Sunday 26 November 2017

সউদী আরবে উচ্চশিক্ষা

উচ্চ শিক্ষার্থে সৌদি আরব এশিয়া ও বিশ্বের মধ্যে এক অন্যতম অবস্থানে রয়েছে । আরবী ও ইসলামী শিক্ষা অর্জনের জন্য সৌদি আরব গোটা পৃথিবীর মধ্যে শীর্ষ স্থানীয় দেশ।
বিজ্ঞান ও সাধারণ শিক্ষায়ও সৌদি আরব পিছিয়ে নেই । রাজধানী রিয়াদের কিং সাউদ বিশ্ববিদ্যালয়, দাম্মাম কিং ফাহাদ পেট্রোল SPamp মিনারেল বিশ্ববিদ্যালয়, জেদ্দা কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয় সহ বেশ অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব র‍্যাংকিং এ শীর্ষ সারির মধ্যে রয়েছে । বৃত্তিতে অধ্যয়ন রত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সুযোগ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে সৌদি আরবের অবস্থান শীর্ষে।
নারী শিক্ষার ক্ষেত্রেও সৌদি আরব পিছিয়ে নয় বরং সমগ্র পৃথিবীতে যেখানে নারীরা স্বাধীনতার নামে, আধুনিক শিক্ষার নামে নির্যাতিত, ধর্ষিত সেখানে সৌদি আরব নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে নিয়ে এসেছে বিপ্লব! নিশ্চিত করেছে নারীর নিরাপত্তা, আধুনিক উচ্চ শিক্ষা ও স্বাধীনতা।
সৌদি আরবেই রয়েছে শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ও পর্দার ব্যবস্থা, উন্নত ও আধুনিক সকল সুবিধা সম্পন্ন একটি পূর্ণাঙ্গ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় । যার নাম “প্রিন্সেস নূরা বিনতে আব্দুর রহমান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন”। এ ছাড়াও সৌদি আরবের প্রায় সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়েরই রয়েছে মহিলাদের জন্য পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন সম্পূর্ণ পৃথক ক্যাম্পাস ।ছাড়াও শিক্ষাঙ্গনের ‘সহশিক্ষা’ নামক সবচেয়ে বড় ব্যাধি হতেও প্রায় সৌদি আরব মুক্ত। 
১৩৯৫হি: মোতাবেক ১৯৭৫ সালে সৌদি আরবে উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয় । যার অধীনে প্রায় ২৫ টি সরকারি উঁচু মানের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে । এর মধ্যে শীর্ষ স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সৌদি সরকার সর্ব স্তরের বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য সহজে উঁচু মানের ও আধুনিক শিক্ষা গ্রহণের সুবিধার্থে বেশ কিছু লক্ষে বৃত্তি প্রদান করে আসছে । লক্ষ্যগুলো হল:
• ইসলামের সুমহান বিশ্ব শান্তির বাণীকে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষে একদল যোগ্য বাহিনী গড়ে তোলা ।
• আরবি ভাষা ও সংস্কৃতির সংস্পর্শে নিয়ে আসা ।
• একদল যোগ্য ক্যাডার বাহিনী গঠন করা, যারা প্রশাসনিক ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি অর্জনে সহায়তা করবে.. ইত্যাদি ।

Sunday 15 October 2017

হাদীস স্বহীহ ও যয়ীফ হওয়ার বাস্তবতাএবং যয়ীফ বর্ণনা থেকে সতর্কতাঃ


সালাফীদের এটি একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য যে, তারা আহলুল হাদীসের নিয়মানুযায়ী হাদীসকে স্বহীহ ও যয়ীফে বিভক্ত মনে করেন এবং নিজ আক্বীদা ও আমলের ক্ষেত্রে স্বহীহাইন ছাড়া অন্য সূত্রে বর্ণিত হাদীস পৌঁছালে তা যাঁচাই বাছাই এর আওতায় মনে করেন ; কারণ হাদীস স্বহীহ হয় আবার দূর্বলও হয়। তারা অজ্ঞতার পরিচয় দিয়ে এমন মন্তব্য করেন না যে, আবু হুরাইরা (রাযিঃ) এর হাদীস কি ভাবে দূর্বল হয়? ইবনুমাজাহ ও তিরিমিযীর হাদীস কি ভাবে যয়ীফ হয়? কিংবা এমন অজ্ঞতাপূর্ণ অযৌক্তিক মন্তব্য করেন না যে, আমরাই বড় আহলে হাদীস; কারণ আমরা স্বহীহ হাদীস মানি, হাসান হাদীসও মানি, মুরসাল হাদীসও মানি, মুনক্বাত্বা ও মুআল্লাক হাদীসও মানি। এমন মন্তব্য তাঁরাই করতে পারে, যারা হাদীসের তাস্বহীহ ও তাযয়ীফের জ্ঞান থেকে অজ্ঞ কিংবা মুহাদ্দিসগণের সুক্ষ্ম, গভীর এবং অক্লান্ত প্রচেষ্টার বিনিময়ে অর্জিত স্বহীহ হাদীসের ভান্ডারকে হীন দৃষ্টিতে দেখে এবং তা যয়ীফ বর্ণনার সাথে মিশ্রিত করে সুকৌশলে যয়ীফ ও দূর্বল হাদীসকে মুসলিম উম্মার মাঝে ছাড়িয়ে দিতে চায়। যারা জ্ঞাত বা অজ্ঞতা স্বরূপ এমন করে তাদের জন্য ইমাম মুসলিমের এই মুকাদ্দামা থেকে জ্ঞান নেওয়া উচিৎ এবং স্বহীহ ও যয়ীফ বর্ণনার মাঝে পার্থক্য করা আর স্বহীহ বর্ণনাকে আক্বীদা ও আমলের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং দূর্বল বর্ণনাকে প্রত্যাখ্যান করার নীতি শেখা উচিৎ।
ইমাম মুসলিম স্বীয় সনদে তাবেয়ী ইবনু সীরীন থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেনঃ
“إنّ هذا العلمَ دينٌ، فانظروا عمن تأخذون دينكم”
“এই জ্ঞান (হাদীসের সূত্রের জ্ঞান) হচ্ছে দ্বীন, তাই তোমারা চিন্তা করো কার থেকে দ্বীন গ্রহণ করছো? [মুকাদ্দামা স্বহীহ মুসলিম, ইমাম নবভীর শারহ সহ ১/৪৪]
অর্থাৎ যার তার থেকে হাদীস বর্ণনা করা যাবে না; বরং জেনে বুঝে সৎ বর্ণনাকারী কর্তৃক হাদীস বর্ণনা করা কাম্য। সৎ হলে গ্রহণীয় নচেৎ নয়।
ইমাম মালেক (রাহেঃ) বলেনঃ চার প্রকার লোক থেকে ইলম গ্রহণ অবৈধঃ বোকা যার বোকামি স্পষ্ট, নিজ প্রবৃত্তির দিকে আহব্বায়ক, যে আপসের কথা-বার্তায় মিথ্যা বলে যদিও সে হাদীসের ব্যাপারে মিথ্যুক না হয় এবং এমন সম্মানিত সৎ পরহেযগার ব্যক্তি যে নিজে বুঝে না যা সে বলে।
ইবনু সীরীনের বরাতে ইমাম মুলিম আরও বলেনঃ “ইতিপূর্বে লোকেরা হাদীসের সনদ/সূত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন না কিন্তু যখন ফিতনা প্রকাশ পেল, তখন তারা বলতেনঃ তোমরা তোমাদের হাদীসের সূত্রের বর্ণনা দাও (কার থেকে শুনেছো) অতঃপর দেখা হত, বর্ণনাকারী যদি সে আহলুস সুন্নার অন্তর্ভুক্ত হত, তাহলে তার হাদীস নেওয়া হত। আর যদি সে বিদআতপন্থী হত, তাহলে তার হাদীস গ্রহণ করা হত না।” [ভূমিকা স্বহীহ মুসলিম ১/৪৪]
বুঝা গেল, হাদীসের সনদ যাঁচাই-বাছাই এর আওতায় এবং আহলুল বিদআর হাদীস প্রত্যাখ্যাত।

Saturday 7 October 2017

পুরুষের মাঝে কর্মরত নারীর প্রতি আহ্বান


Image result for hijab in office
বোন! তুমি কি পুরুষের সঙ্গে কাজ করছ?
বোন! আমি মর্মাহত, আমি ব্যথিত এবং খুবই দুঃখিত আমি। না, আমার কোন কারণে নয়, শুধু তোমার জন্য এবং শুধু তোমার কল্যাণের কথা চিন্তা করেই। তুমি কাজ করছ! তাও আবার পুরুষের সঙ্গে এবং তাদের মাঝে থেকেই। কারণ, এটা তোমার দীনদারি খতম করে দিবে, তোমার চরিত্রের ওপর কলঙ্কের ছাপ এঁটে দিবে। এটা আমার মায়াকান্না নয়, আমার কথাগুলো তুমি নাক ছিট্কে ফেল দিও না এবং মনে কর না আমি খুব বাড়াবাড়ি করছি, বরং আমার কাছে এর প্রমাণ রয়েছে। আছে এর যুক্তি সংগত কারণ। মনে রেখো, ইসলামের সম্পর্ক ছাড়া তোমার সঙ্গে আমার আর কোন সম্পর্কই নেই। এবং এর সঙ্গে আমার কোন ইহজাগতিক স্বার্থও সংশ্লিষ্ট নয়। বরং এর দ্বারা আমার সময় ও শ্রম ব্যয় হচ্ছে, মেধার ক্ষয় হচ্ছে। আশা করছি আমার এ কথাগুলোর মূল্য তুমি দিবে। আমি যা বলছি তুমি তা বারবার চিন্তা করবে। তবে অবশ্যই তুমি আমাকে তোমার একান্ত হিতাকাঙ্ক্ষী জ্ঞান করবে।

জেনে রখো, পুরুষের সঙ্গে যে কোন সহাবস্থানে নারী সঙ্কুচিত ও নির্যাতিত থাকে। যদি না তার সঙ্গে তার মাহরাম থাকে। কারণ, পুরুষরা সাধারণত নারীর দিকে প্রবৃত্তি ও কামভাব নিয়েই তাকায়। এর বিপরীত যে বলবে সে মিথ্যুক। কারণ, আল্লাহ তাআলা পুরুষের মধ্যে নারীর প্রতি মোহের সৃষ্টি করেছেন এবং নারীর মধ্যে দিয়েছেন পুরুষের প্রতি গভীর আগ্রহ। অধিকন্তু নারীর মধ্যে রয়েছে দুর্বলতা ও কোমলতা। ফলে নারী-পুরুষের সহাবস্থানে শয়তান স্নায়ুতন্ত্র ও অনুভূতিগুলোকে প্ররোচিত করার মোক্ষম সময় মনে করে। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে নারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত বেশী হয়। কারণ, সৃষ্টিগতভাবে নারীরা পুরুষের থেকে ভিন্ন। সহাবস্থানের ফলে নারীরা যে ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়, পুরুষরা সে ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয় না। যেমন নারীদের অনেক সময় গর্ভ সঞ্চার হয়, কখনো গর্ভপাত করতে গিয়ে মৃত্যু মুখে পতিত হয় নারী। এসব কারণেই শরিয়ত নারী-পুরুষের সহাবস্থান নিষিদ্ধ করেছে। আমি এখানে নারী-পুরুষ সহাবস্থান নিষিদ্ধ করার কিছু দলিল উল্লেখ করছি। 
আল্লাহ তাআলা বলেন,
{قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ  {النور:30.
মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টি সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে। (নুর : ৩০)
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা পুরুষের দৃষ্টি অবনত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। যেহেতু নারী-পুরুষ পাশাপাশি কর্মরত থাকলে দৃষ্টি অবনত রাখা সম্ভব নয়, তাই শরিয়ত তাদের সহাবস্থান নিষিদ্ধ করেছে।
নারীর পুরোটাই সতর বা পর্দার বস্তু। তার দিকে দৃষ্টি দেয়া হারাম।
রাসূল সা. বলেন, 
হে আলী, বারবার নজর দিবে না, প্রথম নজর তোমার কিন্তু দ্বিতীয় নজর তোমার নয়। (তিরমিজি) 
অর্থাৎ হঠাৎ প্রথম যে দৃষ্টি নারীর প্রতি পড়ে যায় তাতে কোন গুনা নেই, কিন্তু দ্বিতীয়বার স্বেচ্ছায় দৃষ্টি দেয়া গুনা বা অপরাধ।
হাদিসে এসেছে যে, 
চোখের যেনা দৃষ্টি দেয়া, কানের যেনা শ্রবণ করা, মুখের যেনা কথা বলা, হাতের যেনা স্পর্শ করা, পায়ের যেনা পথ চলা। (মুসলিম)
চোখের যেনা দৃষ্টি। এর মাধ্যমে ব্যক্তি নারীর সৌন্দর্য ও রূপ উপভোগ করে। পরবর্তীতে তার সঙ্গে অন্তরের ঘনিষ্ঠতা সৃষ্টি হয়। আর এ পথ ধরেই শুরু হয় অশ্লীলতা। এতে সন্দেহ নেই যে, নারী-পুরুষের সহাবস্থানে দৃষ্টি হেফাজত করা কোন ক্রমেই সম্ভব নয়।

Tuesday 26 September 2017

Learn to Read and Write Arabic Quran



Learn_to_Read_and_Write_Arabic_Quran_Software

উৎসঃ https://islamerpath.wordpress.com

Qur’an Auto Reciter


Qur’an Auto Reciter


Qur’an Auto Reciter
     Advantage:
     Read Qur’an many Languages
     Translations-English, Urdu, Farsi, Spanish & also,
     Transliteration-English
     Automatic Recitation, Add more Recitation Files
     Automatic & Manually Prayer Times & Azan
     With Noble Qur’an big window


উৎসঃ https://islamerpath.wordpress.com

Monday 25 September 2017

আশুরা ও তার বিধি-বিধানঃ



আলহামদু লিল্লাহ। ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহ। আম্মা বাদ:

    আশুরা কি ?

আশুরা শব্দটি আরবী‘’আশেরা’ শব্দ থেকে রূপান্তরিত। আর‘আশেরা হচ্ছে ‘আশারা’ শব্দের বিশেষণ। যার, সাধারণ বাংলা অর্থ হচ্ছে দশ, দশক, দশজন বা দশটি (১০)। অর্থাৎ ‘আশারা একটি আরবী সংখ্যার নাম যার বাংলা অর্থ দশ। দেখা যাচ্ছে, আরবী সংখ্যা ‘আশারা’ (১০) থেকে ‘আশেরা’ (দশম)। আর ত থেকে ‘আশুরা’ শব্দটি নির্গত হয়েছে যার অর্থ, মুহররম মাসের ১০ তারিখ। [লিসানুল আরব, ৪/৫৬৯]

এই শাব্দিক পরিবর্তনের ফলে অতিরঞ্জন এবং সম্মানের অর্থ পাওয়া যায়। [ফাত্ হুল্ বারী, ৪/৩১১ ]

    আশুরার দিন নির্ণয়:

আশুরার দিনটি মুহররম মাসের নবম দিন না দশম দিন? এ বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে অধিকাংশ উলামার মতে মহররম মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। কারণ শব্দের নামকরণ ও ব্যুৎপত্তি,  দশ তারিখকেই সমর্থন করে। [ফাতহুল বারী, ৪/৩১১]

তাছাড়া আশুরা বিষয় হাদীসগুলি দ্বারা দশ তারিখ বুঝা যায়; নয় তারিখ নয়।

    ইসলাম পূর্বে আশুরার রোযা:

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ الله عنها ، قالت : كَانَتْ قُرَيْشٌ تَصُومُ عَاشُورَاءَ فَي الجَاهِلِيَّةِ ، وَ كَانَ رسول الله صلى الله عليه وسلم يَصُومُهُ ، فَلمّا هَاجَرَ إلى المدينةِ ، صَامَهُ و أمَرَ بصَوْمِهِ ، فَلمّا فُرِضَ شَهْرُ رَمَضَانَ قال : مَنْ شَاءَ صَامَهُ و مَنْ شَاءَ تَرَكَهُ  )رواه مسلم)

অর্থ: আয়েশা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: কুরাইশ গোত্র জাহেলী যুগে আশুরার রোযা রাখতো এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও রোযা রাখতেন। অতঃপর তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদীনায় হিজরত করলেন, তখন তিনি নিজে রোযা রাখলেন এবং অন্যদের রোযা রাখার আদেশ করলেন। তার পর যখন রমযান মাসের রোযা ফরয করা হল, তখন তিনি বললেন: “ইচ্ছা হলে রোযা রাখো না হলে রাখো না”। [মুসলিম, সিয়াম, নং ২৬৩২]

    ইসলামে আশুরার রোযা:

ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদীনায় হিজরত করলেন, তখন ঈহুদী সম্প্রদায়কে আশুরার দিনে রোযা পালন করতে দেখলেন। তাই তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন:

Saturday 16 September 2017

দ্বীনের দাওয়াত সঠিক হলে দল সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ নাই...



নবীগন দাওয়াত দিয়েছেন, তাঁদের দাওয়াত আসমান থেকে সার্টিফাই করা হত। সাহাবিগন দাওয়াত দিয়েছেন, সে দাওয়াত রাসুল সঃ সার্টিফাই করতেন। রাসুল সঃ এর ওফাতের পর আসমানি তদারকি বন্ধ হয়ে যায়।
একারনেই উমার রাঃ এর মত জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবী হয়েও নিজ কর্ম কাণ্ডের গ্রহন যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। মরন শয্যায় দু’চোখের অশ্রু ফেলে কাঁদেন। ইবনু আব্বাস রাঃ তাঁর ক্রন্দন দেখে বলেন, ইবনুল খাত্তাব আপনি কেন কাদেন! আপনাকে কি আল্লাহর রাসুল জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে যান নি?
উত্তরে উমার রাঃ বলেন, হয়তো তা ছিল শর্ত সাপেক্ষ; কিন্তু আমি উমার তা পুরুনে হয়ত ব্যর্থ হয়েছি! তিনি আরো বলেন, আমার মনে হয়, এই মুহূর্তে যদি আল্লাহ বলেন সকলেই জান্নাতে যাবে কিন্তু একজন যাবেনা, তাহলে মনে হবে আমিই সেই ব্যক্তি তাই কান্না করছি!
এই ছিল জান্নাতের সংবাদ প্রাপ্ত সাহাবী উমর রাঃ’র মন বৃত্তি। এই ছিল তাঁর মত উঁচু শ্রেণীর সাহাবীর গুনাহ’র ভয়াবহতা নিয়ে সংশয়! এই ছিল আমল কবুল হওয়া না হওয়া নিয়ে তাঁর ভীতির নমুনা!!
অথচ আমরা এই জামানার ইসলামের কর্মীদের জবানে একি শুনি? একি দেখি তাদের আচরনে? তারা মরার জন্যে ফাসির কাষ্ঠে যাওয়ার মুহূর্তেও নিজ কর্ম পদ্ধতি ও দর্শনের উপর অনড় মনভাবের ঘোষণা দেন। দুই আঙ্গুল দিয়ে ভি সাইন দেখিয়ে বলে যান তাদের ব্যবসা সফল হয়েছে!
আমরা জানি এমন না করে উমরের মত করলে না দল সৃষ্টি করা যাবে, না দলের ভিতরে কাউকে ধরে রাখা যাবে। উমরের মত ইমানদার ও ইসলামের কর্মী হলে কোন দল সৃষ্টি হবে না তা নিশ্চিত। যেমন তাঁর কোন দল ছিলনা। কোন সাহাবীরই কোন দল সৃষ্টি হয়নাই।
এমন কাজ করে তারা যেমন নিজে গুনাহ মুক্তির সুজোগ থেকে বঞ্চিত হন। তেমনি লক্ষ্য লক্ষ্য অনুসারীদেরকে তাদের ভুলের উপর অনড় থাকার শিক্ষা দিয়ে যান।
আল্লাহ বলেন, “তারা কেয়ামতে নিজের গুনাহ ত বহন করবেই, তার উপর আরো বহন করবে তাদের সকলের গুনাহ যাদেরকে তারা বিভ্রান্ত করেছে-( নাহল/২৪)। দীনি ব্যবসায় পুরাই বিফল! সময় থাকতে সাহাবীদের পদাংক অনুসরণ করবেন বলে আমরা আশা করি।

Courtesy Shaykh SK Muzammelul Hoque

আলোকিত শান্তির বাণী-

আবু বকর সিদ্দিক

পরীক্ষা থেকে সুরক্ষিত থেকে কৃতজ্ঞ থাকা আমার কাছে বেশি পছন্দের

“পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে সবর করার চেয়ে পরীক্ষা থেকে সুরক্ষিত থেকে কৃতজ্ঞ হওয়া আমার কাছে বেশি পছন্দের।”
— আবু বাকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)
[ইবনে বাত্তাল, ড বিলাল ফিলিপস – সূরা বুরুজ তাফসির]

মৃত্যুকে খুঁজো

“মৃত্যুকে খুঁজো (অর্থাৎ, সাহসী হও) তাহলে তোমাদেরকে জীবন দান করা হবে।”
— আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)
[লা তাহযান – ড আইয আল কারনি, পৃ ১৫০]

অপরের কষ্ট দূর করার জন্য কষ্ট করার মাঝে রয়েছে মহত্বের প্রকৃত নির্যাস

“অপরের কষ্ট দূর করার জন্য কষ্ট করার মাঝে রয়েছে মহত্বের প্রকৃত নির্যাস।”
— আবু বকর সিদ্দীক (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

সেই ব্যক্তিই অভিশপ্ত যে মরে যায় অথচ তার খারাপ কাজগুলো পৃথিবীতে রয়ে যায়

“সেই ব্যক্তিই অভিশপ্ত যে মরে যায় অথচ তার খারাপ কাজগুলো পৃথিবীতে রয়ে যায়।”
— আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

Tuesday 12 September 2017

অমর বাণী



. ইমাম মালেক রাহেমাহুল্লাহ (৯৩-১৭৯ হি.)-এর নিকটে বিশ বছর অধ্যয়নকারী ছাত্র আব্দুল্লাহ ইবনু ওয়াহাব (১২৫-১৯৬ হি./৭৪৩-৮১২ খৃ.) বলেন,نَذَرتُ أَنِّي كُلَّمَا اغْتَبْتُ إِنْسَاناً أَنْ أَصُوْمَ يَوْماً فَأَجْهَدَنِي فَكُنْتُ أَغْتَابُ وَأَصُوْمُ، فَنَوَيْتُ أَنِّي كُلَمَّا اغْتَبتُ إِنْسَاناً أَنْ أَتَصَدَّقَ بِدِرْهَمٍ فَمِنْ حُبِّ الدَّرَاهِمِ تَرَكتُ الغِيْبَةَ ‘একবার আমি শপথ করলাম যে, কারো গীবত করলেই আমি একদিন ছিয়াম রাখব। কিন্তু এটা আমাকে খুব কষ্টে ফেলল। এরপরেও আমি গীবত করতাম ও ছিয়াম রাখতাম। অতঃপর আমি নিয়ত করলাম যে কারো গীবত করলেই একটি করে দিরহাম ছাদাক্বা করব। (এবার এতে কাজ হ’ল) ফলে দিরহামের ভালোবাসায় আমি গীবত ছেড়ে দিলাম (যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৮/১৫)।
. ফুযায়েল বিন ইয়ায (১০৭-১৮৭ হি.) বলেন,عَلَيْكَ بِطُرُقِ الْهُدَى وَلاَ يَضُرُّكَ قِلَّةُ السَّالِكِيْنَ، وَإِيَّاكَ وَطُرُقِ الضَّلاَلَةِ وَلاَ تَغْتَرَّ بِكَثْرَةِ الْهَالِكِيْنَ- ‘তুমি হেদায়াতের রাস্তাসমূহের পথিক হও। সঠিক পথের অনুসারীদের সংখ্যাল্পতা তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর তুমি ভ্রষ্টতার রাস্তাসমূহ হ’তে বেঁচে থাক এবং ধ্বংসের পথের যাত্রীদের আধিক্য দেখে প্রতারিত হয়ো না’ (নববী, মানাসিকুল হাজ্জ ২/৬৮-৬৯; আলবানী, তাহযীরুস সাজেদ ১০৫-১০৭ পৃ.)
. ইবনুল জাওযী (৫০৮-৫৯৭ হি.) বলেন,المِسْكِينُ كُلُّ المِسْكِيْنِ مَنْ ضَاعَ عُمْرَهُ فِي عِلْمٍ لَمْ يَعْمَلْ بِهِ، فَفَاتَتْهُ لَذَّاتُ الدُّنْياَ وَخَيْرَاتُ الآخِرَةِ، فَقَدِمَ مُفْلِسًا عَلىَ قُوَّةِ الحُجَّةِ عَلَيْهِ ‘সব মিসকীনের বড় মিসকীন সেই, যে তার সারাটা জীবন ব্যয় করল জ্ঞানের অন্বেষণে। অথচ সে অনুযায়ী আমল করল না। ফলে সে দুনিয়াবী সুখ থেকে বঞ্চিত হ’ল এবং আখেরাতের কল্যাণ সমূহ থেকেও বঞ্চিত হ’ল। অতঃপর নিজের বিরুদ্ধে শক্তিশালী সাক্ষ্যের বোঝা নিয়ে সে নিঃস্ব অবস্থায় হাশরের ময়দানে উপস্থিত হ’ল’ (ইবনুল জাওযী, ছায়দুল খাত্বের ১৫৯ পৃ.)।

Sunday 10 September 2017

গোটা মুসলিম উম্মাহ শত্রুদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে, এই আক্রমন হতে রক্ষা পাওয়ার উপায় কি?



উত্তর দিয়েছেনঃ ইমাম আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। তার রাসুলের উপর শান্তি ও দয়া বর্ষিত হোক।
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মুসলিম উম্মাহ তার শত্রুদের দ্বারা বিপদগ্রস্থ হচ্ছে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, “আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব, যাতে আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারি এবং জেনে নিতে পারি তোমাদের মধ্যে কে মুজাহিদ ও কে দৃঢ়পদে রয়েছে?” সুরা মুহা’ম্মদঃ ৩১।
মুসলিম উম্মাহ অবশ্যই তার শত্রুদের দ্বারা বিপদগ্রস্থ হবে, এবং তাকে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, “তোমাদেরকে প্রাণ ও সম্পদ উভয় ক্ষেত্রে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। এছাড়া আহলে কিতাব ও মুশরিকদের হতে বহু কষ্টদায়ক কথা শুনতে হবে। এ অবস্হায় তোমরা যদি ধৈ্য্য ধারণ করো এবং আল্লাহভীরুতার নীতি অনুসরণ করো, তাহলে তা হবে খুব বড় ধরণের দুঃসাহসিক কাজ।” আলে ইমরানঃ ১৮৬।
তিনি আরো বলেছেন, “যদি তোমরা ধৈর্য্য ধারণ করো এবং আল্লাহকে ভয় করো তাহলে তাদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র তোমাদের কোন ক্ষতিই করতে পারবেনা।তারা যা করছে আল্লাহ তা সবই জানেন।” আলে ইমরানঃ ১২০।
অতএব উম্মাহর কর্তব্য হল ধৈর্যধারণ করা, আত্নসমালোচনা করা, দ্বীনকে শক্তভাবে আকড়ে ধরা, শত্রু কি বলছে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করা, আল্লাহর কিতাব ও রাসুল (স) এর সুন্নতকে অনুসরণ করা, কথা, কাজ, আকিদা (বিশ্বাস) দিয়ে সুদৃঢ় ভুমিকা গ্রহন করা, এবং আল্লাহর শরীয়তকে তার বান্দাদের মধ্যে বাস্তবায়ন করা। সবগুলা ইসলামি দেশের জন্য এ মুহূর্তে এটাই কর্তব্য। যদি কথা, কাজ, আকিদা (বিশ্বাস) দিয়ে গোটা মুসলিম উম্মাহ সত্যিকার অর্থে আল্লাহর দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত হয় তবে শত্রুদের হৈচৈ ও ষড়যন্ত্র কোন ক্ষতিই করতে পারবেনা।
এ ব্যাপারে মহান আল্লাহর বাণী পূ্বেই উল্লেখ করেছি, “যদি তোমরা ধৈর্যধারণ করো এবং আল্লাহকে ভয় করো, তাহলে তাদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবেনা, তারা যা করছে আল্লাহ তা সবই জানেন।” আলে ইমরানঃ ১২০।
এ ব্যপারে আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল তার কিতাবে আরো বলেন, “তোমরা ধৈর্যধারণ করো, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথেই আছেন।” আনফালঃ ৪৬।
"তোমরা যদি আল্লাহকে সাহায্য করো, তিনিও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন, তোমাদের পা-কে দৃঢভাবে প্রতিষ্টিত রাখবেন।" মুহাম্মদঃ ৭।

Tuesday 8 August 2017

শিয়াদের ঈমান-আকীদা


শিয়া ইসনা আশারিয়াদের আকীদা- বিশ্বাসের সংখিপ্ত পরিচয় নিম্ন তুলে দেওয়া হোল। সাথে আরো দেওয়া হোল ইমান ও ইসলাম ভঙ্গের কারন গুলিও। যেন পাঠক তার নিজ বিবেচনায় শিয়াদের নাস্তিক ও মুরতাদ হওয়ার বিষয়ে সঠিক ধারনা লাভ করতে পারেন।
১) আল্লাহ আলী রাঃ’র কাছে অহী নাজেল করেন কিন্তু জিব্রাইল ভুলে সেই অহী নিয়ে আসে মুহাম্মাদ সঃ এর কাছে- (আল মুনিয়া ওয়াল আমাল/৩০ পৃ)।
২) আল কোরআন সম্পূর্ণ নয়। আসল কোরআন আসমানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তখন যখন সাহাবারা মুরতাদ হয়ে গেছে-( আত-তানবিহ অররাদ্দ-আল মুলিতি/২৫ পৃ)।
৩) কোরআনের অনেক আয়াত আয়াত নয় তা বাজে কথা ( নাউজুবিল্ললাহ)-( আল-অসীকা/২২১ পৃ)।
৪) রাসুল সঃ নিজেই আংশিক শিয়া দর্শন প্রচার করে গেছেন। বাকিটা হজরত আলী প্রচার করেছেন-( এহকাকুল হক- তাসাত্তুরী/২-৮৮ পৃ)।
৫) শিয়া ইমামরা আল্লাহ ও তার সৃষ্টির মাঝখানে মধ্যস্থতা কারী-( বেহারুল আনোয়ার/৯৯ঃ২৩)।
৬) শিয়া ইমামদের কবর জিয়ারত কা’বায় হজ্জ করার চেয়ে উত্তম-( সাওয়াবুল আ’মাল/১২১ পৃ)।
৭) যে হুসাইন রাঃ’র কবর জিয়ারত করে সে যেন আল্লাহর আরশ জেয়ারত করে-( আল-মাজার আল-মুফিদ/৫১ পৃ)।
৮) হুসাইন রাঃ’র কবরের মাটি সকল রোগের ঔসুধ-( আল-আমালি/৯৩ঃ ৩১৮)।
৯) আল্লাহ ও শিয়া ইমামদের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই-নাউজুবিল্লাহ!-( মাসাবিহুল আনোয়ার/২ঃ ৩৯৭ পৃ)।
১০) নক্ষত্র ও তারকা রাজি মানুষের সুখ-দুঃখ ও জীবন-মরনের উপর হস্তক্ষেপ করে-( রাওদা মিনাল কাফি/৮ঃ ২১০৩ পৃ)।
১১) আলী রাঃ গায়েব জানেন-( মের’আতুল আনোয়ার/ ৫৯)। তিনি দুনিয়া ও আখেরাতের বিষয়ে হস্থক্ষেপ করেন-( ওসুল আল-কাফি/১ঃ৩০৮)। তিনি মৃত কে জেন্দা করেন-( ওসুল আল-কাফি/১ঃ৩৪৭)।
১২) যে বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ জমীনে আসেন সে কাফের-( ওসুল আল-কাফি/১ঃ৯০ পৃ)।
১৩) কালেমা শাহাদাতের সাথে আরো বলতে হবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আলী রাঃ আল্লাহর অলী। তারা এমন কালেমা নব জাতকের কানে বলে এবং মৃত ব্যক্তির শয্যায় শিয়রে উচ্চারন করে-( ফুরুউল কাফি/৩ঃ৮২)।
১৪) যারা আবু বকর, ওমর, ওসমান,‌ মুয়া্বিয়া, আয়েশা ও হাফসা রাঃ কে প্রত্যেক নামাজের পর গালি দিবে তারা আল্লাহকে সব চেয়ে বড় উপহার প্রদান করিবে-( ফুরুউল কাফি/ ৩ঃ২২৪)।
১৫) শিয়া ইমামরা অন্যের জন্যে জান্নাতে প্রবেশ নিশ্চিত করতে পারে-( রিজালুল কাশি/৫ঃ৪৯০)।
১৬) মুতা বিয়ে না করলে তার ইমান পূর্ণতা লাভ করেনা। আর মুতা বিয়ে হোল অলি ও সাক্ষী ছাড়াই কোন মহিলাকে চুক্তির মাধ্যমে সাময়িক সময়ের জন্যে যৌন সঙ্গী করা। যে কোন মুমিনা নারীর সাথে মুতা করলো সে ৭০ বার কা’বা ঘর জেয়ারত করার সমান সাওয়াব পায় ( নাউজুবিল্লাহ)।-( মিসবাহুত তাহাজ্জুদ- আত তুরসি/২৫২ পৃ)।
১৭) ইমাম খোমেনী বলেছে, মুতা ছাড়া যত রকমের নষ্টামি আছে তাতে কোনই দোষ নাই যদিও তা শিশুর সাথে হোক না কেন ( নাউজুবিল্লাহ)! -( তাহরিরুল অসিলা/২ঃ২২১)।
১৮) আল্লাহ শিয়া ইমামদের নুর থেকে ফেরেস্তা সৃষ্টি করেছেন। ৪০০০ ফেরেস্তা এ কারনে হুসাইন রাঃ’র কবরে কেয়ামত পর্যন্ত কান্না রত আছেন-( জামিউল ফাওয়ায়েদ-কারাস্কি/৩৩৪ পৃ)।
১৯) ফেরেস্তাদের মধ্যে গোলযোগ হলে আল্লাহ আলী রাঃ কে ফেরেস্তা পাঠিয়ে আসমানে তুলে নিয়ে যান মিমাংশা করার জন্যে-(এখতেসাস/২১৩)।

Monday 24 July 2017

বর্তমান যুগে কেনো সর্বপ্রথম সঠিক ‪আক্বীদার দিকে দাওয়াত দিতে হবে?


- লিখেছেন শায়খ আব্দুর রাক্বীব মাদানী হা’ফিজাহুল্লহ।
দ্বাইয়ী, খাফজী দাওয়াহ সেন্টার, সউদী আরব।

(১) কারণ ইসলাম ঈমান (আক্বীদা) ও আমলের নাম। ইসলামের পন্ডিতগণ আক্বীদাকে বলেন উসূল (মূল) আর আমলকে (ফিকহকে) বলেন ফুরূ (গৌণ)। তাই মূল বিষয়ের দাওয়াত ছেড়ে গৌণ বিষয়ের দিকে দাওয়াত দেওয়া অজ্ঞতা এবং নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর দাওয়াতের বিপরীত।
(২) কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে মক্কার মুশরিকরা আল্লাহকে বিশ্বাসী করতো, কিন্তু তা সত্ত্বেও নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে মুসলিম বলে স্বীকার করেন নি। কিন্তু আজ বিশ্বের বহু লোক এই কারণে নিজেকে মুসলিম দাবী করছে বা লোকেরা তাকে মুসলিম ভাবছে, কারণ তারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে বলে দাবী করে।
(৩) কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে যখন কুরআন অবতীর্ণ হচ্ছিল এবং তাতে যখন আল্লাহর বিভিন্ন গুণাবলী উল্লেখ করা হচ্ছিল (যেমনঃ ‘আল্লাহ আরশে সমুন্নত’, ‘আল্লাহ দুই হাতে আদম আঃ কে সৃষ্টি করেছে’) তখন তাঁর সমুন্নত হওয়া ও তাঁর দুই হাত থাকা এই ভাবে অন্যান্য গুণাবলী তারা অস্বীকার করতেন না, আর না অপব্যাখ্যা দিতেন। কিন্তু আজকের সমাজের অনেক মুসলিমরা আল্লাহর আসমা ও সিফাতকে (নাম এবং গুণাবলীকে) অস্বীকার করে আর অনেকে সেইগুলোর অপব্যাখ্যা দেয়।
(৪) কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগের লোকেরা নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কে একজন মানুষ মনে করতেন ও আল্লাহর বান্দা মনে করতেন। কিন্তু বর্তমান যুগের নামধারী মুসলিমরা নবী ও আল্লাহর মধ্যে পার্থক্য করতে চায় না। আর অনেকে বলেঃ তিনি সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর নূরের তৈরি (নাযুবিল্লাহি মিন যালিক)।
(৫) কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবীগণ মনে করতেন নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম মারা গেছেন কিন্তু বর্তমান নামধারী অনেক মুসলিমরা বলেঃ তিনি সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কবরে দুনিয়ার মতই জীবিত, তাকে মরা বলা হারাম এবং বেয়াদবী!

কবরের জীবন, কবরের ফেতনা, কবরের আজাব থেকে বাঁচার উপায় (পর্ব-২)



কবরে আযাব হওয়ার কারণঃ
কবরের আযাব হওয়ার কারণ হচ্ছে দুনিয়ার জীবনে কবীরাহ গুনাহ বা বড়বড় পাপকাজে লিপ্ত থাকা। কবীরাহ গুনাহতে লিপ্ত থাকা এবং তোওবা না করে, সংশোধন না করেই মৃত্যুবরণ করা। হাদীসে বিশেষ ২টি কারণ উল্লেখ করা আছে, যেই দুইটি পাপকে মানুষ ছোট মনে করে কিন্তু অনেকেই এই ২টি পাপ কাজের কারণে আযাব দেওয়া হবে।
১. চোগলখুরী করা (এক জনের গীবত আরেকজনের কাছে বলে মানুষের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ ও হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করা)।
২. পেশাবের অপবিত্রতা থেকে সাবধান না থাকা।
একদা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনা বা মক্কার কোন একটি বাগানের পাশদিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তথায় তিনি দু’জন এমন মানুষের আওয়াজ শুনতে পেলেন যাদেরকে কবরে শাস্তি দেয়া হচ্ছিল। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাদেরকে আযাব দেয়া হচ্ছে অথচ বড় কোন অপরাধের কারণে আযাব দেয়া হচ্ছে না। অতঃপর তিনি বললেনঃ তাদের একজন পেশাব করার সময় আড়াল করতোনা। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি একজনের কথা অন্যজনের কাছে লাগাত। বুখারীঃ কিতাবুল ওযু অধ্যায়।
কাতাদা (রঃ) বলেনঃ আমাদেরকে বলা হয়েছে কবরের আযাবের এক তৃতীয়াংশ হবে গীবতের কারণে, এক তৃতীয়াংশ পেশাব থেকে সাবধান না থাকার কারণে এবং এক তৃতীয়াংশ #চুগলখোরীর কারণে। যেহেতু গীবতকারী এবং চুগলখোর মিথ্যা কথাও বলে থাকে তাই সে #মিথ্যাবাদীর শাস্তিও ভোগ করবে।
কবরের আযাব থেকে বাঁচার উপায়ঃ
১. কবরের আযাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া ও দুয়া করাঃ
কবররে আযাব থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে নিয়মিত দুয়া করতে হবে, বিশেষ করা দুয়া মাসুরাতে বেশি বেশি দুয়া করতে হব। যেই দুয়া মাসুরা পড়তে হবেঃ
দুয়া মাসুরা অর্থ হচ্ছে হাদীসে বর্ণিত দুয়া যেইগুলো রাসুল সাঃ করতেন। আমাদের দেশের মানুষ মনে করে, দুয়া মাসুরা শুধু একটাই (আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসান যুলমান কাসিরাও...), এটা ভুল। নামাযে সালাম ফিরানোর আগে পড়তে হয় এমন অনেক সুন্দর সুন্দর দুয়া আছে সহীহ হাদীসে। কারণ, ফরয নামাযে আত্তাহিয়্যাতু ও দুরুদ পড়ার পরে, সালাম ফেরানোর আগে দুয়া বেশি কবুল করা হয়। দুয়া মাসুরা এক বা একের অধিক, যত ইচ্ছা পড়া যায়। এইগুলো মুখস্থ করে আমল করা উচিত।

Sunday 23 July 2017

কবরের জীবন, কবরের ফেতনা, কবরের আজাব থেকে বাঁচার উপায় (পর্ব-১)



পরকালের অনন্তকালের জীবনের জন্য আমাদের প্রথম স্টেশান হচ্ছে কবর। শুধুমাত্র যাদের উপর কেয়ামত কায়েম হবে তারা ছাড়া, আর সকলকেই এই কবরের মধ্য দিয়ে পরকালের জীবন শুরু করবে। প্রথম এই স্টেশানটা যিনি নিরাপদে পার করতে পারবে, মোটামুটি আশা করা যায় - রোয কেয়ামতের দিন, হাশর ও মীযানের সময়ও তিনি নিরাপদে পার করতে পারবেন। তাই আমাদের সকলের চেষ্টা করা উচিত, কবরের জীবনে যাতে করে শান্তিতে থাকতে পারি তার জন্য আত্মনিয়োগ করা।
কবরের জীবনের ফেতনাঃ
প্রতিটি আদম সন্তান, সে কাফের হোক, ঈমানদার বা মুনাফেক হোক – সকলকেই কবরে ৩টি প্রশ্নের মুখোমুখী হতে হবে।
১. ‘মার-রব্বুকা’ - তোমার রব্ব কে?
২. ‘ওয়ামা দ্বীনুকা’ – তোমার দ্বীন (ধর্ম/জীবন ব্যবস্থা) কি?
৩. এই ব্যক্তি কে (রাসুল সাঃ এর ব্যপারে প্রশ্ন করা হবে)?
একে কবরের #ফেতনা বলা হয়। শুধুমাত্র আল্লাহর প্রতি সঠিক ঈমান রেখে এবং ক্বুরান ও সুন্নাহ অনুযায়ী নেক আমল করে, নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত যথাযথভাবে পালন করে, দুনিয়াতে আল্লাহকে ভয় করে যারা আল্লাহর অনুগত থাকবেন, শুধুমাত্র তারাই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারবেন, চাই সে আরবী জানুক আর না জানুক। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে সেখানে তারা কেয়ামত পর্যন্ত সুখের ঘুমানো, জান্নাতের বিছানা ইত্যাদি নেয়ামতের মাঝে থাকবে।
আর কাফের, মুশরেক, মুনাফেক বা নামকাওয়াস্তে মুসলমান, বেনামাযী, কবর-মাযারপূজারী, হালাল-হারাম সম্পর্কে বেপরোয়া, ফাসেক, পাপাচারী, পাপিষ্ঠ – এরা দুনিয়ার জীবনে যতই নিজেকে মুসলমান দাবী করুক না কেনো, তারা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কস্মিন কালেও দিতে পারবেনা। তারা হায় আফসোস! আমি জানিনা, আমি জানিনা বলে আহাজারি করবে এবং কঠিন শাস্তি ভোগ করতে থাকবে।
কবরের আযাবঃ
দুনিয়ার জীবনে পাপাচারে লিপ্ত ব্যক্তিদের যারা তোওবা করবেনা, আল্লাহর রহমত অর্জন করতে ব্যর্থ হবে, তাদের জাহান্নামের শাস্তি কবরের জীবনেই শুরু হয়ে যাবে। এই শাস্তি চলবে কেয়ামত পর্যন্ত, আর জাহান্নামের শাস্তিতো আরো কঠিন ও দীর্ঘস্থায়ী। এইজন্য রাসুল সাঃ আমাদেরকে বারবার কবরের আযাব থেকে বাঁচার জন্য, আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার জন্য উপদেশ দিয়েছেন। তিনি নিজেও নামাযের ভেতরে ও বাইরে কবরের আযাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন। কবরের আযাবের ভয়াবহতা চিন্তা করে সাইয়্যিদিনা উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) কবরের কথা স্মরণ করলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তেন, এমনকি তাঁর কাপড় ভিজে যেত চোখের পানিতে।
কবরের শাস্তি হিসেবে যা থাকবে তার উদাহরণঃ

Thursday 13 July 2017

১০টি ইসলাম ধ্বংসকারী বিষয়ঃ


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য নিবেদিত। দরূদ ও সালাম অবতীর্ণ হোক সেই মহান নবীর উপর যার পরে আর কোন নবী নেই। আরো নাযিল হোক তাঁর পরিবার বর্গ, সহচর বৃন্দ এবং তাঁর হেদায়াতের অনুসারীদের উপর।
অতঃপর হে মুসলিম ভাই!
এ কথা জেনে নিন যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সকল বান্দার উপর ইসলামে প্রবেশ করা, উহা আঁকড়ে ধরা এবং উহার পরিপন্থী বিষয় থেকে সতর্ক থাকা ফরজ করেছেন। আর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সে দিকে আহবান করার জন্যই প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ্‌ এই মর্মে ঘোষণা দিয়ে বলেন, যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণ করবে সে হেদায়াত প্রাপ্ত হবে পক্ষান্তরে যে তাঁর থেকে বিমুখ হবে সে পথভ্রষ্ট হবে। তিনি বহু আয়াতে মুরতাদ হওয়ার মাধ্যম, শির্ক ও কুফরীর সকল প্রকার হতে সতর্ক করেছেন।
বিদ্যানগণ মুরতাদের বিধি-বিধান অধ্যায়ে এই মর্মে উল্লেখ করেছেন যে, একজন মুসলমান ব্যক্তির রক্ত ও ধন-সম্পদ হালাল কারী বিভিন্ন ইসলাম বিধ্বংসী কার্য কলাপ সম্পদনের মাধ্যমে মুরতাদ ও ইসলাম হতে বহিস্কার হয়ে যায়।
ইসলাম বিধ্বংসী কাজ হল সর্ব মোট ১০টি যা শাইখুল ইসলাম ইমাম মুহাম্মাদ বিন সুলায়মান আত তামীমী (রহিমাহু্মুল্লাহ) ও অন্যান্য বিদ্বানগণ উল্লেখ করেছেন। আমরা ঐ সকল ইসলাম বিধ্বংসী কাজ গুলো নিন্মে সংক্ষিপ্ত ভাবে কিঞ্চিত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ সহ আপনার জন্য উল্লেখ করছি। যাতে আপনি উক্ত বিষয়গুলো থেকে সতর্ক থেকে অপরকে সতর্ক করতে পারেন।
ইসলাম বিধ্বংশী কাজ গুলো নিন্মরূপঃ
.
প্রথমঃ আল্লাহর ইবাদতে শির্ক করা। আল্লাহ বলেনঃ
“নিশ্চয় আল্লাহ তার সাথে শির্ক করাকে ক্ষমা করেন না। উহা ব্যতিরেকে উহার নিন্ম পর্যায়ের পাপ সবই তিনি যাকে ইচছা ক্ষমা করেন”। [নিসা : ১১৬]
আল্লাহ তাআলা আরও বলেনঃ
“নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি শির্ক করবে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম, আর এই সমস্ত যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী থাকবে না”। [সূরা মায়েদাহ্‌ : ৭২]
জ্ঞাতব্যঃ এই শির্কের অন্তর্ভূক্ত হল: মৃতকে আহবান করা, তাদের নিকট ফরিয়াদ করা, তাদের জন্য নযর-নেয়াজ মানা ও পশু যবেহ করা। যেমন কোন ব্যক্তি জ্বিনের জন্য বা কোন কবেরর জন্য যবেহ করল ইত্যাদি।

আল্লাহ কি সবকিছু করতে পারেন?



উত্তরঃ হ্যা, আল্লাহ সবকিছু করতে পারেন।
প্রথম দলীল -
وَكَانُوا أَشَدَّ مِنْهُمْ قُوَّةً ۚ وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُعْجِزَهُ مِنْ شَيْءٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ ۚ إِنَّهُ كَانَ عَلِيمًا قَدِيرًا
বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ এমন নন যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর কোন কিছু তাঁকে ব্যর্থ করতে পারে। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। সুরা ফাতিরঃ ৪৪।
English Translation : Allah is not such that anything in the heavens or in the earth escapes Him. Verily, He is All Knowing, All Omnipotent. Sura Fatir: 44.
ডা. মুহসিন খান قَدِيرًا এর অর্থ করেছেন,
Omnipotent- having unlimited power, able to anything.
.
দ্বিতীয় দলীল ২ -
وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
বাংলা অনুবাদঃ আর তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। সুরা আল-মুলকঃ ১।
English Translation : and He is Able to do all things. Sura al-Mulk: 1.
__________________________
(২) আল্লাহ কি সন্তান জন্ম দিতে পারেন?
উত্তরঃ সন্তান জন্ম দেওয়া আল্লাহর কাজ নয়। অথবা বলতে হবে, সন্তান জন্ম দেওয়া আল্লাহর জন্য শোভনীয় নয়।
দলীলঃ
مَا كَانَ لِلَّهِ أَنْ يَتَّخِذَ مِنْ وَلَدٍ
বাংলা অনুবাদঃ সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর কাজ নয়। সুরা মারইয়ামঃ ৩৫।
English Translation : It befits not (the Majesty of) Allah that He should beget a son." Sura Maryam: 35.
__________________________
(৩) কিন্তু কখনো এই কথা বলা যাবে না যে, “আল্লাহ সন্তান জন্ম দিতে পারেন না”, অথবা, “আল্লাহ অমুক কাজ করতে পারেন না”। এইভাবে বললে আল্লাহর প্রতি ‘অক্ষমতা’ আরোপ করা হয়, অথচ আল্লাহ স্বয়ং নিজে বলছেন, তিনি সব কিছু করতে সক্ষম। “আল্লাহ সবকিছু করতে পারেন না”, “আল্লাহ অমুক কাজ করতে পারেন না” বললে আল্লাহর সব কিছু করার ক্ষমতাকে অস্বীকার করে তাঁর প্রতি অক্ষমতার মিথ্যা আরোপ করা হয়।
সন্তান জন্ম দেওয়া, নিজেকে ধ্বংস করা, আল্লাহর মতো দ্বিতীয় আল্লাহ সৃষ্টি করা (নাউযুবিল্লাহি মিং যালিক) - এই ধরণের কাজগুলো ‘ঘোড়ার ডিমের’ মতোই অসম্ভব ও অস্তিত্বহীন কাজ। এই ধরণের কথা ও কাজ আল্লাহর সুমহান নাম, গুণাবলী ও মর্যাদার সাথে শোভনীয় নয়। কোন কাফের, মুশরেক, নাস্তিক বা মূর্খ ব্যক্তি যদি এই ধরণের প্রশ্ন করে উত্তর বলতে বলতে হবে, “এই কাজ আল্লাহর সুমহান গুণাবলী ও মর্যাদার সাথে শোভনীয় নয়।”
__________________________
(৪) শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তায়মিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, “আহলে সুন্নাহর মত অনুযায়ী সবকিছুর উপরেই আল্লাহ তাআ’লার ক্ষমতা রয়েছে, এবং যা বাস্তব তার সবকিছুই এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। আর এমন সব জিনিস যা সহজাতরূপেই অসম্ভব, যেমন এমন কিছু যা একই সাথে অস্তিত্ববান আবার অস্তিত্বহীন, যার মধ্যে কোন বাস্তবতা নেই এবং যার অস্তিত্ব কল্পনাও করা যায়না, পূর্ববর্তী আলেমদের ইজমা (ঐক্যমত) অনুযায়ী এমন কিছুকে কোন “জিনিস” হিসেবে অবিহিত করা যায়না। এর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে “(আল্লাহ কি) তাঁর অনুরূপ দ্বিতীয় কাউকে সৃষ্টি করতে পারেন” ইত্যাদি এমন ধরণে কথা।” মিনহাজ আস-সুন্নাহঃ ২/২৯৪।

Sunday 9 July 2017

কেয়ামতের দিন হিসাব-নিকাশের পর যা যা হবেঃ



(১) জাহান্নামীরা জাহান্নামে যাবে,
(২) জান্নাতীরা আল্লাহ তাআ’লাকে দেখতে পারবে,
(৩) জান্নাতীরা পুলসিরাত পার হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে,
(৪) নবী-রাসুল ও নেককার জান্নাতী ব্যক্তিরা ঈমানদার, কিন্তু পাপের কারনে জাহান্নামে গেছে, এমন লোকদের জন্য সুপারিশ করবেন,
(৫) অন্তরে অণু পরিমান ঈমান আছে, তাদেরকেও শাস্তি দেওয়ার পরে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে,
(৬) আল্লাহ্‌ তাঁর দয়া ও অনুগ্রহে কিছু লোকদেরকে হাতের অঞ্জলি দিয়ে জাহান্নাম থেকে বের করে আনবেন. . .
এরপরেও যারা জাহান্নামে বাকি থাকবে, তাদের মধ্য থেকে আর কেউ কোনদিন জাহান্নাম থেকে বের হতে পারবেনা। তারা হচ্ছে যারা কাফের, বেঈমান, মুশরেক ও মুনাফেক অবস্থায় মৃত্যবরণ করেছিলো এমন লোকেরা। আল্লাহ্‌ আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচান, আমিন। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমঃ (৩৫১)-এ বর্ণিত পুরো ঘটনাটা বর্ণনা করা হলো।
.
আবু সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যুগে কয়েকজন সাহাবী তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কিয়ামতের দিন আমরা কি আমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যা। তিনি আরো বললেন, দুপুরবেলা মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে তোমাদের কোন কষ্ট হয় কি? সাহাবীদের সবাই বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! না, তা কষ্ট হয় না। নবীজী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ঠিক তেমনি কিয়ামতের দিন তোমাদের প্রতিপালককে দেখতে তোমাদের জন্যে কোনই বাঁধা থাকবে না। সেদিন এক ঘোষনাকারী ঘোষণা দিবে, “তোমরা যে যার উপাসনা করতে, সে আজ তার মাবূদের অনুসরণ করুক।” তখন আল্লাহ ব্যতীত যারা অন্য দেব-দেবী ও বেদীর উপাসনা করত, তাদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না; সকলেই জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। নেককার লোক কিংবা পাপী, যারা আল্লাহ তাআ’লার ইবাদত করত, তারাই কেবল বাকী থাকবে এবং আহলে কিতাবীদের মধ্যে যারা দেব-দেবী ও বেদীর উপাসক ছিল না, তারাও বাকি থাকবে। এরপর ইয়াহুদীদেরকে ডেকে জিজ্ঞেস করা হবে! তোমরা কার ইবাদত করতে? তারা বলবে, আমরা আল্লাহর পুত্র উযায়ের-এর উপাসনা করতাম। তাদেরকে বলা হবে, তোমরা মিথ্যা বলছ। (কারণ), আল্লাহ কোন স্ত্রী বা সন্তান গ্রহণ করেননি। তোমরা কি চাও? তারা বলবে, হে আল্লাহ! আমাদের খুবই পানির পিপাসা পেয়েছে। আমাদের তৃষ্ণা নিবারণ করুন। তাদের এই দুয়া শুনে তাদেরকে ইঙ্গিত করে মরীচিকাময় জাহান্নামের দিকে জমায়েত করা হবে। সেই জাহান্নামের (আগুনের) এক অংশ অপর অংশকে খেয়ে ফেলতে থাকবে। ইয়াহুদীরা সেই (মরীচিকাময় জাহান্নামের মাঝে পানির আশায়) ঝাঁপিয়ে পড়বে। এরপর খৃষ্টানদেরকে ডাকা হবে আর বলা হবে, তোমরা কার ইবাদত করতে? তারা বলবে, আমরা আল্লাহর পুত্র (ঈসা) মসীহ-এর উপাসনা করতাম। তাদেরকে বলা হবে, তোমরা মিথ্যা বলছ। (কারণ), আল্লাহ কোন স্ত্রী বা সন্তান গ্রহণ করেন নি। তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হরে, এখন তোমরা কি চাও? তারা বলবে, হে আমাদের রব! আমাদের দারুন তৃষ্ণা পেয়েছে, আমাদের তৃষ্ণা নিবারণ করুন। তখন তাদেরকেও পানির ঘাটে যাবার ইঙ্গিত করে জাহান্নামের দিকে জমায়েত করা হবে। তাদের কাছে একে মরীচিকার মত (পানির নদী বা ঝর্ণার মতো) মনে হবে। সেই জাহান্নামের (আগুনের) এক অংশ অপর অংশকে খেয়ে ফেলতে থাকবে। খ্রীস্টানরা তখন জাহান্নামে ঝাপিয়ে পড়তে থাকবে। শেষে ঈমানদার হোক কিংবা গুনাহগার, এক আল্লাহর উপাসনাকারী ব্যতীত আর কেউ (হাশরের ময়দানে) অবশিষ্ট থাকবে না। তখন আল্লাহ তাদের কাছে আসবেন। বলবেন, সবাই তাদের নিজ নিজ উপাস্যের অনুসরণ করে চলে গেছে, আর তোমরা কার জন্যে অপেক্ষা করছ? তারা বলবে, হে আমাদের প্রভু! যেখানে আমরা বেশি মুখাপেক্ষী ছিলাম, সেই দুনিয়াতে আমরা অপরাপর মানুষ থেকে আলাদা থেকেছি এবং তাদের সঙ্গী হইনি। তখন আল্লাহ

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...