Saturday 22 November 2014

কুরআনে কারীম ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে গুনাহ্ মাফের আমল




নবুয়্যাতের প্রদীপ থেকে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
« قَالَ اللَّهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى: مَنْ عَلِمَ أَنِّي ذُو قُدْرَةٍ عَلَى مَغْفِرَةِ الذُّنُوبِ، غَفَرْتُ لَهُ وَلا أُبَالِي مَا لَمْ يُشْرِكْ بِي شَيْئًا» . (صحيح الجامع الصغير و زيادته: 4206).
“আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন: যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে, আমিই গুনাহ মাফ করার ক্ষমতাবান, তাকে আমি ক্ষমা করে দেই এবং যতক্ষণ সে আমার সাথে কোনো কিছুকে শরীক না করে, ততক্ষণ (তাকে ক্ষমা করার ব্যাপারে) আমি কোনো কিছুর পরওয়া করি না।” [সহীহুল জামে‘ আস-সাগীর ওয়া যিয়াদাতুহু: ৪২০৬]।

আল-কুরআনুল কারীম ও পবিত্র সহীহ সুন্নাহ’র আলোকে গুনাহ্ মাফের আমল
بسم الله الرحمن الرحيم
ভূমিকা
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি; আর আমাদের নফসের জন্য ক্ষতিকর এমন সকল খারাপি এবং আমাদের সকল প্রকার মন্দ আমল থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। আল্লাহ যাকে পথ প্রদর্শন করেন, কেউ তাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না; আর তিনি যাকে পথহারা করেন, কেউ তাকে পথ দেখাতে পারবে না। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।
অতঃপর:
বান্দা অপরাধ থেকে মুক্ত নয়; সুতরাং এই ত্রুটি থেকে কোনো আদম সন্তানই মুক্ত নয়। আর নিষ্পাপ শুধু সেই, যাকে আল্লাহ তা‘আলা পাপমুক্ত করেছেন।
আর মানুষ শক্তি ও সামর্থ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে; এটাই অমোঘ মূলনীতি। আর যে ব্যক্তি নিজকে নিয়ে পর্যালোচনা করবে, সে তাকে এই ধরনের ত্রুটিতে ভরপুর পাবে; সুতরাং যখন তাকে তাওফীক (শক্তি-সামর্থ্য) দেওয়া হবে, তখন তার উপর ধ্বংসাত্মক আক্রমণের ভয়ে সে এর থেকে সতর্ক ও সচেতন হবে এবং আল্লাহর পথ থেকে ভিন্ন পথে চলার কারণে সে ব্যথা অনুভব করবে। অতঃপর যখন সে ব্যথা ও কষ্ট অনুভব করবে, তখন সে মুক্তির আশায় গুনাহের অভ্যাস ছেড়ে দিয়ে দ্রুত আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে। আর তখন সে গুনাহ মাফের দরজা উন্মুক্ত অবস্থায় পাবে, যার দুই পাল্লায় লেখা থাকবে: 
﴿ ۞قُلۡ يَٰعِبَادِيَ ٱلَّذِينَ أَسۡرَفُواْ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُواْ مِن رَّحۡمَةِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ جَمِيعًاۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلۡغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ ٥٣ ﴾ [الزمر: ٥٣] 
“বলুন, ‘হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ---আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয় আল্লাহ্ সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”[1]

হাদীসের আলোকে আদর্শ স্বামী


শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যানি পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু।
লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন আল আযহারী।সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿وَمِنۡ ءَايَٰتِهِۦٓ أَنۡ خَلَقَ لَكُم مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ أَزۡوَٰجٗا لِّتَسۡكُنُوٓاْ إِلَيۡهَا وَجَعَلَ بَيۡنَكُم مَّوَدَّةٗ وَرَحۡمَةًۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَأٓيَٰتٖ لِّقَوۡمٖ يَتَفَكَّرُونَ ٢١ ﴾ [الروم: ٢١]
“আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে”। [সূরা : আর্-রূম: ২১]
হাদীসে এসেছে,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لِأَهْلِهِ، وَأَنَا خَيْرُكُمْ لِأَهْلِي»
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম, আর আমি তোমাদের মধ্যে আমার স্ত্রীদের নিকট সর্বোত্তম ব্যক্তি”[1]
স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের অর্ধাঙ্গ। মানুষ যেমন তার অর্ধেক অঙ্গ নিয়ে পূর্ণ জীবনের সাধ পেতে পারে না, তেমনি একজন লোক একজন ভাল স্বামী বা স্ত্রী ছাড়াও পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে পারে না। একে অপরকে যতটা বুঝতে পারবে তাদের জীবন ততটাই সুন্দর ও মধুময় হবে। একজন পুরুষের জীবনে যেমন অন্যতম আশা থাকে ভালো একজন স্ত্রী পাওয়া, তেমনিভাবে একজন মেয়েরও জীবনে সবচেয়ে বড় চাওয়া পাওয়া হলো ভালো একজন স্বামী ভাগ্যে জুটা। একমাত্র একজন আদর্শ স্বামীই পারে তার স্ত্রীর জীবনকে পূর্ণ করে দিতে। স্বামীর বাড়ির লোকজন যতই খারাপ হোক, যতই নিষ্ঠুর হোক, স্বামী যদি তার স্ত্রীকে বুঝতে পারে, তাকে ভালোবাসা দিয়ে পূর্ণ করে দিতে পারে, তবে তাদের সংসার জীবন অনাবিল সুখে ভরপুর হয়ে যাবে। সেখানে পাওয়া যাবে জান্নাতের সন্ধান। এজন্য একজন ভাল স্বামী পাওয়াও কিন্তু ভাগ্যের ব্যাপার। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমগ্র মানবজাতির জন্য উত্তম আদর্শ। তিনি একদিকে যেমন একজন নবী-রাসূল, সেনাপতি, রাষ্ট্রপতি, অন্যদিকে তিনি তার স্ত্রীদের নিকট সবচেয়ে ভালোবাসার পাত্র ছিলেন। একজন স্বামী হিসেবে আপনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যদি আপনার আদর্শ বানাতে পারেন তবে পৃথিবীর সব স্ত্রীরাই সুখী হবেন, আপনার সংসারটা কানায় কানায় ভরে যাবে ভালোবাসায়। আপনি পাবেন আপনার স্ত্রীর সীমাহীন ভালোবাসা, আপনার স্ত্রী আপনাকে নিয়ে সকলের কাছে গর্ব করবে। বলবে, এমনই একজন স্বামী তার জীবনে স্বপ্ন ছিল। স্বামী হিসেবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ট মহামানব। কি কি কাজ করলে আপনি একজন আদর্শ স্বামী হবেন এবং স্বামী হিসেবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেমন ছিলেন তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:

Friday 21 November 2014

ছহীহ সুন্নাহর আলোকে বিতর নামায


ছহীহ সুন্নাহর আলোকে বিতর নামায: খুব সুন্দর একটি বই-ডাউনলোড করুন (ওয়ার্ড ও পিডিএফ ভার্সন)


আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

 বিতর নামায অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নামায। এ ব্যাপারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের জানা দরকার। ‌যেমন:
    • বিতর নামায কি ওয়াজিব না সুন্নাত?
    • বিতর নামায পড়ার পদ্ধতি কি? আমাদের দেশে যেভাবে বিতর নামায  কতটুকু দলীল ভিত্তিক?
    • তিন রাকাআতের কম বা বেশি কি বিতর নামায পড়া যায়? যেমন এক রাকআত, ৫ রাকাআত, ৭ রাকাআত ইত্যাদি?
    • দুআ কুনুত কি এবং তা কখন কিভাবে পড়ব?
    • বিতর নাময ছুটে গেলে কাযা পড়া যায় কি? ইত্যাদি বিষয়ের উত্তর দিয়ে সাজানো এই বইটি। এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট হচ্ছে প্রতিটি বষয়ই রেফারেন্স সহকারে উল্লেখ করা হয়েছে। আমার জানা মতে বাংলা ভাষায় বিতর নামায সম্পর্কে এমন দলীল সমৃদ্ধ বই এই প্রথম। লিখেছেন: সম্মানিত শাইখ মুহা: আব্দুল্লাহ আল কাফী। প্রকাশ করেছে: জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদী আরব। পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৭৯
বইটির পিডিএফ ভার্সন ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।
আর ওয়ার্ড ভার্সন ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন। (মাত্র ৫৫২ কেবি)

Wednesday 19 November 2014

রাসূল (সা)-এর ২৪ ঘন্টা

ইসলাম অন্যান্য প্রচলিত ধর্মের ন্যায় কেবল কতিপয় কর্মকান্ডের সমাহারের নামই নয়। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার নাম। একজন ব্যক্তি ফজরের সালাতের জন্য সুবহে সাদিকের পর ঘুম থেকে উঠা এবং দিন অতিবাহিত হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সম্পন্ন করার মাধ্যমে রাত্রিযাপন করে। আবার সুবহে সাদিক পর্যন্ত এই যে ২৪ঘন্টা সময় আছে তাতে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইসলামের বিধান বিদ্যমান আছে। আমাদের অনেকের ইসলাম সম্পর্কে ভালো জ্ঞান না থাকা, সামাজিকভাবে ইসলাম বিদ্বেষীভাব, রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামের প্রতি বৈরিতা প্রদর্শনসহ বিবিধ কারণে ইসলামকে অন্যান্য ধর্মের ন্যায় মনে করার মাধ্যমে ইসলাম থেকে অনেক দূরে অবস্থান করেছেন।
রাসূল (সা)-এর জীবনে রয়েছে আমাদের জন্য চলার পথে পাথেয়। তার জীবনের সম্পূর্ণ দিকই সুন্নাহ। আবার তাঁর চরিত্রই কুরআন। অর্থ্যঅত কুরআনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিফলন রাসূল (সা)-এর চরিত্র। রাসূল (সা) এর সামগ্রিক জীবন তথা পূর্ণাঙ্গ ২৪ ঘন্টা সম্পর্কে আমাদের জানা বাঞ্জনীয়। এই জীবনই অনুসরণ করার মাধ্যমে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ লাভ করতে পারে। রাসূল (সা)-এর পূর্ণাঙ্গ জীবন সম্পর্কে ধারণা দিতেই পিস পাবলিকেশন্স, বাংলাদেশ পরিবেশন করছে “রাসূল (সা)-এর ২৪ ঘন্টা”।
24 hours of Rasulullah
বইটির মূল অংশগুলো সংকলিত হয়েছে নিম্নোক্ত লেখকগণের বিভিন্ন লেখা হতে মুহাম্মদ ইবনে ইবরাহীম আততুওয়াইজিরী, শাইখ আল্লামা আদনান আত্‌তারশাহ, শাইখ মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ মাদানী ও খান মোছলেহ উদ্দীন আহমদ।
বইটি সংকলন করেছেন “মো: রফিকুল ইসলাম”  সম্পাদনা করেছে পিস সম্পাদনা পর্ষদ।
বইটির উল্লেখযোগ্য  বৈশিষ্ট্য:
  1. বইটি কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে সংকলিত
  2. বইটিতে অধ্যায় ভিত্তিকের পাশাপাশি পরিচ্ছেদ আকারে সাজানো
  3. উল্লেখিত কুরআনের আয়াতগুলোর সূরার নামের পাশাপাশি আয়াত নম্বর উল্লেখ।
  4. রাসূল (সা)-এর হাদীসগুলোর উল্লেখের পাশাপাশি হাদীস নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।
  5. বইটি সহজ সরল ভাষায় সংকলিত।
বইটির আলোচ্য বিষয়ের কিয়দংশ :
বইটিতে সর্বমোট চারটি অধ্যায়ে সন্নিবেশিত করা হয়েচে —
১. রাসূল (সা)-এর সংক্ষিপ্ত জীবনী ও তাঁর স্মরণীয় বরণীয় ঘটনা
২. রাসূল (সা) যা ভালোবাসতেন বা পছন্দ করতেন
৩. রাসূল (সা) যা অপছন্দ করতেন
৪. রাসূল (সা) এর দৈনন্দিন জীবনের আমলসমূহ।
প্রতিটি অধ্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচ্ছেদ উল্লেখ করার পাশাপাশি বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য : অনেক ওয়েবসাইট আমাদের বইগুলো শেয়ার করছেন যা অবশ্যই কাম্য। কিন্তু আমাদের মিডিয়াফায়ার লিংক তারা সরাসরি শেয়ার না করে নিজেদের সার্ভার বা অন্য একাউন্টে আপলোড করে শেয়ার করছেন। কিন্তু এতে একটি সমস্যা দেখা যাচ্ছে। তা হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে আমাদের অনেক বড় বইতে স্ক্যান করতে দু একটি পাতা মিসিং হয়ে যাচ্ছে। পরবর্তিতে পাঠকদের মন্তব্যের পরবর্তিতে আমরা ওই বইটি আপডেট করে ওই একই লিংকেই রিপ্লেস করি। যা অন্য সাইট এর লিংক থেকে ডাউনলোড করলে তা ঠিক হয়না। তাই আমাদের লিংক অপরিবর্তিত রাখুন। এতে আমরা লিংক আপডেট করার পাশাপাশি কতবার ডাউনলোড হচ্ছে তাও বুঝতে পারবো। সকলে সহযোগীতায় আমরা আমাদের কাজকে আরো বেগবান করতে পারবো বলে আশা করি।
সংগ্রহ ঃ waytojannah

Tuesday 18 November 2014

দুআ-মুনাজাতে নবী রাসূলের অসীলা দেয়া : একটি পর্যালোচনা



الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على أشرف الأنبياء والمرسلين محمد وعلى آله وأصحابه أجمعين.
বিভিন্ন দুআ মুনাজাতের সময় দেখা যায়, ইমাম সাহেব বা আলেম সাহেব দুআ-মুনাজাতের মধ্যে বলছেন, 'হে আল্লাহ! মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তোফায়েলে আমাদের দুআ কবুল করুন।'
অনেকে বলে থাকেন, 'হে আল্লাহ আপনার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অসীলায় আমাদের দুআ কবুল করুন।'
একটি মসজিদে মাঝে মধ্যে জুমুআর সালাত আদায় করতাম। দেখতাম, ইমাম সাহেব দ্বিতীয় খুতবায় দুআ করার সময় বলছেন:
أللهم إنا نتوسل إليك بجاه نبيك الميمون.
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমরা আপনার বরকতময় নবীর অসীলা নিচ্ছি.. ।
একটি দুআ অনুষ্ঠানে শুনলাম, দুআকারী আলেম সাহেব বলছেন :
سهل يا إلهي كل صعب بحرمة سيد الأبرار.
‘হে আমার মাবুদ! নেককারদের মহান নেতার মর্যাদায় সকল মুশকিল আসান করে দিন।'
হজের সফরে বিমানে এক ব্যক্তিকে দেখলাম, আমার পাশে বসে দুআ করছে, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার রওজা যিয়ারত করার জন্য হজে রওয়ানা দিলাম। আপনি আল্লাহর কাছে শাফায়াত করে আমার হজ কবুল করিয়ে দিন।'
অনেক দিন পূর্বে একটি জিকিরের জলছায় বসেছিলাম। দেখলাম, জলছার পরিচালক বলছেন, ‘সকলে বলুন, আমার কলব অমুকের কলবের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে। তার কলব দাদাপীর অমুকের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে। তার কলব অমুকের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে ... । তার কলব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে, হে মাবূদ তার অসীলায় আমাদের তওবা কবুল করুন ...।' 

অলী আওলিয়াদের অসীলা গ্রহণ : ইসলামি দৃষ্টিকোণ



بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله والصلاة والسلام على من لا نبي بعده
সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহর জন্য। সালাত ও সালাম নিবেদন করছি আমাদের সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সকল সাহাবীগণের প্রতি।
বর্তমান সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি ইসলাম সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান না থাকার কারণে বা ইসলাম সম্পর্কে উদাসীনতার কারণে ইসলাম ধর্মের নামে অনেক অনাচার, কুসংস্কৃতি, শিরক ও বিদআত প্রচলিত আছে ও প্রচলন ঘটছে। এর মধ্যে একটি হল, অলী আওলিয়াদের অসীলা দিয়ে দুআ-প্রার্থনা করা, তাদের কাছে সাহায্য চাওয়া, তারা ভাল-মন্দ কিছু করতে পারে বলে বিশ্বাস রাখা, তাদের সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত লাভ করা যাবে বলে বিশ্বাস করা। এ উদ্দেশ্যে তাদের কবর যিয়ারত করা, তাদের কবর তওয়াফ করা, কবরে উরস উৎসব আয়োজন করা ইত্যাদি। অনেক মুসলিম এ সকল কাজ এ ধারনার ভিত্তিতেই করে যে, এই কবরে শায়িত অলী আওলিয়ারা আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হলে আল্লাহর রহমত লাভ করা যাবে। অথবা তাদেরকে অসীলা বা মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করলে আল্লাহ আমাদের উপর সন্তুষ্ট হবেন। তাদেরকে অসীলা হিসাবে গ্রহণ করতে যেয়ে তারা তার মাধ্যমে বা তার নামে বিপদ থেকে মুক্তি কামনা করে আল্লাহর কাছে। অনেকে সরাসরি তাদের কাছেই নিজেদের প্রয়োজন ও অভাব পুরণের জন্য প্রার্থনা করে। বিপদ থেকে উদ্ধার কামনা করে। তারা মনে করে এ ধরণের অসীলা গ্রহণ করতে ইসলামে নিষেধ নয়। বরং এদের অনেকে মনে করে এ ধরনের অসীলা গ্রহণ ইসলামে একটি ভাল কাজ।

কিন্তু আসলে অসীলা গ্রহণ কী? এর বৈধতা কতটুকু?

বইটিতে এ বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করার প্রয়াস পাবো ইনশাআল্লাহ। 
সত্যিকার অসীলা হল, আল্লাহ তাআলার আনুগত্য ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অনুসরণের মাধ্যমে সৎকর্ম করা আর নিষিদ্ধ ও হারাম কথা-কর্ম থেকে বেঁচে থাকা। আর নেক আমল সম্পাদন করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা হল সত্যিকার অসীলা। তা ছাড়া আল্লাহর সুন্দর নামসমূহ ও গুণাবলির মাধ্যমে অসীলা গ্রহণের কথা আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেছেন।

যখন চাইবে আল্লাহর কাছেই চাইবে


যখন চাইবে আল্লাহর কাছেই চাইবে

সমুদ্র ভ্রমণে বন্ধুর আমন্ত্রণ, না করতে পারেনি সাজিদ। অল্প সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে বের হয়ে পড়ল প্রয়োজনীয় কাজ সেরে বাহনে চেপে বসল সী-ট্রাকের ছাদে দাঁড়িয়ে চারিদিকের মোহনীয় সব দৃশ্য দেখে জ্ঞান হারাবার পালা। প্রকৃতি এত সুন্দর? এত অপরূপ মহান স্রষ্টার সৃষ্টি? এ যে কল্পনাকেও হার মানায়। উপরের নীল আকাশ সাগরের রূপালী জলরাশিতে নীল চাদর বিছিয়েছে যেন, কি অপরূপ নীলাভ করে তুলেছে তাকে। বহুদূর থেকে ছুটে আসা দক্ষিণা সমীরণ তরঙ্গ তুলে আরো মোহনীয় করে তুলেছে সমুদ্র গভীর থেকে জেগে উঠা তরঙ্গরাজি মহান আল্লাহর অসীম কুদরতের সাক্ষ্য দিচ্ছে যেন সী-ট্রাকের প্রাচীরে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশির হিল্লোল দেখছে আর বিস্ময়াভিভূত হচ্ছে সাজিদ কেবল মহান আল্লাহর দ্বারাই এই সৃষ্টি সম্ভব যিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশ, জমিন, পাহাড়, সমুদ্র... সবকিছুসাজিদ ভাবছে আর আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা ও অনুরাগ গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে পরিস্থিতির সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হয়ে চারিদিক দেখছে আর উদ্বেলিত হচ্ছে। দেখছে সমুদ্র বুক চিরে সী-ট্রাক অপূর্ব ভঙ্গিমায় এগিয়ে যাচ্ছে সম্মুখ পানে। সেই সৌন্দর্য্য আরোও উপভোগ করার জন্য নিচের দিকে তাকাল সাজিদ বিশাল এক ঢেউ আছড়ে পড়ল সী-ট্রাকের গায়। প্রচন্ডভাবে কেঁপে উঠল সী-ট্রাক। সাজিদ শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে পারল না, আর অমনি বিপদ আপতীত হল সিটকে গিয়ে পানিতে পড়ল সাজিদ বিপদ আরো তীব্রতা লাভ করল। কারণ সে ভাল সাতার জানে না বাঁচাও! বাঁচাও! করে সাজিদ স্বজোরে চিৎকার জুড়ে দিল এ দিকে বিশাল বিশাল ঢেউও যেন তাকে পরাভূত করতে একের পর এক আঘাত হানতে লাগল বজ্রধ্বনির ন্যায় গর্জন করে ডাকতে লাগল ইয়া জিলানি! ইয়া দাসুকি! ইয়া গাউসুল আজম! ইয়া খাজাবাবা... তার ধারণায় এরা তাকে উদ্ধার করতে পারবে সে ঢেউয়ের সাথে যুদ্ধ করছে আর বিকট আওয়াজে চিৎকার করছে। এরই মাঝে নাফিসের দৃষ্টি তার উপর পড়লনাফিস, পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই বয়সের শক্ত-সমর্থ এক পৌঢ় বীর। চেহারায় আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট সফরের সহযাত্রী। সী-ট্রাকের ছাদে বসে ছিলেন দেরি না করে লাইফ জ্যাকেট পরে সমুদ্রে ঝাঁপ দিলেন

Monday 17 November 2014

স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে গান শোনালে কোনও সমস্যা আছে কি না?


প্রশ্ন - স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে গান শোনালে কোনো সমস্যা আছে কি না?

উত্তর -
সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার।

প্রথমত: স্বামী স্ত্রী কর্তৃক পরস্পরকে উপভোগ করা আল্লাহ বৈধ করেছেন। উপভোগের কোন পদ্ধতি অবৈধ করা হয়নি। তবে পায়ু পথে সঙ্গম করাকে অবৈধ করা হয়েছে। এমনিভাবে মাসিক ও প্রসুতিবস্থায় সঙ্গম করাও না জায়েজ। তবে সর্বাবস্থায় স্পর্শ, চুম্বন, দর্শন, মৈথুন জায়েজ।

শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল উসাইমীন রহ. কে প্রশ্ন করা হয়েছিল : স্বামীর শরীরের যে কোন অংশ স্ত্রীর পক্ষে দেখা অনুরূপভাবে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর শরীরের যেকোন অংশ দেখা ও তাতে পুলকিত হওয়া জায়েজ কিনা।
তিনি উত্তরে বলেন: হ্যাঁ স্বামী তার স্ত্রীর শরীরের যে কোন অংশ দেখতে পারে, এমনিভাবে স্ত্রী তার স্বামীর শরীরের যে কোন অংশ দেখতে পারে।

আল্লাহ তাআলা বলেন :
(আর যারা তাদের নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী। তবে তাদের স্ত্রী ও তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে তারা ছাড়া, নিশ্চয় এতে তারা নিন্দিত হবে না। অতঃপর যারা এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করে তারাই সীমালঙ্ঘনকারী। (সূরা আল মুমিন, আয়াত ৫-৭)

Sunday 16 November 2014

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সালাত (দরূদ) পড়ার অর্থ, ফযিলত, পদ্ধতি ও স্থানসমূহ



ভূমিকা
  إِنَّ الْحَمْدُ للهِ ، نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِيْنُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ ، وَنَعُـوْذُ بِاللهِ مِنْ شُرُوْرِ أَنْفُسِنَا ، وَمِنْ سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا ، مَنْ يَّهْدِهِ اللهُ فَلاَ مُضِلَّ لَهُ ، وَمَنْ يُّضْلِلِ اللهُ فَلاَ هَادِيَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنْ لاَّ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ
নিশ্চয় যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য। আমরা তারই প্রশংসা করি, তার কাছে সাহায্য চাই, তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি। আল্লাহর নিকট আমরা আমাদের প্রবৃত্তির অনিষ্টতা ও আমাদের কর্মসমূহের মন্দ পরিণতি থেকে আশ্রয় কামনা করি। আল্লাহ যাকে হেদায়েত দেন, তাকে গোমরাহ করার কেউ নেই। আর যাকে গোমরাহ করেন তাকে হেদায়েত দেওয়ার কেউ নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনোসত্যিকার ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোনো শরিক নেই। আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। সালাত ও সালাম নাযিল হোক তার উপর, তার পরিবার-পরিজন ও তার সাহাবীদের উপর এবং যারা কিয়ামত অবধি এহসানের সাথে তাদের অনুসরণ করেন তাদের উপর।

জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু হল সময়। সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময়ের সমুদ্র খুব দ্রুত বয়ে যায়। কোথাও থেমে যায়না কিংবা কারও অপেক্ষা করে না। এটি সময়ের মেহেরবানী যে, সে অনবরত চলতে থাকে এবং আমাদেরকে জীবনের দুঃখ-দুর্দশা ও মুসিবত সহ্য করার উপযোগী করে তুলে। সৌভাগ্যবান ব্যক্তি সে যে সময়কে কাজে লাগাতে পারে। আবহমান সময় মনের দুঃখের উৎকৃষ্ট উপশম। যদি সময় থেমে যায় তাহলে মনে হয় পৃথিবীতে মানুষ বেঁচে থাকা অসম্ভব হবে। আর প্রত্যেক মানুষ দুঃখের স্বরূপ ও বিষণ্ণতার ভাস্কর্য মনে হবে।
আমরা যারা হাদিস অধ্যয়ন করি, পড়ি বা লিখি তারা, অবশ্যই নবীকুল শিরোমণিমুত্তাকীদের ইমামসারা জাহানের জন্য রহমতপাপীদের জন্য আল্লাহর অনুমতিক্রমে শাফাআতকারী এবং সত্য পথের প্রদর্শক মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুবারক নাম মুখ দিয়ে বার বারউচ্চারণ করে থাকি। সত্যবাদী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের এক সাথী উবাই ইবনু কাব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে কতই না সত্য কথা বলেছেন যে, হে কাব! যদি তুমি তোমার সম্পূর্ণ সময় আমার উপর দরূদ পড়ার জন্য ব্যয় করে দাও তাহলে তোমার দুনিয়া ও আখিরাতের দুশ্চিন্তা ও দুঃখের জন্য তা যথেষ্ট হবে।[1]

ঈমান সম্পর্কে অতি গুরুত্বপূর্ণ ১২০টি প্রশ্নোত্তর (৪র্থ পর্ব)


শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যানি পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু।
মূল: শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমীন (রহ.)  অনুবাদক: মুহাঃ আব্দুল্লাহ আল-কাফী ও আব্দুল্লাহ শাহেদ আল-মাদানী
প্রশ্নঃ (২৪) ইসলামে উপায়-উপকরণ অবলম্বন করার হুকুম কি?
উত্তরঃ উপায়-উপকরণ গ্রহণ করা কয়েক প্রকার হতে পারেঃ
১) যা মূলতই তাওহীদের পরিপন্থী। তা এই যে, কোন ব্যক্তি আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন জিনিষের উপর পরিপূর্ণভাবে ভরসা করল, বাস্তবে যার কোন প্রভাবই নাই। মুসিবতে পড়ে কবর পূজারীরা এমনটি করে থাকে। এটি বড় শির্ক। যারা এ ধরণের শির্কে লিপ্ত হবে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
)إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ(
“যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শির্ক করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। তার ঠিকানা জাহান্নাম। আর জালেমদের জন্য কোন সাহায্যকারী থাকবে না।” (সূরা মায়িদাঃ ৭২)
২) শরীয়ত সম্মত উপায়-উপকরণের উপর ভরসা করা এবং আল্লাহ তাআ’লাই যে এগুলোর সৃষ্টিকারী, তা একেবারে ভুলে যাওয়া। এটাও এক প্রকার শির্ক। তাবে এটা মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয় না।
(৩) মানুষ উপায়-উপকরণ অবলম্বন করার সাথে সাথে আল্লাহর উপর পরিপূর্ণভাবে ভরসা করবে এবং বিশ্বাস করবে যে, এই উপকরণ আল্লাহর পক্ষ থেকেই। তিনি ইচ্ছা করলে এটি ছিন্ন করে দিতে পারেন এবং ইচ্ছা করলে অবশিষ্ট রাখতে পারেন। এই ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা কোনভাবেই তাওহীদের পরিপন্থী নয়।
মোট কথা এই যে, শরীয়ত সম্মত উপায়-উপকরণ বর্তমান থাকা সত্বেও এগুলোর উপর পরিপূর্ণরূপে ভরসা করা ঠিক নয়। বরং সম্পূর্ণরূপে ভরসা একমাত্র আল্লাহর উপরই করতে হবে। সুতরাং কোন চাকরীজীবি যদি তার বেতনের উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে এবং সকল বস্তর সৃষ্টিকারী আল্লাহর উপর ভরসা করতে ভুলে যায়, তাহলে সে এক প্রকার শির্কে লিপ্ত হবে। আর যে কর্মচারী এই বিশ্বাস রাখে যে, বেতন কেবল একটি মাধ্যম মাত্র তাহলে এটা আল্লাহর উপর ভরসার বিরোধী হবে না। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আল্লাহর উপর ভরসা করার সাথে সাথে আসবাব গ্রহণ করতেন
প্রশ্নঃ (২৫) ঝাড়-ফুঁকের হুকুম কি? কুরআনের আয়াত লিখে গলায় ঝুলিয়ে রাখার হুকুম কি?
উত্তরঃ যাদু বা অন্য কোন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঝাড়-ফুঁক করাতে কোন অসুবিধা নেই। যদি তা কুরআনের আয়াত বা অন্য কোন বৈধ দু’আর মাধ্যমে হয়ে থাকে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত আছে যে, তিনি সাহাবীদেরকে ঝাড়-ফুঁক করেছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ঝাড়-ফুঁকের বিভিন্ন দু’আও প্রমাণিত আছে। তম্মধ্যে কয়েকটি দু’আ নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
رَبَّنَا اللَّهُ الَّذِي فِي السَّمَاءِ تَقَدَّسَ اسْمُكَ أَمْرُكَ فِي السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ كَمَا رَحْمَتُكَ فِي السَّمَاءِ فَاجْعَلْ رَحْمَتَكَ فِي الْأَرْضِ اغْفِرْ لَنَا حُوبَنَا وَخَطَايَانَا أَنْتَ رَبُّ الطَّيِّبِينَ أَنْزِلْ رَحْمَةً مِنْ رَحْمَتِكَ وَشِفَاءً مِنْ شِفَائِكَ عَلَى هَذَا الْوَجَعِ فَيَبْرَأَ
“হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার নাম অতি পবিত্র। আকাশ এবং যমিনে আপনার আদেশ বাস্তবায়িত হয়। আকাশে যেমন আপনার রহমত বিস্তৃত রয়েছে, জমিনেও অনুরূপভাবে আপনার রহমত বিস্তার করুন। আপনি আমাদের গুনাহ ও অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন। আপনি পবিত্রদের প্রভু, এই রোগীর উপর আপনার রহমত ও শিফা অবতীর্ণ করুন। এই ভাবে ঝাড়-ফুঁক করলে রোগী সুস্থ হয়ে উঠত।”

দাফন প্রসঙ্গে প্রশ্নোত্তর:


--------------
প্রশ্ন ১- কবরের উপর পাথরকুচি রাখা ও পানি দেয়ার বিধান কি?
উত্তর - যদি সম্ভব হয় কবরের উপর পাথরকুচি রাখা মুস্তাহাব, কেননা এর ফলে কবরের মাটি জমে থাকে। বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরের উপর কাঁচ ভাঙ্গা রাখা হয়েছিল। কবরের উপর পানি ঢালা মুস্তাহাব, যেন মাটিগুলো জমে যায় ও সহজে মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়, ফলে মানুষ তার অবমাননা থেকে মুক্ত থাকবে।
প্রশ্ন ২- লাশ কবরে রেখে মুখ খুলে দেবে কি?
উত্তর - মুখ খুলবে না বরং ঢেকে রাখবে। হ্যাঁ, এহরামাস্থায় যার মৃত্যু হয় তার মুখ খুলে দেবে। আরাফাতের ময়দানে এহরাম অবস্থায় জনৈক ব্যক্তির মূত্য হলে লোকেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তার দাফন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
«إغسلوه بماء وسدر وكفنوه في ثوبيه ولا تخمروا رأسه ولا وجهه فإنه يبعث يوم القيامة ملبيا»
“তাকে কুলপাতা মিশ্রিত পানি দ্বারা গোসল দাও এবং এহরামের দু’কাপড়ে কাফন দাও, তার মাথা ও মুখ ঢেকো না, কারণ কিয়ামতের দিন সে তালবিয়া পড়তে পড়তে উঠবে”। (বুখারি ও মুসলিম)
প্রশ্ন ৩- অনেকেই মুখ খোলা রাখা ও পাথর রাখার বিষয়টি খুব গুরুত্ব দেয়, মূলত এর কোন ভিত্তি আছে কি?
উত্তর – এ ধরণের কথার কোন ভিত্তি নেই, এটা মুর্খতা ও অজ্ঞতার আলামত।
প্রশ্ন ৪- মৃত ব্যক্তি যদি তার লাশ অন্য কোন শহরে দাফন করার জন্য অসিয়ত করে, তাহলে তার এ অসিয়ত পুরো করা কি ওয়াজিব?
উত্তর – না, তার এ অসিয়ত পুরো করা ওয়াজিব নয়, সে যদি কোন মুসলিম শহরে মারা যায়, তাহলে তাকে ঐ শহরেই দাফন করা বাঞ্চনীয়।
প্রশ্ন ৫- দাফন করার সময় মহিলাদের কবর ঢেকে রাখার বিধান কি?

সুদী ব্যাংকে চাকুরী



প্রশ্নঃ আমি একটি সুদী ব্যাংকে চাকুরী করি, যা সুদ ভিত্তিক লোন দেয় এবং সুদ ভিত্তিক ডিপোজিট গ্রহন করে। আমি জেনেছি যে, সুদী ব্যাংকে কাজ করা হারাম, তাই অনুগ্রহ করে নিম্নের প্রশ্নগুলির উত্তর দিনঃ
১. আমার এই ব্যাংকের চাকুরী হারাম কি না, আমি একজন সাধারন কর্মচারী, (ব্যাংকের) অর্থের মালিক নই?
২. আমি কি এই চাকুরী ছেড়ে দিয়ে অন্য একটি চাকুরী খুজব, এই জেনে যে - এই চাকুরীর সম পরিমান বেতনের কাজ পাওয়া খুবই কষ্টকর। আমি কি অন্য কাজ পাওয়ার আগেই ব্যাংক ছেড়ে দিব, নাকি অপেক্ষা করব অন্য কাজ পাওয়া পর্যন্ত?
৩. আমি ১২ বছর ব্যাংকে কাজ করেছি, এই বছর গুলির হারাম রুযীর ক্ষেত্রে বিধান কি? আমি এই ব্যাংকে কাজ করে যে আয় করেছি তা হারাম কিনা? আমি যে হজ্জ করেছি তার অর্থ এই ব্যাংকের বেতনের টাকা দিয়ে করা হয়েছে, আমার এই হজ্জ কি গ্রহন যোগ্য?
উত্তরঃ

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...