·
❏ অনুবাদকের ভূমিকা:
❏ অনুবাদকের ভূমিকা:
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা সমগ্র বিশ্বজগতের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি অবতীর্ণ হোক আল্লাহর বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীগণের ওপর।
আমরা একটি বিষয় অনেকদিন থেকেই লক্ষ করে আসছি যে, সুবিদিত সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসবাদে উসকানিদাতা খারিজী সম্প্রদায়কে যখন আহলুস সুন্নাহর ‘উলামাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ‘খারিজী’ আখ্যা দেওয়া হয়, তখন একদল দরদী ভাই—যাদের কিনা খারিজী সন্ত্রাসীদের প্রতি প্রবল অনুরাগ আছে—আহলুস সুন্নাহর ‘উলামাদের বিরোধিতা করে বলেন, ‘আমাদের ওই ভাইয়েরা খারিজী নয়, বরং তাঁরা বুগাত।’ এমনকি এ নিয়ে তাদেরকে সালাফীদের সাথে বিবাদে লিপ্ত হতেও দেখা যায়।
অনুরূপভাবে আরেকটি দল রয়েছে, যারা শাসকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-আন্দোলন ও সশস্ত্র বিপ্লব করার মানহাজ লালন করে। তাদেরকে যখন বলা হয়, শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা নিষিদ্ধ এবং এরকম বিদ্রোহ বৈধ মনে করা খারিজীদের কাজ, তখন তারা বিদ্রুপ করে বলে, ‘তাহলে অমুক শাসক খারিজী, কারণ তিনি বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন, আর তার আনুগত্য দাবি করার কারণে তোমরাও খারিজী!’ লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।
·
এদের অনেককে আবার মিশরের শাসক জেনারেল সিসির কথা উত্থাপন করতে দেখা যায়, যিনি সেনা অভ্যূত্থানের মাধ্যমে ইখওয়ানী শাসক মুহাম্মাদ মুরসীকে হটিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। তো যখন বলা হয়, ভালো কাজে জেনারেল সিসির আনুগত্য করা মিশরবাসীর জন্য আবশ্যক এবং তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা খারিজীদের কর্ম, তখন ইখওয়ানীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বলে ওঠে, ‘বরং সিসিই খারিজী, আর তার আনুগত্যের দাবিদাররাও খারিজী।’ উল্লেখ্য যে, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মতে জবরদখলকারী শাসকের আনুগত্য করা ওয়াজিব। বিস্তারিত দ্রষ্টব্য: https://tinyurl.com/vx6r98t।
এদের অনেককে আবার মিশরের শাসক জেনারেল সিসির কথা উত্থাপন করতে দেখা যায়, যিনি সেনা অভ্যূত্থানের মাধ্যমে ইখওয়ানী শাসক মুহাম্মাদ মুরসীকে হটিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। তো যখন বলা হয়, ভালো কাজে জেনারেল সিসির আনুগত্য করা মিশরবাসীর জন্য আবশ্যক এবং তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা খারিজীদের কর্ম, তখন ইখওয়ানীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বলে ওঠে, ‘বরং সিসিই খারিজী, আর তার আনুগত্যের দাবিদাররাও খারিজী।’ উল্লেখ্য যে, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মতে জবরদখলকারী শাসকের আনুগত্য করা ওয়াজিব। বিস্তারিত দ্রষ্টব্য: https://tinyurl.com/vx6r98t।
প্রকৃতপক্ষে খারিজী ও বুগাতের মধ্যে পার্থক্য না জানার কারণে এসব প্রমাদযুক্ত বাতিল কথার উদ্ভব ঘটেছে বলে আমরা মনে করি। বেশ কয়েকবছর আগে সৌদি আরবের খ্যাতনামা দা‘ঈ, মাসজিদে কুবার ইমাম, জনাব সালিহ আল-মুগামিসী (হাদাহুল্লাহ) মুসলিমদের রক্ত হালালকারী ও বোমা বিস্ফোরণকারী সন্ত্রাসীদেরকে ‘বুগাত’ আখ্যা দিয়ে তাদের অপরাধকর্মকে হালকা করার চেষ্টা করেন। এরকম স্পর্শকাতর বিষয়ে তাঁর এহেন উদ্ভট কথার জবাবে সৌদি আরবের প্রখ্যাত দা‘ঈ ফাদ্বীলাতুশ শাইখ আবূ ফুরাইহান জামাল বিন ফুরাইহান আল-হারিসী (হাফিযাহুল্লাহ) একটি প্রামাণ্য নিবন্ধ রচনা করেন।
সুপ্রিয় পাঠক, বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা উক্ত নিবন্ধের বঙ্গীকরণ করার প্রয়াস পেয়েছি। ফালিল্লাহিল হামদ। তবে মূল নিবন্ধ শুরু করার পূর্বে খারিজী ও বুগাতের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি উল্লেখ করছি, যাতে করে উক্ত অভিধা দুটির সাথে পরিচিতি নেই এমন পাঠকরাও স্বচ্ছন্দে প্রবন্ধটি পড়তে পারেন। ওয়া বিল্লাহিত তাওফীক্ব।
·
‘খারিজী’ শব্দটি একবচন, বহুবচনে ‘খাওয়ারিজ’। ‘খারিজী’ শব্দটি ‘খুরূজ’ শব্দমূল থেকে উদ্গত হয়েছে। আভিধানিক অর্থে, “যে তার গোত্র ও সমকক্ষদের ছাড়িয়ে যায় সেই খারিজী।” [১]
‘খারিজী’ শব্দটি একবচন, বহুবচনে ‘খাওয়ারিজ’। ‘খারিজী’ শব্দটি ‘খুরূজ’ শব্দমূল থেকে উদ্গত হয়েছে। আভিধানিক অর্থে, “যে তার গোত্র ও সমকক্ষদের ছাড়িয়ে যায় সেই খারিজী।” [১]
পরিভাষায়, শাহরাস্তানি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সত্যিকারের শাসকের—যার শাসক হওয়ার বিষয়টি মুসলিমরা মেনে নিয়েছে—বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, সে ব্যক্তিই খারিজী। চাই সেই বিদ্রোহ সাহাবীদের যুগের সুপথপ্রাপ্ত শাসকদের বিরুদ্ধে হোক, অথবা তাঁদের পরে তাবি‘ঈদের বিরুদ্ধে হোক, কিংবা পরবর্তীতে যে কোনো যুগের শাসকের বিরুদ্ধে হোক।” [২]
ইবনু হাযম আল-আন্দালুসী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “সালিস নিযুক্ত করাকে প্রত্যাখ্যান করা, কাবীরাহ গুনাহগারকে কাফির আখ্যা দেওয়া, অত্যাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মত ব্যক্ত করা, কাবীরাহ গুনাহগাররা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে বলে মত পোষণ করা করা, কুরাইশ বংশ ছাড়াও অন্য বংশ থেকে শাসক হওয়া বৈধ মনে করা প্রভৃতির মাধ্যমে যে ব্যক্তি খারিজীদের সাথে একমত পোষণ করে, সেই খারিজী।” [৩]
·
‘বুগাত’ শব্দটি বহুবচন, একবচনে ‘বাগী’। ‘বুগাত’ শব্দটি ‘বাগউয়ুন’ শব্দমূল থেকে উদ্গত হয়েছে। আভিধানিক অর্থে, “উদ্ধত জালেমকে বাগী বলা হয়। অনুরূপভাবে আইনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারীকেও বাগী বলা হয়।” [৪]
‘বুগাত’ শব্দটি বহুবচন, একবচনে ‘বাগী’। ‘বুগাত’ শব্দটি ‘বাগউয়ুন’ শব্দমূল থেকে উদ্গত হয়েছে। আভিধানিক অর্থে, “উদ্ধত জালেমকে বাগী বলা হয়। অনুরূপভাবে আইনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারীকেও বাগী বলা হয়।” [৪]
পরিভাষায়, ইবনু ‘আবিদীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “যে মুসলিম সম্প্রদায় ন্যায়বান শাসকের বিরুদ্ধে কোনো (নির্দিষ্ট) যুক্তি বা ব্যাখ্যার কারণে বিদ্রোহ করে, কিন্তু তারা খারিজীদের মতো মুসলিমদের হত্যা করা এবং তাদের সন্তানসন্ততিকে বন্দি করা বৈধ মনে করে না, তাদেরকে বুগাত বলা হয়।” [৫]
ইবনু হাযম আল-আন্দালুসী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “দ্বীনের ক্ষেত্রে ভুল ব্যাখ্যায় পতিত হওয়ার কারণে কিংবা দুনিয়াবি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে সত্য শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাকে (বুগাতদের কর্ম) বাগউয়ুন বলা হয়।” [৬]
·
❏ মূল নিবন্ধের বঙ্গানুবাদ:
❏ মূল নিবন্ধের বঙ্গানুবাদ:
ফাদ্বীলাতুশ শাইখ আবূ ফুরাইহান জামাল বিন ফুরাইহান আল-হারীসী (হাফিযাহুল্লাহ) বলেছেন,
❝খাওয়ারিজ ও বুগাত পরিভাষা দুটির মধ্যে আম-খাসের ব্যাপার আছে। বুগাত হলো খারিজীর চেয়ে খাস। তাই সকল খারিজীই বুগাত, কিন্তু সকল বুগাত খারিজী নয়।
খারিজীরা তিনটি বিষয় ধারণ করে। যথা:
এক. শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ‘আক্বীদাহ।
দুই. কাবীরাহ গুনাহকারীকে তাকফীর (কাফির ফতোয়া দেওয়া) করা।
তিন. তাদের এমন ক্ষমতা না থাকা, যা তাদেরকে অন্যের দাপট থেকে রক্ষা করতে পারে।
এক. শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ‘আক্বীদাহ।
দুই. কাবীরাহ গুনাহকারীকে তাকফীর (কাফির ফতোয়া দেওয়া) করা।
তিন. তাদের এমন ক্ষমতা না থাকা, যা তাদেরকে অন্যের দাপট থেকে রক্ষা করতে পারে।
তাদের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, إِنَّ مِنْ ضِئْضِئِ هَذَا قَوْمًا يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ يَمْرُقُونَ من الإِسلام مروق السهْم من الرَّمية يقتلُون أَهْلَ الْإِسْلَامِ وَيَدَعُونَ أَهْلَ الْأَوْثَانِ لَئِنْ أَدْرَكْتُهُمْ لأقتلنهم قتل عَاد “এ ব্যক্তির বংশ হতে এমন কিছু সংখ্যক লোক হবে, যারা কুরআন পড়বে, কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা ইসলাম থেকে এমনভাবে বেরিয়ে পড়বে, যেমনভাবে শিকার ভেদ করে তির বেরিয়ে যায়। তারা মুসলিমদেরকে হত্যা করবে, আর মূর্তিপূজারীদের ছেড়ে দিবে। আমি যদি তাদেরকে পেতাম, তাহলে অবশ্যই তাদেরকে আদ জাতির মতো হত্যা করতাম।” [৭]
তিনি ﷺ আরও বলেছেন, كِلَابُ النَّارِ شَرُّ قَتْلَى تَحْتَ أَدِيمِ السَّمَاءِ خَيْرُ قَتْلَى مَنْ قَتَلُوهُ “এরা হলো জাহান্নামের কুকুর। এদের মধ্যে যারা নিহত হয়েছে, তারা আকাশমন্ডলীর নিচে সবচেয়ে নিকৃষ্ট নিহত এবং যাদেরকে তারা হত্যা করেছে, তারা সবচেয়ে উৎকৃষ্ট নিহত।” [৮]
বুখারী-মুসলিমের উক্ত হাদীস-সহ অন্যান্য হাদীসের ভিত্তিতে একদল ‘উলামা খারিজীদের কাফির মনে করেন।
বুগাতরাও তিনটি বিষয় ধারণ করে। যথা:
এক. শাসকের বিরুদ্ধাচরণ এবং শাসককে অপসারণ করার চেষ্টা।
দুই. এমন ক্ষমতা থাকা, যা তাদেরকে অন্যের দাপট থেকে রক্ষা করবে, যখন কোনো শক্তিশালী স্থলে তারা আশ্রয় গ্রহণ করে।
তিন. কোনো (নির্দিষ্ট) যুক্তি বা ব্যাখ্যার কারণে তারা যুদ্ধ করে। কিন্তু তারা প্রতিপক্ষকে কাফির ফতোয়া দেয় না। যেমন অবস্থা উদ্ভূত হয়েছিল জঙ্গে জামালে যুদ্ধ করা দলের লোকদের এবং সিফফীনের যুদ্ধে মু‘আউয়িয়াহর দলের লোকদের (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুম জামী‘আ)। এমনটি হয়েছিল তাঁদের ইজতিহাদের কারণে। আর মুজতাহিদ [৯] যদি ভুল করেন, তবুও তার জন্য একটি সওয়াব রয়েছে। যেমনটি বিশুদ্ধ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। [১০]
এক. শাসকের বিরুদ্ধাচরণ এবং শাসককে অপসারণ করার চেষ্টা।
দুই. এমন ক্ষমতা থাকা, যা তাদেরকে অন্যের দাপট থেকে রক্ষা করবে, যখন কোনো শক্তিশালী স্থলে তারা আশ্রয় গ্রহণ করে।
তিন. কোনো (নির্দিষ্ট) যুক্তি বা ব্যাখ্যার কারণে তারা যুদ্ধ করে। কিন্তু তারা প্রতিপক্ষকে কাফির ফতোয়া দেয় না। যেমন অবস্থা উদ্ভূত হয়েছিল জঙ্গে জামালে যুদ্ধ করা দলের লোকদের এবং সিফফীনের যুদ্ধে মু‘আউয়িয়াহর দলের লোকদের (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুম জামী‘আ)। এমনটি হয়েছিল তাঁদের ইজতিহাদের কারণে। আর মুজতাহিদ [৯] যদি ভুল করেন, তবুও তার জন্য একটি সওয়াব রয়েছে। যেমনটি বিশুদ্ধ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। [১০]
মহান আল্লাহ বলেছেন, وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا ۖ فَإِنْ بَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرَىٰ فَقَاتِلُوا الَّتِي تَبْغِي حَتَّىٰ تَفِيءَ إِلَىٰ أَمْرِ اللَّهِ “মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। অতঃপর তাদের একদল অপর দলকে আক্রমণ করলে আক্রমণকারী দলের (বুগাতদের) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে।” [১১]
মহান আল্লাহ তাদেরকে ‘বুগাত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ ﷺ -ও তাদেরকে ‘বুগাত’ বলেছেন। যেমন বিশুদ্ধ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ ‘আম্মার (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) [১২] কে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, تَقْتُلُكَ الْفِئَةُ الْبَاغِيَة “তোমাকে বুগাতদের একটি দল হত্যা করবে।” [১৩]
আয়াত ও হাদীসের সুস্পষ্ট দলিলের ভিত্তিতে প্রতীয়মান হয়েছে যে, বুগাতরা কাফির নয়। জঙ্গে জামালে যারা লড়াই করেছিল, তারা ‘উসমান (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) কে হত্যাকারী সকলের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছিল, কোনোরূপ বিদ্রোহ ও তাকফীর না করেই। কিন্তু তারা ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) কে এ ব্যাপারে নীরব থাকতে দেখে ধারণা করেছিল যে, তিনি হয়তো এ ব্যাপারে সহনশীলতার পথ বেছে নিয়েছেন। অথচ তিনি তা থেকে মুক্ত ছিলেন।
আর-রাফি‘ঈ বলেছেন, ثَبَتَ أن أهل الجمل وصفين بُغَاةٌ “এটি প্রমাণিত হয়েছে যে, জঙ্গে জামাল ও সিফফীনের যুদ্ধে লড়াইকারী দল দুটো বুগাত ছিল।” হাফিয ইবনু হাজার (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, هُوَ كَمَا قَالَ “তিনি যেমন বলেছেন, বিষয়টি তেমনই।” [১৪]
ইবনু খালদূন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ﻭﺍﻟّﺬﻳﻦ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻓﻲ ﺍﻷﻣﺼﺎﺭ ﻋﺪﻟﻮﺍ ﻋﻦ ﺑﻴﻌﺘﻪ – ﻋﻠﻴﺎً - ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻄّﻠﺐ ﺑﺪﻡ ﻋﺜﻤﺎﻥ، ﻭﻇﻨّﻮﺍ ﺑﻌﻠﻲّ ﻫﻮﺍﺩﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺴّﻜﻮﺕ ﻋﻦ ﻧﺼﺮ ﻋﺜﻤﺎﻥ ﻣﻦ ﻗﺎﺗﻠﻪ ﻻ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻤﺎﻷﺓ ﻋﻠﻴﻪ؛ ﻓﺤﺎﺵ ﻟﻠَّﻪ ﻣﻦ ﺫﻟﻚ. ﻭﻟﻘﺪ ﻛﺎﻥ ﻣﻌﺎﻭﻳﺔ ﺇﺫﺍ ﺻﺮّﺡ ﺑﻤﻼﻣﺘﻪ؛ ﺇﻧّﻤﺎ ﻳﻮﺟّﻬﻬﺎ ﻋﻠﻴﻪ ﻓﻲ ﺳﻜﻮﺗﻪ ﻓﻘﻂ “শহরাঞ্চলের অধিবাসীরা ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র কাছ বাইআত গ্রহণ করা থেকে বিরত থেকেছিল, যতক্ষণ না তিনি ‘উসমান হত্যার বিচার সম্পন্ন করেন। ‘উসমান হত্যার বিচার করার ব্যাপারে তিনি নীরব থাকায় তারা ধারণা করেছিল যে, ‘আলী হয়তো সহনশীলতার পন্থা অবলম্বন করছেন। তারা এরূপ ধারণা এজন্য করেনি যে, তিনি ‘উসমানের হন্তাদের পক্ষাবলম্বন করেছেন। আল্লাহর কাছে এ থেকে পানাহ চাই। নিশ্চয়ই মু‘আউয়িয়াহ যখন তাঁর পক্ষাবলম্বনের ব্যাপারটি স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেছেন, তখন তিনি উক্ত বিষয়টি তাঁকে বলেছিলেন কেবল তাঁর নীরব থাকার কারণে।” [১৫]
‘আলীর দল ও মু‘আউয়িয়াহর দলের মধ্যে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, সে ব্যাপারে আবূ মুহাম্মাদ ইবনু হাযম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “আমরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) সঠিকতার ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। তিনিই ছিলেন এক্ষেত্রে হকপথ অবলম্বনকারী। তাঁর জন্য রয়েছে দুটো সওয়াব। একটি ইজতিহাদ করার সওয়াব, আরেকটি সঠিকতায় পৌঁছার সওয়াব।
আর আমরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, মু‘আউয়িয়াহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) ও তাঁর সঙ্গীবর্গ ইজতিহাদে ভুল করেছিলেন এবং তাঁরা (ইজতিহাদ করার কারণে) একটি সওয়াবপ্রাপ্ত হবেন। এছাড়াও রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বিশুদ্ধ হাদীসে প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি এমন একটি সম্প্রদায় সম্পর্কে সংবাদ দিয়েছেন, যে সম্প্রদায় তাঁর উম্মতের দুটো দলের মধ্য থেকে উদ্ভূত হবে এবং উক্ত দুই দলের মধ্যে যারা হকের অধিক নিকটবর্তী তারা সেই সম্প্রদায়কে হত্যা করবে। [১৬] পরবর্তীতে সেই সম্প্রদায়টির উত্থান ঘটল, মূলত তারা হলো ‘আলী ও মু‘আউয়িয়াহর দল থেকে বের হয়ে যাওয়া খারিজী সম্প্রদায়, আর তাদেরকে ‘আলী ও তাঁর সঙ্গীবর্গ হত্যা করলেন। এ থেকে বিশুদ্ধভাবে প্রতীয়মান হলো যে, তাঁরাই ছিলেন দুই দলের মধ্যে হকের অধিক নিকটবর্তী। অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বিশুদ্ধ হাদীসে প্রমাণিত হয়েছে যে, বুগাতদের একটি দল ‘আম্মারকে হত্যা করবে। [১৭]
ইজতিহাদে ভুলকারী মুজতাহিদ যদি মনে করেন তাঁর মত সঠিক, আর এরই ভিত্তিতে তিনি যুদ্ধ করেন, আল্লাহর উদ্দেশ্যে স্বীয় নিয়তকে বিশুদ্ধ করেন, সেই সাথে তাঁর এও জানা নেই যে, তিনি ইজতিহাদে ভুল করেছেন, তাহলে সে দলটি (তাঁর দলটি) হবে বুগাত; যদিও তিনি সওয়াবপ্রাপ্ত হন, অথবা যদিও তিনি যুদ্ধ করা ছেড়ে দিলে তাঁর ওপর দণ্ডবিধি ও ক্বিসাস প্রতিষ্ঠা করা হয় না। পক্ষান্তরে সে যদি যুদ্ধ করে অথচ তার জানা আছে যে, সে ভুলকারী, তাহলে তার ওপর যুদ্ধ করার দণ্ডবিধি ও ক্বিসাস প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর সে হবে ফাসেক ও বিদ্রোহী, ইজতিহাদে ভুলকারী মুজতাহিদ নয়। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেছেন, “মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। অতঃপর তাদের একদল অপর দলকে আক্রমণ করলে আক্রমণকারী দলের (বুগাতদের) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে।” এখান থেকে এই পর্যন্ত—“নিশ্চয়ই মু’মিনরা একে অপরের ভাইস্বরূপ; সুতরাং তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করে দাও।” [১৮]
আয়াতের বাহ্যিক অর্থের উদ্দেশ্য থেকে দূরে না গিয়ে এবং অপব্যাখ্যার কষ্টভোগ না করে বলা যায়, এটিই আমাদের বক্তব্যের সুস্পষ্ট দলিল। মহান আল্লাহ তাদেরকে (তাদের মধ্যে) যুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায় বুগাত মু’মিন আখ্যা দিয়েছেন, এবং যাদের ওপর বুগাতরা আক্রমণ করে তাদেরকে ন্যায়নিষ্ঠ ও উভয় দলের মধ্যে মীমাংসক আখ্যা দিয়েছেন। মহান আল্লাহ তাদেরকে এই যুদ্ধের কারণে ফাসেক আখ্যা দেননি, এর ফলে ইমান হ্রাস পাওয়ার ঘোষণাও দেননি। বরং তারা ভুলকারী বুগাত মাত্র। তাদের কেউ প্রতিপক্ষকে হত্যার অভিলাষ পোষণ করেনি।” (ইবনু হাযমের বক্তব্য এখানে শেষ হয়েছে) [১৯]
আবূ মুহাম্মাদ ইবনু হাযম (রাহিমাহুল্লাহ) আরও বলেছেন, “মু‘আউয়িয়াহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র ব্যাপারটি হলো—‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) তাঁর সাথে একারণে যুদ্ধ করেননি যে, তিনি তাঁর কাছে বাইআত প্রদান করা থেকে বিরত থেকেছেন। বরং মু‘আউয়িয়াহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) সমগ্র শাম প্রদেশে ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র নির্দেশাবলি বাস্তবায়ন করা থেকে বিরত থাকার কারণে তাঁর সাথে ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) যুদ্ধ করেছেন। তিনি শাসক, তাঁর আনুগত্য করা ওয়াজিব। বিধায় এক্ষেত্রে ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) সঠিকতায় উপনীত হয়েছেন। মু‘আউয়িয়াহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) কখনোই ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র মর্যাদা এবং তিনি যে খলিফা হওয়ার হকদার—তা অস্বীকার করেননি। কিন্তু তাঁর ইজতিহাদ তাঁকে এই সিদ্ধান্তে উপনীত করেছিল যে, বাইআত প্রদান করার ওপর ‘উসমান (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র হত্যাকারীদের শাস্তি দেওয়া অগ্রগণ্য। আর তিনি ‘উসমান (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র হত্যাকারীদের শাস্তি দাবি করার ব্যাপারে নিজেকে অধিক হকদার মনে করেছিলেন।” [২০]
তাহলে এর পরেও কি শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ‘আক্বীদাহ পোষণকারী, মুসলিমদেরকে কাফির ফতোয়া দিয়ে তাদেরকে গোপনে হত্যাকারী এবং বোমা বিস্ফোরণকারীদের ব্যাপারে বলা হবে যে, তারা বুগাত? নিশ্চয়ই এটা বড়োই আশ্চর্যের বিষয়!
আমি আরও আশ্চর্য হই, যখন দেখি এসব কথা তাঁদের থেকে উদ্গত হয়, যাঁরা মসজিদের মিম্বারে আরোহণ করেছেন, দাওয়াতের কাজে উদ্যমী হয়েছেন, দাওয়াতের কাজে বড়ো পর্যায়ে উন্নীত হয়েছেন, আর তাঁদেরকে প্রসিদ্ধিমূলক উপাধী দিয়ে তাঁদের গুণকীর্তন করা তাঁদের কাছে সুমধুর বিষয়ে পরিণত হয়েছে (যেমনটি বলা হয়ে থাকে)।
তাঁরা কি মুসলিমদেরকে বিভ্রান্তির মধ্যে নিপাতিত করার আগে, লেখালেখি করা ও টুইট করার আগে পড়াশোনা ও গবেষণা করেন না? ইসলাম থেকে বিচ্যুত খারিজী সম্প্রদায়, যারা কিনা জাহান্নামের কুকুর, সেই সাথে মুসলিমদের হত্যাকারী, এবং আসমানের নিচে যত লোক নিহত হয় তাদের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট নিহত—এমন ব্যক্তিবর্গকে ‘বুগাত’ আখ্যা দিয়ে তাদের অপরাধের ভয়াবহতাকে হালকা করার পূর্বে তাঁরা কি গবেষণা করেন না?!
পাঠকের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, বুগাত ও খারিজীদের মধ্যে পার্থক্য কী। আমি আশঙ্কা করি, যারা মুসলিমদেরকে গোপনে হত্যাকারী ও বোমা বিস্ফোরণকারীদেরকে ‘বুগাত’ আখ্যা দিয়ে অথবা ‘আমাদের ভাই কিন্তু ভুল করেছে’ বলে কিংবা ‘তারা আমাদের বিরুদ্ধে সীমালঙ্ঘন (বাগাওয়াত) করেছে মাত্র’ বলে তাদের প্রশংসাকারীরা তাদেরকে ‘ইসলাম থেকে বিচ্যুত খারিজী’ বলা থেকে বিরত থাকে। তা নাহলে শাইখ সালিহ আল-মুগামিসী কেন তাদেরকে স্পষ্ট করে খারিজী বলছেন না? আর কেনইবা তিনি ইমারাতিয়্যাহ চ্যানেলের পর্দায় বাদশাহ ‘আব্দুল্লাহর কাছে বোমা বিস্ফোরণের ফতোয়া প্রদানকারী এবং যুবকদেরকে এ ব্যাপারে উসকানিদাতা ব্যক্তিবর্গের জন্য ক্ষমা চাইছেন? কেন তিনি ব্যাপকভাবে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, “আমি আমাদের কারারুদ্ধ ভ্রাতৃবর্গের ব্যাপারে বলছি, যাদের কারও কারও বিচার হয়েছে, আবার কারও কারও বিচার হয়নি। আর তাঁদের শীর্ষে রয়েছেন আশ-শাইখ...” এবং তাদেরকে জ্ঞানী, সৎ ও মর্যাদাবান বলে প্রশংসা করেছেন?
এটা তাঁর সম্পূর্ণ বক্তব্যের লিংক, আপনি এর মধ্যে আশ্চর্যজনক বিষয় দেখতে পাবেন: https://www.youtube.com/watch?v=t6dZ9Fb1XKI।
তাই বলি, সৌদি আরবে নিরাপরাধ লোকদের রক্তে যাদের হাত ও জবান রঞ্জিত হয়েছে, তাদের জন্য ক্ষমা চাওয়া পর্যন্ত কে মুগামিসীকে ছেড়ে রেখেছে?!
সতর্কবার্তা: মুগামিসীর টুইটের টেক্সট: মুগামিসী বলেছেন, “হে আল্লাহ, আপনার রাসূলের দেশে বুগাতরা যা করেছে সেটাকে আপনি তাদের সর্বশেষ চক্রান্তে এবং তাদের সর্বপ্রথম ধ্বংসে পরিণত করুন, আর আমাদের দেশ ও দেশের অধিবাসীকে যাবতীয় অকল্যাণ থেকে হেফাজত করুন।”
সুতরাং ভাইয়েরা, আপনারা তাদের থেকে সতর্ক হোন, যারা মুখে বড়ো বড়ো বুলি আওড়ায়, ঘুরিয়ে প্যাঁচিয়ে কথা বলে, নিষিদ্ধ সীমারেখার আশেপাশে বিচরণ করে, অপরাধীকে স্পষ্ট করে ‘অপরাধী’ বলে না, যদিও সময়ে সময়ে অপরাধের ব্যাপারে ইঙ্গিত দেয়, আবার সময়ে সময়ে তার জন্য ক্ষমার আবেদন করে। নিঃসন্দেহে এটি দুই চরিত্রে অভিনয় করার মতো একটি ব্যাপার।❞
শাইখের নিবন্ধ এখানেই সমাপ্ত হয়েছে।
·
পাদটীকা:
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
পাদটীকা:
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
[১]. মু‘জামুল ওয়াসীত্ব।
[২]. আল-মিলাল ওয়ান নিহাল, খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ১১৪।
[৩]. আল-ফাসল ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়াই ওয়ান নিহাল, খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৩৭০; গৃহীত: ড. সুলাইমান বিন সালিহ আল-গুসন, আল-খাওয়ারিজু : নাশআতুহুম ফিরাকুহুম সিফাতুহুম আর-রাদ্দু ‘আলা আবরাযি ‘আক্বাইদিহিম; পৃষ্ঠা: ৪৭-৪৯।
[৪]. মু‘জামুল ওয়াসীত্ব।
[৫]. হাশিয়াতু ইবনি ‘আবিদীন, খণ্ড: ৪; পৃষ্ঠা: ২৬২।
[৬]. আল-মুহাল্লা, খণ্ড: ১১; পৃষ্ঠা: ১১৮; গৃহীত: আমানুল্লাহ মুহাম্মাদ সিদ্দীক্ব, আহকামুল বুগাতি ফিশ শারী‘আতিল ইসলামিয়্যাহ (মাস্টার্স থিসিস); পৃষ্ঠা: ৪২-৪৩।
[৭]. সাহীহ বুখারী, হা/৩৩৪৪; সাহীহ মুসলিম, হা/১০৬৪।
[৮]. সুনানে তিরমিযী, হা/৩০০০; সনদ: হাসান (তাহক্বীক্ব: আলবানী)।
[৯]. ইজতিহাদ ও মুজতাহিদের পরিচয় দিতে গিয়ে ইমাম ইবনু ‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “কোনো একটি শার‘ঈ বিধান জানার জন্য চেষ্টাপ্রচেষ্টা করাকে ইজতিহাদ বলে। আর যে ব্যক্তি এর জন্য (অর্থাৎ, কোনো শার‘ঈ বিধান জানার জন্য) স্বীয় প্রচেষ্টা ব্যয় করেন, তাঁকে মুজতাহিদ বলে।” (ইমাম ‘উসাইমীন, আল-উসূল মিন ‘ইলমিল উসূল; পৃষ্ঠা: ৮৫; দারু ইবনিল জাওযী, দাম্মাম কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৬ হিজরি)
[১০]. রাসূল ﷺ বলেছেন, “একজন বিচারক যখন ইজতিহাদ করেন এবং (তাতে) সঠিকতায় উপনীত হন, তাঁর জন্য রয়েছে দুটি প্রতিদান। আর যখন ভুল করেন, তখন তাঁর জন্য রয়েছে একটি প্রতিদান।” (সাহীহ বুখারী, হা/৭৩৫২; সাহীহ মুসলিম, হা/১৭১৬)
[১১]. সূরাহ হুজুরাত: ৯।
[১২]. প্রখ্যাত সাহাবী ‘আম্মার বিন ইয়াসার (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) মু‘আউয়িয়াহ ও ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা)’র মধ্যে সংঘটিত সিফফীনের যুদ্ধে ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে মু‘আউয়িয়াহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র পক্ষ নিয়ে যুদ্ধকারী সাহাবী আবুল ‘আদিয়াহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) তাঁকে হত্যা করেন। আল্লাহ তাঁদের উভয়কে জান্নাতবাসী করুন। (আল-ফাসল ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়াই ওয়ান নিহাল, খণ্ড: ৪; পৃষ্ঠা: ২৪২)
[১৩]. ইমাম আহমাদ এই হাদীস সাত জায়গায় বর্ণনা করেছেন, তন্মধ্যে একটি বর্ণনা: ৬/৩০০; মুসলিম, হা/২৯১৬; তিরমিযী, হা/৩৮০০।
[১৪]. আত-তালখীসুল হাবীর, ৪/১২৬।
[১৫]. মুকাদ্দিমা ইবনে খালদূন, খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ২৬৭।
[১৬]. রাসূল ﷺ বলেছেন, “মুসলিমদের মতানৈক্যের সময় একটি সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটবে, যাদেরকে (এই উম্মতের বিবাদমান) দুটি দলের মধ্যে হকের অধিক নিকটবর্তী দলের লোকেরা হত্যা করবে।” (সাহীহ মুসলিম, হা/১০৬৪)
[১৭]. ১২ ও ১৩ নং টীকা দ্রষ্টব্য।
[১৮]. সূরাহ হুজুরাত: ৯।
[১৯]. আল-ফাসল ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়াই ওয়ান নিহাল; খণ্ড: ৪; পৃষ্ঠা: ২৪২।
[২০]. আল-ফাসল ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়াই ওয়ান নিহাল; খণ্ড: ৪; পৃষ্ঠা: ২৪০।
·
মূল নিবন্ধের সূত্র:
মূল নিবন্ধের সূত্র:
·
অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
No comments:
Post a Comment