Saturday 4 April 2015

আল্লাহ সম্পর্কে বা ঈমান নিয়ে ওয়াসওয়াসা আসলে কি করতে হবে?


প্রশ্নঃ (১২) আল্লাহ তাআ’লা সম্পর্কে শয়তান একজন মানুষকে এমন ওয়াস্‌ ওয়াসা (কুমন্ত্রনা) প্রদান করে যে, সে ঈমান চলে যাওয়ার আশঙ্কা করে। এ সম্পর্কে আপনার উপদেশ কি?
প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আল্লামাহ, শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)
ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম।
উত্তরঃ প্রশ্নকারী যে সমস্যার কথা ব্যক্ত করলেন এবং যার পরিণতিকে ভয় করছেন, আমি তাকে বলব যে, হে ভক্ত! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। উক্ত সমস্যার ভাল ফলাফল ব্যতীত মন্দ কোন ফল হবে না। কেননা এই ওয়াস্‌ওয়াসাগুলো শয়তান মুমিনদের মাঝে প্রবেশ করায়, যাতে সে মানুষের ঈমানকে দূর্বল করে দিতে পারে এবং তাদেরকে মানষিক অস্থিরতায় ফেলে দিয়ে ঈমানী শক্তিকে দুর্বল করে দিতে পারে। শুধু তাই নয় অনেক সময় মুমিনদের সাধারণ জীবনকে বিপন্ন করে তুলে।
প্রশ্নকারী ব্যক্তির সমস্যাই মুমিনদের প্রথম সমস্যা নয় এবং শেষ সমস্যাও নয়; বরং দুনিয়াতে একজন মুমিন অবশিষ্ট থাকলেও এই সমস্যা বর্তমান থাকবে। সাহাবীগণও এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত,
“সাহাবীদের একদল লোক রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর কাছে আগমণ করে জিজ্ঞাসা করল, আমরা আমাদের অন্তরে কখনো কখনো এমন বিষয় অনুভব করি, যা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা আমাদের কাছে খুব কঠিন মনে হয়। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন যে, সত্যিই কি তোমরা এরকম পেয়ে থাক? তাঁরা বললেন হ্যাঁ, আমরা এরকম অনুভব করে থাকি। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এটি তোমাদের ঈমানের স্পষ্ট প্রমাণ”।

Friday 3 April 2015

প্রশ্নঃ কাফের, মুশরেক, মুনাফেক, মুর্তাদ, আহলে কিতাব ও ফাসেক কাকে বলে?


উত্তরঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য। আল্লাহ দরূদ ও সালাম পেশ করুন আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর; আর তাঁর বংশধর, তাঁর সাহাবীগণ এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা সুন্দরভাবে তাঁদের অনুসরণ করবে তাদের উপর (আমিন)।
=> “কাফের”
‘কুফর’ শব্দের অর্থ হচ্ছে অস্বীকার করা, অবিশ্বাস করা অথবা গোপন করা। বাংলাতে ‘কাফের’ শব্দের অর্থ করা হয় অবিশ্বাসী। যে ব্যক্তি আল্লাহর নাযিলকৃত দ্বীন ইসলাম বা ইসলামের কোন অংশকে, ক্বুরানুল কারীম বা এর কোন আয়াত, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা কোন একজন নবী অথবা রাসূলকে অস্বীকার করে, ইসলামি আকিদাহ বা এর মৌলিক কোন ধর্মীয় বিশ্বাস বা অকাট্য দলিল দিয়ে প্রমানিত ইসলামের কোন বিধি-বিধানকে অস্বীকার করে, অবিশ্বাস করে, প্রত্যাখ্যান অথবা এইগুলো নিয়ে হাসি-ঠাট্টা বা অবজ্ঞা করে, নিঃসন্দেহে সে ব্যক্তি একজন কাফের। কাফের চির জাহান্নামী, সে কোনদিন জাহান্নাম থেকে বের হতে পারবেনা। অনন্তকাল সে জাহান্নামে কঠিন শাস্তি পেতে থাকবে।
উদাহরণঃ ইয়াহুদী ও খ্রীস্টানরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কে ‘রাসুল’ বা আল্লাহর দূত হিসেবে বিশ্বাস করেনা, ক্বুরানুল কারীম ‘আল্লাহর কালাম’ বিশ্বাস করেনা, একারণে তারা কাফের, তারাও চির জাহান্নামী যদিওবা তারা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাস করে। অনুরূপভাবে নাস্তিক যারা আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করেনা তারাও কাফের। হিন্দুরাও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কে রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করেনা, সুতরাং একদিক থেকে তারা যেমন মুশরেক, অন্যদিক থেকে তারা কাফেরও বটে।
=> “মুশরেক”
‘শিরক’ শব্দের অর্থ হচ্ছে কোন কিছুতে কাউকে শরিক বা অংশীদার বানানো। যে ব্যক্তি শিরক করে তাকে মুশরেক বলা হয়, বাংলাতে ‘মুশরেক’ শব্দের অর্থ করা হয় অংশীবাদী। মুশরেক বলা হয় তাকে যে কোন কিছুকে আল্লাহর অপ্রতিদ্বন্দ্বী একক সত্ত্বা, মর্যাদা বা ক্ষমতার সমান বা অংশীদার বলে বিশ্বাস করে, মনে করে অথবা দাবী করে। মুশরেক চির জাহান্নামী, সে কোনদিন জাহান্নাম থেকে বের হতে পারবেনা। অনন্তকাল সে জাহান্নামে কঠিন শাস্তি পেতে থাকবে। 
উদাহরণঃ হিন্দুরা তাদের মাটির তৈরী দেব-দেবীদেরকে আল্লাহর সমান মনে করে, সুতরাং জাতিগতভাবে হিন্দুরা মুশরেক। মারেফাতে বিশ্বাসী সূফীবাদী অজ্ঞ লোকেরা যারা নিজেদের মুসলমান বলেই মনে করে, কিন্তু তারা তাদের জিন্দা-মুর্দা পীর-ফকিরদেরকে আল্লাহর সমান সম্মান ভক্তি-শ্রদ্ধা ও ভয় করে, তাদেরকে সেজদাহ করে, তাদের কাছে দুয়া করে, বিপদে আপদে উদ্ধার করার জন্য গায়েবী সাহায্য চায়, তাদেরকে আলেমুল গায়েব ও হাজির-নাযির মনে করে. . .এই সবগুলো কাজ ডাহা শিরক। যারা এইগুলো করবে তারাও মুশরেকদের অন্তর্ভুক্ত হবে যদিওবা তারা নিজেদের মুসলমান বলে দাবী করে, যদিওবা তারা লোক দেখানো কিছু নামায-রোযা করে। খ্রীস্টানরা ঈসা আলাইহিস সালাম কে আল্লাহর পুত্র মনে করে (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক), একারণে তারা মুশরেকও বটে।

নামায কিভাবে পড়তে হবে? (পর্ব – ২, শেষ পর্ব)


১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক  করুন


আগের পোস্টে নামাযের যেই জিনিসগুলো বলা বাকী ছিলোঃ

১. নামাযে সানা পড়া সুন্নত। কিন্তু তাই বলে সানা না পড়ে নামায পড়ার চিন্তা করবেন না, সুন্নতগুলো হচ্ছে নামাযের সৌন্দর্য। তাই অন্তত ছোট-বড় যেকোন সানা পড়েই নামায শুরু করবেন ইন শা’ আল্লাহ।

২. নামাযে ভুল আমলঃ
আমাদের দেশে নামায শিক্ষা দেওয়ার সময় বলা হয় – নামাযে “কিয়াম” বা দাঁড়ানো অবস্থায় পুরুষেরা দুই পায়ের মাঝে ৪ আঙ্গুল ফাকা রাখবে আর নারীরা দুই পা মিশিয়ে রাখবে। এইটা সম্পূর্ণ বানোয়াট একটা কথা, কুরআন অথবা সহীহ হাদীসের কোথাও এই কথা লিখা নাই। সঠিক হচ্ছে নারী অথবা পুরুষ নিজের শরীরের গঠন অনুযায়ী আরাম ও স্বস্তিদায়ক হয় এমন পরিমান জায়গা দুই পায়ের মাঝে ফাঁকা রাখবে। এতে সে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করবে, খুব বেশি ফাঁকা রাখবেনা আবার দুই পা এমনভাবে মিশিয়েও রাখবেনা যাতে করে দাড়াতেই কষ্ট হয়

৩. নামাযে সুরা ফাতেহা কিভাবে পড়তে হবে?

http://porokalerjonnokaaj.blogspot.com/2014/09/blog-post_193.html

রুকুঃ
সুরা ফাতিহা ও কিরাত পড়া শেষ করে একটু থামবেন (অন্তত এক শ্বাস নেওয়ার সমপরিমান সময়) যাতে করে কিরাত ও রুকুর মাঝে একটু বিচ্ছিন্নতা আসে। এর পরে তাকবীর বলে রুকুতে যাবেন। রুকুতে যাওয়ার আগে ও রুকু থেকে উঠার পরে “তাকবীরের তাহরীমার” মতো দুই হাত কাধ/কান পর্যন্ত তুলে ইশারা করা বা “রাউফুল ইয়াদাইন” করা সুন্নত। রুকুতে যাওয়ার আগে ও রুকু থেকে উঠার পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুর আগে পর্যন্ত রাউফুল ইয়াদাইন করতেন, এই কথা অসংখ্য সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত। যারা বলে এই বিধান রহিত হয়ে গেছে, তাদের পক্ষে সহীহ কোন হাদীসের দলীল নেই। আবু দাউদের ২-১টা হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যেই হাদীসে বলে রাউফুল ইয়াদাইন করতে হবেনা, ইমাম আবু দাউদ নিজেই সেই হাদীসের ব্যপারে মন্তব্য করেছেন যে হাদীসটা সহীনা, যয়ীফ। আর এই জয়ীফ হাদীসের বিপরীতে রাউফুল ইয়াদাইন যে করতে হবে এর পক্ষে একেবারে সহীহ হাদীস আছে অসংখ্য, বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী – এমন কোন হাদীসের কিতাব নাই যে নাই। তাই জয়ীফ হাদীসের উপর ভিত্তি করে অসংখ্য সহীহ হাদীসকে বাদ দেওয়া অত্যন্ত অনুচিত।

প্রশ্নঃ নামায কিভাবে পড়তে হবে? (পর্ব – ১)



উত্তরঃ বিসমিল্লাহ। ওয়ালহা’মদুলিল্লাহ। ওয়াস-সালাতু ওয়াস-সালামু আ’লা রাসুলিল্লাহ। আম্মা বা’দ।

আল্লাহর উপর ভরসা করে সহজ ভাষায় সংক্ষিপ্তভাবে নিচে আমি সংক্ষিপ্তভাবে নামায পড়ার নিয়ম বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি। এখানে বিশেষ কোনো মাযহাবের না, বিশেষ কোনো দলের না, বিশেষ কোন মতবাদের নামায বর্ণণা করা হয়নি। বরং, অতীত থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত সমস্ত ইমাম ও আলেমদের বুঝ অনুযায়ী, কুরান ও সহীহ হাদীসের উপর ভিত্তি করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেইভাবে নামায পড়েছেন, আমাদেরকে পড়তে বলেছেন তার বিশুদ্ধ বর্ণনা দেওয়া হল।

বিস্তারিত দলীল ও যুক্তি প্রমান উল্লেখ করে আমি পোস্ট খুব বড় করতে চাইনি। যারা দলীলগুলো জানতে চান, আমি নামাযের উপর যেই বইগুলো দিয়েছি সেইগুলো পড়বেন। আমাদের কথাগুলো মূল কিতাবের সাথে মিলিয়ে দেখবেন, এটা আপনার দায়িত্ব যাচাই বাছাই করে হক্ক খুজে নেওয়া। আমরা শুধু এই ব্যপারে আপনাকে কিছুটা সাহায্য করতে পারি, কিন্তু এমন না আপনি শুধু ফেইসবুক খুলবেন আর সবকিছুই পেয়ে যাবেন। “ইলম” বা দ্বীনের জ্ঞান আপনার কাছে যাবেনা, বরং আপনার উপর ফরয হচ্ছে ইলম তালাশ করে বের করা। আর যদি এতো সহজেই সব পেয়ে যেতে চান, তাহলে জেনে রাখুন! সস্তার তিন অবস্থা, ফেইসবুকে মাযার পূজারীদের পেইজ আছে, জ়েএমবি খারেজী, জঙ্গিদের পেইজ আছে, সূফীবাদীদের পেইজ আছে, অজ্ঞ জাহেল লোকেরাও পেইজ চালায় যারা আসলে কিছুই জানেনা, আমাদের পেইজ থেকেও অনেক বড়। অন্ধভাবে অনুসরণ করে গেলে কখন কোন জাহান্নামী দলে ঢুকে যাবেন, নিজেও টের পাবেন না, লা হা’উলা ওয়ালা ক্বুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ। আর আমাদের লেখা সঠিক মনে না হলে দলীল প্রমান উপস্থাপন করবেন, না দিতে পারলে হক্ক মেনে নিবেন। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন, অমুক হুজুর এটা বলেছে, তমুক এটা বলেছে - এইসব চলবেনা - কুরান ও সহীহ হাদীস দিয়ে দলীল দিতে হবে। আল্লাহ আপনাদের প্রতি রহম করুন।

তাকবীর থেকে তাসলীম পর্যন্ত নামাযের নিয়মঃ

সুতরাঃ
নামায শুরুর আগে “সুতরা” দিয়ে নামায পড়বেন, এটা করা সুন্নত। সুতরা হচ্ছে নামাযীর সামনে অন্তত ৩ হাত দূরে বা প্রয়োজ়ন অনুযায়ী জায়গা সামনে নিয়ে একটা খুটি, দেয়াল বা যেকোন বাধা স্বরূপ দিয়ে নামাযীর সিজদা দেওয়ার জায়গাটুকু রিজার্ভ করে নেওয়া, যার সামনে দিয়ে কেউ যেতে না পারে। সুতরা নিয়ে বিস্তারিত দেখুন এই পোস্টে –

Thursday 2 April 2015

শিয়া আকীদাহর এ পিঠ ও পিঠ


আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি আপনারা ভাল আছেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে ভাল ও সুস্থ রাখুন। সেই সাথে ঈমানের উপর অবিচল রাখুন আল্লাহ তায়ালার নিকট সেই দুয়া করছি।
প্রিয় পাঠক, মুসলিম জাতি একটি ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত জাতি। কিন্তু ইসলামের দুশমনরা এই একতা এবং সংহতিকে বিনষ্ট করার জন্য এমন কোন হীন প্রচেষ্টা বাকি রাখে নি। মুসলিম উম্মাহকে দলে দলে বিভক্ত করার জন্য তারা সব ধরণের ষড়যন্ত্র করেছে। এই ষড়যন্ত্রের হাত ধরে মুসলিম উম্মাহর পবিত্র দেহে নানা ধরণের বিষ ফোঁড়া সৃষ্টি হয়েছে। নানা ভাবে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে দ্বীন ইসলামের সুরম্য অট্টালিকা। এ সকল ষড়যন্ত্রের বিষদাঁতগুলোর মধ্যে শিয়া রাফেজী, বাহাঈ, কাদিয়ানী সম্প্রদায় অন্যতম। মুতাযিলা, মুরজিয়া, কাদরিয়া, জাবরিয়া এবং আশআরী, ব্রেলভী ইত্যাদি আকীদা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের স্বচ্ছ প্রস্রবণে তৈরি করেছে  আবর্জনা। সকল ধরণের ভ্রষ্টতা থেকে বাঁচার একমাত্র পথ মুসলিম জাতিকে পূণরায় কুরআন-সুন্নাহর কাছে ফিরে আসতে হবে। এর কোন বিকল্প নাই। যাক, আজ আপনাদের জন্য ইসলাম হাউজ ডট কম এ প্রকাশিত কতিপয় লিংক শেয়ার করা হল যেগুলো শিয়া সম্প্রদায়ের প্রকৃত চেহারা উন্মোচনে সাহায্য করবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস। লিংকগুলো খুলুন এবং শিয়াদের সম্পর্কে জানুন। সেই সাথে অন্যদের নিকট লিংকগুলো শেয়ার করুন। ধন্যাবদ।আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দ্বীনে হকের উপর মৃত্যু অবধি অবিচল রাখুন। আমীন।

  1. শিয়া আকীদার অসারতা
  2.  শিয়া মতবাদের বিস্তৃতি
  3. সাহাবা ও ইমামগণকে গালি দেয়া নিষিদ্ধ
  4. শিয়াদের আকীদা-বিশ্বাস
  5. তাঁদের মধ্যে মধুময় সম্পর্ক [নবী-পরিবার ও অবশিষ্ট সাহাবীগণ পরস্পর সহানুভূতিশীল]
  6. কতিপয় প্রশ্ন, শিয়া যুবকদের যা সত্যের দিকে ধাবিত করেছে
  7. নাজাফ সম্মেলন
  8. শিয়া আলেম ও অধিকাংশ মুসলিম আলেমের মধ্যে বিরোধের বাস্তব চিত্র
  9.  শিয়া মতবাদের বিস্তৃতি
  10. শিয়া সুন্নী ঐক্য : সম্ভাবনা ও প্রাপ্তি

সংগ্রহঃ আব্দুল্লাহিল হাদি

আমার ভালোবাসার ৩টি ‘মাসনুন’ আমল, যা প্রতিদিন করা ‘সুন্নাহ’, আমল করা সহজ কিন্তু তার ‘ফযীলত’ বা প্রতিদান অনেক বেশিঃ


১. প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় ‘সাইয়্যিদুল ইস্তেগফার’ একবার করে পড়া।
ভালো লাগার কারণঃ এ দুয়াটির অর্থ এতো চমতকার, সুবহা’নআল্লাহ! নিজের গুনাহ-খাতা সমূহ স্বীকার করে নিয়ে অনুতপ্ত হৃদয় নিয়ে আল্লাহর কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাওয়ার জন্য এর চাইতে ভালো দুয়া আর হয়না।
ফযীলতঃ কেউ যদি আন্তরিক বিশ্বাসের সাথে এই দুয়া সকালে ও সন্ধ্যায় পড়ে আর সেইদিন সে মারা যায়, ইন শা’ আল্লাহ সে ব্যক্তি জান্নাতে যাবে। [সহীহ বুখারী]
সাইয়্যিদুল ইস্তেগফার সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন –
http://porokalerjonnokaaj.blogspot.com/2015/04/blog-post.html#more
২. প্রতিদিন ‘সুরা মুলক’ একবার করে তেলাওয়াত করা।
ভালো লাগার কারণঃ নামাযে কেরাত হিসেবে এই সুরাটির আয়াতগুলো বুঝে তেলাওয়াত করলে এতো ভালো লাগে. . .প্রতিদিন পড়ার ফলে গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো বিষয় স্বরণ থাকে, আল্লাহর প্রতি ভয় সৃষ্টি হয় এবং নেক কাজ করার স্পৃহা বৃদ্ধি পায়। সারাদিনে যখনই সুরা মুলক পড়া শেষ হয়, মনে হয় আমার অগণিত খারাপ কাজের মাঝে অন্তত ভালো একটা কাজ করতে পারলাম, আলহা’মদুলিল্লাহ।
ফযীলতঃ এই সুরা নিয়মিত পাঠকারীকে কবরের আযাব থেকে সুরক্ষা করবে, কেয়ামতের দিন এই সুরাটি জন্য আল্লাহ তাআ’লার কাছে সুপারিশ করে তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। [এনিয়ে হাদীসগুলো রিয়াদুস সালেহীনে দেখুন]
সুরা মুলক সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন –
৩. প্রত্যেক ফরয নামাযের পরে ‘আয়াতুল কুরসী’ পাঠ করা
ভালো লাগার কারণঃ প্রত্যেক ফরয নামায পাঠ শেষে ক্বুরানুল কারীমের মর্যাদাপূর্ণ শ্রেষ্ঠ আয়াত তেলাওয়াত করার মাধ্যমে আল্লাহর ওহদানিয়াত (একত্ব), তাঁর অপ্রতিদ্বন্দ্বী শ্রেষ্ঠত্ব ও মহিমার ঘোষণা করা হয়। এর মাধ্যমে বান্দা তার জবানের মাধ্যমে ‘তাওহীদ’ এর স্বীকৃতি জ্ঞাপন করে।
ফযীলতঃ যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযের পরে আয়াতুল কুরসী পড়ে, তার আর জান্নাতের মাঝে এতোটুকু দূরত্ব যে, সে যেন শুধুমাত্র মৃত্যুবরণ করছেনা বলেই (কবরে) জান্নাতের নেয়ামতগুলো উপভোগ করতে পারছেনা।
আয়াতুল কুরসী সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন – 

প্রশ্নঃ ‘আয়াতুল কুরসি’ এবং ‘আল্লাহর কুরসী’ বলতে কি বোঝায়? আয়াতুল কুরসীর ফযীলত কি?




উত্তরঃ সুরা বাক্বারাহর ২৫৫ নাম্বার আয়াতকে ‘আয়াতুল কুরসী’ বলা হয়। কুরসী অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্‌ তাআ’লার পা রাখার জায়গা। আয়াতুল কুরসীতে তাওহীদ, ইখলাস, আল্লাহর ইসমে আযম, আল্লাহর ক্ষমতা ও সিফাত, ‘আল্লাহর কুরসির’ মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় বর্ণিত হয়েছে। এইজন্যে এই আয়াতটি হচ্ছে ক্বুরানুল কারীমের শ্রেষ্ঠ আয়াত এবং সহীহ হাদিসে এই আয়াতটি বিভিন্ন সময়ে পাঠ করার অনেক ফযীলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। অনেকে মনে করেন, আয়াতুল কুরসী হচ্ছে সুরা বাক্বারাহর ২৫৫ ও ২৫৬ নাম্বার, এই দুইটা আয়াত। এটা ভুল! সুরা বাক্বারাহর শুধুমাত্র ২৫৫ নাম্বার আয়াতটিকেই আয়াতুল কুরসি বলা হয়, ২৫৬ নাম্বার আয়াত আয়াতুল কুরসির অন্তর্ভুক্ত নয়। 

আয়াতুল কুরসী নিয়মিত পড়লে তাবীজ-কবজ, যাদু, চোখের নজর, জিনের আসর বা ক্ষতি ও অন্যান্য বিপদ আপদ থেকে সুরক্ষা করে। প্রত্যেক ফরয নামাযের পরে একবার করে আয়াতুল কুরসি পড়লে মৃত্যুর পরে রয়েছে জান্নাত। শয়তানের প্রভাব এবং ভূত-প্রেত থেকে বাঁচার জন্য আয়াতুল কুরসি পাঠ করা পরীক্ষিত একটি আমল।

আয়াতুল কুরসী হচ্ছে ক্বুরানুল কারীমের শ্রেষ্ঠ বা সবচাইতে মর্যাদাবান আয়াতঃ 
আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদাহ (রাঃ) নবী করিমকে (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসূল (সাঃ) বললেন, “আয়াতুল কুরসি”। 
নাসায়ি, আহমাদ। 

প্রত্যেক ফরয সালাত শেষে আয়াতুল কুরসী পাঠ করার ফযীলতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর ‘আয়াতুল কুরসী পাঠ করে মৃত্যু ছাড়া আর কিছুই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখতে পারবেনা”।

সুরাহ মুলক তেলাওয়াত করার ফযীলতঃ



প্রতিদিন সুরাহ মুলক তেলাওয়াত করা গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত। অনেকে মনে করেন, সুরাহ মুলক শুধুমাত্র রাতের বেলাতেই পড়তে হবে, এটা ঠিক নয়। সুরাহ মুলক কেউ রাতের বেলা পড়লে সেটা উত্তম, তবে সুবিধামতো সময়ে দিনে বা রাতে, যেকোনো সময়েই তা পড়া যাবে। এই সুরার ফযীলত পাওয়ার জন্য হাদীসে যা বোঝানো হয়েছে হয়েছে তা হচ্ছে, এই সুরার দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখা, সুরাটি মুখস্থ করা, এর অর্থ বোঝা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সুরাটি নিয়মতি পড়া। সুরাটি মুখস্থ করে সালাতে পড়তে পারেল ভালো। তবে মুখস্থ না থাকলে, সালাতের বাইরে দেখে দেখে পড়লেও এই সুরার পূর্ণ ফযীলত পাওয়া যাবে।
নাবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিদিন সুরা মুলক পড়তেনঃ
জাবির রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত। “নাবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম সুরাহ ‘আলিফ লাম মীম তানজিলুল কিতাব’ (সুরাহ আস-সাজদা) ও ‘তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু’ (সুরা মুলক) না পড়ে ঘুমাতেন না।”
হাদীসটি সহীহঃ তিরমিযী ২৮৯২, মুসনাদে আহমাদ ১৪৬৫৯, সুনানে দারেমি। তাহক্বীকঃ শায়খ শুয়া’ইব আরনাউত্ব বলেন, হাদীসটি সহীহ। শায়খ আহমাদ শাকির বলেন (হা/১৪৫৯৪) এর সানাদ সহীহ। বুখারীর ‘আদাবুল মুফরাদ’ নাসায়ীর ‘আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ’, সিলসিলাহ সহীহাহ হা/৫৮৫, শায়খ আলবানী বলেনঃ হাদীসটি সহীহ।
সুরাহ মুলক নিয়মিত পাঠ করলে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেঃ
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “সুরাহ মুলক (তিলাওয়াতকারীকে) কবরের আজাব থেকে প্রতিরোধকারী।”
হাদীসটি হাসান সহীহঃ হাকিমঃ ৩৮৩৯, তাবাকাতে আসবাহানিয়্যিনঃ ২৬৪। ইমাম হাকিম ও ইমাম যাহাবী হাদীসটির সনদকে সহীহ বলেছেন। শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি হাসান সহীহ, সিলসিলাতুল আহাদীস সহীহাহঃ ১১৪০।

সকাল ও সন্ধ্যা সময় যেই দুয়া পড়তে হয়


বিসমিল্লাহ। ওয়ালহা’মদুলিল্লাহ। ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ’লা রাসূলিল্লাহ। আম্মা বা’দ। মহান আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ “তোমার প্রতিপালককে মনে মনে ভয় ও বিনয়ের সাথে নিচুস্বরে সকালে ও সন্ধ্যায় স্মরণ কর, আর তুমি উদাসীনদের দলভুক্ত হয়ো না।” [আ’রাফঃ ২০৫]
***সন্ধ্যা কথাটি দ্বারা অর্থ হচ্ছে আসর ও মাগরিবের মধ্যবর্তী সময়।
তিনি আরও বলেছেনঃ “সূর্যের উদয় ও অস্ত যাওয়ার পূর্বে প্রশংসা সহকারে তোমার রব্বের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা কর।” [সুরা ত্বোয়া হাঃ ১৩০]
নবী ﷺ বলেন, “যে ব্যক্তি তার রবের যিকর (স্মরণ) করে, আর যে ব্যক্তি তার রবের যিকর করে না, তাদের তুলনা হচ্ছে যেন একজন জীবিত অন্যজন মৃত।”
রাসূলুল্লাহ্ ﷺ আরও বলেছেন, “আমি কি তোমাদেরকে তা জানাবো না, কোন আমল সর্বোত্তম, যা তোমাদের মালিক (আল্লাহ্র) কাছে যা অত্যন্ত পবিত্র, তোমাদের জন্য যা অধিক মর্যাদা বৃদ্ধিকারী, (আল্লাহ্র পথে) সোনা-রূপা ব্যয় করার তুলনায় যা তোমাদের জন্য উত্তম এবং তোমরা তোমাদের শত্রুদের মুখোমুখি হয়ে তাদেরকে হত্যা এবং তারা তোমাদের হত্যা করার চাইতেও অধিকতর শ্রেষ্ঠ?” সাহাবীগণ বললেন, অবশ্যই হ্যাঁ। তিনি বললেন, “আল্লাহ্ তা‘আলার যিক্র।”
ইবন মাজাহঃ ২/৩১৬, সহীহ, শায়খ আলবানী, সহীহ তিরমিজী ৩/১৩৯।
সকাল ও সন্ধ্যার যিকিরঃ প্রাণপন চেষ্টা করুন দুআ’গুলো মুখস্থ করে প্রতিদিন আমল করার জন্য।
রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাহ থেকে যিকিরের জন্য ৩টি বিশেষ সময় পাওয়া যায়। আর তা হলোঃ
১. সকালে (ফযরের পরে)।
২. সন্ধ্যায় (আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত)।

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...