Tuesday 6 January 2015

সেহেরির সময়ে পড়তে হয় ইসলামী শরিয়তে এমন কোন দুআ আছে কী?



প্রশ্ন: স্কুলে অধ্যয়নকালে আমি মনে করতাম যে, শুধু ইফতারের সময় বিশেষ দুআ আছে; সেহেরির সময়ে নয়। কারণ সেহেরির সময় নিয়্যত করা হয়; আর নিয়্যতের স্থান হলো অন্তর। তবে আমার স্বামী আমাকে বলেছেন যে, সেহেরির সময়ও বিশেষ দুআ আছে। আশা করি বিষয়টি স্পষ্ট করবেন- এই কথা সঠিক কিনা?
উত্তর:
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 হ্যাঁ, হাদিসে এমন কিছু দোয়া বর্ণিত হয়েছে যে দোয়াগুলো একজন রোজাদার ইফতারের সময় তথা রোজা ভাঙ্গার সময় পড়বেন। যেমন রোজাদার বলবেন:
ذَهَبَ الظَّمَأُ وَ ابْتَلَّتِ العُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الأَجْرُ إنْ شَاءَ الله
“পিপাসা দূরীভূত হল, শিরা-উপশিরা সিক্ত হল এবং আল্লাহ চাহেত সওয়াব সাব্যস্ত হল।’’ এছাড়াও রোজাদার তার পছন্দমত যে কোন দুআ করতে পারেন। এই দোয়া করার কারণ এই নয় যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লামের আদর্শ (সুন্নাহ) হতে সুনির্দিষ্টভাবে এ ক্ষেত্রে কোন উদ্ধৃতি আছে। বরং এজন্য যে, এটি একটি ইবাদতের সমাপ্তি পর্ব। এ ধরনের সময়ে একজন মুসলমানের দুআ করা শরিয়তসম্মত।
 শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উছাইমীন রাহিমাহুল্লাহকে প্রশ্ন করা হয়েছিল:
ইফতারের সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত মাসনুন (সুন্নাহতে প্রমাণিত) দুআ আছে কি? এই দোয়া করার সময়ই বা কখন? একজন রোজা পালনকারী কি মুয়াজ্জিনের সাথে আযান পুনরাবৃত্তি করবেন; নাকি তার ইফতার চালিয়ে যেতে থাকবেন ?
উত্তরে তিনি বলেন :

যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইকে গালি দিল সে কি গুনাহগার হবে



প্রশ্ন: যে ব্যক্তি কোন মুসলিমকে “কুত্তা” বলে অথবা “শুয়োর” বলে অথবা এ ধরনের অন্য কোন অশ্লীল শব্দ বলে গালি দিয়েছে তার উপর কী অনিবার্য হবে? সে কি গুনাহগার হবে?
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 সে ব্যক্তি গুনাহগার হবে। তার উপর শিক্ষামূলক শাস্তি কার্যকর করা হবে এবং তাকে তওবা করতে হবে।
 আল্লাহই ভাল জানেন।
ইমাম নববীর ফতোয়া সংকলন, পৃষ্ঠা- ২২৪

নখে রঙ লাগিয়ে নামায পড়া কী ইসলাম অনুমোদন করে?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 যদি কোন ক্ষতির আশংকা না থাকে তবে নারীর সাজ-সজ্জা হিসেবে নখে পলিশ করা বৈধ এবং এ পলিশ নিয়ে নামায পড়তেও দোষের কিছু নেই। তবে হ্যাঁ, পলিশের মধ্যে যদি এমন কোন ধাতু থাকে যার ফলে পলিশের নীচে পানি না পৌঁছে তাহলে পলিশ তুলে ফেলা ছাড়া ওজু ও গোসল শুদ্ধ হবে না। ওজু-গোসল শুদ্ধ না হলে নামাযও শুদ্ধ হবে না।
 ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়া সংকলন (৫/২১৮) তে এসেছে-
যদি পলিশ নখের ওপর প্রলেপ তৈরী করে তাহলে ওজুর আগে এই প্রলেপ তুলে ফেলা ছাড়া ওজু শুদ্ধ হবে না। আর যদি মেহেদির মত পলিশের কোন প্রলেপ না থাকে তাহলে ওজু শুদ্ধ হবে।
 আল্লাহই ভাল জানেন।
উৎস ঃ Islamqa

শিশুর খতনা বা মুসলমানি উপলক্ষে অনুষ্ঠান করার হুকুম



প্রশ্ন: মরক্কোর অধিবাসীদের মধ্যে শিশুর খতনা উপলক্ষে অনুষ্ঠান করার প্রথা চালু আছে। এই অনুষ্ঠান করা কি সুন্নত; না বিদআত?
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ ও আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ নবজাতকের খতনা উপলক্ষে ওলিমা বা ভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে দোষের কিছু নেই।
 ইবনে কুদামা (রহঃ) মুগনি গ্রন্থে (৭/২৮৬) বলেন:
খতনা উপলক্ষে দাওয়াত করা এবং বিয়ে ছাড়াও যে কোন উপলক্ষে খাওয়ার দাওয়াত করা মুস্তাহাব। যেহেতু এর মাধ্যমে খাদ্য খাওয়ানোর নেক আমল অর্জিত হয়। এ ধরনের দাওয়াত গ্রহণ করাও মুস্তাহাব; তবে ওয়াজিব নয়। এটি ইমাম মালেক, শাফেয়ি, আবু হানিফা ও তাঁর ছাত্রদের অভিমত।
 যে কোন দাওয়াতকারীর দাওয়াত গ্রহণ করা মুস্তাহাব। যেহেতু দাওয়াত গ্রহণ করলে দাওয়াতকারীর কাছে ভাল লাগে, তার মন প্রশান্ত হয়। ইমাম আহমাদকে একবার খতনার অনুষ্ঠানে দাওয়াত করা হলে তিনি দাওয়াত গ্রহণ করেন এবং খাবার খান।

Monday 5 January 2015

প্রশ্ন: তাবেয়ী কারা, তাবে-তাবেয়ী কারা?


উত্তর:
 সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 এক:
তাবেয়ী হচ্ছেন- যারা নবুয়তি যুগের পরে এসেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখেননি। কিন্তু সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গ পেয়েছেন।
 তাবে-তাবেয়ী হচ্ছেন- যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীগণের সাক্ষাত লাভ করেনি; তাবেয়ীগণের সাক্ষাত লাভ করেছেন এবং তাঁদের সঙ্গ পেয়েছেন।
 উলুমুল হাদিস এর পরিভাষায়- তাবেয়ী হচ্ছেন: যিনি সাহাবীর সাক্ষাত পেয়েছেন তিনি তাবেয়ী। বিশুদ্ধ মতানুযায়ী, এর জন্য দীর্ঘদিনের সঙ্গ শর্ত নয়। অতএব, যিনি সাহাবীর সাক্ষাত পেয়েছেন এবং ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনিই তাবেয়ী। তাবেয়ীর মধ্যে উত্তমতার স্তরভেদ রয়েছে।
 হাফেয ইবনে হাজার (রহঃ) ‘নুখবাতুল ফিকার’ (৪/৭২৪) গ্রন্থে বলেন: তাবেয়ী হচ্ছেন- যিনি সাহাবীর সাক্ষাত পেয়েছেন। সমাপ্ত।
 ইবনে কাছির (রহঃ) বলেন: খতিব আল-বাগদাদী বলেন: তাবেয়ী হচ্ছেন যিনি সাহাবীর শিষ্য ছিলেন। হাকেমের বক্তব্যের দাবী হচ্ছে- যিনি সাহাবীর সাক্ষাত পেয়েছেন তাকে তাবেয়ী বলা যাবে। তাঁর থেকে এ কথাও বর্ণিত আছে যে, যদিও সাহাবীর শিষ্যত্ব না পেয়ে থাকুক না কেন? সমাপ্ত।

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...