Friday 16 August 2019

পথভ্রষ্ট দা‘ঈ—‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফীর বিভ্রান্তি প্রসঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত

সৌদি আরবের দা‘ওয়াহ সেন্টারে কর্মরত দা‘ঈ জনাব আহমাদুল্লাহ কর্তৃক ভ্রষ্ট দা‘ঈ ত্বারীফীর প্রশংসা—
পোস্ট লিংক: https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2075805915810344&id=100001428672384
(There are so many valid reasons. This is one the reasons we don’t promote Sheikh Ahmadullah bin Dilawar hafizahullah.)- Tahmid
{ ▌পথভ্রষ্ট দা‘ঈ—‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফীর বিভ্রান্তি প্রসঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত
·
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি।
যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। যিনি বলেছেন, “হক এসেছে, আর বাতিল অপসৃত হয়েছে; বাতিল তো অপসৃত হওয়ারই ছিল।” [সূরাহ বানী ইসরাঈল: ৮১]
শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। যিনি বলেছেন, “তুমি হক (সত্য) বল, যদিও তা তিক্ত হয়।” [সাহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২২৩৩; সনদ: সাহীহ লি গাইরিহী] অন্যত্র বলেছেন, “তুমি হক বল, যদিও তা তোমার নিজের বিরুদ্ধে যায়।” [সিলসিলাহ সাহীহাহ, হা/১৯১১; সাহীহুল জামি‘, হা/৩৭৬৯; সনদ: সাহীহ]
·
পর সমাচার এই যে, বর্তমানে সালাফী কমিউনিটিতে একটি ফিতনার সয়লাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশে সালাফীদের একটি বড়ো অংশকে দেখা যাচ্ছে, তারা খারিজী ও ইখওয়ানী দা‘ঈদের বইপুস্তক পড়ছে, তাদেরকে ‘শাইখ’ আখ্যা দিচ্ছে এবং যাচ্ছেতাইভাবে প্রোমোট করছে। এমনকি দু পয়সা লাভের আশায় কিংবা সালাফী লাইব্রেরিয়ানদের মানহাজগত বিভ্রান্তি থাকার কারণে সালাফী লাইব্রেরিগুলোতেও ইখওয়ানী-খারিজীদের বইপুস্তক দেদারসে বিক্রি করা হচ্ছে। আল্লাহুল মুস্তা‘আন।
আমি প্রায়শই বলি, ‘ইলম নেওয়ার ক্ষেত্রে ‘যা পাই তাই খাই’—নীতি অবলম্বন করা যাবে না। মানহাজ ঠিক রাখতে হলে এই ভুয়া নীতিকে কবর দিতে হবে। আমি ভাইদেরকে এসব বিষয়ে বরাবরই সতর্ক করে থাকি। আজকেও সতর্ক করার জন্যই লিখছি। সম্প্রতি যেসব ইখওয়ানী-খারিজী দা‘ঈর বইপুস্তক বাংলায় অনূদিত হচ্ছে, তাদের মধ্যে ‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফী অন্যতম। বঙ্গীয় খারিজীরা তার বইয়ের জোর প্রচারণা চালাচ্ছে। আর কিছু সালাফীকেও ত্বারীফীর বইপুস্তক পড়তে এবং তাকে প্রোমোট করতে দেখা যাচ্ছে।

তাই আমাদের জানা দরকার যে, এই ত্বারীফী সালাফী দা‘ঈ কিনা, তার কাছ থেকে দ্বীন শেখা এবং তাকে প্রোমোট করা নিরাপদ কিনা। আমি বলছি, সালাফী ‘উলামা ও ত্বালাবাহ’র নিকট ‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফী একজন পথভ্রষ্ট বিপথগামী দা‘ঈ। তার কতিপয় বিভ্রান্তির বিবরণ নিম্নে আলোচিত হলো।
·
১. পথভ্রষ্ট দা‘ঈ ‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফী (হাদাহুল্লাহ) একজন ক্বা‘আদী খারিজী (সিটিং খারিজী; অর্থাৎ যে নিজে সশস্ত্র বিদ্রোহ করে না, কিন্তু বিদ্রোহের উসকানি দেয়) এবং জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সাপোর্টার। সে তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের এক পোস্টে আল-কায়েদার খারিজী সন্ত্রাসী উসামাহ বিন লাদেনের ভুলকে সম্মানিত সাহাবী খালিদ বিন ওয়ালীদ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র ভুলের সাথে তুলনা দিয়েছে এবং বিন লাদেনের জন্য প্রকাশ্যে কল্যাণের দু‘আ করেছে! [পোস্টের স্ক্রিনশট সংরক্ষিত আছে; এই লিংক থেকে স্ক্রিনশট দেখে আসতে পারেন: http://muslims11.blogspot.com/2014/08/blog-post_23.html?m=1.]
·
২. ভ্রষ্ট ত্বারীফী জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার পক্ষ নিতে গিয়ে সৌদি আরবের বর্তমান গ্র্যান্ড মুফতী ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ ‘আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ)’র ব্যাপারে মিথ্যাচার করেছে এবং তাঁর জঘন্য নিন্দা করেছে। সম্মানিত গ্র্যান্ড মুফতী আইএস এবং আল-কায়েদার ব্যাপারে বলেছেন, “তারা খারিজী সম্প্রদায়, যে সম্প্রদায় ইসলামের ওপর নেই।” তো গ্র্যান্ড মুফতীর এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে ত্বারীফী সাহেব তার টুইটার অ্যাকাউন্টের এক টুইটে লিখেছে,
لا تؤثر أقوال العلماء في تصويب الأخطاء إذا كانوا يقوون عند أخطاء الضعفاء ويضعفون عند أخطاء الأقوياء، فالنفوس تزهد بالحق إن فقدت إنصاف أهله.
“ভুলকে সঠিক গণ্য করার জন্য তুমি ‘উলামাদের কথাকে প্রাধান্য দিয়ো না। যখন সেই ‘উলামারা দুর্বলদের ভুলের ব্যাপারে বলশালী হিসেবে আবির্ভূত হয়, আর শক্তিশালীদের ভুলের সামনে দুর্বল হয়ে যায়। আসলে মানুষ তখন হককে প্রত্যাখ্যান করে, যখন সে হকপন্থির ইনসাফ থেকে বঞ্চিত হয়।” [টুইটের স্ক্রিনশট সংরক্ষিত আছে; এই লিংক থেকে স্ক্রিনশট দেখে আসতে পারেন: http://muslims11.blogspot.com/2014/08/blog-post_23.html?m=1.]
উক্ত কথার মাধ্যমে ত্বারীফী গ্র্যান্ড মুফতীর প্রতি যেসব মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করেছে, সেগুলো হলো—(১) তিনি দুর্বলদের সামনে শক্তিশালী, যেহেতু জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার বিরুদ্ধে ফাতওয়া দিয়েছেন (২) তিনি শক্তিশালীদের সামনে দুর্বল, যেহেতু তিনি ত্বারীফী ও তার সমমনা খারিজীদের মতো মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন না, (৩) তিনি বেইনসাফি কাজ করছেন, যেহেতু তিনি পূর্বোক্ত দুটি অভিযোগে অভিযুক্ত।
·
৩. এতদ্ব্যতীত ‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফী সিরিয়ার দুর্যোগময় বিপ্লবকে ‘আল্লাহপ্রদত্ত নেয়ামত’ আখ্যা দিয়েছে। সে বলেছে,
الثورة السورية: أرى أنها نعمة من الله، وما يحدث في سوريا هو خير عظيم.
“সিরীয় বিপ্লবকে আমি আল্লাহপ্রদত্ত নেয়ামত মনে করি। সিরিয়ায় যা ঘটছে, সেটা হলো মহাকল্যাণ।” [দ্র.: https://youtu.be/zIujJs1Cst4 (ভিডিয়ো ক্লিপ)]
যে বিপ্লবের কারণে মুসলিমরা করুণভাবে অত্যাচারিত হয়েছে এবং বর্তমানেও হচ্ছে, সেটা নাকি আল্লাহপ্রদত্ত নেয়ামত। ইয়া সুবহানাল্লাহ, এটা তো বিকারগ্রস্ত লোকের কথা! শাসকের বিরুদ্ধে উরাধুরা বিদ্রোহকে সমর্থন করতে গিয়ে এদের মস্তিষ্কের এ কী বিকৃতি ঘটেছে! আল্লাহ আমাদেরকে এদের বিকৃত চেতনা থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
·
৪. ভ্রষ্ট দা‘ঈ ‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফী বিদ‘আতী ফিরক্বাহ মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষ নিয়ে নিজের ব্যক্ত করা সুন্নী মানহাজের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সে তার একটি বক্তব্যে জবরদখলকারী শাসকের ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহ’র প্রকৃত মানহাজ বর্ণনা করে বলেছে,
...ومنها الغلب، أن يغلب بسيفه على البلد وهو في ذاته مسلم، وإن قتل من الناس حتى تغلب وتمكن، فلا يجوز الخروج عليه. ومن خرج عليه لسبب فسقه فهو ظالم لنفسه.
“কোনো মুসলিম যদি তরবারি দিয়ে কোনো রাষ্ট্র দখল করে নেয় এবং জবরদখল করে শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে সক্ষম হয়, তাহলে সে যদি মানুষ হত্যা করে থাকে, তবুও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা জায়েজ নয়। আর যে ব্যক্তি ওই শাসকের পাপাচারিতার কারণে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, সে হলো নিজের আত্মার ওপর জুলুমকারী।” [দ্র.: https://youtu.be/aRqTuKlMIfw (ভিডিয়ো ক্লিপ); ২০ সেকেন্ড থেকে ৪৬ সেকেন্ড পর্যন্ত]
এরপর যখন মিশরে সিসি সাহেব সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ইখওয়ানী প্রেসিডেন্ট মুরসীকে হটিয়ে শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলো, তখন ‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফীর বক্তব্যের সুর পাল্টে গেল। মিশরে সিসির সেনা অভ্যুত্থানের ব্যাপারে ত্বারীফী তার এক ফাতওয়া’য় বলেছে, إن الحاكم الموجود في مصر أنه ليس حاكما متغلبا، وإنما ظالم من جهة الحقيقة “মিশরের বর্তমান শাসক জবরদখলকারী শাসক নয়! প্রকৃতপক্ষে সে একজন জালিম।” [প্রাগুক্ত; ১ মিনিট ২২ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ৩২ সেকেন্ড পর্যন্ত]
অর্থাৎ, ত্বারীফী মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষ নিতে গিয়ে সিসিকে ‘জবরদখলকারী শাসক’ হিসেবে মানছে না, যে শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা না-জায়েজ। উল্লেখ্য যে, আরও অনেক ইখওয়ানী-খারিজী দা‘ঈ ও তাদের সমর্থক সিসির অভ্যুত্থানকে ‘জবরদখল’ বা ‘বিপ্লব’ হিসেবে দেখেনি, বরং সেটাকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছে। এমনকি কেউ কেউ তো ওই সেনা অভ্যুত্থানকে ‘রিদ্দাহ’ (মুরতাদ হয়ে যাওয়া) আখ্যা দিয়েছে! আল-‘ইয়াযু বিল্লাহ।
·
৫. ‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফী হলো তাকফীরী। ত্বারীফী সাহেব মিশরের সেনা অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে তার টুইটার অ্যাকাউন্টে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই অক্টোবর তারিখের টুইটে বলেছে,
من عرف الفريقين بمصر (القالب) و (المقلوب) ومسافة كل واحد منهم من الحق والباطل، عرف أن ما أحدث إنما هو صراع بين إسلام وكفر ونفاق وإيمان.
“যে ব্যক্তি মিশরের দুটো দল সম্পর্কে তথা পরিবর্তনকারী দল ও পরিবর্তিত দল সম্পর্কে এবং হক ও বাতিল থেকে এদের মধ্যকার ব্যবধান সম্পর্কে অবগত হয়েছে, সে জেনেছে যে, মিশরে যা সংঘটিত হয়েছে, তা হলো ইসলাম ও কুফরের লড়াই এবং নিফাক্ব ও ইমানের লড়াই!” [দ্র.: https://youtu.be/VTh_r0qW2VI (ডকুমেন্টারি ভিডিয়ো ক্লিপ); ১১ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে উক্ত টুইটের স্ক্রিনশট দেওয়া হয়েছে]
চিন্তা করেন! মুসলিম ব্রাদারহুড—যারা কিনা ক্ষমতায় এসে আল্লাহ’র আইন বাস্তবায়ন করা তো দূরের কথা, নানারকম অপব্যাখ্যা করে আল্লাহ’র আইনকে পরিত্যাগ করেছে—যে সিসির সাথে লড়াই করেছে, সেটা হলো ইসলাম ও কুফরের লড়াই! তার মানে সিসি ও তার সাঙ্গপাঙ্গ সব কাফিরের দল! না‘ঊযু বিল্লাহি মিন যালিক।
·
ত্বারীফীর এসব ভয়ংকর বিচ্যুতি ও বিভ্রান্তির কারণে সালাফী ‘উলামা ও সিনিয়র ত্বালিবগণ ত্বারীফীকে পথভ্রষ্ট বিদ‘আতী আখ্যা দিয়েছেন। এরকম কয়েকটি জারাহ (ক্রিটিসিজম/কাউকে মন্দ আখ্যা দেওয়া) নিম্নে উল্লিখিত হলো।
১. মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মাসজিদে নাবাউয়ী’র সম্মানিত মুদার্রিস, আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-ফাক্বীহ, ড. সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) বলেছেন—
ليست العبرة بالتلميع، بل أنا أقول: القاعدة، إذا وجدت الرجل يلمَّع من الحزبيين، ويبرز على أنه الحافظ والمحدث والفقيه والإمام، فاعلم أنه منحرف، مثل الددو ومثل الطريفي ومثل العريفي. هؤلاء منحرفون على منهج الإخوان، عندهم إنحرافات عقدية وشرعية. لكن هؤلاء يلمَّعون—المحدث الكبير، يحفظ الكتب الستة. فإذا وجدت التلميع من الحزبيين ومن وسائل الإعلام اليوم، فاعلم أن وراء الأكمة ما وراء.
“কাউকে চমকপ্রদভাবে উপস্থাপন করার কোনো মূল্য নেই। আমি একটি মূলনীতি বলে দিচ্ছি। যখন তুমি দেখবে, কোনো লোককে দলবাজ হিযবীদের পক্ষ থেকে খুব চমকপ্রদভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, এবং বলা হচ্ছে, ইনি একজন হাফিয, মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ, কিংবা ইমাম; তখন তুমি জানবে যে, ওই লোক একজন পথভ্রষ্ট বিপথগামী। যেমন: মুহাম্মাদ হাসান ওয়ালিদ আদ-দিদূ, ‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফী, মুহাম্মাদ আল-‘আরীফী প্রমুখ। এরা মুসলিম ব্রাদারহুডের মানহাজের ওপর প্রতিষ্ঠিত ভ্রষ্ট বিপথগামী। এদের রয়েছে ‘আক্বীদাহ ও শরিয়তগত বিভ্রান্তি। কিন্তু এদেরকে চমকপ্রদভাবে উপস্থাপন করে বলা হয়—‘ইনি অনেক বড়ো মুহাদ্দিস, ইনার সম্পূর্ণ কুতুবে সিত্তাহ মুখস্থ!’ অতএব তুমি যখন হিযবীদের পক্ষ থেকে অথবা বিভিন্ন মিডিয়ার পক্ষ থেকে এরকম চমকপ্রদ উপস্থাপনা লক্ষ করবে, তখন জানবে যে, এর নেপথ্যে কিছু একটা লুকায়িত আছে।” [দ্র.: https://tinyurl.com/y2qwprtc(“সালাফী: ‘আক্বীদাহ্ ও মানহাজে” পেজের পোস্ট লিংক)]
·
২. সৌদি ফতোয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] ‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফী থেকে সতর্ক করেছেন।
ইমাম সালিহ আল-ফাওযানকে প্রশ্ন করা হয়েছে,
هنالك بعض الشباب يطعنون في ولاة الأمور، ويقولون: إن ولاة الأمور سجنوا العلماء والصالحين ويقصدون بالعلماء عبد العزيز الطريفي وسليمان العلوان وخالد الراشد.
“এখানে কিছু যুবক শাসকের নিন্দা-সমালোচনা করে। তারা বলে, শাসকরা ‘উলামা ও ভালো ব্যক্তিদের জেলবন্দি করেছে। তারা ‘উলামা বলার মাধ্যমে উদ্দেশ্য করে—‘আব্দুল ‘আযীয আত্ব-ত্বারীফী, সুলাইমান আল-‘আলাওয়ান, খালিদ আর-রাশিদ প্রমুখকে।”
তিনি (হাফিযাহুল্লাহ) জবাবে বলেছেন, أتركهم، لا تدخل فيهم، ولا تجلس معهم “তুমি তাদেরকে পরিত্যাগ করো, তাদের মধ্যে প্রবেশ কোরো না, এবং তাদের সাথে ওঠাবসা কোরো না।”
এরপর প্রশ্নকারী পুনরায় বলেন, “কিছু মানুষ এদের (উক্ত দা‘ঈদের) ব্যাপারে ধোঁকাগ্রস্ত হচ্ছে।” তখন ইমাম ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) তাদের ব্যাপারে ধোঁকাগ্রস্ত হওয়া থেকে সতর্ক করেন। [দ্র.: www.tasfiatarbia.org/vb/showthread.php?t=18595 (অডিয়ো ক্লিপ)]
·
সুপ্রিয় পাঠক, আপনি দেখলেন, সালাফিয়্যাহ’র ইমাম ‘আল্লামাহ সালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) ত্বারীফীর ভক্তদের সাথে ওঠাবসা করতে নিষেধ করে দিয়েছেন। কারণ সে একজন খারিজী দা‘ঈ। সুতরাং এই খারিজী দা‘ঈকে যারা প্রোমোট করবে এবং তার গুণকীর্তন করবে, আমাদের জন্য তাদের থেকে দূরে থাকা জরুরি। যে ব্যক্তিই ত্বারীফীর গুণকীর্তন করবে এবং তাকে প্রোমোট করবে, তার মানহাজের ব্যাপারে সন্দেহ করুন। সে যেই হোক না কেন, যে পর্যায়ের দা‘ঈ বা বক্তাই হোক না কেন, তাকে বর্জন করতে হবে।
আমরা ইতঃপূর্বে জনৈক সৌদি প্রবাসী বাঙালি দা‘ঈকে দেখেছি, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এই ত্বারীফীর গুণগান গাইতে। এ ধরনের ভুঁইফোঁড় দা‘ঈদেরকেও প্রোমোট করা থেকে বিরত থাকুন। কথা স্পষ্ট। মানহাজের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। যারা এসব ভণ্ডদের বই ইনোসেন্ট সালাফীদের কাছে বিক্রি করে অর্থ কামাচ্ছেন, তারাও কেয়ামত দিবসে আল্লাহ’র কাছে জবাবদিহিতা করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। ওই শুনুন, মহান আল্লাহ’র হুঁশিয়ারি—“যে ব্যক্তি সত্য পথ প্রকাশিত হওয়ার পরও রাসূলের বিরোধিতা করে এবং মু’মিনদের (অর্থাৎ, সালাফদের) পথ বাদ দিয়ে ভিন্ন পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে সে পথেই ফিরাব যে পথে সে ফিরে যায় এবং তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করব। আর কতই না মন্দ সে আবাসস্থল!” [সূরাহ নিসা: ১১৫]
আল্লাহ আমাদের সবাইকে বিদ‘আতী দা‘ঈদের বিকৃত দা‘ওয়াত থেকে হেফাজত করুন এবং যথাযথভাবে সালাফী মানহাজ অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন। আমীন, ইয়া রাব্বাল ‘আলামীন।} -
·
সুপথপ্রাপ্তির অভিলাষী
এক গুনাহগার বান্দা—
Md Abdullah Mridha.

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...