শরিয়ার পারিভাষাগুলি দুটি অর্থ বহন করেঃ
যেমন শারঈ শব্দ [সাউম] বহু বচনে সিয়াম। স্বালাত বহু বচনে স্বালাওয়াত। সাউম ও স্বালাত যেহেতু আরবী ভাষার শব্দ তাই আরবী ভাষাতেও তার নিজস্ব একটি অর্থ রয়েছে। সাউমের আরবী আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বিরত থাকা আর স্বালাতের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে দুআ। আর এসবের একটি শারঈ অর্থও রয়েছে কারণ এই পরিভাষাগুলি শা‘রে বা বিধানদাতার পক্ষ্য থেকে অবতীর্ণ। এখন জানা দরকার এই সব শারঈ শব্দগুলির কোন্ অর্থটি গ্রহণীয় আভিধানিকটি না শারঈটি?
শারঈ অর্থকে অন্য শব্দে পারিভাষিক অর্থও বলা হয়। আমাদের অবশ্যই জানা দরকার শরিয়ার শব্দগুলির শারঈ অর্থই গ্রহণীয়। তাই সাউমের অর্থ শুধু বিরত থাকা করলে গ্রহনীয় নয় আর না স্বালাতের অর্থ দুআ করলে গ্রহনীয়। যদি হত, তাহলে কেউ যে কিছু থেকে বিরত থাকলেই তাকে সাউম পালনকারী বলা যেত। অনুরূপ কেউ দুআ করলেই তাকে স্বালাত আদায়কারী বলা যেত। কিন্তু এই রকম কোন কিছু থেকে বিরত থাকলেই তাকে সাউম আদায়কারী বলা যায় না। বরং শরীয়ার দৃষ্টিতে যে, ফজর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার ও যৌন সঙ্গম থেকে বিরত থাকে ইবাদতের উদ্দেশ্যে তাকেই সাউম পালনকারী বলা হয়।
উল্লেখ্য শারই শব্দগুলি যেমন স্বালাত, সাউম, যাকাত, হজ্জ ইত্যাদী যদি অন্য ভাষায় অন্য শব্দে ব্যবহৃত হয় এবং ঐ অর্থেই ব্যবহৃত হয় যেই অর্থে শরিয়ায় ব্যবহৃত হয়েছে, তাহলে তা বলা দুষনীয় নয়; বরং অনেক সময় দেশ ও ভাষার পার্থক্যের কারণে তাদের নিজের ভাষায় বলাই উচিৎ যেন তারা বুঝতে পারে। অর্থাৎ ধরূন কোন সমাজে স্বালাত শব্দটি প্রচলিত নয় বরং এর অর্থ নামায হিসাবে প্রচলিত এবং তারা নামায বললে ঐ অর্থই বুঝে যা সালাতের অর্থ তাহলে তা ব্যবহার করতে কোন অসুবিধা নেই।
উসূলে ফিকহে একটি মূলনীতি রয়েছে [আল্ ইবরাতু লিল্ মাআনী লা লিল্ আলফায ওয়াল্ মাবানী] অর্থাৎ শব্দ নয় বরং শব্দের উদ্দেশ্যই গৃহীত। তাই কেনা-বেচা ও বিবাহ শাদীর অধ্যায়ে এই মূলণীতির রয়েছে প্রচুর ব্যবহার। তন্মধ্যে উদাহারণ স্বরূপ যদি কেউ তার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার সময় এমন শব্দ বলে যা তালাক নয় বরং ধরুন বললোঃ তুমি তোমার মায়ের বাড়ি চলে যাও। এখন এটি তালাক হবে কি না? শাইখুল ইসলাম সহ প্রায় অধিক উলামা বলেনঃ দেখতে হবে তার এই কথার মাধ্যমে উদ্দেশ্য কি ছিল? যদি সে তালাক উদ্দেশ্য করেছিল তাহলে তালাক ধরা হবে আর যদি সে অেন্য উদ্দেশ্যে বলে থাকে তাহলে তালাক ধরা হবে না।
তাই বলছিলাম শরিয়ার সাউম বা সিয়াম শব্দের বদলে কোনো দেশে বা সমাজে যদি কেউ তা রোযা বলে তাহলে জানতে হবে যে, সে রোযা বলতে ইসলামের রুকন রোযাকে বুঝাচ্ছে, না অন্য কোনো উপবাসকে? যদি ইসলামের সাউমকে বুঝায় তাহলে তা স্বীকৃত।
=একটু আগে এক মাননীয় আলেমের একটি ছোট ভিডিও ক্লিপ শুনলাম তাতে তিনি বারংবার বলছেন রোযা মানে উপবাস আর সিয়াম মানে বিরত থাকা মানুষ উপবাস থাকতে পারছে কিন্তু সিয়াম রাখতে পারছে না। তাঁর এই বক্তব্যে আসলে জনসাধারণ অনেকে বিভ্রান্ত হচ্ছে বা বলতে পারেন তাঁর শব্দের মায়াজালে অনেকে সংশয়ে রয়েছে যে, তাদের নাকি উপবাস রাখা হচ্ছে সিয়াম হচ্ছে না। অনেক অল্প জ্ঞানী যুবক বিষয়টি বড় করে দেখছে এবং প্রচারও করছে। এই কারণে আমি উপরোক্ত বিষয়টি লিখতে বাধ্য হলাম, যার সারাংশ হচ্ছে মানুষ রোযা বলুক আর সাউম-সিয়াম দুটির উদ্দেশ্য যদি একই হয় তাহলে পার্থক্য করার প্রয়োজন নেই আর না এমন ব্যাখার প্রয়োজন যার মাধ্যমে উপকারের থেকে অপকার বেশী বা বিভ্রান্তি বেশী। আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করুক এবং আমাদের আপনাদের সকলকে দ্বীনের সঠিক জ্ঞান অর্জন করার ও আমল করার তাওফীক দিক। আমীন।
— লিখেছেন শায়খ আব্দুর রাক্কিব বুখারি মাদানী হাফিযাহুল্লাহ।
যেমন শারঈ শব্দ [সাউম] বহু বচনে সিয়াম। স্বালাত বহু বচনে স্বালাওয়াত। সাউম ও স্বালাত যেহেতু আরবী ভাষার শব্দ তাই আরবী ভাষাতেও তার নিজস্ব একটি অর্থ রয়েছে। সাউমের আরবী আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বিরত থাকা আর স্বালাতের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে দুআ। আর এসবের একটি শারঈ অর্থও রয়েছে কারণ এই পরিভাষাগুলি শা‘রে বা বিধানদাতার পক্ষ্য থেকে অবতীর্ণ। এখন জানা দরকার এই সব শারঈ শব্দগুলির কোন্ অর্থটি গ্রহণীয় আভিধানিকটি না শারঈটি?
শারঈ অর্থকে অন্য শব্দে পারিভাষিক অর্থও বলা হয়। আমাদের অবশ্যই জানা দরকার শরিয়ার শব্দগুলির শারঈ অর্থই গ্রহণীয়। তাই সাউমের অর্থ শুধু বিরত থাকা করলে গ্রহনীয় নয় আর না স্বালাতের অর্থ দুআ করলে গ্রহনীয়। যদি হত, তাহলে কেউ যে কিছু থেকে বিরত থাকলেই তাকে সাউম পালনকারী বলা যেত। অনুরূপ কেউ দুআ করলেই তাকে স্বালাত আদায়কারী বলা যেত। কিন্তু এই রকম কোন কিছু থেকে বিরত থাকলেই তাকে সাউম আদায়কারী বলা যায় না। বরং শরীয়ার দৃষ্টিতে যে, ফজর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার ও যৌন সঙ্গম থেকে বিরত থাকে ইবাদতের উদ্দেশ্যে তাকেই সাউম পালনকারী বলা হয়।
উল্লেখ্য শারই শব্দগুলি যেমন স্বালাত, সাউম, যাকাত, হজ্জ ইত্যাদী যদি অন্য ভাষায় অন্য শব্দে ব্যবহৃত হয় এবং ঐ অর্থেই ব্যবহৃত হয় যেই অর্থে শরিয়ায় ব্যবহৃত হয়েছে, তাহলে তা বলা দুষনীয় নয়; বরং অনেক সময় দেশ ও ভাষার পার্থক্যের কারণে তাদের নিজের ভাষায় বলাই উচিৎ যেন তারা বুঝতে পারে। অর্থাৎ ধরূন কোন সমাজে স্বালাত শব্দটি প্রচলিত নয় বরং এর অর্থ নামায হিসাবে প্রচলিত এবং তারা নামায বললে ঐ অর্থই বুঝে যা সালাতের অর্থ তাহলে তা ব্যবহার করতে কোন অসুবিধা নেই।
উসূলে ফিকহে একটি মূলনীতি রয়েছে [আল্ ইবরাতু লিল্ মাআনী লা লিল্ আলফায ওয়াল্ মাবানী] অর্থাৎ শব্দ নয় বরং শব্দের উদ্দেশ্যই গৃহীত। তাই কেনা-বেচা ও বিবাহ শাদীর অধ্যায়ে এই মূলণীতির রয়েছে প্রচুর ব্যবহার। তন্মধ্যে উদাহারণ স্বরূপ যদি কেউ তার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার সময় এমন শব্দ বলে যা তালাক নয় বরং ধরুন বললোঃ তুমি তোমার মায়ের বাড়ি চলে যাও। এখন এটি তালাক হবে কি না? শাইখুল ইসলাম সহ প্রায় অধিক উলামা বলেনঃ দেখতে হবে তার এই কথার মাধ্যমে উদ্দেশ্য কি ছিল? যদি সে তালাক উদ্দেশ্য করেছিল তাহলে তালাক ধরা হবে আর যদি সে অেন্য উদ্দেশ্যে বলে থাকে তাহলে তালাক ধরা হবে না।
তাই বলছিলাম শরিয়ার সাউম বা সিয়াম শব্দের বদলে কোনো দেশে বা সমাজে যদি কেউ তা রোযা বলে তাহলে জানতে হবে যে, সে রোযা বলতে ইসলামের রুকন রোযাকে বুঝাচ্ছে, না অন্য কোনো উপবাসকে? যদি ইসলামের সাউমকে বুঝায় তাহলে তা স্বীকৃত।
=একটু আগে এক মাননীয় আলেমের একটি ছোট ভিডিও ক্লিপ শুনলাম তাতে তিনি বারংবার বলছেন রোযা মানে উপবাস আর সিয়াম মানে বিরত থাকা মানুষ উপবাস থাকতে পারছে কিন্তু সিয়াম রাখতে পারছে না। তাঁর এই বক্তব্যে আসলে জনসাধারণ অনেকে বিভ্রান্ত হচ্ছে বা বলতে পারেন তাঁর শব্দের মায়াজালে অনেকে সংশয়ে রয়েছে যে, তাদের নাকি উপবাস রাখা হচ্ছে সিয়াম হচ্ছে না। অনেক অল্প জ্ঞানী যুবক বিষয়টি বড় করে দেখছে এবং প্রচারও করছে। এই কারণে আমি উপরোক্ত বিষয়টি লিখতে বাধ্য হলাম, যার সারাংশ হচ্ছে মানুষ রোযা বলুক আর সাউম-সিয়াম দুটির উদ্দেশ্য যদি একই হয় তাহলে পার্থক্য করার প্রয়োজন নেই আর না এমন ব্যাখার প্রয়োজন যার মাধ্যমে উপকারের থেকে অপকার বেশী বা বিভ্রান্তি বেশী। আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করুক এবং আমাদের আপনাদের সকলকে দ্বীনের সঠিক জ্ঞান অর্জন করার ও আমল করার তাওফীক দিক। আমীন।
— লিখেছেন শায়খ আব্দুর রাক্কিব বুখারি মাদানী হাফিযাহুল্লাহ।