Saturday 8 November 2014

হিল্লা বিয়ে



ভূমিকা 
হিল্লা : উপায়, গতি, ব্যবস্থা, আশ্রয় ও অবলম্বন বিভিন্ন অর্থে আভিধানিকভাবে ব্যবহার হয়। পরিভাষায় হিল্লা বলা হয় : ‘কোন স্বামীর তিন তালাক প্রাপ্তা স্ত্রীকে এ শর্তে বিয়ে করা যে, বিয়ের পর সহবাস শেষে স্ত্রীকে তালাক দেবে, যেন সে পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হয়, সে তাকে পুনরায় বিয়ে করতে পারে’। এ বিয়ে বাতিল ও অশুদ্ধ, এর ফলে নারী তিন তালাকদাতা স্বামীর জন্য হালাল হয় না। ইমাম ইব্‌ন তাইমিয়াহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন : এর উদাহরণ হচ্ছে, কোন ব্যক্তি যখন তার স্ত্রীকে তিন তালাক প্রদান করে, তখন স্ত্রী তার উপর হারাম হয়ে যায়, যতক্ষণ না স্ত্রী সে ব্যতীত অন্য স্বামীকে বিয়ে করে। যেমন আল্লাহ কুরআনে উল্লেখ করেছেন, যেরূপ এসেছে তার নবীর সুন্নতে এবং যার উপর সকল উম্মতের ঐক্যমত। যখন কোন ব্যক্তি এ নারীকে তালাক দেয়ার নিয়তে বিয়ে করে, যেন সে তার পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হয়, তখন এ বিয়ে হারাম ও বাতিল বলে গন্য। এভাবে বিয়ে করার পর তাকে রাখুক বা আলাদা করুক, অথবা আকদের সময় শর্ত করুক বা তার আগে শর্ত করুক, অথবা শাব্দিক কোন শর্ত ছাড়া উভয়ের মধ্যে শুধু প্রস্তাব আকারে ছিল, আর পুরুষ ও নারীর অবস্থা এবং মোহর ছিল শর্তের ন্যায়, অথবা এসব কিছুই ছিল না বরং পুরুষ ইচ্ছা করছে তাকে বিয়ে করবে, অতঃপর তাকে তালাক দেবে যেন তিন তালাকদাতার জন্য সে হালাল হয়, নারী ও তার অভিভাবকের সম্পূর্ণ অজান্তে, তিন তালাকদাতা জানুক বা না জানুক, সর্বাবস্থায় এ তালাক বাতিল হবে। যদিও হিল্লাকারী এ ধারণা করে যে, এটা একটা ভাল কাজ এবং তাকে তার স্বামীর নিকট ফিরিয়ে দিলে তাদের উপর বিরাট অনুগ্রহ হবে, কারণ তালাকের কারণে তাদের নিজেদের, তাদের সন্তানের ও তাদের দাম্পত্য জীবন ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্বিসহ হয়েছে ইত্যাদি। ইসলামের দৃষ্টিতে এ বিয়ের কোন মূল্য নেই, এটা বিয়ে হিসেবে গণ্য হয় না, এ বিয়ের ফলে তিন তালাকদাতার তাকে বিয়ে করা বৈধ হবে না, যতক্ষণ না কোন ব্যক্তি তাকে চুক্তি, প্রতারণা ও লুকোচুরি ব্যতীত আগ্রহসহ বিয়ে করে, সহবাসে লিপ্ত হয়ে একে অপরের সাথে মেলামেশা করে, অতঃপর যখন তাদের মাঝে বিচ্ছেদ সৃষ্টি হয় মৃত্যুর কারণে, অথবা তালাক বা খোলা‌‌’ করার কারণে, তখনই শুধু প্রথম স্বামীর জন্য এ নারীকে বিয়ে করা বৈধ। আর যদি এ হিল্লাকারী তাকে তালাক না দিয়ে স্থায়ীভাবে রাখতে চায়, তাহলে নতুনভাবে আকদের মাধ্যমে বিয়ে করা জরুরী, কারণ পূর্বের আকদ ছিল বাতিল ও ফাসেদ, তা দ্বারা এ স্ত্রীর সাথে অবস্থান করা বৈধ নয়। এটাই কুরআন ও হাদিসের ভাষ্য। এটাই সাহাবায়ে কেরাম, সকল তাবেয়ি ও তাদের পরবর্তী আলেমদের অভিমত।

বিয়ের রুকন, শর্ত ও ওলি বা অভিভাবক এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শর্তসমূহ



প্রশ্ন: বিয়ের রুকন ও শর্ত কি কি?

উত্তর:
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য। 

• ইসলামে বিয়ের রুকন বা খুঁটি তিনটি: 

এক:

বিয়ে সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্রে সমূহ প্রতিবন্ধকতা হতে বর-কনে উভয়ে মুক্ত হওয়া: যেমন- বর-কনে পরস্পর মোহরেম হওয়া; ঔরশগত কারণে হোক অথবা দুগ্ধপানের কারণে হোক। বর কাফের কিন্তু কনে মুসলিম হওয়া, ইত্যাদি। 

দুই:

ইজাব বা প্রস্তাবনা: এটি মেয়ের অভিভাবক বা তার প্রতিনিধির পক্ষ থেকে পেশকৃত প্রস্তাবনামূলক বাক্য। যেমন- বরকে লক্ষ্য করে বলা যেতে পারে “আমি অমুককে তোমার কাছে বিয়ে দিলাম” অথবা এ ধরনের অন্য কোন কথা। 

তিন:

কবুল বা গ্রহণ: এটি বর বা বরের প্রতিনিধির পক্ষ থেকে সম্মতিসূচক বাক্য। যেমন- বর বলতে পারেন “আমি গ্রহণ করলাম”  অথবা এ ধরনের অন্য কোন কথা। 

Thursday 6 November 2014

কাউকে শহীদ বলার হুকুম কি?



কয়েকদিন ধরে মাথায় একটা বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছিল, ইসলামকে না বুঝার কারনে শহীদ শব্দটা আমাদের দেশে মৃত মানুষগুলুর পাশে এমনি এমনি স্থান করে নিচ্ছে।লজ্জার বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশে অনেক নাস্তিক কেও শহীদ উপাধি দিয়ে দিচ্ছেন কিছু গণ্ডমূর্খ ।আমার কিছু জামাত ইসলামের (রাজনইতিক দল)ভাই রা তো ওনাদের নেতাদের মিত্রুর পর শহীদ নাম না দিয়ে ক্ষান্ত হয়না আবার অনেকে জান্নাতিও বলে দেয় তাদের নেতাদের।আচ্ছা এবার দেখি ইসলাম কি বলে কাউকে শহীদ বলার খেত্রে।আর যেহেতু আমিও ইসলাম সম্পর্কে অনেকটা অজ্ঞ তাই আমার প্রিয় একজন শাইখ এর ফতওয়া টা তুলে ধরছি।
 কাউকে শহীদ বলার হুকুম কি?

উত্তরঃ কাউকে শহীদ বলা দু’ভাবে হতে পারে।

(১) নির্দিষ্ট কোন কাজকে উল্লেখ করে শহীদ বলা। এভাবে বলা, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে নিহত হল সে শহীদ, নিজের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেলে শহীদ, প্লেগ রোগে মারা গেলে শহীদ। এভাবে বলা জায়েয আছে। কেননা এখানে আপনি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাদীছ অনুযায়ী সাক্ষ্য প্রদান করছেন।

কুরআনের আলোকে জান্নাত ও জাহান্নাম


ক. জান্নাত
جنة এক বচন, বহুবচনে  جنات, অর্থ ঘন সন্নিবেশিত বাগান, বাগ-বাগিচা। আরবীতে বাগানকে روضة (রওদ্বাতুন) এবং حديقة (হাদীকাতুন) ও বলা হয়। কিন্তু جنات (জান্নাত) শব্দটি আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীনের নিজস্ব একটি পরিভাষা। পারিভাষিক অর্থে জান্নাত বলতে এমন স্থানকে বোঝায়, যা আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাঁর অনুগত বান্দাদের জন্য নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। যা দিগন্ত বিস্তৃত নানা রকম ফুলে ফুলে সুশোভিত সুরম্য অট্টালিকা সম্বলিত মনোমুগ্ধকর বাগান; যার পাশ দিয়ে প্রবাহমান বিভিন্ন ধরনের নদী-নালা ও ঝর্ণাধারা। যেখানে চির বসন্ত বিরাজমান।
আমরা জান্নাতকে জান্নাতও বলে থাকি। জান্নাত ফার্সী শব্দ। এখানে আমরা আরবী শব্দটিই ব্যবহার করবো।
জান্নাত চিরশান্তির জায়গা। সেখানে আরাম- আয়েশ, সুখ-শান্তি, আমোদ-প্রমোদ, চিত্ত বিনোদন ও আনন্দ-আহলাদের চরম ও পরম ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে ভোগ-বিলাস ও পানাহারের আতিশয্য। জান্নাতীরা যা কামনা করবে কিংবা কোনো কিছু পাওয়ার আহবান জানাবে, সকল কিছু পাবে। সেখানে সবাই যুবক হয়ে বাস করবে। শরীরে কোনো রোগ-শোক, জরাজীর্ণতা, মন্দা, বার্ধক্য, দুর্বলতা ও অপারগতা থাকবে না। যত ধরনের ফল-ফলাদি, খাদ্য-খাবার, পানীয়, দুধ, মধু সুস্বাদু খাবার সব খেতে পারবে। ভোগ-বিলাসের সকল উপায়-উপকরণ বিদ্যমান। সেগুলো স্বাদ ও গন্ধে অপূর্ব। আমোদ-প্রমোদ, ভ্রমন-বিহার, খেলা-ধুলা, বেড়ানো, বাজার করা ও শুভেচ্ছা-স্বাগত জানাতে পারবে। প্রাচুর্যের কোনো অভাব হবে না। দ্রুতগামী যানবাহনসহ মনের ইচ্ছা চোখের নিমির্ষে পূরণ করতে পারবে।

কুরআনের আলোকে জান্নাত ও জাহান্নাম


ক. জান্নাত
جنة এক বচন, বহুবচনে  جنات, অর্থ ঘন সন্নিবেশিত বাগান, বাগ-বাগিচা। আরবীতে বাগানকে روضة (রওদ্বাতুন) এবং حديقة (হাদীকাতুন) ও বলা হয়। কিন্তু جنات (জান্নাত) শব্দটি আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীনের নিজস্ব একটি পরিভাষা। পারিভাষিক অর্থে জান্নাত বলতে এমন স্থানকে বোঝায়, যা আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাঁর অনুগত বান্দাদের জন্য নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। যা দিগন্ত বিস্তৃত নানা রকম ফুলে ফুলে সুশোভিত সুরম্য অট্টালিকা সম্বলিত মনোমুগ্ধকর বাগান; যার পাশ দিয়ে প্রবাহমান বিভিন্ন ধরনের নদী-নালা ও ঝর্ণাধারা। যেখানে চির বসন্ত বিরাজমান।
আমরা জান্নাতকে জান্নাতও বলে থাকি। জান্নাত ফার্সী শব্দ। এখানে আমরা আরবী শব্দটিই ব্যবহার করবো।
জান্নাত চিরশান্তির জায়গা। সেখানে আরাম- আয়েশ, সুখ-শান্তি, আমোদ-প্রমোদ, চিত্ত বিনোদন ও আনন্দ-আহলাদের চরম ও পরম ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে ভোগ-বিলাস ও পানাহারের আতিশয্য। জান্নাতীরা যা কামনা করবে কিংবা কোনো কিছু পাওয়ার আহবান জানাবে, সকল কিছু পাবে। সেখানে সবাই যুবক হয়ে বাস করবে। শরীরে কোনো রোগ-শোক, জরাজীর্ণতা, মন্দা, বার্ধক্য, দুর্বলতা ও অপারগতা থাকবে না। যত ধরনের ফল-ফলাদি, খাদ্য-খাবার, পানীয়, দুধ, মধু সুস্বাদু খাবার সব খেতে পারবে। ভোগ-বিলাসের সকল উপায়-উপকরণ বিদ্যমান। সেগুলো স্বাদ ও গন্ধে অপূর্ব। আমোদ-প্রমোদ, ভ্রমন-বিহার, খেলা-ধুলা, বেড়ানো, বাজার করা ও শুভেচ্ছা-স্বাগত জানাতে পারবে। প্রাচুর্যের কোনো অভাব হবে না। দ্রুতগামী যানবাহনসহ মনের ইচ্ছা চোখের নিমির্ষে পূরণ করতে পারবে।

Wednesday 5 November 2014

সৎব্যক্তিদের আসরসমূহ থেকে চার আসর


بسم الله الرحمن الرحيم
ভূমিকা
নিশ্চয় সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর নিকট সাহায্য চাই, তাঁর কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা করি; আর আমাদের নফসের খারাপি এবং আমাদের সকল প্রকার মন্দ আমল থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। আল্লাহ যাকে পথ প্রদর্শন করেন, তাকে পথভ্রষ্ট করার কেউ নেই; আর যাকে তিনি পথহারা করেন, তাকে পথ প্রদর্শনকারীও কেউ নেই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسۡلِمُونَ ١٠٢ ﴾ [ال عمران: ١٠٢]
“হে মুমিনগণ! তোমরা যথার্থভাবে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং তোমরা মুসলিম (পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণকারী) না হয়ে কোনো অবস্থাতেই মারা যেও না।”[1]

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُواْ رَبَّكُمُ ٱلَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفۡسٖ وَٰحِدَةٖ وَخَلَقَ مِنۡهَا زَوۡجَهَا وَبَثَّ مِنۡهُمَا رِجَالًا كَثِيرٗا وَنِسَآءٗۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ ٱلَّذِي تَسَآءَلُونَ بِهِۦ وَٱلۡأَرۡحَامَۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَيۡكُمۡ رَقِيبٗا ١ ﴾ [النساء: ١]
 “হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবের তাকওয়া অবলম্বন কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন ও তার থেকে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের দুজন থেকে বহু নর-নারী ছড়িয়ে দেন; আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যাঁর নামে তোমরা একে অপরের কাছে নিজ নিজ হক দাবী কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারেও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর সম্যক পর্যবেক্ষক।”[2]
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَقُولُواْ قَوۡلٗا سَدِيدٗا ٧٠ يُصۡلِحۡ لَكُمۡ أَعۡمَٰلَكُمۡ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۗ وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدۡ فَازَ فَوۡزًا عَظِيمًا ٧١ ﴾ [الاحزاب: ٧٠،  ٧١]                                                                                           
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং সঠিক কথা বল; তাহলে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কাজ সংশোধন করবেন এবং তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই মহাসাফল্য অর্জন করবে।”[3]
অতঃপর

মৃত্যুর কথা স্মরণ করা ও তার জন্য প্রস্তুতির অপরিহার্যতা প্রসঙ্গে



রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
« أكثروا  ذكر هادم اللذات الموت » .
“তোমরা স্বাদ বিধ্বংসী মুত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ কর।”[74] 
এই হাদিসটি ‘মাসাবীহ’ (المصابيح) গ্রন্থের হাসান হাদিসের অন্তর্ভুক্ত, যা আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেছেন; তার অর্থ হল, মৃত্যু প্রতিটি স্বাদ ও রুচিকে ধ্বংস করে দেয়; সুতরাং তোমরা তার কথা বেশি বেশি স্মরণ কর; যাতে তার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পার। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: “তোমরা স্বাদ বিধ্বংসী মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ কর” খুব সংক্ষিপ্ত একটি বাক্য, কিন্তু তিনি তাতে সকল উপদেশকে সন্নিবেশিত করেছেন। কেননা, সত্যিকার অর্থে যে ব্যক্তি মৃত্যুর কথা স্মরণ করে, তার উপর বর্তমানের স্বাদ-আহ্লাদ ও ভবিষ্যতের আকাঙ্খা শক্তি হ্রাস পায়; আর তা স্বাদ-আহ্লাদের কামনা-বাসনা থেকে তাকে বিমুখ করে দেয়; কিন্তু নিশ্চল প্রাণ ও অলস মন প্রয়োজন অনুভব করে উচ্চ আওয়াজ ও দীর্ঘ উপদেশের; তা না হলে, আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
 ﴿ كُلُّ نَفۡسٖ ذَآئِقَةُ ٱلۡمَوۡتِۗ ﴾ [الانبياء: ٣٥]
[প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে][75]
সাথে সাথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী:

কবর যিয়ারতের বৈধতা ও অবৈধতা প্রসঙ্গে



রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
« إِنِّي كنت نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبُورِ فَزُورُوهَا » . (أخرجه مسلم) .
“আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করা থেকে নিষেধ করেছিলাম, সুতরাং তোমরা তা যিয়ারত কর।”[51] 
এই হাদিসটি ‘মাসাবীহ’ (المصابيح) গ্রন্থের বিশুদ্ধ হাদিসসমূহের অন্তর্ভুক্ত, যা বুরাইদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেছেন; তাতে ইসলামের প্রথম দিকে কবর যিয়ারত করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়টির সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে, কারণ এ কবরগুলোই ছিল মূর্তিপূজার উৎপত্তিস্থল বা সূচনা; আর এই কঠিন ব্যাধির সূচনা হয়েছিল নবী নূহ আ. এর জাতির মধ্যে; যেমন আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবে বলেছেন:
﴿ قَالَ نُوحٞ رَّبِّ إِنَّهُمۡ عَصَوۡنِي وَٱتَّبَعُواْ مَن لَّمۡ يَزِدۡهُ مَالُهُۥ وَوَلَدُهُۥٓ إِلَّا خَسَارٗا ٢١ وَمَكَرُواْ مَكۡرٗا كُبَّارٗا ٢٢ وَقَالُواْ لَا تَذَرُنَّ ءَالِهَتَكُمۡ وَلَا تَذَرُنَّ وَدّٗا وَلَا سُوَاعٗا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسۡرٗا ٢٣ ﴾ [نوح: ٢١،  ٢٣]                   
“নূহ্ বলেছিলেন, ‘হে আমার রব! আমার সম্প্রদায় তো আমাকে অমান্য করেছে এবং অনুসরণ করেছে এমন লোকের, যার ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তার ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করেনি; আর তারা ভয়ানক ষড়যন্ত্র করেছে এবং বলেছে, ‘তোমরা কখনো পরিত্যাগ করো না তোমাদের উপাস্যদেরকে; পরিত্যাগ করো না ওয়াদ্, সুওয়া‘আ, ইয়াগূছ, ইয়া‘ঊক ও নাসরকে।”[52] 

বিদ‘আতের প্রকারভেদ ও তার বিধান প্রসঙ্গে



রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ خَيْرَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللَّهِ وَخَيْرُ الْهُدَى هُدَى مُحَمَّدٍ وَشَرُّ الأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلُّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ». (أخرجه مسلم) .
“অতঃপর, সর্বাধিক সত্য কথা হল আল্লাহর কিতাব; আর সব জীবনাদর্শের চেয়ে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শই সর্বোৎকৃষ্ট; আর দীনের মাঝে বিদ‘আত তথা নতুন কিছু উদ্ভাবন করা সর্বাপেক্ষা মন্দকাজ; আর প্রত্যেক বিদ‘আতই পথভ্রষ্টতা।”[28] 
এই হাদিসটি ‘মাসাবীহ’ ( المصابيح ) গ্রন্থের বিশুদ্ধ হাদিসসমূহের অন্তর্ভুক্ত, যা জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেছেন।
ইরবাদ্ব ইবন সারিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত অপর এক হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«من يعش منكم بعدي فسيرى اختلافا كثيرا فعليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين وعضوا عليها بالنواجذ وإياكم ومحدثات الأمور فان كل محدثة بدعة وان كل بدعة ضلالة » . (أخرجه أحمد و الترمذي) .
“আমার মৃত্যুর পরে তোমাদের মধ্য থেকে যে বেঁচে থাকবে, অচিরেই সে বহু মতবিরোধ দেখতে পাবে; সুতরাং তোমাদের উপর আবশ্যকীয় কর্তব্য হল, তোমরা আমার পরে আমার সুন্নাত ও খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে মজবুতভাবে আঁকড়িয়ে ধরবে ও দাঁত দ্বারা কামড়ে থাকবে; আর দীনের মাঝে বিদ‘আত তথা নতুন কিছু উদ্ভাবন করা থেকে বেঁচে থাকবে; কারণ, দীনের মাঝে নতুন কিছু উদ্ভাবন করাই হল বিদ‘আত; আর প্রত্যেক বিদ‘আতই পথভ্রষ্টতা।”[29]

কবরের নিকট সালাত পড়া, কবরবাসীর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা এবং তার উপর প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বালানোর অবৈধতা বর্ণনা প্রসঙ্গে



কবর পূজারীদের জন্য অভিশাপ এবং কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لعنة الله على اليهود والنصارى اتخذوا قبور أنبيائهم مساجد » (أخرجه البخاري ومسلم).
“ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টানদের উপর আল্লাহর লানত (অভিশাপ), তারা তাদের নবীদের কবরসমূহকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করেছে।”[6] 
এই হাদিসটি ‘মাসাবীহ’ ( المصابيح ) গ্রন্থের বিশুদ্ধ হাদিসসমূহের অন্তর্ভুক্ত, যা উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বর্ণনা করেছেন; নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টানদের উপর লা‘নত করার কারণ হল, তারা ঐসব স্থানে সালাত আদায় করত, যেখানে তাদের নবীদেরকে দাফন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে হয়তো তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এমন যে, তাদের নবীদের কবরসমূহের উদ্দেশ্যে সিজদা করার অর্থ হচ্ছে তাদের নবীদের সম্মান করা; বস্তুত এটা হচ্ছে প্রকাশ্য শির্ক, এ জন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

Tuesday 4 November 2014

সৎ মানুষের হৃদয়ে শয়তান প্রবেশের ধরণ ও প্রকৃতি



সূচীপত্র
১- ভূমিকা
২- শয়তান কী ?
৩- শয়তানের কৌশল
৪- শয়তানের প্রবেশপথ
এক. মুসলিমদের পরস্পরকে পরস্পরের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়া এবং অন্যের সম্পর্কে কু-ধারণা সৃষ্টি করা
দুই. বেদ‘আতকে মানুষের জন্য সুসজ্জিত করা
তিন. এক দিককে অন্যদিকের তুলনায় অধিক প্রাধান্য দেয়া
চার. করব-করছি, এরকম কাল বিলম্ব করা
পাঁচ. কৃত্রিম পূর্ণতা
ছয়. নিজের সত্ত্বা ও তার সামর্থ্যের সঠিক মূল্যায়ন না করা
সাত. সন্দেহ সৃষ্টি
আট. ভীতি প্রদর্শন
৫- শয়তানের কর্তব্য পালনে সহায়ক স্বভাবসমূহ

ভূমিকা
সমস্ত প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ তা‘আলার জন্য। শুভ পরিণতি মুত্তাকীদের জন্য। সালাত ও সালাম প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার বর্গ, সঙ্গী-সাথীদের ওপর এবং কেয়ামত পর্যন্ত যারা অনুসরণ করবেন তাঁর পথ,  তাদের ওপর।
হামদ ও সালাতের পরে...
সাম্প্রতিক সময়ে মুসলিম উম্মাহর বিপর্যয়ের কারণ মূলত: জাতির কতিপয় প্রগতিশীল ব্যক্তির চিন্তাগত দৃষ্টিভঙ্গি। ইলমে দ্বীনের সাথেও এদের কেউ কেউ সম্পৃক্ত।
জ্ঞান-বিজ্ঞান ও গবেষণা ক্ষেত্রের মতই এরা দর্শন ও চিন্তা- চেতনার ক্ষেত্রেও যুগোপযোগী ও আধুনিক পশ্চাত্য সভ্যতার উদগীরণ করা বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী ও ইসলামের মাঝে ‘সমন্বয়’ সাধনের প্রয়াস তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ উদ্যোগের সুস্পষ্টতম লক্ষ্য হল নিজেদের ‘বুঝ ও সমঝমত’ ইসলামী নির্দেশনাসমূহের ‘যৌক্তিকিকরণের’ প্রয়াস চালানো।

এক তালিবে ইল্‌ম নারীদেরকে ইল্‌ম শিক্ষা দিতে গিয়ে নিজে তাদের একজনের সাথে বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন


এক তালিবে ইল্‌ম নারীদেরকে ইল্‌ম শিক্ষা দিতে গিয়ে নিজে তাদের একজনের সাথে বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন
প্রশ্নঃ আমাদের দেশে একজন তালিবে ইল্‌ম আছে। তাঁর ইল্‌ম ভাল। তিনি আমাদেরকে ইলম অর্জন, তাকওয়া, সুন্নাহর অনুসরণ ও আলেমদের সাথে আদব মেনে চলার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করেন। আমরা তাঁকে হকপন্থী সালাফী হিসেবে জানি। তিনি আমাদেরকে দ্বীনের খুঁটিনাটি যা কিছু শিক্ষা দেন আমরা তাঁকে অনুসরণ করে চলি। কুরআনে কারীম ও রাসূল (সাঃ) এর হাদিস শিক্ষাদানের জন্য তিনি সনদপ্রাপ্ত। যদিওবা আমরা উনার তাকলীদ করি, কিন্তু তিনি আমাদেরকে তাকলীদ না-করার প্রতি উৎসাহিত করেন। তিনি ফতোয়ার ক্ষেত্রে অথবা নারী হিসেবে আমাদের সাথে আচার আচরণের ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌কে ভয় করেন বলে আমি মনে করি। আমি তার জ্ঞান প্রচারের ক্ষেত্রে কিছু ভূমিকা রেখে থাকি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো একজন মহিলা আমাকে অবহিত করেছেন (আমার কাছে তাকে সত্যবাদী মনে হয়) যে, এই নারীর সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক আছে। সেটা সম্পূর্ণ গোপনে। আমি আবারও বলছি সম্পূর্ণ গোপনে। মহিলাটি জানাচ্ছেন যে, তিনি এ সম্পর্ককে বিয়ের মাধ্যমে শরিয়তসম্মত রূপ দেয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু নিজস্ব কিছু পরিস্থিতির কারণে তিনি সেটা পারছেন না। পরিতাপের বিষয় হলো- তা সত্ত্বেও তিনি এ মহিলার সাথে কথাবার্তা বন্ধ করেননি। তিনি বলছেন যে, তিনি পরিবেশ তৈরী করার চেষ্টা করছেন। এমতাবস্থায়, আমরা কি তার কাছ থেকে ইলেম অর্জনে বিরত থাকব? তার দরসে বসা থেকে বিরত থাকব? শয়তান আমাকে ধাঁধায় ফেলে দিচ্ছে, আমাকে বলছে- এই আলেম যা বলে তিনি নিজে সে অনুযায়ী আমল করেন না। তার প্রতিটি কথার মধ্যে শয়তান আমাকে সন্দেহে ফেলে দিচ্ছে। নাকি আমরা বলব- মানুষ মাত্রই গুনাহগার। হতে পারে এই গুনার কাছে তিনি হেরে গেছেন। আমাদের সাথে আচার ব্যবহারে তিনি আল্লাহ্‌কে ভয় করেন এটাই তো আমরা জানি। আর এ বিষয়টি একেবারে একটা গোপন বিষয়। গুটিকতক মানুষ ছাড়া এ বিষয়টি কেউ জানে না। আমি যে, এ বিষয়টি জানি তিনি তা জানেন না। নবী ছাড়া তো নিষ্পাপ কেউ নেই।

জবাব:

আলহামদুলিল্লাহ্‌ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য)।

এ কথা সত্য যে, সকল গুনাহ থেকে মুক্ত এমন একজন মানুষও পাওয়া যাবে না। প্রত্যেক মানুষের গুনাহ রয়েছে। যে গুণার বিষয়টা শুধু সে ব্যক্তি জানে এবং তার রবব জানে। এটাই বনী আদমের প্রকৃত অবস্থা। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, 

১৯৯০ সালে সাদ্দাম হোসেন যখন কুয়েত আক্রমন করে এবং অন্য আরব দেশগুলো আক্রমন করার হুমকি দেয়, তখন সৌদি বাদশাহ আমেরিকার সাহায্য নেয় সাদ্দামকে প্রতিহত করার জন্য। আমাদের প্রশ্ন ছিলো, মুসলমানদের জন্য যুদ্ধে কোন কাফেরের সাহায্য নেওয়া জায়েজ আছে কিনা?


১৯৯০ সালে সাদ্দাম হোসেন যখন কুয়েত আক্রমন করে এবং অন্য আরব দেশগুলো আক্রমন করার হুমকি দেয়, তখন সৌদি বাদশাহ আমেরিকার সাহায্য নেয় সাদ্দামকে প্রতিহত করার জন্য। আমাদের প্রশ্ন ছিলো, মুসলমানদের জন্য যুদ্ধে কোন কাফেরের সাহায্য নেওয়া জায়েজ আছে কিনা?
উত্তরঃ সালমান আল-আওদাহ, সফর আল-হাওয়ালি, মুহাম্মাদ আল-সুরুরের মতো বিভ্রান্ত তাকফিরী আলেম ও তাদের অন্ধভক্ত কিছু ইউটিউব বক্তা ইন্টারনেটে ও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমগুলোতে ইমাম আব্দুল আজিজ ইবনে বাজ, ইমাম মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উসাইমিন সহ অন্যান্য আলেমদের নামে আজেবাজে কথা প্রচার করে বেড়ায়। এমনকি তাদের ছড়ানো তাকফিরী বিষে আক্রান্ত কিছু বাংলা ও ইংরেজী ভাষাভাষী বক্তা ও লেখক আহলে সুন্নাহর সাম্প্রতিক কালের এই ইমামদেরকে ‘তাগুতের পা চাটা গোলাম’ এর মতো জঘন্য ভাষায় গালি দিতে দ্বিধা করছেনা।
[নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক – আল্লাহ তাদেরকে তাই দিন যা তাদের জন্য উপযুক্ত]

Sunday 2 November 2014

রিজিক এবং বিবাহ কি লাওহে মাহফুজে লিখিত আছে?


উত্তরঃ আল্লাহ তাআ’লা যেদিন কলম সৃষ্টি করেছেন, সেদিন থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যত মাখলুকাত সৃষ্টি হবে, সবই লাওহে মাহফূজে লিপিবদ্ধ আছে। আল্লাহ তাআ’লা কলম সৃষ্টি করে বললেন, লিখ। কলম বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমি কি লিখব? আল্লাহ তাআ’লা বললেন, কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবে সব লিখে ফেল। সে সময় কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু পৃথিবীর বুকে সংঘটিত হবে, কলম সব কিছুই লিখে ফেলল। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, ভ্রুন মাতৃগর্ভে চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আল্লাহ তাআ’লা একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন। ফেরেশতা তার মধ্যে রূহ ফুঁকে দেন এবং লিখে দেন তার রিজিক, বয়স এবং তার কাজ অর্থাৎ সৌভাগ্যবান হবে না দুর্ভাগা হবে। রিজিক লিখা আছে এবং কিভাবে অর্জন করবে, তাও লিখা আছে। রিজিক অন্বেষণের সাথ সাথে রিজিক অন্বেষণের উপকরণও লিপিবদ্ধ আছে। আল্লাহ বলেনঃ

ইয়াযীদ বিন মু‘আবিয়া ,হাসান, হুসাইন

প্রশ্ন (৩৯/৩৯) : হাসান (রাঃ) কি মু‘আবিয়া (রাঃ) কর্তৃক বিষ প্রয়োগ করায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন? এ ব্যাপারে সঠিক ইতিহাস জানতে চাই।
-এম. এ, ত্বালহা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া।
উত্তর : হাসান (রাঃ) কিভাবে মারা গেছেন এর সঠিক তথ্য কোন ছহীহ সূত্রে পাওয়া যায় না। তবে হাফেয ইবনু হাজার বলেন, বলা হয়ে থাকে যে, তিনি বিষপানে মারা গেছেন। উমায়ের ইবনু ইসহাক বলেন, আমি এক সাথীকে নিয়ে হাসান (রাঃ)-এর নিকটে গেলাম। তখন তিনি বললেন, আমি একাধিকবার বিষপান করেছি। কিন্তু এত বিষাক্ত বস্তু ইতিপূর্বে কখনও পান করিনি। এরই মধ্যে তার ভাই হুসাইন সেখানে এসে জিজ্ঞেস করলেন। কে আপনাকে বিষ পান করিয়েছে? তিনি সেটা বলতে অস্বীকার করলেন (আল ইছাবাহ ২/৭৩ বর্ণনাটি ছহীহ, তাহযীবুত তাহযীব ৪/১২৭)। ক্বাতাদা থেকেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৩/২৭৪)।

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...