কুরআন ও হাদীসে এ মাসের প্রথম দশ দিনের ব্যাপারে অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। নিচে সংক্ষেপে কিছু উপস্থাপন করলামঃ
১. আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
( وَالْفَجْرِ * وَلَيَالٍ عَشْرٍ *)
অর্থাৎঃ . ফজরের শপথ। দশ রাতের শপথ। (সূরা ফজরঃ ১-২)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় জগদ্বিখ্যাত মুফাসসির ইবনু কাছীর রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ এর দ্বারা যিল হজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন উদ্দেশ্য, যেমনটি আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস ও আব্দুল্লাহ বিন যুবাইর রাযিয়াল্লাহু আনহুম এবং মুজাহিদ রাহেমাহুল্লাহ প্রমুখগণ বলেছেন। (বুখারী)
২. আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ জিল হজ্জ্বের এই প্রথম দশকের চাইতে উত্তম এমন কোন দিন নেই, যে দিনগুলোর সৎ আমল আল্লাহ্র নিকট অধিক পছন্দনীয়। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন: হে আল্লাহ্র রাসূল ! আল্লাহর পথে জিহাদও কি নয় ? তিনি বললেন: আল্লাহ্র পথে জিহাদও নয়। তবে হ্যাঁ সেই মুজাহিদ ব্যক্তির কথা ভিন্ন, যে স্বীয় জান-মাল নিয়ে জিহাদে বেরিয়ে পড়ে আর উহার কিছুই নিয়ে প্রত্যাবর্তন করে না। (বুখারী, অনুচ্ছেদ: আইয়ামে তাশরীকের দিন গুলোতে আমল করার ফযীলত)
৩. আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
(وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَعْلُومَاتٍ)
অর্থাৎঃ আর যাতে তারা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে। (সূরা হাজ্জঃ ২৮)
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেনঃ “নির্দিষ্ট দিনগুলো” দ্বারা উদ্দেশ্য হলঃ জিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন। (তাফসীরে ইবনে কাছীর)
৪. আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যিল হজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন ব্যতীত এম কোন সুমহান দিন নেই যাতে নেক আমল করা আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়। সুতরাং তোমরা এই দিন গুলোতে বেশী বেশী তাহলীল, তাকবীর ও তাহমীদ (অর্থাৎঃ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ) পাঠ কর। (আহমাদ)
৫. জগদ্বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা ইবনু হাজার রাহিমাহুল্লাহ তাঁর ঐতিহাসিক বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারীতে বলেনঃ যিল হজ্জ মাসের এই দশ দিনের স্বাতন্ত্র্যের কারণ হয়তো এটাই যে, সকল মৌলিক ইবাদতগুলো এই দিনগুলিতে একত্রিত হয়েছে। যেমন; সলাত, সিয়াম, সাদাকাহ, হজ্জ। এ রকম আর অন্য কোন সময় হয় না।