Saturday 25 October 2014

কোরআন ও সুন্নাহর দৃষ্টিকোণে স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যা

 
ভূমিকা
যার নিখুত সৃষ্টি কুশলতায় অস্তিত্ব লাভ করেছে এ বিশ্ব জাহান। যার অসীম কুদরতের অনুপম নিদর্শন চাঁদ-সুরুজ ও সিতারা-আসমান। যার করুণা স্নিগ্ধ লালন-প্রতিপালনে ধন্য সকল জড় উদ্ভিদ প্রাণ। সেই মহান রাব্বুল আলামীনের জন্যই আমার সকাল-সন্ধ্যার হামদ-সানা, আমার দিবস রজনীর স্তুতি-বন্দনা।
যার শুভাগমনে আঁধার ঘুচে মানবতার পূর্ব দিগন্তে এক নতুন সূর্যের উদয় হল। মানবতার মুক্তির জন্য মানুষেরই হাতে তায়েফের মাটি যার রক্তে রঞ্জিত হল; সেই নবী রাহমাতুল্লিল আলামীনের প্রতি আমার বিরহী আত্মার সালাত ও সালাম। মদীনা স্বপ্নে বিভোর আমার হৃদয়ের প্রেম-পয়গাম।

মানুষ স্বপ্ন দেখে। ভাল স্বপ্ন দেখে, বলে সুন্দর স্বপ্ন দেখেছি। দেখে খারাপ স্বপ্ন, বলে ভয়ানক এক স্বপ্ন দেখেছি। আবার কখনো বলে একটি বাজে স্বপ্ন দেখেছি।
আসলে স্বপ্ন কি? এ নিয়ে গবেষণা কম হয়নি, মানব সভ্যতার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত। কেউ বলেছেন, এটা একটি মানসিক চাপ থেকে আসে। কেউ বলেছেন, শারীরিক বিভিন্ন ভারসাম্যের ব্যাঘাত ঘটলে এটা দেখা যায়, সে অনুযায়ী। কেউ বলেছেন, সারাদিন মনে যা কল্পনা করে তার প্রভাবে রাতে স্বপ্ন দেখে।
স্বপ্ন আধুনিক মনোবিজ্ঞানেরও একটি বিষয়।
আবার অনেকে স্বপ্ন না দেখেও বলে এটা আমার স্বপ্ন ছিল। অথবা আমার জীবনের স্বপ্ন এ রকম ছিল না। মানে, মনের আশা, পরিকল্পনা। তাই স্বপ্নের অর্থ এখানে রূপক।
আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মানুষের জন্য পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা হিসাবে এসেছে ইসলাম। এই ইসলাম মানুষের স্বপ্নের ব্যাপারেও উদাসীন থাকেনি। স্বপ্ন সম্পর্কে তার একটি নিজস্ব বক্তব্য আছে। তার এ বক্তব্য কোনো দার্শনিক বা বিজ্ঞানীর বক্তব্যের সাথে মিলে যাবে, এমনটি জরুরী নয়। মিলে গেলেও কোনো দোষ নেই।

আপনি কিভাবে শয়তান থেকে বাঁচবেন


আল্ হামদু লিল্লাহ্ ওয়াছ্ ছালাতু ওয়াস্ সালামু আলা রাসূলিল্লাহ্।
সম্মানিত পাঠক-পাঠিকা! আল্লাহ আপনাকে এবং আমাকে শয়তান থেকে রক্ষা করুন। শয়তান মানুষের প্রথম এবং শেষ শত্রু প্রকাশ্য শত্রু। তার কুমন্ত্রণা ও অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য মানুষ মাত্রেই প্রচেষ্টা চালায়। কিন্তু অস্ত্র যদি ধারালো না হয় বা সঠিকভাবে নিক্ষিপ্ত না হয় তবে শত্রু লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে। তাই শয়তান নামক শত্রু থেকে বাঁচার জন্য মহান ক্ষমতাধর আল্লাহ্ তা‘আলার এলাহী অস্ত্রই হচ্ছে সবচেয়ে বড় মাধ্যম।
মনে রাখবেন, এই শয়তান থেকে বাঁচতে হলে মনগড়া রক্ষা-কবচ ব্যবহার করলে হবে না। যেমন তাবীয-কবচ, সুতা, তাগা, রিং প্রভৃতি। কেননা এগুলো ব্যবহার করা শির্ক। 

Friday 24 October 2014

গান বাজনার ব্যাপারে ইসলামের হুকুম




আল্লাহ তায়ালা বলেন:
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا(لقمان 6)
আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে, আর তারা ঐগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে। (সূরা লুকমান ৩১: ৬ আয়াত)।
বেশীর ভাগ তাফসীরকারকগণ ‍লাহওয়াল হাদীস বলতে গানকে বুঝিয়েছেন। 
উবনে মাসউদ রা. বলেন: উহা গান। 
ইমাম হাসান বছরী র. বলেন: উহা গান ও বাদ্য শানে নাজিল হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা শয়তানকে সম্বোধন করে বলেন:
وَاسْتَفْزِزْ مَنِ اسْتَطَعْتَ مِنْهُمْ بِصَوْتِكَ(الاسراء 64)
তোমার কন্ঠ দিয়ে তাদের মধ্যে যাকে পারো প্ররোচিত কর। (সূরা ইসরা ১৭: ৬৪ আয়াত)।

গান-বাদ্য ও এর কুপ্রভাব




গত কয়েক বছরে নাচ-গানের চর্চা অকল্পনীয় মাত্রায় বেড়েছে। দেশে যেখানে শিক্ষা-গবেষণা ও সুনাগরিক তৈরিতে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি নেই, পর্যাপ্ত বিনিয়োগ নেই, সেখানে চরিত্রবিধ্বংসী নাচ-গানের পেছনে অনুদান বা বিনিয়োগ তথা আগ্রহের অন্ত নেই। যেখানে রোজই চিকিৎসার অর্থ না পেয়ে মৃত্যুর জন্য প্রহরগোনা অসহায় মানুষের করুণ মুখ পত্রিকায় ছাপা হয় সেখানেই বহুজাতিক কোম্পানি ও বড় বড় ব্যবসায়িক ইন্ডাস্ট্রিগুলো তাদের উপার্জিত অর্থের অনেকটাই ঢালে নৃত্য ও সঙ্গীতের পেছনে! এখনো যেখানে বিরাটসংখ্যক মানুষের বাস দারিদ্রসীমার নিচে, আজো যারা পেটের আগুন নেভাতে গিয়ে নিজের ঈমান পর্যন্ত বিকিয়ে দিতে বাধ্য হয়, সেখানকারই একশ্রেণীর নাগরিক নির্দ্বিধায় পঞ্চাশ হাজার টাকায় কেনে এক সন্ধ্যার কনসার্টের টিকেট! যেখানে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক নয়, সেখানে আবার অনেক কিন্ডারগার্টেনে নিষ্পাপ শিশুদের নৃত্য ও সঙ্গীত শেখা বাধ্যতামূলক! আমরা যে আজ নাচ-গানে কতটা মেতেছে তা প্রমাণে বোধ হয় আর কিছু বলার দরকার নাই। তারপরও খানেকটা ইঙ্গিত দেয়া যাক। 

নামাযের দো‘আ ও যিক্‌র



প্রথমঃ তাকবীরে তাহরীমার পর ইস্তিফতা বা প্রারম্বিক দো

«اللهم باعد بيني وبين خطاياي كما باعدت بين المشرق والمغرب، اللهم نقني من خطاياي كما ينقى الثوب الأبيض من الدنس، اللهم أغسلني من خطاياي بالماء والثلج والبرد» (رواه البخاري ومسلم)
১. উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা বা‘ইদ বাইনী ও বাইনা খাতায়াইয়া কামা বাআদতা বাইনাল মাশরিক্বি ওয়াল মাগরিবি, আল্লাহুম্মা নাক্কিনী মিন খাতায়াইয়া কামা ইউনাক্কাস সাওবুল আবয়াদু মিনাদ্দানাসি, আল্লাহুম্মাগসিলনী মিন খাতায়াইয়া বিল মা-য়ি ওয়াস সালজি ওয়াল বারাদি।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমার এবং আমার গুনাহ্ খাতার মাঝে এমন দূরত্ব সৃষ্টি কর যেরূপ পশ্চিম ও পূর্বের দূরত্ব সৃষ্টি করেছ। হে আল্লাহ! আমাকে আমার গুনাহ থেকে এমনভাবে পরিষ্কার কর যেমন সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার করা হয়। হে আল্লাহ! আমার পাপসমূহকে পানি, বরফ ও শিশিরের মাধ্যমে ধৌত করে দাও। (বুখারী-মুসলিম)
«سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك» (رواه مسلم)
২. উচ্চারণ: সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবা-রাকাসমুকা ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুকা। (মুসলিম)
অর্থ: হে আল্লাহ! সকল দোষ হতে তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করছি এবং তোমারই সকল প্রশংসা, তোমার নাম মহিমান্বিত, তোমার মর্যাদা-বড়ত্ব অতি উচ্চে এবং তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবূদ বা উপাস্য নেই।
«وجهت وجهي للذي فطر السموات والأرش حنيفا وما أنا من المشركين، إن صلاتي، ونسكي، ومحياي، ومماتي لله رب العالمين، لا شريك له وبذلك أمرت وأنا من المسلمين اللهم أنت الملك لا إله إلا انت، أنت ربي وانا عبدك، ظلمت نفسي وأعتفت بذنبي فاغفرلي ذنوبي جميعا إنه لا يغفر الذنوب إلا أنت- وأهدني لأحسن الأخلاق لا يهدي لأحسنها إلا أنت، وأصرف عني سيّئها، لا يصرف عني سيئها إلا أنت لبيك وسعديك، والخير كله بيديك، والشر ليس إليك أنا بي وإليك تباركت وتعاليت أستغفرك وأتوب إليك» (رواه مسلم)
৩. উচ্চারণ: ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানীফাউঁ ওমা আনা মিনাল মুশরিকীন, ইন্না সালাতী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহ্ইয়ায়া ওয়া মামাতী লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন, লা-শারীকালাহু ওয়াবিযালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমীন।

নামায শিক্ষা


بسم الله الرحمن الرحيم

অনুবাদকের ভূমিকা
সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। দরুদ ও সালাম তাঁর বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি, যিনি সমগ্র বিশ্বমানবতার নবী, নবীকূলের শিরোমনি সৃষ্টিকুলের রহমত ও কল্যাণের প্রতীক। আমি শায়খ ডঃ আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ আলী আযযাইদের সালাত বিষয়ক গ্রন্থ "তালীমুস সালাহ" পাঠান্তে উপলব্ধি করি যে, এটির বঙ্গানুবাদ সর্বসাধারণের জন্য খুবই উপকারী হবে। কেননা বইটিতে নামায বিষয়ক বিধি-বিধান সহজ ও সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে। আমার সুহৃদ সাথি সাঈদুর রহমান মোল্লার সৎ পরামর্শে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও সমাজের উপকারের আশায় অনুবাদের কাজ আরম্ভ করি। বইটিকে পরিমার্জি করতে সাইফুল্লাহ ভাই, শফীউল আলম ভাই, মৌলানা আব্দুর রাউফ শামীম ও মৌলানা আমীর আলী প্রমুখ সম্পাদনার কাজে সহযোগিতা করেছেন। যাঁরা আমাকে এ কাজে উৎসাহ দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন, আল্লাহর কাছে তাদের মঙ্গল কামনা করছি। অনুবাদে লেখকের মূল বক্তব্য যথার্থভাবে প্রকাশের চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি এই অনুবাদ বাংলা ভাষা-ভাষীদের নিকট সমাদৃত হবে ইনশা আল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সকলকে এই পুস্তক থেকে উপকৃত হবার তাওফীক দিন। আমীন!

অনুবাদক

মুখবন্ধ
الحمد لله والصلاة والسلام على محمد بن عبد الله صلى الله عليه وسلم، وعلى آله وصحبه أجمعين، أما بعد:
নামায সম্পর্কে যে সকল বইপুস্তক লেখা হয়েছে, আমি তা একত্রিত করার প্রয়াস পাই। অতঃপর আমি যে বিষয়টি উপলব্ধি করি তা হল, যেসব কিতাব নামায সম্পর্কে লিখিত হয়েছে তার মধ্যে প্রায় সবগুলোই বিশেষ বিশেষ দিকের উপর গুরুত্বারোপ করে লিখিত হয়েছে। উদাহরণত এ বইগুলোর কোনটি নামাযের বিবরণ লিখিত হয়েছে, যার মধ্যে নামাযের ফযিলত ও গুরুত্বের বর্ণনা স্থান পায়নি। আবার কোনটি দ্বান্দিক মাসায়েলের আলোচনায় ভরে দেয়া হয়েছে, যা প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য আদৌ প্রযোজ্য নয়; তাই আমি এমনসব মাসআলা সংকলন করতে মনস্থ করলাম যেগুলো বাস্তবে প্রয়োগ করা মুসলিমের জন্য অপরিহার্য। কুরান-সুন্নাহর দলীলসমৃদ্ধ করে, দ্বান্দিক মাসায়েলগুলো অনুল্লেখ রেখে এবং বিস্তারিত ব্যাখ্যা বিশ্লেণের আশ্রয়ে না গিয়ে সহজ-সরলভাবে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যাতে সংক্ষিপ্ত অথচ তথ্যসমৃদ্ধ এ বইটি সর্বজন সমাদৃত হয় এবং বিদেশী ভাষায় অনুবাদের উপযোগী হয়। আল্লাহর নিকট প্রার্থনা তিনি যেন আমার এই শ্রমকে ফলপ্রসু করেন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, কবুলকারী। আর তিনিই একমাত্র তাওফীকদাতা।

ডঃ আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ আলী আযযাইদ
রিয়াদ
তারিখ ১/১/১৪১৪ হিজরী

Thursday 23 October 2014

মুহাররম মাসের সুন্নাত ও বিদ‘আত


ভূমিকা 

আল্লাহ তা‘আলা বার মাসের মধ্যে মুহাররম, রজব, যুলক্বা‘দাহ ও যুলহিজ্জাহ এই চারটি মাসকে বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন। এই মাসগুলো ‘হারাম’ বা সম্মানিত মাস হিসাবে পরিগণিত। ঝগড়া-বিবাদ, লড়াই, খুন-খারাবী ইত্যাদি অন্যায়-অপকর্ম হ’তে দূরে থেকে এর মর্যাদার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য। যেমন আল্লাহ বলেন, 
فَلاَ تَظْلِمُوْا فِيْهِنَّ أَنْفُسَكُمْ 
‘এই মাসগুলিতে তোমরা পরস্পরের উপরে অত্যাচার কর না’ (তওবা ৯/৩৬)। 
রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক আশূরার ছিয়াম পালন ও এর ফযীলত বর্ণনার মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবেই এ মাসের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে দুঃখের বিষয় হ’ল, রাসূল (ছাঃ) যে উদ্দেশ্যে আশূরার ছিয়াম পালন করেছেন, আমরা তাঁর উদ্দেশ্যের কথা ভুলে গিয়ে এমন উদ্দেশ্যে ছিয়াম পালন করছি যা কুরআন ও সুন্নাতের সম্পূর্ণ বিরোধী। সাথে সাথে এমন সব বিদ‘আতে লিপ্ত হয়েছি যা থেকে বেঁচে থাকা একান্ত যরূরী। 
নিম্নে মুহাররম মাসের সুন্নাত ও বিদ‘আত সম্পর্কে আলোকপাত করা হ’ল।-

Wednesday 22 October 2014

দানশীলতা




মহান আল্লাহ বলেন,
﴿ۚوَمَآ أَنفَقۡتُم مِّن شَيۡءٖ فَهُوَ يُخۡلِفُهُۥۖ﴾ [سبا: ٣٩] 
অর্থাৎতোমরা যা কিছু ব্যয় করবে তিনি তার বিনিময় দেবেন।(সূরা সাবা৩৯ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ وَمَا تُنفِقُواْ مِنۡ خَيۡرٖ فَلِأَنفُسِكُمۡۚ وَمَا تُنفِقُونَ إِلَّا ٱبۡتِغَآءَ وَجۡهِ ٱللَّهِۚ وَمَا تُنفِقُواْ مِنۡ خَيۡرٖ يُوَفَّ إِلَيۡكُمۡ وَأَنتُمۡ لَا تُظۡلَمُونَ﴾ [البقرة: ٢٧٢] 
অর্থাৎ তোমরা যা কিছু ধন-সম্পদ দান কর, তা নিজেদের উপকারের জন্যই। আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে তোমরা দান করো না। আর তোমরা যা দান কর, তার পুরস্কার পূর্ণভাবে প্রদান করা হবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না।(সূরা বাক্বারাহ ২৭২ আয়াত)
তিনি অন্যত্র বলেন,
﴿وَمَا تُنفِقُواْ مِنۡ خَيۡرٖ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِيمٌ﴾ [البقرة: ٢٧٣] 
অর্থাৎ আর তোমরা যা কিছু ধন-সম্পদ দান কর, আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত।(সূরা  বাকারাহ ২৭৩ আয়াত)
1/549 وعن ابن مسعود رضي الله عنه، عن النبيِّ ، قَالَ: «لا حَسَدَ إِلاَّ في اثْنَتَيْنِ: رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ مَالاً، فَسَلَّطَهُ عَلَى هَلَكَتِهِ في الحَقّ، وَرَجُلٌ آتَاهُ اللهُ حِكْمَةً، فَهُوَ يَقْضِي بِهَا ويُعَلِّمُهَا » متفقٌ عَلَيْهِ
২/৫৪৯। ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কেবলমাত্র দুটি বিষয়ে ঈর্ষা করা যায় (১) ঐ ব্যক্তির প্রতি যাকে মহান আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, অতঃপর তাকে হক পথে অকাতরে দান করার ক্ষমতা দান করেছেন এবং (২) ঐ ব্যক্তির প্রতি যাকে মহান আল্লাহ হিকমত দান করেছেন, অতঃপর সে তার দ্বারা ফায়সালা করে ও তা শিক্ষা দেয়।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]

মুহররম মাসঃ সুন্নাত ও বিদআত



মুহররম মাসের ফযীলতঃ

১) প্রখ্যাত সাহাবী আবু বাকরা রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন: আল্লাহ তাআলা আসমান সমূহ এবং যমিন সৃষ্টির দিন যে আকৃতিতে সময়কে সৃষ্টি করেছিলেন সেটা আবার তার নিজস্ব কৃতিতে ফিরে এসেছে। বরং এবং বারো মাসে এক বছর। তম্মধ্যে চারটি মাস অতি সম্মানিত। তিনটি মাস ধারাবাহিক। সেগুলো হল: যুল কা’দাহ (যিলকদ), যুল হিজ্জা (যিলহজ্জ) এবং মুহাররম এবং আরেকটি হল মুযার সমপ্রদায়ের রজব মাস যা জুমাদাল ঊলা এবং শাবানের মধ্যেখানে রয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম)
২) আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: রামাযানের পর সর্বোত্তম রোযা হল আল্লাহর মাস মুহাররামের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হল রাতের নামায।” (মুসলিম)
৩) আয়েশা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “জাহেলী যুগে কুরায়শগণ আশুরার রোযা পালন করত। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় এসে নিজে আশুরারা রোযা রাখলেন এবং সাহাবীদেরকেও রোযা রাখার নির্দেশ দিলেন। কিন্তু‘ যখন রামাযানের রোযা ফরয হল তখন তা পরিত্যাগ করা হল। যার ইচ্ছা রাখত যার ইচ্ছা রাখতনা।” (বুখারী)

মুহররম ও আশুরার ফজিলত




الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على نبينا محمد خاتم الأنبياء وسيد المرسلين وعلى آله وصحبه أجمعين وبعد: 

মুহররম, একটি মহান বরকতময় মাস। হিজরি সনের প্রথম মাস । এটি ‘আশহুরে হুরুম’ তথা হারামকৃত মাস চতুষ্টয়ের অন্যতম। আশহুরে হুরুম সম্বদ্ধে আল্লাহ তাআলা বলেন, 
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ ﴿36﴾[التوبة:36].
নিশ্চয় মাসসমূহের গণনা আল্লাহর কাছে বার মাস আল্লাহর কিতাবে, (সেদিন থেকে) যেদিন তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্য থেকে চারটি সম্মানিত, এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন। সুতরাং তোমরা এ মাসসমূহে নিজদের উপর কোন জুলুম করো না।{সূরা তাওবা:৩৬} 
সাহাবি আবু বাকরাহ রা. নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, নবীজী বলেন, 
{السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ: ثَلاثَةٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ، وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ } [رواه البخاري 2958]
বছর হলো বারোটি মাসের সমষ্টি, তার মধ্যে চারটি অতি সম্মানিত। তিনটি পর পর লাগোয়া জিলকদ, জিলহজ ও মুহররম আর (চতুর্থটি হলো) জুমাদাস সানি ও শাবানের মধ্যবর্তী রজব। {বোখারি:২৯৫৮}
মুহররমকে মুহররম বলে অভিহিত করা হয়েছে কারণ এটি অতি সম্মানিত। 

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...