Sunday, 27 July 2014

মহিলাদের ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ


আল্লাহ তাআলা নারী-পুরুষ উভয়কে সৃষ্টি করেছেন। তিনি তাদের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ অর্জনের লক্ষ্যে সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম দান করেছেন। তাদেরই মধ্য থেকে নির্বাচন করেছেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে, যিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নারী-পুরুষের নিজস্ব গণ্ডিতে পূর্ণ অধিকার। হাতে গোনা কয়েকটি স্বতন্ত্র ইবাদত ব্যতীত সব ইবাদতে পুরুষ ও নারীকে সমান মর্যাদায় রেখেছেন। ইসলাম চায় নারী জাতি যাতে কোন কল্যাণ থেকে বঞ্চিত না হয়। তাই-তো মুসলমানের উল্লেখযোগ্য ইবাদত আনন্দঘন পরিবেশ ও ইমামের দিক-নির্দেশনামূলক বক্তৃতা থেকে যাতে নারী-পুরুষ সমানভাবে উপকৃত হতে পারে সে মর্মে মানবতার মুক্তিদূত মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলাদেরকেও আদেশ করেছেন ঈদগাহে উপস্থিত হতে।
উম্মে আতিয়্যা রা. বলেন :
عن أم عطية رضي الله عنها قالت : أمرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم أن نخرجهن في الفطر والأضحى العواتق والحيّض وذوات الخدور . فأما الحيّض فيعتزلن الصلاة
وفي لفظ : المصلى . ويشهدن الخير ودعوة المسلمينرواه الجماعة[
وفي بعض ألفاظه : فقالت إحداهن : يا رسول الله لا تجد إحدانا جلباباً تخرج فيه، فقال صلى الله عليه وسلم : لتلبسها أختها من جلبابها.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় ঈদগাহে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বৃদ্ধা, ঋতুবতী ও পর্দানশীল সকলের জন্য আদেশটি বহাল ছিল। তবে ঋতুবতী নারী ঈদের নামাজ থেকে বিরত থাকবে এবং কল্যাণ (নসিহত শ্রবণ) ও মুসলমানদের সাথে দুআয় শামিল থাকবে। তিনি বললেন: হে আল্লাহর রাসূল; আমাদের মধ্যে কারো বড় চাদর না থাকলে সে কী করবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : তার কোন বোন তাকে নিজের চাদর পরিধান করতে দেবে। (মুসলিম)

অত্র হাদীস থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়, নারীদেরকেও ঈদের নামাজে শামিল হওয়া প্রয়োজন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে মহিলারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে জামাআতে অংশগ্রহণ করতেন। তবে নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে সে ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করতেন। তিনি বলতেন, তাদরে জন্য মজজিদে এসে জামাআতে নামাজ পড়ার চেয়ে ঘরের কোনে নির্জন স্থানে নামাজ আদায় অতি উত্তম। তাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে তাদের জন্য মসজিদে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু ঈদের নামাজের ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনটি বলেননি। বরং উম্মে আতিয়্যা রা. এর হাদীসে বুঝা যাচ্ছে আবাল, বৃদ্ধা, বণিতা সকলকেই নির্বিশেষে ঈদগাহে উপস্থিত হওয়ার আদেশ করা হয়েছিল। যেখানে ঋতুবতী নারীর উপর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দায়িত্ব রহিত করা হয়েছে, সেখানে তাকেও ঈদাগাহে উপস্থিত হয়ে মুসলমানদের কাতারে শামিল হওয়ার আদেশ করা হয়েছে। তাছাড়া পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ একাকীও আদায় ককরা সম্ভব। কিন্তু ঈদের নামাজ জামাআত ছাড়া আদায় করা সম্ভব না। সুতরাং নারীরা এত বড় কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হওয়া কোন মতেই উচিৎ হবে না। তবে শর্তসাপেক্ষ যেমন, পূর্ণ পর্দার সাথে ঘর থেকে বের হতে হবে। ঈদগাহে তাদের জন্য আলাদা নিরাপদ ব্যবস্থা থাকতে হবে। এর জন্য সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। সৌদিআরবসহ আরব আমিরাতের অনেক মসজিদ ও ঈদগাহে মহিলাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে অজুখানা, টয়লেট ও নামাজের স্থানসহ সবকিছু, এমনকি প্রবেশ করারও পৃথক পৃথক গেই রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে সে রকম উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা নেই। আর এ জন্য মহিলারা এসব কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে। আমাদের মুসলিম দেশগুলোতে এ বিষয়ে  আরো উদারতার পরিচয় দেয়ার জন্য এগিয়ে আসা প্রয়োজন। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুক। 
চৌধুরী আবুল কালাম আজাদ



সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...