Wednesday 31 May 2017

ইসলামী বিধান জানতে লজ্জা নেই-


🌸=======🍀=======🌻=====🌏
স্ত্রী-সঙ্গম ব্যতীত অন্য পদ্ধতিতে যৌন-স্বাধের সহিত বীর্যপাত করাঃ
যেমন যৌন-স্বাধের সহিত স্ত্রীর সাথে কোলাকুলি, আলিঙ্গন, চুম্বন ইত্যাদি করার সময় বীর্যপাত হওয়া। এই ভাবে সকাম হস্তমৈথুন করতঃ বীর্যপাত করা কিংবা যৌনচাহিদার সাথে যৌন (পর্ণ) ছবি সহ ইত্যাদি দেখার ফলে বীর্যপাত করা কিংবা আরো অন্য পদ্ধতিতে স্বেচ্ছায় কামভাবের সাথে বীর্যপাত করা। এসবই রোযা ভঙ্গের কারণ। কেউ এমন করলে তার রোযা নষ্ট হয়ে যাবে, তার উপর তাওবা সহ রোযা কাযা করা জরুরি হবে। কিন্তু তার উপর কাফ্ফারা নেই; কাফ্ফারা কেবল স্ত্রী সহবাসে জরুরি হয়।
হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত হয়েছে,
“সে আমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিজের পানাহার ও যৌনাচার পরিহার করে”। [বুখারী, সাউম অধ্যায়, নং ১৮৯৪, মুসলিম, সিয়াম অধ্যায়, ১১৫১]
তাই রোযার জন্য যেমন পানাহার বর্জন করা জরুরি তেমন যৌনাচার পরিহার করাও জরুরি। আর যে ব্যক্তি যৌনস্বাধের সাথে উক্ত কাজগুলি করে সে, যৌনাচার পরিহার করে না ফলে তার রোযা হয় না।
উপরোক্ত ক্ষেত্রে বীর্যপাত না হয়ে যদি কেবল মযী বের হয়। অর্থাৎ উত্তেজনার সাথে বীর্যস্খলন না হয়ে কেবল যৌনাঙ্গে আঠা জাতীয় পানি বের হয়, যাকে শরীয়ার ভাষায় মযী বলে। তাহলে সঠিক মতানুযায়ী তার রোযা নষ্ট হবে না কিন্তু এর ফলে তার অযু নষ্ট হবে এবং যেই স্থানে তা লাগবে, তা ধৌত করতে হবে। [শারহুল মুমতি, ইবনে উসাইমীন,৬/৩৭৬]

Courtesy Shaykh Abdur Raquib Bukhari Hafizahullah

Tuesday 30 May 2017

রোযাবস্থায় বীর্যপাত এবং স্বপ্নদোষের বিধান (কেবল প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য)



আলহামদুলিল্লাহ্ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আম্মাবাদঃ
রামাযান মাসে সাউম পালনকারী ভাইদের পক্ষ থেকে উপরোক্ত বিষয়ে প্রায় প্রায় প্রশ্ন করা হয়। এ সম্পর্কে শরীয়ার সঠিক বিধান না জানা থাকার কারণে অনেকে অনেক রকমের ধারণা করে। কেউ মনে করে তার রোযা নষ্ট হয়ে গেছে, কেউ বলে রোযা মাকরূহ হয়ে গেছে, কেউ ভাবে তার দ্বারা গুনাহ হয়ে গেছে আর কেউ সংশয়ে থাকে। তাই সংক্ষিপ্তাকারে বিষয়টির শারঈ সমাধান উল্লেখ করার নিয়ত করেছি। আল্লাহই তাওফীকদাতা।
প্রথমতঃ আমাদের মনে রাখা উচিৎ যে, রোযা/ সাউম হচ্ছে,  আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে ফজর হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার ও যৌনসঙ্গম হতে বিরত থাকা। [ফাতহুল বারী, ৪/১৩২] তাই যৌন সঙ্গম হচ্ছে রোযা ভংগের একটি অন্যতম কারণ।
অতঃপর জানা উচিৎ যে, রোযাবস্থায় বীর্যপাতের দুটি অবস্থা রয়েছে। যথা:
  • (ক) রোযাদার স্বেচ্ছায় স্বয়ং তার বীর্যপাত ঘটায়। অর্থাৎ তার নিজের এখতিয়ারে বীর্যপাত করা হয়।
  • (খ) সে স্বেচ্ছায় বীর্যপাত ঘটায় না। অর্থাৎ তার এখতিয়ারে তা ঘটানো হয় না।
প্রথম অবস্থা আবার কয়েক শেণীতে বিভক্তঃ
১-রোযাবস্থায় স্ত্রী সঙ্গম করা: স্ত্রী-সঙ্গম বলতে স্ত্রীর যোনীতে লিঙ্গের অগ্রভাগ (মাথা) প্রবেশ করা বুঝায়, তাতে বীর্যপাত হোক বা নাই হোক। স্ত্রীর পায়ু পথে লিঙ্গাগ্র প্রবেশ করানোও এরই অন্তর্ভুক্ত। এটা রোযাদারের এখতিয়ারভুক্ত কাজ। এমন হলে সেই ব্যক্তির রোযা তো নষ্ট হবেই হবে কিন্তু তার সাথে সাথে তার উপর কয়েকটি বিধান অর্পিত হবে। যথা:
  • (ক) তাকে এই পাপ থেকে তাওবা করতে হবে।
  • (খ) এই কাজ ঘটার পর দিনের বাকী সময় রোযাবস্থায় থাকতে হবে
  • (গ) রামাযান পর তাকে সেই রোযা কাযা করতে হবে
  • (ঘ) কাফ্ফারা দিতে হবে।
এই অপরাধের কাফ্ফারা হচ্ছে যথাক্রমেঃ

সিয়াম গাইডঃ


আলহামদুলিল্লাহ্‌ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসুলিল্লাহ আম্মা বাদঃ
১- সিয়াম পালন একটি ফরয ইবাদত যা, প্রত্যেক সাবালক, সুস্থ ও মুকিম ( মুসাফির নয় ) মুসলিমের প্রতি জরুরি । যেহেতু প্রত্যেক ইবাদত কবুলের প্রথম শর্তই হচ্ছে সেই ইবাদতটি খাঁটি ভাবে আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে হওয়া তাই কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যেই সিয়াম ( রোযা) পালন করুন ।
২ - সিয়ামের সময়সীমা হল, ফজর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। এই সময় যাবতীয় পানাহার, স্ত্রী সহবাস ও যৌন সঙ্গম থেকে বিরত থাকার নাম সাউম বা রোযা । আর বাকি অঙ্গ যেমন জিহব্বা, চোখ , কান, হাত-পা ইত্যাদিকে যাবতীয় মন্দ বলা, দেখা, শোনা এবং করা থেকে বিরত রাখা হচ্ছে রোযাকে পূর্ণ করা , রোযার সংরক্ষণ করা এবং সিয়াকে কলুষিত না করা।
৩- ফজর পূর্বে নিয়ত করার মাধ্যমে সাউম শুরু হয়। এই সময় কিছু আহার করা ভাল, যাকে সাহুর বলা হয়। এই আহার মুসলিম ও অমুসলিমের সিয়ামের মাঝে পার্থক্যকারী, যা খাওয়া সুন্নাত জরুরি নয় । তাই রোযা রাখার নিয়ত ছিল কিন্তু যে কোন কারণে সাহুর খেতে পারেনি তার সাউম শুদ্ধ।
৪- চোখের সামনে সূর্য ডুবে গেলে রোযা ভঙ্গ করা তথা ইফতার করার নিয়ম । সূর্য ডুবার সাথে সাথে তাড়াতাড়ি ইফতার করা অর্থাৎ কল্যাণে থাকা। [ মুত্তাফাকুন আলাইহ ] ডাগর খেজুর দ্বারা ইফতারি করা সুন্নাহ, তার অবর্তমানে সাধারণ খেজুর দ্বারা আর তাও না হলে পানি দ্বারা। [ আবু দাউদ তিরমিযী]
৫- স্ত্রী সহবাস, হারাম সহবাস, হস্তমৈথুন, জাগ্রতবস্থায় যৌন চাহিদার সাথে বীর্যপাত, ইচ্ছাকৃত পানাহার, পানাহারের স্থানে স্লাইন-ইঞ্জেকশন গ্রহণ, ইচ্ছাকৃত বমি করা, স্ব ইচ্ছায় অধিক রক্তদান এসব কারণে সিয়াম ভেঙ্গে যায়। [ মুলাখখাস ফিকহি ১৮২-৮৩] স্বপ্ন দোষ, অনিচ্ছা ও ভুলে পানাহার, অনিচ্ছায় বমি করা, অনিচ্ছায় রক্তক্ষরণ এবং সামান্য রক্তদানে সাউম নষ্ট হয় না। 

Sunday 28 May 2017

রামাযান মাসে মুমিনের দৈনন্দিন কর্মসূচীঃ



আল হামদু লিল্লাহ, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আম্মা বাদ :
রহমতের মাস, বরকতের মাস, কল্যাণের মাস, ক্ষমার মাস, কুরআনের মাস মাহে রামাযান আমাদের মাঝে উপস্থিত। এ মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা কি রামাযানের এই মহামূল্যবান সময়গুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারছি? আসুন না, আমরা একটি তালিকা তৈরি করি যেন, এই মাসের প্রতিটি মুহূর্তে নেকী কুড়িয়ে আখেরাতের জন্য সঞ্চয় করে রাখতে পারি।
🌠 *ফজর পূর্বে:*
🔹 ১) *আল্লাহর দরবারে তাওবা-ইস্তেগফার ও দুয়া:* কারণ মহান আল্লাহ প্রত্যেক রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করে বলেন: "কে আছে আমার কাছে দুআকারী, আমি তার দুআ কবুল করবো"। (মুসলিম)
🔹 ২) *সাহরী ভক্ষণ:* নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : "সাহরী খাও। কারণ সাহরীতে বরকত আছে"। (বুখারী মুসলিম)
🌅 *ফজর হওয়ার পর:*
🔸 ১) *ফজরের সুন্নত আদায়:* নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : "ফজরের দুই রাকাআত সুন্নত দুনিয়া ও দুনিয়ার মাঝে যা আছে তার থেকে উত্তম"। (মুসলিম )
🔸 ২) *ইকামত পর্যন্ত দুআ ও যিকিরে মশগুল থাকা:* নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :"আযান ও ইকামতের মাঝে দুআ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না"। (আহমদ, তিরমিযী, আবূ দাউদ)
🔸 ৩) *ফজরের নামায আদায়:* নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :"তারা যদি ইশা ও ফজরের ফযীলত জানতো, তো হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে উপস্থিত হত"। (বুখারী ও মুসলিম)
🔸 ৪) *সূর্যোদয় পর্যন্ত সকালে পঠিতব্য দুআ-যিকর ও কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে মসজিদে অবস্থান:* "নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযের পর নিজ স্থানেই সূর্যোদয় পর্যন্ত অবস্থান করতেন"। (মুসলিম )
🔸 ৫) *সূর্যোদয়েরে পর দু রাকাআত নামায:* নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :"যে ব্যক্তি জামায়াতের সহিত ফজরের নামায পড়লো, অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর যিকর করলো, তারপর দুই রাকাআত নামায আদায় করলো, তার জন্য এটা একটি পূর্ণ হজ্জ ও উমরার মত "। (তিরমিযী)
🔸 ৬) *নিজ নিজ কর্মে মনোযোগ দেয়া:* নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: "নিজ হাতের কর্ম দ্বারা উপার্জিত খাদ্যের চেয়ে উত্তম খাবার নেই"। (বুখারী)
*যোহরের সময়:*
১) জামায়াতের সহিত জহরের নামায আদায়। অতঃপর কিছুক্ষণ কুরআন কিংবা অন্যান্য দীনী বই পাঠ।
২) আসর পর্যন্ত বিশ্রাম, কারণ তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ( তোমার উপর তোমার শরীরেরও হক আছে)।

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...