এই ব্লগটির একমাত্র উদ্দেশ্য কুর‘আন ও সুন্নাহ্র আলোকে ইসলামের প্রকৃত বাণী প্রচার করা। আমাদের মেনে চলা উচিৎ কুরআন এবং হাদিস সেভাবে, যেভাবে সালাফে সলেহিনগন ব্যাখ্যা করেছেন......
Friday, 30 June 2023
রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার
১. খাদীজাহ বিনতে খুওয়াইলিদ (রাঃ) (خَدِيْجَةُ بِنْتُ خُوَيْلِدٍ):
হিজরতের পূর্বে মক্কায় নাবী কারীম (সাঃ)-এর পরিবারের সদস্য ছিলেন তাঁর প্রথমা পত্নী খাদীজাহ (রাঃ)। বিবাহের সময় নাবী কারীম (সাঃ)-এর বয়স ছিল পঁচিশ বছর এবং খাদীজাহ (রাঃ)-এর বয়স ছিল চল্লিশ বছর। তাঁর জীবদ্দশায় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) অন্য কাউকেও বিবাহ করেন নি। নাবী কারীম (সাঃ)-এর সন্তানাদির মধ্যে ইবরাহীম ছাড়া পুত্র কন্যাদের সকলেই খাদীজাহ (রাঃ)-এর গর্ভে জন্মলাভ করেন। পুত্র সন্তানগণের মধ্যে কেউই জীবিত ছিলেন না, কিন্তু কন্যা সন্তানগণ সকলেই জীবিত ছিলেন। তাঁদের নাম হচ্ছে যথাক্রমে, যায়নাব, রোকাইয়্যা, উম্মু কুলসুম এবং ফাত্বিমাহ (রাঃ)। যায়নাব (রাঃ)-এর বিবাহ সম্পন্ন হয় তাঁর ফুফাত ভাই আবুল আস বিন রাবীর সঙ্গে হিজরতের পূর্বে। রোকাইয়্যা এবং উম্মু কুলসুম (রাঃ) বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন (একজনের পর অন্য জন) উসমান (রাঃ)-এর সঙ্গে। ফাত্বিমাহ (রাঃ)-এর বিবাহ সম্পাদিত হয় আলী ইবনু আবূ ত্বালিব (রাঃ)-এর সঙ্গে, বদর এবং উহুদ যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে। ফাত্বিমাহ (রাঃ)-এর গর্ভে জন্ম গ্রহণ করেন হাসান ও হুসাইন, যায়নাব এবং উম্মু কুলসুম (রাযি.)।
এটি একটি বিদিত বিষয় যে, উম্মতবর্গের তুলনায় তাঁর একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ছিল এ রকম যে, আল্লাহর দ্বীনের খুঁটিনাটি প্রচারার্থে চারটিরও অধিক পত্মীগ্রহণের জন্য তিনি আদিষ্ট হয়েছিলেন। এ প্রেক্ষিতে যে সকল মহিলার সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তাঁদের সংখ্যা ছিল এগার জন। এদের মধ্যে নাবী কারীম (সাঃ)-এর মৃত্যু পর্যন্ত জীবিত ছিলেন নয় (৯) জন। নাবী কারীম (সাঃ)-এর জীবদ্দশায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন দু’জন। এ দু’জন ছিলেন খাদীজাহ (রাঃ) এবং উম্মুল মাসাকীন যায়নাব বিনতে খুযায়মাহহ (রাঃ)। অধিকন্তু, আরও দু’জন মহিলার সঙ্গে নাবী কারীম (সাঃ) বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন কিনা সে ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। কিন্তু এ প্রসঙ্গে একটি ব্যাপারে মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, এ দু’জনকে নাবী কারীম (সাঃ)-এর নিকট বিদায় করা হয় নি। নাবী কারীম (সাঃ)-এর পবিত্র বিবিগণ (রাযি.)-এর সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে পরবর্তী পর্যায়ে আলোচনা করা হল।
২. সাওদাহ বিনতে যাম’আহ (রাঃ) (سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ):
খাদীজাহ (রাঃ)-এর মৃত্যুর কয়েক দিন পর নুবওয়াতের দশম বর্ষ শাওয়াল মাসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাওদাহ (রাঃ)-এর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। নাবী কারীম (সাঃ)-এর সঙ্গে বিবাহের পূর্বে সাওদাহ (রাঃ) তাঁর চাচাত ভাই সাকরান বিন আমরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর কারণে তাঁকে বৈধব্য বরণ করতে হয়েছিল। সাওদাহ (রাঃ) ৪৫ হিজরীতে মদীনায় মৃত্যুবরণ করেন।
৩. আয়িশাহ সিদ্দীকা বিনতে আবূ বাকর (রাঃ) (عَائِشَةُ بِنْتُ أَبِيْ بَكْرِ الصِّدِّيْق):
আয়িশা (রাঃ)-এর সঙ্গে নাবী কারীম (সাঃ) বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন একাদশ নবুওয়াত বর্ষের শাওয়াল মাসে। অর্থাৎ সাওদাহ (রাঃ)-এর সঙ্গে বিবাহের এক বছর পর এবং হিজরতের দু’ বছর পাঁচ মাস পূর্বে। ঐ সময় তাঁর বয়স ছিল ছয় বছর। অতঃপর হিজরতের সাত মাস পর প্রথম হিজরীর শাওয়াল মাসে তাঁকে বিদায় জানানো হয়। সে সময় তাঁর বয়স হয়েছিল নয় বছর। তিনি কুমারী। আয়িশাহ (রাঃ) ছাড়া আর অন্য কোন স্ত্রীকেই তিনি কুমারী অবস্থায় বিবাহ করেন নি। আয়িশাহ (রাঃ) ছিলেন নাবী কারীম (সাঃ)-এর সব চাইতে প্রিয়পাত্রী অধিকন্তু, নাবী পত্মীগণের মধ্যে তিনিই ছিলেন সব চাইতে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমতী। তিনি ৫৭ বা ৫৮ হিজরীর ১৮ রামাযান মৃত্যুবরণ করেন এবং তাঁকে জান্নাতুল বাক্বী’তে দাফন করা হয়।
৪. হাফসাহ বিনতে উমার বিন খাত্তাব (রাঃ) (حَفْصَةُ بِنْتُ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّاب):
তিনি ছিলেন বিধবা তাঁর পূর্ব স্বামীর নাম ছিল খুনাইস বিন হুযাফাহ, (রাঃ) বদর এবং উহুদ যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। খুনাইসের মৃত্যুর পর হাফসাহ (রাঃ) ইদ্দত শেষ হলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর সঙ্গে তৃতীয় হিজরীর শা’বান মাসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। হাফসাহ (রাঃ) হিজরীর শা’বান মাসে মদীনায় ইনতিকাল করেন এবং তাঁকে বাক্বী’ কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।br
৫. যায়নাব বিনতে খুযায়মাহ (রাঃ) (زَيْنَبُ بِنْتُ خُزَيْمَةَ):
এ মহিলার সম্পর্ক ছিল বনু হিলাল বিন আমরে বিন সা’সাহ গোত্রের সঙ্গে। মিসকীনদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্য, দানশীলতা ও সহানুভূতিশীল হওয়ার কারণে তার পদবী হয়েছিল উম্মুল মাসাকীন। তাঁর প্রথম স্বামী ছিলেন আব্দুল্লাহ বিন জাহশ।
Tuesday, 27 June 2023
আরাফা দিবসে বেশী বেশী দুআ
আরাফা দিবসে বেশী বেশী দুআ করা কাম্য।
***********----------------------************"
দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণকর সমস্ত দুআই করুন।
তন্মধ্যে এই যিকরটি:
لا إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ» (حسن، رواه الترمذي).
হে মহান আল্লাহ! আমাদের প্রকৃত মুমিন হওয়ার তৌফিক দান করো।
হে আল্লাহ্! আমাদের ছোটো বড় গুনাহ্ মাফ করো।
হে আল্লাহ্! আমাদের আমল সমূহ কবূল করো।
হে আল্লাহ্! আমাদের তোমার মনোনিত দ্বীন ইসলাম ঐ ভাবে বুঝার ও ঐ ভাবে আমল করার তৌফিক দিও যেভাবে বুঝেছিলেন তোমার হাবীব নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার একনিষ্ঠ সঙ্গীগণ।
হে আল্লাহ্! ফেত্নার যুগে তুমি আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করো, যে পথে ছিলেন নবীগণ, সিদ্দিকগণ, শুহাদা ও নেক মুমিনগণ।
হে আল্লাহ্! তুমি জগতের মুসলিমদের তাওহীদ বুঝার ও তার প্রতি আমল করার তৌফিক দান করো।
হে আল্লাহ্! তুমি আমাদের ইলম, রুজি ও আমলে বরকত দাও।
হে আল্লাহ্! আমাদের হালাল রোজগারের তৌফিক দান করো এবং হারাম থেকে দূরে রাখো।
হে আল্লাহ্! আমাদের সন্তানদের হেদায়েত দাও তাদের অন্তরে ইসলামের ঈমানের ভালোবাসা দাও এবং তাদের নেক বানাও।
হে আল্লাহ্! আমাদের বৃষ্টি দাও। তোমার রহমত থেকে বঞ্চিত করো না।
হে আল্লাহ্! আমাদের প্রিয়জন, আত্মীয় স্বজন, পূর্বসূরি যাঁরা মারা গেছেন, আল্লাহ্ তুমি তাদের ক্ষমা করো। বিশেষ করে আমাদের পিতা ও মাতার উপর রহম কর যেমন তারা ছোটবেলায় আমাদের উপর রহম করে ছিল।
হে আল্লাহ্! আমাদের অসুস্থদের সুস্থতা দান করো।
হে আল্লাহ্! আমাদের গীবত, চুগলি, আপস দ্বন্দ্ব ইত্যাদি থেকে হেফাজতে রাখো।
হে আল্লাহ্! আমাদের অজ্ঞতা ও পাপের কারণে আমাদের পাকড়াও করি ও না।
হে মহান আরশের মালিক, আকাশ জমিনের মালিক, কেয়ামত দিবসের মালিক! আমাদের ক্ষমা করে দাও, তোমার রহমতে ঢেকে দাও, তোমার সুরক্ষায় স্থান দাও, জান্নাতুল ফেরদাউসে স্থান দাও, তোমার আরশের নিচে, তোমার নবীর সান্নিধ্যে, তোমার একান্ত প্রিয় বান্দাদের সাথে।
আমীন ইয়া রাব্বিল আলামীন ইয়া আরহামার রহিমীন।
Shaykh Abdur Raquib Bukhari Hafizahullah
Subscribe to:
Posts (Atom)