Wednesday 15 January 2020

বর্তমান যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, ইয়েমেনের আহলুস সুন্নাহর ইমাম ও মুজাদ্দিদ, আশ-শাইখ, আল-'আল্লামাহ মুক্ববিল বিন হাদী আল ওয়াদিঈ (রাহিমাহুল্লাহ)-কে প্রশ্ন করা হয়,


"কিছু লোক 'উলামা ইস-সুন্নাহর একজনের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে যিনি কিছু বিদ'আতীকে সমালোচনা করেছেন, এবং তাদের অজুহাত হলো, যার সমালোচনা করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে 'উলামা ইস-সুন্নাহর বাকিরা কথা বলেননি। সুতরাং সে বলে, অমুক এবং অমুক('আলিম) কোথায়? তাঁরা কেন কথা বলেননি? যদি এটা হাক্ব হতো তাহলে তাঁরা তাঁকে (সমালোচনাকারী 'আলিম) অনুসরণ করতেন।" সুতরাং কোন ব্যক্তি সম্বন্ধে কথা ও তার ব্যাপারে সমালোচনার জন্য এটা কি শর্ত যে, 'উলামা ইস-সুন্নাহর বেশিরভাগ বা সবাই তার সমালোচনা করবেন? বিশেষ করে যখন সমালোচনাকারী দলীলের ভিত্তিতে এই বিদ'আতির কথা পর্যবেক্ষণ করেছে, তার বক্তব্য ও কিতাবাদির মাধ্যমে।
.
উত্তর: না'আম(হ্যা), না'আম! হে ভাইয়েরা, বিষয়টি হলো লোকেরা হাদিসের পরিভাষা (মুস্তালাহ আল-হাদিস) শিখেনি, অথবা তারা শিখেছে, কিন্তু ধোঁকা দেয়। আমরা আপনাদের এরচেয়ে বড় একটা উদাহরণ দিবো। আহমাদ বিন হাম্বাল এক লোক সম্বন্ধে বলেছেন তিনি হলেন ছিক্বাহ(বিশ্বস্ত), এবং ইয়াহইয়া ইবন মাঈন বলেছেন সে হলো কাযযাব। তো ইয়াহইয়া ইবন মাঈনের কথা কি তার ক্ষতি করবে, যেখানে আহমাদ বিন হাম্বাল তাঁর বিরোধিতা করেছেন? না'আম(অর্থাৎ ক্ষতি করবে)। ইয়াহইয়ার বক্তব্য হলো জারহুন মুফাসসার(বিস্তারিত সমালোচনা)। তিনি এমন কিছু দেখেছেন যা আহমাদ বিন হাম্বাল দেখেননি। সুতরাং কি? তাকে পরিত্যাগ করুন! যদিও তাকে সমালোচনাকারী ব্যক্তি শুধু ইয়াহইয়া ইবন মাঈন একা হন। এবং এর ভিত্তিতে, যদি এই যুগের 'উলামাদের মধ্য হতে কোন একজন 'আলিম স্পষ্টতম দলীল নিয়ে আসে মুহাম্মাদ আল-গাযালী, অথবা ইউসুফ আল-ক্বারদাউয়ী, অথবা ইখওয়ান আল-মুফলিসীনের মানহাজের বিরুদ্ধে, তাহলে আমরা তা গ্রহণ করি এবং এটা গ্রহণ করা ওয়াজিব।

.
"হে মু'মিনগণ! যদি কোন পাপাচারী তোমাদের নিকট কোন বার্তা আনয়ণ করে, তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতা বশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না কর এবং পরে তোমাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হও।" (আল-হুজুরাত, আয়াত ৬)
.
যদি একজন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি আসে আমরা গ্রহণ করবো, যেমনটা এই আয়াত থেকে বোঝা যায়। যদি একজন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি আসে আমরা গ্রহণ করবো - সুতরাং এই আয়াতের ব্যাপারে তোমার অবস্থান কি যেটি প্রমাণ করে যে একজন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি কোন বার্তা নিয়ে আসলে আমরা তা গ্রহণ করবো? এবং একজন মন্দ লোক কোন বার্তা নিয়ে আসলে আমরা এটা পরীক্ষা করবো? সুতরাং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, এই ধোঁকাবাজ লোকেরা আমাদের অতীত এবং বর্তমান উভয়যুগের 'উলামাদের বিরোধিতা করেছে, এবং আলহামদুলিল্লাহ, আমি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার প্রশংসা করছি, লোকেরা তোমাদের বিশ্বাস করেনা, হে উম্মাদের দল! আর তারা তোমাদের কথাও বিশ্বাস করেনা!
.
কিছু লোক ফ্রান্স থেকে আমাদের কাছে এসেছিলো, তো আমি তাদের একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, "ইলেকশনের ব্যাপারে হুকুম কি?" তিনি বললেন, "এগুলো হলো তাগুতিয়্যাহ।" আমি বললাম, "আপনাকে এটা কে বলেছে?" তিনি বললেন, "আমরা আবু 'আব্দুর রাহমানের(শাইখ মুক্ববিল) একটি টেপে শুনেছি যে এগুলো হলো তাগুতিয়্যাহ।" সুতরাং লোকেরা হলো তেমন যেমনটা আবু মুহাম্মাদ ইবন হাযম বলেছেন, "অন্ধ অনুসারী হলো ডুবন্ত ব্যক্তির ন্যায়, সে যে কোন কিছু আঁকড়ে ধরে রাখে যদি তা শৈবালও হয়, সুতরাং তাদের অবস্থা হলো করুণ, তাদের বিষয়টি হলো যেমনটা বলা হয়েছিলো, 'আমাকে মালিকের সাথের হত্যা করো, এবং মালিককে আমার সাথে হত্যা করো।' আর আমি তোমাদের(বিদ'আতি) বলছি, নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা তাঁর আউলিয়াদের পক্ষ থেকে প্রতিশোধ নেন, এবং তিনিই হলেন তিনি, যিনি লোকদের বাসিরাত দেন, এবং তিনিই হলেন তিনি, যিনি তোমাদের কলঙ্ক উন্মোচিত করেন, না'আম। আর আমরা তোমাদের ধোঁকার মোকাবেলা করতে অক্ষম হয়েছি, তবে আমরা তোমাদের ছেড়ে দিবোনা, ইন-শা-আল্লাহু তা'আলা।
.
অনুবাদক: রিফাত রাহমান সিয়াম

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...