Saturday 12 February 2022

অশ্লীল সংস্কৃতি ও ভ্যালেন্টাইন ডে



শা হ্ আ ব্দু ল হা ন্না ন
---------------------
ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবস নামে বাংলাদেশে কয়েক বছর ধরে একটি নতুন দিবস পালনের সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। এটি এখন বিশেষ বিশেষ মহলে পালন করা হচ্ছে। ব্যবসায়িক স্বার্থ ও মুনাফা অর্জনের প্রত্যাশায় একটি ব্যবসায়িক মহল এবং হোটেল ব্যবসায়ীরা এর সাথে যুক্ত হয়ে এটি পালনকে উৎসাহিত করছে। কিন্তু ভ্যালেন্টাইন ডে’র ইতিহাস ও ভিত্তি কী? এ সম্পর্কে আমি ইমপ্যাক্ট ইন্টারন্যাশনাল পত্রিকায় প্রকাশিত প্রখ্যাত স্কলার ড. খালিদ বেগের একটি লেখার অংশ এখানে তুলে ধরলাম।
‘‘আজকাল অনেক মুসলিমই প্রকৃত বিষয়টি না জেনে নানা রকম বিজাতীয় সংস্কৃতির চর্চা করে থাকে। তারা কেবল তাদের সাংস্কৃতিক নেতাদের মতোই এসব ক্ষেত্রে অন্ধ অনুসারী। তারা এটি খুবই কম উপলব্ধি করে যে, তারা যা নির্দোষ বিনোদন হিসেবে করে তার শিকড় আসলে পৌত্তলিকতায়, যা তারা লালন করে তা হল অবিশ্বাসেরই প্রতীক। তারা যে ধারণা লালন করে তা কুসংস্কার থেকেই জন্ম। এমনকি ইসলাম যা পোষণ করে এসব তার প্রত্যাখ্যান। ভালোবাসা দিবস আমেরিকা ও ব্রিটেন বাদে গোটা ইউরোপে মৃত হলেও হঠাৎ করেই তা মুসলিম দেশগুলোয় আবার প্রবেশ করছে। কিন্তু কার ভালোবাসা? কেন এ দিবস পালিত হবে?
অন্যান্য কিছু ক্ষেত্রে তারা যেমন করে, এ বিষয়েও কথিত আছে খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে উর্বরতা ও পশুর দেবতা বলে খ্যাত লুপারকাসের (Lupercus) সম্মানে পৌত্তলিক রীতিনীতির একটি অংশ হিসেবে রোমানরা ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন শুরু করে। এর মূল আকর্ষণ হল পরবর্তী বছরের লটারির আগ পর্যন্ত বর্তমান বছরে লটারির মাধ্যমে যুবকদের মাঝে যুবতীদের বণ্টন করে দেয়া। এ দিন উদযাপনে অন্যান্য ঘৃণ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে একটি ছিল, এক টুকরো ছাগলের চামড়ায় আবৃত যুবতীদের দু’জন যুবক কর্তৃক উৎসর্গীকৃত ছাগল ও কুকুরের রক্তে ভেজা চাবুক দিয়ে প্রহার করা। মনে করা হতো ‘পবিত্র যুবক’দের প্রতিটি ‘পবিত্র’ আঘাত দ্বারা ওই সব যুবতী ভালোভাবে সন্তান ধারণে সক্ষম হবে।
খ্রিষ্টান সম্প্রদায় যথারীতি লুপারকালিয়ার (Lupercalia) এ ঘৃণ্য রীতিকে বন্ধ করার বৃথা চেষ্টা করল। প্রথমে তারা মেয়েদের নামে লটারির বদলে ধর্মযাজকদের নামে লটারির ব্যবস্থা চালু করল। এর উদ্দেশ্য হল, যে যুবকের নাম লটারিতে উঠবে সে যেন পরবর্তী একটি বছর যাজকের মতো পবিত্র হতে পারে। কিন্তু খ্রিষ্টানরা খুব কম স্থানেই এ কাজে সফল হল।
একটি জনপ্রিয় খারাপ কাজকে কিছু পরিবর্তন করে তাকে ভালো কাজে লাগানোর প্রবণতা বহু পুরনো। তাই খ্রিষ্টানরা শুধু লুপারকালিয়া থেকে এ উৎসবের নাম সেন্ট ভ্যালেন্টাইন করতে পারল। পোপ গ্যালাসিয়াস (Gellasius) ৪৯৬ খ্রিষ্টাব্দে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের সম্মানে এটি করল। তথাপি খ্রিষ্টান কিংবদন্তিতে ৫০-এরও বেশি বিভিন্ন রকম ভ্যালেন্টাইন আছে। এদের মধ্যে মাত্র দু’জন সবচেয়ে বেশি পরিচিত, যদিও তাদের জীবন ও চরিত্র এখনো রহস্যাবৃত। একটি কিংবদন্তি হল, যেটি বেশি প্রকৃত ভ্যালেন্টাইন দিবসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন হলেন ‘প্রেমিকদের যাজক’- যে নিজেকে কারাগারের প্রধানের মেয়ের প্রেমে জড়িয়ে ফেলেন।

ইসলামের দৃষ্টিতে ---বি শ্ব ভা ল বা সা দি ব স

 



♥♥♥♥♥♥♥♥♥

ভালবাসার পরিচয় :
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
‘ভালবাসা’ এক পবিত্র জিনিস যা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর পক্ষ হতে আমরা পেয়েছি। ভালবাসা’ শব্দটি ইতিবাচক। আল্লাহ তা‘আলা সকল ইতিবাচক কর্ম-সম্পাদনকারীকে ভালবাসেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ وَأَحْسِنُوا إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ

‘‘এবং স্বহস্তে নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ো না। তোমরা সৎকর্ম কর, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মুহসিনদের ভালবাসেন।’’(সূরা আল-বাকারা:১৯৫)

ভুলের পর ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং পবিত্রতা অবলম্বন করা এ দুটিই ইতিবাচক কর্ম। তাই আল্লাহ তাওবাকারী ও পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকেও ভালবাসেন। আল্লাহ বলেন,

إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ

‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তাওবাকারী ও পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকে ভালবাসেন।’’(সূরা আল-বাকারা:২২২)

তাকওয়া সকল কল্যাণের মূল। তাই আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে খুবই ভালবাসেন। তিনি বলেন,

فَإِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِين

‘‘আর নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালবাসেন।’’(সূরা আল ইমরান:৭৬)

পবিত্র এ ভালবাসার সাথে অপবিত্র ও নেতিবাচক কোন কিছুর সংমিশ্রণ হলে তা আর ভালবাসা থাকে না, পবিত্রও থাকে না; বরং তা হয়ে যায় ছলনা,শঠতা ও স্বার্থপরতা।

ভালবাসা, হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা এক অদৃশ্য সুতোর টান। কোন দিন কাউকে না দেখেও যে ভালবাসা হয়; এবং ভালবাসার গভীর টানে রূহের গতির এক দিনের দূরত্ব পেরিয়েও যে দুই মুমিনের সাক্ষাত হতে পারে তা ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার এক বর্ণনা থেকে আমরা পাই। তিনি বলেন,

النعم تكفر والرحم تقطع ولم نر مثل تقارب القلوب

‘‘কত নি‘আমতের না-শুকরি করা হয়, কত আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হয়, কিন্তু অন্তরসমূহের ঘনিষ্ঠতার মত (শক্তিশালী) কোন কিছু আমি কখনো দেখি নি।’’(ইমাম বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ :হাদীস নং২৬২)

♥→ভালবাসার মানদণ্ড :

কাউকে ভালবাসা এবং কারো সাথে শত্রুতা রাখার মানদণ্ড হলো একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসতে হবে এবং শত্রুতাও যদি কারো সাথে রাখতে হয়, তাও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই। এটাই শ্রেষ্ঠ কর্মপন্থা। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,

إِنَّ أَحَبَّ الْأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ الْحُبُّ فِي اللَّهِ وَالْبُغْضُ فِي اللَّهِ

‘‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট শ্রেষ্ঠ আমল হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসা এবং শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কারো সাথে শত্রুতা রাখা।’’(আহমদ, মুসনাদুল আনসার, হাদিস নং২০৩৪১)

ঈমানের পরিচয় দিতে হলে, কাউকে ভালবাসবার আগে আল্লাহর জন্য হৃদয়ের গভীরে সুদৃঢ় ভালবাসা রাখতে হবে। কিছু মানুষ এর ব্যতিক্রম করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَمِنْ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَندَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ

‘‘আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যকে আল্লাহ্‌র সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে এবং আল্লাহকে ভালবাসার মত তাদেরকে ভালবাসে; কিন্তু যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ্‌র প্রতি ভালবাসায় তারা সুদৃঢ়।’’(সূরা আল-বাকারা:১৬৫)

শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসতে হবে, নতুবা কোন ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পাবে না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,

ثَلَاثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ حَلَاوَةَ الْإِيمَانِ أَنْ يَكُونَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا وَأَنْ يُحِبَّ الْمَرْءَ لَا يُحِبُّهُ إِلَّا لِلَّهِ وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ فِي الْكُفْرِ كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ فِي النَّارِ

‘‘তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকে সে ঈমানের স্বাদ পায়। ১. আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে প্রিয় হওয়া। ২. শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসা। ৩. কুফুরীতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপছন্দ করা।’’(বুখারী,কিতাবুল ঈমান,হাদিস নং:১৫)

♥→আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ভালবাসার ফযীলত :

আল্লাহ রাব্বুল ইয্‌যতের মহত্ত্বের নিমিত্তে যারা পরস্পর ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপন করে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে তিনি তাঁর রহমতের ছায়ায় জায়গা দেবেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,

إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَيْنَ الْمُتَحَابُّونَ بِجَلَالِي الْيَوْمَ أُظِلُّهُمْ فِي ظِلِّي يَوْمَ لَا ظِلَّ إِلَّا ظِلِّي

‘‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, আমার মহত্ত্বের নিমিত্তে পরস্পর ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপনকারীরা কোথায় ? আজ আমি তাদেরকে আমার বিশেষ ছায়ায় ছায়া দান করব। আজ এমন দিন,যে দিন আমার ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া নেই।’’ মুসলিম, কিতাবুল বিররি ওয়াস-সিলাহ, হাদিস নং৪৬৫৫)

আব্দুল লাত্বীফ জামে' মসজিদ লাইব্রেরী কমপ্লেক্স এর জন্য চারজন শায়খ এর পক্...

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস : শরয়ি দৃষ্টিভঙ্গি



পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য। যিনি বলেছেন, “প্রকাশ্য বা গোপন কোনো অশ্লীলতার কাছেও যেও না।” [সুরা আনআম: ১৫১]
শতসহস্র সালাত ও সালাম ধার্য হোক প্রিয় নবি মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহর জন্য। যিনি বলেছেন, “যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমনসব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনও দেখা যায়নি।” [ইবনু মাজাহ, হা/৪০১৯; সনদ: হাসান]
·
প্রাক্‌কথন:
সেন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে তথা ভালোবাসা দিবস একটি খ্রিষ্টীয় বার্ষিক উৎসবের নাম, যা প্রতি বছর ১৪ ফ্রেব্রুয়ারিতে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও নির্লজ্জতার মাধ্যমে উদযাপিত হয়। এই দিন মানুষ তার ভালোবাসার মানুষকে চিঠি, কার্ড, ফুল, গহনা-সহ নানাবিধ উপহার সামগ্রী গিফট করে পাশ্চাত্য উচ্ছৃংখলতা, নোংরামি, বেলেল্লাপনা ও বেহায়াপনার নোংরা স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়। বিভিন্ন মুসলিম ও অমুসলিম দেশে তথাকথিত মুসলিমরাও এই নোংরা খ্রিষ্টীয় উৎসবে নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে প্রেম ও প্রণয়লীলার অবৈধ সরোবরে ডুব দেয়। তারাও উদ্‌যাপন করে কথিত ভালোবাসা দিবস নামের এই হারাম খ্রিষ্টীয় উৎসবটি। আল-ইয়াযু বিল্লাহ।
এই দিনে ভালোবাসা প্রদানের নামে বহু নারী নিজের সতীত্ব বিসর্জন দেয়। নিজের আদর্শকে ভুলে, স্বীয় ভূষণকে বর্জন করে বহু মুসলিম এই দিন বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুকরণে অবাধ ও উন্মত্ত ভালোবাসায় মেতে উঠে। আমাদের দেশও এর ব্যতিক্রম নয়। তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের হাত ধরে আসা এই দিবসটি ১৯৯৩ সাল থেকে এদেশেও উদযাপিত হয়। কথিত সুশীল সমাজের মোড়লরা দেশের উঠতি বয়সী কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী ও যুবক-যুবতীদেরকে নোংরামি ও অশ্লীলতায় উসকে দেয়। কিন্তু এ থেকে উত্তরণ প্রয়োজন, প্রয়োজন মুক্তির।
প্রিয় পাঠক, বক্ষ্যমাণ নিবন্ধটিতে আমরা এই দিবসটির উৎপত্তি এবং এ ব্যাপারে শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি দলিলপ্রমাণ সহকারে আলোচনা করেছি। ফালিল্লাহিল হামদ। তাহলে আসুন, জেনে নেই এই উৎসবের ব্যাপারে ইসলামী বিধিবিধান। ওয়াল্লাহুল মুওয়াফফিকু ওয়াল মুয়িন।
·
ইতিহাস:
ভ্যালেন্টাইনস ডে তথা ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তিগত ইতিহাস নিয়ে বেশ কিছু কিংবদন্তী প্রচলিত আছে। [বিস্তারিত দ্রষ্টব্য: দৈনিক সংগ্রাম; সম্পাদকীয় পাতা; রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ; (অনলাইন ভার্শন)]
তার মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ঘটনাটি আমরা উল্লেখ করছি। ২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন নামে একজন খ্রিষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্মপ্রচারের অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস তাঁকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন।
এতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। কথিত আছে, ওই দিনই এক চিঠিতে তিনি মেয়েটিকে তাঁর ভালোবাসার কথা জানান। চিঠির নিচে লেখেন, ‘ইতি, তোমারই ভ্যালেন্টাইন’ (Your Valentine)। বলা হয়ে থাকে, এটাই সর্বপ্রথম ভ্যালেন্টাইন কার্ড, যা স্বয়ং সেন্ট ভ্যালেন্টাইন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে প্রদান করেছিলেন। বর্তমানে প্রচলিত আধুনিক ভ্যালেন্টাইন কার্ডগুলোতে “ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন” কথাটি লেখা থাকে। [দ্র.: en(ডট)m(ডট)wikipedia(ডট)org/wiki/Valentine's_Day]
তারপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন এর স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন দিবস ঘোষণা করেন। খ্রিষ্টান জগতে পাদ্রী ও সাধুদের স্মরণে এ ধরনের অনেক দিবস তৈরি হয়েছে। যেমন: ২৩শে এপ্রিল সেন্ট জর্জ ডে, ১১ই নভেম্বর সেন্ট মার্টিন ডে, ২৪শে আগস্ট সেন্ট বার্থোলোমিজম ডে, ১লা নভেম্বর আল সেইন্টম ডে, ৩০শে নভেম্বর সেন্ট এন্ড্রু ডে, ১৭ই মার্চ সেন্ট প্যাট্রিক ডে।

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...