Wednesday 15 January 2020

বিদ্রোহের একটি শর্ত কুফর আল-বাওয়াহ, কিন্তু কুফর বাওয়াহ কোনগুলো?


·
প্রখ্যাত সৌদি বিদ্বান, ‘আল্লামাহ ‘আব্দুল্লাহ বিন জিবরীন (রাহিমাহুল্লাহ) শীর্ষস্থানীয় বিদ‘আতী সাইয়্যিদ কুতুব ও হাসান আল-বান্নার প্রশংসা করেছেন এবং তাদের পক্ষ নিয়ে আহলুস সুন্নাহর একাধিক ন্যায়নিষ্ঠ ও প্রাজ্ঞ ‘আলিমের নিন্দা করেছেন। সেকারণে স্বাভাবিকভাবেই তিনি ইখওয়ানী ও কুতুবীদের নিকট খুবই প্রিয়ভাজন ব্যক্তি। তাই আমরা আশা করছি, ইখওয়ানী ও কুতুবীরা তাদের নিকট গ্রহণযোগ্য এই শাইখের নিম্নোক্ত ফতোয়াটি সাদরে গ্রহণ করে নেবে।
‘আল্লামাহ ‘আব্দুল্লাহ বিন জিবরীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪৩০ হি./২০০৯ খ্রি.] বলেছেন,
❝এটি সুবিদিত যে, কুফর আল-বাওয়াহ হলো একটি প্রকাশ্য, বাহ্যিক বিষয়। যেমন যখন কেউ ইসলামী শিক্ষা বিলুপ্ত করে দেয়, অথবা আমরা তাকে—উদাহরণস্বরুপ—মাসজিদগুলো ধ্বংস করতে দেখি। কিংবা সে মাসজিদের লোকদের সাথে লড়াই করে, অথবা সে শারী‘আহ কোর্টগুলো বিলুপ্ত করে দেয়। অথবা উদাহরণস্বরূপ, সে দ্বীনি শিক্ষাদান বিলুপ্ত করে দেয়, অথবা আমরা আমরা তাকে কুরআনের কপি পোড়াতে দেখি। কিংবা সে এগুলো পোড়ানোর আদেশ দেয়, এবং সে ভ্রষ্টতাপূর্ণ কিতাবাদি প্রোমোট করে ও সেগুলো (প্রচারে) সাহায্য করে, (যেমন) খ্রিষ্টানদের বইপুস্তক ও এগুলোর সাথে সাদৃশ্যতাপূর্ণ যা কিছু আছে, এবং সে সেগুলো প্রচার করে, আর সেগুলো পড়া বাধ্যতামূলক করে। অথবা আমরা তাকে সেসব জিনিস স্থাপন করতে দেখি, আল্লাহর সাথে সাথে যেগুলোর উপাসনা করা হয়; যেমন মূর্তি ও এ ধরনের কিছু। এসব কিছু প্রকাশ্য ও স্পষ্ট কুফর হিসেবে বিবেচিত হবে।
আর সেসব বিষয়, যেগুলোতে ইজতিহাদ প্রবেশ করতে পারে, সেক্ষেত্রে আমরা গতরাতে এমন একটি প্রকারের ব্যাপারে উল্লেখ করেছি। আর এর ওপরই বেশিরভাগ শাসক রয়েছে, যেটাকে বলা হয় সেক্যুলার আইন দিয়ে বিচারকার্য পরিচালনা করা। যেমন এই আইনগুলো; অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব ব্যাপারে দেখা যায়, তারা এগুলোর মধ্যে কল্যাণ আছে বলে মনে করে। কিন্তু তারা শারী‘আহকে সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করে দেয়নি, এভাবে যে, তারা এর কোনো কিছু থেকে একেবারেই বিচার করে না (অর্থাৎ তারা শারী‘আহ আইন সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করেনি)।
যেহেতু আল্লাহ বলেছেন, “আর যে কেউ আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান দ্বারা বিচারকার্য পরিচালনা করে না, তারা হলো কাফির।” (সূরাহ মায়িদাহ: ৪৪) সুতরাং এ ধরনের ব্যক্তিবর্গ, যাদের নিকটে (এমন) দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, তাদের ওপর আমরা কুফরের হুকুম লাগাই না। তবে আমরা এই ইজতিহাদে তাদের ভুলকারী মনে করি, যেটি শারী‘আহর কিছু পরিবর্তন করাকে যুক্ত করে, যদিও এটা ইজতিহাদ করতে গিয়ে হয়। সুতরাং উদাহরণস্বরূপ, তাদের কর্তৃক উভয় পক্ষের সম্মতিতে ব্যভিচারের বৈধতা দেওয়া, অথবা তাদের কর্তৃক ইসলামী দণ্ডবিধান পরিত্যাগ বা বিলুপ্ত করা, (যেমন) চুরি করার শাস্তি, মিথ্যা অপবাদের শাস্তি, মদপানের শাস্তি, অথবা মদের অনুমোদন দেয়া, এবং মদ বা এ ধরনের জিনিসগুলো বিক্রয়ের ঘোষণা দেওয়া।
কোনো সন্দেহ নেই যে, এটি হলো মহাপাপ। তবে হতে পারে তাদের অজুহাত আছে, উদাহরণস্বরূপ, যেসব ক্ষেত্রে তারা মনে করে যে, তাদেরকে ওজরগ্রস্ত বলে গণ্য করা হবে। উদাহরণস্বরূপ, তারা এই বলে নিজেদের জন্য অজুহাত দেখায় যে, তাদের রাষ্ট্রে অমুসলিম জনগণ রয়েছে, এবং তাদের ওপর কঠোর হওয়াটা তাদের পালিয়ে যাওয়ার কারণ হবে। সুতরাং যাদের (এমন) দৃষ্টিভঙ্গি থাকে, আল্লাহই তাদের হিসাব নিবেন। সর্বোপরি, যদি আমরা (সবক্ষেত্রে) শারী‘আহ দ্বারা বিচারকার্য পরিচালনা করতাম, এবং এর শিক্ষা বাস্তবায়ন করতাম, তাহলে এর মধ্যেই পর্যাপ্ততা ও অধিক কল্যাণ থাকতো।❞
·
তথ্যসূত্র:
·
অনুবাদক: রিফাত রাহমান সিয়াম
সম্পাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...