Friday 21 December 2018

মাতৃভাষায় জুমার খুতবা দেয়ার বিধান

মাতৃভাষায় জুমার খুতবা দেয়ার বিধানঃ
▬▬▬▬ 🔹🔸🔹▬▬▬▬
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমার খুতবায় আল্লাহর তারীফ করতেন, দরুদ পড়তেন, কুরআন থেকে তেলাওয়াত করতেন এবং কিছু ওয়াজ-নছীহত ও করতেন। নবীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:
وَمَا أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْ
“আমি সব নবীকেই তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করেছি, যাতে তাদেরকে পরিষ্কার বোঝাতে পারে।” (সূরা ইবরাহীম: ৪)
রসুলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাতৃভাষা যেহেতু আরবী ছিল এবং ছাহাবীদেরও ভাষা আরবী ছিল, তাই তিনি আরবীতেই তাদেরকে নছীহত করতেন। এখন যারা নবীজির নায়েব হয়ে জুমার খুতবা দিবেন তাদেরকেও উল্লেখিত আয়াত ও হাদীছ অনুসারে তাদের শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে মাতৃভাষায় খুতবা দেয়াটা শরীয়ত সম্মত এবং যুক্তি সংগত।
💠 • এই কারণেই ইমাম শাফেয়ী (রহ.) বলেন: প্রত্যেক খতীবকে জুমার সময় তাঁর মাতৃভাষায় ওয়াজ করা ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য। (তানক্বীহুর রুওয়াত ১/২৬৪)
💠 • আল্লামা তাহাভী হানাফী বলেন: জুমার খুতবা আরবী জানলেও ফারসী ভাষায়ও চলবে। (হাশিয়া তাহতাবী আলা মারাক্বিল ফালাহ ২৭)
💠 • আল্লামা আব্দুল হাই লাখনভী হানাফী (রহ.) বলেন: শ্রোতাদেরকে তাদের মাতৃভাষায় খুতবা বুঝিয়ে দেয়া জায়েজ। (মাজমূআহ ফাতাওয়া ১/২৪৫)
💠 • হানাফী ফিক্বহ গ্রন্থ নিহায়া, মুজতাবা, ফাতাওয়া সিরাজিয়্যাহ, মুহীত প্রভৃতি গ্রন্থে আছে যে, ইমাম আবূ হানীফার মতে, ফারসী ভাষাতে জুমার খুতবা দেয়া জায়েজ।
💠 • হানাফী ফতোয়ার কিতাব শামীতে আছে, আরবী ভাষায় খুতবা দেয়া শর্ত নয়।
💠 • হানাফী ফিকহ গ্রন্থ হিদায়ায় আছে, প্রত্যেক ভাষায় খুতবার নছীহত চলতে পারে। (কিতাবুল জুমআহ ৫৫-৫৬) (আলোচনা দ্র: আইনী তোহফা সলাতে মুস্তফা ১/৯৮-৯৯)
💠 খুতবারা আগে বয়ান একটি বিদআত:
নিজ ভাষায় খুতবা না দেয়ার কারণে যেহেতু তা মানুষের বোধগম্য হয় না এজন্যই এই খুতবার আগে খতীবগণ বয়ানের ব্যবস্থা রেখেছেন, যা শরীয়তের দৃষ্টিতে একটি জঘন্যতম বিদআত। কারণ খুতবা দানের পূর্বে বয়ান দেয়া এবং ইহাকে এভাবে স্থায়ী রূপ দেয়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে আদৌ প্রমাণিত নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুতবার পূর্বে কখনো এ ধরণের বয়ান দেন নি। দিতে বলেছেন বলে ও কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না।
এজন্যই এ সঊদী আরবের বরেণ্য মুফতী শাইখ ইবনে উসাইমীন (রহ:)কে মাতৃভাষায় খুতবা প্রদান সম্পর্কে সওয়াল করা হলে তিনি তা সরাসরি জায়েজ বলে মন্তব্য করেন এবং একথা স্পষ্ট ভাবে বলেন যে, খতীবকে নিজ ভাষায় খুতবা দিতে হবে। (দেখুন: শাইখ ইবনে উসাইমীনের ফাতাওয়া আরকানিল ইসলাম)
বর্তমানে আমাদের দেশের বেশ কিছু জামে মসজিদে মাতৃভাষায় খুতবা দেয়া হয়ে থাকে। বস্তুত: এটাই সুন্নত। এর বিপরীত সুন্নত বিরোধী কাজ যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। আল্লাহ আমাদেরকে দ্বীনের সঠিক ইলম দান করুন এবং যাবতীয় বিদআত পরিত্যাগ করার তাওফীক দিন (আমীন)
▬▬▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬▬▬
লেখক: শাইখ আখতারুল আমান বিস আব্দুস সালাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল

Thursday 11 October 2018

সাইয়েদ কুতুব

আস'সালামু আ'লাইকুম ওয়া রাহ'মাতুল্লাহি ওয়া বারা"কাত্বহ।
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা-র জন্য এবং অসংখ্য সলাত ও সালাম বর্ষিত হোক সর্বশেষ নাবী ও রাসূল মুহাম্মাদ ﷺ-এর প্রতি।
প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা,
আজ আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি ইখোয়ানুল মুসলিমিন (মুসলিম ব্রাদারহুড), জামাতে ইসলামী, বা এমন অন্যান্য চরমপন্থী দলগুলোর আদর্শ গুরুদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় একজন ব্যক্তিত্ব " সাইয়েদ কুতুবের "আকিদা, মানহাজ এবং তার সম্পর্কে যুগ শ্রেষ্ঠ উলামাদের মতামত সম্বলিত প্রবন্ধ নিয়ে!
দ্বীন কায়েম, খিলাফত প্রতিষ্ঠা, ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কথিত ‘ইসলামিক আন্দোলন’ এর মতাদর্শ প্রচারকারী এবং খাওয়ারিজদের ধর্মীয় গুরু হিসেবে পরিচিত "সাইয়েদ কুতুবের" নাম টা শুনে নি এমন মানুষ কম ই পাওয়া যাবে! কেউ কেউ তাকে "শহিদ কুতুব " বলেও অভিহিত করেন!
যাইহোক, "কে এই কুতুব "সেই সম্পর্কে আমরা ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করব (ওয়া'মা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ)
❒ কুতুবের জন্ম ও শৈশবঃ
-------------------------------------
সাইয়েদ কুতুব ১৯০৬ সালে মিসরের উসইউত জেলার মুশা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন! সাইয়েদ কুতুবের মূল নাম হলো সাইয়েদ" এবং "কুতুব" হল তার বংশীয় উপাধি!যতটুকু জানা যায় তার পূর্বপুরুষরা আরব উপদ্বীপ থেকে এসে মিসরের উত্তরাঞ্চলে বসবাস শুরু করেন।পিতার হাজী ইবরাহীম কুতুব ছিলেন একজন কৃষক! দুই ভাই এবং তিন বোনের মধ্যে "সাইয়েদ কুতুব "ই ছিলেন সবার বড়"! অন্য ভাই হলেন মুহাম্মাদ কুতুব আর বোনেরা হলেন হামিদা কুতুব এবং আমিনা কুতুব আরেকজনের নাম জানা যায়নি!
❒ শিক্ষা ও কর্মজীবন:
---------------------------------
প্রথমেই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাইয়েদ কুতুবের শিক্ষাজীবন শুরু হয়।তারপর কায়রোর বিখ্যাত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৩৩ সালে সেখান থেকে বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন এবং সেখানেই অধ্যাপক নিযুক্ত হন।
কিছুকাল অধ্যাপনা করার পর তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্কুল ইন্সপেক্টর নিযুক্ত হন। মিসরে এই পদটিকে অত্যন্ত সম্মানজনক বিবেচনা করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেই তাকে আধুনিক শিক্ষাপদ্ধতি পড়াশোনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়।
দু’বছরের কোর্স শেষ করে আমেরিকা থেকে দেশে ফেরার পর পরই ইখওয়ানুল মুসলিমিন দলের আদর্শ, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচির সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে ফেলেন এবং ১৯৪৫ সালে তিনি ওই দলের সদস্য হয়ে যান। তারপরেই একে একে ভিবিন্ন কিতাবাদি রচনা শুরু করেন!
❒ সাইয়েদ কুতুবের আকিদাঃ
-----------------------------------------

Wednesday 10 October 2018

স্বালাতে মুবাশ্‌শির (৩য় পর্ব)



১ম পর্ব ২য় পর্ব ৩য় পর্ব

জুম'আ

জুমআর নামায
জুমআর নামায প্রত্যেক সাবালক জ্ঞান-সম্পন্ন পুরুষের জন্য জামাআত সহকারে ফরয।

মহান আল্লাহ বলেন,

(يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِذَا نُوْدِيَ لِلصَّلاَةِ مِنْ يَّوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ، ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ)

অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ! যখন জুমআর দিন নামাযের জন্য আহবান করা হবে, তখন তোমরা সত্বর আল্লাহর স্মরণের জন্য উপস্থিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় বর্জন কর। এটিই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা উপলব্ধি কর। (কুরআন মাজীদ ৬২/৯)


মহানবী (সাঃ) বলেন, “দুনিয়াতে আমাদের আসার সময় সকল জাতির পরে। কিন্তু কিয়ামতের দিন আমরা সকলের অগ্রবর্তী। (সকলের আগে আমাদের হিসাব-নিকাশ হবে।) অবশ্য আমাদের পূর্বে ওদেরকে (ইয়াহুদী ও নাসারাকে) কিতাব দেওয়া হয়েছে। আমরা কিতাব পেয়েছি ওদের পরে। এই (জুমআর) দিনের তা’যীম ওদের উপর ফরয করা হয়েছিল। কিন্তু ওরা তাতে মতভেদ করে বসল। পক্ষান্তরে আল্লাহ আমাদেরকে তাতে একমত হওয়ার তওফীক দান করেছেন। সুতরাং সকল মানুষ আমাদের থেকে পশ্চাতে। ইয়াহুদী আগামী দিন (শনিবার)কে তা’যীম করে (জুমআর দিন বলে মানে) এবং নাসারা করে তার পরের দিন (রবিবার)কে।” (বুখারী, মুসলিম,  মিশকাত)

মহানবী (সাঃ) বলেন, “প্রত্যেক সাবালক পুরুষের জন্য জুমআয় উপস্থিত হওয়া ওয়াজেব।” (নাসাঈ, সুনান ১৩৭১নং)

হযরত ইবনে মসউদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “আমি ইচ্ছা করেছি যে, এক ব্যক্তিকে লোকেদের ইমামতি করতে আদেশ করে ঐ শ্রেণীর লোকেদের ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দিই, যারা জুমআতে অনুপস্থিত থাকে।” (মুসলিম ৬৫২নং,হাকেম)

হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ) ও ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তাঁরা শুনেছেন, আল্লাহর রসূল (সাঃ) তাঁর মিম্বরের কাঠের উপর বলেছেন যে, “কতক সম্প্রদায় তাদের জুমুআহ ত্যাগ করা হতে অতি অবশ্যই বিরত হোক, নতুবা আল্লাহ তাদের অন্তরে অবশ্যই মোহ্‌র মেরে দেবেন। অতঃপর তারা অবশ্যই অবহেলাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।” (মুসলিম, সহীহ ৮৬৫ নং, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান)

হযরত আবুল জা’দ যামরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি বিনা ওজরে তিনটি জুমুআহ ত্যাগ করবে সে ব্যক্তি মুনাফিক।” (ইবনে খুযাইমাহ্‌, সহীহ, ইবনে হিব্বান, সহীহ, সহিহ তারগিব ৭২৬নং)

হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ্‌ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা নবী (সাঃ) জুমআর দিন খাড়া হয়ে খুতবা দানকালে বললেন, “সম্ভবত: এমনও লোক আছে, যার নিকট জুমুআহ উপস্থিত হয়; অথচ সে মদ্বীনা থেকে মাত্র এক মাইল দূরে থাকে এবং জুমআয় হাযির হয় না।” দ্বিতীয় বারে তিনি বললেন, “সম্ভবত: এমন লোকও আছে  যার নিকট জুমুআহ উপস্থিত হয়; অথচ সে মদ্বীনা থেকে মাত্র দুই মাইল দূরে থাকে এবং জুমআয় হাজির হয় না।” অতঃপর তৃতীয়বারে তিনি বললেন, “সম্ভবত: এমন লোকও আছে যে মদ্বীনা থেকে মাত্র তিন মাইল দূরে থাকে এবং জুমআয় হাজির হয় না তার হৃদয়ে আল্লাহ মোহ্‌র মেরে দেন।” (আবূ য়্যা’লা, সহিহ তারগিব ৭৩১নং)

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি পরপর ৩ টি জুমুআহ ত্যাগ করল, সে অবশ্যই ইসলামকে নিজের পিছনে ফেলে দিল।” (ঐ, সহিহ তারগিব৭৩২নং)

জুমুআহ যাদের উপর ফরয নয়
১-২-৩। মহিলা, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি।

নবী মুবাশ্‌শির (সাঃ) বলেন, “প্রত্যেক মুসলিমের জন্য জামাআত সহকারে জুমুআহ ফরয। অবশ্য ৪ ব্যক্তির জন্য ফরয নয়; ক্রীতদাস, মহিলা, শিশু ও অসুস্থ।” (আবূদাঊদ, সুনান ১০৬৭নং)

৪। যে ব্যক্তি (শত্রু, সম্পদ বিনষ্ট, সফরের সঙ্গী ছুটে যাওয়ার) ভয়ে, অথবা বৃষ্টি, কাদা বা অত্যন্ত শীত বা গ্রীষ্মের কারণে মসজিদে উপস্থিত হতে অক্ষম।

মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি মুআযযিনের (আযান) শোনে এবং কোন ওজর (ভয় অথবা অসুখ) তাকে জামাআতে উপস্থিত হতে বাধা না দেয়, তাহলে যে নামায সে পড়ে, তার সে নামায কবুল হয় না।” (আবূদাঊদ, সুনান ৫৫১নং)

একদা ইবনে আব্বাস (রাঃ) এক বৃষ্টিময় জুমআর দিনে তাঁর মুআযযিনকে বললেন, ‘তুমি যখন আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্‌’ বলবে তখন বল, ‘তোমরা তোমাদের ঘরে নামায পড়ে নাও।’ এ কথা শুনে লোকেরা যেন আপত্তিকর মনোভাব ব্যক্ত করল। কিন্তু তিনি বললেন, ‘এরুপ তিনি করেছেন যিনি আমার থেকে শ্রেষ্ঠ। অর্থাৎ, আল্লাহর রসূল (সাঃ) এরুপ করেছেন। আর আমিও তোমাদেরকে এই কাদা ও পিছল জায়গার মাঝে বের হওয়াকে অপছন্দ করলাম।’ (বুখারী ৯০১, মুসলিম, সহীহ ৬৯৯নং)

প্রকাশ থাকে যে, যারা দূরের মাঠে অথবা জঙ্গলে অথবা সমুদ্রে কাজ করে এবং আযান শুনতে পায় না, তাছাড়া কাজ ছেড়ে শহর বা গ্রামে আসাও সম্ভব নয়, তাদের জন্য জুমুআহ ফরয নয়। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্‌, সঊদী উলামা-কমিটি ১/৪১৪, ফাতাওয়া ইবনে উষাইমীন ১/৩৯৯)

৫। মুসাফির :

মহানবী (সাঃ) জুমআর দিন সফরে থাকলে, জুমআর নামায না পড়ে যোহরের নামায পড়তেন। বিদায়ী হজ্জের সময় তিনি আরাফাতে অবস্থানকালে জুমআর নামায পড়েননি। বরং যোহ্‌র ও আসরের নামাযকে অগ্রিম জমা করে পড়েছিলেন। অনুরুপ আমল ছিল খুলাফায়ে রাশেদ্বীন (রাঃ) দেরও।

উপর্যুক্ত ব্যক্তিবর্গের জন্য জুমআর নামায ফরয নয়। কিন্তু যোহরের নামায অবশ্যই ফরয। পরন্তু যদি তারাও জুমআর মসজিদে উপস্থিত হয়ে জামাআতে জুমুআহ পড়ে নেয়, তাহলে তা বৈধ। এ ক্ষেত্রে তাদের জুমুআহ হয়ে যাবে এবং যোহরের নামায মাফ হয়ে যাবে।

একাধিক হাদীস এ কথা প্রমাণ করে যে, মহানবী (সাঃ) এবং খুলাফায়ে রাশেদ্বীন (রাঃ) দের যুগে মহিলারা জুমুআহ ও জামাআতে উপস্থিত হয়ে নামায আদায় করত।

উল্লেখ্য যে, কোন মুসাফির জুমুআহ খুতবা দিলে ও ইমামতি করলে তা শুদ্ধ হয়ে যাবে। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ৫/২৩)

জুমআর জামাআতে কোন মুসাফির যোহরের কসর আদায় করার নিয়ত করতে পারে না। কারণ, যোহ্‌র অপেক্ষা জুমআর ফযীলত অনেক বেশী। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ৪/৫৭৪)

জুমআর সময়
অধিকাংশ সাহাবা, তাবেঈন ও ইমামগণের নিকট জুমআর সময় যোহরের সময় একই। অর্থাৎ, সূর্য ঢলার পর থেকে নিয়ে প্রত্যেক বস্তুর ছায়া তার সমপরিমাণ হওয়া (আসরের আগে) পর্যন্ত।

হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, ‘নবী (সাঃ) জুমুআহ তখন পড়তেন, যখন সূর্য পশ্চিম আকাশেঢলে যেত।’ (আহমাদ, মুসনাদ, বুখারী, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, বায়হাকী)

ইমাম বুখারী বলেন, ‘জুমআর সময় সূর্য ঢলার পরই শুরু হয়। হযরত উমার, আলী, নু’মান বিন বাশীর এবং আম্‌র বিন হুয়াইরিষ কর্তৃক এ ব্যাপারে বর্ণনা পাওয়া যায়।’ (বুখারী)

হযরত সালামাহ্‌ বিন আকওয়া’ (রাঃ) বলেন, ‘আমরা যখন নবী (সাঃ)-এর সাথে জুমআর নামায পড়ে ঘরে ফিরতাম, তখন দেওয়ালের কোন ছায়া থাকত না।’ (বুখারী, মুসলিম,  আবূদাঊদ, সুনান)

হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, ‘ঠান্ডা খুব বেশী হলে নবী (সাঃ) জুমআর নামায সকাল সকাল পড়তেন এবং গরম খুব বেশী হলে দেরী করে পড়তেন।’ (বুখারী)

অবশ্য সূর্য ঢলার পূর্বেও জুমুআহ পড়া বৈধ। (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য আল-আজবিবাতুন নাফেআহ্‌, আন আসইলাতি লাজনাতি মাসজিদিল জামেআহ্‌, মুহাদ্দিস আলবানী ২২-২৫পৃ:) তবে সূর্য ঢলার পরই জুমুআহর (খুতবার) আযান হওয়া উত্তম। কারণ, প্রথমত: এতে অধিকাংশ উলামার সাথে সহ্‌মত প্রকাশ হয়। দ্বিতীয়ত: যারা জুমআয়হাজির হয় না এবং সময়ের খবর না রেখে আযান শুনে নামায পড়তে অভ্যাসী (ওযরগ্রস্ত ও মহিলারা) সময় হওয়ার পূর্বেই নামায পড়ে ফেলে না। (লিকাউবাবিল মাফতূহ্‌, ইবনে উষাইমীন ৫/৩৪)

প্রকাশ থাকে যে, সকাল সকাল মসজিদে গিয়ে তাহিয়্যাতুল মসজিদ সহ্‌ অন্যান্য নফল পড়া সূর্য ঠিক মাথার উপরে থাকার সময়ে হলেও তা নিষেধের আওতাভুক্ত নয়। (ঐ)

জুমআর জন্য নিম্নতম নামাযী সংখ্যা

জুমআর নামায যেহেতু জামাআত সহকারে ফরয, সেহেতু যে কয় জন লোক নিয়ে জামাআত হবে, সে কয় জন লোক নিয়ে জুমআহও প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু তার জন্য নির্দিষ্ট লোক সংখ্যা হাদীস থেকে প্রমাণিত নয়।

জুমআর স্থান
জুমুআহ যেমন শহরবাসীর জন্য ফরয, তেমনি ফরয গ্রামবাসীর জন্যও। এর জন্য খলীফা হওয়া, শহর হওয়া, জামে মসজিদ হওয়া বা ৪০ জন নামাযী হওয়া শর্ত নয়। বরং যেখানেই স্থানীয় স্থায়ী বসবাসকারী জামাআত পাওয়া যাবে, সেখানেই জুমুআহ ফরয। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ২২/৭৫, ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্‌, সঊদী উলামা-কমিটি ১/৪২৪)

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘নবী (সাঃ)-এর মসজিদে জুমুআহ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ইসলামে সর্বপ্রথম যে জুমুআহ প্রতিষ্ঠিত হয়, তা হল বাহ্‌রাইনের জুয়াষা নামক এক গ্রামে।’ (বুখারী ৮৯২, ৪৩৭১, আবূদাঊদ, সুনান ১০৬৮নং)

স্বালাতে মুবাশ্‌শির (২য় পর্ব)


১ম পর্ব | ২য় পর্ব | ৩য় পর্ব

দরুদ

তাশাহহুদের পর নবী মুবাশ্‌শির (সাঃ) নিজের উপর দরুদ পাঠ করতেন। (আহমাদ, মুসনাদ ৫/৩৭৪, হাকেম, মুস্তাদরাক) আর উম্মতের জন্যও তাঁর উপরের সালামের পর দরুদ পড়াকে বিধিবদ্ধ করেছেন। মহান আল্লাহর সাধারণ আদেশ রয়েছে, “--- হে ঈমানদারগণ! তোমরাও নবীর উপর দরুদ পাঠ কর এবং উত্তমরুপে সালাম পেশ কর।” (কুরআন মাজীদ ৩৩/৫৬)

আর মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার উপর ১০ বার রহ্‌মত বর্ষণ করবেন।” (মুসলিম,  মিশকাত ৯২১ নং)


অন্য এক বর্ণনায় আছে, “---এবং তার ১০টি পাপ মোচন হবে ও সে ১০টি মর্যাদায় উন্নীত হবে।” (নাসাঈ, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক ১/৫৫০, মিশকাত ৯২২নং)

সাহাবাগণ তাঁকে বললেন, ‘আমরা আপনার উপর দরুদ কিভাবে পাঠ করব?’ তখন তিনি তাঁদেরকে দরুদ শিক্ষা দিলেন। (বুখারী, মুসলিম,  মিশকাত ৯১৯-৯২০নং)

দরুদের শব্দবিন্যাস কয়েক প্রকার:-

১।اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدُ، اَللّهُمَّ بَارِكْ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ।
 উচ্চারণ:- আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউঅআলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা স্বাল্লাইতা আলা ইবরা-হীমা অ আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকাহামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউঅ আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা আলা ইবরা-হীমা অ আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।

অর্থ:- হে আল্লাহ! তুমি হযরত মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরের উপর রহ্‌মত বর্ষণ কর, যেমন তুমি হযরত ইবরাহীম ও তাঁর বংশধরের উপর রহ্‌মত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গৌরবান্বিত।

হে আল্লাহ! তুমি হযরত মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরের উপর বর্কত বর্ষণ কর, যেমন তুমি হযরত ইবরাহীম ও তাঁর বংশধরের উপর বর্কত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গৌরবান্বিত। (বুখারী, মিশকাত ৯১৯নং)

২।  اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى أَزْوَاجِهِ وَ ذُرِّيَّتِهِ كَمَا صَلَّيْتَ عَلىآلِ إِبْرَاهِيْمَ، وَبَارِكْ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى أَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ كَمَا بَارَكْتَ عَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ।
  উচ্চারণ:- আল্লাহুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউঅ আলা আযওয়া-জিহী অ যুরিয়্যাতিহী কামা স্বাল্লাইতা আলা আ-লি ইবরা-হীম, অ বা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউঅআলা আযওয়া-জিহী অ যুরির্য়াতিহী কামা বা-রাকতা আলা আ-লি ইবরাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।

অর্থ:- হে আল্লাহ! তুমি হযরত মুহাম্মাদ, তাঁর পত্নীগণ ও তাঁর বংশধরের  উপর রহ্‌মত বর্ষণ কর যেমন তুমি হযরত ইবরাহীমের বংশধরের উপর রহ্‌মত বর্ষণ করেছ। এবং তুমি হযরত মুহাম্মাদ, তাঁর পত্নীগণ ও তাঁর বংশধরের  উপর বর্কত বর্ষণ কর যেমন তুমি হযরত ইবরাহীমের বংশধরের উপর বর্কত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত  গৌরবান্বিত। (বুখারী, মুসলিম,  মিশকাত ৯২০নং)

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَّعَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَعَلَى أَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَعَلَى أَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ
كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ،
 উচ্চারণ:- আল্লা- হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মা দিঁ উঅআলা আহ্‌লি বাইতিহি অআলা আযওয়া-জিহি অযুরিGয়্যাতিহি কামা স্বাল্লাইতা আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকাহামীদুম মাজীদ। অবা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউঅআলা আহ্‌লি বাইতিহি অআলা আযওয়া-জিহি অযুরির্য়াতিহী কামা বারাকতা আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকাহামীদুম মাজীদ। (আহমাদ, মুসনাদ ৫/৩৭৪, ত্বাহাকেম, মুস্তাদরাক)

Tuesday 9 October 2018

স্বালাতে মুবাশ্‌শির

স্বালাতে মুবাশ্‌শির (১ম পর্ব) 




শুরুর কথা 

শুরুর কথা সমূহ
মহান আল্লাহর অনুগ্রহে ‘স্বালাতে মুবাশ্‌শির’-এর দ্বিতীয় খন্ড পাঠকের হাতে উপস্থিত হল। তার জন্য তাঁর দরবারে লাখো শুকরিয়া জ্ঞাপন করি। দ্বীনের অন্যতম খুঁ টির একটি কাঠামো পেশ করতে পেরে আমি নিজেকে যেমন ধন্য মনে করছি, তেমনি আশা করছি দুআ ও সওয়াব লাভের।

কেবল সহীহ হাদীসকে ভিত্তি করেই, অধিক ক্ষেত্রে কে কি বলেছেন তা উল্লেখ না করেই কেবল সহীহ দিকটা তুলে ধরেছি আমার এই পুস্তিকায়। মানুষের মনে সহীহ শিক্ষার চেতনা ও বাসনার কথা খেয়াল রেখেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। আল্লাহ যেন তা কবুল করেন, তাই আমার কামনা।

বিভিন্ন বিতর্কিত মাসায়েলে আমি বর্তমান বিশ্বের প্রধান ৩টি রত্ন; বর্তমান বিশ্বের অদ্বিতীয় মুহাদ্দিস আল্লামা শায়খ মুহাম্মাদ নাসেরুদ্দ্বীন আলবানী, আল্লামা শায়খ ইবনে বায এবং আল্লামা ও ফকীহ্‌ শায়খ ইবনে উষাইমীন (রাহিমাহুমুল্লাহু জামীআন)গণের হাদীস লব্ধ ও সহীহ দলীল ভিত্তিক মতকে প্রাধান্য দিয়েছি। আর এ কথা অবশ্যই প্রমাণ করে যে, আমি তাঁদের প্রত্যেকের; বরং প্রত্যেক হ্‌ক-সন্ধানী রব্বানী আলেমের ভক্ত ও অনুরক্ত। তা বলে কারো অন্ধভক্ত নই। পক্ষান্তরে প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য অধিকারীর অধিকার সঠিকরুপে আদায় করা। উলামার যথার্থ কদর করা। প্রত্যেক হ্‌ক-সন্ধানীর অনুরক্ত হওয়া; যদিও বা তাঁদের কোন কোন অভিমত আমার-আপনার বুঝের অনুকূল নয়। বলা বাহুল্য, খাঁটি সোনা স্বর্ণকারই চিনতে পারে; স্বর্ণ-ব্যবসায়ী নয়।

‘নামায’ ইসলামের প্রধান ইবাদত। ‘নামায’ শব্দটি ফারসী, উর্দু , হিন্দী ও আমাদের বাংলা ভাষায় আরবী ‘সালাত’ অর্থেই পরিপূ র্ণ রুপে ব্যবহৃত বলেই আমি ‘সালাত’-এর স্থানে ‘নামায’ই ব্যবহার করেছি। তাছাড়া বাংলাভাষীর অধিকাংশ মানুষ ‘সালাত’ শব্দটির সাথে পরিচিত নয়। তাই পরিচিত ও প্রসিদ্ধ শব্দই ব্যবহার করতে আমি প্রয়াস পেয়েছি। আর এতে শরয়ী কোন বাধাও নেই। সুতরাং এ বিষয়ে সুহৃদ পাঠকের কাছে আমার ইজতিহাদী  কৈফিয়ত পেশ করে সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

বিনীত
আব্দুল হামীদ আল-মাদানী
আল-মাজমাআহ সঊদীআরব

প্রয়োজনের তাকীদে যা কিছু লিখি, সবই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়। আল্লাহ যেন তা আমাকে দান করেন এবং কাল কিয়ামতে এরই অসীলায় আমাকে, আমার শ্রদ্ধেয় পিতা-মাতা ও ওস্তাযগণকে, আর এ বই-এর উদ্যোক্তা, প্রকাশক ও সকল আমলকারী পাঠককে তাঁর মেহ্‌মান-খানা বেহেশ্তে স্থান দেন। আমীন।


নিয়ত

নিয়ত সম্পর্কে বিস্তারিত

আমল ও ইবাদত শুদ্ধ-অশুদ্ধ এবং তাতে সওয়াব পাওয়া-না পাওয়ার কথা নিয়তের উপর নির্ভরশীল। নিয়ত শুদ্ধ হলে আমল শুদ্ধ; নচেৎ না। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, “যাবতীয় আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং প্রত্যেক ব্যক্তির তা-ই প্রাপ্য হয়, যার সে নিয়ত করে থাকে। যে ব্যক্তির হিজরত পার্থিব কোন বিষয় লাভের উদ্দেশ্যে হয়, সে ব্যক্তির তা-ই প্রাপ্য হয়। যার হিজরত কোন মহিলাকে বিবাহ্‌ করার উদ্দেশ্যে হয়, তার প্রাপ্যও তাই। যে যে নিয়তে হিজরত করবে সে তাই পেয়ে থাকবে।” (বুখারী, মুসলিম,  মিশকাত ১নং)

Tuesday 2 October 2018

শিয়াদের ঈমান-আকীদা

অনেক ভাইয়েরা শিয়াদের ঈমান কেমন জানার জন্য প্রশ্ন করেন। জেনে নিন,
.
শিয়াদের ঈমান-আকীদাঃ

শিয়া ইসনা আশারিয়াদের আকীদা-বিশ্বাসের সংক্ষিপ্ত পরিচয় নিন্মে তুলে দেওয়া হলো। সাথে আরো ঈমান ও ইসলাম ভঙ্গের কারণগুলো দেওয়া হলো। যাতে করে পাঠক তার নিজ বিবেচনায় শিয়াদের নাস্তিক ও মুরতাদ হওয়ার বিষয়ে সঠিক ধারণা লাভ করতে পারেন।
.
(১) আল্লাহ আলী রাঃ এর কাছে ওয়াহী নাযিল করেছিলেন, কিন্তু জিব্রাইল ভুলে সেই ওয়াহী নিয়ে আসে মুহাম্মাদ সঃ এর কাছে। (আল মুনিয়া ওয়াল আমালঃ ৩০ পৃ)।
(২) আল ক্বুরআন সম্পূর্ণ নয়। আসল ক্বুরআন আসমানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তখন, যখন সাহাবারা মুরতাদ হয়ে গেছে। (আত-তানবিহ অররাদ্দ-আল মুলিতিঃ ২৫ পৃ)।
(৩) ক্বুরআনের অনেক আয়াত আসলে আয়াত নয়, তা বাজে কথা (নাউজুবিল্ললাহ)। (আল-অসীকা/২২১ পৃ)।
(৪) রাসুল সঃ নিজেই আংশিক শিয়া দর্শন প্রচার করে গেছেন। বাকিটা হজরত আলী প্রচার করেছেন। (এহকাকুল হক- তাসাত্তুরী/২-৮৮ পৃ)।
(৫) শিয়া ইমামরা আল্লাহ ও তার সৃষ্টির মাঝখানে মধ্যস্থতা কারী। (বেহারুল আনোয়ার/৯৯ঃ২৩)।
(৬) শিয়া ইমামদের কবর জিয়ারত কা’বায় হজ্জ করার চাইতে উত্তম। (সাওয়াবুল আ’মাল/১২১ পৃ)।
(৭) যে হুসাইন রাঃ এর কবর জিয়ারত করে সে যেন আল্লাহর আরশ জেয়ারত করে। (আল-মাজার আল-মুফিদ/৫১ পৃ)।
(৮) হুসাইন রাঃ এর কবরের মাটি সকল রোগের ঔসুধ। (আল-আমালি/৯৩ঃ ৩১৮)।
(৯) আল্লাহ ও শিয়া ইমামদের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই (নাউজুবিল্লাহ)। (মাসাবিহুল আনোয়ার/২ঃ ৩৯৭ পৃ)।
(১০) নক্ষত্র ও তারকা রাজি মানুষের সুখ-দুঃখ ও জীবন-মরনের উপর হস্তক্ষেপ করে। (রাওদা মিনাল কাফি/৮ঃ ২১০৩ পৃ)।
(১১) আলী রাঃ গায়েব জানেন। (মের’আতুল আনোয়ার/ ৫৯)। তিনি দুনিয়া ও আখেরাতের বিষয়ে হস্থক্ষেপ করেন। (ওসুল আল-কাফি/১ঃ৩০৮)। তিনি মৃত কে জেন্দা করেন-( ওসুল আল-কাফি/১ঃ৩৪৭)।
১২) যে বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ জমীনে আসেন সে কাফের-( ওসুল আল-কাফি/১ঃ৯০ পৃ)।
১৩) কালেমা শাহাদাতের সাথে আরো বলতে হবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আলী রাঃ আল্লাহর অলী। তারা এমন কালেমা নব জাতকের কানে বলে এবং মৃত ব্যক্তির শয্যায় শিয়রে উচ্চারন করে-( ফুরুউল কাফি/৩ঃ৮২)।
১৪) যারা আবু বকর, ওমর, ওসমান,‌ মুয়া্বিয়া, আয়েশা ও হাফসা রাঃ কে প্রত্যেক নামাজের পর গালি দিবে তারা আল্লাহকে সব চাইতে বড় উপহার প্রদান করিবে। (ফুরুউল কাফি/ ৩ঃ২২৪)।
১৫) শিয়া ইমামরা অন্যের জন্যে জান্নাতে প্রবেশ নিশ্চিত করতে পারে। ( রিজালুল কাশি/৫ঃ৪৯০)।
১৬) মুতা বিয়ে না করলে তার ইমান পূর্ণতা লাভ করেনা। আর মুতা বিয়ে হল অলি ও সাক্ষী ছাড়াই কোন মহিলাকে চুক্তির মাধ্যমে সাময়িক সময়ের জন্যে যৌন সঙ্গী করা। যে কোন মুমিনা নারীর সাথে মুতা করলো সে ৭০ বার কা’বা ঘর জেয়ারত করার সমান সাওয়াব পায় ( নাউজুবিল্লাহ)। (মিসবাহুত তাহাজ্জুদ- আত তুরসি/২৫২ পৃ)।
১৭) শিয়াদের ইমাম খোমেনী বলেছে, মুতা ছাড়া যত রকমের নষ্টামি আছে তাতে কোনই দোষ নাই যদিও তা শিশুর সাথে হোক না কেন ( নাউজুবিল্লাহ)! -( তাহরিরুল অসিলা/২ঃ২২১)।
১৮) আল্লাহ শিয়া ইমামদের নুর থেকে ফেরেস্তা সৃষ্টি করেছেন। ৪০০০ ফেরেস্তা এ কারনে হুসাইন রাঃ’র কবরে কেয়ামত পর্যন্ত কান্না রত আছেন-( জামিউল ফাওয়ায়েদ-কারাস্কি/৩৩৪ পৃ)।
১৯) ফেরেস্তাদের মধ্যে গোলযোগ হলে আল্লাহ আলী রাঃ কে ফেরেস্তা পাঠিয়ে আসমানে তুলে নিয়ে যান মিমাংশা করার জন্যে-(এখতেসাস/২১৩)।

Sunday 23 September 2018

সালমান আল-আওদাহ

সালমান আল-আওদাহ, সফর আল-হাওয়ালি ও অন্যান্য তাকফিরি নেতাদের ব্যপারে শায়খ বিন বাজ ও কিবার আল-ওলামাদের বক্তব্যঃ
আব্দুল আজীজ ইবনে বাজ এর পক্ষে থেকে প্রিন্স নায়েফ (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর) কাছেঃ
“সালমান আল-আওদাহ ও সফর আল-হাওয়ালীর বেশকিছু বক্তব্য ও বই সবদিক থেকে বিবেচনা করার পর ওলামারা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদেরকে ২ জন আলেমের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। যদি তারা তাদের ভুলগুলো স্বীকার করে এবং পুনরায় এই ভুলগুলো না করার জন্য রাজি হয় তাহলে সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, এতোটুকুই যথেষ্ঠ হবে।
আর যদি তারা ভুল সংশোধন করতে রাজি না হয় তাহলে, তাদেরকে সমস্ত প্রকার লেকচার, সেমিনার, খুতবাহ দেওয়া, জনসাধারণের মাঝে ওয়াজ মাহফিল বা ক্যাসেট বিতরণ করতে নিষিদ্ধ করা হবে।
আল্লাহ এই ২ জনকে হেদায়েত করুন ও সঠিক আমলের দিকে পরিচালিত করুন।
৩/৪/১৪১৪ হিজরী।
কিবার আল-ওলামাদের সচিবালয়ঃ ৯৫১/২।
সালমান আল-আওদাহ ও সফর আল-হাওয়ালী শায়খ আলবানীকে মুর্জিয়া আকীদার বললে, শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমি রহিমাহুল্লাহকে এই ব্যপারে জিজ্ঞাসা করা হয়। উত্তরে শায়খ ইবনে উসাইমিন বলেন,
“শায়খ আলবানী একজন আলেম, মুহাদ্দিস ও ফকীহ। আমার দৃষ্টিতে তিনি একজন ফকীহর থেকে বড় মুহাদ্দিস। আমার জানা মতে শায়খ আলবানীর এমন কোন বক্তব্য নেই যা মুর্জিয়ারা বলে থাকে। যাই হোক, যেই সমস্ত লোকেরা মানুষকে #কাফের বলে ফতোয়া দিতে চাই তারাই শায়খ আলবানীকে মুর্জিয়া বলে থাকে এবং বিভিন্ন আজেবাজে নামে গালি দেয়। আমি শায়খ আলবানীর, আল্লাহ তাঁর প্রতি রহম করুন ইস্তিকামাহ, সঠিক আকীদাহ ও ইখলাসের স্বাক্ষ্য দিচ্ছি।”
তিনি আরো বলেন, “শায়খ আলবানী সালাফী আকীদাহ ও বিশুদ্ধ মানহাজের উপর প্রতিষ্ঠিত। কিছু মানুষ আল্লাহর বান্দাদেরকে এমন বিষয় নিয়ে কাফের ফতোয়া দিতে চায় যেই বিষয়ে আল্লাহ তাদেরকে কাফের বলেন নি। অতঃপর, যারা এইরকম অন্যায়ভাবে কাফের বলার বিরোধীতা করে তাঁদেরকে তারা মুর্জিয়া বলে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, জঘন্য অপবাদ এবং মিথ্যা রচনা। এই ধরণের কথা যেই বলে থাকুক না কেনো, তাদের কথা শুনবেনা।”
মাকাল্লামাত মা মাশায়িখ আদ-দাওয়া আস-সালাফিয়্যা, পর্ব-৪, ২০০১।

Saturday 22 September 2018

সৌদি আরব কি আলেম-উলামাদেরকে গ্রেফতার করে?


উত্তরঃ হ্যা করে, ভ্রষ্ট পথের দিকে আহবানকারী আলেমদেরকে গ্রেফতার করে।
যেমন সুলায়মান আল-উলওয়ান, সালমান আল-আওদাহ প্রমুখ।
=> প্রশ্নঃ সুলায়মান আল-উলওয়ান কে?
উত্তরঃ সুলায়মান আল-উলওয়ানঃ
(১) বিংশ শতাব্দীতে তাকফীর ও খুরুজের শীর্ষস্থানীয় নেতা।
(২) আত্মঘাতী বোমা হামলার উস্কানিদাতা।
(৩) সাউদী আরবের আলেমদেরকে "স্কলারস অফ রুলারস" বলে অপবাদ দানকারী।
(৪) উম্মাহকে আলিম-উলামা বাদ দিয়ে উসামা বিন লাদিনের মতো ব্যক্তিদের দিকে মুখাপেক্ষী হওয়ার জন্য আহবানকারী।
(৫) তাকফীর ও খুরুজের ব্যাপারে মুহাম্মদ আল-সুরুর, সফর আল-হাওয়ালী, সালমান আল-আওদাহর মতো চরমপন্থী বরং, তাদের চাইতেও নিকৃষ্ট।
(৬) সাউদী আরবের শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের জন্য আহবানকারী।
(৭) আরব বসন্তের সমর্থনকারী, আরব বসন্তের দুই পক্ষকে ইসলাম ও কুফরের যুদ্ধের সমতুল্য বলে তুলনাকারী।
=> সালমান আল-আওদাহ কে?
ইখোয়ানুল মুসলিমিন, আল-কায়েদাহ, আনোয়ার আল-আওলাকি, ইয়াসির ক্বাদী এমন আরো অনেকের তাত্ত্বিক গুরু। ডা. জাকির নায়েক সালমান আল-আওদাহর দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে আত্মঘাতী বোমা হামলা শর্ত সাপেক্ষে জায়েজ বলে তার লেকচারে উল্লেখ করেছিল।
ফেইসবুক জিহাদীরা কিছুদিন পরপরই মায়াকান্না আরম্ভ করে, সৌদি আরব prominent muslim scholar সালমান আল-আ'ওদাহকে গ্রেফতার করেছে!
সালমান আল-আওদাহ prominent scholar, তবে ইখোয়ানুল মুসলিমিন এবং তাদের brain child আল-কায়েদার অনুসারীদের কাছে। আলহা'মদুলিল্লাহ অনেক দেরীতে হলে সৌদি আরব তাদের ভুলগুলো বুঝতে পারছে এবং এই দলগুলোকে সন্ত্রাসী বলে ঘোষণা করেছে। সাধারণ মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করে যারা এই দলগুলোতে ভর্তি করে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।

Tuesday 28 August 2018

আয়াতুল কুরসী ও তাওহীদের প্রমাণাদি

শাইখ আব্দুর রায্‌যাক ইবন আব্দুল মুহসিন আল-বদর
অনুবাদ: আবদুর রাকীব (মাদানী)
সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
 সূচীপত্র
ক্রশিরোনামপৃষ্ঠা
ভূমিকা
আয়াতুল কুরসীর মাহাত্ম্য
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে আয়াতুল কুরসী পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন১৬

আয়াতুল কুরসী শয়তানের অনিষ্ট থেকে নিরাপদে রাখে

২৫
আয়াতুল কুরসী পড়ার উদ্দেশ্য২৯
আয়াতুল কুরসীর সংক্ষিপ্ত বিষয়াদি৩১
আয়াতটির শুরু কথা৩৯
কালেমার উদ্দেশ্য শুধু মুখে উচ্চারণ করা নয়৪১
একটি মহান মূল নীতি১০১
১০উপসংহার১০৯
১১আন্তরিক আহ্বান১১১

ভূমিকা
সমস্ত প্রশংসা সুউচ্চ সুমহান এবং একচ্ছত্র উচ্চতার অধিকারী আল্লাহর জন্য, যিনি মহত্ব, মহিমা এবং অহংকারের মালিক। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্য উপাস্য নেই। তাঁর কোনো শরীক নেই। পূর্ণাঙ্গ বিশেষণসমূহে তিনি একক এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, অবশ্যই মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা এবং রাসূল। তাঁর ওপর এবং তাঁর সহচরবৃন্দ ও পরিবার পরিজনের প্রতি বর্ষিত হউক দুরূদ-রহমত এবং শান্তি।
অতপর….
কুরআন মাজীদের সর্বমহান আয়াত ‘আয়াতুল কুরসী’ এবং তাতে উল্লিখিত মহৎ, স্পষ্ট এবং উজ্জ্বল দলীল প্রমাণসমূহের সম্পর্কে এটি একটি সংক্ষিপ্ত পুস্তিকা ও আলোচনা, যা মহত্ত্ব, বড়ত্ব এবং পূর্ণতার ব্যাপারে মহান আল্লাহর একত্বের প্রমাণ বহন করে এবং বর্ণনা করে যে, তিনি আল্লাহ পবিত্র। তিনি ছাড়া কোনো প্রতিপালক নেই। নেই কোনো সত্য উপাস্য। তাঁর নাম বরকতপূর্ণ। মহান তাঁর মহিমা। তিনি ছাড়া নেই কোনো মা‘বুদ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡحَيُّ ٱلۡقَيُّومُۚ لَا تَأۡخُذُهُۥ سِنَةٞ وَلَا نَوۡمٞۚ لَّهُۥ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِۗ مَن ذَا ٱلَّذِي يَشۡفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ يَعۡلَمُ مَا بَيۡنَ أَيۡدِيهِمۡ وَمَا خَلۡفَهُمۡۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيۡءٖ مِّنۡ عِلۡمِهِۦٓ إِلَّا بِمَا شَآءَۚ وَسِعَ كُرۡسِيُّهُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَۖ وَلَا يَ‍ُٔودُهُۥ حِفۡظُهُمَاۚ وَهُوَ ٱلۡعَلِيُّ ٱلۡعَظِيمُ ٢٥٥﴾ [البقرة: ٢٥٥]
“আল্লাহ, তিনি ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব ও সর্বদা রক্ষণাবেক্ষণকারী, তন্দ্রা ও ঘুম তাঁকে স্পর্শ করে না, আকাশসমূহে ও যমীনে যা কিছু আছে সবই তারই; এমন কে আছে যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? তাদের সামনের ও পিছনের সবকিছুর ব্যাপারে তিনি অবগত। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি আছে এবং এসবের সংরক্ষণে তাঁকে বিব্রত হতে হয় না এবং তিনি সমুন্নত মহীয়ান।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২৫৫]
[আয়াতুল কুরসীর মাহাত্ম্য]
এই বরকতপূর্ণ আয়াতটির বড় মাহাত্ম্য এবং উচ্চ মর্যাদা রয়েছে। কারণ মাহাত্ম্য, সম্মান এবং মর্যাদার বিবেচনায় কুরআন মাজীদের আয়াতসমূহের মধ্যে এটি সর্বমহান, সর্বোত্তম এবং সুউচ্চ আয়াত। এর চেয়ে সুমহান আয়াত কুরআনে আর নেই। হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াতটিকে সর্বোত্তম বলেছেন। ইমাম মুসলিম তাঁর স্বীয় সহীহ গ্রন্থে উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল তাঁকে বলেন,

Wednesday 15 August 2018

যারা শুধু সফর অবস্থায় শরীকানায় কুরবানী করা বৈধ মনে করেন তাদের দলীল নির্ভর প্রতিবাদ


আল হামদুলিল্লাহ, ওয়াস্ সালাতু ওয়াস্ সালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আম্মা বাদ:
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, কুরবানী করা একটি প্রমাণিত ইবাদত, যাকে অধিকাংশ উলামা সুন্নতে মুআক্কাদাহ (তাগিদী সুন্নত) বলেছেন এবং ক্ষমতাবানদের তা পরিত্যাগ করা অনুচিত মনে করেছেন। [আল্ মুগনী, ইবনু কুদামাহ, ১৩/৩৬০, ফিকহুস্ সুন্নাহ, সাইয়্যেদ সাবেক,৩/১৯৫]
তাই প্রতি বছর যখন কুরবানীর সময় উপস্থিত হয়, তখন মুসলিম সমাজে এই ইবাদতটি যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়। মুসলিম ভাইয়েরা তাদের সাধ্যানুযায়ী ছাগল, ভেড়া, গরু ও উট দ্বারা কুরবানী দিয়ে থাকেন। অনেকে গরু বা উটে শরীক হয়ে ৭ ভাগের এক-দুই ভাগেও কুরবানী দিয়ে থাকেন। কিন্তু এই সময় একটি প্রসঙ্গ প্রায় প্রায় উঠে আসে যে, এই রকম শরীকানায় কুরবানী দেওয়া বৈধ না অবৈধ? অনেকের ধারণা, মুকীম ব্যক্তি [মুসাফির নয় এমন ব্যক্তি] উট-গরুর সাত ভাগের কোন এক ভাগে অংশী হয়ে কুরবানী দিতে পারে না। কারণ স্বরূপ তারা মনে করেন, শরীকানায় কুরবানী দেয়াটা মুসাফির বা সফরের সাথে সম্পৃক্ত; মুকীমের সাথে নয়। তাই এই বিষয়টির শারয়ী সমাধানার্থে কিছু আলোকপাত করার মনস্থ করেছি। ওয়ামা তাওফীকী ইল্লা বিল্লাহ।
এ বিষয়ের দুটি পরিভাষা: আমরা শুরুতে কুরবানী সংক্রান্ত দুটি পরিভাষা জেনে নিব যা, আমাদের আলোচ্য বিষয়টি ভাল ভাবে জানতে সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ।
উযহিয়া: (আমাদের সমাজে যা কুরবানী নামে পরিচিত) সেই গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তুকে বলা হয়, যা কুরবানীর দিন সমূহে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে বাড়িতে যবাই করা হয়। [আল্ মুলাখ্খাস আল্ ফিকহী/২১৩]হাদ্ঈ: সেই চতুষ্পদ জন্তুকে বলা হয়, যা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কুরবানীর দিনগুলিতে হারামে (মক্কায়) যবাই করা হয় ‘তামাত্তু’ কিংবা ‘কিরান’ হজ্জ করার কারণে কিংবা হজ্জ বা উমরার কোন ওয়াজিব কাজ ছুটে যাওয়ার কারণে কিংবা ইহরাম অবস্থার নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করার কারণে। [ফিক্হ বিশ্বকোষ,৫/৭৪, শব্দ উয্হিয়্যাহ] যেহেতু এই পশুকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে হাদীয়া করা হয়, তাই তাকে হাদ্ঈ বলে। [আল্ মুলাখ্খাস আল ফিকহী, ড.ফাউযান,৩১৩]
উভয়ের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্যটি হচ্ছে, হাদ্ঈ হজ্জ বা উমরা পালনকারীর পক্ষ থেকে মক্কায় যবাই করা হয় এবং উযহিয়া হজ্জ বা উমরা পালনকারী নয়, এমন ব্যক্তির মাধ্যমে নিজ বাসস্থানে যবাই করা হয়।
হজ্জ ও উমরায় হাদ্ঈতে শরীক হওয়ার প্রমাণ: হজ্জ কিংবা উমরা করার সময় একটি হাদ্ঈতে সাত ব্যক্তি শরীক হয়ে কুরবানী দেয়ার একাধিক প্রমাণ সহীহ হাদীসে বিদ্যমান। আমরা এখানে তারই কয়েকটি উল্লেখ করবো ইনশাআল্লাহ।
عن جابرٍ، قال: خرجنا مع رسولِ الله صلى الله عليه و سلم مُهِلِّيْنِ بالحَجِّ فأمرنا رسول الله صلى الله عليه و سلم أن نشترِكَ في الإبل والبقرِ، كل سبعةٍ منا في بَدَنَةٍ. رواه مسلم
“জাবের (রাযি:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমরা নবী (সা:) এর সাথে হজ্জের উদ্দেশ্যে বের হলাম। অতঃপর তিনি (সা:) আমাদের উট ও গরুতে শরীক হওয়ার আদেশ দেন। আমাদের মধ্যে প্রত্যেক সাত জনকে একটি উটে”। [মুসলিম, অধ্যায়, হাজ্জ, অনুচ্ছেদ নং ৬২, হাদীস নং ৩৫১]
عن جابر بن عبد الله، قال: حججنا مع رسول الله صلى الله عليه و سلم، فنحرنا البعير عن سبعة، والبقرة عن سبعة. رواه مسلم
আবদুল্লার পুত্র জাবির থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে হজ্জ করলাম। অতঃপর সাত জনের পক্ষে একটি উট নহর করলাম এবং সাত জনের পক্ষে একটি গাভী। [মুসলিম, অধ্যায়, হাজ্জ, অনুচ্ছেদ নং৬২, হাদীস নং ৩৫১]
এ প্রসঙ্গে জাবের (রাযি:) কর্তৃক বর্ণিত আরো কয়েকটি হাদীস সহীহ মুসলিমের উপরোক্ত অনুচ্ছেদে দেখা যেতে পারে।

Thursday 9 August 2018

যিল হজ্জ মাসের চাঁদ দেখা গেলে তাকবীর, তাহলীল ও তাহমীদ পাঠ করার নিয়মঃ


ঈদুল আযহার তাকবীর পাঠ করার সময় দুই ভাগে বিভক্ত; এক . মুতলাক বা সর্বসময়। অর্থাৎ যিল হজ্জ মাসের চাঁদ উদিত হওয়ার পর থেকে আরম্ভ করে আইয়্যামে তাশরীক তথা ১৩ই যিল হজ্জের সূর্য্য ডুবা পর্যন্ত সব সময়। দুই. মুকায়য়্যিদ বা নির্দিষ্টযুক্ত সময়। আর এটা হল; শুধুমাত্র ফরজ নামাযের পর পর। অর্থাৎ আরাফার দিন ফজরের ফরয নামাযের পর থেকে আরম্ভ করে আইয়্যামে তাশরীক তথা ১৩ই যিল হজ্জের আসরের নামায পর্যন্ত প্রত্যেক নামাযের পরপর তা পাঠ করা। তাকবীরের শব্দাবলীঃ ১. আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার কাবীরা। ২. আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।( মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, ইরওয়াউল গালীল) ৩. আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ, আল্লাহু আকবার ওয়া আজাল, আল্লাহু আকবার আলা মা হাদানা। ( বায়হাকী ও ইরওয়াউল গালীল) ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ আব্দুল্লাহ বিন ওমার ও আবু হুরাইরা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা যিল হজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনে বাজারে গেলে তাকবীর পাঠ করতেন, ফলে (তাদের তাকবীর ধ্বনি শুনে) বাজারের মানুষেরাও তাদের সাথে তাকবীর পাঠ করতেন। তিনি আরও বলেনঃ ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু ঐ দিনগুলিতে মিনাতে তাঁর তাঁবুর ভিতর তাকবীর পাঠ করতেন, ফলে তাঁর তাকবীর ধ্বনি মসজিদের সবাই শুনতে পেতেন এবং তারাও তাকবীর পাঠ করতেন। আর তখন বাজরের সবাই এমনভাবে তাকবীর পাঠ করা আরম্ভ করতেন যে সমস্ত মিনা তাকবীর ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠতো। আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহুমা ঐ দিনগুলিতে মিনাতে সব সময় তাকবীর পাঠ করতেন। এমনকি ফরয নামাজের পরে, বিছানাতে, তাঁবুতে, আসনে এবং পথ চলার সময়ও তাকবীর পাঠ করতেন। তাকবীর পাঠ করার ক্ষেত্রে মুস্তাহাব নিয়ম হচ্ছে; পুরুষেরা তাকবীর পাঠ করবে উচ্চ আওয়াজে, যেমনটি ওমর, আব্দুল্লাহ বিন ওমর এবং আবু হুরাইরা রাযিয়াল্লাহু আনহুম করতেন। আর মহিলারা আস্তে আস্তে তথা নীচু আওয়াজে তাকবীর পাঠ করবে। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে মহিলারাও তাকবীর পাঠ করতেন। উম্মে আতিয়্যা রাযিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন যে, আমরা যেন ঋতুবতী মহিলাদেরকেও উভয় ঈদে ঈদগাহে নিয়ে যায়। তবে তারা নামাযের স্থান থেকে দূরে থাকবে (নামাযে শরীক হবে না ) । কিন্তু তারা অন্যান্য মঙ্গল ও মুসলিমদের দুআয় শরীক হবে। তারা পুরুষদের পিছনে অবস্থান করবে এবং পুরুষদের সাথে তারাও তাকবীর পাঠ করবে। (সহীহ বুখারী:৩২৪ ও ৯৭৪ এবং সহীহ মুসলিম: ৮৯০ নং পৃষ্ঠা)। লিখেছেনঃ শায়খ Mohammad Saiful Islam হাফিযাহুল্লাহ।

Tuesday 3 July 2018

সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াতের ফযীলত, আরবী, উচ্চারণ ও বাংলা অর্থঃ



সুরা বাক্বারার শেষ দুটি আয়াত (২৮৫+ ২৮৬,আমানার রাসূলু...থেকে শেষ পর্যন্ত) তেলাওয়াত করার অনেক উপকারের কথা সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। শেষ আয়াতে অত্যন্ত জরুরি কয়েকটি দুয়া রয়েছে। এসব দুয়া কবুল হওয়ার ওয়াদাও করা হয়েছে।

প্রিয় নবীজী (সাঃ) একদিন বললেনএই মাত্র আকাশের একটি দরজা খোলা হয়েছে। এর আগে কখনও এ দরজাটি খোলা হয়নিএ দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা অবতরণ করছেন। এর আগে তিনি কখনও পৃথিবীতে অবতরণ করেননি। এ ফেরেশতা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে সালাম করে বলেন,সুসংবাদ গ্রহণ করুন আপাদমস্তক দুটি নূরেরযা আপনার আগে কোন নবীকে দেয়া হয়নি
১. ফাতেহাতুন কিতাব অর্থাৎ সুরা ফাতেহা এবং
২. সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত।

Thursday 28 June 2018

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম এর ব্যাখ্যা

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم ِ এর ব্যাখ্যা

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া রাহিমাহুল্লাহ বলেন,

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِপরম করুণাময় এবং দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

ব্যাখ্যা: শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) আল্লাহ তাআলার কিতাবের অনুসরণ করে বিসমিল্লাহ দ্বারা পুস্তকটি লিখা শুরু করেছেন। সূরা তাওবা ব্যতীত প্রত্যেক সূরার শুরুতে বিসমিল্লাহ লিখা রয়েছে। বিসমিল্লাহ দ্বারা শুরু করার মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতেরও অনুসরণ হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন রাজা-বাদশাহদের কাছে পত্র লিখতেন তখন শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম লিখতেন।

بسم اللهবিসমিল্লাহ এর ব্যাখ্যা: এখানে با হরফে জারটি استعانة (ইস্তেআনা) তথা সাহায্য প্রার্থনার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। আভিধানিক অর্থে যে শব্দ কোনো ব্যক্তি, বস্ত্ত বা বিষয়ের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করে, তাকে ইসম বলা হয়। আরবী ব্যাকরণ বিদদের পরিভাষায় যে শব্দ কোন কালের সাথে যুক্ত না হয়েই সরাসরি নিজের অর্থ প্রকাশ করে, তাকে اسم (ইসম) বলা হয়।

جر (জার) এবং مجرور মাজরুর মিলে একটি উহ্য বিষয়ের সাথে متعلق (সম্পৃক্ত) হয়েছে। সেই উহ্য বিষয়টি ‘আল্লাহ’ শব্দের পরে হওয়া উচিত। যাতে করে এটি ‘হাসর’ তথা সীমিত অর্থ প্রদান করে। অর্থাৎ অর্থটি যেন এমন হয় যে, আমি আল্লাহর নামেই শুরু করছি, অন্য কারো নামে নয় এবং তাঁর কাছেই কাজটি সম্পাদনের ব্যাপারে সাহায্য চাচ্ছি, অন্য কারো কাছে নয়।

কেউ কেউ বলেছেনঃ এখানে উহ্য শব্দটি হচ্ছে فعل বা ক্রিয়া। অর্থাৎ بسم الله أقرأ أو أكتب ‘‘আমি আল্লাহর নামে পড়ছি বা লিখছি। এমনি যখন যে কাজ শুরু করা হবে, তখন সেই কাজের অর্থবোধক একটি فعل (ক্রিয়া) উহ্য থাকবে।

আবার কেউ কেউ মাসদার উহ্য মেনে থাকেন। অথাৎ بسم الله ابتدائي তথা আল্লাহ তাআলার নামেই আমার শুরু।

الله আল্লাহ এর ব্যাখ্যা

শব্দটি মহান পবিত্র সত্তার জন্য নির্দিষ্ট একটি নাম। এর অর্থ হচ্ছে, তিনিই সমস্ত মাখলুকের এবাদত ও উলুহীয়াতের একমাত্র অধিকারী ও হকদার। এই মহান নামটি أله يأله ألوهة থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে عُبِدَ يُعْبَدُ عبادة অর্থাৎ তার এবাদত ও দাসত্ব করা হয়েছে। সুতরাং আল্লাহই একমাত্র সত্য ইলাহ বা মাবুদ।

الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ আর্ রাহমান আর রাহীম
আল্লাহ্ তাআলার পবিত্র ও অতি সুন্দর নামসমূহের মধ্য হতে রাহমান ও রাহীম দু’টি সম্মানিত নাম। এই নাম দু’টি প্রমাণ করে, যেমন রহমত আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব ও মর্যাদার জন্য শোভনীয়, তিনি তেমন রহমত ও দয়ার গুণেই গুণান্বিত।
আল্লাহ্ তাআলার الرحمن‘রাহমান’ নামটি সমস্ত সৃষ্টির উপর তাঁর ব্যাপক রহমতের প্রমাণ বহন করে। আর الرحيم ‘রাহীম’ নামটির মধ্যে এমন রহমত রয়েছে, যা শুধু মুমিনদের জন্যই নির্দিষ্ট। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ﴾ وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًا ﴿ ‘‘এবং তিনি মুমিনদের প্রতি খুবই দয়াবান’’। (সূরা আহযাব: ৪৩)

শরহুল আকীদাহ আল-ওয়াসেতীয়া।
ডঃ সালেহ আল-ফাওযান হাফিযাহুল্লাহ।
অনুবাদ: শাইখ আব্দুল্লাহ শাহেদ আল-মাদানী।

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...