Wednesday 15 January 2020

যারা রাফিদ্বী শিয়াদেরকে ‘কাফির’ বলে না—তাদের বিধান


·
সৌদি ফতোয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] প্রদত্ত ফতোয়া—
প্রশ্ন: “হে সম্মাননীয়, আল্লাহ আপনার ওপর অনুগ্রহ করুন। রাফিদ্বী শিয়া, যারা সাহাবীদের গালিগালাজ করে, মুমিনদের মা ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) কে ব্যভিচারের অপবাদ দেয়, এবং বলে, ‘কুরআন অসম্পূর্ণ’—তাদেরকে যে ব্যক্তি ‘কাফির’ আখ্যা দেয় না, অথচ সে জানে যে তারা এগুলো সবই করে থাকে, সেই ব্যক্তির বিধান কী?”
উত্তর: “এটি ইসলাম বিনাশী কর্মাবলির মধ্যে অন্যতম একটি কর্ম। যারা আল্লাহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং আল্লাহ যে দোষ থেকে ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) কে মুক্ত ঘোষণা করেছেন, সে দোষে তাঁকে অভিযুক্ত করে, তারা কাফির। কেননা তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে, তাঁরা মুসলিমদের ইজমা‘কে (মতৈক্যকে) অস্বীকার করছে। আর তা ব্যাপারে যে, মুনাফিক্বরা ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) কে যে অপবাদ দিয়েছিল, তা থেকে আল্লাহ তাঁকে মুক্ত ঘোষণা করেছেন। যে ব্যক্তি তাঁকে উক্ত দোষ থেকে মুক্ত মনে করে না, সে কাফির।
কেননা সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে এবং সে মুসলিমদের ইজমা‘কে অস্বীকার করছে। আর যারা বলে, ‘কুরআন অসম্পূর্ণ’, অথবা বলে, ‘এটা সেই কুরআন নয়, যেটা মুহাম্মাদের ﷺ ওপর অবতীর্ণ হয়েছিল’, অথবা বলে, ‘নবুয়ত মূলত আলীর জন্যই বরাদ্দ ছিল, কিন্তু জিবরীল ভুল করে তা মুহাম্মাদের ﷺ ওপর অবতীর্ণ করেছে’, অথবা বলে, ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) হলেন উপাস্য’—তাদের কাফির হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
অনুরূপভাবে যে সাহাবীদেরকে কাফির আখ্যা দেয়, সেও কাফির। কেননা সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ “নিশ্চয় মুমিনরা যখন বৃক্ষতলে তোমার নিকট বাই‘আত গ্রহণ করল, তখন আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন।” [১] তিনি আরও বলেছেন, لَقَدْ تَابَ اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ فِي سَاعَةِ الْعُسْرَةِ “আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন নাবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতিও, যারা (তাদের) সংকটকালেও নাবীর অনুগামী হয়েছিল।” [২]
তিনি আরও বলেছেন, وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُمْ بِإِحْسَانٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ “আর যে সব মুহাজির ও আনসার (ইমান আনায়) প্রথম সারির অগ্রণী, আর যে সব লোক যথাযথভাবে তাদের অনুসরণ করেছে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন, আর তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে।” [৩] নাবী ﷺ বলেছেন, لَا تَسُبُّوْا أَصْحَابِيْ “তোমরা আমার সাহাবীদের গালি দিয়ো না।” [৪]
সুতরাং যে ব্যক্তি সাহাবীদেরকে কাফির আখ্যা দেয়, সে কাফির। কেননা সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং সে মুসলিমদের ইজমা‘কে অস্বীকার করেছে।”
·
পাদটীকা:
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
[১]. সূরাহ ফাতহ: ১৮।
[২]. সূরাহ তাওবাহ: ১১৭।
[৩]. সূরাহ তাওবাহ: ১০০।
[৪]. সাহীহ বুখারী, হা/৩৬৭৩; সাহীহ মুসলিম, হা/২৫৪০।
·
তথ্যসূত্র:
https://m.youtube.com/watch?v=Y9Nmt5IXYmI (অডিয়ো ক্লিপ)।
·
অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...