৩৬৪]

জীবন ধারণের স্বার্থেই পানাহার সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা সম্ভব নয়। তাই চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে মাত্র কয়েক ঘন্টা সাওম পালনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আবার শিশুদেরকে এর আওতা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। অক্ষম-বৃদ্ধদের জন্য ফিদয়ার অবকাশ রাখা হয়েছে। মুসাফিরঅসুস্থ ও সন্তান প্রসবস্তন্যদান ও ঋতুকালে নারীদের প্রতি লক্ষ্য রেখে উযর দূর হওয়ার পর কাযার মত বিকল্প রাখা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
﴿ أَيَّامٗا مَّعۡدُودَٰتٖۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۚ وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدۡيَةٞ طَعَامُ مِسۡكِينٖۖ فَمَن تَطَوَّعَ خَيۡرٗا فَهُوَ خَيۡرٞ لَّهُۥۚ وَأَن تَصُومُواْ خَيۡرٞ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ١٨٤ شَهۡرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلۡقُرۡءَانُ هُدٗى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَٰتٖ مِّنَ ٱلۡهُدَىٰ وَٱلۡفُرۡقَانِۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهۡرَ فَلۡيَصُمۡهُۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۗ يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلۡيُسۡرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلۡعُسۡرَ وَلِتُكۡمِلُواْ ٱلۡعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ١٨٥ ﴾ [البقرة: ١٨٤،  ١٨٥] 
নির্দিষ্ট কয়েক দিন তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ হবে, কিংবা সফরে থাকবে, তাহলে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদয়া- একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা অতএব যে স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে আর সিয়াম পালন তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জান রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৮৪-১৮৫}

চাঁদ উঠার বিভিন্ন উদয়স্থল সংক্রান্ত মতভেদ কি বিবেচনাযোগ্য? এ ব্যাপারে অমুসলিম দেশে মুসলিম কমিউনিটির অবস্থান


ফাত্‌ওয়া নং -1248


চাঁদ উঠার বিভিন্ন উদয়স্থল সংক্রান্ত মতভেদ কি বিবেচনাযোগ্য? এ ব্যাপারে অমুসলিম দেশে মুসলিম কমিউনিটির অবস্থান

প্রশ্ন: আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার কিছু মুসলিম ছাত্র। প্রতি বছর রমযান মাসের শুরুতে আমাদের একটি সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় যা মুসলিমদের তিনটি দলে ভাগ করে দেয় :
১. এক দল, তারা যে দেশে বাস করে সে দেশের চাঁদ দেখে সাওম রাখে।
২. এক দল, যারা সউদি আরবে সিয়াম শুরু হলে সাওম পালন করে।
৩. এক দল, যারা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মুসলিম ছাত্র ইউনিয়নের খবর (নতুন চাঁদ দেখার) পৌঁছলে সাওম রাখে যারা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে চাঁদ দেখার দায়িত্ব পালন করে। তারা (সেই মুসলিম ছাত্র ইউনিয়ন) দেশের কোন স্থানে চাঁদ দেখলে বিভিন্ন সেন্টারসমূহে তা দেখার খবর পৌঁছে দেয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত মুসলিমরা একই দিনে সাওম পালন করে যদিও এই শহরগুলো অনেক দূরে দূরে অবস্থিত।
এক্ষেত্রে সিয়াম পালন, চাঁদ দেখা ও এ সংক্রান্ত খবরের ব্যাপারে কারা বেশি অনুসরণ যোগ্য?
আমাদের এ ব্যাপারে দয়া করে ফাত্‌ওয়া দিন, আল্লাহ আপনাদেরকে পুরস্কৃত করুন, সাওয়াব দিন।

উত্তর : সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

প্রথমত :
নতুন চাঁদের ভিন্ন ভিন্ন উদয়স্থল থাকার ব্যাপারটি ইন্দ্রিয় ও ‘আক্বল (বুদ্ধি) দ্বারা অবধারিতভাবে জানা বিষয়গুলোর একটি। যে ব্যাপারে ‘আলিমগণের কেউ দ্বিমত পোষণ করেন নি। তবে মুসলিমদের ‘আলিমগণের মাঝে ভিন্ন ভিন্ন উদয়স্থল বিবেচনাযোগ্য কিনা তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে।

রমজান বিষয়ক ফতোয়া



রমজান বিষয়ক ফতোয়া

ফতোয়া (১)
সিয়াম কেন ফরজ হল ?

প্রশ্ন : কেন আল্লাহ তাআলা সিয়ামের বিধান দিলেন? সিয়াম ফরজ করার হিকমত বা উদ্দেশ্য কি?
জওয়াব : সিয়াম বা রোজা ফরজ করার বিভিন্ন কারণ রয়েছে, তার মধ্যে কয়েকটি নিম্নে আলোচনা করা হল:
(১) তাকওয়া প্রতিষ্ঠা :
সিয়াম তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি অর্জনে সাহায্য করে। প্রবৃত্তগত চাহিদা পূরণ ও অশ্লীলতা থেকে দুরে রাখে। আমরা দেখতেই পাচ্ছি সিয়াম পেট ও লজ্জাস্থানের চাহিদাকে দমন করে। আর এ দুটো জিনিস মানুষকে সকল প্রকার খারাপ কাজের দিকে নিয়ে যায়। এ দুটো জিনিষের চাহিদা পূরণ করতে যেয়ে হারাম ও অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। অতএব এ দুটো জিনিষ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে তাকওয়া অর্জন করা যাবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন :
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ﴿سورة البقرة:﴾
" হে ঈমানদারগণ তোমাদের জন্য সিয়াম ফরজ করা হল যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পারো।" সুরা বাকরা ১৮৩
(২) আত্মার পরিশুদ্ধতা ও প্রশিক্ষণ :
সিয়ামের দ্বারা ধৈর্য- ছবরের জন্য আত্মার প্রশিক্ষণ লাভ হয়। এর মাধ্যমে সিয়াম পালনকারী আল্লাহর সকল আদেশ পালন ও তার নিষেধাবলী থেকে বিরত থাকার শক্তি অর্জন করেন।
(৩) আল্লাহ ভীতিকে দৃঢ় করা:
সিয়াম এমন একটা ইবাদত যা মানুষ না করেও প্রকাশ করতে পারে যে সে সিয়াম পালনকারী। তাই সিয়াম সত্যিকার সততা, আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ দাসত্ব, আল্লাহকে মহব্বতের চরম পরাকাষ্ঠার প্রমাণ বহন করে। সিয়াম পালনকারী একমাত্র আল্লাহর কাছেই তার প্রতিদানের আশা করে। তার ভয়েই সে সিয়াম পালন করে। তাইতো নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসে কুদসীতে বলেছেন : "আল্লাহ তা আলা বলেন :
كل عمل ابن آدم يضاعف، الحسنة بعشرة أمثالها إلى سبعمائة ضعف إلى ما شاء عز وجل، إلا الصوم، فإنه لي وأنا أجزي به، يدع شهوته وطعامه من أجلي.
প্রত্যেক মানব সন্তানের নেক আমলের প্রতিদান দশগুণ থেকে বাড়িয়ে সাত শত গুন বা তার অধিক পরিমাণে দেয়া হবে কিন্তু সাওমের ব্যাপারটা অন্য রকম। কারণ, তা আমারই জন্য, তার প্রতিদান আমি নিজে। কেননা সিয়াম পালনকারী আমারই জন্য তার খাওয়া-দাওয়া ও যৌন চাহিদা পরিত্যাগ করে।"

নিজ দেশের লোকদের সাথে রোযা রাখবে, না চাঁদ দেখা যে কোনো দেশের সাথে?



নিজ দেশের লোকদের সাথে রোযা রাখবে, না চাঁদ দেখা যে কোনো দেশের সাথে?

প্রশ্ন: যদি কোনো ইসলামি রাষ্ট্রে চাঁদ দেখা যায়, আর  আমি যে দেশে বসবাস করি, সেখানে শাবান ও রমজান মাস ত্রিশ দিনে পুরো করা হয়, তাহলে আমি কী করব? রমজান প্রসঙ্গে মানুষের মতপার্থক্যের কারণ কী?

জবাব: আলহামদুলিল্লাহ, আপনার জন্য রোযা আপনার দেশের লোকদের সাথে থাকাই আবশ্যক। তারা যদি রোযা রাখে তাদের সাথে রোযা রাখবেন; আর তারা যদি রোযা না রাখে তবে আপনিও তাদের সাথে রোযা রাখবেন না। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
«الصَّوْمُ يَوْمَ تَصُومُونَ، وَالفِطْرُ يَوْمَ تُفْطِرُونَ، وَالأَضْحَى يَوْمَ تُضَحُّونَ»
‘‘তোমরা যেদিন রোযা রাখবে সেদিনই রোযা, যেদিন ইফতার করবে সেদিনই ইফতার, আর তোমরা যেদিন কোরবানি করবে সেদিনই কোরবানি।’’ [তিরমিযী : ৬৯৭]

দ্বিতীয়ত. ইখতিলাফ ভাল জিনিস নয়, তাই আপনার দেশের সাথে থাকাই আপনার জন্য জরুরি ও সঙ্গত। আপনার দেশের মুসলিমগণ যখন রোযা করবেন না, আপনি তাদের সাথে রোযা না করবেন। আর যখন তারা রোযা রাখবে আপনি তাদের সাথে রোযা রাখবেন।
আর মত পার্থক্যের কারণ হচ্ছে, কেউ চাঁদ দেখে, কেউ চাঁদ দেখে না। অতপর যারা চাঁদ দেখে, অন্যরা তাদের উপর ভরসা করে, তাদেরকে বিশ্বাস এবং তাদের দেখা অনুযায়ী আমল করে। আবার কখনো তাদের বিশ্বাস কিংবা তাদের দেখা অনুযায়ী আমল করা হয় না, ফলে ইখতিলাফ সংঘটিত হয়। কোনো দেশ চাঁদ দেখে এবং চাঁদ দেখার ফয়সালা দেয়, ফলে দেশবাসী রোযা রাখে অথবা ইফতার করে। আর অন্য দেশ এ দেখার উপর ভরসা কিংবা বিশ্বাস করে না- ভৌগলিক কিংবা রাজনৈতিক ইত্যাদি কারণে।

সকল মুসলিমের জন্য আবশ্যিক হল চাঁদ দেখেই রোযা রাখবে আবার চাঁদ দেখে রোযা ভাঙ্গবে করবে। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস ব্যাপক :
«إِذَا رَأَيْتُمُ الْهِلَالَ فَصُومُوا، وَإِذَا رَأَيْتُمُوهُ فَأَفْطِرُوا، فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَصُومُوا ثَلَاثِينَ يَوْمًا»
‘‘যখন তোমরা চাঁদ দেখবে রোযা রাখবে, আবার যখন চাঁদ দেখবে ইফতার করবে। আর আকাশ যদি মেঘাচ্ছন্ন হয়, তবে সংখ্যা ত্রিশ দিন পূরণ করবে।’’ [মুসলিম : ১০৮১]
যদি সকলে চাঁদ দেখা বিশ্বাস করে এবং মনে করে যে, বাস্তবিকই তা দেখা গেছে, তবে সে হিসেবে রোযা রাখা ও ইফতার করা ওয়াজিব। হ্যাঁ, যদি বাস্তবতার ব্যাপারে মত পার্থক্যের সৃষ্টি হয়, আর কেউ কাউকে বিশ্বাস না করে, তখন আপনার জন্য সঙ্গত হবে আপনার দেশের মুসলমানদের সাথে রোযা রাখা এবং তাদের সাথে ইফতার করা। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
«الصَّوْمُ يَوْمَ تَصُومُونَ، وَالفِطْرُ يَوْمَ تُفْطِرُونَ، وَالأَضْحَى يَوْمَ تُضَحُّونَ»
‘‘তোমরা যেদিন রোযা রাখবে সেদিনই রোযা, যেদিন ইফতার করবে সেদিনই ইফতার, আর তোমরা যেদিন কোরবানি করবে সেদিনই কোরবানি।’’ [তিরমিযী : ৬৯৭]


উত্তর:
মানুষের দোষত্রুটি নিয়ে সমালোচনা করা এবং অন্যকে সংশোধন করার পূর্বে নিজের দোষত্রুটি সংশোধন করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অথচ অধিকাংশ মানুষ নিজে ভ্রান্তির মধ্যে ডুবে থাকলেও অন্যকে সংশোধন করাতে বেশি উদগ্রীব! এটি কোনো ঈমানদারের নিকট কাম্য নয়।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنسَوْنَ أَنفُسَكُمْ وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ ۚ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
"তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও এবং নিজেরা নিজেদেরকে ভুলে যাও, অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর? তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না?" (সূরা বাকারা: ৪৪)
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا عَلَيْكُمْ أَنفُسَكُمْ ۖ لَا يَضُرُّكُم مَّن ضَلَّ إِذَا اهْتَدَيْتُمْ
"হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের চিন্তা কর। তোমরা যখন সৎপথে রয়েছ, তখন কেউ পথভ্রান্ত হলে তাতে তোমাদের কোন ক্ষতি নাই।" সূরা মায়িদা: ১০৫)
সুতরাং সংশোধনীটা শুরু করুন নিজেকে দিয়ে। আমি, আপনি সবাই যদি নিজেকে পরিবর্তন করি তাহলে পাল্টে যাবে সমাজ ব্যবস্থা।
🔷 কিভাবে আমরা নিজেদের দোষত্রুটি খুঁজে পাবো?

যে ঘরে প্রাণীর ছবি, কার্টুন, প্রতিকৃতি বা মূর্তি আছে সে ঘরে সালাত আদায় করার বিধান



———🎀🎀———
প্রশ্ন: আমাদের ঘরে খাতা-পত্র, প্যাকেট ইত্যাদিতে ছবির মতো কার্টুন থাকে। কিছু ঘরে মানুষ, পশু-পাখি ইত্যাদির ছবি ঝুলিয়ে রাখা হয় অথবা শোকেস-আলমরিতে পশু-পাখির ছোট ছাট মূর্তি সাজিয়ে রাখা হয়। ঘরের আসবাব-পত্রেও বাঘ-সিংহ, ময়ূর, পাখি ইত্যাদির ছবি অংকিত থাকে। এ সব ঘরে নামায পড়লে কি তা সহিহ হবে?
এতে করে কি ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করবে না?
উত্তর:
ঘরে প্রাণীর ছবি, কার্টুন, প্রতিকৃতি, মূর্তি ইত্যাদি সংরক্ষণ করা হারাম। যে ঘরে এসব থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। এ মর্মে একাধিক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন:
আবু তালহা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ، وَلَا صُورَةٌ
“ফেরেশতাগণ ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর অথবা ছবি থাকে। (সুনানে আন-নাসায়ী হা/৫৩৪৭-সহিহ)
ইবনে ‘আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রী মাইমূনাহ রা. আমার নিকট বর্ণনা করেন:
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: জিবরাঈল আলাহিস সালাম আমার সাথে রাতে সাক্ষাত করার ওয়াদা করেছিলেন কিন্তু সাক্ষাত করেননি।
অতঃপর তাঁর মনে পড়লো যে, আমাদের খাটের নীচে একটি কুকুর ছানা আছে। তিনি এটাকে বের করে দিতে আদেশ দিলে তা বের করা হলো। অতঃপর তিনি নিজেই পানি দিয়ে সে স্থানটা ধুয়ে ফেলেন।
এরপর জিবরাঈল আ. তাঁর সাথে সাক্ষাতের সময় বললেন: “যে ঘরে কুকুর এবং ছবি থাকে সে ঘরে আমরা কখনো প্রবেশ করি না।”
সকালবেলা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুকুর মারতে আদেশ দিলেন। এমনকি ছোট বাগান পাহারার কুকুর হত্যা করারও আদেশ দেন, বড় বাগানের পাহারাদার কুকুর ছাড়া।

মুহররম মাসের ফজিলত ও করণীয় সম্পর্কে বর্ণিত ১৪টি সহিহ হাদিস



----------------------
নিম্নে মহররম মাসের ফজিলত ও করণীয় সম্পর্কে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত ১৪টি হাদিস পেশ করা হল:
🔰 ১) প্রখ্যাত সাহাবী আবু বাকরা রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন: আল্লাহ তাআলা আসমান সমূহ এবং জমিন সৃষ্টির দিন যে আকৃতিতে সময়কে সৃষ্টি করেছিলেন সেটা আবার তার নিজস্ব কৃতিতে ফিরে এসেছে। এবং বারো মাসে এক বছর। তম্মধ্যে চারটি মাস অতি সম্মানিত। তিনটি মাস ধারাবাহিক। সেগুলো হল: যুল কা’দাহ (যিলকদ), যুল হিজ্জা (যিলহজ্জ) এবং মুহররম এবং আরেকটি হল মুযার সম্প্রদায়ের রজব মাস যা জুমাদাল ঊলা এবং শাবানের মধ্যখানে রয়েছে। (বুখারি ও মুসলিম)
🔰 ২) আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: রমাযানের পর সর্বোত্তম রোযা হল আল্লাহর মাস মুহররমের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হল রাতের নামায।” (মুসলিম)
🔰 ৩) আয়েশা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “জাহেলি যুগে কুরাইশগণ আশুরার রোযা পালন করত। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় এসে নিজে আশুরারা রোযা রাখলেন এবং সাহাবীদেরকেও রোযা রাখার নির্দেশ দিলেন। কিন্তু‘ যখন রমাযানের রোযা ফরয হল তখন তা পরিত্যাগ করা হল। যার ইচ্ছা রাখত যার ইচ্ছা রাখত না।” (বুখারি)

বাবা-মা’দের প্রতি জরুরি সতর্ক বার্তা এবং একটি জিজ্ঞাসা



“বাবা-মা মারা যাওয়ার পর সন্তানরা গান-বাজনা করলে তাদের কবরের আজাব বৃদ্ধি পায়” এ কথা কি সঠিক?
▬▬▬◄❖►▬▬▬
প্রশ্ন: আমরা জানি, ইসলামে গান-বাজনা হারাম। এখন প্রশ্ন হল, ”বাবা-মা মারা যাওয়ার পর সন্তানরা যদি গান-বাজনায় লিপ্ত হয় তাহলে কবরে বাবা-মার উপর শাস্তি বৃদ্ধি যায়” এ কথাটি কি সত্য?
উত্তর:
ইসলামে গান-বাজনা করা বা শোনা হারাম। এ দ্বারা অন্তর কলুষিত হয়, মনের সুপ্ত বাসনা (কু প্রবৃত্তি) জাগ্রত হয়, অন্তর রোগাক্রান্ত হয় ফলে ধীরে ধীরে অন্তরে , কুরআন ও হাদিসের বক্তব্য ও উপদেশপূর্ণ ভালো কথার প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয় এবং কুরআন তিলাওয়াত শুনার আগ্রহ হারিয়ে যায় ইত্যাদি। সুতরাং গানবাজনা থেকে দূরে থাকা জরুরি।
তবে বাবা-মা মারা যাওয়ার পর সন্তানরা যদি গান-বাজনা করে তাহলে তাদের কবরে শাস্তি বৃদ্ধি পায়-এ কথা ঠিক নয়।
অবশ্য যদি বাবা-মা দুনিয়াতে বেঁচে থাকা অবস্থায় সন্তানকে গানবাজনা শিক্ষার ব্যবস্থা করে যায় বা তাদেরকে এতে বাধা না দেয় বা তাদেরকে দ্বীনের জ্ঞান শিক্ষা না দিয়ে থাকে তাহলে বাবা-মার কবরে থেকেও সন্তানের সকল পাপাচার ও অন্যায়-অপকর্মের ভাগীদার হবে। কারণ তারাই সন্তানের বিপথে যাওয়ার পেছনে মূল দায়ী।
তাদের দায়িত্ব ছিলো সন্তানদেরকে দ্বীনের পথে গড়ে তোলা, বাল্যকাল থেকে হারাম, অশ্লীল, গান-বাজনা ইত্যাদি আল্লাহর নাফরমানি মূলক কার্যক্রম থেকে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করা এবং ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করা। কিন্তু তারা তাদের দায়িত্ব পালন করে নি। আল্লাহ তাআলা বলেন:

আশুরার শোক উদযাপন বিদআত কেন?



মুহররম মাসের দশ তারিখ আশুরার দিন হিসেবে পরিচিত। ৬১ হিজরির ১০ মুহররম তারিখে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হুসাইন রা. কে শাহাদাতের মর্যাদায় ভূষিত করেছিলেন। এই শাহাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তার মর্যাদা অনেক উন্নীত করেছেন। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাসান ও হুসাইন রা. এর ব্যাপারে এ শুভ সংবাদ প্রদান করে গেছেন যে, তারা হবেন জান্নাতের যুবকদের নেতা।
আর এ কথা চির সত্য, যে যত বড় মর্যাদা লাভ করে তাকে তত বড় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করা হল, মানব জাতির মধ্যে কে সব চেয়ে বেশি পরীক্ষা ও বিপদাপদের সম্মুখীন হয়েছিলেন? তিনি বললেন, নবীগণ, তারপর আল্লাহর নেককার বান্দাগণ।
তারপর অন্যদের মধ্যে যারা যে পরিমাণ ঈমান ও পরহেযগারিতার অধিকারী তারা সে পরিমাণ পরীক্ষা সম্মুখীন হয়েছেন। মানুষ তার দীনদারি অনুযায়ী পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। কেউ যদি মজবুত দ্বীনের অধিকারী হয় তবে সে বেশি পরিমাণ পরীক্ষার মুখোমুখি হয়। আর কারো দ্বীনদারিতে কমতি থাকলে তার বিপদাপদ কম আসে এবং পরীক্ষাও কম হয়। মুমিন বান্দা যতদিন পৃথিবীতে চলা ফেরা করে ততদিন তার উপর বিপদাপদ পতিত হতে থাকে এবং এভাবে তার আর কোন গুনাহ বাকী থাকে না।” (মুসনাদ আহমদ ও তিরমিযী, সনদ হাসান)
আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তাদের এই মর্যাদা পূর্বেই নির্ধারণ করে রাখা হয়েছিল। তারা তাদের পূর্বপুরুষদের মতই বিপদাপদের সম্মুখীন হয়েছেন। ইসলামের মর্যাদা নিয়েই তারা দুনিয়াতে আগমন করেছেন এবং ইসলাম প্রদত্ত মর্যাদা সহকারে তারা প্রতিপালিত হয়েছেন। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সংস্পর্শ, স্নেহ-মমতা, আদর ও ভালবাসা পেয়ে তাদের জীবন সৌভাগ্য মণ্ডিত হয়েছে। যার কারণে মুসলমানগণ তাদের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করে থাকেন।

জন্মদিন পালন করা এবং এ উপলক্ষে উইশ করা ও উপহার লেনদেন করার বিধান



▬▬▬◄❖►▬▬▬
প্রশ্ন: আমরা জানি জন্মদিন পালন করা বিদআত যেহেতু এইটা বিজাতীয়দের কালচার। এখন কেউ যদি আমাকে জন্মদিন এর সময় উইশ করে বা গিফট দেয় এতে আমার করণীয় কি? আমাকে উইশ করলে কি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা যাবে?
উত্তর:
জন্মদিন (Birthday) পালন করা এবং এ উপলক্ষে উইশ (wish) করা বা গিফট লেনদেন করা শরিয়ত সম্মত নয়। কারণ তা অমুসলিমদের সংস্কৃতি। আর ইসলামে অমুসলিমদের অনুসরণ-অনুকরণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ-চাই তা ইবাদতের ক্ষেত্রে হোক অথবা আচার-আচরণ, পোশাক-পরিচ্ছদ, রীতি-নীতি বা কৃষ্টি-কালচারের ক্ষেত্রে হোক। কেননা হাদিসে এসেছে:
❖ আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
"যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত হিসেবে গণ্য হবে।" [সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: পোশাক-পরিচ্ছেদ হা/৪০৩১-হাসান সহিহ]

নির্জনে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পর্দা কতটুকু?



▬▬▬◄❖►▬▬▬
প্রশ্ন: যখন স্বামী-স্ত্রী নির্জনে সময় কাটায় তখন তাদের মাঝে কতটা পর্দা রক্ষা করা জরুরি? (একান্ত ঘনিষ্ঠ সময় ছাড়া বাকি সময়গুলোতে)। কেননা আমাদের আশে পাশে সর্বদা জিন ও ফেরেশতাগণ ঘুরা ফেরা করে।
উত্তর:
স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কোনও পর্দা নেই। আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীকে পরস্পরের জন্য 'পোশাক' বলে অভিহিত করেছেন এবং একে অপরের জন্য সম্পূর্ণ হালাল করেছেন। সুতরাং তারা নির্জনে যেভাবে খুশি একে অপরের সামনে থাকতে পারে এবং আনন্দ-বিনোদন করতে পারে।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ
"তারা (স্ত্রীরা) তোমাদের জন্য পোশাক এবং তোমরা তাদের জন্য পোশাক।" (সূরা বাকারা: ১৮৬)
❖ তাফসিরে কুরতুবিতে এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে:
"পোশাক মূলত: কাপড়। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী একে অপরের জন্য পোশাক বলা হয়েছে এ জন্য যে, দেহের সাথে দেহের সংযোগ ঘটে, একে অপরের সাথে মিলিত হয় এবং পোশাকের মত একে অপরের সঙ্গে থাকে।" (সূরা বাকারার ১৮৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা, তাফসিরে কুরতুবী)
❖ এ ছাড়াও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

মুহররমের বিদআত ও অন্যায় কার্যক্রম



▬▬▬◆◆◆▬▬▬
মুহাররম মাস-বিশেষ করে এ মাসের ১০ তারিখে (আশুরার দিন) শিআ-রাফেযী সম্প্রদায় কর্তৃক অনেক বাড়াবাড়ি, হিংসাত্মক এবং নান ধরণের শরীয়ত বহির্ভূত/বিদআতী কার্যক্রম পালিত হয়ে থাকে। নিম্নে এ ধরণের কতিপয় কার্যক্রম তুলে ধরা হল:
১) হুসাইন রা. এর শাহাদাতকে কেন্দ্র করে তাঁর প্রতি মিথ্যা সমবেদনার প্রকাশ হিসেবে গালে চপেটাঘাত করা, বুক থাপড়ানো, শরীর রক্তাক্ত করা, তলোয়ার বা ছুরির আঘাতে মাথা থেকে রক্ত প্রবাহিত করা, মাটিতে গড়াগড়ি করা, কান্নাকাটি করা, শরীরের পোশাক ছেঁড়া, নিজেকে নানাভাবে কষ্ট দেয়া ইত্যাদি।
২) কারবালা যুদ্ধের প্রতীক হিসেবে আশুরায় ‘লাঠি খেলা’র আয়োজন করা।
৩) মুহররমের ১০ তারিখে শোক দিবস পালন করা।
৪) হুসাইন রা. এর প্রতীকী কবর তৈরি করে তা সুসজ্জিত করা বা তাতে সম্মান করা।
৫) কালো পতাকা নিয়ে তাজিয়া মিছিল করা এবং তাতে পানি বিতরণ করা।
৬) মুহররমের দশ তারিখে কালো জামা-কাপড় পরিধান করা।
৭) মুহররম উপলক্ষে গান-বাদ্য, কাওয়ালী, জারি, সারি, মুর্সিয়া বা পালা গানের আসর বসানো।
৮) হুসাইন রা. এর মৃত্যুতে শোক পালনার্থে মুহররমের প্রথম দশ দিন গোস্ত, মাছ, ডিম ইত্যাদি
খাওয়া, বিয়েশাদী করা বা দেয়া থেকে বিরত থাকা।
৯) এ উপলক্ষে মুহররমের প্রথম দশ দিন মাটিতে ঘুমানো।
১০) কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা কিচ্ছা-কাহিনী বর্ণনা করে ফেতনার আগুন উসকিয়ে দেয়া এবং পূর্ব যুগের বিভিন্ন নিরপরাধ মানুষের প্রতি অভিশাপ দেয়া।
এ কাজগুলো মূলত: পথভ্রষ্ট শিয়া সম্প্রদায়ের মাধ্যমে সংঘটিত হয়ে থাকে আর অনেক অজ্ঞ মুসলিম নাজানার কারণে তাদের সাথে এ সব কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করে!
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সকল ফিতনা-ফ্যাসাদ থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
▬▬▬▬▬▬▬▬
গ্রন্থনায়: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।

জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত নারীগণ



▬▬▬◄❖►▬▬▬
প্রশ্ন: মহিলা সাহাবীদের মধ্যে কি কেউ জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত হয়েছেন? হলে তাদের নাম কি?
উত্তর:
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওহির মারফতে কতিপয় পুরুষ সাহাবীর পাশাপাশি কতিপয় মহিলার ব্যাপারে জান্নাতবাসী হওয়ার সুসংবাদ প্রদান করেছেন। কিন্তু পুরুষ সাহাবীদের বিষয়টি সুপ্রসিদ্ধ হলেও মহিলাদের মধ্যে জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্তদের সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানে।
তাই নিম্নে জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সৌভাগ্যবতী মহিলাদের মধ্যে ১২ জনের নামের একটি তালিকা তুলে ধরা হল: (যদিও তাদের সংখ্যা আরও বেশি):
১) আসিয়া আ. (ফেরআউনের স্ত্রী)
২) মরিয়ম বিনতে ইমরান আ. (আল্লাহর রাসূল ঈসা আলাইহিস সালাম এর মা)
৩) খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ রা. (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম এর স্ত্রী)
৪) আয়েশা রা. (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রী এবং আবু বকর সিদ্দীক রা. এর কন্যা)
৫) ফাতিমা রা. (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কন্যা ও আলী রা. এর স্ত্রী)
৬) হাফসা রা. (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রী এবং উমর রা. এর কন্যা)
৭) উম্মে সুলাইম রা. (আবু তালহা রা. এর স্ত্রী)
৮) গুমায়সা বিনতে মিলহান রা.
৯) রবী বিনতে মুআওয়ায (মদীনার আনসারী মহিলা সাহাবী- যিনি হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট যুদ্ধের বাইআত নিয়েছিলেন। বাইআত গ্রহণকারী সর্বমোট দু জন মহিলার মধ্যে তিনি একজন)
১০) সুমাইয়া রা. (ইসলামের ইতিহাসে প্রথম শহিদ)
১১) সুয়াইরা আল আসাদিয়া রা.
১২) উম্মে হারাম বিনতে মিলহান (আনাস রা. এর খালা)
যে সব হাদিসের মধ্যে এ সকল সৌভাগ্যবতী মহিলা সম্পর্কে জান্নাতের সুসংবাদ বর্ণিত হয়েছে সেগুলো জানতে এই বইটি পড়ুন:
“জান্নাতও জাহান্নাম এর সংবাদপ্রাপ্ত নারী-পুরুষগণ”
বইটির ওয়ার্ড ফাইল ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন এই লিংকে:
উল্লেখ্য যে, উল্লেখিত ১২ জন ছাড়াও জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলার সংখ্যা আরও রয়েছে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকেও পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সন্তান ঐ সকল সৌভাগ্যবান পুরুষ ও সৌভাগ্যবতী নারীদের দলভুক্ত হয়ে মুমিন জীবনের অভীষ্ট লক্ষ এবং অবর্ণনীয় নিয়ামত সমৃদ্ধ চূড়ান্ত প্রত্যাশার নীড় জান্নাতে প্রবেশের তাওফিক দান করুন। আমীন।
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬◄❖►▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল, সৌদি আরব

মুহররম মাসে বিয়ে-শাদী নিষিদ্ধ!!



▬▬▬◈◆◈▬▬▬
প্রশ্ন: লোকমুখে শোনা যায় যে, মুহররম মাসে না কি বিয়ে-শাদী নিষিদ্ধ? এ কারণে অনেক মানুষ এ মাসে বিয়ে করে না এবং বিয়ে দেয়ও না। এটা কি সঠিক?
উত্তর:
ইসলামের দৃষ্টিতে মুহররম মাসে বিয়ে-শাদি নিষিদ্ধ নয়। বরং বছরের কোন মাসেই কোন সময়ই বিয়ে-শাদী নিষিদ্ধ নয়। এ মর্মে যে সব কথা প্রচলিত রয়েছে সব‌ই ভিত্তিহীন ও কুসংস্কার।
◆◆ মুহররম মাস নিয়ে শিয়াদের বাড়াবাড়ি:
মুহররম মাসে বিয়ে-শাদী করা ঠিক নয়- মর্মে প্রচলিত কথাটি শিয়া-রাফেযী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে মিথ্যা প্রচারণা হতে পারে। কেননা, এ মাসে (মুহররম মাসের ১০ তারিখে) হুসাইন রা. কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে তারা মিথ্যা মায়াকান্না আর অতিভক্তি দেখিয়ে এ মাসে অনেক বিদআতি কার্যক্রম করে থাকে এবং শরীয়তের অনেক বৈধ জিনিসকে অবৈধ করে থাকে। যেমন তারা বলে, মুহররম মাসে নতুন জামা পড়া যাবে না, গোস্ত-মাছ ইত্যাদি ভালো খাবার খাওয়া যাবে না বরং কেবল নিরামিষ খেতে হবে, বিছানায় না শুয়ে মাটিতে শুতে হবে, বিয়াশাদী দেয়া বা করা বৈধ নয়...ইত্যাদি। অথচ এ সব কথা শুধু দলীল বহির্ভূত নয় বরং দ্বীনের মধ্যে বাড়াবাড়ি ও অতিরঞ্জন ছাড়া অন্য কিছু নয়। ইসলামী শরিয়ত যা নিষেধ করে নি তা নিষেধ করা মানে দ্বীনের মধ্যে সীমালঙ্ঘন এবং ধৃষ্টতা প্রদর্শন।

শিয়ারা কেন হুসাইন রা. এর প্রতি এত দরদ দেখায়?


অবাক করা তথ্য!
আপনি জানেন কি? শিয়ারা কেন হুসাইন রা. এর প্রতি এত দরদ দেখায়?
▬▬▬◈◈◈▬▬▬
অনুবাদক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব
▬▬▬◈◈◈▬▬▬
শিয়া সম্প্রদায় কেন আলী রা. এর ছেলেদের মধ্যে কেবল হুসাইন রা. এর এত গুণগান করে এবং তার প্রতি এত দরদে দেখায়? কখনও কি এ বিষয়ে নিজেকে প্রশ্ন করেছেন? কখনো কি বিস্ময়কর মনে হয়েছে বিষয়টি?
এই তথ্য জানার পরে বিশ্বের অনেক মুসলিম হোঁচট খেয়েছে, বিশেষ করে আরব দেশের শিয়ারা। এই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে আসুন, আলী রা. এর সন্তানদের সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নি।
আলী রা. এর মোট ছেলে ছিল ১১ জন । তাদের নাম নিম্নরূপ:
১) হাসান বিন আলী বিন আবু তালিব
২) হুসাইন বিন আলী বিন আবু তালিব
৩) মুহসিন বিন আলী বিন আবু তালিব
৪) আব্বাস বিন আলী বিন আবু তালিব
৫) হেলাল বিন আলী বিন আবু তালিব
৬) আব্দুল্লাহ বিন আলী বিন আবু তালিব
৭) জাফর বিন আলী বিন আবু তালিব
৮) উসমান বিন আলী বিন আবু তালিব
৯) উবায়দুল্লাহ বিন আলী বিন আবু তালিব
১০) আবু বকর বিন আলী বিন আবু তালিব
১১) উমর বিন আলী বিন আবু তালিব

আশুরা তথা মুহররমের ১০ তারিখে রোযা রাখার ফযিলত কি? এ দিন ভালো খাবারের আয়োজন করলে সারা বছর ভালো খাওয়া যায়-এ কথা কি ঠিক?



▬▬▬◄❖►▬▬▬
উত্তর:
◈◈ আশুরার রোযা রাখার ফযিলত:
বিশুদ্ধ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আশুরা তথা মুহররম মাসের ১০ তারিখে রোযা রাখলে আশা করা যায়, আল্লাহ তাআলা পেছনের এক বছরের গুনাহ মোচন করে দিবেন। যেমন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:
আবু কাতাদা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করে বলেন:
ثَلاثٌ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَرَمَضَانُ إِلَى رَمَضَانَ فَهَذَا صِيَامُ الدَّهْرِ كُلِّهِ صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ وَصِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ
“প্রতি মাসে তিন দিন এবং এক রমাযান থেকে আরেক রমাযান পর্যন্ত রোযা রাখলে সারা বছর রোযা রাখার সাওয়াব অর্জিত হয়। আরাফার দিন রোযা রাখলে আল্লাহর নিকট আশা করি যে, তিনি এর বিনিময়ে পেছনের এক বছরের এবং সামনেরে এক বছরের (মোট দু বছরের) গুনাহ মোচন করবেন। আর আশুরার দিন (মুহররম মাসের ১০ তারিখে) রোযা রাখলে আল্লাহর নিকট আশা করি যে, তিনি এর বিনিময়ে পেছনের এক বছরের গুনাহ মোচন করবেন।” (সহীহ মুসলিম হা/১১৬২)
➤ উল্লেখ্য যে, ৯ ও ১০- দু দিন রোযা রাখা অধিক উত্তম। তবে কোনো কারণে ৯ তারিখে রোযা রাখা সম্ভব না হলে ১০ ও ১১ তারিখে রাখা জায়েজ।
ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহঃ বলেন: ”মাসের শুরু চিনতে অসুবিধা হলে (৯, ১০ ও ১১ এ) তিন দিন রোযা রাখবে। যেন ৯ ও ১০ তারিখে রোযা নিশ্চিতভাবে সম্পন্ন করা যায়। (মুগনী ৩/১৭৪)
◈◈ আশুরার দিন ভালো খাবারের আয়োজন করা:

আলেম ও দ্বীনদার মানুষকে হুজুর বলা কি ঠিক?




প্রশ্ন: আমাদের দেশে মসজিদের ইমামকে ‘হুজুর’ বলা হয়। এভাবে কাউকে ‘হুজুর’ বলাটা কতটুকু সঠিক? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর:
‘হুজুর’ শব্দটি আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত একটি শব্দ। সাধারণত: আলেম, মসজিদের ইমাম ও দ্বীনদার-পরহেযগার মানুষদেরকে ‘হুজুর’ বলে সম্বোধন করা হয়।
নিম্নে এ বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হল:
 'হুজুর' শব্দের শাব্দিক ও পারিভাষিক অর্থ:
 ‘হুজুর’ শব্দের শাব্দিক অর্থ হল, উপস্থিত হওয়া।
 “পরিভাষায় এটি সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মানসূচক সম্বোধনের জন্য ব্যবহার করা হয়।” (ফার্সী অভিধান গিয়াসুল লুগাত, পৃষ্ঠা/১৭৪)
 অনলাইন ভিত্তিক অভিধান ebanglalibrary.com এ বলা হয়: হুজুর [ hujura] বি. নৃপতি, বিচারপতি, মনিব প্রভৃতিকে সম্মানসূচক সম্বোধন।
 বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধানেও প্রায় একই কথা বলা হয়েছে।

শিয়া সম্প্রদায় যে প্রতি বছর ১০ মুহররমে মাতম করে, তাজিয়া মিছিল করে, নিজেদের শরীরে আঘাত করে-এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই। এ কাজগুলো কি শরিয়ত সম্মত?



উত্তর:
৬১ হিজরির মুহররম মাসের দশ তারিখে হুসাইন বিন আলী রা. রাজনৈতিক কারণে ফিতনায় পতিত হয়ে ইরাকের কারবালার প্রান্তরে তৎকালীন মুসলিম জাহানের শাসনকর্তা ইয়াজিদ বিন মুআবিয়া এর সেনাবাহিনীর হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। তার প্রতি সমবেদনার বর্হি:প্রকাশ হিসেবে শিয়া সম্প্রদায় প্রতি বছর ১০ম মুহররমে নিজেদের শরীরকে আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত করে, মাথা মুণ্ডন করে, রাস্তায় রাস্তায় ‘হায় হুসাইন..হাই হুসাইন’ বলে কান্নাকাটি ও মাতম করে, কালো ব্যাচ ধারণ করে, তাজিয়া মিছিল বের করে।
ইসলামের দৃষ্টিতে এগুলো সব, বিদআত, জাহেলিয়াত পূর্ণ ও হারাম কাজ। নিম্নাক্ত আলোচনা থেকে তা প্রমাণিত হবে ইনশাআল্লাহ।
 মৃত্যুশোকে কান্নাকাটি করা, মাতম করা, শরীরে আঘাত করা ইত্যাদির বিধান কি?
মানুষ মারা গেলে নীরবে চোখের পানি ফেলা অথবা নিচু আওয়াজে ক্রন্দন করা বৈধ। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ছেলে ইবরাহীম যখন মারা যায় তিনি তাকে কোলে নিয়ে ছিলেন। আর তার দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন:
تَدْمَعُ الْعَيْنُ وَيَحْزَنُ الْقَلْبُ وَلاَ نَقُولُ إِلاَّ مَا يَرْضَى رَبُّنَا وَاللَّهِ يَا إِبْرَاهِيمُ إِنَّا بِكَ لَمَحْزُونُونَ
“চক্ষু অশ্রু সজল হয়,অন্তর ব্যথিত হয়। তবে আমরা কেবল সে কথাই বলব যা আমাদের প্রভুকে সন্তুষ্ট করে। আল্লাহর কসম,হে ইবরাহীম,তোমার বিচ্ছেদে আমরা ব্যথিত।” [সহীহ বুখারী: অনুচ্ছেদ: সে আমাদের লোক নয় যে, গালে চপেটাঘাত করে। হাদিস নং ১২৯৭,মাকতাবা শামেলা]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন (যেমন, মাথার চুল, জুতা, লাঠি, পাগড়ি ইত্যাদি) এবং আমাদের করণীয়:



▬▬▬◄❖►▬▬▬
প্রশ্ন: বিভিন্ন স্থানে এবং সামাজিক মিডিয়ায় অনেক মানুষ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রেখে যাওয়া বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন (যেমন: তাঁর জামা, জুতা, চুল, চাদর, তলোয়ার ইত্যাদি) প্রদর্শন করে চলেছে। সরলমনা মানুষ সেগুলো বিশ্বাস করছে এবং সেগুলোর প্রতি ভক্তি ও বিনয় প্রকাশ করছে।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আসলেই কি এগুলো রাসূল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ব্যবহৃত আসবাব-সমগ্রী?
উত্তর:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদিস গ্রহণ করার ক্ষেত্রে যেমন তা বিশুদ্ধ সনদে প্রমাণিত হওয়া জরুরি ঠিক তদ্রূপ তাঁর ব্যবহৃত পোশাক, জুতা, জামা, জুব্বা, চাদর, পাগড়ি, মাথার চুল, লাঠি, ঘটি-বাটি ও অন্যান্য ব্যবহৃত আসবাব-পত্র ইত্যাদির ক্ষেত্রেও তা বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত হওয়া জরুরি। কিন্তু বাস্তবতা হল, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যে সব বস্তুকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দিকে সম্বন্ধ করা হচ্ছে সেগুলোর পেছনে বিশুদ্ধ কোন সনদ নেই যে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

আমি যদি এই দোআটি না পড়তাম তবে ইহুদীরা জাদু করে আমাকে গাধা বানিয়ে ফেলত”



▬▬▬◄❖►▬▬▬
প্রশ্ন: কা’ব বিন আহবার রহ. বলেছেন, “আমি যদি এই দোআটি না পড়তাম তবে ইহুদীরা তাদের জাদু দ্বারা আমাকে গাধা বানিয়ে ফেলত” এই হাদিসটা কি সহিহ?
উত্তর:
কাকা ইবনে হাকিম রহ. বলেন, কা’ব আল আহবার আমাকে বলেছেন, “একটি দোয়া যদি আমি না পড়তাম তাহলে ইহুদিরা আমাকে [জাদুর মাধ্যমে] গাধা বানিয়ে ফেলত।” তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, সেটি কোন দোয়া? তখন তিনি এ দোয়াটির কথা বললেন:
" أَعُوذُ بِوَجْهِ اللهِ الْعَظِيمِ الَّذِي لَيْسَ شَيْءٌ أَعْظَمَ مِنْهُ، وَبِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ الَّتِي لاَ يُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلاَ فَاجِرٌ، وَبِأَسْمَاءِ اللهِ الْحُسْنَى كُلِّهَا، مَا عَلِمْتُ مِنْهَا وَمَا لَمْ أَعْلَمُ، مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ وَبَرَأَ وَذَرَأَ "
বাংলা উচ্চারণ :
আউযুবি ওয়াজহিল্লাযী লাইসা শাইয়ুন আ’যামা মিনহু
ওয়া বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতিল লাতি লা ইউজাভিযুহুন্না বাররুন ওয়া লা ফাজিরুন। ওয়াবি আসমা-ইল্লাহিল হুসনা কুল্লাহা মা আলিমতু মিনহা ওয়া মা লাম আ’লামু
মিন শাররি মা খলাকা ওয়া বারাআ ওয়া জারাআ।
বাংলা অর্থ :

দেনমোহর ও কাবিননামা




প্রশ্ন: আমি জানতে চাই কাবিননামা এবং দেনমোহর কি এক? যদি এক না হয় তাহলে পার্থক্য কি?

উত্তর: দেনমোহর এবং কাবিননামা সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস। নিম্নে এ দুটি জিনিসের পরিচয় ও পার্থক্য প্রদান করা হল:

🔸 দেনমোহর কী?

মুসলিম আইন অনুযায়ী দেনমোহর হল বিয়ের অন্যতম শর্ত। এই শর্ত অনুযায়ী স্ত্রী স্বামীর নিকট থেকে বিয়ের সময় কিছু অর্থ বা সম্পত্তি পায় বা পাওয়ার অধিকার লাভ করে। দেনমোহর বিয়ের সময়ই ধার্য বা ঠিক করা হয়। এটি স্ত্রীর একটি বিশেষ অধিকার।
আল্লাহ কুরআনে বলেন:
وَآتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً ۚ فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَيْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَّرِيئًا
“আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশী মনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।” (সূরা নিসা: ৪)

🔸 কাবিননামা কী?

কাবিননামা বলতে বিবাহ সম্পাদনের লিখিত চুক্তি বোঝায়। একে নিকাহনামা বলেও উল্লেখ করা হয়।
বিবাহ সম্পাদনের জন্য বা বিবাহ বৈধ হওয়ার জন্য ‘কাবিননামা’ অপরিহার্য নয়। কাবিননামা একটি আইনি বাধ্যবাধকতা।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী সরকার কর্তৃক মনোনীত কাজী সরকার নির্ধারিত ছকে কাবিননামা সম্পাদন করে থাকেন। স্ত্রীর প্রাপ্য দেনমোহর আদায়, স্ত্রীর ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের পিতৃত্ব ইত্যাদি ক্ষেত্রে যথাযথভাবে নিবন্ধিত কাবিননামা একটি আইনি দলিল। (বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় ই-তথ্যকোষ)
--------------------
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব

বিয়েতে কাজি (ম্যারেজ রেজিস্ট্রার) এর উপস্থিতি কি জরুরি?



▬▬▬◄❖►▬▬▬
প্রশ্ন: আমি এক জায়াগায় পড়েছিলাম যে, “বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার ক্ষেত্রে কাজি উপস্থিত থাকা জরুরি নয়। তার কাজটা অন্য কেউ করলেও চলে।” এ কথাটা কি সঠিক?
উত্তর:
বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য কাজি তথা ম্যারেজ রেজিস্ট্রার এর উপস্থিতি জরুরি নয়-এ কথা ঠিক। বরং বিয়ের ক্ষেত্রে মেয়ের অভিভাবকের সম্মতি, দেনমোহর নির্ধারণ ও দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ইজাব-কবুল (প্রস্তাব ও গ্রহণ) এর মাধ্যমে আকদ সম্পন্ন হলেই বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে। ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিয়ে পড়ানোর যোগ্যতা সম্পন্ন যে কোনও মুসলিম তা করতে পারে।
তবে বর্তমান যুগে নানা অনিয়ম ও বিশৃঙ্খল রোধে কাজির মাধ্যমে সরকারীভাবে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উত্তর প্রদান:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল, সৌদি আরব

নির্যাতনে মৃত ব্যক্তির শহিদি মর্যাদা লাভ, অন্যায়ভাবে হত্যা করার ভয়াবহ পরিণতি এবং পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম হত্যাকাণ্ড



▬▬▬◄❖►▬▬▬
প্রশ্ন: কোনও ব্যক্তি যদি অন্যায়ভাবে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যু বরণ করে তাহলে সে কি শহিদ হিসেবে গণ্য হবে? অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করার ভয়াবহতা কতটুকু? পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম কে হত্যাকাণ্ডের সূচনা করেছিলো এবং তার পরিণতি কী হবে?
উত্তর:
নিন্মে উপরোক্ত প্রশ্নসমূহের সংক্ষেপে উত্তর প্রদান করা হল: و بالله التوفيق
🌀 ক. কোনও ব্যক্তি যদি অন্যায়ভাবে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যু বরণ করে তাহলে সে কি শহিদ হিসেবে গণ্য হবে?
হ্যাঁ, যে ব্যক্তি বিনা অপরাধে অন্যায়ভাবে নির্যাতিত অবস্থায় মৃত্যু বরণ করবে সে আখিরাতে আল্লাহর নিকট শহিদি মর্যাদা লাভ করবে। কেননা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضي الله عنه قَالَ : صَعِدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى " أُحُدٍ " وَمَعَهُ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَعُثْمَانُ فَرَجَفَ بِهِمْ ، فَضَرَبَهُ بِرِجْلِهِ ، قَالَ : (اثْبُتْ أُحُدُ ، فَمَا عَلَيْكَ إِلاَّ نَبِيٌّ ، أَوْ صِدِّيقٌ ، أَوْ شَهِيدَان- رواه البخاري
আনাস বিন মালিক রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম আবু বকর রা. উমর রা. ও উসমান রা. সহকারে ওহুদ পাহাড়ে উঠলে তা প্রকম্পিত হয়ে উঠে। তখন তিনি পাহাড়ের গায়ে পদাঘাত করে বললেন:
“হে ওহুদ, তুমি স্থির হও। কারণ তোমার উপরে আছে একজন নবী, একজন সিদ্দীক এবং দু জন শহিদ।” (সহিহ বুখারী হা/ ৩৪৮৩)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম আল্লাহর ওহির মারফতে অগ্রিম ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন যে, সে দিন ওহুদ পাহাড়ে তাঁর সাথে থাকা তিন জন অতি সম্মানিত সাহাবীর মধ্যে দু জন শহিদ হবেন।
ইতিহাস সাক্ষী, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাাইহি ওয়া সালাম এর ভবিষ্যতবাণী সত্যে পরিণত হয়েছে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম এর তিরোধানের পর মুসলিম জাহানের ২য় খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব রা. ফজর সালাতে ইমামতি করা অবস্থায় আবু লুলু নামক এক অগ্নিপূজক ঘাতক কর্তৃক পেছন থেকে অতর্কিত বর্শাঘাতে শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করেন। আর ৩য় খলিফা উসমান বিন আফফান রা. তাঁর খিলাফতকালে একদল খারেজী বিদ্রোহী জঙ্গিদের হাতে মাজলুম অবস্থায় শাহাদত বরণ করেন। আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হোন। আমীন।

জিন ও শয়তান: পরিচয়, প্রকারভেদ ও পার্থক্য





▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
প্রশ্ন: জিন ও শয়তান কি একই না কি তাদের মাঝে পার্থক্য আছে?
উত্তর:
নিন্মে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে শয়তানের পরিচয়, প্রকারভেদ এবং জিন ও শয়তানের মাঝে পার্থক্য তুলে ধরা হল:
🌀 শয়তান কাকে বলে?
শয়তান বলতে কী বুঝায় সে ব্যাপারে আলেমদের বক্তব্য তুলে ধরা হল:
◈ বিশিষ্ট ভাষাবিদ, ফিকাহ বিদ ও হাদিস বিদ আবু উবাইদ কাসেম বিন সাল্লাম [জন্ম: ১৫৭ হি:-২২৪ হি:] বলেন:
الشيطان كل عات متمرد من إنس, أو جن
“প্রত্যেক অবাধ্য ও সীমালঙ্ঘণকারীকে শয়তান বলা হয়।” (বাহরুল উলুম লিস সামারকান্দি ১/২৭৭)
◈ আবু বকর মুহাম্মদ বিন ইসহাক [জন্ম ৮৫ হি:-মৃত্যু: ১৫১ হি;] বলেন:
إنما سمي شيطاناً لأنه شطن عن أمر ربه، والشطون البعيد النازح
“শয়তানকে এই জন্যই শয়তান বলা হয় যে, সে আল্লাহর নির্দেশ পালন থেকে দূরে থাকে। কেননা আরবিতে الشطون-শাতূন শব্দের অর্থ হল, দূরে অবস্থানকারী ও পলাতক।” [আয যীনাহ ফিল কালিমাতুল ইসলামিয়্যাতিল আরাবিয়াহ ২/১৭৯]
◈ কোন কোনো আলেম বলেন: যে নিজে আল্লাহর অবাধ্যতা করে এবং নানা অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত থাকার পাশাপাশি অন্যকে আল্লাহর আনুগত্য করতে বাধা দেয় এবং দ্বীন ও কল্যাণের পথ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে তাকেই ইসলামের পরিভাষায় শয়তান বলা হয়-চাই সে জিনের মধ্য থেকে হোক অথবা মানুষের মধ্য থেকে হোক।
🌀 শয়তান দু প্রকার। যথা:

হিজড়াদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য এবং তাদের পক্ষ থেকে অন্যায় আচরণের শিকার হলে করণীয়

হঠাৎ মৃত্যু: ভালো না কি খারাপ?

SATURDAY, 11 MAY 2019

রোযাকে রোযা বলা যাবে, না সাউম বা সিয়াম বলতে হবে?

TUESDAY, 30 MAY 2017

রোযাবস্থায় বীর্যপাত এবং স্বপ্নদোষের বিধান (কেবল প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য)

TUESDAY, 16 MAY 2017

নারীদের (হায়েয-নেফাস থেকে) পবিত্রতার মাসয়ালা-মাসায়েল‍:

SUNDAY, 25 DECEMBER 2016

ফাতওয়া দিতে খুব আগ্রহী??

TUESDAY, 21 JUNE 2016

কবিরা গুনাহ করলে কি রোযা নষ্ট হয়ে যাবে

WEDNESDAY, 9 DECEMBER 2015

মাতৃভাষায় জুমার খুতবা দেয়ার বিধান

জুমার দিন জুমার সালাত আদায়ের আগে ওয়াজ-নসীহত করার বিধান কি?


প্রশ্ন: জুমার দিন জুমার সালাত আদায়ের আগে ওয়াজ-নসীহত করার বিধান কি?

FRIDAY, 27 NOVEMBER 2015

নামায কিভাবে পড়তে হবে? (পর্ব – ২, শেষ পর্ব)

SUNDAY, 22 NOVEMBER 2015

প্রশ্নঃ আমরা শুনেছি সূরা মুলক তেলাওয়াত করলে তা পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে, এই হাদিস কি সহি?

FRIDAY, 20 NOVEMBER 2015

প্রশ্নোত্তরে ইসলামী জ্ঞান

SATURDAY, 31 OCTOBER 2015

সালফে সালেহীনদের মানহাজে বিদআ’তিদের অবস্থান

FRIDAY, 30 OCTOBER 2015

নামাযের রুকন, ওয়াজিব, সুন্নত ও নামায ভংগের কারণসমূহ

TUESDAY, 27 OCTOBER 2015

দুআ-মুনাজাত : কখন ও কিভাবে

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...