Friday 16 August 2019

ফিতনার সময় কেবল কিবার ‘উলামাদের কথা গৃহীত হবে, অন্যদের কথা নয়


·
মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মাসজিদে নাবাউয়ী’র সম্মানিত মুদার্রিস, আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-ফাক্বীহ, ড. সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) বলেছেন—
“বর্তমানে উম্মতের মধ্যে যেসব দুর্যোগ সংঘটিত হচ্ছে, সেসব ক্ষেত্রে কিবার (বড়ো) ‘উলামাদের দিকে ফিরে যেতে হবে। এসব ক্ষেত্রে মসজিদের ইমাম কিংবা শারী‘আহ ফ্যাকাল্টির স্টুডেন্টদের (ত্বালিবুল ‘ইলম) দিকে ফিরে যাওয়া যাবে না। বরং ফিরে যেতে হবে কেবল উম্মতের কিবার ‘উলামাদের দিকে। আর এসব ক্ষেত্রে কোনক্রমেই ইন্টারনেটের বাদুড়গুলোর কাছে যাওয়া যাবে না। ‘উলামা ব্যতীত উম্মতের দুর্যোগ-সংক্রান্ত আলোচনায় প্রবেশ করা কোনো ত্বালিবে ‘ইলমের জন্য বৈধ নয়। সেটা যে কোনো মাসআলাহ হোক না কেন (সে ব্যাপারে ত্বালিবে ‘ইলমের মত ব্যক্ত করা বৈধ নয়)। তাহলে কীভাবে সেই মাসআলাহ’য় প্রবেশ করা বিধিসম্মত হতে পারে, যেটা রক্তপাতের সাথে সম্পৃক্ত, বা দেশের স্থিতিশীলতার সাথে সম্পৃক্ত, কিংবা দেশ থেকে ফিতনা প্রতিরোধ করার সাথে সম্পৃক্ত?
এসব ক্ষেত্রে আবশ্যকীয়ভাবে স্রেফ উম্মতের সামসময়িক ইমাম ও কিবার ‘উলামাগণ পর্যবেক্ষণ করবেন। সুতরাং এসব আলোচনায় প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকার নিমিত্তে ত্বালিবে ‘ইলমদের জন্য আবশ্যক হলো—তাদের জবানকে সংযত করা। তবে এ ক্ষেত্রে কথা বলবেন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বর্ণনা দিবেন ‘উলামাগণ।
আমরা দেখেছি, কিছু লোক বলে, “উত্তপ্ত ময়দানে গমন করা—যেটাকে বর্তমানে তারা জিহাদ বলছে, যদিও সকলের জন্য তা প্রকৃতার্থে জিহাদ নয়—এমন একটি মাসআলাহ, যে ব্যাপারে ‘উলামাগণ মতানৈক্য করেছেন, এবং আমি ‘উলামাদের একটি মত অনুসরণ করছি।” ভালো কথা; তা সেই ‘উলামা কারা, যাঁরা মতানৈক্য করেছেন? সে বলে, “আল্লাহ’র কসম, আমি শাইখ সালিহ আল-ফাওযানকে বলতে শুনেছি, ‘এগুলো ফিতনা, এসব কাজে গমন করা না-জায়েজ।’ এটি একটি মত। আর আমি অমুক মসজিদের ইমামকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছি। তিনি বলেছেন, ‘এটি মুসলিমদের জন্য সাহায্য, তাই এ থেকে পিছিয়ে থাকা এবং উম্মতকে লাঞ্ছিত করা জায়েজ নয়।’ এটিও একটি মত। আমি মসজিদের ইমামের মতকে প্রাধান্য (তারজীহ) দিয়েছি।” এটা হলো মহা মূর্খতা!
মতামত হবে শুধু ‘উলামাদের; ত্বালিবে ‘ইলম, কুরআনের হাফেজ কিংবা বিভিন্ন (‘ইলমী) ফ্যাকাল্টির স্টুডেন্টদের নয়। তাই ‘আলিমের ওপর আবশ্যক হলো—আল্লাহকে ভয় করা, উম্মতের দুর্যোগে ইজতিহাদ করা এবং দলিলসাপেক্ষে ফাতওয়া ইস্যু করা। কিন্তু যিনি দলিলভিত্তিক ফাতওয়া দেওয়ার ব্যাপারে প্রসিদ্ধ নন, তাঁর কথা গ্রহণযোগ্য হবে না। উদাহরণস্বরূপ যে হুকুম (বা ফাতওয়া) কোনো নির্দিষ্ট দল থেকে প্রকাশিত হয়, এবং যেই হুকুম দিতে গিয়ে দলিলের দিকে ভ্রুক্ষেপ করা হয়নি—যদিও তারা বলে, তিনি (ফাতওয়াদাতা) হলেন বর্তমান যুগে মুসলিমদের শ্রেষ্ঠ মুফতি—যেমন মারাদ্বাউয়ী (যুগের শীর্ষস্থানীয় পথভ্রষ্ট দা‘ঈ ইউসুফ আল-ক্বারদ্বাউয়ীকে ব্যঙ্গ করে ‘মারাদ্বাউয়ী’ বলা হয় – অনুবাদক); এ ধরনের লোকের কথা গ্রহণযোগ্য হবে না। কেননা তার নিকট থেকে দলিলভিত্তিক হুকুম প্রকাশিত হয়নি।
এমনকি তারা বলে, “যারা (তাদের) জামা‘আতের দিকে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করেছে, তাদের প্রত্যেকের ওপর জামা‘আতের নেতার সাথে সেভাবে অবস্থান করা আবশ্যক, যেভাবে মাইয়্যিতের (মৃতদেহ) সাথে গোসলদানকারী অবস্থান করে! জামা‘আত যা বলে, সেটাই সুস্পষ্ট হক!” তো এ জাতীয় ব্যক্তিদের কথার দিকে ভ্রুক্ষেপ করা যাবে না। বরং নজর দিতে হবে ‘উলামাদের কথার দিকে, যাঁরা দলিলভিত্তিক কথা বলা এবং কঠিন ‘ইলমী গবেষণা করার ব্যাপারে সুপ্রসিদ্ধ। সুতরাং যাবতীয় দলীয় ইজতিহাদ বাতিল।”
‘আল্লামাহ সুলাইমান আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ)’র বক্তব্য এখানে সমাপ্ত হয়েছে।
·
উৎস: বক্তব্যের ভিডিয়ো ক্লিপটি ‘দীনুকা নাজাতুক’ নামক ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেওয়া হয়েছে।
·
অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...