Friday 22 July 2016

চাশতের সালাতের (সালাতুল দুহা) ফজিলত



রহমান রহীম আল্লাহ্‌ তায়ালার নামে-

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

إن الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وعلى آله وصحبه أجمعين، أما بعد

অনুবাদঃ মোছতানছের বিল্লাহ | সম্পাদনাঃ আবদ্‌ আল-আহাদ 
বুরাইদা (রা) বলেন,
রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) বলেছেন, মানুষের শরীরে ৩৬০ টি জোড় রয়েছে অতএব মানুষের কর্তব্য হল প্রত্যেক জোড়ের জন্য একটি করে সদাকা করা সাহাবায়ে কেরাম (রা) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! কার শক্তি আছে এই কাজ করার? তিনি (সা) বললেন, মসজিদে কোথাও কারোর থুতু দেখলে তা ঢেকে দাও অথবা রাস্তায় কোন ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাআত সালাতই এর জন্য যথেষ্ট [আবু দাউদ; কিতাবুল ‘আদাব’, অধ্যায়ঃ ৪১, হাদীস নং:৫২২২]
উপরিউক্ত হাদীসটি মুলত চাশতের সালাত বা সালাতুদ্‌ দুহা’র অপরিসীম গুরুত্ব ও মাহাত্ম্যের কথাই তুলে ধরে। এর থেকে আরো বোঝা যায় যে,চাশতের সালাত তথা সালাতুদ্‌ দুহা ৩৬০ টি সাদাকার সমতুল্য।
আবু হোরাইরা (রা) বলেন,
আমার বন্ধু [মুহাম্মাদ (সা)] আমাকে তিনটি বিষয় আমল করার উপদেশ দিয়েছেনঃ প্রতি মাসের প্রথম তিন দিন রোজা রাখা; চাশতের সালাত (সালাতুদ্‌ দুহা) আদায় করা এবং ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে বিতরের সালাত আদায় করা” [সহীহ্‌ আল বুখারী; “তাহাজ্জুদ” অনুচ্ছেদ, অধ্যায়ঃ ২, হাদীস নং:২৭৪ এবং সহীহ্‌ মুসলিম; কিতাবুস্‌ সালাত, অধ্যায়ঃ ৪, হাদীস নং:১৫৬০]
 চাশতের সালাত (সালাতুদ্‌ দুহা) একটি উপহার স্বরূপ এবং যে এই উপহার পাওয়ার আশা করে,সে যেন এই সালাত আদায় করে। তবে এই সালাত আদায় না করলে কেউ গুনাহ্‌গার হবেনা।
আবু সাঈদ (রা) হতে বর্ণিত,

Thursday 21 July 2016

তাগুত কী???


আসসালা-মু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লা-হি ওয়া বারাকা-তুহু।
:
আল্লাহ বলেন:— “আমরা (আল্লাহ) প্রত্যেক জাতিতে একজন রসূল প্রেরণ করেছি যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগুতকে বর্জন করো।” [সূরা নাহল : আয়াত ৩৬]
:
আল্লাহ কুরআনে এভাবে বহুস্থানে “তাগুত” শব্দটি ব্যবহার করেছেন। তো এখন প্রশ্ন হলো তাগুতটা কী? আসুন তাগুত সম্পর্কে জেনে নিই। 
:
তাগুত শব্দটি দিয়ে অনেক অর্থ বুঝায়। এর অর্থ আল্লাহ ছাড়া অন্য যে কারো ইবাদত করা বুঝায়। হতে পারে তা শয়তান, দেবদেবী, মূর্তি, সূর্য, নক্ষত্র, ফেরেশতা, মানুষ……ইত্যাদি ইত্যাদি যাদের ইবাদত করা হয় যা বাতিল, যা হলো তাগুত। একইভাবে সূফী, মাজার, শাসক, নেতা……ইত্যাদি যাদেরকে ভ্রান্তভাবে অনুসরণ করা হয়। তাগুত মানে মিথ্যা বিচারকও বুঝায় যে মিথ্যার সাথে বিচারকার্য করে থাকে। 
এই পর্যন্ত দেয়া হলো তাকিউদ্দীন হিলালী ও মুহসিন খান (রহিমাহুমুল্লা-হ)-এর “The Noble Quran” থেকে।

এছাড়া সালাফী মানহাজের নির্ভরযোগ্য ইংলিশ ওয়েবসাইট থেকে তাগুত সম্পর্কে সালাফদের ও আহলুল ‘ইলমদের উক্তিসমূহ থেকে নিম্নে অল্পকিছু অনুবাদ করা হলো (সাথে কিঞ্চিত পরিমার্জিত),
:

Wednesday 20 July 2016

জিহাদ, কিতাল ও খিলাফাহ ( পর্ব – ৬ ) - শেষ পর্ব!

শায়খ মুজাম্মেল হক্ক

প্রথম পর্বের লিংক – এখানে ক্লিক করুন
দ্বিতীয় পর্বের লিংক – এখানে ক্লিক করুন
তৃতীয় পর্বের লিংক – এখানে ক্লিক করুন
চতুর্থ পর্বের লিংক - এখানে ক্লিক করুন
পঞ্চম পর্বের লিংক - এখানে ক্লিক করুন

১১. খেলাফাত ও দ্বীনের স্থায়িত্ব আল্লাহ দান করে দিয়েছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেনঃ
وَلَقَدْ مَكَّنَّاكُمْ فِي الْأَرْضِ وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَايِشَ ۗ قَلِيلًا مَا تَشْكُرُونَ- الأعراف/10

“তোমাদেরকে জমিনের বুকে স্থায়িত্ব দান করেছি, তোমাদের জন্যে জীবন ধারণের সকল উপকরণ সৃষ্টি করে দিয়েছি অথচ তোমরা সামান্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাকো।”
সুরা আ’রাফঃ ১০।

ثُمَّ جَعَلْنَاكُمْ خَلَائِفَ فِي الْأَرْضِ مِنْ بَعْدِهِمْ لِنَنْظُرَ كَيْفَ تَعْمَلُونَ – يونس/14

“তাদের স্থলে তোমাদেরকে জমিনে খলীফা বানিয়েছি; উদ্দেশ্য এই যে, আমি দেখতে চাই তোমরা কি করো ও কিভাবে করো।”
সুরা ইউনুসঃ ১৪।

তাইত আমরা দেখছি আজ ইসলাম ও মুসলমানদেরকে জমিনের কোন স্থান থেকে কেউ উঠিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেনা, যেমনটি রাখতো অতীতে। তবে আমরা যা করি তা ঠিক কিনা, তাতে আল্লাহ খুশী কিনা এ পরীক্ষাতে নিমজ্জিত রয়েছি। এতে পাশের হার বৃদ্ধির চেষ্টা করাই আমাদের একমাত্র কাজ।

১২. তবে খেফাত ও স্থায়িত্ব দান করলেও শান্তি ও নিরাপত্তার বেলায় কিছুটা শর্ত আরোপ করে রেখেছন। সেই শর্ত মুসলমান যতদিন যেখানে পূর্ণ করবে তত দিন সেখানে শান্তি ও নিরাপত্তা ভোগ করবে। অন্যথা হলে সেখানে আল্লাহর অনুমতিতে অশাস্তির দাবানল জ্বলে উঠতে পারে। এমন দাবানল থেকে বাঁচতে হলে শর্ত হলঃ

(ক)
الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ أُوْلَئِكَ لَهُمُ الأَمْنُ وَهُمْ مُهْتَدُونَ- الأنعام/82

“যারা ইমান আনবে, ইমানের সাথে কোন রূপ যুলম করবেনা, শুধু তাদের জন্যেই থাকবে নিরাপত্তা, তারা হবে সত্য পথের পথিক।”
সুরা আন’আমঃ ৮২।
আব্দুল্লাহ ইবনু মাস’উদ রাঃ বলেন, আমরা আল্লাহর রাসুল সঃ কে জিজ্ঞাসা করে বললাম, এমন কে আছে যে কিছুনা কিছু জুলুম বা অন্যায় করেনা? আর তাহলে আমাদের কি হবে? রাসুল সঃ বললেন, এই ظُلْمٍ এর অর্থ সেই জুলুম নয় যা তোমরা মনে করো। বরং এটা সেই জুলুম সে সম্পর্কে লোকমান তাঁর ছেলেকে সাবধান করে বলেছিল্লেঃ
يَا بُنَيَّ لا تُشْرِكْ بِاللَّهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ- لقمان/13
“হে বৎস, তুমি শিরক করোনা, নিশ্চয়ই শিরক সবচেয়ে বড় জুলুম বা অন্যায়।”
সুরা লোকমানঃ ১৩।

(খ)
يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا ۚ- النور/55

“(নিরাপত্তাপ্রাপ্ত এই ইমানদারগণের প্রধান গুণাবলি হতে হবে এই যে,) তারা শিরক থেকে দূরে থেকে এবং একমাত্র আমার এবাদাত করবে।”
সুরা নুরঃ ৫৫।

Tuesday 19 July 2016

জিহাদ, কিতাল ও খিলাফাহ ( পর্ব – ৫ )


শায়খ মুজাম্মেল হক্ক

প্রথম পর্বের লিংক – এখানে ক্লিক করুন
দ্বিতীয় পর্বের লিংক –এখানে ক্লিক করুন
তৃতীয় পর্বের লিংক –এখানে ক্লিক করুন
চতুর্থ পর্বের লিংক -এখানে ক্লিক করুন
ষষ্ঠ পর্বের লিংক - এখানে ক্লিক করুন
গ) খিলাফত বা ইসলামি হুকুমাত (রাষ্ট্রব্যবস্থা)
الخلافة لغة النيابة أو ما يجيئ من بعد (يَا دَاوُودُ إِنَّا جَعَلْنَاكَ خَلِيفَةً فِي الْأَرْضِ فَاحْكُمْ بَيْنَ النَّاسِ بِالْحَقِّ- ص/26)، وفي الأصطلاح رئاسة عامة في أمور الدين والدنيا ( اخلفني في قومي- الأعراف/142)
আরবি অভিধানে খেলাফার অর্থ ‘পরে আসা’ বা কারো স্থলাভিষিক্ত হওয়া। যেমন আল্লাহ বলেন, “হে দাউদ তোমাকে জমিনে খলিফা বানিয়েছি, সুতরাং মানুষের মধ্যে ন্যায়ভাবে সুরাহা করবে।”
সুরা সাদঃ ২৬।
ইসলামের পরিভাষায় খলিফার অর্থ “এমন জন প্রতিনিধিত্ত যা জনগণের দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যাণে কাজ করে”।
যেমন মুসা আঃ হারুন আঃ কে বলেছিলেনঃ “জনগণের কাছে তুমি আমার প্রতিনিধি হিসাবে থাকবে।”
সুরা আ’রাফঃ ১৪২।
وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَىٰ لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُمْ مِنْ بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا ۚ يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا ۚ- النور/55
“আল্লাহ ওয়াদা করেছেন ইমানদার ও সৎ আমল কারীগনের প্রতি, তিনি অবশ্যই তাদেরকে খলিফা করবেন যেমন পুর্ববর্তীগনকে করেছিলেন। এবং অবশ্যই তাদেরকে দ্বীনের প্রতিষ্ঠা দান করবেন যে দ্বীন তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন। আর ভীতি দূর করে নিরাপত্তা দান করবেন; তবে তাদের প্রধান গুণাবলি হবে এই যে তারা শিরক থেকে দূরে থেকে আমার এবাদাত করবে।”
সুরা নুরঃ ৫৫।
হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান রাঃ বলেন, রাসূল সঃ বলেছেন,
“তোমাদের মধ্যে নবুয়ত থাকবে ততদিন যতদিন আল্লাহ চাইবেন। অতঃপর উঠিয়ে নেবেন যখন চাইবেন। অতঃপর নবুয়তের আদলে খেলাফা প্রতিষ্ঠিত হবে। আল্লাহ যত দিন চাইবেন ততদিন তা প্রতিষ্ঠিত থাকবে, তারপর উঠিয়ে নেবেন। অতঃপর সমঝোতার মধ্যে দিয়ে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। আল্লাহ যত দিন ইচ্ছা করবেন তা থাকবে, তার পর উঠিয়ে নেবেন। অতঃপর জোর-জবরদস্তিমূলক ভাবে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা লাভ করবে, আল্লাহ যতদিন চাইবেন তা চলবে। অতঃপর নবুয়তের আদলে খেলাফা প্রতিষ্ঠিত হবে। এ পর্যন্ত বলেই তিনি চুপ হয়ে যান।”
মুসনাদে আহমাদ ও বাজ্জার।
উল্লেখ্য যে, হাদিসটিতে পাঁচটি পট পরিবর্তনের কথা বলে আল্লাহর নবী চুপ হয়ে গেছেন। আর কিছুই বলেননি।
যারা খেলাফত প্রতিষ্ঠার কথা বলেন তাদের মুখে মুখে উক্ত আয়াত ও হাদিস গুলকে দলীল হিসাবে ব্যবহার করতে দেখা যায়। প্রকৃত অর্থে তাদের যুক্তির স্বপক্ষে এসব আয়াত ও হাদিস দলীল হতে পারেনা। কারণঃ
১. অনেকে মনে করেন রাসূল সঃ খেলাফতের বিষয়ে যে ভবিষ্যৎবাণী করে পাঁচটি স্তরের কথা উল্লেখ করেছেণ তা সবই বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে ও অতিবাহিত হয়ে গেছে। এর প্রমাণঃ
সাফিনাহ রাঃ বলেন, রাসূল সঃ বলেছেন,
“খেলাফা আমার উম্মতের মধ্যে ৩০ বছর থাকবে, অতপর হবে রাজ তন্ত্র।”
মুসনাদে আহমাদ, শায়খ আরনাউত হাদিসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন।
قال معاوية رضي الله عنه بعد انقضاء الخلافة ثلاثين سنة: أنا أول الملوك ( رسالة أبي زيد القيرواني ج1/ص 96).
খেলাফতের ৩০ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর মূয়াবিয়া রাঃ বলেছেন, “আমিই প্রথম রাজা”।
রেসালা যায়েদ আল-কায়রাওয়ানী।
২. কোরান ও হাদিসে আল্লাহ ও তার রাসূল কোথায়ও খেলাফা প্রতিষ্ঠা করার কোন আদেশ করেন নাই। তাই কোন রাষ্ট্রের নাম খলিফা বা ইসলামী হুকুমাহ রাখার কোনই প্রয়োজন করেনা। বরং মানুষকে আল্লাহর আইন মেনে চলার উপর অভ্যস্ত করাই মুসলিম রাষ্ট্রের কাজ, অন্য কিছু নয়।

Monday 18 July 2016

জিহাদ, কিতাল ও খিলাফাহ ( পর্ব – ৪)


শায়খ মুজাম্মেল হক্ক।


প্রথম পর্বের লিংক –এখানে ক্লিক করুন


দ্বিতীয় পর্বের লিংক –এখানে ক্লিক করুন

তৃতীয় পর্বের লিংক –এখানে ক্লিক করুন

৫ম পর্বের লিঙ্ক- এখানে ক্লিক করুন
ষষ্ঠ পর্বের লিংক - এখানে ক্লিক করুন
জিহাদ নামের ফেতনাহ সফল হতে দেখা যায়না। কারণ কি তা আল্লাহ ভালো জানেন। আমরা সীমিত জ্ঞানে কিছুটা হলেও বুঝতে পারি। তবে মুসলমানের কপাল খারাপ হলে আল্লাহ যেকোন ফেতনাকে আজাব হিসেবে সফলতা বা দীর্ঘস্থায়ীতা দান করতে পারেন, এমনটি মোটেও অযৌক্তিক নয়। তাতে শাস্তির ভয়ে মুসলমান ভাল হয়ে যাওয়ার প্রতি অগ্রসর হতে পারে।
لِيُذِيقَهُمْ بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ- الروم/41
“আমি তাদেরকে কিছু শাস্তি প্রদান করি এই জন্যে যে, হয়ত তারা কৃত কর্মের ভুল শুধরে নিয়ে ভালোর দিকে অগ্রসর হতে পারে।”
সুরা রুমঃ ৪১।
আমাদের জ্ঞান বলে এই ফেতনার জিহাদ সফল না হওয়ার পিছনে কারণগুলির মধ্যে যা বিশেষ ভাবে স্মরণীয় তা হলঃ
১. জিহাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ সঠিক হয়না।
২. কারণ যথার্থ থাকেনা।
৩. যথেষ্ট শক্তির যোগান থাকেনা।
৪. উপযুক্ত প্রস্তুতি ও উপযোগী কৌশল অবলম্বন করা হয়না।
৫. বাস্তবতার নিরিখে বিচার না করে আবেগকেই মূল ভিত্তি ও চালিকা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
৬. আল্লাহর দ্বীন বিজয়ী করা উদ্দেশ্য না হয়ে, দুনিয়ার স্বার্থকেই সামনে রাখা হয় ইত্যাদি।
প্রতিশোধ মূলক সম্মুখ যুদ্ধের যথার্থ কারণ ও প্রস্তুতি থাকলেও আল্লাহ পাক সহসা জিহাদে না জড়িয়ে সবর করাকেই উত্তম বলে ঘোষণা করেছেন তা আগেই উল্লেখিত হয়েছে।
وإن عاقبتم فعاقبوا بمثل ما عوقبتم به ولئن صبرتم لهو خير للصابرين- النحل/126
“যদি তোমরা প্রতিশোধ নাও, তাহলে ততটুকই নেবে যতটুকু তারা তোমাদের ক্ষতি করেছে। তবে তোমরা যদি ধৈর্য ধরো তাহলে তা হবে ধৈর্য ধারণকারীদের জন্যে উত্তম।”
সুরা নাহলঃ ১২৬।
কুরআন-সুন্নাহ থেকে যেসব আয়াত ও হাদিস দলীল হিসাবে তারা ব্যবহার করেন মূলত তা তাদের এহেন হীন কাজের পক্ষে দলীল নয়। তাদের দলীল গুলোর দুয়েকটি এখানে উল্লখ করছিঃ
إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ-التوبة/111
“আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের জান ও মাল, বিনিময়ে তাদেরকে জান্নাত দেবেন। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর পথে। অতঃপর তারা মারে ও মৃত্যুবরণ করে।’’
সুরা তাওবাহঃ ১১১।
আয়াতটিতে আল্লাহপাক اشْتَرَىٰ বলে এক ধরনের কেনা বেচার কথা বলেছেন। আমরা সকলেই জানি কেনা বেচা সঠিক হতে হলে, আইনানুগ হতে হলে বেচা কেনার প্রধান শর্ত গুলো পাওয়া যেতে হবে। সেগুলির মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য হলঃ
ক. বিক্রেতা ও ক্রেতা মার্কেট জানতে হবে।,
খ. উভয়ের কেউ জাহেল ও বোকা হলে হবেনা,
গ. জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে এবং

Sunday 17 July 2016

জিহাদ, কিতাল ও খিলাফাহ ( পর্ব – ৩ )



শায়খ মুজাম্মেল হক্ক

প্রথম পর্বের লিংক – এখানে ক্লিক করুন


দ্বিতীয় পর্বের লিংক – এখানে ক্লিক করুন

চতুর্থ পর্বের লিংক –এখানে ক্লিক করুন

৫ম পর্বের লিঙ্ক- এখানে ক্লিক করুন
ষষ্ঠ পর্বের লিংক - এখানে ক্লিক করুন
ময়দানের জিহাদ ছাড়া অন্য জিহাদ জিহাদ নয় এমন মনে করা আদৌ ঠিক নয়। বরং সে গুলো জিহাদ আকবার বা মূখ্য জিহাদ। কেননা সে জিহাদের ক্ষেত্র প্রশস্থ এবং সময়কালের কোন সীমা নেই। সে জিহাদে জীবনের সর্বক্ষণ ইমানদারকে অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় লড়াই করে যেতে হয়। যে এর কোনটিই করবেনা, করার মানসিকতা রাখবেনা সে জাহেলিয়াতের মরণ মরবে; কারণ আল্লাহর রাসুল সঃ সাধারণ ভাবেই এমন উক্তি করে গেছেন।
مَنْ مَاتَ وَلَمْ يَغْزُ وَلَمْ يُحَدِّثْ بِهِ نَفْسَهُ مَاتَ عَلَى شُعْبَةٍ مِنْ نِفَاقٍ- مسلم/ صحيح
“যে মরে গেল অথচ লড়াই করলো না, এবং লড়াই নিয়ে মনের সাথে কথা বলল না, সে নেফাকের অংশ সাথে নিয়ে মারা গেল।”
সহীহ মুসলিম।
রাসুল (সঃ) এর এই উক্তির উপরে উল্লেখিত সকল প্রকার জিহাদকেই বুঝায় তাতে কোন সন্দেহ নেই। এ উক্তি দিয়ে যদি শুধু সশস্ত্র যুদ্ধ মনে করা হয়, তা হবে জিহাদের এক মনগড়া সংকীর্ণ ব্যখ্যা, ইসলামের স্পর্শকাতর একটি বিষয়ে মুর্খতাপূর্ণ নির্মম হস্তক্ষেপ। জিহাদের নাম করে ব্লাড বাথ, বা মরণ ফাঁদ তৈরি করার এক ঘৃণ্য অপপ্রয়াস।
এর অর্থ যদি শুধু সশস্ত্র যুদ্ধই হবে তাহলে শত শত বছরের মধ্যে, সাহাবা, তাবেঈ, তাবে তাবেঈ ও তাঁদের পরে যারা এমন যুদ্ধে অংশ না নিয়েই মারা গেছেন ও আগামীতে যারা মরে যাবেন তাঁরা কি সবাই মুনাফেক বলে গণ্য হবেন? তাঁরা কি জান্নাত থেকে নিরাশ হয়ে যাবেন?
না, বরং এমন ভাবা অবশ্যই অনৈসলামিক এবং অযৌক্তিকও বটে!
খ) কিতাল বা সশস্ত্র জিহাদঃ

দুই শতাধিক প্রশ্নোত্তরে নাজাত প্রাপ্ত দলের আক্বীদাহ



-শায়খ আব্দুল্লাহ শাহেদ আল-মাদানী

বইটি ডাউনলোড করুন এখান  থেকে

জিহাদ, কিতাল ও খিলাফাহ ( পর্ব – ২ )


শায়খ মুজাম্মেল হক্ক

প্রথম পর্বের লিংক – এখানে ক্লিক করুন

৩য় পর্বের লিংক – এখানে ক্লিক করুন

চতুর্থ পর্বের লিংক –এখানে ক্লিক করুন
৫ম পর্বের লিঙ্ক- এখানে ক্লিক করুন
ষষ্ঠ পর্বের লিংক - এখানে ক্লিক করুন
জিহাদের সামগ্রিক প্রকারভেদঃ
উপরের আলোচনায় বুঝা গেল জিহাদ প্রথমে দুই প্রকার। বড় জিহাদ ও ছোট জিহাদ। আর এ দুইটিই আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হবে তখন, যখন আল্লাহ খুশী হবেন। আর আল্লাহ খুশী তখনই হবেন, যখন তা শুদ্ধ উপায়ে কুরান-সুন্নাহর সঠিক অনুসরণে করা হবে। যে জিহাদে তিনি খুশী নন, তাতে দুনিয়ার সকল জাহেল ইমোশনাল (আবেগ দিয়ে পরিচালিত, প্রবৃত্তির অনুসারী) মানুষগুলো খুশী হলেও সেটা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ হবেনা, বরং তা হবে জিহাদ ফি সাবিলিত-তাগুত বা শয়তানের রাস্তায় জিহাদ।
এমন দৃষ্টিকোন থেকে জিহাদকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন আহলুল ইলম বা উলামায়ে কেরামঃ
১. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ।
২. জিহাদ ফি সাবিলিত্তাগুত।
জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ হল সেই জিহাদ, যাতে আল্লাহ্ খুশী হন, শয়তান কষ্ট পায়। জিহাদ ফী সাবিলিত্তাগুত হল সেই জিহাদ যাতে শয়তান খুশী হয়, আর আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন।
যে জিহাদে সম্পদ লাভ, ক্ষমতা লাভ, সুনাম অর্জন ও মনরঞ্জণ উদ্দেশ্য হয়, যা কোরআন হাদিসের বর্ণনা মতে সঠিক নয় তা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ নয়, বরং জিহাদ ফি সাবিলিস শাইতান বা শয়তানের রাস্তায় জিহাদ তাতে কোন সন্দেহ নেই। সে জিহাদে যতই ইসলামের নাম ও ব্যানার ব্যবহার করা হোক না কেন, কোন ভাবেই সেটা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ বলে গণ্য হবেনা। সে জিহাদে যারা মারা যাবেন তাঁরা শহীদ নন, বরং জাহান্নামি – সে কথা বলতে দ্বিধা করার অবকাশ নেই। এ লেখার প্রতিপাদ্য সেই জিহাদ, যাতে আল্লাহ খুশী হন। যেটাকে বলা হয় জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ।
ক. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ দুই প্রকারঃ
০১. জাহের বা প্রকাশ্য জিহাদ
০২. বাতেন বা অপ্রকাশ্য জিহাদ।
• প্রকাশ্য জিহাদ দুই প্রকারঃ
০১/০১. কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ। এটি হবে তখন যখন তারা শুধু ইসলামের কারণেই মুসলমানদেরকে আক্রমণ করবে। ইসলামের পথ বন্ধ করতেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
০১/০২. মুনাফেক, জালেম ও ফিতনা বাজদের বিরুদ্ধে জিহাদ।
• প্রকাশ্য জিহাদ এর প্রত্যেকটি আবার ৪ প্রকারঃ
০১. মরণের ঝুঁকি নিয়ে, জীবনের ক্ষতি স্বীকার করে অস্ত্রের জিহাদ
০২. সম্পদের খরচ করে জিহাদ
০৩. মুখে ও লিখনির মাধ্যমে দাওয়াতি কাজ করে জিহাদ
০৪. মনের ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করে জিহাদ
= (০৪ x ০২= ০৮)।

জিহাদ, কিতাল ও খিলাফাহ ( পর্ব – ২ )


শায়খ মুজাম্মেল হক্ক

প্রথম পর্বের লিংক – এখানে ক্লিক করুন

৩য় পর্বের লিংক – এখানে ক্লিক করুন

জিহাদের সামগ্রিক প্রকারভেদঃ
উপরের আলোচনায় বুঝা গেল জিহাদ প্রথমে দুই প্রকার। বড় জিহাদ ও ছোট জিহাদ। আর এ দুইটিই আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হবে তখন, যখন আল্লাহ খুশী হবেন। আর আল্লাহ খুশী তখনই হবেন, যখন তা শুদ্ধ উপায়ে কুরান-সুন্নাহর সঠিক অনুসরণে করা হবে। যে জিহাদে তিনি খুশী নন, তাতে দুনিয়ার সকল জাহেল ইমোশনাল (আবেগ দিয়ে পরিচালিত, প্রবৃত্তির অনুসারী) মানুষগুলো খুশী হলেও সেটা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ হবেনা, বরং তা হবে জিহাদ ফি সাবিলিত-তাগুত বা শয়তানের রাস্তায় জিহাদ।
এমন দৃষ্টিকোন থেকে জিহাদকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন আহলুল ইলম বা উলামায়ে কেরামঃ
১. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ।
২. জিহাদ ফি সাবিলিত্তাগুত।
জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ হল সেই জিহাদ, যাতে আল্লাহ্ খুশী হন, শয়তান কষ্ট পায়। জিহাদ ফী সাবিলিত্তাগুত হল সেই জিহাদ যাতে শয়তান খুশী হয়, আর আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন।
যে জিহাদে সম্পদ লাভ, ক্ষমতা লাভ, সুনাম অর্জন ও মনরঞ্জণ উদ্দেশ্য হয়, যা কোরআন হাদিসের বর্ণনা মতে সঠিক নয় তা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ নয়, বরং জিহাদ ফি সাবিলিস শাইতান বা শয়তানের রাস্তায় জিহাদ তাতে কোন সন্দেহ নেই। সে জিহাদে যতই ইসলামের নাম ও ব্যানার ব্যবহার করা হোক না কেন, কোন ভাবেই সেটা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ বলে গণ্য হবেনা। সে জিহাদে যারা মারা যাবেন তাঁরা শহীদ নন, বরং জাহান্নামি – সে কথা বলতে দ্বিধা করার অবকাশ নেই। এ লেখার প্রতিপাদ্য সেই জিহাদ, যাতে আল্লাহ খুশী হন। যেটাকে বলা হয় জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ।
ক. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ দুই প্রকারঃ
০১. জাহের বা প্রকাশ্য জিহাদ
০২. বাতেন বা অপ্রকাশ্য জিহাদ।
• প্রকাশ্য জিহাদ দুই প্রকারঃ
০১/০১. কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ। এটি হবে তখন যখন তারা শুধু ইসলামের কারণেই মুসলমানদেরকে আক্রমণ করবে। ইসলামের পথ বন্ধ করতেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
০১/০২. মুনাফেক, জালেম ও ফিতনা বাজদের বিরুদ্ধে জিহাদ।
• প্রকাশ্য জিহাদ এর প্রত্যেকটি আবার ৪ প্রকারঃ
০১. মরণের ঝুঁকি নিয়ে, জীবনের ক্ষতি স্বীকার করে অস্ত্রের জিহাদ
০২. সম্পদের খরচ করে জিহাদ
০৩. মুখে ও লিখনির মাধ্যমে দাওয়াতি কাজ করে জিহাদ
০৪. মনের ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করে জিহাদ
= (০৪ x ০২= ০৮)।

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...