Saturday 7 March 2015

আল্লাহ কি নিরাকার ?



“যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান”। (জুমার ১৮)

“আল্লাহ যার বক্ষ ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন, অতঃপর সে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত আলোর মাঝে রয়েছে। (সে কি তার সমান, যে এরূপ নয়) যাদের অন্তর আল্লাহ স্মরণের ব্যাপারে কঠোর, তাদের জন্যে দূর্ভোগ। তারা সুস্পষ্ঠ গোমরাহীতে রয়েছে। আল্লাহ উত্তম বাণী তথা কিতাব নাযিল করেছেন, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ, পূনঃ পূনঃ পঠিত। এতে তাদের লোম কাঁটা দিয়ে উঠে চামড়ার উপর, যারা তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে, এরপর তাদের চামড়া ও অন্তর আল্লাহর স্মরণে বিনম্র হয়। এটাই আল্লাহর পথ নির্দেশ, এর মাধ্যমে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। আর আল্লাহ যাকে গোমরাহ করেন, তার কোন পথপ্রদর্শক নেই”। (জুমার ২২-২৩)

• “যে ব্যক্তিকে তার পালনকর্তার আয়াতসমূহ দ্বারা উপদেশ দান করা হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার চেয়ে যালেম আর কে? আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দেব”। (সাজদা ৩২)

আল্লাহর অবস্থান বিবরণে আল কুরআন



 সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি মানব ও জিন জাতিকে তাঁর একত্বটা ঘোষণা করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। সলাত ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নাবী ও রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) উপর যিনি তাঁর উম্মতের কাছে আল্লাহর একত্বতার বিস্তারিত জ্ঞান বর্ণনা করে গেছেন। আরও সলাত ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর পরিবার ও সাথীগণের উপর যারা তাঁর কাছ থেকে তাওহীদের সঠিক জ্ঞান অর্জন করেছিলেন।

অতঃপর হে সম্মানিত পাঠক ও পাঠিকাগণ! পরকালে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই সঠিক ইসলামী আক্বীদা জানতে ও তার উপর আমল করতে হবে। অন্যথায় পরকালে মুক্তি পাওয়া যাবে না। এ সঠিক আকীদার অনেক মাসআলা রয়েছে। তন্মধ্যে ‘আল্লাহ কোথায়?’ এটিও একটি আকীদার গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা, যাতে ভ্রান্ত দল জাহমিয়াসহ আরও বহু দল পথভ্রষ্ট হয়েছে। আমি আল্লাহর নিন্মের বাণীর উপর আমল করত উক্ত গুরুত্ব পূর্ণ মাস’আলাটি সম্মানিত পাঠক ও পাঠিকাগণের জন্যে এখানে আল কুরআনের আলোকে তুলে ধরলাম, যাতে তারা এর দ্বারা উপকৃত হতে পারে এবং সূফীদের সর্বেশ্বরবাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস (আল্লাহ নিরাকার ও সর্বত্র বিরাজমান) থেকে বাঁচতে পারে। সূফীদের সর্বেশ্বরবাদের অর্থ হলো: তাদের নিকট খালিক – সৃষ্টিকারী আর মাখলূক্- সৃষ্টি জীব এর মধ্যে কোন পার্থক্য নাই। সবই মাখলূক–সৃষ্টি জীব, আর সবই ইলাহ-উপাস্য।

যখন চাইবে আল্লাহর কাছেই চাইবে




যখন চাইবে আল্লাহর কাছেই চাইবে

সমুদ্র ভ্রমণে বন্ধুর আমন্ত্রণ, না করতে পারেনি সাজিদ। অল্প সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে বের হয়ে পড়ল প্রয়োজনীয় কাজ সেরে বাহনে চেপে বসল সী-ট্রাকের ছাদে দাঁড়িয়ে চারিদিকের মোহনীয় সব দৃশ্য দেখে জ্ঞান হারাবার পালা। প্রকৃতি এত সুন্দর? এত অপরূপ মহান স্রষ্টার সৃষ্টি? এ যে কল্পনাকেও হার মানায়। উপরের নীল আকাশ সাগরের রূপালী জলরাশিতে নীল চাদর বিছিয়েছে যেন, কি অপরূপ নীলাভ করে তুলেছে তাকে। বহুদূর থেকে ছুটে আসা দক্ষিণা সমীরণ তরঙ্গ তুলে আরো মোহনীয় করে তুলেছে সমুদ্র গভীর থেকে জেগে উঠা তরঙ্গরাজি মহান আল্লাহর অসীম কুদরতের সাক্ষ্য দিচ্ছে যেন সী-ট্রাকের প্রাচীরে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশির হিল্লোল দেখছে আর বিস্ময়াভিভূত হচ্ছে সাজিদ কেবল মহান আল্লাহর দ্বারাই এই সৃষ্টি সম্ভব যিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশ, জমিন, পাহাড়, সমুদ্র... সবকিছুসাজিদ ভাবছে আর আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা ও অনুরাগ গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে পরিস্থিতির সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হয়ে চারিদিক দেখছে আর উদ্বেলিত হচ্ছে। দেখছে সমুদ্র বুক চিরে সী-ট্রাক অপূর্ব ভঙ্গিমায় এগিয়ে যাচ্ছে সম্মুখ পানে। সেই সৌন্দর্য্য আরোও উপভোগ করার জন্য নিচের দিকে তাকাল সাজিদ বিশাল এক ঢেউ আছড়ে পড়ল সী-ট্রাকের গায়। প্রচন্ডভাবে কেঁপে উঠল সী-ট্রাক। সাজিদ শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে পারল না, আর অমনি বিপদ আপতীত হল সিটকে গিয়ে পানিতে পড়ল সাজিদ বিপদ আরো তীব্রতা লাভ করল। কারণ সে ভাল সাতার জানে না বাঁচাও! বাঁচাও! করে সাজিদ স্বজোরে চিৎকার জুড়ে দিল এ দিকে বিশাল বিশাল ঢেউও যেন তাকে পরাভূত করতে একের পর এক আঘাত হানতে লাগল বজ্রধ্বনির ন্যায় গর্জন করে ডাকতে লাগল ইয়া জিলানি! ইয়া দাসুকি! ইয়া গাউসুল আজম! ইয়া খাজাবাবা... তার ধারণায় এরা তাকে উদ্ধার করতে পারবে সে ঢেউয়ের সাথে যুদ্ধ করছে আর বিকট আওয়াজে চিৎকার করছে। এরই মাঝে নাফিসের দৃষ্টি তার উপর পড়লনাফিস, পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই বয়সের শক্ত-সমর্থ এক পৌঢ় বীর। চেহারায় আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট সফরের সহযাত্রী। সী-ট্রাকের ছাদে বসে ছিলেন দেরি না করে লাইফ জ্যাকেট পরে সমুদ্রে ঝাঁপ দিলেন

মুহূর্তের মাঝে পুরো সী-ট্রাকে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল। যাত্রীরা সকলেই সী-ট্রাকের ছাদে উঠে আসল। এবং যার যার সামর্থ‌ মত উদ্ধার কাজে সহযোগিতায় প্রবৃত্ত হল ডিঙ্গি নৌকা পানিতে ফেলা হল উদ্ধার কর্মীরা বীর নাফিসের সাথে যোগ দিল এবং সাজিদকে সী-ট্রাকে উঠাতে সাহায্য করল আল্লাহর মেহেরবানীতে এক সময় উদ্ধার কর্ম সমাপ্ত হল আল্লাহর ইচ্ছায় সাজিদ নিশ্চিত মৃত্যু থেকে বেঁচে গেল বন্ধু নাবিল তাকে জড়িয়ে ধরে আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করল। এরপর উভয়ে মিলে সাজিদের মৃত্যু হতে মুক্তির উপকরণ বানিয়ে আল্লাহ তাআলা যাকে পাঠিয়েছেন সেই বীর-বিক্রম মহান ব্যক্তিত্বকে খুঁজতে লাগল। খুঁজতে খুঁজতে সী-ট্রাকের এক কোনায় তাকে তাকে তার আবিষ্কার করল। তোয়ালে দিয়ে শরীর মুচছেন। সাজিদ দৌড়ে গিয়ে তার সাথে মুআনাকা করে বলল, জানি না আমার দ্বারা আপনার ঋণ পরিশোধ সম্ভব হবে কিনা আমার জীবন বাঁচিয়েছেন আপনি
সাজিদের কথা শোনে সুন্দর করে হাসলেন। এবং উপরের দিকে তাকিয়ে কী যেন ভাবলেন। অত:পর আড়চোখে তাকিয়ে বললেন, [বৎস! তোমার জীবন রক্ষার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি আর আমার প্রত্যাশা, তোমার জীবন রক্ষা পেয়েছে সে মূল্য তুমি পরিশোধ করবে]
নাফিস সাহেবের কথাগুলো শুনে সাজিদ আশ্চর্য্যবোধ করল, ব্যাখ্যা পাওয়ার আশায় তাঁর দিকে তাকালো

দুআ-মুনাজাতে নবী রাসূলের অসীলা দেয়া : একটি পর্যালোচনা




দুআ-মুনাজাতে নবী রাসূলের অসীলা দেয়া : একটি পর্যালোচনা

الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على أشرف الأنبياء والمرسلين محمد وعلى آله وأصحابه أجمعين.
বিভিন্ন দুআ মুনাজাতের সময় দেখা যায়, ইমাম সাহেব বা আলেম সাহেব দুআ-মুনাজাতের মধ্যে বলছেন, 'হে আল্লাহ! মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তোফায়েলে আমাদের দুআ কবুল করুন।'
অনেকে বলে থাকেন, 'হে আল্লাহ আপনার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অসীলায় আমাদের দুআ কবুল করুন।'
একটি মসজিদে মাঝে মধ্যে জুমুআর সালাত আদায় করতাম। দেখতাম, ইমাম সাহেব দ্বিতীয় খুতবায় দুআ করার সময় বলছেন:
أللهم إنا نتوسل إليك بجاه نبيك الميمون.
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমরা আপনার বরকতময় নবীর অসীলা নিচ্ছি.. ।
একটি দুআ অনুষ্ঠানে শুনলাম, দুআকারী আলেম সাহেব বলছেন :
سهل يا إلهي كل صعب بحرمة سيد الأبرار.
‘হে আমার মাবুদ! নেককারদের মহান নেতার মর্যাদায় সকল মুশকিল আসান করে দিন।'
হজের সফরে বিমানে এক ব্যক্তিকে দেখলাম, আমার পাশে বসে দুআ করছে, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার রওজা যিয়ারত করার জন্য হজে রওয়ানা দিলাম। আপনি আল্লাহর কাছে শাফায়াত করে আমার হজ কবুল করিয়ে দিন।'
অনেক দিন পূর্বে একটি জিকিরের জলছায় বসেছিলাম। দেখলাম, জলছার পরিচালক বলছেন, ‘সকলে বলুন, আমার কলব অমুকের কলবের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে। তার কলব দাদাপীর অমুকের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে। তার কলব অমুকের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে ... । তার কলব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে, হে মাবূদ তার অসীলায় আমাদের তওবা কবুল করুন ...।' 

ভ্রান্ত তাবিজ-কবচ





ভ্রান্ত তাবিজ-কবচ

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি বিশ্ব জগতের ঘটনা প্রবাহের জন্য সঙ্গত কারণ বা মাধ্যম নির্ধারণ করেছেন। আবার কখনো কখনো এ সমস্ত কারণ ও মাধ্যমকে তিনি পরিহার করেছেন। যাতে করে মানুষ এসব কিছুকে তাদের রব বা প্রতিপালক মনে না করে। এবং তিনি এ সমস্ত কারণ ও ঘটনা প্রবাহকে এমন এক অমোঘ নিয়মে বেঁধে দিয়েছেন যার ফলে কোন কিছুই বৃথা যাবার নয় । সালাত ও সালাম ঐ রাসূলের উপর যাঁকে তিনি সমস্ত জগতের জন্য রহমত করে প্রেরণ করেছেন, যাতে করে সকলই তাঁর প্রিয় হতে পারে। অতঃপর, আল্লাহ এ বিশ্ব জগতকে অনস্তিত্ব থেকেই সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি একে তাঁর ইচছা ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে যেভাবে চান সেভাবেই পরিচালনা করেন এবং তিনিই তাঁর সৃষ্টির সকল বস্তুকে একটির উপর অপরটির অস্তিত্ব বিন্যাস করেছেন, আর এ কারণেই একটি বস্তুকে অপরটির জন্য কারণ বা মাধ্যম বানিয়েছেন । 
পূর্বেকার মুশরিকরা আল্লাহকে এই পৃথিবীতে পরিপূর্ণ ক্ষমতা, পরিচালনা, পরিকল্পনা এবং সৃষ্টিকর্তা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করত।  
তারা এমন বিশ্বাস পোষণ করতনা যে, তাদের বাতিল উপাস্য বা দেবতাগুলো বিশ্ব জগতের কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করে, অথবা সেগুলো কোন প্রকার কল্যাণ বা অকল্যাণ সাধনের ক্ষমতা রাখে। বরং তাদের দৃঢ় প্রত্যয় ছিল যে, এসব কিছু একমাত্র আল্লাহই পরিচালনা করে থাকেন, যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন :
ثُمَّ إِذَا مَسَّكُمُ الضُّرُّ فَإِلَيْهِ تَجْأَرُونَ 
“অতঃপর যখন তোমাদেরকে অকল্যাণ ¯পর্শ করে তখন তোমরা তাঁর (আল্লাহর) নিকট বিনয় সহকারে প্রার্থনা কর। ”(সূরা আননাহাল ৫৩) 
আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন :

শিরক-বিদ'আতের সর্বগ্রাসী ছোবল থেকে মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা করতে হবে



শিরক-বিদ'আতের সর্বগ্রাসী ছোবল থেকে মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা করতে হবে

মুসলমানদের জীবনে তাওহীদ হচ্ছে সর্বপ্রথম জিনিষ যা জানা ও বোঝা সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বড় ফরয। তাওহীদের বাস্তবায়নের মাঝেই ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি নিহিত। তাওহীদ বিহীন কোন আমলই গ্রহণীয় নয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকীদাহ হচ্ছে এই যে, তারা আল্লাহ, তাঁর সমুদয় ফিরিস্তা, তাঁর ঐশী গ্রন্থাবলী, সকল রাসূল, আখিরাত এবং তাকদীরের ভালমন্দের উপর ঈমান রাখে। তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহই একমাত্র রব, ইলাহ এবং মা‘বুদ। পূর্ণাংগ কামালিয়াতের দ্বারা তিনি একক বৈশিষ্টের অধিকারী। তাই নিষ্ঠার সাথে একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করতে হবে। তাওহীদ তিনটি শাখায় বিভক্ত:

১) প্রথম শ্রেণীর তাওহীদ হচ্ছে, আল্লাহ তা‘আলার একত্বকে দৃঢ়তার সাথে মেনে নেয়া। আল্লাহই সকল বস্তুকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে এনেছেন। বিশ্বে যা কিছু আছে এবং পুরা বিশ্ব জগতের তিনি একক স্রষ্টা, প্রতিপালক এবং রক্ষাকারী। এবং এসব সৃষ্টির প্রতি তার কোন মুখাপেক্ষিতা নেই।

২) তাওহীদ আল আসমা ওয়াস সিফাত হচ্ছে, আল্লাহর মূলসত্বা ও গুণাবলীতে বিশ্বাস করা। আল্লাহকে সেই নামেই ডাকতে হবে যে নাম তিনি নিজের জন্য নির্ধারণ করেছেন। কোন নব উদ্ভাবিত নামে তাঁকে ডাকা যাবে না। আল্লাহর কোন গুণকে মানুষের কোন গুণের সাথে তুলনা করা যাবে না। আল্লাহর সিফাত সম্পর্কে আল কুরআনে বলা হয়েছে:
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ البَصِي
কোন বস্তুই তাঁর সদৃশ নয়, তিনি সব শোনেন, সব দেখেন। (সূরা শুরা : ১১)

ইসলামী আকীদা বিষয়ক কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ মাসয়ালা




আমাদের সৃষ্টির উদ্দেশ্য

১। প্রশ্ন : আল্লাহ্‌ আমাদের কেন সৃষ্টি করেছেন?
১। উত্তর : আল্লাহ্‌ আমাদের সৃষ্টি করেছেন এ জন্য যে, আমরা তাঁর ইবাদত করব, তাঁর আনুহগত্য করব এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করব না। তিনি বলেন :
وَمَا خَلَقْتُ الَجِنَّ وَالإِنْسَ إِلاَّ لِيَعْبُدُوْنِ
"আমি জ্বিন এবং মানব জাতি এজন্য সৃষ্টি করেছি যে, তারা শুধু আমার ইবাদত করবে।" সূরা আজ-জারিয়াত : ৫৬
রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : "বান্দার উপর আল্লাহ্‌র হক হচ্ছে, তারা তাঁর ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না।" (বুখারী ও মুসলিম)

২। প্রশ্ন : ইবাদত বলতে কি বুঝায়?
২। উত্তর : ইবাদত একটি ব্যাপক বিষয়। ইসলামি আকিদা, আল্লাহর পছন্দনীয় প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কথা ও কাজ, সব কিছু এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন : দোয়া, নামায, বিনয়, তাকওয়া ইত্যাদি।
আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন :
قُلْ إِنَّ صَلاَتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَايَا وَمَمَاتِيْ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
"বলুন : আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও মরণ বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহ্‌র জন্য।" সূরা আল-আন'আম : ৬২
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : আল্লাহ্‌ তাআলা বলেছেন :
"আমি আমার বান্দার উপর যা ফরজ করেছি, তার চেয়ে অধিক প্রিয় কোনো জিনিসের মাধ্যমে বান্দা আমার সান্নিধ্য লাভ করতে পারেনি। আর আমার বান্দা নফল ইবাদতের মাধ্যমে আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে।"(হাদীসে ক্বদসী - বুখারী)

৩। প্রশ্ন : ইবাদত কত প্রকার ?
৩। উত্তর : ইবাদতের অনেক প্রকার রয়েছে। যেমন : দোয়া, আল্লাহর ভয়, তাঁর নিকট প্রত্যাশা, তাঁর
ওপর ভরসা, তাঁর নিকট আকাঙ্ক্ষা, তাঁর উদ্দেশ্যে জবেহ-মান্নত-রুকু-সিজদা-তাওয়াফ ও শপথ ইত্যাদি। এর ভেতর কোন একটি জিনিস আল্লাহর জন্য না হলে ইবাদত বলে গণ্য হবে না।

আক্বীদাহ সংক্রান্ত কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ মাসআলাহ




১. প্রশ্ন: মহান আল্লাহ কোথায় অবস্থান করেন?

উত্তর: মহান আল্লাহ আরশে আযীমের উপর অবস্থান করেন। আল্লাহর কথাই এর দলীল। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
﴿الرَّحْمَنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَى﴾
অর্থ: ‘(তিনি আল্লাহ বলেন) পরম দয়াময় আরশের উপর সমুন্নীত রয়েছেন। [সূরা ত্বা-হা:৫] 
মহান আল্লাহ আসমানের উপর বা আরশে আযীমের উপর সমুন্নত আছেন, এই অর্থে কুরআন মাজীদের ৭টি আয়াত রয়েছে। অতএব যারা দাবী করেন যে, মহান আল্লাহ সর্ব জায়গায় বিরাজমান, অথবা তিনি মুমিন বান্দার ক্বলবের ভিতর অব্স্থান করেন, আর মু‘মিন বান্দার ক্বলব বা অন্তর হলো আল্লাহর আরশ বা ঘর। তাদের এ সমস্ত দাবী সবই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

২. প্রশ্ন: মহান আল্লাহর চেহারা অর্থাৎ মূখমন্ডল আছে কি? থাকলে তার দলীল কী?

উত্তর: হাঁ, মহান আল্লাহর চেহারা অর্থাৎ মূখন্ডল আছে। আল্লাহর কথাই এর দলীল ।
﴿كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ ـ وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ﴾
অর্থ: ‘[কিয়ামতের দিন] ভূপৃষ্ঠের সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে (হে রাসূল! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার মহিমাময় ও মহানুভব পালন কর্তার চেহারা মুবারক অর্থাৎ আল্লাহর সত্তাই একমাত্র বাকী থাকবে। (আর-রাহমান: ৩৬-৩৭)

অতি গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় জিজ্ঞাসা ও সেগুলোর জবাব






বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

প্রিয় মুসলিম ভায়েরা, আকীদা বিষয়ক বারটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং কুরআন, সহীহ হাদীস ও বিশ্ববরেণ্য ওলামাগণের ফাতওয়ার আলোকে সেগুলোর উত্তর প্রদান করা হল। আমাদের বিশ্বাসকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এবং সঠিক আকীদার উপর চলার জন্য এ প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা খুব জরুরী। আসুন, আমরা প্রশ্নগুলো পড়ি এবং সেগুলোর উত্তর জানার চেষ্টা করি। মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদেরকে পরিশুদ্ধ আকীদা ও বিশ্বাস সহকারে সঠিক পথে চলার তাওফীক দান করেন।

প্রশ্ন-১: জ্যোতির্বিদ, গণক, হস্তরেখা বিদ, যাদুকর প্রভৃতির কাছে যাওয়া বা তাদের কথা বিশ্বাস করার বিধান কি? 
উত্তর: কোন জ্যোতির্বিদ, গণক, হস্তরেখা বিদ, যাদুকর প্রভৃতির কাছে যাওয়া বা তাদের কথা বিশ্বাস করা বৈধ নয়। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি কোন গণৎকারের কাছে গিয়ে কোন কিছু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে, তার চল্লিশ দিনের ছালাত কবুল করা হবে না। (ছয় শতাধিক মুসলিম) গণৎকার বলতে ভাগ্য গণনাকারী দৈবজ্ঞ, জ্যোতিষী, যাদুকর সকলেই উদ্দেশ্য। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেন, যে ব্যক্তি কোন জ্যোতির্বিদের কাছে যাবে, অত:পর সে যা বলে তা বিশ্বাস করবে, সে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দ্বীনের সাথে কুফরী করবে। (মুসনাদ আহমাদ ও সুনান গ্রন্থ সমূহ)

বিদ্যুৎপিষ্ট হয়ে যে ব্যক্তি মারা গেল সে কি শহীদ?




প্রশ্ন : 
আমার ভাই বৈদ্যুতিক খুটির পাশে দাঁড়িয়েছিল, ফলে বৈদ্যুতিক তার তার শরীর স্পর্শ করে, আর সে শর্ট খেয়ে সাথে সাথে মারা যায়। তাকে কি শহীদ গণ্য করা হবে ?  দাফন করার জন্য আমরা যখন তার উপর সালাত পড়ি, তখন এতো বেশী মানুষ জড়ো হয়েছিল যে, মসজিদে পর্যন্ত তাদের সংকুলান হয়নি। তাকে মাটি দেয়ার জন্য আমাদের যে গ্রুপটি কবরস্থান পর্যন্ত যায়, তাও বেশ দীর্ঘ ও বড় ছিল। কারণ, সে আমাদের সবার কাছেই প্রিয় ছিল। কিয়ামতের দিন এরা কি তার জন্য সুপারিশ করবে ? অধিকন্তু সে ছিল যুবক, ভদ্র ও নামাযি।

উত্তর : 
আল-হামদুলিল্লাহ
عن جَابِرَ بْنَ عَتِيكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : (مَا تَعُدُّونَ الشَّهَادَةَ ؟ قَالُوا : الْقَتْلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ تَعَالَى . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : الشَّهَادَةُ سَبْعٌ سِوَى الْقَتْلِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ : الْمَطْعُونُ شَهِيدٌ ، وَالْغَرِقُ شَهِيدٌ ، وَصَاحِبُ ذَاتِ الْجَنْبِ شَهِيدٌ ، وَالْمَبْطُونُ شَهِيدٌ ، وَصَاحِبُ الْحَرِيقِ شَهِيدٌ ، وَالَّذِي يَمُوتُ تَحْتَ الْهَدْمِ شَهِيدٌ ، وَالْمَرْأَةُ تَمُوتُ بِجُمْعٍ شَهِيدٌ)
জাবের ইবনে আতীক - রাদিআল্লাহু আনহু - বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তোমাদের নিকট শাহাদাৎ কি ? তারা বলল : আল্লাহর রাস্তায় মারা যাওয়া। তিনি বললেন : আল্লাহর রাস্তায় মারা যাওয়া ছাড়াও সাত প্রকার শাহাদাৎ রয়েছে : প্লেগ বা মহামারিতে মৃত ব্যক্তি শহীদ; পানিতে ডুবে মৃত ব্যক্তি শহীদ; ফুসফুসে রোগাক্রান্ত মৃত ব্যক্তি শহীদ; পেটের রোগে মৃত ব্যক্তি শহীদ; আগুনে পুড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ; ধ্বংস স্তুপের নিচে চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ; আর যে নারী পেটে বাচ্চা নিয়ে মারা যায় সেও শহীদ। আহমদ : (২৩৮০৪), আবূ দাউদ : (৩১১১), নাসায়ী : (১৮৪৬), সহিহ আবূ দাউদে আল-বানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন।

নবী-রাসূল, অলী-আউলিয়া, বুজুর্গ, আলেম প্রমুখের নিকট কি শাফায়াত প্রার্থনা করা যায়? অথবা তাদের অসীলায় কি আল্লাহর নিকট কোন কিছু চাওয়া জায়েজ আছে?



১ম প্রশ্ন: অনেকে বলে, আমরা অলী-আউলিয়া ও বুজুর্গ লোকদের নিকট বিপদাপদ থেকে উদ্ধার কামনা করি। তবে তাদের নিকট আমরা যা চাই তা হল কিয়ামতের দিন যেন তারা আল্লাহর দরবারে আমাদের জন্য শাফায়াত করে। কারণ তারা সৎ লোক। আল্লাহর নিকট তাদের বিশাল মর্যাদা রয়েছে। তাই এই মর্যাদার কারণে আমরা চাই তারা আমাদের সুপারিশ করে পরকালে কঠিন বিপদ থেকে আল্লাহ আমাদেরকে উদ্ধার করবেন। এটা কি ঠিক?
——————————————————————-
উত্তর: আরবের মুশরিকরা তো তাদের শিরকের স্বপক্ষে হুবহু এ কথাই বলত। তার পরে ও মহান আল্লাহ তাদেরকে-কাফের মুশরিক বলে অবিহিত করেছেন। যেমন, আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَيَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ وَيَقُولُونَ هَؤُلَاءِ شُفَعَاؤُنَا عِنْدَ اللَّهِ
“আর তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন জিনিসের উপাসনা করে যা তাদের লাভ-ক্ষতি কিছুই করতে পারে না আর বলে, তারা আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করবে।” (সূরা ইউনুস: ১৮)
সৎ ব্যক্তিগণ কিয়ামতের দিন পাপী বান্দা সুপারিশ করবে। কিন্তু সুপারিশের মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন:

Thursday 5 March 2015

বইঃ যাদু ও তার প্রতিকার,বইঃ বদনজর, জাদু ও জিনের কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা চিকিৎসা




✔ ১/ বইঃ যাদু ও তার প্রতিকার
লেখকঃ শাইখ ওয়াহিদ বিন আব্দুস সালাম বালী
বইটি ফ্রি ডাউনলোড করুন নিচের লিংক থেকেঃ
http://www.mediafire.com/…/501…/Kalo_Jadu_O_tar_Protikar.pdf
------------------------------------------------------------------
✔ ২/ বইঃ বদনজর, জাদু ও জিনের কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা চিকিৎসা
লেখকঃ আবু আহ্‌মাদ সাইফুদ্দীন বেলাল (হাফেজাহুল্লাহ)
বইটি ফ্রি ডাউনলোড করুন নিচের লিংক থেকেঃ
http://www.banglaislamgate.com/…/Syst…/6_Tdawy_bil_Quran.pdf
------------------------------------------------------------------
✔ ৩/ বইঃ যাদুটোনা ঝাড়ফুঁক জ্বীনের আছর তাবিজতুমার
লেখকঃ শাইখ ওয়াহিদ বিন আব্দুস সালাম বালী
মূলঃ শায়খ ওয়াহিদ বিন আব্দুস সালাম বালী, আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান, মুহাম্মাদ আব্দুর রব আফফান, সানাউল্লাহ নজির আহমদ।
বইটি ফ্রি ডাউনলোড করুন নিচের লিংক:
http://pdf.amarboi.org/zadutona_jharfuk_jiner_achor_tabijtu…
-------------------------------------------------------
✔ ৪/ বইঃ মানুষের উপর জিনের আছর
মূলঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
বইটি ফ্রি ডাউনলোড করুন নিচের লিংক থেকেঃ
http://www.mediafire.com/…/ikkhi8cakj90c…/bn_massul_zinn.pdf
---------------------------------------------------------------------------------
✔ ৫/ বইঃ ভ্রান্ত তাবিজ-কবচ
লেখকঃ শাইখ মুহাম্মদ বিন সোলায়মান আল মোফাদ্দা
বইটি ফ্রি ডাউনলোড করুন নিচের লিংক থেকেঃ
http://www.islamicbook.ws/bengali/bengal-019.pdf
------------------------------------------------------------------
✔ ৬/ বইঃ আক্বীদার মানদন্ডে তাবিজ
মূলঃ আলী বিন নুফায়ী আল-উলাইয়ানী
বইটি ফ্রি ডাউনলোড করুন নিচের লিংক থেকেঃ http://www.islamicbook.ws/bengali/bengal-019.pdf
-

সালাতে বিনয়ী হওয়ার তেত্রিশ উপায় (২য় পর্ব)





১৮- সালাতের পর হাদিসে বর্ণিত দোআ:
এ দো‘আগুলো অন্তরে সালাতের প্রতি মনোযোগ সৃষ্টি ও সালাত দ্বারা বরকত লাভ ও উপকার লাভে সাহায্য করে।
আর এতে কোন সন্দেহ নেই যে, প্রথম ইবাদতকে সংরক্ষণ করা ও তার হেফাযত করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে সে ইবাদতের সাথে সাথে অন্য দ্বিতীয় কিছু ইবাদত করে নেওয়া। সালাতের পর যিকিরসমূহের মধ্যে চিন্তা করা দ্বারা বিষয়টি আরও ভালোভাবে বুঝে আসবে। কারণ, সে প্রথমে ক্ষমা প্রার্থনা দিয়ে শুরু করবে; সালাত শেষ করার সাথে সাথে সালাতে তার যে সব দুর্বলতা- অমনোযোগীতা, খুশুহীনতা প্রকাশ পেয়েছে এবং সালাতে তার যে সব ভুলত্রুটি দেখা দিয়েছে, তার জন্য তিনবার এস্তেগফার পড়বে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, নফল সালাত আদায় করবে, কারণ, নফল সালাত দ্বারা ফরযের ঘাটতি পূরণ করা হয়ে থাকে এবং সালাতে খুশু না থাকার ক্ষতিপূরণ হয়ে থাকে। 
সালাতের খুশু‘ বা বিনয়াবনত অবস্থা আনয়নকারী উপায়গুলোর কথা উল্লেখ করার পর, দ্বিতীয় পর্যায়ে সে সব বিষয়ের আলোচনা করব, যে কর্মগুলো মানুষকে খুশু থেকে ফিরিয়ে রাখে, অন্য মনষ্ক করে এবং সুন্দর করে সালাত আদায় করা হতে বিরত রাখে
দ্বিতীয় প্রকার: সালাতে খুশুর পথে বাধা হয়, প্রতিবন্ধক তৈরী করে, অথবা খুশু বিনষ্ট করে এমন যাবতীয় কাজ থেকে বিরত থাকা। যেমন,  

১৯- যে সব বস্তু একজন মুসল্লির মনোযোগ নষ্ট করে, সালাতের স্থান থেকে সেগুলো দূর করা:
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
كان قِرام (ستر فيه نقش وقيل ثوب ملوّنلعائشة سترت به جانب بيتها ، فقال لها النبي صلى الله عليه وسلم : «أميطي - أزيلي - عني فإنه لا تزال تصاويره تعرضلي في صلاتي»
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এর একটি পর্দা [যাতে নকশা ছিল বা রঙিন] ছিল, যার দ্বারা তিনি তাঁর ঘরের একপাশকে ঢেকে রাখতেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, কাপড়টি সরিয়ে নাও। কারণ, এ কাপড়ের ছবিগুলো সব সময় আমার সালাতে ভেসে উঠে।[106]

সালাতে বিনয়ী হওয়ার তেত্রিশ উপায় (১ম পর্ব)




ভূমিকা
খুশু প্রকাশ করা গুনাহ ও ঘৃণ্য
এখলাসের আলামত হল, খুশুকে গোপন করা
খুশুর বিধান
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস থেকে খুশুর ফযিলত এবং যারা খুশু অবলম্বন করা ছেড়ে দেয়, তাদের শাস্তি
উল্লেখিত বিন্যাসের আলোকে আমরা সালাতে খুশু আনয়নের উপায়গুলো উল্লেখ করব।
প্রথমত: যে উপায়গুলো খুশুর কারণ হয় এবং খুশুকে শক্তিশালী করে, তার আলোচনা
মাসআলা:
মাসআলা: মাসআলা: কোনো ব্যক্তির সালাতে বেশি ওয়াস-ওয়াসা পরিলক্ষিত হলে, তার সালাত সহীহ হবে নাকি তাকে সালাত পুনরায় আদায় করতে হবে। 
পরিশিষ্ট
যাবতীয় প্রশংসা মহান আল্লাহর যিনি সমগ্র জগতের প্রতিপালক এবং যিনি তার স্বীয় কিতাব-কুরআন করীমে- এরশাদ করে বলেন,﴿وَقُومُواْ لِلَّهِ قَٰنِتِينَ ٢٣٨﴾ [البقرة: ٢٣٨]   “আর তোমরা আল্লাহর জন্য বিনীতভাবে দণ্ডায়মান হও”[1] তিনি সালাত সম্পর্কে আরও বলেন,﴿وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى ٱلۡخَٰشِعِينَ ٤٥﴾ [البقرة: ٤٥]   “নিশ্চয় সালাত বিনয়ী ছাড়া অন্যদের উপর কঠিন”।[2] আর সালাত ও সালাম নাযিল হোক মুত্তাকীদের ইমাম, বিনয়ীগণের সরদার আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর এবং তার পরিবার-পরিজন ও সমস্ত সাহাবীদের উপর।
অতঃপর:
দ্বীনের কার্যগত রুকনসমূহের মধ্যে বড় রুকন হচ্ছে সালাত। আর সালাতে খুশু-খুযু তথা বিনয়াবনত থাকা ইসলামী শরীয়তের একটি মহান লক্ষ্য। আল্লাহর দুশমন ইবলিস আদম সন্তানকে গোমরাহ করা ও তাদের ফিতনায় জড়ানোর বিষয়ে এ বলে,
﴿ثُمَّ لَأٓتِيَنَّهُم مِّنۢ بَيۡنِ أَيۡدِيهِمۡ وَمِنۡ خَلۡفِهِمۡ وَعَنۡ أَيۡمَٰنِهِمۡ وَعَن شَمَآئِلِهِمۡۖ وَلَا تَجِدُ أَكۡثَرَهُمۡ شَٰكِرِينَ ١٧ ﴾ [الاعراف: ١٧]   
“তারপর অবশ্যই তাদের নিকট উপস্থিত হব, তাদের সামনে ও তাদের পেছন থেকে এবং তাদের ডান দিক থেকে ও তাদের বাম দিক থেকে। আর আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না”[3]প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার কারণে, তার সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র হল, বিভিন্নভাবে মানুষকে সালাত হতে বিরত রাখা। কুমন্ত্রণার মাধ্যমে বান্দা যাতে সালাত আদায়ে কোন প্রকার তৃপ্তি ও মজা না পায় সে প্রচেষ্টা চালানো, সালাত আদায়ের সাওয়াব ও বিনিময় নষ্ট করা। আর যেহেতু সালাতে খুশু-খুযু এমন একটি বস্তু যা সর্ব প্রথম উঠিয়ে নেওয়া হবে, আর আমরা শেষ জামানার মানুষ, সেহেতু আমাদের বিষয়ে হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র ভবিষ্যতবাণী পুরোপুরি প্রযোজ্য। তিনি বলেন,

সালাতে বিনয়ী হওয়ার তেত্রিশ উপায় (১ম পর্ব)




ভূমিকা
খুশু প্রকাশ করা গুনাহ ও ঘৃণ্য
এখলাসের আলামত হল, খুশুকে গোপন করা
খুশুর বিধান
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস থেকে খুশুর ফযিলত এবং যারা খুশু অবলম্বন করা ছেড়ে দেয়, তাদের শাস্তি
উল্লেখিত বিন্যাসের আলোকে আমরা সালাতে খুশু আনয়নের উপায়গুলো উল্লেখ করব।
প্রথমত: যে উপায়গুলো খুশুর কারণ হয় এবং খুশুকে শক্তিশালী করে, তার আলোচনা
মাসআলা:
মাসআলা: মাসআলা: কোনো ব্যক্তির সালাতে বেশি ওয়াস-ওয়াসা পরিলক্ষিত হলে, তার সালাত সহীহ হবে নাকি তাকে সালাত পুনরায় আদায় করতে হবে। 
পরিশিষ্ট
যাবতীয় প্রশংসা মহান আল্লাহর যিনি সমগ্র জগতের প্রতিপালক এবং যিনি তার স্বীয় কিতাব-কুরআন করীমে- এরশাদ করে বলেন,﴿وَقُومُواْ لِلَّهِ قَٰنِتِينَ ٢٣٨﴾ [البقرة: ٢٣٨]   “আর তোমরা আল্লাহর জন্য বিনীতভাবে দণ্ডায়মান হও”[1] তিনি সালাত সম্পর্কে আরও বলেন,﴿وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى ٱلۡخَٰشِعِينَ ٤٥﴾ [البقرة: ٤٥]   “নিশ্চয় সালাত বিনয়ী ছাড়া অন্যদের উপর কঠিন”।[2] আর সালাত ও সালাম নাযিল হোক মুত্তাকীদের ইমাম, বিনয়ীগণের সরদার আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর এবং তার পরিবার-পরিজন ও সমস্ত সাহাবীদের উপর।
অতঃপর:
দ্বীনের কার্যগত রুকনসমূহের মধ্যে বড় রুকন হচ্ছে সালাত। আর সালাতে খুশু-খুযু তথা বিনয়াবনত থাকা ইসলামী শরীয়তের একটি মহান লক্ষ্য। আল্লাহর দুশমন ইবলিস আদম সন্তানকে গোমরাহ করা ও তাদের ফিতনায় জড়ানোর বিষয়ে এ বলে,
﴿ثُمَّ لَأٓتِيَنَّهُم مِّنۢ بَيۡنِ أَيۡدِيهِمۡ وَمِنۡ خَلۡفِهِمۡ وَعَنۡ أَيۡمَٰنِهِمۡ وَعَن شَمَآئِلِهِمۡۖ وَلَا تَجِدُ أَكۡثَرَهُمۡ شَٰكِرِينَ ١٧ ﴾ [الاعراف: ١٧]   
“তারপর অবশ্যই তাদের নিকট উপস্থিত হব, তাদের সামনে ও তাদের পেছন থেকে এবং তাদের ডান দিক থেকে ও তাদের বাম দিক থেকে। আর আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না”[3]প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার কারণে, তার সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র হল, বিভিন্নভাবে মানুষকে সালাত হতে বিরত রাখা। কুমন্ত্রণার মাধ্যমে বান্দা যাতে সালাত আদায়ে কোন প্রকার তৃপ্তি ও মজা না পায় সে প্রচেষ্টা চালানো, সালাত আদায়ের সাওয়াব ও বিনিময় নষ্ট করা। আর যেহেতু সালাতে খুশু-খুযু এমন একটি বস্তু যা সর্ব প্রথম উঠিয়ে নেওয়া হবে, আর আমরা শেষ জামানার মানুষ, সেহেতু আমাদের বিষয়ে হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র ভবিষ্যতবাণী পুরোপুরি প্রযোজ্য। তিনি বলেন,

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...