Wednesday 23 December 2020

কুরআনের_আয়াত_সংখ্যা_কত?


আমার একজন ভক্ত বললেন, 'হুজুর! কুরআনের আয়াত-সংখ্যা কত?
আপনি আপনার তফসীর 'আহসানুল বায়ান’এর ভূমিকায় লিখেছেন, 'প্রসিদ্ধ মতানুসারে মোট আয়াত …
See More
Like
Comment
Share
, 'হুজুর! কুরআনের আয়াত-সংখ্যা কত?
আমার একজন ভক্ত বললেন, আপনি আপনার তফসীর 'আহসানুল বায়ান’এর ভূমিকায় লিখেছেন, 'প্রসিদ্ধ মতানুসারে মোট আয়াত ৬৬৬৬টি।’
কোন কোন শায়খ বলছেন, 'এটা মারাত্মক ভুল।’
তাহলে নির্ভুল সঠিক কোনটি?
আসলে ভাই দেখুন, কুরআনের আয়াত-সংখ্যা সঠিকভাবে কত, তা নবী ﷺ কর্তৃক প্রমাণিত নয়। সুতরাং এ মর্মে সাহাবা, তাবেঈন ও উলামাদের ইজতিহাদ কাজ করেছে এবং তার ফলে এর সংখ্যায় মতভেদ রয়ে গেছে। তাই কেউই কারো মতকে 'মারাত্মক ভুল’ অথবা 'নির্ভুল সঠিক’ বলতে পারবে না। যেহেতু এটা ইজতিহাদী ব্যাপার।
অনেকে বলেন, 'আরে মশাই কুরআনের কোন সূরায় কত আয়াত লেখাই তো আছে। সুতরাং গুনে যোগ ক’রে দেখে নিলেই তো হয়।’ তিনি ব্যাপারটাকে এতই সহজ মনে করেন। কিন্তু সে গণনাটাই যে সঠিক, তার কোন নিশ্চয়তা নেই---এ কথা তিনি জানেন না।
সূরা ফাতিহার ব্যাপারটাই দেখুন না, ৭টি আয়াতের কোনটি প্রথম এবং কীভাবে ৭টি আয়াত হয়, তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
কেন এ মতবিরোধ?
আয়াতের শেষ অংশ কোনটি বা আয়াতটি কোথায় গিয়ে শেষ হয়েছে, সে ব্যাপারে মতভেদের কারণে।
আমরা জানি, বাক্য শেষ হলে পূর্ণচ্ছেদ বা দাঁড়ি ব্যবহার হয়। কিন্তু বাক্যটা আসলে কোথায় শেষ হল, তা নিয়ে মতভেদ থাকার ফলে আয়াত গণনায় মতভেদ স্বাভাবিক আকার ধারণ করেছে।
হাদীস-সংখ্যা নিয়েও অনেকে এই শ্রেণীর প্রশ্ন তুলে থাকেন। রেফারেন্সের সময়ে অনেক ক্ষেত্রে হাদীস-নম্বর মিল খায় না। যার ফলে অনেকে ভুল মনে করে থাকেন। অথচ হাদীস গণনাতেও ভুল হওয়া স্বাভাবিক। কেবল বুখারীর হাদীস-সংখ্যাটাই ধরুন, এক মুহাক্কিকের গণনা অন্য মুহাক্কিকের গণনার সাথে মিলে না। এক প্রকাশনীর ছাপা অন্য প্রকাশনীর ছাপার সংখ্যার সাথে মিল দেখতে পাওয়া যায় না। সেই কারণেই বুখারীর হাদীস-সংখ্যা নিয়েও মতভেদ রয়েছে। কেউ গুনেছেন ৭৫৬৩, কেউ ৭১২৪ এবং আরো কমবেশি সংখ্যা গুনেছেন অনেকেই। আর এটা অস্বাভাবিক নয়। বিধায় কেউ অন্যেরটা জন্য বলতে পারবেন না যে, এটা 'মারাত্মক ভুল’।
কুরআনের মোট আয়াত-সংখ্যা কত, তা উক্তরূপ মতভেদের কারণেই কম-বেশি হয়েছে। কোনটাই নিশ্চিত সঠিক নয়।
এ ব্যাপারে সবাই একমত যে, কুরআনের আয়াত-সংখ্যা ৬০০০ এর কম নয়। কিন্তু তার উপরের সংখ্যা নিয়ে রয়ে গেছে মতভেদ। মূল কুরআনের মধ্যে নয়, বরং তার বাক্যাবলীর শেষাংশ নিয়ে মতভেদ হয়েছে।
সুতরাং কেউ গণনা করেছেন, ৬২০৪
কেউ গণনা করেছেন, ৬২১৪
কেউ গণনা করেছেন, ৬২১৯
কেউ গণনা করেছেন, ৬২২৫
কেউ গণনা করেছেন, ৬২৩৬
কেউ এর সাথে ১১২টি 'বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ কে যোগ ক’রে বলেছেন ৬৩৪৮ আয়াত।
অর্থাৎ, এখানে সূরা ফাতিহার শুরুর 'বিসমিল্লাহ’ কে তার প্রথম আয়াত গণনা করেছেন এবং যেহেতু সূরা তাওবার শুরুতে 'বিসমিল্লাহ’ নেই, সেই হিসাব গণ্য করেছেন।
কুফীদের নিকট আয়াত-সংখ্যা ৬২৩৬ এবং অকুফীদের নিকট ৬৬৬৬টি।
যেহেতু মনে রাখা সহজ বলে চট ক’রে লোকে শেষেরটাই বলে থাকে। আর এ জন্যই আমি লিখেছি 'প্রসিদ্ধ মতে’, 'সঠিক মতে’ নয়।
তবে বলতে পারেন, সঊদী আরবের ছাপাটা যখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে, তখন সেটাই গ্রহণ করা উত্তম। অবশ্যই এ কথা মেনে নিতে কোন দোষ নেই।
বিনীত---------
আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী

Sunday 20 December 2020

যারা বিবাহ বন্ধনে উদ্যোগ নিচ্ছেন-

 যারা বিবাহ বন্ধনে উদ্যোগ নিচ্ছেন, তাঁদের এক আরব বেদুঈনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ মনে রাখা প্রয়োজন। তিনি তাঁর বিবাহযোগ্য পুত্রকে সম্বোধন ক’রে বলেছিলেন,

يا بني لا تنكح المنانه ولا الأنانه ولا الحنانه ولا الحداقه ولا البراقه ولا الشداقه ولا عشبه الدار ولا كية القفا
অর্থাৎ, বেটা! তুমি এই (৮ প্রকার) মেয়েকে তোমার স্ত্রীরূপে নির্বাচন করো না।
১। মান্নানাহ (উপকার বা অনুগ্রহ প্রচারকারিণী)
এমন মেয়ে, স্বামীর প্রতি সে বা তার বাপের বাড়ির লোক কোন উপকার বা অনুগ্রহ করলে কথায় কথায় খোঁটা মারে। স্বামীর পরিবারের বা বাইরের লোকের কাছে বলে বা গেয়ে বেড়ায়। 'এটা আমার বাপের ঘরের। এটা আমার ভাই দিয়েছিল বলেই তো? মা দিয়েছিল বলে ঠান্ডা পানি খেতে পাচ্ছ।’ ইত্যাদি
২। আন্নানাহ (কাতর)
এমন মেয়েকে আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় 'আবছুদে’ বলে। মানে যে মেয়ে অল্প কিছুতে 'আঃ-উঃ, বাবারে-মারে’ করতে থাকে। সামান্য আঘাতে কাতর হয়ে যায়। সামান্য কষ্টে কাঁদতে লাগে (ছিঁছ-কাঁদুনে)। অধিকাংশ সময়ে অসুস্থ না থাকলেও অসুস্থতার ভান করে। কোনও কাজে ফাঁকি দেওয়ার জন্য মাথা-ব্যথা বা অন্য কোন অসুখের ওজর পেশ করে। আজ মাথা ধরেছে, কাল পেটে বাজছে পরশু আরো কিছু বলে অজুহাত তৈরি করে।
বাংলা প্রবাদে বলা হয়,
'জারে বউ জার-কাতুরে বর্ষায় বউয়ের হাজা,
কখনো দেখলাম না আমি বউ রইল তাজা।’
৩। হান্নানাহ (অন্যাসক্তা)
যে মেয়ের আসক্তি নিজের স্বামীর সাথে সীমাবদ্ধ থাকে না। তবে সে পরকীয়া করে না। আসলে সে বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা হওয়ার পর বিবাহিতা হয়। অতঃপর কথায় কথায় সে পূর্ব স্বামীর প্রতি আসক্তি প্রকাশ করে। যেন বর্তমান স্বামীর তুলনায় সেই ভালো ছিল, সে কথা বুঝাতে চায়। নগণ্য বঞ্চনায় অথবা সামান্য ত্রুটির ক্ষেত্রে সে তাকে স্মরণ করে। পূর্বের ভালোবাসা সে ভুলতে পারে না। যার ফলে তুলনা করতে গিয়ে সে বর্তমান স্বামীর ভালোবাসা থেকে বঞ্চিতা হয়।
অথবা তার গর্ভজাত পূর্ব স্বামীর সন্তান থাকে এবং সে তাদের প্রতি সর্বদা নিজ মনকে ফেলে রাখে। এমনকি সুখের সময়েও সে তাদের দুঃখের কথা তুলে বর্তমান সুখের সময়কে নষ্ট ক’রে ফেলে।
অথবা সর্বদা নিজ পরিবারের প্রতি আসক্তি প্রকাশ ক’রে থাকে। ক্ষণে ক্ষণে বা ঘন ঘন মায়ের বাড়ি যেতে চায়। আর তার ফলে স্বামীর প্রতি কর্তব্যে অবহেলা ক’রে বসে।

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...