Thursday 13 July 2017

১০টি ইসলাম ধ্বংসকারী বিষয়ঃ


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য নিবেদিত। দরূদ ও সালাম অবতীর্ণ হোক সেই মহান নবীর উপর যার পরে আর কোন নবী নেই। আরো নাযিল হোক তাঁর পরিবার বর্গ, সহচর বৃন্দ এবং তাঁর হেদায়াতের অনুসারীদের উপর।
অতঃপর হে মুসলিম ভাই!
এ কথা জেনে নিন যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সকল বান্দার উপর ইসলামে প্রবেশ করা, উহা আঁকড়ে ধরা এবং উহার পরিপন্থী বিষয় থেকে সতর্ক থাকা ফরজ করেছেন। আর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সে দিকে আহবান করার জন্যই প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ্‌ এই মর্মে ঘোষণা দিয়ে বলেন, যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণ করবে সে হেদায়াত প্রাপ্ত হবে পক্ষান্তরে যে তাঁর থেকে বিমুখ হবে সে পথভ্রষ্ট হবে। তিনি বহু আয়াতে মুরতাদ হওয়ার মাধ্যম, শির্ক ও কুফরীর সকল প্রকার হতে সতর্ক করেছেন।
বিদ্যানগণ মুরতাদের বিধি-বিধান অধ্যায়ে এই মর্মে উল্লেখ করেছেন যে, একজন মুসলমান ব্যক্তির রক্ত ও ধন-সম্পদ হালাল কারী বিভিন্ন ইসলাম বিধ্বংসী কার্য কলাপ সম্পদনের মাধ্যমে মুরতাদ ও ইসলাম হতে বহিস্কার হয়ে যায়।
ইসলাম বিধ্বংসী কাজ হল সর্ব মোট ১০টি যা শাইখুল ইসলাম ইমাম মুহাম্মাদ বিন সুলায়মান আত তামীমী (রহিমাহু্মুল্লাহ) ও অন্যান্য বিদ্বানগণ উল্লেখ করেছেন। আমরা ঐ সকল ইসলাম বিধ্বংসী কাজ গুলো নিন্মে সংক্ষিপ্ত ভাবে কিঞ্চিত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ সহ আপনার জন্য উল্লেখ করছি। যাতে আপনি উক্ত বিষয়গুলো থেকে সতর্ক থেকে অপরকে সতর্ক করতে পারেন।
ইসলাম বিধ্বংশী কাজ গুলো নিন্মরূপঃ
.
প্রথমঃ আল্লাহর ইবাদতে শির্ক করা। আল্লাহ বলেনঃ
“নিশ্চয় আল্লাহ তার সাথে শির্ক করাকে ক্ষমা করেন না। উহা ব্যতিরেকে উহার নিন্ম পর্যায়ের পাপ সবই তিনি যাকে ইচছা ক্ষমা করেন”। [নিসা : ১১৬]
আল্লাহ তাআলা আরও বলেনঃ
“নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি শির্ক করবে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম, আর এই সমস্ত যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী থাকবে না”। [সূরা মায়েদাহ্‌ : ৭২]
জ্ঞাতব্যঃ এই শির্কের অন্তর্ভূক্ত হল: মৃতকে আহবান করা, তাদের নিকট ফরিয়াদ করা, তাদের জন্য নযর-নেয়াজ মানা ও পশু যবেহ করা। যেমন কোন ব্যক্তি জ্বিনের জন্য বা কোন কবেরর জন্য যবেহ করল ইত্যাদি।

আল্লাহ কি সবকিছু করতে পারেন?



উত্তরঃ হ্যা, আল্লাহ সবকিছু করতে পারেন।
প্রথম দলীল -
وَكَانُوا أَشَدَّ مِنْهُمْ قُوَّةً ۚ وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُعْجِزَهُ مِنْ شَيْءٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ ۚ إِنَّهُ كَانَ عَلِيمًا قَدِيرًا
বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ এমন নন যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর কোন কিছু তাঁকে ব্যর্থ করতে পারে। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। সুরা ফাতিরঃ ৪৪।
English Translation : Allah is not such that anything in the heavens or in the earth escapes Him. Verily, He is All Knowing, All Omnipotent. Sura Fatir: 44.
ডা. মুহসিন খান قَدِيرًا এর অর্থ করেছেন,
Omnipotent- having unlimited power, able to anything.
.
দ্বিতীয় দলীল ২ -
وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
বাংলা অনুবাদঃ আর তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। সুরা আল-মুলকঃ ১।
English Translation : and He is Able to do all things. Sura al-Mulk: 1.
__________________________
(২) আল্লাহ কি সন্তান জন্ম দিতে পারেন?
উত্তরঃ সন্তান জন্ম দেওয়া আল্লাহর কাজ নয়। অথবা বলতে হবে, সন্তান জন্ম দেওয়া আল্লাহর জন্য শোভনীয় নয়।
দলীলঃ
مَا كَانَ لِلَّهِ أَنْ يَتَّخِذَ مِنْ وَلَدٍ
বাংলা অনুবাদঃ সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর কাজ নয়। সুরা মারইয়ামঃ ৩৫।
English Translation : It befits not (the Majesty of) Allah that He should beget a son." Sura Maryam: 35.
__________________________
(৩) কিন্তু কখনো এই কথা বলা যাবে না যে, “আল্লাহ সন্তান জন্ম দিতে পারেন না”, অথবা, “আল্লাহ অমুক কাজ করতে পারেন না”। এইভাবে বললে আল্লাহর প্রতি ‘অক্ষমতা’ আরোপ করা হয়, অথচ আল্লাহ স্বয়ং নিজে বলছেন, তিনি সব কিছু করতে সক্ষম। “আল্লাহ সবকিছু করতে পারেন না”, “আল্লাহ অমুক কাজ করতে পারেন না” বললে আল্লাহর সব কিছু করার ক্ষমতাকে অস্বীকার করে তাঁর প্রতি অক্ষমতার মিথ্যা আরোপ করা হয়।
সন্তান জন্ম দেওয়া, নিজেকে ধ্বংস করা, আল্লাহর মতো দ্বিতীয় আল্লাহ সৃষ্টি করা (নাউযুবিল্লাহি মিং যালিক) - এই ধরণের কাজগুলো ‘ঘোড়ার ডিমের’ মতোই অসম্ভব ও অস্তিত্বহীন কাজ। এই ধরণের কথা ও কাজ আল্লাহর সুমহান নাম, গুণাবলী ও মর্যাদার সাথে শোভনীয় নয়। কোন কাফের, মুশরেক, নাস্তিক বা মূর্খ ব্যক্তি যদি এই ধরণের প্রশ্ন করে উত্তর বলতে বলতে হবে, “এই কাজ আল্লাহর সুমহান গুণাবলী ও মর্যাদার সাথে শোভনীয় নয়।”
__________________________
(৪) শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তায়মিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, “আহলে সুন্নাহর মত অনুযায়ী সবকিছুর উপরেই আল্লাহ তাআ’লার ক্ষমতা রয়েছে, এবং যা বাস্তব তার সবকিছুই এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। আর এমন সব জিনিস যা সহজাতরূপেই অসম্ভব, যেমন এমন কিছু যা একই সাথে অস্তিত্ববান আবার অস্তিত্বহীন, যার মধ্যে কোন বাস্তবতা নেই এবং যার অস্তিত্ব কল্পনাও করা যায়না, পূর্ববর্তী আলেমদের ইজমা (ঐক্যমত) অনুযায়ী এমন কিছুকে কোন “জিনিস” হিসেবে অবিহিত করা যায়না। এর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে “(আল্লাহ কি) তাঁর অনুরূপ দ্বিতীয় কাউকে সৃষ্টি করতে পারেন” ইত্যাদি এমন ধরণে কথা।” মিনহাজ আস-সুন্নাহঃ ২/২৯৪।

Sunday 9 July 2017

কেয়ামতের দিন হিসাব-নিকাশের পর যা যা হবেঃ



(১) জাহান্নামীরা জাহান্নামে যাবে,
(২) জান্নাতীরা আল্লাহ তাআ’লাকে দেখতে পারবে,
(৩) জান্নাতীরা পুলসিরাত পার হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে,
(৪) নবী-রাসুল ও নেককার জান্নাতী ব্যক্তিরা ঈমানদার, কিন্তু পাপের কারনে জাহান্নামে গেছে, এমন লোকদের জন্য সুপারিশ করবেন,
(৫) অন্তরে অণু পরিমান ঈমান আছে, তাদেরকেও শাস্তি দেওয়ার পরে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে,
(৬) আল্লাহ্‌ তাঁর দয়া ও অনুগ্রহে কিছু লোকদেরকে হাতের অঞ্জলি দিয়ে জাহান্নাম থেকে বের করে আনবেন. . .
এরপরেও যারা জাহান্নামে বাকি থাকবে, তাদের মধ্য থেকে আর কেউ কোনদিন জাহান্নাম থেকে বের হতে পারবেনা। তারা হচ্ছে যারা কাফের, বেঈমান, মুশরেক ও মুনাফেক অবস্থায় মৃত্যবরণ করেছিলো এমন লোকেরা। আল্লাহ্‌ আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচান, আমিন। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমঃ (৩৫১)-এ বর্ণিত পুরো ঘটনাটা বর্ণনা করা হলো।
.
আবু সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যুগে কয়েকজন সাহাবী তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কিয়ামতের দিন আমরা কি আমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যা। তিনি আরো বললেন, দুপুরবেলা মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে তোমাদের কোন কষ্ট হয় কি? সাহাবীদের সবাই বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! না, তা কষ্ট হয় না। নবীজী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ঠিক তেমনি কিয়ামতের দিন তোমাদের প্রতিপালককে দেখতে তোমাদের জন্যে কোনই বাঁধা থাকবে না। সেদিন এক ঘোষনাকারী ঘোষণা দিবে, “তোমরা যে যার উপাসনা করতে, সে আজ তার মাবূদের অনুসরণ করুক।” তখন আল্লাহ ব্যতীত যারা অন্য দেব-দেবী ও বেদীর উপাসনা করত, তাদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না; সকলেই জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। নেককার লোক কিংবা পাপী, যারা আল্লাহ তাআ’লার ইবাদত করত, তারাই কেবল বাকী থাকবে এবং আহলে কিতাবীদের মধ্যে যারা দেব-দেবী ও বেদীর উপাসক ছিল না, তারাও বাকি থাকবে। এরপর ইয়াহুদীদেরকে ডেকে জিজ্ঞেস করা হবে! তোমরা কার ইবাদত করতে? তারা বলবে, আমরা আল্লাহর পুত্র উযায়ের-এর উপাসনা করতাম। তাদেরকে বলা হবে, তোমরা মিথ্যা বলছ। (কারণ), আল্লাহ কোন স্ত্রী বা সন্তান গ্রহণ করেননি। তোমরা কি চাও? তারা বলবে, হে আল্লাহ! আমাদের খুবই পানির পিপাসা পেয়েছে। আমাদের তৃষ্ণা নিবারণ করুন। তাদের এই দুয়া শুনে তাদেরকে ইঙ্গিত করে মরীচিকাময় জাহান্নামের দিকে জমায়েত করা হবে। সেই জাহান্নামের (আগুনের) এক অংশ অপর অংশকে খেয়ে ফেলতে থাকবে। ইয়াহুদীরা সেই (মরীচিকাময় জাহান্নামের মাঝে পানির আশায়) ঝাঁপিয়ে পড়বে। এরপর খৃষ্টানদেরকে ডাকা হবে আর বলা হবে, তোমরা কার ইবাদত করতে? তারা বলবে, আমরা আল্লাহর পুত্র (ঈসা) মসীহ-এর উপাসনা করতাম। তাদেরকে বলা হবে, তোমরা মিথ্যা বলছ। (কারণ), আল্লাহ কোন স্ত্রী বা সন্তান গ্রহণ করেন নি। তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হরে, এখন তোমরা কি চাও? তারা বলবে, হে আমাদের রব! আমাদের দারুন তৃষ্ণা পেয়েছে, আমাদের তৃষ্ণা নিবারণ করুন। তখন তাদেরকেও পানির ঘাটে যাবার ইঙ্গিত করে জাহান্নামের দিকে জমায়েত করা হবে। তাদের কাছে একে মরীচিকার মত (পানির নদী বা ঝর্ণার মতো) মনে হবে। সেই জাহান্নামের (আগুনের) এক অংশ অপর অংশকে খেয়ে ফেলতে থাকবে। খ্রীস্টানরা তখন জাহান্নামে ঝাপিয়ে পড়তে থাকবে। শেষে ঈমানদার হোক কিংবা গুনাহগার, এক আল্লাহর উপাসনাকারী ব্যতীত আর কেউ (হাশরের ময়দানে) অবশিষ্ট থাকবে না। তখন আল্লাহ তাদের কাছে আসবেন। বলবেন, সবাই তাদের নিজ নিজ উপাস্যের অনুসরণ করে চলে গেছে, আর তোমরা কার জন্যে অপেক্ষা করছ? তারা বলবে, হে আমাদের প্রভু! যেখানে আমরা বেশি মুখাপেক্ষী ছিলাম, সেই দুনিয়াতে আমরা অপরাপর মানুষ থেকে আলাদা থেকেছি এবং তাদের সঙ্গী হইনি। তখন আল্লাহ

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...