Saturday 16 September 2017

দ্বীনের দাওয়াত সঠিক হলে দল সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ নাই...



নবীগন দাওয়াত দিয়েছেন, তাঁদের দাওয়াত আসমান থেকে সার্টিফাই করা হত। সাহাবিগন দাওয়াত দিয়েছেন, সে দাওয়াত রাসুল সঃ সার্টিফাই করতেন। রাসুল সঃ এর ওফাতের পর আসমানি তদারকি বন্ধ হয়ে যায়।
একারনেই উমার রাঃ এর মত জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবী হয়েও নিজ কর্ম কাণ্ডের গ্রহন যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। মরন শয্যায় দু’চোখের অশ্রু ফেলে কাঁদেন। ইবনু আব্বাস রাঃ তাঁর ক্রন্দন দেখে বলেন, ইবনুল খাত্তাব আপনি কেন কাদেন! আপনাকে কি আল্লাহর রাসুল জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে যান নি?
উত্তরে উমার রাঃ বলেন, হয়তো তা ছিল শর্ত সাপেক্ষ; কিন্তু আমি উমার তা পুরুনে হয়ত ব্যর্থ হয়েছি! তিনি আরো বলেন, আমার মনে হয়, এই মুহূর্তে যদি আল্লাহ বলেন সকলেই জান্নাতে যাবে কিন্তু একজন যাবেনা, তাহলে মনে হবে আমিই সেই ব্যক্তি তাই কান্না করছি!
এই ছিল জান্নাতের সংবাদ প্রাপ্ত সাহাবী উমর রাঃ’র মন বৃত্তি। এই ছিল তাঁর মত উঁচু শ্রেণীর সাহাবীর গুনাহ’র ভয়াবহতা নিয়ে সংশয়! এই ছিল আমল কবুল হওয়া না হওয়া নিয়ে তাঁর ভীতির নমুনা!!
অথচ আমরা এই জামানার ইসলামের কর্মীদের জবানে একি শুনি? একি দেখি তাদের আচরনে? তারা মরার জন্যে ফাসির কাষ্ঠে যাওয়ার মুহূর্তেও নিজ কর্ম পদ্ধতি ও দর্শনের উপর অনড় মনভাবের ঘোষণা দেন। দুই আঙ্গুল দিয়ে ভি সাইন দেখিয়ে বলে যান তাদের ব্যবসা সফল হয়েছে!
আমরা জানি এমন না করে উমরের মত করলে না দল সৃষ্টি করা যাবে, না দলের ভিতরে কাউকে ধরে রাখা যাবে। উমরের মত ইমানদার ও ইসলামের কর্মী হলে কোন দল সৃষ্টি হবে না তা নিশ্চিত। যেমন তাঁর কোন দল ছিলনা। কোন সাহাবীরই কোন দল সৃষ্টি হয়নাই।
এমন কাজ করে তারা যেমন নিজে গুনাহ মুক্তির সুজোগ থেকে বঞ্চিত হন। তেমনি লক্ষ্য লক্ষ্য অনুসারীদেরকে তাদের ভুলের উপর অনড় থাকার শিক্ষা দিয়ে যান।
আল্লাহ বলেন, “তারা কেয়ামতে নিজের গুনাহ ত বহন করবেই, তার উপর আরো বহন করবে তাদের সকলের গুনাহ যাদেরকে তারা বিভ্রান্ত করেছে-( নাহল/২৪)। দীনি ব্যবসায় পুরাই বিফল! সময় থাকতে সাহাবীদের পদাংক অনুসরণ করবেন বলে আমরা আশা করি।

Courtesy Shaykh SK Muzammelul Hoque

আলোকিত শান্তির বাণী-

আবু বকর সিদ্দিক

পরীক্ষা থেকে সুরক্ষিত থেকে কৃতজ্ঞ থাকা আমার কাছে বেশি পছন্দের

“পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে সবর করার চেয়ে পরীক্ষা থেকে সুরক্ষিত থেকে কৃতজ্ঞ হওয়া আমার কাছে বেশি পছন্দের।”
— আবু বাকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)
[ইবনে বাত্তাল, ড বিলাল ফিলিপস – সূরা বুরুজ তাফসির]

মৃত্যুকে খুঁজো

“মৃত্যুকে খুঁজো (অর্থাৎ, সাহসী হও) তাহলে তোমাদেরকে জীবন দান করা হবে।”
— আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)
[লা তাহযান – ড আইয আল কারনি, পৃ ১৫০]

অপরের কষ্ট দূর করার জন্য কষ্ট করার মাঝে রয়েছে মহত্বের প্রকৃত নির্যাস

“অপরের কষ্ট দূর করার জন্য কষ্ট করার মাঝে রয়েছে মহত্বের প্রকৃত নির্যাস।”
— আবু বকর সিদ্দীক (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

সেই ব্যক্তিই অভিশপ্ত যে মরে যায় অথচ তার খারাপ কাজগুলো পৃথিবীতে রয়ে যায়

“সেই ব্যক্তিই অভিশপ্ত যে মরে যায় অথচ তার খারাপ কাজগুলো পৃথিবীতে রয়ে যায়।”
— আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

Tuesday 12 September 2017

অমর বাণী



. ইমাম মালেক রাহেমাহুল্লাহ (৯৩-১৭৯ হি.)-এর নিকটে বিশ বছর অধ্যয়নকারী ছাত্র আব্দুল্লাহ ইবনু ওয়াহাব (১২৫-১৯৬ হি./৭৪৩-৮১২ খৃ.) বলেন,نَذَرتُ أَنِّي كُلَّمَا اغْتَبْتُ إِنْسَاناً أَنْ أَصُوْمَ يَوْماً فَأَجْهَدَنِي فَكُنْتُ أَغْتَابُ وَأَصُوْمُ، فَنَوَيْتُ أَنِّي كُلَمَّا اغْتَبتُ إِنْسَاناً أَنْ أَتَصَدَّقَ بِدِرْهَمٍ فَمِنْ حُبِّ الدَّرَاهِمِ تَرَكتُ الغِيْبَةَ ‘একবার আমি শপথ করলাম যে, কারো গীবত করলেই আমি একদিন ছিয়াম রাখব। কিন্তু এটা আমাকে খুব কষ্টে ফেলল। এরপরেও আমি গীবত করতাম ও ছিয়াম রাখতাম। অতঃপর আমি নিয়ত করলাম যে কারো গীবত করলেই একটি করে দিরহাম ছাদাক্বা করব। (এবার এতে কাজ হ’ল) ফলে দিরহামের ভালোবাসায় আমি গীবত ছেড়ে দিলাম (যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৮/১৫)।
. ফুযায়েল বিন ইয়ায (১০৭-১৮৭ হি.) বলেন,عَلَيْكَ بِطُرُقِ الْهُدَى وَلاَ يَضُرُّكَ قِلَّةُ السَّالِكِيْنَ، وَإِيَّاكَ وَطُرُقِ الضَّلاَلَةِ وَلاَ تَغْتَرَّ بِكَثْرَةِ الْهَالِكِيْنَ- ‘তুমি হেদায়াতের রাস্তাসমূহের পথিক হও। সঠিক পথের অনুসারীদের সংখ্যাল্পতা তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর তুমি ভ্রষ্টতার রাস্তাসমূহ হ’তে বেঁচে থাক এবং ধ্বংসের পথের যাত্রীদের আধিক্য দেখে প্রতারিত হয়ো না’ (নববী, মানাসিকুল হাজ্জ ২/৬৮-৬৯; আলবানী, তাহযীরুস সাজেদ ১০৫-১০৭ পৃ.)
. ইবনুল জাওযী (৫০৮-৫৯৭ হি.) বলেন,المِسْكِينُ كُلُّ المِسْكِيْنِ مَنْ ضَاعَ عُمْرَهُ فِي عِلْمٍ لَمْ يَعْمَلْ بِهِ، فَفَاتَتْهُ لَذَّاتُ الدُّنْياَ وَخَيْرَاتُ الآخِرَةِ، فَقَدِمَ مُفْلِسًا عَلىَ قُوَّةِ الحُجَّةِ عَلَيْهِ ‘সব মিসকীনের বড় মিসকীন সেই, যে তার সারাটা জীবন ব্যয় করল জ্ঞানের অন্বেষণে। অথচ সে অনুযায়ী আমল করল না। ফলে সে দুনিয়াবী সুখ থেকে বঞ্চিত হ’ল এবং আখেরাতের কল্যাণ সমূহ থেকেও বঞ্চিত হ’ল। অতঃপর নিজের বিরুদ্ধে শক্তিশালী সাক্ষ্যের বোঝা নিয়ে সে নিঃস্ব অবস্থায় হাশরের ময়দানে উপস্থিত হ’ল’ (ইবনুল জাওযী, ছায়দুল খাত্বের ১৫৯ পৃ.)।

Sunday 10 September 2017

গোটা মুসলিম উম্মাহ শত্রুদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে, এই আক্রমন হতে রক্ষা পাওয়ার উপায় কি?



উত্তর দিয়েছেনঃ ইমাম আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। তার রাসুলের উপর শান্তি ও দয়া বর্ষিত হোক।
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মুসলিম উম্মাহ তার শত্রুদের দ্বারা বিপদগ্রস্থ হচ্ছে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, “আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব, যাতে আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারি এবং জেনে নিতে পারি তোমাদের মধ্যে কে মুজাহিদ ও কে দৃঢ়পদে রয়েছে?” সুরা মুহা’ম্মদঃ ৩১।
মুসলিম উম্মাহ অবশ্যই তার শত্রুদের দ্বারা বিপদগ্রস্থ হবে, এবং তাকে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, “তোমাদেরকে প্রাণ ও সম্পদ উভয় ক্ষেত্রে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। এছাড়া আহলে কিতাব ও মুশরিকদের হতে বহু কষ্টদায়ক কথা শুনতে হবে। এ অবস্হায় তোমরা যদি ধৈ্য্য ধারণ করো এবং আল্লাহভীরুতার নীতি অনুসরণ করো, তাহলে তা হবে খুব বড় ধরণের দুঃসাহসিক কাজ।” আলে ইমরানঃ ১৮৬।
তিনি আরো বলেছেন, “যদি তোমরা ধৈর্য্য ধারণ করো এবং আল্লাহকে ভয় করো তাহলে তাদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র তোমাদের কোন ক্ষতিই করতে পারবেনা।তারা যা করছে আল্লাহ তা সবই জানেন।” আলে ইমরানঃ ১২০।
অতএব উম্মাহর কর্তব্য হল ধৈর্যধারণ করা, আত্নসমালোচনা করা, দ্বীনকে শক্তভাবে আকড়ে ধরা, শত্রু কি বলছে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করা, আল্লাহর কিতাব ও রাসুল (স) এর সুন্নতকে অনুসরণ করা, কথা, কাজ, আকিদা (বিশ্বাস) দিয়ে সুদৃঢ় ভুমিকা গ্রহন করা, এবং আল্লাহর শরীয়তকে তার বান্দাদের মধ্যে বাস্তবায়ন করা। সবগুলা ইসলামি দেশের জন্য এ মুহূর্তে এটাই কর্তব্য। যদি কথা, কাজ, আকিদা (বিশ্বাস) দিয়ে গোটা মুসলিম উম্মাহ সত্যিকার অর্থে আল্লাহর দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত হয় তবে শত্রুদের হৈচৈ ও ষড়যন্ত্র কোন ক্ষতিই করতে পারবেনা।
এ ব্যাপারে মহান আল্লাহর বাণী পূ্বেই উল্লেখ করেছি, “যদি তোমরা ধৈর্যধারণ করো এবং আল্লাহকে ভয় করো, তাহলে তাদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবেনা, তারা যা করছে আল্লাহ তা সবই জানেন।” আলে ইমরানঃ ১২০।
এ ব্যপারে আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল তার কিতাবে আরো বলেন, “তোমরা ধৈর্যধারণ করো, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথেই আছেন।” আনফালঃ ৪৬।
"তোমরা যদি আল্লাহকে সাহায্য করো, তিনিও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন, তোমাদের পা-কে দৃঢভাবে প্রতিষ্টিত রাখবেন।" মুহাম্মদঃ ৭।

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...