Saturday 12 September 2015

বেশি বেশি হজ্জ করবে; নাকি একবার হজ্জ আদায় করাই যথেষ্ট



প্রশ্ন: একাধিকবার হজ্জ করা উত্তম; নাকি একবার হজ্জ করাটাই উত্তম?
উত্তর:
আলহামদুলিল্লাহ।
ফরজ হওয়ার দিক থেকে হজ্জ জীবনে একবার করাই ফরজ। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার খোতবা দিলেন এবং বললেন: হে লোকসকল, আল্লাহ তোমাদের উপর হজ্জ ফরজ করেছেন; অতএব আদায় কর। এক ব্যক্তি বলল: হে আল্লাহর রাসূল, প্রতি বছর? তিনি চুপ করে থাকলেন। এমনকি সে লোক কথাটি তিনবার উচ্চারণ করল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: আমি যদি হ্যাঁ বলি তাহলে ফরজ হয়ে যাবে; কিন্তু তোমরা আদায় করতে পারবে না। এরপর বললেন: আমি যদি কোন বিষয় এড়িয়ে যাই তোমরা সে বিষয়ে প্রশ্ন করো না। তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতেরা তাদের অধিক প্রশ্নের কারণে এবং নবীদের সাথে মতভেদ করার কারণে ধ্বংস হয়েছে। আমি যখন তোমাদেরকে কোন নির্দেশ প্রদান করি তখন যতদূর সম্ভব সেটা বাস্তবায়ন কর; আর যা কিছু থেকে তোমাদেরকে বারণ সেটা থেকে বিরত থাক।[সহিহ মুসলিম (১৩৩৭)]
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, আকরা বিন হাবেস (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামক জিজ্ঞেস করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ, হজ্জ কি প্রতিবছর; নাকি একবার মাত্র? তিনি বললেন: একবার মাত্র। যে ব্যক্তি একাধিকবার করবে সেটা নফল।”[সুনানে আবু দাউদ (১৭২১) আলবানি হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
আর উত্তমতার প্রশ্নে মুসলমান যতবেশি হজ্জ করতে পারে সেটা উত্তম। এমনকি কেউ যদি প্রতিবছর হজ্জ করতে পারে সেটাও ভাল। বেশি বেশি হজ্জ আদায় করার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। যেমন-

হজ্জ বা উমরাতে নিয়ত উচ্চারণ



প্রশ্ন: নিয়ত উচ্চারণ করা বিদআত হলে হজ্জ ও উমরার ক্ষেত্রে নিয়ত উচ্চারণ করার গূঢ় রহস্য কি?
উত্তর:
আলহামদুলিল্লাহ।
নিয়তের স্থান হচ্ছে- কলব বা অন্তর। নিয়ত উচ্চারণ করা বিদআত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীবর্গ থেকে সাব্যস্ত হয়নি যে, তারা কোন ইবাদতের পূর্বে নিয়ত উচ্চারণ করেছেন। হজ্জ ও উমরার তালবিয়া নিয়ত নয়।
শাইখ বিন বায (রহঃ) বলেন:
নিয়ত উচ্চারণ করা বিদআত। সজোরে নিয়ত পড়া কঠিন গুনাহ। সুন্নাহ হচ্ছে- মনে মনে নিয়ত করা। কারণ আল্লাহ তাআলা গোপন ও সঙ্গোপনের সবকিছু জানেন। আল্লাহ তাআলা বলেন: “বলুনঃ তোমরা কি তোমাদের ধার্মিকতা আল্লাহকে অবহিত করছ? অথচ ভূমণ্ডলে ও নভোমণ্ডলে যা কিছু আছে সব আল্লাহ জানেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।”[সূরা হুজুরাত, আয়াত: ১৬]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, কিংবা তাঁর সাহাবীবর্গ কিংবা অনুসরণযোগ্য ইমামদের থেকে ‘নিয়ত উচ্চারণ করা’ সাব্যস্ত হয়নি। সুতরাং জানা গেল যে, এটি শরিয়তে সিদ্ধ নয়। বরং নবপ্রচলিত বিদআত। আল্লাহই তাওফিকদাতা।[ইসলামী ফতোয়াসমগ্র (২/৩১৫)]
শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন:
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নামায, তাহারাত (পবিত্রতা), রোজা কিংবা অন্য কোন ইবাদতের ক্ষেত্রে নিয়ত উচ্চারণ করা বর্ণিত হয়নি। এমনকি হজ্জ-উমরার ক্ষেত্রেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন না যে, ‘আল্লাহু্ম্মা ইন্নি উরিদু কাযা ওয়া কাযা...’ (অর্থ- হে আল্লাহ, আমি অমুক অমুক আমল করার সংকল্প করেছি...)।

ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ বিষয়াবলী



প্রশ্ন: ইহরাম অবস্থায় মুহরিমকে কোন কোন বিষয় থেকে বিরত থাকতে হবে?
উত্তর:
আলহামদুলিল্লাহ।
ইহরামের নিষিদ্ধ বিষয়াবলী: ইহরামের কারণে ব্যক্তিকে যে বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকতে হয়। যেমন:
১. মাথার চুল মুণ্ডন করা। দলিল হচ্ছে আল্লাহ তাআলার বাণী: “আর তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মাথা মুণ্ডন করবে না, যতক্ষণ না কোরবানীর পশু যথাস্থানে পৌঁছে যাবে।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৯৬] আলেমগণ মাথার চুলের সাথে শরীরের সমস্ত চুলকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অনুরূপভাবে নখ কাটা ও ছোট করাকেও এর অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
২. ইহরাম বাঁধার পর সুগন্ধি ব্যবহার করা; কাপড়ে হোক কিংবা শরীরে  হোক; খাবারদাবারে হোক কিংবা গোসলের সামগ্রীতে হোক কিংবা অন্য যে কোন কিছুতে হোক। অর্থাৎ ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার করা হারাম। দলিল হচ্ছে- যে ব্যক্তিকে একটি উট পায়ের নীচে চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছে সে ব্যক্তি সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “তাকে পানি ও বরই পাতা দিয়ে গোসল দাও। দুই কাপড়ে তাকে কাফন দাও। তার মাথা ঢাকবে না। তাকে হানুত দিবে না”। হানুত হচ্ছে- এক জাতীয় সুগন্ধির মিশ্রণ যা মৃত ব্যক্তির গায়ে লাগানো হয়।
৩. সহবাস করা: দলিল হচ্ছে আল্লাহর বাণী: “অর্থ- হজ্বের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি সেসব মাসে নিজের উপর হজ্ব অবধারিত করে নেয় সে হজ্বের সময় কোন যৌনাচার করবে না, কোন গুনাহ করবে না এবং ঝগড়া করবে না।”[সূরা বাকারা, আয়াত ২: ১৯৭]
৪. উত্তেজনাসহ স্ত্রীকে ছোঁয়া। যেহেতু এটি আল্লাহ তাআলার বাণী: فَلَا رَفَثَ (অর্থ- যৌনাচার নেই) এর অধীনে পড়বে। কারণ মুহরিম ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা কিংবা বিয়ের প্রস্তাব দেয়া জায়েয নেই। সুতরাং ছোঁয়া জায়েয না হওয়াটা আরও স্বাভাবিক।
৫. কোন শিকার হত্যা করা। দলিল আল্লাহ তাআলার বাণী: “অর্থ- হে ঈমানদারগণ, তোমরা ইহরাম অবস্থায় শিকার বধ করো না”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ৯৫] গাছ কর্তন করা মুহরিম ব্যক্তির জন্য হারাম নয়; তবে মক্কার হারামের সীমানার ভেতরের কোন গাছ হলে হারাম হবে এবং সেটি মুহরিম ব্যক্তি, মুহরিম নয় এমন ব্যক্তি- সবার জন্য হারাম। তাই আরাফার মাঠে মুহরিম ব্যক্তির জন্যেও গাছ উপড়ানো জায়েয। কারণ গাছ কর্তনের বিষয়টি হারাম এলাকার সাথে সম্পৃক্ত; ইহরামের সাথে নয়।

অন্যের খরচে হজ্জ আদায় করা



প্রশ্ন: আমি আমার ছেলের সাথে হজ্জ আদায় করেছি। হজ্জের যাবতীয় খরচ সে বহন করেছে। আমার ইচ্ছা ছিল আমার নিজ খরচে হজ্জ আদায় করব। এটা কি হজ্জের শুদ্ধতার উপর কোন প্রভাব ফেলবে না?
উত্তর:
আলহামদুলিল্লাহ।
অন্যের খরচে কারো হজ্জ আদায় করতে কোন অসুবিধা নেই। সেই অন্য ব্যক্তি তার ছেলে হোক, ভাই হোক অথবা বন্ধু হোক...। এটি হজ্জের শুদ্ধতার উপর কোন প্রভাব ফেলবে না। হজ্জ শুদ্ধ হওয়ার জন্য এমন কোন শর্ত নেই যে, ব্যক্তি তার নিজের অর্থ থেকেই খরচ করতে হবে।
স্থায়ী কমিটিকে এমন এক নারী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যার নিমন্ত্রণকারী তার হজ্জের যাবতীয় খরচ বহন করেছে।

কিভাবে আপনার হজ্জটি মকবুল হজ্জ হবে?



প্রশ্ন: আল্লাহ চাহেত কারো হজ্জ মকবুল হওয়ার জন্য একজন হাজীসাহেবের যে বিষয়গুলো জানা থাকা প্রয়োজন
উত্তর: 
আলহামদুলিল্লাহ।
হজ্জটি হজ্জে মকবুল হওয়ার জন্য একজন হাজীসাহেবের যে বিষয়গুলো জানা থাকা প্রয়োজন: হজ্জের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়ত করা। এটাই হচ্ছে- ইখলাস। এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী হজ্জ আদায় করা। এটাকে বলা হয়- মুতাবাআ (অনুসরণ)। যে কোন নেক কাজ এ দুটি র্শত পূর্ণ হওয়া ছাড়া কবুল হয় না: ইখলাস ও মুতাবাআ (রাসূলের অনুসরণ)। দলিল হচ্ছে- আল্লাহর বাণী: “তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা শিরকমুক্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম।[সূরা আল-বাইয়্যেনা, আয়াত: ৫] এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “সকল আমল নিয়্যত অনুযায়ী হয়ে থাকে। এবং প্রত্যেক ব্যক্তির যা নিয়ত করেন তিনি সেটাই পাবেন” এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করবে যার অনুমোদন আমাদের শরিয়তে নেই সেটা প্রত্যাখ্যাত।”
সুতরাং একজন হাজী সাহেব যার উপর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করবেন সেটা হচ্ছে- ইখলাস ও নবীর অনুসরণ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায়ী হজ্জকালে বলতেন: “তোমরা আমার নিকট থেকে তোমাদের হজ্জের পদ্ধতি জেনে নাও।”

Friday 11 September 2015

কুরআনুল কারীম বাংলা অনুবাদ ১ম খন্ড,ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া


قَدْ جَاءَكُم مِّنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُّبِينٌ
অর্থাৎ, “তোমাদের কাছে একটি উজ্জ্বল জ্যোতি এসেছে এবং একটি সুস্পষ্ট গ্রন্থ” ।
আল্লাহর কিতাবের প্রতি গুরুত্বারোপ ও এর প্রচার সহজ করা এবং প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্য পর্যন্ত মুসলিমদের মধ্যে এর বিতরণ নিশ্চিত করা এবং বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় এর অনুবাদ ও তাফসীর করা সম্বলিত খাদেমুল হারামাইন আশ-শারফাইন বাদশাহ সালমান ইবন আব্দুল আযীয আলে সাউদ-এর নির্দেশনা বাস্তবায়ন কল্পে, সর্বোপরি আমাদের বাংলা ভাষাভাষীদের সেবা প্রদানার্থে, মদীনাস্থ বাদশাহ ফাহদ কুরআন মুদ্রণ কমপ্লেক্স সানন্দে সম্মানিত পাঠক সমীপে এই বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর উপস্থাপন করেছে।
মূলতঃ রাজকীয় সৌদি সরকারের ওয়াকফ, দাওয়াহ্, ইরশাদ ও ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় দৃঢ়ভাবে একথা বিশ্বাস করে যে, বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সকল ভাষায় কুরআনুল কারীমের অনুবাদ করা, যাতে অনারব মুসলিমদের জন্য তা বুঝা সহজ হয় এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক আদিষ্ট “বালাগ” তথা পৌছে দেয়ার আহবান (অর্থাৎ, “আমার পক্ষ থেকে পৌছে দাও, তা একটি আয়াত হলেও”)-এর যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য এটিই সবোত্তম প্রচেষ্টা । এর অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর করেছেন, ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া । আর কমপ্লেক্স-এর পক্ষে তা পূনপাঠ করেছেন, শাইখ কাউছার এরশাদ ও শাইখ মুহাম্মাদ ইলিয়াছ ইবনে সালেহ আহমাদ । মহান আলাহ্ তা’আলার শুকরিয়া আদায় করছি যে, তিনি এই মহৎ কাজ সম্পন্ন করার তাওফীক দান করেছেন যা শুধুমাত্র তার সন্তুষ্টির জন্যই এবং যা দ্বারা সবাই উপকৃত হবে বলে আমরা আশা রাখি । অবশ্যই আমরা বিশ্বাস করি পবিত্র কুরআনুল কারীমের অনুবাদ (যতই সুনিপূণ হোক না কেন) তা আল্লাহর অমীয় বাণীর মর্মার্থ পুরোপুরি আদায়ে সমর্থ নয়; কেননা অনুবাদ হলো অনুবাদকের মেধাশক্তি দিয়ে কুরআনকে বুঝার প্রয়াস মাত্র, যার মধ্যে মানবীয় ভুল-ত্রুটি, অপূর্ণতা থাকা বিচিত্র কিছু নয় ।
Quranul Kareem
আল-কুরআনের অনুবাদটির অনন্য বৈশিষ্ট্য:
  • আল-কুরআনের সহজ সরল অনুবাদ
  • অনুবাদের পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত তাফসীর ও ব্যাখ্যা
  • প্রতিটি সূরার শুরুতে সূরার বৈশিষ্ট্য ও শানে নূযুল বর্ণিত।
  • কুরআনের সূরাগুলোর সহীহ হাদীসের আলোকে ফযীলত এর বিস্তারিত বিবরণ
  • কুরআনের তাফসীরকে সহজবোধ্য করার জন্য টীকা প্রদান ও এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা সুন্নাহ থেকে সংকলিত।
  • আল্লাহ সিফাত সম্পর্কিত আয়াতগুলোর অবিকৃত অনুবাদ।
  • কুরআনের তাফসীরের ক্ষেত্রে হাদীসকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এবং হাদীসগুলোর রেফারেন্সসহ বিস্তারিত ব্যাখ্যা বিদ্যমান।
এক নজরে বইটি
কুরআনুল কারীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর) ১ম খন্ড
অনুবাদ: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
প্রকাশনায়ঃ  কিং ফাহাদ হোলি কমপ্লেক্স
ফাইল টাইপঃ  পি.ডি.এফ
পৃষ্ঠা: ১৪৯৯
সাইজ: ৫৪ মেগাবাইট
ডাউনলোড
Mobile Version

উৎসঃ waytojannah

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...