উত্তরঃ সাহু সিজদা সংবিধিবদ্ধ করার পিছনে রহস্য হল এই যে, এটা নামাযের মধ্যে যে ত্রুটি হয় তার পূর্ণতা দান করে।
তিনটি কারণে নামাযে সাহু সিজদা দিতে হয়ঃ
১) নামায বৃদ্ধি হওয়া। যেমন, কোন রুকূ বা সিজদা বা বসা ইত্যাদি বৃদ্ধি হওয়া।
২) হ্রাস হওয়া। কোন রুকন বা ওয়াজিব কম হওয়া।
৩) সন্দেহ হওয়া। কত রাকাত পড়েছে তিন না চার এব্যাপারে সংশয় হওয়া।
প্রথমতঃ ছালাতে বৃদ্ধি হওয়া: মুছল্লীযদি নামাযের অন্তর্ভুক্ত এমন কিছু কাজ ইচ্ছাকৃতভাবে বৃদ্ধি করে যেমনঃদাঁড়ানো, বসা, রুকূ‘, সিজদা ইত্যাদি- যেমন দু‘বার করে রুকূ করা, তিন বারসিজদা করা, অথবা যোহর পাঁচ রাকাত আদায় করা। তবে তার ছালাত বাতিল বা ভঙ্গহয়ে যাবে। কেননা সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশের বিপরীত আমল করেছে। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ «যে ব্যক্তি এমন আমল করবে, যার পক্ষে আমাদের নির্দেশনা নেই, তবে উহা প্রত্যাখ্যাত।«
কিন্তুযদি ভুলবশতঃ তা করে এবং ঐভাবেই ছালাত শেষ করে দেয়ার পর স্মরণ হয় যে, ছালাতে বৃদ্ধি হয়ে গেছে, তবে শুধুমাত্র সাহু সিজদা করবে।তার ছালাতওবিশুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু ছালাতরত অবস্থায় যদি উক্ত বৃদ্ধি স্মরণ হয়- যেমনচার রাকাআত শেষ করে পাঁচ রাকাআতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছে- তবে সে ফিরে আসবে এবংশেষে সিজদায়ে সাহু করবে।
উদাহরণ:জনৈক ব্যক্তি যোহরের ছালাত পাঁচ রাকাআত আদায় করে নিয়েছে। কিন্তু শেষতাশাহুদে বসার সময় এবৃদ্ধির কথা তার স্মরণ হল,তাহলে সে তাশাহুদ পূর্ণ করবেএবং সালাম ফেরাবে। তারপর সাহু সিজদা করবে এবং সালাম ফিরাবে। আর যদি সালামফেরানোর পর তা স্মরণ হয়,তবে সাহু সিজদা করবে এবং সালাম ফিরাবে।
আরযদি পঞ্চম রাকাআত চলা অবস্থায় স্মরণ হয় তবে তখনই বসে পড়বে এবং তাশাহুদ পড়েসালাম ফেরাবে। তারপর সিজদায়ে সাহু করে আবার সালাম ফেরাবে।
দলীল:
তিনটি কারণে নামাযে সাহু সিজদা দিতে হয়ঃ
১) নামায বৃদ্ধি হওয়া। যেমন, কোন রুকূ বা সিজদা বা বসা ইত্যাদি বৃদ্ধি হওয়া।
২) হ্রাস হওয়া। কোন রুকন বা ওয়াজিব কম হওয়া।
৩) সন্দেহ হওয়া। কত রাকাত পড়েছে তিন না চার এব্যাপারে সংশয় হওয়া।
প্রথমতঃ ছালাতে বৃদ্ধি হওয়া: মুছল্লীযদি নামাযের অন্তর্ভুক্ত এমন কিছু কাজ ইচ্ছাকৃতভাবে বৃদ্ধি করে যেমনঃদাঁড়ানো, বসা, রুকূ‘, সিজদা ইত্যাদি- যেমন দু‘বার করে রুকূ করা, তিন বারসিজদা করা, অথবা যোহর পাঁচ রাকাত আদায় করা। তবে তার ছালাত বাতিল বা ভঙ্গহয়ে যাবে। কেননা সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশের বিপরীত আমল করেছে। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ «যে ব্যক্তি এমন আমল করবে, যার পক্ষে আমাদের নির্দেশনা নেই, তবে উহা প্রত্যাখ্যাত।«
কিন্তুযদি ভুলবশতঃ তা করে এবং ঐভাবেই ছালাত শেষ করে দেয়ার পর স্মরণ হয় যে, ছালাতে বৃদ্ধি হয়ে গেছে, তবে শুধুমাত্র সাহু সিজদা করবে।তার ছালাতওবিশুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু ছালাতরত অবস্থায় যদি উক্ত বৃদ্ধি স্মরণ হয়- যেমনচার রাকাআত শেষ করে পাঁচ রাকাআতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছে- তবে সে ফিরে আসবে এবংশেষে সিজদায়ে সাহু করবে।
উদাহরণ:জনৈক ব্যক্তি যোহরের ছালাত পাঁচ রাকাআত আদায় করে নিয়েছে। কিন্তু শেষতাশাহুদে বসার সময় এবৃদ্ধির কথা তার স্মরণ হল,তাহলে সে তাশাহুদ পূর্ণ করবেএবং সালাম ফেরাবে। তারপর সাহু সিজদা করবে এবং সালাম ফিরাবে। আর যদি সালামফেরানোর পর তা স্মরণ হয়,তবে সাহু সিজদা করবে এবং সালাম ফিরাবে।
আরযদি পঞ্চম রাকাআত চলা অবস্থায় স্মরণ হয় তবে তখনই বসে পড়বে এবং তাশাহুদ পড়েসালাম ফেরাবে। তারপর সিজদায়ে সাহু করে আবার সালাম ফেরাবে।
দলীল:
عَنْعَبْدِ اللَّهِ قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَالظُّهْرَ خَمْسًا فَقَالُوا أَزِيدَ فِي الصَّلَاةِ؟ قَالَ: وَمَا ذَاكَ؟قَالُوا: صَلَّيْتَ خَمْسًا، فسجد سجدتين بعد ما سلم. وفي رواية: فَثَنَىرِجْلَيْهِ وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثم سلم
আবদুল্লাহ্বিন মাসঊদ (রা:) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) যোহরের নামায পাঁচ রাক্আত পড়লেন। তাঁকে প্রশ্ন করা হল, নামায কি বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি বললেন, কিভাবে? তাঁরা বললেন, আপনি আজ পাঁচরাকাআত পড়েছেন। তখন তিনি দু‘টি সিজদা করলেন। অন্য রেওয়ায়াতে এসেছে, তখনতিনি পা গুটিয়ে ক্বিবলামুখি হলেন, দু‘টি সিজদা করলেন অত:পর সালাম ফেরালেন।
সালাত পূর্ণ হওয়ার আগেই সালাম ফেরানো:
নামাযপূর্ণ হওয়ার আগেই সালাম ফেরানো ছালাতে বৃদ্ধি করার অন্তর্গত। কেননাছালাতরত অবস্থায় সে সালামকে বৃদ্ধি করেছে। একাজ যদি ইচ্ছাকৃত করে তবে ছালাতবাতিল হয়ে যাবে। আর যদি ভুলক্রমে হয়, কিন্তু অনেক পরে তার এ ভুলের কথা মনেপড়ল তবে নামায পুনরায় ফিরিয়ে পড়বে।আর যদি একটু পরেই (যেমন দু/এক মিনিট)তবে সে অবশিষ্ট ছালাত পূর্ণ করবে এবং সালাম ফিরাবে। অতঃপর সাহু সিজদা করেসালাম ফিরাবে।
দলীল:
সালাত পূর্ণ হওয়ার আগেই সালাম ফেরানো:
নামাযপূর্ণ হওয়ার আগেই সালাম ফেরানো ছালাতে বৃদ্ধি করার অন্তর্গত। কেননাছালাতরত অবস্থায় সে সালামকে বৃদ্ধি করেছে। একাজ যদি ইচ্ছাকৃত করে তবে ছালাতবাতিল হয়ে যাবে। আর যদি ভুলক্রমে হয়, কিন্তু অনেক পরে তার এ ভুলের কথা মনেপড়ল তবে নামায পুনরায় ফিরিয়ে পড়বে।আর যদি একটু পরেই (যেমন দু/এক মিনিট)তবে সে অবশিষ্ট ছালাত পূর্ণ করবে এবং সালাম ফিরাবে। অতঃপর সাহু সিজদা করেসালাম ফিরাবে।
দলীল:
عَنْأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِي اللَّه عَنْه أّنّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهعَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى بِهم الظُّهْرَ أو العصر فسَلَّمَ منرَكْعَتَيْنِ فَخَرَجَ سَرَعَانُ من أبواب الْمَسْجِدِ يقولون: قَصُرَتِالصَّلاَةُ وَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَىخَشَبَةٍ الْمَسْجِدِ فاتكأَ عَلَيْهَا كأنه غضبانَ، فقام رجل فَقَالَ يَارسول الله: أَنَسِيتَ أَمْ قَصُرَتْ الصَّلاَةُ؟ فَقَالَ النَّبِيُّصَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَمْ أَنْسَ وَلَمْ تَقْصُرْ، فقالالرجل: بَلي نَسِيتَ فقال النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَللصحابة: أَحقٌّ ما يقول؟ قَالُوا: نعم، فتقدم النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهعَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصَلَّى ما بقي من صلاته، ثم سلم ثم سجد سجدتين ثم سلم
আবুহুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) তাদেরকে নিয়ে যোহর অথবা আছরের ছালাত আদায় করলেন। কিন্তুদু‘রাকাআত আদায় করেই সালাম ফিরিয়ে দিলেন। কিছু লোক দ্রুত মসিজদ থেকে একথাবলতে বলতে বের হয়ে গেল যে, ছালাত সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। নবীজিও (ছাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদের এক খুঁটির কাছে গিয়ে তাতে হেলান দিয়ে বসেপড়লেন। মনে হচ্ছিল তিনি যেন রাগন্বিত। জনৈক ব্যক্তি তাঁর কাছে গিয়ে বলল, হেআল্লাহ্র রাসূল! আপনি কি ভুলে গেছেন, নাকি নামায সংক্ষিপ্ত করে দেয়াহয়েছে? নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি তো ভুলিনি, আরনামাযও সংক্ষিপ্ত করা হয়নি। লোকটি বলল, বরং আপনি ভুলেই গিয়েছেন। (কারণ আপনিদু‘রাকাআত ছালাত আদায় করেছেন।) নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ছাহাবীদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, একি সত্য বলছে? তাঁরা বললেন, হ্যাঁ। তখন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার দাঁড়িয়ে পড়লেন এবং অবশিষ্টদু‘রাকাআত আদায় করে তাশাহুদ পড়ে সালাম ফিরলেন। তারপর দু‘টি সিজদা করলেনঅতঃপর সালাম ফেরালেন।
দ্বিতীয়ত: ছালাতে হ্রাস হওয়া:
ক) রুকন হ্রাস হওয়া:
মুছল্লীযদি কোন রুকন কম করে ফেলে- উক্ত রুকন যদি তাকবীরে তাহরিমা (নামায শুরুকরার তাকবীর) হয়, তবে তার ছালাতই হবে না। চাই উহা ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দিক বাভুলক্রমে ছেড়ে দিক। কেননা তার ছালাতই তো শুরু হয়নি।
আর উক্ত রুকন যদি তাকবীরে তাহরিমা ব্যতীত অন্য কিছু হয় আর তা ইচ্ছাকৃত হয় তবে তার ছালাত বাতিল বা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
কিন্তুযদি অনিচ্ছাকৃত বা ভুলক্রমে কোন রুকন ছুটে যায়- যেমন প্রথম রাকাআতে কোনরুকন ছুটে গেল, এখন যদি দ্বিতীয় রাকাআতে সেইছুটে যাওয়া রুকনের নিকট পৌঁছেযায়- তবে এঅবস্থায় আগের রাকাআত বাতিল হয়ে যাবে এবং এটাকে প্রথম রাকাআত গণ্যকরবে এবং বাকী অংশ পূরা করে সাহু সিজদা দিবে।
কিন্তুযদি দ্বিতীয় রাকাআতে ছুটে যাওয়া সেই রুকনে না পৌঁছে, তবে ছুটে যাওয়ারুকনটি আগে আদায় করবে তারপর বাকী অংশগুলো আদায় করবে এবং সাহু সিজদা দিবে।
উদাহরণ:জনৈক মুছল্লী প্রথম রাকাআতের দ্বিতীয় সিজদাটি ভুলে গেল। যখন সেকথা স্মরণহল, তখন সে দ্বিতীয় রাকাআতের দু‘সিজদার মধ্যবর্তি স্থানে বসেছে। এঅবস্থায়আগের রাকাতটি বাতিল হয়ে যাবে এবং এটাকে প্রথম রাকাত গণ্য করে অবশিষ্ট অংশপূর্ণ করে ছালাত শেষে সাহু সিজদা করবে।
দ্বিতীয়ত: ছালাতে হ্রাস হওয়া:
ক) রুকন হ্রাস হওয়া:
মুছল্লীযদি কোন রুকন কম করে ফেলে- উক্ত রুকন যদি তাকবীরে তাহরিমা (নামায শুরুকরার তাকবীর) হয়, তবে তার ছালাতই হবে না। চাই উহা ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দিক বাভুলক্রমে ছেড়ে দিক। কেননা তার ছালাতই তো শুরু হয়নি।
আর উক্ত রুকন যদি তাকবীরে তাহরিমা ব্যতীত অন্য কিছু হয় আর তা ইচ্ছাকৃত হয় তবে তার ছালাত বাতিল বা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
কিন্তুযদি অনিচ্ছাকৃত বা ভুলক্রমে কোন রুকন ছুটে যায়- যেমন প্রথম রাকাআতে কোনরুকন ছুটে গেল, এখন যদি দ্বিতীয় রাকাআতে সেইছুটে যাওয়া রুকনের নিকট পৌঁছেযায়- তবে এঅবস্থায় আগের রাকাআত বাতিল হয়ে যাবে এবং এটাকে প্রথম রাকাআত গণ্যকরবে এবং বাকী অংশ পূরা করে সাহু সিজদা দিবে।
কিন্তুযদি দ্বিতীয় রাকাআতে ছুটে যাওয়া সেই রুকনে না পৌঁছে, তবে ছুটে যাওয়ারুকনটি আগে আদায় করবে তারপর বাকী অংশগুলো আদায় করবে এবং সাহু সিজদা দিবে।
উদাহরণ:জনৈক মুছল্লী প্রথম রাকাআতের দ্বিতীয় সিজদাটি ভুলে গেল। যখন সেকথা স্মরণহল, তখন সে দ্বিতীয় রাকাআতের দু‘সিজদার মধ্যবর্তি স্থানে বসেছে। এঅবস্থায়আগের রাকাতটি বাতিল হয়ে যাবে এবং এটাকে প্রথম রাকাত গণ্য করে অবশিষ্ট অংশপূর্ণ করে ছালাত শেষে সাহু সিজদা করবে।
আর একটি উদাহরণ:জনৈক ব্যক্তি প্রথম রাকাআতে একটি মাত্র সিজদা করেছে। তারপর দ্বিতীয় সিজদানা করেই দাঁড়িয়ে পড়েছে। অতঃপর দ্বিতীয় রাকাতে রুকূ করার পর সেই ভুলের কথাস্মরণ হয়েছে, তবে সে বসে পড়বে এবং সেই ছুটে যাওয়া সিজদা দিবে এবং সেখানথেকে ছালাতের বাকী অংশ পূর্ণ করে সালাম ফিরাবে। তারপর সাহু সিজদা করে সালামফিরাবে।
খ) কোন ওয়াজিব হ্রাস হওয়া:
মুছল্লীযদি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ওয়াজিব পরিত্যাগ করে তবে তার ছালাত বাতিল হয়ে যাবে।আর যদি ভুলক্রমে হয় আর উক্ত স্থান ছেড়ে যাওয়ার আগেই যদি স্মরণ হয়ে যায় তবেতা আদায় করবে এতে কোন দোষ নেই- সাহু সিজদা দিতে হবে না। কিন্তু যদি উক্তওয়াজিব ছেড়ে পরবর্তী রুকন শুরু করার আগেই স্মরণ হয়ে যায় তবে ফিরে গিয়ে সেইওয়াজিব আদায় করবে এবং শেষে সাহু সিজদা করবে। কিন্তু পরবর্তী রুকন শুরু করারপর যদি স্মরণ হয় তবে উক্ত ছুটে যাওয়া ওয়াজিব রহিত হয়ে যাবে। অবশিষ্ট ছালাতআদায় করে সালামের পূর্বে সাহু সিজদা করলেই ছালাত পূর্ণ হয়ে যাবে।
উদাহরণ:একজন মুছল্লী দ্বিতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সিজদা থেকে উঠে না বসে তৃতীয়রাকাতের জন্য দাঁড়াতে যাচ্ছে। এমন সময় স্মরণ হল নিজ ভুলের কথা। তখন সে বসেপড়বে এবং তাশাহুদ পড়ে ছালাত পূর্ণ করবে। কোন সাহু সিজদা লাগবে না।
আরযদি কিছুটা দাঁড়ায় কিন্তু পরিপূর্ণরূপে দাঁড়ায়নি তবে সে বসে যাবে এবংতাশাহুদ পড়বে ও ছালাত শেষে সাহু সিজদা করে সালাম ফিরাবে। কিন্তু যদিপূর্ণরূপে দাঁড়িয়ে পড়ে তবে আর বসবে না। তাশাহুদ রহিত হযে যাবে। ঐভাবেইছালাত পূর্ণ করবে এবং সলাম ফিরানোর পূর্বে সাহু সিজদা করবে।
দলীল:
খ) কোন ওয়াজিব হ্রাস হওয়া:
মুছল্লীযদি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ওয়াজিব পরিত্যাগ করে তবে তার ছালাত বাতিল হয়ে যাবে।আর যদি ভুলক্রমে হয় আর উক্ত স্থান ছেড়ে যাওয়ার আগেই যদি স্মরণ হয়ে যায় তবেতা আদায় করবে এতে কোন দোষ নেই- সাহু সিজদা দিতে হবে না। কিন্তু যদি উক্তওয়াজিব ছেড়ে পরবর্তী রুকন শুরু করার আগেই স্মরণ হয়ে যায় তবে ফিরে গিয়ে সেইওয়াজিব আদায় করবে এবং শেষে সাহু সিজদা করবে। কিন্তু পরবর্তী রুকন শুরু করারপর যদি স্মরণ হয় তবে উক্ত ছুটে যাওয়া ওয়াজিব রহিত হয়ে যাবে। অবশিষ্ট ছালাতআদায় করে সালামের পূর্বে সাহু সিজদা করলেই ছালাত পূর্ণ হয়ে যাবে।
উদাহরণ:একজন মুছল্লী দ্বিতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সিজদা থেকে উঠে না বসে তৃতীয়রাকাতের জন্য দাঁড়াতে যাচ্ছে। এমন সময় স্মরণ হল নিজ ভুলের কথা। তখন সে বসেপড়বে এবং তাশাহুদ পড়ে ছালাত পূর্ণ করবে। কোন সাহু সিজদা লাগবে না।
আরযদি কিছুটা দাঁড়ায় কিন্তু পরিপূর্ণরূপে দাঁড়ায়নি তবে সে বসে যাবে এবংতাশাহুদ পড়বে ও ছালাত শেষে সাহু সিজদা করে সালাম ফিরাবে। কিন্তু যদিপূর্ণরূপে দাঁড়িয়ে পড়ে তবে আর বসবে না। তাশাহুদ রহিত হযে যাবে। ঐভাবেইছালাত পূর্ণ করবে এবং সলাম ফিরানোর পূর্বে সাহু সিজদা করবে।
দলীল:
عَنْعَبْدِاللَّهِ ابْنِ بُحَيْنَةَ قَالَ صَلَّى بِنَا النَّبِيُّ صَلَّىاللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَامَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ الْأُولَيَيْنِقَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ فَمَضَى فِي صَلَاتِهِ فَلَمَّا قَضَى صَلَاتَهُانْتَظَرَ النَّاسُ تَسْلِيمَهُ فَكَبَّرَ وَسَجَدَ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ كَبَّرَ وَسَجَدَ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُوَسَلَّمَ
আবদুল্লাহ্বিন বুহাইনাহ্ (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী (ছাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নিয়ে (যোহর) ছালাত আদায় করলেন। কিন্তুদু‘রাকাত শেষে (তাশাহুদ না পড়েই) দাঁড়িয়ে পড়লেন। তিনি নামায চালিয়ে যেতেথাকলেন। ছালাত শেষে মানুষ সালামের অপেক্ষা করছে এমন সময় সালামের পূর্বেতিনি তাকবীর দিয়ে সিজদা করলেন, মাথা উঠিয়ে আবার তাকবীর দিয়ে সিজদা করলেন, তারপর মাথা উঠিয়ে সালাম ফেরালেন।
তৃতীয়ত: সন্দেহ হওয়া:ছালাতের মধ্যে সন্দেহের দু‘টি অবস্থা:
প্রথম অবস্থা:সন্দেহযুক্ত দু‘টি বিষয়ের মধ্যে যেটির প্রাধান্য পাবে সে অনুযায়ী কাজ করবেএবং ছালাত পূর্ণ করে সালাম ফিরাবে। তারপর সাহু সিজদা করে সালাম ফিরাবে।
উদাহরণ:একজন লোক যোহরের ছালাত আদায় করছে। কিন্তু সন্দেহ হল এখন সে কি দ্বিতীয়রাকাতে না তৃতীয় রাকাতে? এ সময় সে অনুমান করে স্থির করবে কোনটা ঠিক। যদিঅনুমান প্রাধান্য পায় যে এটা তৃতীয় রাকাত, তবে তা তৃতীয় রাকাত গণ্য করেছালাত পূর্ণ করবে এবং সালাম ফেরানোর পর সাহু সিজদা করবে।
দলীল: আবদুল্লাহ্ বিন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
তৃতীয়ত: সন্দেহ হওয়া:ছালাতের মধ্যে সন্দেহের দু‘টি অবস্থা:
প্রথম অবস্থা:সন্দেহযুক্ত দু‘টি বিষয়ের মধ্যে যেটির প্রাধান্য পাবে সে অনুযায়ী কাজ করবেএবং ছালাত পূর্ণ করে সালাম ফিরাবে। তারপর সাহু সিজদা করে সালাম ফিরাবে।
উদাহরণ:একজন লোক যোহরের ছালাত আদায় করছে। কিন্তু সন্দেহ হল এখন সে কি দ্বিতীয়রাকাতে না তৃতীয় রাকাতে? এ সময় সে অনুমান করে স্থির করবে কোনটা ঠিক। যদিঅনুমান প্রাধান্য পায় যে এটা তৃতীয় রাকাত, তবে তা তৃতীয় রাকাত গণ্য করেছালাত পূর্ণ করবে এবং সালাম ফেরানোর পর সাহু সিজদা করবে।
দলীল: আবদুল্লাহ্ বিন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
وَإِذَاشَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلَاتِهِ فَلْيَتَحَرَّ الصَّوَابَ فَلْيُتِمَّعَلَيْهِ ثُمَّ لِيُسَلِّمْ ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيْنِ
«তোমাদেরকারো ছালাতে যদি সন্দেহ হয় তবে সঠিক সিদ্ধানে- উপনীত হওয়ার চেষ্টা করবেএবং সে ভিত্তিতে ছালাত পূর্ণ করবে। তারপর সালাম ফিরিয়ে দু‘টি সাহু সিজদাকরবে।«
দ্বিতীয় অবস্থা:সন্দেহযুক্ত দু‘টি দিকের কোনটাই প্রাধান্য পায় না। এ অবস্থায় নিশ্চিতদিকটির উপর ভিত্তি করবে। অর্থাৎ কম সংখ্যাটি নির্ধারণ করে বাকী নামায পূর্ণকরবে। তারপর সালামের আগে সাহু সিজদা করে শেষে সালাম ফিরাবে।
উদাহরণঃজনৈক ব্যক্তি আছরের ছালাতে সন্দেহ করল- তিন রাকাত পড়েছে না দু‘রাকাত।কিন্তু অনুমান করে কোনটাই তার নিকট প্রাধান্য পেল না।এমতাবস্থায় সে তাদ্বিতীয় রাকাত ধরে প্রথম তাশাহুদ পাঠ করবে। তারপর বাকী দু‘রাকাত নামাযপূর্ণ করবে এবং শেষে সালাম ফিরানোর পূর্বে সাহু সিজদা করবে। দলীল: আবু সাঈদখুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
দ্বিতীয় অবস্থা:সন্দেহযুক্ত দু‘টি দিকের কোনটাই প্রাধান্য পায় না। এ অবস্থায় নিশ্চিতদিকটির উপর ভিত্তি করবে। অর্থাৎ কম সংখ্যাটি নির্ধারণ করে বাকী নামায পূর্ণকরবে। তারপর সালামের আগে সাহু সিজদা করে শেষে সালাম ফিরাবে।
উদাহরণঃজনৈক ব্যক্তি আছরের ছালাতে সন্দেহ করল- তিন রাকাত পড়েছে না দু‘রাকাত।কিন্তু অনুমান করে কোনটাই তার নিকট প্রাধান্য পেল না।এমতাবস্থায় সে তাদ্বিতীয় রাকাত ধরে প্রথম তাশাহুদ পাঠ করবে। তারপর বাকী দু‘রাকাত নামাযপূর্ণ করবে এবং শেষে সালাম ফিরানোর পূর্বে সাহু সিজদা করবে। দলীল: আবু সাঈদখুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
إِذَاشَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلاتِهِ فَلَمْ يَدْرِ كَمْ صَلَّى ثَلاثًا أَمْأَرْبَعًا فَلْيَطْرَحِ الشَّكَّ وَلْيَبْنِ عَلَى مَا اسْتَيْقَنَ ثُمَّيَسْجُدُ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ فَإِنْ كَانَ صَلَّى خَمْسًاشَفَعْنَ لَهُ صَلَاتَهُ وَإِنْ كَانَ صَلَّى إِتْمَامًا لِأَرْبَعٍكَانَتَا تَرْغِيمًا لِلشَّيْطَانِ
«তোমাদেরকোন ব্যক্তি যদি ছালাতে সন্দেহ করে যে, তিন রাকাত পড়েছে না চার রাকাত? তবেসে সন্দেহকে বর্জন করবে এবং নিশ্চিতের উপর ভিত্তি করবে। তারপর সালামফেরানোর পূর্বে দু‘টি সিজদা করবে। যদি পাঁচ রাকাত পড়ে থাকে তবে ছালাত বেজোড়থেকে জোড় হয়ে যাবে। আর যদি চার রাকাতই পড়ে থাকে,তবে এসিজদা দু‘টি শয়তানকেঅপমানের জন্য হবে।«
সারকথা:পূর্বেল্লেখিত আলোচনা থেকে বুঝা গেল যে, সিজদায়ে সাহু কখনো সালামের আগে কখনো সালামের পর করতে হয়।
সালামের পূর্বে সাহু সিজদা দু‘ক্ষেত্রে করতে হয়:
প্রথম:ছালাতে যদি কোন ওয়াজিব হ্রাস হয়।
দ্বিতীয়:ছালাতে যদি সন্দেহ হয় এবং দু‘টি দিকের কোনটিই প্রাধান্য না পায়, তবে সালামের পূর্বে সাহু সিজদা করবে।
সালামের পর দু‘ক্ষেত্রে সাহু সিজদা করতে হয়:
প্রথম:যদি ছালাতে বৃদ্ধি হয়ে যায়।
দ্বিতীয়:যদি সন্দেহ হয় এবং যে কোন একটি দিক অনুমানের ভিত্তিতে প্রাধান্য লাভ করে, তবে সালামের পর সাহু সিজদা করবে।
সারকথা:পূর্বেল্লেখিত আলোচনা থেকে বুঝা গেল যে, সিজদায়ে সাহু কখনো সালামের আগে কখনো সালামের পর করতে হয়।
সালামের পূর্বে সাহু সিজদা দু‘ক্ষেত্রে করতে হয়:
প্রথম:ছালাতে যদি কোন ওয়াজিব হ্রাস হয়।
দ্বিতীয়:ছালাতে যদি সন্দেহ হয় এবং দু‘টি দিকের কোনটিই প্রাধান্য না পায়, তবে সালামের পূর্বে সাহু সিজদা করবে।
সালামের পর দু‘ক্ষেত্রে সাহু সিজদা করতে হয়:
প্রথম:যদি ছালাতে বৃদ্ধি হয়ে যায়।
দ্বিতীয়:যদি সন্দেহ হয় এবং যে কোন একটি দিক অনুমানের ভিত্তিতে প্রাধান্য লাভ করে, তবে সালামের পর সাহু সিজদা করবে।
No comments:
Post a Comment