Friday, 26 August 2016

উট-গরুতে শরীকানায় কুরবানী দেয়া প্রসঙ্গ


লেখক: আব্দুর রাকীব (মাদানী)
দাঈ, দাওয়াহ সেন্টার, খাফজী, সউদী আরব।
সম্পাদক: আব্দুল্লাহিল হাদী
আল হামদুলিল্লাহ, ওয়াস্ সালাতু ওয়াস্ সালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আম্মা বাদ:
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, কুরবানী করা একটি প্রমাণিত ইবাদত, যাকে অধিকাংশ উলামা সুন্নতে মুআক্কাদাহ (তাগিদী সুন্নত) বলেছেন এবং ক্ষমতাবানদের তা পরিত্যাগ করা অনুচিত মনে করেছেন। [আল্ মুগনী, ইবনু কুদামাহ, ১৩/৩৬০, ফিকহুস্ সুন্নাহ, সাইয়্যেদ সাবেক,৩/১৯৫]
তাই প্রতি বছর যখন কুরবানীর সময় উপস্থিত হয়, তখন মুসলিম সমাজে এই ইবাদতটি যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়। মুসলিম ভাইয়েরা তাদের সাধ্যানুযায়ী ছাগল, ভেড়া, গরু ও উট দ্বারা কুরবানী দিয়ে থাকেন। অনেকে গরু বা উটে শরীক হয়ে ৭ ভাগের এক-দুই ভাগেও কুরবানী দিয়ে থাকেন। কিন্তু এই সময় একটি প্রসঙ্গ প্রায় প্রায় উঠে আসে যে, এই রকম শরীকানায় কুরবানী দেওয়া বৈধ না অবৈধ? অনেকের ধারণা, মুকীম ব্যক্তি [মুসাফির নয় এমন ব্যক্তি] উট-গরুর সাত ভাগের কোন এক ভাগে অংশী হয়ে কুরবানী দিতে পারে না। কারণ স্বরূপ তারা মনে করেন, শরীকানায় কুরবানী দেয়াটা মুসাফির বা সফরের সাথে সম্পৃক্ত; মুকীমের সাথে নয়। তাই এই বিষয়টির শারয়ী সমাধানার্থে কিছু আলোকপাত করার মনস্থ করেছি। ওয়ামা তাওফীকী ইল্লা বিল্লাহ।
এ বিষয়ের দুটি পরিভাষা: আমরা শুরুতে কুরবানী সংক্রান্ত দুটি পরিভাষা জেনে নিব যা, আমাদের আলোচ্য বিষয়টি ভাল ভাবে জানতে সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ।
  • উযহিয়া: (আমাদের সমাজে যা কুরবানী নামে পরিচিত) সেই গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তুকে বলা হয়, যা কুরবানীর দিন সমূহে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে বাড়িতে যবাই করা হয়। [আল্ মুলাখ্খাস আল্ ফিকহী/২১৩]
  • হাদ্ঈ: সেই চতুষ্পদ জন্তুকে বলা হয়, যা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কুরবানীর দিনগুলিতে হারামে (মক্কায়) যবাই করা হয় ‘তামাত্তু’ কিংবা ‘কিরান’ হজ্জ করার কারণে কিংবা হজ্জ বা উমরার কোন ওয়াজিব কাজ ছুটে যাওয়ার কারণে কিংবা ইহরাম অবস্থার নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করার কারণে। [ফিক্হ বিশ্বকোষ,৫/৭৪, শব্দ উয্হিয়্যাহ] যেহেতু এই পশুকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে হাদীয়া করা হয়, তাই তাকে হাদ্ঈ বলে। [আল্ মুলাখ্খাস আল ফিকহী, ড.ফাউযান,৩১৩]
উভয়ের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্যটি হচ্ছে, হাদ্ঈ হজ্জ বা উমরা পালনকারীর পক্ষ থেকে মক্কায় যবাই করা হয় এবং উযহিয়া হজ্জ বা উমরা পালনকারী নয়, এমন ব্যক্তির মাধ্যমে নিজ বাসস্থানে যবাই করা হয়।

Thursday, 25 August 2016

তাবলিগ জামাতের কিতাব "ফাজায়েলে হজ্জে" বুজুর্গদের কেরামতিঃ


“এমন অনেক লোক আছে, স্বয়ং কাবা ঘর যাদের জিয়ারত করতে যায়!”
পোস্ট লিখেছেনঃ Anisur Rahman.
______________________________
ফাজায়েলে হজ্জঃ শাইখুল হাদিস যাকারিয়া সাহারনপুরি সাহেব কর্তৃক লিখিত বিখ্যাত একটি কিতাব। কিতাবটি তাবলিগী ভাইদের সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত। এমনকি প্রতি বছর হজের সময় এই বইয়ের তালিম দেয়া হয় এবং হাজীদেরকে এই বই পাঠ করার ও হৃদয়ঙ্গম করা এবং সে অনুযায়ী হজ সম্পাদন করার জন্য উৎসাহ ও (ক্ষেত্রবিশেষে) নির্দেশ দেয়া হয়।
ক্ষুদ্র এই কিতাবে তিনি হজের ফজিলত সম্পর্কে কুরআনের আয়াত এবং বিভিন্ন হাদীস উল্লেখ করেছেন যার মধ্যে সহীহ হাদীসের পাশাপাশি জাল, যইফ ও বানোয়াট হাদীসেরও বিশাল সমাহার ঘটিয়েছেন। এছাড়া অনেক আজগুবি কিসসা-কাহিনী ও ঈমান বিধ্বংসী গল্পগুজব উপস্থাপন করেছেন।
এমন একটি ঘটনা নিয়ে আজ আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। শাইখুল হাদিস যাকারিয়া সাহারনপুরি সাহেব তার ‘ফাজায়েলে হজ্জ’ নামক কিতাবের ১০৯ নম্বর পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেনঃ
“অনেক লোক তো এমনও আছে, স্বয়ং বাইতুল্লাহ জেয়ারতের জন্য তাহাদের নিকট যায়।”
রেফারেন্সঃ ফাজায়েলে হজ্জ, মূল লেখকঃ যাকারিয়া সাহারানপুরি। বংলা অনুবাদকঃ মাওলানা মোহাম্মদ ছাখাওয়াত উল্লাহ; দিল্লী ও কাকরাইলের মুরুব্বিদের অনুমতিতে লিখিত। প্রকাশনীঃ তাবলীগী কুতুবখানা, ৫০ বাংলাবাজার; সংশোধিত সংস্করন, অক্টোবর ২০০২ ই; পৃষ্ঠা নঃ ১০৯ [আপনারা পোস্টে বইয়ের পৃষ্ঠার স্ক্যান করা অংশের ছবি দেখুন]।
হয়তো অনেক পাঠকের চোখ কপালে উঠে গেছে! এরকম আজগুবি কথা কেউ কি বলতে পারে! জ্বী হা। এরকম আজগুবি কথা যারা বলতে পারে, তারা আমাদের উপমহাদেশে ‘শাইখুল হাদিস’ নামে পরিচিতি। এবং তাদের কিতাব সমগ্র উপমহাদেশে ওয়াহীর মতো পাঠ করা হয়, যেন এর মধ্যে কোনো ভুল থাকতেই পারে না।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ “আল্লাহ্র জন্য উক্ত ঘরের হাজ্জ করা লোকদের উপর অবশ্য কর্তব্য। যার সে পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ্য আছে অতঃপর যে ব্যাক্তি তা অস্বীকার করবে, সে জেনে রাখুক! নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ বিশ্ব জাহানের মুখাপেক্ষী নন।’’ [আলে ইমরানঃ ৯৭]
হে সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা! 

আল্লামা মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ. এর সংক্ষিপ্ত জীবনী


islamic-book-fair-ibf-2013আল্লামা মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ. এর সংক্ষিপ্ত জীবনী (১৯১৪-১৯৯৯ খৃষ্টাব্দ) 
অনুবাদ ও গ্রন্থনায়: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
descarga
সূচীপত্র
  • সূচীপত্র/২
  • ভূমিকা/৩
  • সংক্ষিপ্ত জীবনী/৫
  • জন্ম ও পরিচয়/৫
  • শিক্ষা জীবন/৬
  • শায়খ আলবানীর শিক্ষকগণ/৭
  • কর্ম জীবন/৮
  • হাদীস অধ্যয়নের প্রতি মনোনিবেশ/৮
  • শাইখ আলবানীর দাওয়াহ কার্যক্রম/১১
  • কষ্টে ধৈর্য ধারণ ও হিজরত/১৩
  • কার্যক্রম ও অবদান/১৪
  • ইমাম আলবানীর কতিপয় ছাত্র/১৭
  • তাঁর লিখিত কিতাবাদী ও গবেষণা/১৮
  • আন্তর্জাতিক বাদশাহ ফায়সাল পুরস্কার/২৮
  • তাঁর ব্যাপারে আলেমগণের ভূয়সী প্রশংসা/২৮
  • শাইখ মুহাম্মদ বিন ইবরাহীম রহ./২৮
  • শাইখ আব্দুল্লাহ বিন বায রহ./২৮
  • আল্লামা শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন রহ./২৯
  • খ্যাতনামা মুফাসসির আল্লামা শাইখ মুহাম্মদ আল আমীন আশ শানকীতী/৩০
  • শাইখ মুকবিল আল ওয়াদাঈ/৩০
  • শাইখের স্ত্রী-পরিবার/৩১
  • আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ. এর অন্তিম ওসিয়ত/৩২
  • আখিরাতের পথে যাত্রা/৩৪
  • দুটি কারণে শাইখের দাফন তাড়াতাড়ি দেয়া হয়/৩৫
  • উৎস/৩৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ভূমিকা:
إنَّ الْحَمْدَ لِلَّهِ نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِينُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ وَنَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ شُرُورِ أَنْفُسِنَا وَمِنْ سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا مَنْ يَهْدِهِ اللَّهُ فَلا مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْ فَلا هَادِيَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ-أمَّا بَعْدُ
আল্লামা মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ.। এক আলোকোজ্জ্বল জীবনের প্রতিবিম্ব। ইলমী জগতে বিংশ শতাব্দীর এক বিস্ময়। আধুনিক যুগে মুসলিম জাহানের একজন স্বনামধন্য আলেমে দ্বীন। প্রবল ইচ্ছা শক্তি, অসীম সাহস, সুদৃঢ় মনোবল আর ইখলাস ভরা প্রত্যয় থাকলে আল্লাহর রহমতে কিভাবে একজন সাধারণ মানুষ ‘শতাব্দীর ‘শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস’ এ পরিণত হতে তার জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছেন আল্লামা আলাবানী।
আধুনিক বিশ্বে শাইখ আলবানীকে ইলমে হাদীসের ক্ষেত্রে বিশেষ করে ইলমুল জারহে ওয়াত তাদীলের[1] ক্ষেত্রে এক স্বতন্ত্র প্রতিভাধারী আলেম হিসেবে গণ্য করা হয়। ইলমে মুস্তালাহুল হাদীসের[2] ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য বক্তিত্ব। তাই তো মুহাদ্দিসগণ বলেছেন, “আল্লামা আলবানী যেন ইবনে হাজার আসকালানী, হাফেয ইবনে কাসীর প্রমুখ ইলমুল জারহে ওয়াত তাদীলের আলেমদের যুগকে আবার ফিরিয়ে এনেছেন!”
তাই আসুন, হাদীসে নববীর এই নিরলস খাদেম, সালফে সালেহীনের বাস্তব প্রতিচ্ছবি, মুহাদ্দিস, ফকীহ, দাঈ, ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক ও গবেষক আল্লামা মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ. এর সাথে পরিচিত হই।

Tuesday, 23 August 2016

তাবলীগ জামাতঃ


• অহমিকা আর আত্ম-প্রবঞ্চনা তাদের মুল সম্পদ।
• কোরআন- হাদিসকে এক পাশে রেখে মুরুব্বী দেরকে রাহবার বানিয়েছে।
• মাথার ধারনা, সপ্ন, যুক্তি এদের দলীল।
• তাব্লীগ করে তাব্লীগের অর্থই জানেনা।
• হাওয়া থেকে পাওয়া কল্প-কাহিনীর উপরই তাদের দাওয়াতের ভিত্তি।
• তারা ঈমান ও আমলের ধারনা পোষণ করেন তা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের ইমান ও আমল নয়।
• তারা কুরআন-হাদিস শিক্ষা করেন না শিক্ষা দেনও না। অথচ কোরআন হাদিসই দ্বীন।
• কিসসা কাহিনী, স্বপ্ন, রুহানী ফয়েজ, বুজুর্গী, ফানাফিল্লাহ ইত্যাদি কল্পিত ডগমায় বিশ্বাস করেন।
• তাওহীদ ও আকীদা ইসলামের মূল অথচ এর শিক্ষাকে নিরুৎসাহিত করেন। যারা তাওহীদ এর কথা বলেন তাদেরকে তারা ওহাবী বলে গালি দেয়।
• আলেম ওলামাদেরকে ঘৃণার চোখে দেখেন, অথচ প্রকৃত আলেমগণই অন্ধকারের আলো।
• ফাজায়েল ( অতিরিক্ত) আমলের উপরই তারা বেশী গুরুত্ব দেন, ফারায়েজ (মুসল বিষয়) কে অবহেলা করেন।
• তারা অনেক শিরক-বিদআতের জন্ম দাতা ও পৃষ্ঠপোষক,। শিরক বেদাত কি তারা জানতে রাজী নন।
• তাদের মুরুব্বিদের কথাকে তারা ওহীর মত মনে করেন। কোরআনের অহীর খবর রাখেন না।
• অলৌকিক কেসসা কাহানীই তাদের মুল চর্চা। শয়তানের ভেল্কি বাজি কে তারা কারামত ভাবেন।
• শুধু ইবাদাতের জন্যে মসজিদে আহবান করেন। কি ভুল কি শুদ্ধ তা মোটেও জানতে চান না।
• তাদের মুরুব্বিরা বলেছেনঃ নবীগন যে সাগরের তীরে দাঁড়িয়ে হা করে তাকিয়ে থেকেছেন আমরা সেই সাগরে সাঁতার কাটি।- নাউজুবিল্লাহ।
• তাঁদের বুজুর্গরা বলেছেনঃ যে বেহেশতে নামাজ নাই সে বেহেশত দিয়ে কি হবে?
• আল্লাহ্‌ বলেনঃ হে নবী যা তোমার উপর নাজেল হয়েছে তাই প্রচার কর(মায়েদাহ-৬৭) অথচ তারা এই হকের বাইরে থেকেই দীন শেখেন এবং প্রচার করেন।
-শায়খ মুজাম্মেল হক্ক

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...