ফাত্ওয়া নং - 72216
প্রশ্ন : যদি কোন মুসলিমের ছুটে যাওয়া সালাত ও সিয়ামের সংখ্যা মনে না থাকে, তবে সে কিভাবে তার কাযা করবে?
উত্তর : সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
প্রথমত:
ছুটে যাওয়া সালাতের ক্ষেত্রে তিনটি অবস্থা হতে পারে :
প্রথম অবস্থা :
ঘুম বা ভুলে যাওয়ার কারণে সালাত ছুটে যাওয়া। এ অবস্থায় তার উপর কাযা করা ওয়াজিব। এর দলীল রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী :
من نسي صلاة أو نام عنها فكفارتها أن يصليها إذا ذكرها رواه البخاري (572 ) ومسلم ( 684 ) – واللفظ له - .
“যে সালাত আদায় করতে ভুলে যায় বা সে সময় ঘুমিয়ে থাকায় তা ছুটে যায়, তার কাফফারাহ হলো সে যখনই তা মনে করবে তখনই (সাথে সাথে) সালাত আদায় করে নিবে।” [বুখারী (৫৭২) ও মুসলিম (৬৮৪)। (শব্দ চয়ন) সহীহ মুসলিমের]
এবং সে তা ধারাবাহিকভাবে আদায় করবে যেমনটি তার উপর ফরয হয়েছে, প্রথমটি প্রথমে করবে। এর দলীল জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ এর হাদীস -
أن عمر بن الخطاب رضي الله عنه جاء يوم الخندق بعد ما غربت الشمس فجعل يسب كفار قريش قال : يا رسول الله ما كدت أصلي العصر حتى كادت الشمس تغرب، قال النبي صلى الله عليه وسلم : والله ما صليتها ، فقمنا إلى بطحان فتوضأ للصلاة وتوضأنا لها فصلَّى العصر بعد ما غربت الشمس , ثم صلى بعدها المغرب . رواهالبخاري ( 571 ) ومسلم ( 631 )
“উমার ইবনুল খাত্তাব-রাদিয়াল্লাহু-‘আনহু-খানদাকের যুদ্ধের দিন সূর্যাস্তের পর এসে ক্বুরাইশ কাফিরদের গালি দিতে লাগলেন, তিনি বললেন : “হে রাসূলুল্লাহ, আমি ‘আসরের সালাত আদায় করতে যেতে যেতে সূর্য ডুবে যেতে লাগল !” নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম বললেন : “আল্লাহর শপথ, আমিও এর (‘আসরের) সালাত আদায় করি নি।” এরপর আমরা বাত্বহান-এ দাঁড়ালাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম সালাতের জন্য ওযু করলেন, আমরাও সালাতের জন্য ওযু করলাম। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম সূর্য অস্ত যাওয়ার পর ‘আসরের সালাত আদায় করলেন, এরপর মাগরিব এর সালাত আদায় করলেন।” [বুখারী (৫৭১) ও মুসলিম (৬৩১)]
দ্বিতীয় অবস্থা:
এমন ‘উযরের কারণে সালাত ছুটে যাওয়া, যে সময় কোনো হুঁশ থাকে না, যেমন- কোমা। এ অবস্থার ক্ষেত্রে তার উপর থেকে সালাত (আদায়ের দায়িত্ব) উঠে যায় এবং তার উপর তা কাযা করা ওয়াজিব হয় না।
ফাতওয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ‘আলিমগণকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়েছিল :
আমার এক গাড়ির দুর্ঘটনা ঘটেছিল, ফলে তিন মাস হাসপাতালে শুয়ে ছিলাম, এ সময়ে আমার কোনো হুঁশ ছিল না। এ পুরো সময় আমি কোনো সালাত আদায় করি নি। আমার উপর থেকে কি তা (সালাত আদায়ের দায়িত্ব) উঠে যাবে নাকি পূর্বের সব (ছুটে যাওয়া) সালাত পুনরায় আদায় করব?
তাঁরা উত্তরে বললেন :
“উল্লেখিত সময়ের সালাত [কাযা আদায়ের দায়িত্ব] আপনার থেকে ছুটে যাবে; কারণ আপনার তখন কোনো হুঁশ ছিল না।”
তাঁদেরকে আরও প্রশ্ন করা হয়েছিল:
যদি কেউ এক মাস অজ্ঞান অবস্থায় থাকে আর এ পুরো মাস কোনো সালাত আদায় না করে, তবে সে কীভাবে ছুটে যাওয়া সালাত পুনরায় আদায় করবে?
তাঁরা উত্তরে বলেন:
“এ সময়ে যে সালাতসমূহ বাদ গিয়েছে তা কাযা করবে না, কারণ সে উল্লেখিত অবস্থায় পাগলের হুকুমের মধ্যে পড়ে। আর পাগল ব্যক্তির জন্য কলম উঠানো হয়েছে (অর্থাৎ তার উপর শারী‘আতের বিধি-বিধান প্রযোজ্য নয়)।” [ফাত্ওয়া আল-লাজ্নাহ আদ-দা’ইমাহ (৬/২১)]