Thursday 14 March 2019

কষ্টিপাথরে ব্রাদারহুড, ইখুয়ানুল মুসলিমীনের (জামাতী ইসলামী) ব্যাপারে সালাফী আলেমদের ফতোয়া। পর্ব-০৭

এই পর্বে থাকছে ইমাম ‘উসাইমীন, ইমাম মুহাম্মাদ আল-বান্না, ‘আল্লামাহ ‘আব্দুল ‘আযীয রাজিহী এবং ‘আল্লামাহ হাসান আল-বান্না’র ফাতাওয়া।Image may contain: text


ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ)
·
শাইখ পরিচিতি:
ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বিংশ শতাব্দীর একজন শ্রেষ্ঠ ‘আলিমে দ্বীন ছিলেন। তিনি একাধারে মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ ও উসূলবিদ ছিলেন। তিনি ১৩৪৭ হিজরী মোতাবেক ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে সৌদি আরবের ক্বাসিম বিভাগের ‘উনাইযাহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অনেক বড়ো বড়ো ‘আলিমের কাছে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন—ইমাম ‘আব্দুর রহমান বিন নাসির আস-সা‘দী, ইমাম মুহাম্মাদ আল-আমীন আশ-শানক্বীত্বী, ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন বায প্রমুখ (রাহিমাহুমুল্লাহ)।
তিনি ইমাম মুহাম্মাদ বিন সা‘ঊদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবোর্ডের এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সদস্য ছিলেন। ‘ইলমের সকল শাখায় তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল। আর সেকারণে তাফসীর, উসূলে তাফসীর, হাদীস, উসূলে হাদীস, ফিক্বহ, উসূলে ফিক্বহ, ক্বাওয়া‘ইদে ফিক্বহ, নাহূ (আরবি ব্যাকরণশাস্ত্র), বালাগাত (অলংকারশাস্ত্র) ফারাইদ্ব (মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বণ্টন সম্বন্ধীয় শাস্ত্র) প্রভৃতি বিষয়ে তাঁর অসংখ্য গ্রন্থ ও অডিয়ো ক্লিপস রয়েছে।
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন, “আমি একটি সংক্ষিপ্ত মূল্যবান ‘আক্বীদাহ সংবলিত পুস্তিকা পড়লাম, যা সংকলন করেছেন আমাদের ভাই আল-‘আল্লামাহ সম্মানিত শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন।” [ইমাম ইবনু ‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ), ‘আক্বীদাতু আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ; পৃষ্ঠা: ৩; বাদশাহ ফাহাদ লাইব্রেরি কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২২ হিজরী (৪র্থ প্রকাশ)]
ইয়েমেনের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২২ হি./২০০১ খ্রি.] কে প্রশ্ন করা হয়, “সৌদি আরবের ‘আলিমগণের মধ্যে আপনি কাদের থেকে ‘ইলম গ্রহণের নসিহত করেন? আর খুব ভালো হতো, যদি আপনি আমাদের কাছে কিছু (‘আলিমের) নাম বলেন।” তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) জবাবে বলেন, “আমি যাঁদের কাছ থেকে ‘ইলম গ্রহণের নসিহত করি এবং আমি যাঁদেরকে চিনি, তাঁরা হলেন—শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয বিন বায (হাফিযাহুল্লাহ), শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ বিন ‘উসাইমীন (হাফিযাহুল্লাহ), শাইখ রাবী‘ বিন হাদী (হাফিযাহুল্লাহ), শাইখ ‘আব্দুল মুহসিন আল-‘আব্বাদ (হাফিযাহুল্লাহ)।” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), তুহফাতুল মুজীব ‘আলা আসইলাতিল হাদ্বিরি ওয়াল গারীব; পৃষ্ঠা: ১৬৭; দারুল আসার, সানা (ইয়েমেন) কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৩ হি./২০০২ খ্রি. (২য় প্রকাশ)]

Wednesday 13 March 2019

কষ্টিপাথরে ব্রাদারহুড, ইখুয়ানুল মুসলিমীনের (জামাতী ইসলামী) ব্যাপারে সালাফী আলেমদের ফতোয়া। পর্ব-০৬


·Image may contain: text
শাইখ পরিচিতি:

ইমাম রাবী‘ বিন হাদী আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ)
ইমাম রাবী‘ বিন হাদী বিন ‘উমাইর আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) বর্তমান যুগের একজন শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস। তিনি ১৩৫১ হিজরী মোতাবেক ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে সৌদি আরবের সামিত্বাহ (Samtah) জেলার ‘মাদাখিলাহ’ নামক বিখ্যাত গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অনেক বড়ো বড়ো ‘আলিমের কাছে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন—ইমাম মুহাম্মাদ আল-আমীন আশ-শানক্বীত্বী, ইমাম ইবনু বায, ইমাম আলবানী, ইমাম হাফিয বিন আহমাদ আল-হাকামী, ইমাম আহমাদ আন-নাজমী, ইমাম মুহাম্মাদ আমান আল-জামী, ইমাম হাম্মাদ আল-আনসারী, ইমাম ‘আব্দুল মুহসিন আল-‘আব্বাদ প্রমুখ (রাহিমাহুমুল্লাহু ওয়া হাফিযাহুল্লাহ)।
তিনি মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং পরবর্তীতে মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদীস অনুষদে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর অনেক গ্রন্থ রয়েছে। তাঁর লিখনের একটি বড়ো অংশ মাজমূ‘উশ শাইখ রাবী‘ নামে কায়রোর ‘দারুল ইমাম আহমাদ’ থেকে ১৫ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর ব্যাপারে ‘আলিমদের প্রশংসা বক্ষ্যমাণ নিবন্ধের প্রথম পর্বে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আবারও এখানে সেগুলো উল্লেখ করা বাহুল্য মনে করছি। [অত্র নিবন্ধের প্রথম পর্ব পোস্ট করা হচ্ছে না। পর্বাকারে যে পোস্টগুলো করা হচ্ছে তা নিবন্ধের দ্বিতীয় পর্ব। আর ইমাম রাবী‘র প্রশংসাও নেহায়েত কম নয়। তাই আগ্রহী পাঠক মহোদয়, ইমাম রাবী‘র ব্যাপারে ‘আলিমগণের প্রশংসা জানতে আপনি এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন। আর্টিকেল লিংক: https://tinyurl.com/yxjt367h।]
এই মহান মুহাদ্দিসের অমূল্য খেদমতকে আল্লাহ কবুল করুন এবং তাঁকে উত্তমরূপে হেফাজত করুন। আমীন। সংগৃহীত: মাজমূ‘উশ শাইখ রাবী‘; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৭-১৪।
·
১ম বক্তব্য:
বর্তমান যুগে জারাহ ওয়াত তা‘দীলের ঝাণ্ডাবাহী মুজাহিদ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ আল-মুহাদ্দিসুল ফাক্বীহ ইমাম রাবী‘ বিন হাদী বিন ‘উমাইর আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫১ হি./১৯৩২ খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—
السؤال: جماعة الإخوان المسلمين والتبليغ من أيّ أصول البدع الأربع التي افترقت عن جماعة المسلمين؟
الجواب: جماعة التبليغ والإخوان يدخلون في كثير من الفرق؛ يدخلون في التجهم ويدخلون في بعض الاعتزاليات والعقلانيات ويدخلون في فرق الصوفية التي فيها حلول وفيها وحدة الوجود وفيها قبورية، فتراهم يقمشون ويجمّعون من كل النّحل والعياذ بالله، وهم يجمعون ولا يردّون أحدا؛ يأتيهم رافضي، صوفي غال أيّ شكل من الأشكال يقبلونه لأنّها دعوات سياسية وإن أخذت التبليغ طابع الدروشة والمسكنة فإنّها دعوة سياسية، و أمّا الإخوان فيصرحون بأنّ دعوتهم سياسية.
প্রশ্ন: “মুসলিম ব্রাদারহুড এবং তাবলীগ জামা‘আত– জামা‘আতুল মুসলিমীন থেকে বিচ্ছিন্ন চারটি বিদ‘আতী মূলনীতির কোনটির অন্তর্ভুক্ত?”
উত্তর: “তাবলীগ জামা‘আত এবং ব্রাদারহুড অসংখ্য ফিরক্বাহ’র মধ্যে প্রবেশ করেছে। তারা জাহমিয়্যাহ’র মধ্যে প্রবেশ করেছে, কিছু মু‘তাযিলী ও যুক্তিবাদী মতাদর্শের মধ্যে প্রবেশ করেছে, সূফীবাদের মধ্যে প্রবেশ করেছে, যে সূফীবাদের মধ্যে হুলূল, ওয়াহদাতুল উজূদ (সর্বেশ্বরবাদ) এবং কবরপূজা রয়েছে। তুমি তাদেরকে দেখবে যে, তারা সকল সম্প্রদায় থেকে লোকদের জমা করছে। আল-‘ইয়াযু বিল্লাহ (আল্লাহ’র কাছে এ থেকে পানাহ চাই)। তারা সবাইকে জমা করে, কাউকে ফিরিয়ে দেয় না। তাদের কাছে রাফিদ্বী শী‘আ আসে, চরমপন্থি সূফী আসে। যে কোনো আকৃতিতেই আসুক না কেন তারা তাকে গ্রহণ করে। কেননা এগুলো রাজনৈতিক দা‘ওয়াত। যদিও তাবলীগ জামা‘আত দরবেশী (সন্ন্যাস) এবং দীনতার বেশ গ্রহণ করেছে। কিন্তু তা একটি রাজনৈতিক দা‘ওয়াত। পক্ষান্তরে ব্রাদারহুড তো স্পষ্টভাবেই বলে যে, তাদের দা‘ওয়াত রাজনৈতিক।” [মাজমূ‘উশ শাইখ রাবী‘, খণ্ড: ১৪; পৃষ্ঠা: ৪৫৫; দারুল ইমাম আহমাদ, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; (সনতারিখ বিহীন)]
·
২য় বক্তব্য:
ইমাম রাবী‘ বিন হাদী আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
السؤال: هل جميع الجماعات التي في الساحة اليوم داخلة في حديث الثنتين وسبعين فرقة الهالكة وهل جماعة الإخوان المسلمين والتبليغ معهم أيضا؟
الجواب: كل من لم يكن في عقيدته ومنهجه ودعوته على ما عليه رسول الله وأصحابه فهو من الفرق الضالة، والإخوان المسلمون يجمعون فرقا، إذ هم فتحوا أبوابهم على مصارعها للروافض والخوارج والزيدية والمعتزلة بل والنصارى، فهم مجمع للفرق الضالة، ما انتموا لفرقة ضالة بل مجمع للفرق، وكذلك التبليغ قريب منهم فيه بيان أربعة طرق صوفية وفتحوا الأبواب لمن هب ودب فلا شك أنها من الفرق الضالة وقد سئل الشيخ ابن باز فقال: إنها من الفرق الأخرى وليسوا من أهل السنة والجماعة، وأهل السنة والجماعة هم ما كان عليه الرسول وأصحابه، هذا الميزان للإخوان المسلمين ولغيرهم، هل هم في عقائدهم ومنهجهم ودعوتهم وولائهم وبرائهم على ما عليه الرسول وأصحابه وإلا ينتحلون مناهج أخرى؟ فالجواب: لهم مناهج أخرى تختلف تماما عما كان عليه الرسول وأصحابه في عقيدته ومنهجه وولائه وبرائه.
প্রশ্ন: “বর্তমান পৃথিবীর সমস্ত দল কি পথভ্রষ্ট ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত? আর মুসলিম ব্রাদারহুড এবং তাবলীগ জামা‘আতও কি তাদের সাথে রয়েছে?”
উত্তর: “যে ব্যক্তিই তার ‘আক্বীদাহ, মানহাজ ও দা‘ওয়াতের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ ﷺ এবং তাঁর সাহাবীগণের আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়, সেই পথভ্রষ্ট দলসমূহের অন্তর্ভুক্ত। মুসলিম ব্রাদারহুড দলসমূহকে জমা করে। যেহেতু তারা তাদের ধ্বংসের দরজা খুলে রেখেছে রাফিদ্বী, খারিজী, যাইদী, মু‘তাযিলী এমনকি খ্রিষ্টানদের জন্য। তারা পথভ্রষ্ট দলসমূহের মিলনস্থল। তারা একটি ভ্রষ্ট দলে যোগ দেয়নি, বরং অনেকগুলো দলের মিলনস্থলে যোগ দিয়েছে। অনুরূপভাবে তাবলীগও তাদের নিকটবর্তী। তাদের মধ্যে চারটি সূফী তরিকা রয়েছে। তারা প্রত্যেকের জন্য তাদের দরজা খুলে রেখেছে। নিঃসন্দেহে তারা পথভ্রষ্ট দলসমূহের অন্তর্ভুক্ত।
শাইখ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, নিশ্চয় এটা অন্যান্য দলসমূহের অন্তর্ভুক্ত। তারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত নয়। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত রাসূল ﷺ এবং তাঁর সাহাবীগণের আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত। এই মীযান (নিক্তি) মুসলিম ব্রাদারহুডের জন্য এবং অন্যান্যদের জন্যও। তারা কি তাদের ‘আক্বীদাহ, মানহাজ ও দা‘ওয়াতের ক্ষেত্রে এবং বৈরিতা ও মিত্রতার ক্ষেত্রে রাসূল ﷺ ও তাঁর সাহাবীগণের আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত, নাকি তারা অন্যান্য মানহাজ গ্রহণ করেছে? এর জবাব হলো: তাদের অন্য মানহাজ রয়েছে, যা সম্পূর্ণরূপে ‘আক্বীদাহ, মানহাজ এবং বৈরিতা ও মিত্রতার ক্ষেত্রে রাসূল ﷺ ও তাঁর সাহাবীগণের আদর্শের বিরোধী।” [দ্র.: www.rabee.net/ar/questions.php?cat=31&id=299.]

কষ্টিপাথরে ব্রাদারহুড, ইখুয়ানুল মুসলিমীনের (জামাতী ইসলামী) ব্যাপারে সালাফী আলেমদের ফতোয়া। পর্ব-০৫


·Image may contain: text
শাইখ পরিচিতি:

‘আল্লামাহ সালিহ বিন ‘আব্দুল ‘আযীয আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ)
‘আল্লামাহ সালিহ বিন ‘আব্দুল ‘আযীয আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ) বর্তমান যুগের একজন শ্রেষ্ঠ ‘আলিমে দ্বীন। তিনি ১৩৭৮ হিজরী মোতাবেক ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইমাম মুহাম্মাদ বিন সা‘ঊদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন করেছেন। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে অন্যতম কয়েকজন হলেন—ইমাম ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘আক্বীল, ইমাম ‘আব্দুল্লাহ বিন গুদাইয়্যান, ইমাম হাম্মাদ আল-আনসারী, ইমাম ইসমা‘ঈল আল-আনসারী প্রমুখ (রাহিমাহুমুল্লাহ)। তিনি সৌদি আরবের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত মন্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে অসংখ্য মূল্যবান গ্রন্থ প্রণয়ন করেছেন। তাঁর লিখন পড়লে তাঁর ‘ইলমের প্রাচুর্যতা এবং ফিক্বহের গভীরতা উত্তমরূপে উপলব্ধি করা যায়।
‘আল্লামাহ সালিহ আলুশ শাইখ ইমাম আলবানী’র লেখা ইরওয়াউল গালীল গ্রন্থে যেসব হাদীসের তাখরীজ ছাড়া পড়েছে, সেগুলো জমা করে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। ইমাম আলবানীকে ‘আল্লামাহ সালিহের বইটির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি তাঁর প্রশংসা করেন। এছাড়াও শাইখ সালিহ আলুশ শাইখের বিরুদ্ধে আলজেরিয়ার সরকারকে কাফির ফাতওয়া প্রদানের অভিযোগ উত্থাপন করা হলে ‘আল্লামাহ যাইদ আল-মাদখালী (রাহিমাহুল্লাহ) শাইখ সালিহকে ডিফেন্ড করেন, ওই বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং শাইখের প্রশংসা করেন। [sahab.net] এছাড়াও ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) শাইখ সালিহ আলুশ শাইখের প্রশংসা করেছেন। [আজুর্রি (ajurry) ডট কম]
উম্মুল ক্বুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ সদস্য (faculty member) অধ্যাপক ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বাযমূল (হাফিযাহুল্লাহ) শাইখ সালিহ আলুশ শাইখের ব্যাপারে বলেছেন, “তিনি হলেন আল-ওয়াযীর (মন্ত্রী), আল-‘আলিম, আল-মুফাসসির, আল-মুহাদ্দিস, আল-ফাক্বীহ, আল-উসূলী।” [দ্র.: https://m.youtube.com/watch?v=6udOz4rubGI(অডিয়ো ক্লিপ)]
আল্লাহ তাঁর অমূল্য খেদমতকে কবুল করুন এবং তাঁকে উত্তমরূপে হেফাজত করুন। আমীন। সংগৃহীত: saleh.af.org.sa।
·
‘আল্লামাহ সালিহ আলুশ শাইখের বক্তব্য:
সৌদি আরবের সম্মানিত ধর্মমন্ত্রী আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ সালিহ বিন ‘আব্দুল ‘আযীয আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৭৮ হি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—
السؤال: ما هي الأصول التي تنبني عليها جماعة الإخوان المسلمين؟
الجواب: إن من أبرز مظاهر الدعوة عندهم التكتم والخفاء والتلون، والتقرب إلى من يظنون أنه سينفعهم، وعدم إظهار حقيقة أمرهم، يعني أنهم نوع من أنواع الباطنية، ومنهم من خالط بعض العلماء والمشايخ زمانًا طويلًا وهو لا يعرف حقيقتها.
ومن مظاهر الجماعة وأصولها أنهم يغلقون عقول أتباعهم عن سماع القول الذي خالف منهجهم، ولهم في هذا الإغلاق طرق شتى متنوعة؛ منها إشغال وقت الشاب جميعه من صبحه إلى ليله حتى لا يسمع قولًا آخر، ومنها أنهم يحذرون ممن ينقدهم، فإذا رأوا واحدًا من الناس يعرف منهجهم وطريقتهم وبدأ في نقدهم وفي تحذير الشباب من الانخراط في الحزبية البغيضة أخذوا يحذرون منه بطرق شتى؛ تارة باتهامه وتارة بالكذب عليه، وتارة بقذفه في أمور هو منها براء، وهم يعلمون أن ذلك كذب، وتارة يقفون منه على غلط فيشنعون به عليه ويضخمون ذلك حتى يصدوا الناس عن اتباع الحق والهدى.
وهم في ذلك شبيهون بالمشركين في خصلة من خصالهم؛ حيث كانوا ينادون على رسول الله صلى الله عليه وسلم في المجامع بأن هذا صابئ وأن فيه كذا وفيه كذا؛ حتى يصدوا الناس عن اتباعه.
أيضًا مما يميز الإخوان عن غيرهم أنهم لا يحترمون السنة ولا يحبون أهلها، وإن كانوا في الجملة لا يظهرون ذلك، لكنهم في حقيقة الأمر لا يحبون السنة ولا يدعون لأهلها، وقد جربنا ذلك في بعض من كان منتميًا لهم أو يخالط بعضهم، فتجد أنه لما بدأ يقرأ كتب السنة مثل صحيح البخاري أو الحضور عند بعض المشايخ في قراءة بعض الكتب حذروه وقالوا: هذا لا ينفعك. يعني أنهم لا يقرون فيما بينهم تدريس السنة ولا محبة أهلها.
من مظاهرهم أيضًا أنهم يرومون الوصول إلى السلطة؛ وذلك بأنهم يتخذون من رءوسهم أدوات يجعلونها تصل، وتارة تكون تلك الرءوس ثقافية، وتارة تكون تلك الرءوس تنظيمية، يعني أنهم يبذلون أنفسهم ويعينون بعضًا حتى يصلوا بطريقة أو بأخرى إلى السلطة؛ يعني إلى سلطة جزئية؛ حتى ينفذوا من خلالها إلى التأثير. وهذا يتبعه أن يكون هناك تحزُّب؛ يعني يقربون مَن هم في الجماعة، ويبعدون من لم يكونوا في الجماعة، فيقال مثلا: فلان ينبغي إبعاده، ولا يمكَّن من التدريس، لماذا؟ لأن عليه ملاحظات، ما هي هذه الملاحظات؟ ليس من الإخوان.
يعني صار عندهم حب وبغض في الحزب أو في الجماعة، وهذا كما جاء في حديث الحارث الأشعري أن النبي –صلى الله عليه وسلم– قال: «مَن دَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ فَإِنَّهُ مِنْ جُثَا جَهَنَّمَ» . قالوا : يا رسول الله ، وإن صام وإن صلى؟ قال : «وإنْ صامَ وإنْ صَلَّى وَزَعَمَ أَنَّهُ مُسْلِمٌ، فَادْعُوا الْمُسْلِمِينَ بِأَسْمَائِهِمْ، بِمَا سَمَّاهُمُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ الْمُسْلِمِينَ الْمُؤْمِنِينَ عِبَادَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ». حديث صحيح .
ولهذا ينبغي للشباب أن يُنبهوا على هذا الأمر بالطريقة الحسنى المثلى حتى يكون هناك اهتداء إلى طريق أهل السنة والجماعة وإلى منهج السلف الصالح، كما أمر الله – عز وجل – بقوله : ﴿ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ﴾ [النحل : ١٢٥]
أيضًا من مظاهرهم، بل مما يميزهم عن غيرهم أن الغاية عندهم من الدعوة هي الوصول إلى الدولة، وهذا أمر ظاهر بيّن في منهج الإخوان، بل في دعوتهم، الغاية من دعوتهم هي الوصول إلى الدولة، أما كيف ينجو الناس من عذاب الله –جل وعلا– وأن تبعث لهم الرحمة في هدايتهم إلى ما ينجيهم من عذاب القبر ومن عذاب النار وما يدخلهم الجنة وما يقربهم إليها؛ فليس ذلك عندهم كبير أمر ولا كبير شأن ولا يهتمون بذلك؛ لأن الغاية عندهم هي الدولة.
ولهذا يقولون: الكلام في الحكام يجمع النا، والكلام في أخطاء الناس ومعاصيهم يفرق الناس، فابذلوا ما به تجتمع عليكم القلوب، وهذا لا شك أنه خطأ تأصيلي ونية فاسدة؛ فإن النبي –صلى الله عليه وسلم– بين أن مسائل القبر ثلاثة؛ يُسأل العبد عن ربه، يعني عن معبوده، وعن دينه، وعن نبيه صلى الله عليه وسلم، فمن صحب أولئك زمنًا طويلًا؛ عشر سنين أو عشرين سنة أو أكثر أو أقل، وهو لم يُعلَّم ما ينجيه إذا أُدخل في القبر فهل نُصِحَ له وهل أُحب له الخير؟ فلو أحبوا المسلمين حق المحبة لبذلوا النصيحة فيما ينجيهم من عذاب القبر وفيما ينجيهم من عذاب الله، ولعلموهم التوحيد، وهو أول مسئول عنه من ربك، أي من معبودك.
প্রশ্ন: “মুসলিম ব্রাদারহুড কোন মূলনীতিগুলোর উপর প্রতিষ্ঠিত?”
উত্তর: “তাদের দা‘ওয়াতের সবচেয়ে স্পষ্ট দিক হলো—গোপনীয়তা, অস্থিতিশীলতা, যে তাদের উপকারে আসবে বলে তারা মনে করে তার নিকটবর্তী হওয়া এবং তাদের প্রকৃত বিষয়কে প্রকাশ না করা। অর্থাৎ, তারা বাত্বিনীদের একটি প্রকার। তাদের কেউ কেউ ‘উলামা ও মাশাইখদের কারও সাথে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে, এতৎসত্ত্বেও তিনি তাদের দা‘ওয়াতের হকিকত সম্পর্কে জানতে পারেন না।

কষ্টিপাথরে ব্রাদারহুড, ইখুয়ানুল মুসলিমীনের (জামাতী ইসলামী) ব্যাপারে সালাফী আলেমদের ফতোয়া। পর্ব-০৪

·Image may contain: text
শাইখ পরিচিতি:


‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ)
‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) মিশরের একজন প্রখ্যাত মুহাদ্দিস এবং ফাক্বীহ। তিনি ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে মিশরের মনুফিয়া গভর্নোরেটে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিসিন এবং সার্জারির উপর স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এছাড়াও তিনি আল-আযহার থেকেই ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আওতাধীন ডিপার্টমেন্ট অফ দ্য অ্যারাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এরপর তিনি আল-আযহার থেকে হাদীসের উপর মাস্টার্স ও পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। তিনি অসংখ্য মৌলিক কিতাবের দারস দিয়েছেন। তিনি একাধারে তাফসীর, উসূলে তাফসীর, হাদীস, উসূলে হাদীস, ফিক্বহ, উসূলে ফিক্বহ, ‘আক্বীদাহ, মানহাজ, ফারাইদ্ব, সীরাত প্রভৃতি বিষয়ে অসংখ্য কিতাবের দারস দিয়েছেন। বিভিন্ন বিষয়ে তিনি প্রায় দেড় শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন।
‘আল্লামাহ হাসান বিন ‘আব্দুল ওয়াহহাব (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৯২৫ খ্রি.] বলেছেন, “মিশরে যারা সালাফী দা‘ওয়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন, তাঁরা হলেন—সম্মানিত শাইখ ‘আলী হাশীশ, সম্মানিত শাইখ মুহাম্মাদ সা‘ঈদ রাসলান...।” [আজুর্রি (ajurry) ডট কম]
কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ের শারী‘আহ অনুষদের অধ্যাপক শাইখ ড. ফালাহ বিন ইসমা‘ঈল আল-মুনদাকার (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৯৫০ খ্রি.] শাইখ মুহাম্মাদ রাসলানের ব্যাপারে বলেছেন, “আমি শাইখের সান্নিধ্যে থাকার, তাঁর দারস শ্রবণ করার এবং তাঁর থেকে ফায়দা গ্রহণ করার নসিহত করছি। আল্লাহ’র কসম! আমি তাঁকে দেখেছি যে, তিনি সুন্নাহ, সালাফিয়্যাহ, শার‘ঈ শিষ্টাচারের ব্যাপারে প্রবল আগ্রহী। আমি তাঁকে দেখেছি যে, তিনি একজন দুনিয়াবিমুখ পরহেজগার মানুষ। আমরা আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন আমাদেরকে ও তাঁকে দ্বীনের উপর সুদৃঢ় রাখেন এবং আমাদেরকে ও তাঁকে (সৎকর্মের) তাওফীক্ব দান করেন।” [sahab.net]
শাইখ ড. ফালাহ বিন ইসমা‘ঈল আল-মুনদাকার (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেছেন, “তোমাদের জন্য আকাবির তথা বড়োদের আঁকড়ে ধরা আবশ্যক। আল্লাহ’র রহমতে মিশরে তোমাদের কাছে আছেন আশ-শাইখ হাসান বিন ‘আব্দুল ওয়াহহাব আল-বান্না এবং আশ-শাইখ মুহাম্মাদ সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুমাল্লাহু তা‘আলা)। তোমাদের জন্য এই বড়োদের আঁকড়ে ধরা আবশ্যক। তাঁদের কাছে ভাইদের একত্রিত করো এবং তোমাদের সমস্যাগুলো এই বড়োদের কাছে উপস্থাপন করো। বড়োদের দিকে ফিরে যাওয়ার মধ্যে বিরাট কল্যাণ এবং মহান উপকারিতা রয়েছে।” [প্রাগুক্ত]
‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) কে মিশরের কোন শাইখের দারসে উপস্থিত হওয়া যাবে—মর্মে প্রশ্ন করা হলে তিনি শাইখ রাসলানকে সাজেস্ট করেন এবং বলেন, “আমি শাইখ রাসলানকে চিনি তাঁর বক্তব্য শোনার মাধ্যমে। তিনি স্বীয় ‘আক্বীদাহ ও মানহাজে শক্তিশালী ব্যক্তি।” [দ্র.: https://m.youtube.com/watch?v=_6F744sSM-M (অডিয়ো ক্লিপ)]
এতদ্ব্যতীত ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী-সহ আরও অনেক ‘আলিম ও শাইখ ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ রাসলানের এবং তাঁর দা‘ওয়াতী কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন। আল্লাহ তাঁর অমূল্য খেদমতকে কবুল করুন এবং তাঁকে উত্তমরূপে হেফাজত করুন। আমীন। সংগৃহীত: rslan.com ও sahab.net
·
১ম বক্তব্য:
আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৯৫৫ খ্রি.] বলেছেন,
الإخوان المسلمون جماعةٌ بدعية، وفِرقةٌ من الثنتين والسبعين فرقة التي ذكرها الرسول -صلى الله عليه وسلم- في حديث الافتراق. الإخوانُ المسلمون ليس عندهم منهجٌ اعتقاديّ! فهم يجمعون كلَّ مَن طار ودَرَجَ! وهَبَّ ودَبَّ! معهم المعتزلية، والأشعرية، والصوفية ولو كان اتحاديًا حُلوليًا!، ومعهم دون ذلك، بل ومعهم النصارى! فما عندهم من منهجٍ اعتقاديٍّ!
ومعلومٌ أنّ الإصلاحَ لا يبدأ إلا بالعقيدة، وأنتَ عندما تدعو الناس إلى الدين لا تقول لهم: نُطبِّق عليكم شريعة الله –وهم لا يعرفونه–! ولا تقول لهم: اتَّبِعُوا رسولَ الله –وهم يجهلونه–!
فلابد من بيان العقيدة أولاً؛ إذ الشريعةُ مؤسسة على عقيدتها.
فهذه الخُدعة الكبرى التي يُروِّجُ لها قومٌ من جلدتنا يتكلمون بلساننا، وينطقون بكلامنا ولغتنا، ويأخذون من الليل كما تأخذون. هذه الخُدعة الكبرى التي يُرَوِّج لها أولئك زائفةٌ مكشوفة! واضحةٌ مفضوحة!
مَن مِن الأنبياء بدأَ الدعوةَ بغير العقيدة؟! مَن مِن الأنبياء والمرسلِين بدأَ قومَه بغير الدعوة إلى توحيد رب العالمين؟! مَن؟ كلُّهم! كلُّ المرسلِين من نوحٍ إلى محمدٍ يدعون أقوامهم إلى إخلاص العبادة لله، إلى توحيد الله رب العالمين وحده، ولا يلتفتون إلى النتائج، ويأتي النبيُّ يومَ القيامة وليس معه أحدٌ! لم تُزَيَّف العقيدة، ولم تُبَدَّل الشريعة، ولم تُغَيَّر معالم الملة، وإنما كان الأمرُ واضحًا مكشوفًا.
“মুসলিম ব্রাদারহুড একটি বিদ‘আতী দল। এটি (পথভ্রষ্ট) ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত, যে দলগুলোর ব্যাপারে রাসূল ﷺ হাদীসুল ইফতিরাক্বে [যে হাদীসে রাসূল ﷺ স্বীয় উম্মাহ’র ৭৩ দলে বিভক্ত হওয়ার কথা বলেছেন, সে হাদীসকে ‘হাদীসুল ইফতিরাক্ব’ বা ‘উম্মাহ বিভক্তির হাদীস’ বলা হয়। – সংকলক] আলোচনা করেছেন। মুসলিম ব্রাদারহুডের ‘আক্বীদাহগত আদর্শ নেই। তারা সবাইকে তাদের দলে জমা করে। তাদের সাথে মু‘তাযিলীরা আছে, আশ‘আরীরা আছে, এমনকি সূফীরাও আছে, যদিও সে সর্বেশ্বরবাদী সূফী হয়! তাদের সাথে আরও অনেকে রয়েছে। এমনকি তাদের সাথে খ্রিষ্টানরাও আছে। তাদের কোনো ‘আক্বীদাহগত আদর্শ নেই। আর একথা সুবিদিত যে, সংস্কার (ইসলাহ) স্রেফ ‘আক্বীদাহর মাধ্যমেই শুরু করতে হয়। তুমি যখন মানুষকে দ্বীনের দিকে আহ্বান করবে, তখন তুমি তাদেরকে বলো না যে, আমরা তোমাদের উপর আল্লাহ’র আইন বাস্তবায়ন করব, অথচ তারা তা জানেই না। তুমি তাদেরকে বলো না যে, তোমরা আল্লাহ’র রাসূলের আনুগত্য করো, অথচ তারা রাসূলকেই চিনে না।
অবশ্যই প্রথমে ‘আক্বীদাহ বর্ণনা করতে হবে। যেহেতু শরিয়ত ‘আক্বীদাহর উপরই প্রতিষ্ঠিত। এই মহাপ্রতারণা প্রচলিত করেছে এমন সম্প্রদায়, যারা আমাদের মতো ত্বকেরই মানুষ, আমাদের মতো জবান দিয়েই কথা বলে, আমাদের ভাষাতেই কথা বলে। তারা রাত থেকে তাই লাভ করে, যা তোমরা করে থাক। ওদের চালুকৃত এই মহাধোঁকা সুস্পষ্ট প্রতারণা এবং স্পষ্ট কুৎসা।
নাবীদের মধ্যে কে ‘আক্বীদাহ ব্যতীত অন্য বিষয়ের মাধ্যমে দা‘ওয়াত শুরু করেছেন? নাবী ও রাসূলগণের মধ্যে কে স্বীয় সম্প্রদায়কে বিশ্বজগতের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র তাওহীদের দিকে দা‘ওয়াত দেওয়া বাদ দিয়ে অন্য বিষয়ের দা‘ওয়াত দিয়ে শুরু করেছেন? কে? বরং তাঁরা সবাই, নূহ থেকে মুহাম্মাদ পর্যন্ত সকল রাসূল তাঁদের সম্প্রদায়কে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ’র ইবাদত করার দিকে তথা এক আল্লাহ’র তাওহীদের দিকে আহ্বান করেছেন। তাঁরা পরিণতির দিকে তাকাননি। কেননা কেয়ামতের দিন এমন নাবীও আসবেন, যার সাথে তাঁর অনুসারী থাকবে না। ‘আক্বীদাহ জাল করা হয়নি, শরিয়ত পরিবর্তিত হয়নি, উম্মাহ’র রূপরেখাও পরিবর্তিত হয়নি। সুতরাং বিষয়টি সুস্পষ্ট ও উদ্ভাসিত।” [“মাযা লাও হাকামাল ইখওয়ানু মিসর”– শীর্ষক খুত্ববাহ; খুত্ববাহ’র তারিখ: ৪ই রজব, ১৪৩৩ হিজরী মোতাবেক ২৫শে মে, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ; খুত্ববাহ’র অনুলিপির লিংক: www.ajurry(এখানে একটি ডট বসিয়ে লিংকটি ব্যবহার করুন)com/vb/showthread.php?t=28027.]
·

কষ্টিপাথরে ব্রাদারহুড, ইখুয়ানুল মুসলিমীনের (জামাতী ইসলামী) ব্যাপারে সালাফী আলেমদের ফতোয়া। পর্ব-০৩

·Image may contain: text
শাইখ পরিচিতি:


 ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ)
ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) বিংশ শতাব্দীর একজন শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, মুহাক্বক্বিক্ব, মুফাসসির, ফাক্বীহ ও আদীব (সাহিত্যিক) ছিলেন। তাঁর পড়াশোনা আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি এখান থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে অন্যতম হলেন ইমাম মুহাম্মাদ আল-আমীন আশ-শানক্বীত্বী (রাহিমাহুল্লাহ)। তিনি ১৩০৯ হিজরী মোতাবেক ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে মিশরের কায়রো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মিশরের শারী‘আহ কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন এবং পরবর্তীতে সুপ্রিম শারী‘আহ কোর্টের সদস্য হয়েছিলেন। হাদীসশাস্ত্র, ফিক্বহশাস্ত্র, ‘আক্বীদাহশাস্ত্র এবং ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর অসংখ্য পাণ্ডিত্যপূর্ণ লেখা রয়েছে। তাঁর শ্রেষ্ঠ কর্ম হলো—মুসনাদে আহমাদের তাহক্বীক্ব; তিনি ৮০৯৯ টি হাদীসের তাহক্বীক্ব করতে পেরেছিলেন, যা মুসনাদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ সমপরিমাণ।
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] কে ইমাম আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ)’র ‘আক্বীদাহ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “শাইখ আহমাদ শাকির একজন সম্মানিত ‘আলিম। তিনি ‘আক্বীদাহগতভাবে সালাফী ছিলেন।” [দ্র.: https://m.youtube.com/watch?v=Eo0hzFqiQCA (অডিয়ো ক্লিপ)]
বর্তমান যুগের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম রাবী‘ বিন হাদী বিন ‘উমাইর আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫১ হি./১৯৩২ খ্রি.] বলেন, “আমি বলছি, আল-‘আক্বীদাতুত্ব ত্বাহাউয়িয়্যাহ গ্রন্থটি আমরা কেবল আহলুস সুন্নাহ’র ভাষ্যগ্রন্থের মাধ্যমে চিনি। যেমন: ইবনু আবিল ‘ইয প্রণীত ভাষ্য। এই ভাষ্যগ্রন্থটি দুইজন আহলুস সুন্নাহ’র ‘আলিম তাহক্বীক্ব করেছেন। প্রথমজন হলেন প্রখ্যাত সালাফী ‘আলিম আহমাদ শাকির এবং দ্বিতীয়জন হলেন শাইখ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী।” [sahab.net]
ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেন, “শাইখ আহমাদ শাকির হাদীসশাস্ত্রের কিবার ‘আলিমদের অন্যতম।” [ইমাম রাবী‘ (হাফিযাহুল্লাহ), আয-যারী‘আহ ইলা বায়ানি মাক্বাসিদি কিতাবিশ শারী‘আহ, খণ্ড: ৩; পৃষ্ঠা: ৪২০]
তিনি ১৩৭৭ হিজরী ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে পরলোকগমন করেন। আল্লাহ এই ক্ষণজন্মা মনীষীকে তাঁর রহমত দ্বারা ঢেকে দিন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসে তাঁর আবাস নির্ধারণ করুন। আমীন। সংগৃহীত: www.facebook.com/SunniSalafiAthari(সালাফী: ‘আক্বীদাহ্ ও মানহাজে)।
·
১ম বক্তব্য:
বিগত শতাব্দীর প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ, মুহাক্বক্বিক্ব ও সাহিত্যিক আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৩৭৭ হি./১৯৫৮ খ্রি.] বলেছেন,
الإخوان المسلمون خوارج العصر.
“মুসলিম ব্রাদারহুড আধুনিক যুগের খারিজী সম্প্রদায়।” [আল-ইসালাহ ম্যাগাজিন, ৪০শ সংখ্যা; পৃষ্ঠা: ১১; গৃহীত: আবুল হাসান ‘আলী বিন আহমাদ আর-রাযিহী, আর-রিসালাতুস সুগরা ইলা আখী আল-মুনতাযিম ফী জামা‘আতিল ইখওয়ানিল মুসলিমীন; পৃষ্ঠা: ৯০; দারু ‘উমার ইবনিল খাত্বত্বাব, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৮ হি./২০০৭ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
·

কষ্টিপাথরে ব্রাদারহুড, ইখুয়ানুল মুসলিমীনের (জামাতী ইসলামী) ব্যাপারে সালাফী আলেমদের ফতোয়া। পর্ব-০২

 ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহেল কাফী আল-কুরাইশী (রাহিমাহুল্লাহ)
·Image may contain: text
শাইখ পরিচিতি:
‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহেল কাফী আল-কুরাইশী (রাহিমাহুল্লাহ) সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) একজন প্রখ্যাত সালাফী দা‘ঈ ও বিদ্বান ছিলেন। তাঁর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার টুবগ্রামে ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে। তিনি পিতার নিকট ফারসি ও আরবির প্রারম্ভিক শিক্ষালাভ করেন। তারপর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা আব্দুল্লাহেল বাকীর কাছে পারিবারিক মাদরাসায় আরবি ও ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়নের পর তিনি কলকাতা আলিয়া মাদরাসায় অ্যাংলো-পারসিয়ান বিভাগ হতে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। সেন্ট জেভিয়ারস কলেজে বি.এ. ক্লাসে অধ্যয়নকালে খেলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনের প্রভাবে উপমহাদেশ শোষণকারী সাম্রাজ্যবাদী ধবল দস্যুদের প্রবর্তিত শিক্ষা বর্জন করে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মাওলানা আকরাম খাঁর উর্দু দৈনিক ‘যামানা’র সম্পাদনা বিভাগে যোগদান করেন এবং খণ্ডকালীন সম্পাদকেরও দায়িত্ব পালন করেন।
১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি “জাম‘ইয়াতু ‘উলামা-ই বাঙ্গালা” প্রতিষ্ঠানের সহ-সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯২৪ সালের ডিসেম্বরে তিনি নিজ সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ‘সত্যাগ্রহী’ প্রকাশ করেন। ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে হোসেন সোহরাওয়ার্দীর সহকারীরূপে তিনি ইনডিপেন্ডেন্ট মুসলিম পার্টির সংগঠন কার্যে আত্মনিয়োগ করেন। একই সাথে তিনি সারা বাংলায় জালসা ও ধর্মসভাগুলোতে জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতার মাধ্যমে ক্বুরআন-সুন্নাহ’র বাণী প্রচার এবং শির্ক ও বিদ‘আতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যান।
১৯৪৬ সালে রংপুরের হারাগাছ বন্দরে তিনি নিখিল বঙ্গ ও আসাম-আহলে হাদীস কনফারেন্সে গঠিত “নিখিল বঙ্গ ও আসাম জমঈয়তে আহলে হাদীস” এর সভাপতি নির্বাচিত হন। জমঈয়তের দফতর স্থাপিত হয় কলকাতার মিসরীগঞ্জে। ১৯৪৮ সালে দফতর পাবনা শহরে স্থানান্তরিত হলে সংগঠনের নাম হয় “পূর্ব পাকিস্তান জমঈয়তে আহলে হাদীস”। তাঁরই প্রচেষ্টায় ১৯৪৯ সালে “আল হাদীস প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিশিং হাউজ” নামে জমঈয়তের নিজস্ব একটি মুদ্রণালয় ও প্রকাশনী প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয় এবং একই সালে জমঈয়তের মুখপাত্ররূপে তাঁর সুুযোগ্য সম্পাদনায় মাসিক ‘তর্জুমানুল হাদীস’ আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫৬ সালের শেষের দিকে জমঈয়তের দফতর ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়। ১৯৫৭ সালের ৭ই অক্টোবর তাঁর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ‘আরাফাত’ আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫৮ সালে তাঁরই উদ্যোগে ঢাকাস্থ নাজিরাবাজারে ‘মাদরাসাতুল হাদীস’ প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইসলামী বিষয়ে বিভিন্ন ভাষায় তাঁর রচিত (প্রকাশিত-অপ্রকাশিত) অর্ধ শতাধিক গ্রন্থ রয়েছে। তাঁর জীবনব্যাপী ইসলামী সাহিত্য সাধনা ও গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬০ সালে বাংলা একাডেমি তাঁকে সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করে। তিনি ১৯৬০ সালের ৪ঠা জুন পরলোকগমন করেন। আল্লাহ এই নির্ভীক সিপাহসালারকে উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং তাঁকে সর্বোচ্চ জান্নাতে দাখিল করুন। আমীন। সংগৃহীত: ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহেল কাফী আল-কুরাইশী (রাহিমাহুল্লাহ), ফিরকাবন্দী বনাম অনুসরণীয় ইমামগণের নীতি; পৃষ্ঠা: ৬; তৃতীয় সংস্করণ (জুন, ২০০৬ খ্রি.)।
·
‘আল্লামাহ কুরাইশীর বক্তব্য:
বাংলাদেশে আহলেহাদীস আন্দোলনের অগ্রবর্তী সেনানায়ক প্রথিতযশা সাহিত্যিক সাবেক পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) জমঈয়তে আহলে হাদীসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আশ-শাইখ আল-‘আল্লামাহ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফী আল-কুরায়শী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৯৬০ খ্রি.] প্রণীত একটি ঐতিহাসিক পুস্তিকার নাম—‘একটি পত্রের জওয়াব’। এই পুস্তিকায় ‘আল্লামাহ কুরাইশী পাক-ভারত উপমহাদেশে মুসলিম ব্রাদারহুডেরই নব্যরূপ জামায়াতে ইসলামীর মতাদর্শ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
১৯৫৭ সালে গাইবান্ধার জনৈক আহলেহাদীস মৌলবি সাহেব ‘আল্লামাহ কুরায়শীকে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদানের উপদেশ খয়রাত করে একটি পত্র লিখেছিলেন। যার জবাবস্বরূপ ‘আল্লামাহ কুরায়শী তাঁর সম্পাদিত মাসিক তর্জুমানুল হাদীসে দুটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন।
তর্জুমানের ৭ম বর্ষ ৩য় সংখ্যার (ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৭) ১৪৩-১৪৮ পৃষ্ঠায় এবং ৬ষ্ঠ বর্ষ ১ম সংখ্যার (শ্রাবণ, ১৩৬২) ৪১-৪৫ পৃষ্ঠায় প্রবন্ধ দুটি প্রকাশিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ‘যুবসংঘ প্রকাশনী’ (রাণীবাজার, রাজশাহী) ১৯৯৩ সালের মার্চে প্রবন্ধ দুটি পুস্তক আকারে প্রকাশ করে। আমি ‘যুবসংঘ প্রকাশনী’ কর্তৃক প্রকাশিত পুস্তিকাটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ অবিকৃতরূপে হুবহু পেশ করার প্রয়াস পাব, ইনশাআল্লাহ।
আশ-শাইখ আল-‘আল্লামাহ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফী আল-কুরায়শী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন—
১. পত্রলেখক বলিতে চাহিয়াছেন, এইরূপ অন্ধকার পরিবেশে তিনি অকস্মাৎ আলোকের সন্ধান পাইলেন। পাক পাঞ্জাবের সামরিক আদালত মওলানা মওদুদীকে ফাঁসীর হুকুম দেওয়ায় দেশব্যাপী যে আন্দোলন সৃষ্টি হইয়াছিল এবং পূর্ব পাকিস্তান জমঈয়তে আহলেহাদীছের মুখপাত্র “তর্জুমানের পৃষ্ঠায় সম্পাদকের জোরাল মুক্তি দাবী” দর্শন করিয়া এবং তর্জুমান সম্পাদকের কাঁদ কাঁদ সুরে “মওদুদীকে বর্তমান যুগের মুজাদদিদ বলা চলে” শ্রবণ করিয়া এবং পাঞ্জাবের কারাগারে অন্যান্য বর্ষীয়ান উলামার লাঞ্ছনার বিবরণ অবগত হইয়া তিনি মওদুদী ছাহেবের আন্দোলনের প্রতি আকৃষ্ট হইয়া পড়িলেন।
আমার বক্তব্য এই যে, কোন ব্যক্তি ফাঁসীর আসামী হইলে এবং তজ্জন্য দেশে তোলপাড় ঘটিলেই তাঁহার প্রবর্তিত দলে প্রবেশ করিতে হইবে এবং নিজের জামাআতকে পরিত্যাগ করিতে হইবে এরূপ কথা আলেম দূরে থাক, সাধারণ বুদ্ধি বিবেচনা সম্পন্ন লোকও উচ্চারণ করিতে পারে না। (পৃ. ৭-৮)
২. মওলানা মওদুদীকে আমি মুজাদদিদ বলিয়াছি এরূপ কথা আমি স্মরণ করিতে অসমর্থ। আর কেহ মুজাদদিদ হইতে পারে; এরূপ সম্ভাবনা এমনকি নিশ্চয়তা প্রদান করিলেই যে তাঁহাকে ইমামতের একচ্ছত্র সিংহাসন প্রদান করিতে হইবে, ইহাও মূর্খতাব্যঞ্জক উক্তি। (পৃ. ৮)

কষ্টিপাথরে ব্রাদারহুড, ইখুয়ানুল মুসলিমীনের (জামাতী ইসলামী) ব্যাপারে সালাফী আলেমদের ফতোয়া। পর্ব-০১

ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ)
Image may contain: text
·
শাইখ পরিচিতি:
ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) বিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ ছিলেন। তিনি একাধারে ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ ছিলেন। তিনি স্বীয় যুগে আহলুস সুন্নাহ’র ইমাম এবং শাইখুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন ছিলেন। তিনি ১৩৩০ হিজরী মোতাবেক ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে সৌদি আরবের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শৈশবে তাঁর দৃষ্টিশক্তি হারান। কিন্তু ‘ইলম অর্জনের অদম্য ইচ্ছা তাঁকে ‘ইলম অর্জন করা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি। তিনি অনেক বড়ো বড়ো ‘আলিমের নিকট থেকে ‘ইলম অর্জন করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন—ইমাম সা‘দ বিন হামাদ বিন ‘আতীক্ব, ইমাম হামাদ বিন ফারিস, ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আলুশ শাইখ প্রমুখ (রাহিমাহুমুল্লাহ)।
তিনি একাধারে সৌদি আরবের ‘ইলমী গবেষণা ও ফাতাওয়া প্রদানের স্থায়ী কমিটির প্রধান, সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রধান, রাবেতায়ে ‘আলাম আল-ইসলামীর প্রাতিষ্ঠানিক বোর্ডের প্রধান, রাবেতার ফিক্বহ একাডেমির প্রধান এবং মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের পদ অলংকৃত করেছিলেন।
ইমাম মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন, “নিশ্চয় আশ-শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয (রাহিমাহুল্লাহ) শ্রেষ্ঠ ‘আলিমদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। আমরা মহান আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন জান্নাতকে তাঁর আবাসস্থল হিসেবে নির্ধারণ করেন।” [শাইখ ড. ‘আব্দুল ‘আযীয আস-সাদহান (হাফিযাহুল্লাহ), আল-ইমাম আল-আলবানী দুরূস ওয়া মাওয়াক্বিফ ওয়া ‘ইবার; পৃষ্ঠা: ২৬২; দারুত তাওহীদ, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৯ হি./২০০৮ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস এবং বিগত শতাব্দীর মুজাদ্দিদ শাইখুল মাগরিব ইমাম মুহাম্মাদ তাক্বিউদ্দীন হিলালী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪০৭ হি./১৯৮৭ খ্রি.] ইমাম ইবনু বাযকে উদ্দেশ্য করে লেখা কবিতায় বলেছেন, “ ‘ইলম ও আখলাকে আমি এই যুগে তাঁর নজির দেখিনি, যে আখলাকের সৌরভ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি ফতোয়া প্রদানে একজন মুহাক্বক্বিক্ব ইমামে পরিণত হয়েছেন, আর জটিল সমস্যাগুলো তাঁর কাছে পরিণত হয়েছে সহজ বিষয়ে।” [আর-রাসাইলুল মুতাবাদালাহ বাইনাশ শাইখ ইবনি বায ওয়াল ‘উলামা; পৃষ্ঠা: ৩২৯; গৃহীত: https://tinyurl.com/ycxf9q9k]
ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] কে ইমাম ইবনু বায এবং ইমাম আলবানী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “নিশ্চয় তাঁরা দুজন—হাদীস, আল্লাহ’র দিকে আহ্বান এবং বিদ‘আতীদের সাথে লড়াই করার ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠ দুজন ‘আলিম।” [দ্র.: https://m.youtube.com/watch?v=eYz7WEE8LEY (অডিয়ো ক্লিপ)]
ইয়েমেনের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২২ হি./২০০১ খ্রি.] কে জিজ্ঞেস করা হয় যে, বর্তমান যুগে ফিক্বহ ও হাদীসের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জ্ঞানী কে? তিনি উত্তরে বলেন, “আমার কাছে স্পষ্ট হয়েছে যে, এই যুগে ফিক্বহের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জ্ঞানী শাইখ ইবনু বায (হাফিযাহুল্লাহ)। অনুরূপভাবে এ যুগে হাদীসের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জ্ঞানী শাইখ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী (হাফিযাহুল্লাহ)।” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), ইজাবাতুস সা’ইল ‘আলা আহাম্মিল মাসাইল; পৃষ্ঠা: ৫৫৯-৫৬০; দারুল হারামাইন, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি. (২য় প্রকাশ)]
এমনকি ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২২ হি./২০০১ খ্রি.] “'আযাউল উম্মাহ বি ওয়াফাতি জাবালিস সুন্নাহ (সুন্নাহ’র পর্বতের মৃত্যুতে উম্মাহকে সান্ত্বনাদান)”– শীর্ষক অডিয়ো ক্লিপে বলেছেন, “শাইখ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) তাবি‘ঈ ‘আব্দুল্লাহ বিন মুবারাকের মতো!” [sahab.net]
মাসজিদে হারাম ও মাসজিদে নববীর ধর্মীয় তত্ত্বাবধানের জন্য গঠিত সাধারণ পরিচালনা পর্ষদের সাবেক প্রধান এবং সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সাবেক সদস্য আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম মুহাম্মাদ বিন ‘আব্দুল্লাহ আস-সুবাইল (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪৩৪ হি.] বলেছেন, “আজ মুসলিম উম্মাহ– উম্মাহ’র শ্রেষ্ঠ ‘আলিমের মৃত্যুতে বিপদগ্রস্ত হয়েছে। যিনি বর্তমান যুগে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ইমাম, তাঁর যুগের শ্রেষ্ঠ ‘আল্লামাহ, তাঁর সময়ের শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, ‘ইলম ও প্রজ্ঞা অনুযায়ী আল্লাহ’র দিকে আহ্বানকারী দা‘ঈ, হক ও হিদায়াতের পথে জিহাদকারী মুজাহিদ সামাহাতুল ‘আল্লামাতিল জালীল আশ-শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয বিন বায।” [আল-মাদীনাহ পত্রিকা, সংখ্যা: ১৩১৭৪; গৃহীত: নাসির আয-যাহরানী, ইমামুল ‘আসর; পৃষ্ঠা: ২৬৩]
সৌদি আরবের ফতোয়া প্রদানকারী স্থায়ী কমিটি এবং সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] বলেছেন, “আমাদের শীর্ষস্থানীয় ‘আলিমদের অন্তর্ভুক্ত হলেন সামাহাতুশ শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয বিন বায (হাফিযাহুল্লাহ)। তিনি এমন একজন ব্যক্তি, যাকে গভীর জ্ঞান, সৎকর্মপরায়নতা, আল্লাহ’র দিকে আহ্বান, ইখলাস, সততা এবং সকলের কাছে সুবিদিত কল্যাণকর বিষয়াদি দিয়ে তাঁর উপর মহান আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন। আল-হামদুলিল্লাহ, তাঁর নিকট থেকে অসংখ্য কল্যাণকর বিষয় প্রকাশিত হয়েছে, যেমন: গ্রন্থাবলি, লিখনসমগ্র, অডিয়ো ক্লিপস, দারসসমগ্র প্রভৃতি।” [দ্র.: https://m.youtube.com/watch?v=Wbec9OgsEFY (অডিয়ো ক্লিপ)]
সৌদি আরবের বর্তমান গ্র্যান্ড মুফতী আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৬২ হি./১৯৪৩ খ্রি.] বলেছেন, “আমরা সুন্নাহ’র পর্বতকে হারালাম। তাঁর মৃত্যুসংবাদ মুসলিমদের মধ্যে বিদ্যুদ্বেগে ছড়িয়ে পড়েছে। কেননা বর্তমান যুগে মহান আল্লাহ’র পরে তিনিই ছিলেন একমাত্র আশ্রয়স্থল, যাঁর উপর মুসলিমরা সকল ক্ষেত্রে এবং ফাতওয়া প্রদান, দা‘ওয়াত ও সঠিক নির্দেশনার ক্ষেত্রে নির্ভর করত।” [নাসির আয-যাহরানী, ইমামুল ‘আসর; পৃষ্ঠা: ১৫৯]

Tuesday 12 March 2019

আকীদাহ চারটি মূলনীতিঃ



আরশে আযীমের প্রতিপালক মহান আল্লাহর নিকট দুআ করি, তিনি যেন আপনাকে দুনিয়া ও আখেরাতে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেন,আপনাকে বরকতময় করেন আপনি যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, আপনাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন, যাকে কিছু প্রদান করা হলে সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, পরীক্ষায় পড়লে ধৈর্য ধারণ করে এবং গুনাহ করলে ক্ষমা প্রার্থনা করে। কারণ এই তিনটি বিষয় হচ্ছে সৌভাগ্যের প্রতীক।
জেনে নিন-আল্লাহ আপনাকে তাঁর আনুগত্যের পথ দেখাক- নিষ্ঠাবান মিল্লাতে ইব্রাহীম হচ্ছে, আপনি এক আল্লাহর ইবাদত করবেন নিষ্ঠার সাথে। আর আল্লাহ তাআ’লা সকল মানুষকে এরই আদেশ করেছেন এবং এর কারণে তাদের সৃষ্টি করেছেন। যেমন মহান আল্লাহ বলেন :
وَ مَا خَلَقْتُ الجنَّ والإنْسَ إلاّ لِيَعْبُدُونِ
““আমি জিন ও মানুষকে কেবল আমার ইবাদতের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছি।”[যারিয়াত/৫৬]
অতঃপর যখন জানতে পারলেন যে, আল্লাহ তায়ালা আপনাকে তাঁর ইবাদতের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন, তখন এটাও জেনে নিন, যে তাওহীদ ব্যতীত ইবাদত, ইবাদত হিসেবে গণ্য নয়, যেমন পবিত্রতা ব্যতীত নামায, নামায হিসাবে গণ্য নয়। ইবাদতে শিরক প্রবেশ করলে তা নষ্ট হয়ে যায়, যেমন পবিত্রতার পর বায়ু নির্গত হলে তা বিনষ্ট হয়।
অতঃপর যখন জানলেন যে, যখন ইবাদতে শিরকের সংমিশ্রণ হয় তখন আমলকে নষ্ট করে দেয় এবং সে ব্যক্তি চিরস্থায়ী জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। তাই এই বিষয়টি জানা জরুরী যেন আল্লাহ আপনাকে এই বেড়াজাল থেকে মুক্তি দেন। আর তা হচ্ছে আল্লাহর সাথে অংশী স্থাপন করা যার সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
إنَّ اللهَ لا يَغْفِرُ أن يُشْرَكَ بِهِ ، و يَغْفِرُ مَا دُونَ ذالكَ لِمن يشاَءُ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী স্থাপন করলে তাকে ক্ষমা করবেন না এবং তদ্ব্যতীত যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।” [ নিসা/৪৮] আর এটা চারটি মূলনীতি জানার মাধ্যমে হবে, যা আল্লাহ তায়ালা তাঁর কিতাবে বর্ণনা করেছেন :
প্রথম মূলনীতি: জানা প্রয়োজন যে, ঐ সমস্ত কাফের যাদের সাথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুদ্ধ করেছিলেন, তারা স্বীকার করত যে আল্লাহ তায়ালাই সৃষ্টিকর্তা এবং পরিচালক। তবুও এই স্বীকারোক্তি তাদের ইসলামের গণ্ডিতে প্রবেশ করায় নি।এর প্রমাণে আল্লাহর বাণী:
قُلْ مَن يَرزُقُكُمْ من السماءِ والأرْضِ أمّن يملكُ السمْعَ والأبْصارَ وَ مَن يُخْرِجُ الحَيَّ مِنَ المَيِّتِ وَيُخْرِجُ المَيِّتَ مِنَ الحَيِّ وَ مَن يُدَبِّرُ الأمْرَ ، فَسَيَقُولُونَ اللهُ ، فَقُلْ أفَلا تَتَّقُونَ
“তুমি বল : তিনি কে, যিনি তোমাদেরকে আসমান ও জমিন হতে রিজিক দিয়ে থাকেন? অথবা কে তিনি, যিনি কর্ণ ও চক্ষুসমূহের উপর পূর্ণ অধিকার রাখেন? আর তিনি কে, যিনি জীবন্তকে প্রাণহীন হতে বের করেন, আর প্রাণহীনকে জীবন্ত হতে বের করেন? আর তিনি কে যিনি সমস্ত কাজ পরিচালনা করেন? তখন অবশ্যই তারা বলবে যে, আল্লাহ। অতএব, তুমি বল: তবে কেন তোমরা (শিরক হতে) বিরত থাকছ না? ” (সূরা ইউনুস: ৩১)
দ্বিতীয় মূলনীতি: তারা বলে: আমরা তাদের নিকট প্রার্থনা করি না এবং তাদের শরণাপন্ন হই না কিন্তু নৈকট্য এবং সুপারিশ পাওয়ার আশায়।
নৈকট্যের প্রমাণে আল্লাহর বাণী :
وَالذيْنَ اتَّخَذُوا مِنْ دُونِه أولِيَاءَ مَا نَعْبُدُهُمْ إلاَّ لِيُقَرِّبُوْنَا إلى اللهِ زُلْفَى إنَّ اللهَ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ فِي مَا هُمْ فِيْهِ يَخْتَلِفُوْنَ ، إنَّ اللهَ لا يَهْدِى مَنْ هُوَ كَاذِبٌ كَفَّارٌ
“যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করে, (তারা বলে) আমরা তো এদের পূজা এজন্যেই করি যে, এরা আমাদের আল্লাহর সান্নিধ্যে এনে দিবে। তারা যে বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে আল্লাহ তার ফায়সালা করে দিবেন । যে মিথ্যাবাদী ও কাফির , আল্লাহ তাকে সৎ পথে পরিচালিত করেন না।” [জুমার/৩] শাফায়াতের প্রমাণে আল্লাহর বাণী : “আর তারা আল্লাহ ছাড়া এমন বস্তুসমূহেরও ইবাদত করে যারা তাদের কোন অপকারও করতে পারে না এবং তাদের কোন উপকারও করতে পারে না, আর তারা বলে: এরা হচ্ছে আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশ কারী ।” [ ইউনুস/১৮] সুপারিশ বা শাফাআত দুই প্রকার। যথা: ক) অস্বীকৃত খ) স্বীকৃত।
ক- অস্বীকৃত সুপারিশ হচ্ছে, যা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নিকট চাওয়া হয়, যার ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নেই। যেমন আল্লাহ বলেন:

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...