Tuesday 30 December 2014

ইসলামের‬ দৃষ্টিতে থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ১লা জানুয়ারি (নববর্ষ) পালন



বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
‪#‎থার্টি_ফার্স্ট_নাইট_ও_হ্যাপি_নিউ_ইয়ার‬
✔অনুগ্রহপূর্বক সবাই শেয়ার করুন।
‪#‎মহান‬ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক-এর নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে ইসলাম।
‪#‎ইসলামের‬ দৃষ্টিতে থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ১লা জানুয়ারি (নববর্ষ) পালনঃ
ইসলাম হচ্ছে আল্লাহ তাআলা তাঁর পক্ষ থেকে মুহাম্মাদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ওহীর মাধ্যমে নাযিলকৃত, একমাত্র পরিপূর্ণ, সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত, নিয়ামতপূর্ণ, অপরিবর্তনীয় ও মনোনীত দ্বীন। যা ক্বিয়ামত পর্যন্ত বলবত থাকবে।
‪#‎যে‬ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা “সূরা আলে ইমরানের” ১৯ নম্বর আয়াত -এ বলেন, “নিশ্চয়ই ইসলামই আল্লাহ পাক-এর কাছে একমাত্র দ্বীন।”
‪#‎আল্লাহ‬ তাআলা “সূরা মায়িদার” ৩ নম্বর আয়াতে আরো ইরশাদ করেন, “আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে (দ্বীন ইসলামকে) কামিল বা পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত তামাম বা পূর্ণ করে দিলাম এবং আমি তোমাদের দ্বীন ইসলামের প্রতি সন্তুষ্ট রইলাম।”
#আল্লাহ তাআলা দ্বীন ইসলামকে শুধুমাত্র পরিপূর্ণ সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত ও নিয়ামতপূর্ণ করেই নাযিল করেননি সাথে সাথে দ্বীন ইসলামকে মনোনীতও করেছেন। তাই দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য সমস্ত ধর্ম যা ওহী দ্বারা নাযিল করা হয়েছিল যেমন, তাওরাত, যাবূর, ইনজীল ও ১০০ খানা ছহীফা এবং মানব রচিত মতবাদ যা পূর্বে ছিল এবং বর্তমানে যা রয়েছে ও ভবিষ্যতে যা হবে সেগুলোকে তিনি বাতিল ঘোষণা করেছেন।

নববর্ষ [থার্টিফাস্ট নাইট] ইহুদি, খৃস্টান ও মুশরিকদের উৎসব




নববর্ষ [থার্টিফাস্ট নাইট] ইহুদি, খৃস্টান ও মুশরিকদের উৎসব উদযাপন করা হারাম পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেন : “হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যথাযথ ভয়। আর তোমরা মুসলিম হওয়া ছাড়া মারা যেও না”। ----------[সূরা আলে-ইমরান: (১০২)] মুসলিম হতে হলে মহান আল্লাহ তা'আলা যা আদেশ করেছেন তা পালন করতে হবে আর যা নিষেধ করেছেন তা থাকে বিরত থাকতে হবে এবং মহান আল্লাহ্‌ তা'আলার সন্তুষ্টি অর্জনই আমাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হতে হবে। যারা আমাদের ধর্ম কে মানে না আল্লাহ্‌কে বিশ্বাস করে না তাদের উৎসব, রীতিনীতি ও কালচার পালন করে তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহন ও সমর্থন করে আপনি নিজেকে মুসলিম দাবি করছেন???? পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেন : “হে মুমিনগণ, তোমরা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যারা তোমাদের দীনকে উপহাস ও খেল-তামাশারূপে গ্রহণ করেছে, তাদের মধ্য থেকে তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে ও কাফিরদেরকে। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক”। ----------[সূরা মায়েদা: (১৫৭)] “হে মুমিনগণ, ইহুদি ও নাসারাদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে

মুখমণ্ডল কি হিজাবের অংশ নয়?



বর্তমান বিশ্বে হিজাব পশ্চিমা রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাথাব্যথার বিষয়। তারা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন হিসেবে চিহ্নিত করে হিজাবের প্রসারকে বাধাগ্রস্থ করতে নানা কৌশল ও প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। এর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাক ও নিকোলা সারকোজি, সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জ্যাক স্ট্র, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টসহ বহু রাজনীতি ও শিক্ষাবিদসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ পেশার লোক। 

২০০২ সালে সাবিনা নামক এক স্কুলছাত্রী উত্তর লন্ডনের ডেনবিগ হাইস্কুল থেকে বহিস্কৃত হন; জার্মানিতে স্কুল শিক্ষিকা ফিরিশতা লুদিন চাকুরি হারান হিজাবের সপক্ষে কথা বলায়। ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে হিজাব নিষিদ্ধ করে আইন পাশ করে ফ্রান্স। সুইডেনে হিজাব সম্মত পোশাক পরার অপরাধে চাকরি হারাতে হয় অনেক নারীকে। ২০০২ সালের ডিসেম্বরে সুইডিশ টিভি হিজাব পরা এক মুসলিম উপস্থাপিকার উপস্থাপনায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তেমনি অনেক দেশেই হিজাবকে ‘আইনী লড়াই’ এবং নানা রকম বাধা ও প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে।

মিথ্যা বলা হারাম



মহান আল্লাহ বলেন
 ﴿ وَلَا تَقۡفُ مَا لَيۡسَ لَكَ بِهِۦ عِلۡمٌۚ  ٣٦ ﴾ [الاسراء: ٣٦
অর্থাৎ যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হইয়ো না। (সূরা ইসরা ৩৬ আয়াত)
তিনি আরও বলেছেন
 ﴿ مَّا يَلۡفِظُ مِن قَوۡلٍ إِلَّا لَدَيۡهِ رَقِيبٌ عَتِيدٞ ١٨ ﴾ [ق: ١٨] 
অর্থাৎ মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করুক না কেন তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে। [ক্বাফ ১৮ আয়াত)

হাদীসসমূহ:

1/1550 وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «إنَّ الصِّدْقَ يَهْدِي إِلَى البِرِّ، وَإِنَّ البِرَّ يَهْدِي إِلَى الجَنَّةِ، وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَصْدُقُ حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللهِ صِدِّيقاً . وَإِنَّ الكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الفُجُورِ، وَإِنَّ الفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ، وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَكْذِبُ حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللهِ كَذَّاباً»متفقٌ عَلَيْهِ
১/১৫৫০। ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিততিনি বলেনরসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় সত্যবাদিতা পুণ্যের পথ দেখায়। আর পুণ্য জান্নাতের দিকে পথ নির্দেশনা করে। আর মানুষ সত্য কথা বলতে থাকেশেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে মহা-সত্যবাদীরূপে লিপিবদ্ধ করা হয়। আর নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদিতা নির্লজ্জতা ও পাপাচারের দিকে নিয়ে যায়। আর পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা বলতে থাকেশেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে মহা-মিথ্যাবাদী’ রূপে লিপিবদ্ধ করা হয়। (বুখারী ও মুসলিম)  [1]

Monday 29 December 2014

নবী জীবনী



মুর্তি পূজাই ছিল আরব দেশে প্রচলিত ধর্ম। সত্য ধর্মের পরিপন্থী এ ধরনের মূর্তিপূজাবাদ অবলম্বন করার কারণে তাদরে এ যুগকে আইয়্যামে জাহেলিয়াত তথা মুর্খতার যুগ বলা হয়। লাত, উযযা, মানাত ও হুবল ছিল তাদের প্রসিদ্ধ উপাস্যগুলোর অন্যতম। আরবের কিছু লোক ইয়াহূদী বা খৃষ্টান ধর্ম বা অগ্নি পুজকদের ধর্ম গ্রহণ করেছিল। আবার স্বল্প সংখ্যক লোক ছিল যারা ইবরাহিম আলাইহিস সালাম এর প্রদর্শিত পথে ছিল অবিচল, আঁকড়ে ধরেছিল তাঁর আদর্শ। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বেদুঈনরা সম্পূর্ণভাবে পশু সম্পদের উপর নির্ভর করত। আর নগরবাসীদের নিকট অর্থনৈতিক জীবনেরও ভিত্তি ছিল কৃষি কাজ ও ব্যবসা-বাণিজ্য। ইসলাম আবির্ভাবের পূর্বে আরব দেশে মক্কাই ছিল বৃহত্তর বাণিজ্য নগরী। অন্যান্য বিভিন্ন অঞ্চলে উন্নয়ন ও নাগরিক সভ্যতা ছিল। সামাজিক দিক দিয়ে যুলুম সবর্ত্র বিরাজমান ছিল, সেখানে দুর্বলের ছিলনা কোন অধিকার। কন্যা সন্তানকে জীবদ্দশায় দাফন করা হতো। মান-ইজ্জত ও সম্মানকে করা হতো পদদলিত। সবল দুর্বলের অধিকার হরণ করতো। বহুবিবাহ প্রথার কোন সীমা ছিল না। ব্যভিচার অবাধে চলতো। নগন্য ও তুচ্চ কারণে যুদ্ধের অগ্নিশিখা জ্বলে উঠতো। সংক্ষেপে বলতে গেলে-ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে আরব দ্বীপের সার্বিক পরিস্থিতি এ ধরনের ভয়াবহই ছিল।

ইবনুয্‌যাবিহাঈন

রাসূলের দাদা আব্দুল মুত্তালিবের সাথে কুরাইশরা ছেলে-সন্তান ও সম্পদের গৌরব ও অহংকার প্রদর্শন করতো। তাই তিনি মানত করলেন যে, আল্লাহ যদি তাকে দশ জন ছেলে দান করেন তাহলে তিনি এক জনকে কথিত ইলাহের নৈকট্য প্রাপ্তির লক্ষ্যে যবেহ করবেন। তাঁর সাধ বাস্তব রূপ পেল। দশ জন ছেলে জুটলো তাঁর ভাগ্যে। তাদের একজন ছিলেন নবীর পিতা আব্দুল্লাহ। আব্দুল মুত্তালিব মানব পুরোন করতে চাইলে লোকজন তাকে বাধা দেয়, যাতে এটা মানুষের মধ্যে প্রথা না হয়ে যায়। অতঃপর সবাই আব্দুল্লাহ এবং দশটি উটের মধ্যে লটারীর তীর নিক্ষেপ করতে সম্মত হয়। যদি লটারীতে আব্দুল্লাহ নাম আসে তাহলে প্রতিবার ১০টি করে উট সংখ্যায় বৃদ্ধি করা হবে। লটারী বারংবার আব্দুল্লাহর নামে আসতে থাকে। দশমবারে লটারী উটের নামে আসে যখন তার সংখ্যা ১০০ তে দাড়ায়। ফলে তাঁরা উট যবেহ করল এবং রক্ষা পেল আব্দুল্লাহ। আব্দুল্লাহ তাঁর পিতা আব্দুল মুত্তালিবের সব চাইতে প্রিয় ছেলে ছিল। আব্দুল্লাহ তরুণ্যের সীমায় পা রাখলে তাঁর পিতা বনী যোহরা গোত্রের আমেনা বিনতে ওয়াহাব নামক এক তরুণীর সাথে তাঁর বিয়ের ব্যবস্থা করে। বিয়ের পর আমেনা অন্তঃসত্বা হবার তিন মাস পর আব্দুল্লাহ এক বানিজ্যিক কাফেলার সাথে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে রাওয়ানা হয়। কিন্তু প্রত্যাবর্তনের পথে রোগাক্রান্ত হয়ে মদিনায় বনী নাজ্জার গোত্রে তাঁর মামাদের কাছে অবস্থান করে এবং  সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁকে সমাধিস্থ করা হয় সেখানে। এদিকে গর্ভের মাসগুলো পুরো হয়ে প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসলো। আমেনা অবশেষে সন্তান প্রসব করলো। আর এ ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হয় ৫৭১ ইং এর ১২ই রবিউল আওয়াল সোমবার ভোরবেলায়। উল্লেখ্য যে সে বছরেই হস্তী বাহিনীর ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল।

ইমাম বুখারী (রহ.) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী


শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু


ভূমিকা:

ইমাম বুখারী। কাল প্রবাহে একটি বিস্ময়ের নাম। স্মৃতির প্রখরতা, জ্ঞানের গভীরতা, চিন্তার বিশালতা, চারিত্রিক দৃঢ়তা, অটুট সততা আর বিশাল পর্বত সম হিম্মতের এক মূর্ত প্রতীক এই মহাপুরুষ। তিনি ইলমে হাদীসের এক বিজয়ী সম্রাট। তার সংকলিত হাদীসের মহামূল্যবান সংকলন সহীহুল বুখারী বিশুদ্ধতার ক্ষেত্রে আল্লাহর কিতাব মহা গ্রন্থ আল কুরআনের পরেই যার অবস্থান। কিয়ামত পর্যন্ত সমগ্র মুসলিম উম্মাহ তার সাধনার কাছে ঋণী। আসুন, খুব সংক্ষেপে আমরা এই মনিষীকে জানার চেষ্টা করি।

নামজন্ম ও বংশ পরিচয়ঃ

তিনি হচ্ছেন সমকালীন মুহাদ্দিছদের ইমাম হাফেয আবু আব্দুল্লাহ্ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরা বিন বারদিযবাহ আলজু’ফী। তাঁকে আমীরুল মুমিনীন ফীল হাদীছও বলা হয়। ১৯৪ হিঃ সালের ১৩ই শাওয়াল জুমআর রাত্রিতে তিনি বুখারায় জন্ম গ্রহণ করেন।

শৈশব কাল ও জ্ঞান অর্জনঃ

শিশুকালেই তাঁর পিতা ইন্তেকাল করেন। পিতার মৃত্যুর পর মাতার তত্বাবধানে তিনি প্রতিপালিত হন। দশ বছর বয়সে উপনীত হয়ে তিনি জ্ঞান চর্চার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন। অল্প বয়সেই তিনি পবিত্র কুরআন মুখস্ত করেন। শৈশব কালে মক্তবে লেখাপড়া করার সময়ই আল্লাহ্ তাঁর অন্তরে হাদীছ মুখস্ত ও তা সংরক্ষণ করার প্রতি আগ্রহ ও ভালবাসা সৃষ্টি করে দেন। ১৬ বছর বয়সেই হাদীছের প্রসিদ্ধ কিতাবগুলো পাঠ সমাপ্ত করেন। তাঁর জীবনীতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিনি ছোট থাকতেই অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। এতে তাঁর মাতা আল্লাহর কাছে খুব ক্রন্দন করলেন এবং স্বীয় সন্তানের দৃষ্টি শক্তি ফেরত দেয়ার জন্য তাঁর কাছে অবিরাম দুআ করে যাচ্ছিলেন।
হঠাৎ এক দিন তাঁর মা স্বপ্নে দেখলেন যে আল্লাহর নবী ইবরাহীম (আঃ) তাঁকে লক্ষ্য করে বলছেনঃ ওহে! তোমার সন্তানের দৃষ্টি শক্তি ফেরত চেয়ে আল্লাহর দরবারে তোমার ক্রন্দনের কারণে তিনি তোমার সন্তানের দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন। তখন তিনি প্রকৃত ঘটনা যাচাই করার জন্য স্বীয় সন্তানের কাছে গিয়ে দেখেন সত্যিই তাঁর সন্তান সম্পূর্ণ দৃষ্টি শক্তি ফেরত পেয়েছে।

ইমাম বুখারীর স্মরণ শক্তির প্রখরতাঃ

গুহাতে আশ্রয় গ্রহণকারী তিন ব্যক্তির গল্প



عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ- رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا- قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ- صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ- يَقُوْلُ : اِنْطَلَقَ ثَلَاثَةُ رَهْطٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكَمُ ْحَتّى أوَوا الْمَبِيْتَ إلى غَارٍ فَدَخَلُوْهُ، فَانْحَدَرَتْ صَخْرَةٌ مِنَ الْجَبَلِ، فَسَدَّتْ عَلَيْهِمُ الْغَارَ، فَقَالُوْا : إنَّه لَايُنْجِيْكُمْ مِنْ هذِهِ الصَّخْرَةَِ إلَّا أنْ تَدْعُوا اللهَ بِصَالِحِ أعْمَالِكُمْ، فَقَالَ رَجُلٌ مِنْهُمْ : اللّهُمَّ كَانَ لِيْ أبْوَانِ شَيْخَانِ كَبِيْرَانِ وَكُنْتُ لَا أغْبِقُ قَبْلَهُمَا أهْلًا ولَا مَالًا، فَنَأى بِيْ فَيْ طَلَبِ شَيْئٍ يَوْمًا، فَلَمْ أرِحْ عَلَيْهِمَا حَتَّى نَامَا : فَحَلَبْتُ لَهُمَا غَبُوْقَهُمَا، فَوَجَدتُّهُمَا نَائِمَيْنِ، وَكَرِهْتُ أنْ أغْبِقَ قَبْلَهُمَا أهْلًا أوْ مَالًا، فًلَبِثْتُ - وَالْقَدْحُ عَلَى يَدِيْ- أنْتَظِرُ اِسْتِيْقَاظَهُمَا حَتّى بَرِقَ الْفَجْرُ، فَاسْتَيْقَظَا فَشَرِبَا غَبُوْقَهُمَا، اللّهُمَّ إنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيْهِ مِنْ هذِهِ الصَّخْرَةِ، فَانْفَجَرَتْ شَيْئًا لَا يَسْتَطِيْعُوْنَ الْخُرُوْجَ.
قال النبي صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ : وقال الآخَرُ : اللَّهُمَّ كَانَتْ لِيْ بِنْتُ عَمٍّ، كَانَتْ أحَبَ النَّاسِ إلَيَِّ، فَأرَدتُّهَا عَنْ نَفْسِهَا، فَامْتَنَعَتْ مِنِّيْ حَتَّى ألَّمَتْ بِهَا سَنَةٌ مِنَ السِّنِيْنَ، فَجَائتْنِيْ فَأعْطَيْتُهَا عِشْرِيْنَ وَمِائةَ دِيْنَارٍ عَلَى إن تُخَلِّيَ بَيْنِيْ وَبَيْنَ نَفْسِهَا، فَفَعَلَتْ، حَتَّى إذَا قَدَرْتُ عَلَيْهَا، قَالَتْ : لَا أحِلُّ لَكَ أنْ تَفُضَّ الْخَاتَمَ إلَّا بِحَقَّهِ، فَتَحَرَّجْتُ مِنَ الْوُقُوْعِ عَلَيْهَا، فَانْصَرَفْتُ عَنْهَا وَهِيَ أحَبُّ النَّاسِ إلَيَّ، وَتَرَكْتُ الذَّهَبَ الَّذِيِ أعْطَيْتُهَا، اللّهُمَّ إنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَافْرُجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيْهِ، فَانْفَرَجَتِ الصَّخْرَةُ، غَيْرَ أنَّهُمْ لَا يَسْتَطِيْعُوْنَ الْخُرُوْجَ مِنْهَا.
قال النبي صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ: وقَالَ الثَّالِثُ : اللّهُمَّ إنِّيْ اسْتَأجَرْتُ أجَرَاءَ، فَأعْطَيْتُهُمْ أجْرَهُمْ غَيْرَ رَجُلٍ وَاحِدٍ تَرَكَ الَّذِيْ لَهُ وَذَهَبَ، فَثَمَّرْتُ أجْرَهُ حَتّى كَثُرَتْ مِنْهُ الْأمْوَالُ فَجَاءَنِيْ بَعْدَ حِيْنٍ فَقَالَ : يَا عَبْدَ اللهِ، أدِّ إلَيَّ أجْرِيْ، فَقُلْتُ لَهُ : كُلُّ مَا تَرَى مِنْ أجْرِكَ، مِنَ الْإبِلِ، وَالْبَقَرِ، وَالْغَنَمِ، وَالرَّقِيْقِ، فَقَالَ : يَا عَبْدَ اللهِ، لَاتَسْتَهْزِئْ بِيْ، فَقُلْتُ : إنِّيْ لَا أسْتَهْزِئُ بِكَ فَأخَذَهُ كُلَّهُ فَاسْتَاقَهْ فَلَمْ يَتْرُكْ مِنْهُ شَيْئًا، اللَّهُمَّ فَإنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَافْرُجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيْهِ، فَانْفَرَجَتِ الصَّخْرَةُ، فَخَرَجُوْا يَمْشُوْنَ. رواه البخاري(২১১১)
আব্দুল্লাহ বিন উমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, ‘তোমাদের পূর্বের যুগে তিন ব্যক্তির একটি দল কোথাও যাত্রা করেছিল, যাত্রাপথে রাত যাপনের জন্য একটি গুহাতে তারা আগমন করে এবং তাতে প্রবেশ করে। অকস্মাৎ পাহাড় থেকে একটি পাথর খসে পড়ে এবং বন্ধ করে দেয় তাদের উপর গুহামুখ। এমন অসহায় অবস্থায় তারা বলাবলি করছিল, তোমাদেরকে এ পাথর হতে মুক্ত করতে পারবে—এমন কিছুই হয়ত নেই। তবে যদি তোমরা নিজ নিজ নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া কর—নাজাত পেতে পার।

ইউনুস ‘আলাইহিস সালামের ঘটনা




পূর্ববর্তী নবী ‘আলাইহিমুস সালামগণের ঘটনাবলিতে রয়েছে শিক্ষা ও উপদেশ। তারা আমাদের আলোকবর্তিকা ও আলোর মিছিল। আল্লাহ বলেন, 
﴿ لَقَدۡ كَانَ فِي قَصَصِهِمۡ عِبۡرَةٞ لِّأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِۗ مَا كَانَ حَدِيثٗا يُفۡتَرَىٰ وَلَٰكِن تَصۡدِيقَ ٱلَّذِي بَيۡنَ يَدَيۡهِ وَتَفۡصِيلَ كُلِّ شَيۡءٖ وَهُدٗى وَرَحۡمَةٗ لِّقَوۡمٖ يُؤۡمِنُونَ ١١١ ﴾ [يوسف: ١١١]  
‘তাদের এ কাহিনীগুলোতে অবশ্যই বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে শিক্ষা, এটা কোনো বানানো গল্প নয়, বরং তাদের পূর্ববর্তী কিতাবের সত্যায়নকারী এবং প্রতিটি বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ। আর হিদায়াত ও রহমত ঐ কওমের জন্য যারা ঈমান আনে।’ {সূরা ইউসূফ, আয়াত : ১১১}

মক্কায় যখন ঈমানদারের সংখ্যা মুষ্টিমেয়, পথ যখন দুর্গম অথচ দীর্ঘ- মুসলিমরা যখন এর শেষের দেখা পাচ্ছিল না, তখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর এসব বৃত্তান্ত নাযিল হত। এসব বৃত্তান্ত তাদের পথের শেষ উন্মোচিত করত। গন্তব্যের শেষ রেখা উদ্ভাসিত করত। তাদের সঙ্গে পথ চলত এবং তাদের হাত ধরত। এসব ছিল রাসূল ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের হৃদয় স্থির করার অভিপ্রায়ে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَكُلّٗا نَّقُصُّ عَلَيۡكَ مِنۡ أَنۢبَآءِ ٱلرُّسُلِ مَا نُثَبِّتُ بِهِۦ فُؤَادَكَۚ وَجَآءَكَ فِي هَٰذِهِ ٱلۡحَقُّ وَمَوۡعِظَةٞ وَذِكۡرَىٰ لِلۡمُؤۡمِنِينَ ١٢٠ ﴾ [هود: ١٢٠]  
‘আর রাসূলদের এসব সংবাদ আমরা তোমার কাছে বর্ণনা করছি যার দ্বারা আমরা তোমার মনকে স্থির করি আর এতে তোমার কাছে এসেছে সত্য এবং মুমিনদের জন্য উপদেশ ও স্মরণ। {সূরা হূদ, আয়াত : ১২০}

Sunday 28 December 2014

““তাবলীগ জামাত” সম্পর্কে মক্কা-মদীনার আলেমদের ফতোয়া””


=============================
>> তাবলীগ জামাতের লোকদের ‘আকিদাহ’ ও আমল কেমন?
■ সৌদি আরবের সাবেক ‘গ্র্যান্ড মুফতি’, ইমাম আবদুল আ’যিয ইবনে বায রাহিমাহুল্লাহর ফতোয়াঃ
তাবলীগ জামাতের অনুসারী লোকেরা আকিদা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখে না, কাজেই তাদের সাথে যাওয়ার অনুমতি নেই। তবে যে ব্যক্তির শরিয়ত সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখে এবং আহল সুন্নাহ ওয়াল জামাতের ‘আকিদাহ’ সম্পর্কে যার সঠিকতা নির্ণয় করার এবং তা বুঝার ক্ষমতা আছে, সেব্যক্তি তাবলিগিদের সাথে যেতে পারবে। কেননা সে (কোন আলেম বা তালিবুল ইলম যদি তাদের সাথে যায় তাহলে) তাবলিগিদেরকে সঠিক পথ দেখাতে পারবে, তাদেরকে সুন্দরভাবে উপদেশ দিতে পারবে এবং ভালো কাজে তাদের সাথে সাহায্যও করতে পারবে কারণ তাবলিগিরাই খুবই কর্মপরায়ণ। কিন্তু তাবলিগ জামাতের অনুসারীদের আরও অনেক বেশি জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন এবং ‘তাওহীদ’ ও ‘সুন্নাহ’ সম্পর্কে পথ নির্দেশনা দেবার ক্ষমতা রাখে এমন ব্যক্তিদের দরকার। আল্লাহ ইসলামকে সঠিকভাবে বুঝার ক্ষমতা দিয়ে আমাদের সবাইকে রহমত দান করুন এবং তা ধরে রাখার কাজে দৃঢ়তা দান করুন। [আমিন]
তথ্য সূত্রঃ মাযমু ফাতাওয়া আল শাইখ ইবন বাযঃ ৮/৩৩১।
=============================

Wednesday 24 December 2014

হিজরি নববর্ষ উপলক্ষে অভিনন্দন বিনিময়ের বিধান



আল্‌হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন, ওয়াসসালাতু ওয়াসসালামু 'আলা খাতামিল আম্বিয়াই ওয়াল-মুরসারীন।
সকল প্রশংসা বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ তা'আলার জন্যে। সালাত ও সালাম শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি।

অভিনন্দন বিনিময়ের কিছু উপলক্ষ :

১. পারস্পরিক স্বাভাবিক অভিনন্দন। যা একে অপরকে নতুন কোন নিয়ামত অর্জন বা মুসিবত থেকে মুক্তির প্রাক্কালে দিয়ে থাকে। উদ্দেশ্য আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন এবং একজন মুসলিম ভাইকে আনন্দিত ও উৎসাহিত করা। এটা কোন দিনক্ষণ বা মাস, বৎসরের আগমন-প্রস্থানের সাথে সম্পৃক্ত নয়। যেমন, বিবাহ, নতুন সন্তান লাভ, পরীক্ষায় কৃতকার্য, চাকুরি লাভ করা ইত্যাদি উপলক্ষে অভিনন্দন প্রদান।
এরূপ অভিনন্দন আদান-প্রদানে শরীর কোন সমস্যা নেই এটি একটি মানবিক স্বভাবগত বিষয়, বরং আশা করা যায় এতে অভিনন্দন প্রদানকারী ছাওয়াব পাবেন। কারণ তিনি একজন মুসলিম ভাইকে প্রফুল্ল করলেন। আনন্দিত করলেন। যাতে সে উৎসাহ বোধ করবে। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ রহ. এর মতে। মুবাহ কাজ ভাল নিয়তে সম্পর্কিত হলে কল্যাণ মূলক কর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়। আর মন্দ নিয়তে সম্পাদন করলে মন্দ কর্মের ভিতর গণ্য হয়।

নববর্ষ উদযাপন করার বিধান



সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য, যিনি আমাদেরকে সর্বোত্তম দীনের অনুসারী ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূলের উম্মত হওয়ার তাওফিক দান করেছেন। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক মুহাম্মদ ইব্‌ন আব্দুল্লাহর উপর, যিনি আমাদেরকে কল্যাণকর সকল পথ বাতলে দিয়েছেন এবং সকল প্রকার অনিষ্ট থেকে সতর্ক করেছেন। আরো সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক তার পরিবারবর্গ ও সাথীদের উপর, যারা তার আনীত দীন ও আদর্শকে যথাযথভাবে পরবর্তী উম্মতের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন এবং কেয়ামত পর্যন্ত যারা তাদের সুন্দরভাবে অনুসরণ করবে সবার উপর। অতঃপর:
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«بَادِرُوا بِالأَعْمَالِ فِتَنًا كَقِطَعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ، يُصْبِحُ الرَّجُلُ مُؤْمِنًا، وَيُمْسِي كَافِرًا، أَوْ يُمْسِي مُؤْمِنًا، وَيُصْبِحُ كَافِرًا، يَبِيعُ دِينَهُ بِعَرَضٍ مِنَ الدُّنْيَا»
“তোমরা অন্ধকার রাতের ঘনঘটার ন্যায় ফেতনার পূর্বে দ্রুত আমল কর, [যখন] ব্যক্তি ভোর করবে মুমিন অবস্থায়, সন্ধ্যা করবে কাফির অবস্থায়; অথবা সন্ধ্যা করবে মুমিন অবস্থায়, ভোর করবে কাফির অবস্থায়। মানুষ তার দীনকে বিক্রি করে দিবে দুনিয়ার সামান্য বিনিময়ে”।[1] আমরা বর্তমান ফেতনার সে অন্ধকারে বাস করছি, আমাদের চারপাশে ঘোর অন্ধকার: মূর্খতার অন্ধকার, কুসংস্কারের অন্ধকার, বিদআতের অন্ধকার, শিরকের অন্ধকার, সঠিক পথ খুজে পাওয়া দুষ্কর। বিশেষ করে ইহুদি-খৃস্টান ও কাফেরদের সংস্কৃতি আমাদের ঘ্রাস করে রেখেছে। আমরা তাতে গভীরভাবে মগ্ন হয়ে পড়েছি। নিজেদের দীন ও আদর্শের পরিবর্তে তাদের কালচার ও আবিষ্কৃত উপলক্ষে মেতে আছি। উম্মতের উপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যার আশঙ্কা করেছেন এবং যার থেকে তিনি উম্মতকে বারবার সতর্ক করেছেন।
আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

খৃষ্টীয় নববর্ষ উদযাপন: শরিয়ত কি বলে


উৎসব পালন জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে একটি সামগ্রিক ফিনমিনন। সুনির্দিষ্ট কোনো দিবসকে স্মরণীয় করে রাখার গভীর বাসনা থেকে, অথবা আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ, কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করা ইত্যাদি থেকে জন্ম নেয় বর্ষান্তরে উৎসব পালনের ঘটনা।
আল্লাহ তাআলা মানুষের এ স্বভাবজাত বাসনা সম্পর্কে সুপরিজ্ঞাত। তাই তিনি তা প্রকাশের মার্জিত ও সম্মানজনক পদ্ধতি বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন। সৃষ্টিসংলগ্ন সামগ্রিক প্রজ্ঞাময়তা, পৃথিবীবক্ষে মানবপ্রজন্মের দায়দায়িত্ব, আল্লাহর ইবাদত ও দাসত্বের জিম্মাদারি ইত্যাদি বিবেচনায় রেখেই তিনি দিয়েছেন উৎসব পালনে সম্মানজনক বিধান। আনাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করলেন। তাদের ক্রীড়া-উল্লাসের ছিল দুটি দিবস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,’এ দিবস দুটি কি? ‘ উত্তরে তারা বললেন,’ জাহেলী যুগে দিবস দুটি ক্রীড়া-উল্লাসে কাটাতাম।‘ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,’আল্লাহ তাআলা এ দিবস দুটির পরিবর্তে উত্তম দুটি দিবস তোমাদেরকে দিয়েছেন- ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর। [ আবু দাউদ, আহমদ]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকর রা. কে বললেন,
’হে আবু বকর! প্রত্যেক জাতিরই উৎসব রয়েছে, আর এটা আমাদের উৎসব।‘[ বুখারি ]
মুসলিম উম্মাহর ঈদের সাথে আকিদা-বিশ্বাস ও জীবনাদর্শ সংমিশ্রিত, এবং তা বিজাতীয় সকল উৎসব থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন, আকার-প্রকৃতি, ধর্মসংলগ্নতা, জাতীয় অথবা পার্থিব যে ধরনেরই তা হোক না কেন।
পঁচিশে ডিসেম্বর থেকে পৃথিবীময় শুরু হয় খৃষ্টীয় উৎসব যা একত্রিশ ডিসেম্বর নববর্ষীয় মহোৎসবের মাধ্যমে শেষ হয়।
আর মুসলমানরা, সজ্ঞানে অথবা অবচেতনভাবে, আল্লাহ তাদেরকে যে সম্মান ও বৈশিষ্ট্য দিয়েছেন, তা বিশ্রুত হয়ে, এ উৎসবে অংশ নিয়ে থাকে।
বহু বিভিন্ন শরয়ি টেক্সট রয়েছে যা উম্মতে মুহাম্মদীর আলাদা বৈশিষ্ট্যের কথা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে এবং অন্যান্য জাতি থেকে তাদেরকে যে স্বতন্ত্রিকতা ও উন্নত অবস্থান নিয়ে চলমান থাকতে হবে সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেয়।
আর এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। কেননা এ উম্মত সর্বশেষ ঐশীবার্তাবহক জাতি। যাদের নবী হলেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং পবিত্র গ্রন্থ হল হল মহাগ্রন্থ আল কুরআন।
আল্লাহ তাআলা এ উম্মতকে সর্বোচ্চ সৌন্দর্যে অভিষিক্ত করেছেন, যখন তিনি ঘোষণা দিয়েছেন:

Monday 22 December 2014

দুনিয়ার সব চেয়ে দামী প্রশ্ন ও তার উত্তর


প্রিয় ভাই ও বোন, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
পৃথিবীতে অসংখ্য-অগণিত প্রশ্নের মধ্যে কোন প্রশ্নটি সব চেয়ে দামী? উত্তর হল, সেই প্রশ্নটিই সব চেয়ে দামী যা আল্লাহ তায়ালার পরিচয় দিতে মানবতাকে সাহায্য করে। যার মাধ্যমে আল্লাহর তাওহীদ বা একত্ববাদ সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়। কারণ, এই তাওহীদের মাধ্যমেই মুসলিম জাতি অন্য সকল ধর্মের অনুসারীদের থেকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এটাই জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝে মূল বিভাজন রেখা তৈরি করে। এ জন্যই আল্লাহ তায়ালা, মানুষ, জিন, ফেরেশতা সৃষ্টি করেছেন। জান্নাত, জাহান্নাম, হিসাব-নিকাশ ইত্যাদির ব্যবস্থা রেখেছেন। যুগে যুগে আসমানী কিতাব নাজিল হয়েছে, নবী-রাসূলগণকে প্রেরণ করা হয়েছে এই তাওহীদ তথা এক আল্লাহর দাসত্বের পথে আহবানের নিমিত্তে। এই তাওহীদ বিষয়েই নিচের প্রশ্নোত্তরটি। এতে বিস্তারিতভাবে তাওহীদের পরিচয় ও প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি তা মনোযোগ সহকারে পাঠ করবেন এবং অন্যের নিকট তা পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করবেন। জাযাকুমুল্লাহ খাইরান।
প্রশ্নঃ তাওহীদ কাকে বলে? উহা কত প্রকার ও কিকি?
উত্তরঃ- তাওহীদ শব্দটি (وحد) ক্রিয়ামূল থেকে উৎপত্তি হয়েছে। এর আভিধানিক অর্থ কোন জিনিসকে একক হিসাবে নির্ধারণ করা। ‘না’ বাচক ও ‘হ্যাঁ’ বাচক উক্তি ব্যতীত এটির বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ একককৃত বস্তু ব্যতীত অন্য বস্তু হতে কোন বিধানকে অস্বীকার করে একককৃত বস্তুর জন্য তা সাব্যস্ত করা।

মাতৃগর্ভে কি আছে তা আল্লাহই ভাল জানেন


প্রশ্নঃ- (১৫) বর্তমান কালের ডাক্তারগণ মাতৃগর্ভে পুত্র সন্তান আছে না কন্যা সন্তান বলে দিতে পারে। আর কুরআনে আছে,وَ يَعْلَمُ مَا فِىْ الأَرْحَامِ অর্থঃ “মাতৃগর্ভে কি আছে তা আল্লাহই জানেন।” ইবনে জারীর মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেন যে, একজন লোক নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে জিজ্ঞাসা করল, আমার স্ত্রী কি সন্তান প্রসব করবে? তখন উক্ত আয়াত নাযিল হয়। কাতাদা থেকেও অনুরূপ তাফসীর বর্ণিত আছে। আল্লাহর বাণী, مَا فِىْ الأَرْحَامِ “গর্ভে যা আছে” এ কথাটি ব্যাপক। এ ব্যাপকতা ভঙ্গকারী বিশেষ কোন দলীল আছে কি? অর্থাৎ কোন অবস্থাতে আল্লাহ ছাড়া অন্যরাও কি মাতৃগর্ভের অবস্থা সম্পর্কে খবর রাখতে পারে?

উত্তরঃ- উপরের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে আমি বলতে চাই যে, কুরআনের কোন আয়াত কখনই বাস্তব সত্য কোন ঘটনার বিরোধী হতে পারে না। যদিও কখনো কোন ব্যাপারে প্রকাশ্যভাবে এরকম কিছু দেখা যায়, তবে হয়তো এটা হবে নিছক অবাস-ব দাবী অথবা কুরআনের আয়াতটি সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট নয়। কেননা কুরআনের প্রকাশ্য আয়াত এবং প্রকৃত বাস-ব ঘটনা উভয়টিই অকাট্য। দু’টি অকাট্য বিষয়ের মধ্যে কখনো বিরোধ হতে পারে না। প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়টি সত্য হয়ে থাকলে বলব যে, অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে তারা এখন জানতে পেরেছে যে, মাতৃগর্ভে কি আছে। বর্তমানে ডাক্তারগণ ছেলে সন্তান বা মেয়ে সন্তান হওয়া সম্পর্কে যে আগাম খবর প্রদান করে, তা যদি মিথ্যা হয় তাহলে কোন কথা নেই। আর যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলেও আয়াতের সাথে কোন দ্বন্দ্ব নেই। আয়াতটি

Sunday 21 December 2014

দুআ-মুনাজাতে নবী রাসূলের অসীলা দেয়া : একটি পর্যালোচনা



الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على أشرف الأنبياء والمرسلين محمد وعلى آله وأصحابه أجمعين.
বিভিন্ন দুআ মুনাজাতের সময় দেখা যায়, ইমাম সাহেব বা আলেম সাহেব দুআ-মুনাজাতের মধ্যে বলছেন, 'হে আল্লাহ! মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তোফায়েলে আমাদের দুআ কবুল করুন।'
অনেকে বলে থাকেন, 'হে আল্লাহ আপনার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অসীলায় আমাদের দুআ কবুল করুন।'
একটি মসজিদে মাঝে মধ্যে জুমুআর সালাত আদায় করতাম। দেখতাম, ইমাম সাহেব দ্বিতীয় খুতবায় দুআ করার সময় বলছেন:
أللهم إنا نتوسل إليك بجاه نبيك الميمون.
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমরা আপনার বরকতময় নবীর অসীলা নিচ্ছি.. ।
একটি দুআ অনুষ্ঠানে শুনলাম, দুআকারী আলেম সাহেব বলছেন :
سهل يا إلهي كل صعب بحرمة سيد الأبرار.
‘হে আমার মাবুদ! নেককারদের মহান নেতার মর্যাদায় সকল মুশকিল আসান করে দিন।'
হজের সফরে বিমানে এক ব্যক্তিকে দেখলাম, আমার পাশে বসে দুআ করছে, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার রওজা যিয়ারত করার জন্য হজে রওয়ানা দিলাম। আপনি আল্লাহর কাছে শাফায়াত করে আমার হজ কবুল করিয়ে দিন।'
অনেক দিন পূর্বে একটি জিকিরের জলছায় বসেছিলাম। দেখলাম, জলছার পরিচালক বলছেন, ‘সকলে বলুন, আমার কলব অমুকের কলবের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে। তার কলব দাদাপীর অমুকের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে। তার কলব অমুকের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে ... । তার কলব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে, হে মাবূদ তার অসীলায় আমাদের তওবা কবুল করুন ...।' 

যাদু, ভাগ্য গণনা ও দৈব কর্ম



এসব কিছুই শয়তানী কাজ-কর্ম এবং হারাম, যা আক্বীদায় ত্রুটি সৃষ্টি করে কিংবা আক্বীদা নষ্ট করে দেয়। কেননা শিরকী কাজ-কর্ম ছাড়া এগুলো অর্জন করা যায় না।

১. যাদু:

যাদু এমন এক বস্তুকে বলা হয় যার উপকরণ নিতান্ত গোপন ও সূক্ষ্ণ হয়ে থাকে। আর যাদুকে যাদু নামে এজন্য অভিহিত করা হয় যে, এটা এমন সব গোপনীয় কাজের মাধ্যমে অর্জিত হয় যা দৃষ্টির আগোচরে থাকে। যাদুর মধ্যে মন্ত্র পাঠ, ঝাড়ফুঁক, বাণী উচ্চারণ, ঔষধপত্র ও ধূম্রজাল- এসব কিছুর সমাহার থাকে। যাদুর প্রকৃত অস্তিত্ব রয়েছে। কোন যাদু মনের উপর আছর করে এবং কোনটা দেহের উপর। ফলে মানুষ কখনো অসুস্থ হয়ে পড়ে, কখনো নিহতও হয় এবং এর দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করা যায়। যাদুর এই আছর ও প্রতিক্রিয়া আল্লাহ তাআলার পার্থিব ও তাক্বদীরে নির্ধারিত হুকুম ও অনুমতি ক্রমেই হয়ে থাকে। আর এটা পুরোপুরি শয়তানী কাজ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যাদু -বিদ্যা আয়ত্ব করতে হলে শিরকের মাধ্যমে এবং অপবিত্র ও দুরাত্মাদের পছন্দনীয় কাজের মাধ্যমে তাদের নৈকট্য লাভের আশ্রয় নিতে হয়। এজন্যই শরীয়তে শিরকের সাথে যাদুর উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

Saturday 20 December 2014

শিক্ষা মূলক গল্প: ফলের ঝুড়ি


এক বাদশার একটি বাগান ছিল। বাগানটি ছিল অনেক বড় এবং বিভিন্ন স্তর বিশিষ্ট। বাদশাহ একজন লোককে ডাকলেন। তার হাতে একটি ঝুড়ি দিয়ে বললেন, আমার এই বাগানে যাও এবং ঝুড়ি বোঝাই করে নানা রকম ফলমুল নিয়ে আস। তুমি যদি ঝুঁড়ি ভরে ফল আনতে পার আমি তোমাকে পুরস্কৃত করব। কিন্তু শর্ত হল, বাগানের যে অংশ তুমি পার হবে সেখানে তুমি আর যেতে পারবে না।
লোকটি মনে করলো এটা তো কোন কঠিন কাজ নয়। সে এক দরজা দিয়ে বাগানে প্রবেশ করল। দেখল, গাছে গাছে ফল পেকে আছে। নানা জাতের সুন্দর সুন্দর ফল। কিন্তু এগুলো তার পছন্দ হল না।

এক বৃদ্ধা মা ও তার ছেলে


এক বৃদ্ধা মা তার ছেলে, ছেলের বউ ও ছয় বছরের এক নাতীর সাথে বাস করতেন। বৃদ্ধা মা খুব দুর্বল ছিলেন। তিনি ঠিকভাবে হাঁটতে পারতেন না, চোখে কম দেখতেন, বৃদ্ধ হওয়ার কারনে তার হাত কাঁপতো, কিছু ধরতে পারতেন না ।
যখন বৃদ্ধা মা ছেলে ও ছেলের বউয়ের সাথে রাতে একসাথে খেতে বসতেন তখন প্রায় প্রতিদিন ই কোন না কোন ঘটনা ঘটাতেন। কোনদিন হয়তো হাত কাঁপার ফলে দুধের গ্লাস ফেলে দিয়ে টেবিল নষ্ট করতেন, আবার কোনদিন ফ্লোরে তরকারী ফেলে দিতেন।
প্রতিদিন খাওয়ার সময় এরকম ঝামেলা হওয়ায় ছেলে তার মায়ের জন্য আলাদা একটি টেবিল বানিয়ে দিল। টেবিলটি ঘরের কোণায় সেট করে দিল। বৃদ্ধা মা সেখানে একা বসে খেতেন আর একা একা চোখের পানি ফেলতেন।
ছোট্ট নাতীটি এসব নীরবে দেখছিল।

চার ষাঁড়ের গল্প


একটা বিখ্যাত গল্প আছে। কেউ কেউ হয়ত শুনে থাকবেন। গল্পটা চারটি গরুকে নিয়ে ৷ তিনটি কালো, একটি সাদা ৷ তারা একটা শ্বাপদসংকুল এলাকায় বাস করতো ৷এজন্য নিরাপত্তার খাতিরে তারা একসাথে থাকত এবং একে অপরের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতো ৷ যার ফলে তারা টিকে ছিল ৷ একদিন কালো তিনজন একত্র হল এবং বলল ‘এই সাদা গরুটার জন্য আমরা ধরা পড়ে যাব ৷ আমরা কালো বলে রাতের বেলা শত্রু আমাদের দেখতে পায়না, কিন্তু তাকে দেখতে পায় ৷ চল ঐ গরুটাকে আমরা পরিত্যাগ করি ৷ তারপর আমরা তিনজন একসাথে থাকবো ৷’ যেমন কথা তেমন কাজ ৷ সেদিন থেকেই কালো গরুগুলো সাদাটাকে বয়কট করল, তিনজন একপাশে থাকত আর বেচারা সাদা গরু আরেক পাশে ৷
সেখানকার নেকড়ে এই গরুদের মধ্যে অনৈক্য বুঝে ফেললো এবং সে সাদা গরুটার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো ৷ যখন নেকড়ে সাদা গরুটার গোশত খুলে খুলে খাচ্ছিল, তখন কালো গরুগুলো কোন বাধা দিলনা ৷ তারা তাকিয়ে তাকিয়ে তাদের ভাইকে টুকরো টুকরো হতে দেখছিল ৷
পরের রাতে নেকড়ে কালো গরুগুলো উপর আক্রমণ করলো, কারণ তাদের শক্তি কমে গেছে ৷ এজন্য নেকড়ে একটা কালো গরুকে ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হলো ৷
পরের রাতে নেকড়ের জন্য কাজটা আরো সহজ হয়ে গেল, কারণ গরু আছেই মাত্র দু’টো ৷ নেকড়ে খুব সহজে আরেকটা গরু খেয়ে নিল ৷
শেষ রাতে গরু বাকি রইল মাত্র একটা ৷ গরুটা ভয়ে এদিক ওদিক ছুটোছুটি করলো। কিন্তু তার কোন সাহায্যকারী নেই ৷ নেকড়ে বুঝল গরুটা দৌড়াদৌড়ি করে হাঁপিয়ে একসময় পড়ে যাবে, তাই সে মনের আনন্দে পায়চারি করতে লাগলো ৷ সময় সুযোগমত সে গরুটার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো ৷
জীবনের শেষ মুহূর্তে এসে গরুটা একটা কথা বলেছিল, খুবই শিক্ষণীয় কথা ৷সে বলেছিল, “আমিতো সেদিনই খাদ্য হয়েছি, যেদিন সাদা গরুটাকে খাওয়া হয়েছে।” অর্থাৎ গরুটা বুঝতে পেরেছিল, যেদিন সে সাদা গরুটাকে সাহায্য করেনি, সেদিনই সে নিজের মৃত্যুর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ৷
শিক্ষা:
একতায় শক্তি একতায় বল

বিভেদে পরাজয় হয় চিরকাল।

হাদীছের বাণী (পাঁচটির কারণে পাঁচটি)


ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
“পাঁচটির কারণে পাঁচটি হয়।” প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! কি পাঁচটির কারণে পাঁচটি হয়? তিনি বললেনঃ
  • “(১) কোন জাতি যখন অঙ্গীকার ভঙ্গ করে,(আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার অথবা অন্য জাতির সাথে কৃত অঙ্গীকার) তখন শত্রুদেরকে তাদের উপর কর্তৃত্বশালী করে দেয়া হয়।
  • (২) যখন তারা আল্লাহর নাযিলকৃত (কুরআন-সুন্নাহর) বিধান ছেড়ে মানব রচিত বিধান দ্বারা শাসন পরিচালনা করে,তখন তাদের মধ্যে অভাব ও আকাল দেখা যায়।  (অন্য বর্ণনায় আছেঃ তাদের পরস্পরের মাঝে মতভেদ ও অনৈক্য সৃষ্টি করে দিবেন।- ইবনে মাজাহ, বাইহাকী)
  • (৩) তাদের মধ্যে যখন অশ্লীলতা প্রকাশ পায়,(যেমন জেনা-ব্যভিচার, অশ্লীলতা ইত্যাদি) তখন অপমৃত্যু ব্যাপক আকার ধারণ করে। (অন্য বর্ণনায় আছেঃ তখন তাদের মধ্যে মহামারি ও দুরারোগ্য এমন ব্যাপক আকার ধারণ করবে যা পূর্ববর্তীদের মধ্যে ছিল না।– ইবনে মাজাহ)
  • (৪) যখন তারা (স্বর্ণ-রৌপ্য, অর্থ ও ফসল ইত্যাদির) যাকাত দিতে অস্বীকার করে,তখন তাদের জন্য আকাশের বৃষ্টি বন্ধ করে দেয়া হয়।  (অন্য বর্ণনায় আছে: পোঁকা-মাকড় ও পশু-পাখী না থাকলে বৃষ্টিই হত না।–ইবনে মাজাহ)
  • (৫) যখন তারা মাপে ও ওযনে কম দেয়, তখন তাদের মধ্যে উদ্ভিদ (ফসল) উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয় এবং তারা দুর্ভিক্ষে পতিত হয়।” (ইবনে মাজাহর বর্ণনায় আছে: তখন তাদেরকে দুর্ভিক্ষ, আয়-রোজগারের স্বল্পতা ও জালেজালেম জালেম শাসকের অত্যাচার গ্রাস করবে।)
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ত্বাবরানী। দ্রঃ সহীহ তারগীব ও তারহীব ১ম খন্ড হাদীছ নং 765)
আবদুল্লাহ আল কাফী

প্রাণীর ছবি আঁকা সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস


  • আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল ওয়াহহাব (র)…সাঈদ ইবনে আবুল হাসান (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনে আব্বাস (রা) এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, এমন সময়ে তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আবু আব্বাস! আমি এমন ব্যক্তি যে, আমার জীবিকা হস্তশিল্পে। আমি এসব ছবি তৈরি করি। ইবনে আব্বাস (রা) তাঁকে বলেন, (এ বিষয়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি যা বলতে শুনেছি, তাই তোমাকে শোনাব। তাঁকে আমি বলতে শুনেছি,

Wednesday 17 December 2014

জ্ঞানের কথা জ্ঞানীর কথা-১০


♦ রাগ হল এমন একটি বাতাস যা বিবেকের প্রদীপ নিভিয়ে দেয়।
♦ গোপন বিষয় দু জনকে অতিক্রম করলে ছড়িয়ে পড়ে।
♦ স্ত্রীকে যদি আপনি কেবল তার গুনাগুণ দেখে ভালবাসেন তবে তা প্রকৃত ভালবাসা নয়। প্রকৃত ভালবাসা তখনই হবে যখন আপনি তার মধ্যে দোষ দেখেও তাকে ভালবাসবেন।
♦ আমাদের জীবনের অধিকাংশ সমস্যা হয় দুটি কারণে:
  • এক. আমরা অনেক সময় চিন্তা না করেই কাজ করি।
  • দুই. আবার অনেক সময় কাজ না করে শুধু চিন্তা করি।
♦ জনৈক মনিষী বলেন: “সাফল্যের মূল রহস্য কি তা জানি না। কিন্তু ব্যর্থতার মূল রহস্য হল, সবাইকে খুশি করা চেষ্টা করা।”
♦ চারটি জিনিস মর্যাদা বৃদ্ধি করে:
১) ধৈর্য ও সহনশীলতা
২) বিনয়
৩) উদারতা

জ্ঞানের কথা জ্ঞানীর কথা-৯


 

  • ইমাম শাফেয়ী রহ.:
”প্রকৃত শিক্ষা সেটাই যা দ্বারা উপকৃত হওয়া যায়। সেটা প্রকৃত শিক্ষা নয় যা শুধু মুখস্থ রাখা হয় কিন্তু কোন কাজে লাগানো যায় না।”
‘‘যে ব্যক্তি কাউকে গোপনে উপদেশ দিল সে সত্যিকার তার কল্যাণ কামিতার পরিচয় দিল আর যে লোক সম্মুখে উপদেশ দিল সে তাকে অপমান করল।”
  • ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহ.:
”আল্লাহর ভয়কে পাথেয় আর আখিরাতকে গন্তব্য বানিয়ে পথ চলো।”
  • আব্দুল্লাহ ইবনুল মোবারক:
 ”অনেক বড় বড় কাজ নিয়তের কারণে ছোট হয়ে যায়। আর অনেক ছোট ছোট কাজ নিয়তের কারণ বড় হয়ে যায়।”
”কখনো বিদআতীর নিকট বসবে না।”
  • জনৈক মনিষী:
”আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে বিবেক দিয়েছেন; কু প্রবৃত্তি দেন নি। 
পশুদেরকে কু প্রবৃত্তি দিয়েছেন; বিবেক দেন নি।
আর মানুষকে কু প্রবৃত্তি ও বিবেক উভয়টি দিয়েছেন।
সুতরাং মানুষের বিবেক যখন কু প্রবৃত্তির উপর প্রাধান্য পায় তখন সে ফেরেশতাদের সমপর্যায়ে পৌঁছে যায়।
আর যখন তার কু প্রবৃত্তি বিবেকের উপর প্রাধান্য পায় তখন সে পশুর স্তরে নেমে যায়।”
  • আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.:
”প্রবৃত্তি পূজারীদের সাথে উঠ-বসা করলে অন্তরের মৃত্যু ঘটে।”
  • ইমাম শা’বী 
ইমাম শা’বী কে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কিভাবে এত জ্ঞানার্জন করেছেন? তিনি বললেন:
”কখনো পরের উপর নির্ভর করে থাকি নি।
জ্ঞানার্জনের জন্য দেশ-দেশান্তরে ঘুরেছি।
জড় পদার্থের মত ধৈর্য ধারণ করেছি।
কাক-পক্ষীদের মত খুব ভোরে বিছানা ত্যাগ করেছি।”

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...