Thursday 24 July 2014

তারাবীহ্‌ নামাযের বিধান কি? এর রাকাত সংখ্যা কত?

উত্তরঃ তারাবীহ্‌নামায রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুন্নাত। বুখারীও মুসলিমে আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেননবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) রামাযানের এক রাতে (তারাবীহ) নামায আদায় করলেন। লোকেরাও তাঁরসাথে ছালাত আদায় করল। পরবর্তী রাতেও ছালাত আদায় করলেন। এরাতে মানুষেরসংখ্যা অনেক বেশী হল। অতঃপর তৃতীয় অথবা চতুর্থ রাতেও তারা সমবেত হলেনকিন্তু রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর বের হলেন নাপ্রভাত হলে তিনি বললেন,
]قَالَقَدْ رَأَيْتُ الَّذِي صَنَعْتُمْ وَلَمْ يَمْنَعْنِي مِنَ الْخُرُوجِإِلَيْكُمْ إِلَّا أَنِّي خَشِيتُ أَنْ تُفْرَضَ عَلَيْكُمْ وَذَلِكَ فِيرَمَضَانَ[
«তোমরাযা করেছো আমি দেখেছি। কিন্তু তোমাদের কাছে আসতে আমাকে কোন কিছুই বাধাদেয়নি। তবে আমি আশংকা করেছি যেএ নামায তোমাদের উপর ফরয করে দেয়া হবে«আরএটি ছিল রামাযান মাসের ঘটনা

তারাবীহ্‌-এররাকআত সংখ্যাঃ ১১ রাকাআত। বুখারী মুসলিমে আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। মাহেরামাযানে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামায সম্পর্কে তাঁকেজিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,
]مَا كَانَ يَزِيدُ فِي رَمَضَانَ وَلَا فِي غَيْرِهِ عَلَى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً[
«তিনি রামাযান মাসে এবং অন্য সময় এগার রাকাতের বেশী নামায পড়তেন না«

তারাবীহ্‌ছালাত যদি ১৩ (তের) রাকাআত আদায় করেকোন অসুবিধা নেই। ইবনু আব্বাস (রাঃ)থেকে বর্ণিত। «নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নামায ছিল ১৩রাকাত«অর্থাৎ রাতের নামায। বুখারী

ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ) থেকে ১১ এগার রাকাতেরই প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমনটি মুআত্বা মালেকে সর্বাধিক বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হয়েছে

যদিএর চাইতে বেশী সংখ্যক রাকাআত আদায় করে তাতেও কোন অসুবিধা নেই। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে রাতের নামায সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলেতিনি বলেনصَلَاةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى «রাতের নামায দু'দু'রাকাত করে«এখানে তিনি কোন সংখ্যা নির্ধারণ করে দেননি

সালাফেসালেহীন থেকে এ নামাযের বিভিন্ন ধরণের রাকাতের বর্ণনা পাওয়া যায়। কিন্তুশুধুমাত্র নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত সংখ্যারউপর আমল করা উত্তম। আর তা হচ্ছে এগার বা তের রাকাআত

নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বা তাঁর খলীফাদের (রাঃ) থেকে কোন হাদীছবা বর্ণনা প্রমাণিত হয়নি যেতাঁদের কেউ ২৩ রাকাত তারাবীহ্‌ আদায় করেছেনবরং ওমর (রাঃ) থেকে এগার রাকাতের কথাই প্রমাণিত হয়েছে। কেননা তিনি উবাই বিনকা'ব এবং তামীম আদ্দারী (রাঃ)কে ১১ রাকাতের দ্বারা লোকদেরকে নিয়েক্বিয়ামুল্লায়াল করার আদেশ করেছিলেন। ওমরের (রাঃ) মত ব্যক্তিত্বের জন্যএটাই শোভনীয় যেতাঁর জীবন চরিত ও ইবাদত বন্দেগী হবে ঠিক তেমনইযেমনটি ছিলনবীকুল শিরমনী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর জীবন চরিত ওইবাদত বন্দেগী

আমাদেরজানা নেই যেছাহাবীদের (রাঃ) মধ্যে কেউ তেইশ রাকাত তারাবীহ্‌ নামাযপড়েছিলেন। বরং বাস্তব অবস্থা এর বিপরীত। পূর্বে আয়েশা (রাঃ) এর বাণী উল্লেখকরা হয়েছেঃ «নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রামাযান বা অন্য সময়এগার রাকাতের বেশী রাতের নামায আদায় করতেন না«

নিঃসন্দেহেছাহাবায়ে কেরামের (রাঃ) এজমা বা ঐকমত্য হচ্ছে একটি হুজ্জত বা বড় দলীলবিশেষ করে তাদের মধ্যে রয়েছেন খোলাফায়ে রাশেদা। যাঁদের অনুসরণ করতে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা তাঁরাহচ্ছেন সর্বশ্রেষ্ঠ যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ

জেনেরাখুন! তারাবীহ্‌ নামাযের রাকাত সংখ্যায় বিভিন্নতা বিষয়টি এমনযাতেইজতেহাদ বা গবেষণার অবকাশ রয়েছে। বিষয়টি পারস্পরিক মতবিরোধ বা মুসলমানদেরমধ্যে ফাটলের কারণ হওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে যখন কিনা এতে সালাফে ছালেহীনথেকেই মতবিরোধ পাওয়া যায়। এ মাসআলায় এমন কোন দলীল পাওয়া যায় না যেএতেইজতেহাদ বা গবেষণার কোন সুযোগ নেই। কোন একটি ইজতেহাদী বিষয়ে বিরোধীতাকারীকেজনৈক বিদ্বান বলেছিলেনআমার বিরোধীতা করে আপনি আমার মতটিই প্রকাশ করেছেনকেননা ইজতেহাদী বিষয়ে প্রত্যেকে সেটারই অনুসরণ করবে যা সে সত্য মনে করেআমরা সবার জন্য আল্লাহ্‌র কাছে তাঁর পসন্দনীয় ও সন'ষ্টি মুলক কাজ কামনাকরছি

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...