Saturday 5 March 2016

আযান ও মুআযযিন (১ম পর্ব)


unnamedىغ7আযান ও মুয়াযযিন (১ম পর্ব)
লেখক: শাইখ আব্দুর রাকী মাদানী
সম্পাদনায়: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
আল্ হামদুলিল্লাহ ওয়াস্ স্বালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহ।
ইতিপূর্বে ইমাম ও ইমামতি সংক্রান্ত বিভিন্ন মাসআলা মাসাইল নয়টি কিস্তিতে –আল্ হামদু লিল্লাহ- লিখতে সক্ষম হয়েছি। যেহেতু ইমামতির বিধি-বিধানের সাথে আযানের বিধি-বিধানেরও খুব কাছের সম্পর্ক রয়েছে তাই সেই ধারাবাহিকতায় এই লেখার অবতারণা। (ওয়ামা তাওফীক্বী ইল্লাহ বিল্লাহ)
আযানের অর্থঃ
আযানের আভিধানিক অর্থ হল, অবহিত করা, সংবাদ দেওয়া, ঘোষণা করা, জ্ঞাত করা।
শরিয়ার পরিভাষায় আযান হল, নামাযের সময় হলে ইবাদত স্বরূপ বিশেষ কিছু যিকরের মাধ্যমে স্বলাতের সংবাদ দেওয়া। [শারহুল মুমতি,২/৪০]
ইবনে হাজার (রাহেঃ) বলেন, বিশেষ কিছু শব্দের মাধ্যমে নামাযের সময়ের সংবাদ দেওয়া। [ফাতহুল বারী ২/১০২]
আযানের মর্মঃ
আযান ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। এটি ইসলামের বাহ্যিক নিদর্শন বা প্রতীক। এর মাধ্যমে একটি মুসলিম ও অমুসলিম সমাজের বাহ্যিক পার্থক্য নির্ণয় করা হয়। আনাস বিন মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত,
“নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন আমাদের নিয়ে কোনো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন, তখন তাদের উপর আক্রমণ করতেন না যতক্ষণ সকাল না হত এবং দেখে না নেওয়া হত। যদি তিনি আযান শুনতে পেতেন, তাহলে তাদের উপর আক্রমণ করতেন না। আর যদি আযান না শুনতে পেতেন, তাহলে তাদের উপর আক্রমণ করতেন।” [বুখারী, আযান অধ্যায়, নং ৬১০]
‘আযানের শব্দ সমূহ অল্প হলেও তাতে রয়েছে আক্বীদার বিধান। কারণ তা আল্লাহর বড়ত্ব বর্ণনা দ্বারা শুরু হয়েছে, যাতে রয়েছে আল্লাহর অস্তিত্ব ও তাঁর পূর্ণতার বর্ণনা। অতঃপর দ্বিতীয়বার পুণরায় তাওহীদের বর্ণনা ও শির্কের অস্বীকৃতি। অতঃপর মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রেসালতের প্রমাণ। রেসালতের সাক্ষীর পর বিশেষ ইবাদতের আহব্বান। কারণ সে ইবাদত রাসূলের মাধ্যমেই জানা যায়। অতঃপর সর্বাঙ্গীন সফলতার দিকে আহব্বান করা হয়েছে, তাতে ইঙ্গিত রয়েছে শেষ দিবসের প্রতি। অতঃপর তাগিদ স্বরূপ পুণরায় তা আবার বর্ণনা করা হয়েছে’। [ফাতহুল বারী,২/১০২]
আযানের সূচনাঃ
হিজরতের প্রথম বছরে আযানের সূচনা হয়। মুসলিমগণ যখন মদীনায় হিজরত করেন, তখন তারা নামাযের জন্য অনুমানের ভিত্তিতে একত্রিত হতেন, নামাযের জন্য ডাকের কোনো নিয়ম ছিল না। তাই তারা পরষ্পরে এ বিষয়ে পরামর্শ করেন। কেউ কেউ খৃষ্টানদের নাকূস বা ঘণ্টা বাজানোর নিয়মের কথা বলেন। অনেকে ইহুদীদের শিংগা ফুৎকারের কথা বলেন। [বুখারী, আযান অধ্যায়, নং ৬০৪] অতঃপর একটি সুন্দর ঘটনা ঘটে, যার পর আযান শরীয়তভুক্ত হয় এবং এর মাধ্যমে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনা থেকে মুসলিমদের ইবাদতের আহ্বানের নিয়মে পার্থক্য নির্ণিত হয়।

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...