শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যানি পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু।
উত্তরঃ ফিক্বাহবিদদের মধ্যে থেকে কেউ মত প্রকাশ করেছেন যে, ইমাম সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর অন্য সূরা শুরু করার পূর্বে কিছুক্ষণ নীরব থাকবেন, যাতে করে মুক্তাদী ফাতিহা পাঠ করতে সক্ষম হয়। কিন্তু এব্যাপারে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে কোন হাদীছ বর্ণিত হয়নি। তবে তা হচ্ছে সামান্য বিরতী নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য এবং এই ফাঁকে মুক্তাদি সূরা ফাতিহা পাঠ করা আরম্ভ করে দিবে। এরপর ইমাম অন্য ক্বিরাত শুরু করে দিলেও কোন অসুবিধা নেই। কেননা সূরা ফাতিহা পাঠ করা মুক্তাদীর জন্য রুকন। কিন্তু ইমামের ক্বিরআত শ্রবণ করা তার জন্য মুস্তাহাব। মোটকথা নীরব থাকার মুহূর্তটি অতি সামান্য দীর্ঘ নয়।
প্রশ্নঃ (২৪৬) ফজরের এক রাকাআত নামায ছুটে গেলে বাকী রাকাআতটি কি স্বশব্দে না নীরবে পাঠ করবে?
উত্তরঃ বিষয়টি তার ইচ্ছাধীন। কিন্তু উত্তম হচ্ছে নীরব কন্ঠে পাঠ করা। কেননা জোর কন্ঠে পাঠ করলে হয়তো অন্য মুছল্লীদের নামাযে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
প্রশ্নঃ (২৪৬) ফজরের এক রাকাআত নামায ছুটে গেলে বাকী রাকাআতটি কি স্বশব্দে না নীরবে পাঠ করবে?
উত্তরঃ বিষয়টি তার ইচ্ছাধীন। কিন্তু উত্তম হচ্ছে নীরব কন্ঠে পাঠ করা। কেননা জোর কন্ঠে পাঠ করলে হয়তো অন্য মুছল্লীদের নামাযে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
প্রশ্নঃ (২৪৭) রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নামাযের পদ্ধতির উপর লিখিত একটি পুস্তকে পড়লাম, রুকূ থেকে উঠার পর আবার হাত বাঁধা একটি বিভ্রান্তকর বিদআত। এক্ষেত্রে বিশুদ্ধ কথা কি? আল্লাহ্ আপনাকে উত্তম প্রতিদান প্রদান করুন
উত্তরঃ যে বিষয়ে ইজতেহাদ বা গবেষণার অবকাশ রয়েছে সে বিষয়ে কাউকে সুন্নাতের পরিপন্থী বিদআতী বলতে আমি সংকোচ বোধ করি। এটা উচিত নয়। যারা রুকূ থেকে উঠে আবার হাত বাঁধেন, তারা নিজেদের মতের পক্ষে সুন্নাত থেকে দলীল উপস্থাপন করে থাকেন। এবিষয়টি কারো গবেষণার বিরোধী হলে তাকে সরাসরি বিদআতী বলা খুবই কঠিন বিষয়। এধরণের বিষয়ে বিদআত শব্দ উচ্চারণ করা করো পক্ষে উচিত নয়। কেননা যে সকল বিষয়ে গবেষণার অবকাশ থাকে এবং হতে পারে একথা সত্য অথবা ঐকথা সত্য, তাতে পরস্পরে বিদআতের অপবাদ দিতে শুরু করলে মুসলিম সমাজে বিচ্ছেদ সৃষ্টি হবে, একে অপরে ঘৃণা ও বিদ্বেষের সূচনা হবে। ইসলামের শত্রুরা তা নিয়ে হাসাহাসি করবে।
আমার মতে বিশুদ্ধ কথা হচ্ছেঃ রুকূ থেকে উঠার পর ডান হাতকে বাম হাতের উপর রেখে বুকে স্থাপন করা একটি সুন্নাত। দলীলঃ সাহাল বিন সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “লোকেরা নির্দেশিত হত যে, নামাযে ডান হাতকে বাম হাতের বাহুর উপর স্থাপন করবে।”
গভীরভাবে লক্ষ্য করে ও অনুসন্ধান করে হাদীছ থেকে দলীল গ্রহণ করার যুক্তি সমূহ হচ্ছেঃ যদি প্রশ্ন করা হয়ঃ সিজদার সময় হাত দু’টি কোথায় থাকবে? উত্তরঃ যমীনের উপর। প্রশ্নঃ রুকূ অবস্থায় হাত কোথায় থাকবে? উত্তরঃ হাঁটুদ্বয়ের উপর। প্রশ্নঃ বসাবস্থায় হাত দু’টি কোথায়? উত্তরঃ রানের উপর।
থাকল দাঁড়ানো অবস্থার কথা। রুকূর আগে ও পরে উভয় অবস্থা হচ্ছে দাঁড়ানো। আর তা এই বাণীর অন্তর্ভুক্ত হবেঃ “লোকেরা নির্দেশিত হত যে, নামাযে ডান হাতকে বাম হাতের বাহুর উপর স্থাপন করবে।” অর্থাৎ- রুকূর আগে বা পরে যে কোন অবস্থার দাঁড়ানোতে ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখতে হবে। এটাই হচ্ছে সত্য, সুন্নাতে নববী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যার প্রমাণ বহণ করে।
মোটকথা উল্লেখিত প্রশ্নের উত্তর দু’টি পয়েন্টে বিভক্তঃ
প্রথমঃ কারো পক্ষে উচিত নয় বিদআত শব্দটি এমন কাজে ব্যবহার করা যেখানে ইজতেহাদ বা গবেষণার অবকাশ রয়েছে।
দ্বিতীয়ঃ বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে রুকূ থেকে উঠে ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখাটা সুন্নাত, বিদআত নয়। উল্লেখিত সাহাল বিন সা’দের হাদীছ হচ্ছে এর দলীল। কিন্তু এ অবস্থার ব্যতিক্রম হচ্ছে রুকূ, সিজদা ও বসাবস্থা। কেননা এসকল স্থানে কিভাবে হাত রাখতে হবে হাদীছে তার বিশদ বিবরণ এসেছে। (আল্লাহই অধিক জ্ঞান রাখেন)
প্রশ্নঃ (২৪৮) ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদু’ বলার পর ‘ওয়াশ্ শুক্রু’ শব্দ বৃদ্ধি করে বলার বিধান কি?
উত্তরঃ নিঃসন্দেহে শুধুমাত্র প্রমাণিত দু’আ ও যিকির সমূহ পাঠ করাই উত্তম। নিজের পক্ষ থেকে কোন শব্দ বৃদ্ধি না করা। রুকূ থেকে মাথা উঠানোর পর (সামিআল্লাহুলিমান হামীদাহ্ বলে) পাঠ করবেঃ ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদু’। ‘ওয়াশ্ শুক্রু’ শব্দ বৃদ্ধি করা জায়েয নয়। কেননা এ ব্যাপারে কোন দলীল নেই।
উল্লেখ্য যে, এ সময় চার ধরণের শব্দ প্রমাণিত হয়েছেঃ
১) ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদু’
২) ‘রাব্বানা লাকাল হামদু’
৩) ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদু’
৪) ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদু’
এগুলো সবটাই এক সাথে বলবে না; বরং কোন নামাযে এটা কোন নামাযে ওটা পাঠ করবে।
No comments:
Post a Comment