Thursday 7 August 2014

“গণতন্ত্র” তাগুত ও শিরক কেনো?




শায়খ মাকবিল বিন হাদী আল-ওয়াদী রাহিমাহুল্লাহবলেছিলেনঃ
“গণতন্ত্র হচ্ছে তাগুত। যে ব্যক্তি গণতন্ত্র কি সেটা জানে, তার দিকে মানুষকে দাওয়াত দেয়, জেনে শুনে গণতন্ত্রকে মেনে নেয়, সে ব্যক্তি মুসলিম নয় সে কাফের”।

“তাগুত” অর্থ হচ্ছে আল্লাহদ্রোহী। যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো পূজা করতে বলে বা যাকে পূজা করা হয় এবং সে এতে রাজী-খুশি থাকে, সে হচ্ছে তাগুত।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে “আইনপ্রণেতা” বা হুকুমদাতা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়। মন্ত্রী, এমপি বা অন্যান্যরা “কুরআন ও সুন্নাহ” বাদ দিয়ে “মানব রচিত আইন” (যেমন- নিজেদের মনমতো, জনগণের খেয়াল-খুশিমতো, আন্তর্জাতিক আইন, ব্রিটিশ আইন ইত্যাদি) দিয়ে দেশ শাসন করে। এইভাবে আল্লাহর আইন বাদ দিয়ে নিজে “আইন” বানানো আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লার সাথে প্রকাশ্য শিরক। কারণ যে আল্লাহর আইন বাদ দিয়ে নিজে আইন বানায় সে যেনো দাবী করছে, সে আল্লাহর সমান, তাই সে আল্লাহর মতো করে মানুষের জন্য আইন বানাতে পারে (নাউযুবিল্লাহ)!! 

আল্লাহ তাআ’লা তাঁর কিতাবে বলেছেনঃ
তাদের কি এমন কোনো শরীক দেবতা আছে, যারা তাদের জন্যে সে ধর্ম বানিয়ে দিয়েছ, যার অনুমতি আল্লাহ দেননি”?
সুরা শুরাঃ ২১।

এখানে আল্লাহ যে “ধর্মের” কথা বলছেন, তার মধ্যে এমন একটা হচ্ছে গণতন্ত্র। কারণ, গণতন্ত্র অনুযায়ী পরিচালিত সরকারগুলোঃ
...একমাত্র আল্লাহ তাআ’লাই হচ্ছেন “আইনপ্রণেতা” বা হুকুমদাতা – এটা মানেনা। গণতন্ত্রবাদীরা আল্লাহকে আইনপ্রণেতা মানেনা, তারা নিজেরাই আইন বানায়।
মহান আল্লাহ সুরা ইউসুফের ৬৭ নাম্বার আয়াতে বলেছেন,
"ইনিল হুকুম ইল্লা লিল্লাহ"।
অর্থ: হুকুম বা বিধান দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ।
 
...কুরআন সুন্নাহ থেকে আইন নেয় না, তাদের মন্ত্রী এমপিরা আইন বানায়। এমপিরা নিজেদের “আইনপ্রণেতা” হিসেবে পরিচয় দেয় (সরাসরি শিরক, যেই এই কাজ করবে সে মুর্তাদ হয়ে যাবে, নাউযুবিল্লাহ)!
...গান-বাজনা, যিনা-ব্যভিচার, সুদ-ঘুষ, মদ, পতিতবৃত্তি এইসবগুলো হালাল করে দেয়
...চোরের শাস্তি হাত কাটা, খুন বা যিনার শাস্তি হত্যা সহ অনেক ইসলামী আইন মানেনা
...নারীকে তালাক দেওয়ার ক্ষমতা দেয়, মুসলিমদেরকে কাফেরদের বিয়ে করার অনুমতি দেয়, যার জন্য বিয়ে করা জায়েজ তাকে বিয়ে করতে বাঁধা দেয়
...
বিঃদ্রঃ এইসবগুলো বিষয় বাংলাদেশের উদাহরণ থেকে নেওয়া। অন্য আরো দেশে গণতান্ত্রিকদের অবস্থা আরো খারাপ।

যদিও গণতন্ত্র একটা তাগুতি ব্যবস্থা তারপরেও কিছু নামধারী ইসলামী(!) রাজনৈতিক দল নির্বাচন করে, তাদেরকে ভোট দেওয়ার জন্য বলে...
যদিও এর মুখে ইসলামের কথাই বলে, কিন্তু গণতন্ত্র একটা ডাহা শিরকি ব্যবস্থা, তাই এই শিরকে কোনোভাবে শরীক হওয়া যাবেনা।
এনিয়ে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ফতোয়া প্রদান কমিটির শ্রেষ্ঠ আলেমদের ফতোয়া দেখুনঃ
প্রশ্নঃ নির্বাচনে ভোট দেওয়া ও প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানো কি জায়েজ আছেএখানে বলে রাখা ভালো যেআমাদের দেশে আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ শাসন করা হয়না।

উত্তরঃ কারো জন্য এটা জায়েজ নয় যে সে নিজেকে এমন একটা সিস্টেমে (যেমন- গণতন্ত্র) প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবে যেখানে আল্লাহর আইন ছাড়া অন্য কোন আইন দিয়ে (যেমন বাংলাদেশের সংবিধান/আইন) শাসন করা হয় এবং ইসলামী শরিয়াহ ছাড়া অন্য কোনো কিছু দিয়ে চলে। একজন মুসলমানের জন্য এটা জায়েজ নয় যে সে এমন কাউকে ভোট দেবে যে এমন একটা সরকারের অংশ হিসেবে কাজ করবে।
ভোট দেওয়া তখনই জায়েজ হবে যখন এটা আশা করা যায় যাকে ভোট দেওয়া হবে সে এই সরকারে গিয়ে সিস্টেম পরিবর্তন করে ইসলামী শরিয়াহনিয়ে আসতে পারবে এবং সে এই নির্বাচনে এই জন্যই দাঁড়াচ্ছে যাতে করে সে (বর্তমান কুফুরী সরকারের বিরুদ্ধে) ক্ষমতা অর্জন করতে পারে। এবং সে নির্বাচনে জেতার পরে (ইসলামী শরিয়াহ নিয়ে আসার পরে) ক্ষমতা ধরে রাখবেনা যদিনা এটা ইসলামী শরিয়ার বিরুদ্ধে যায়।

সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ফতোয়া প্রদান কমিটির নিচের ব্যক্তিবর্গ সম্মিলিতভাবে এই ফতোয়া দিয়েছেনঃ
১. শায়খ আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বাজ (রহঃ)
প্রধান মুফতি ও কমিটিরি চেয়ারম্যান।
২. শায়খ আব্দুর রাজ্জাক আল-আফিফি (রহঃ)
৩. শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনে গুদাইয়্যান (রহঃ)
৪. শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনে ক্বাইয়ুদ (রহঃ)
ফাতওয়া আল-লাজনাহ আদ-দাইয়িমাহঃ ২৩/৪০৬-৪০৭
____________

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...