বিসমিল্লাহ, ওয়ালহা'মদুলিল্লাহ, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ'লা রাসূলিল্লাহ। আম্মা বা'দ।
বর্তমান যুগে অবস্থা এমন হয়েছে আপনি যদি...
২. জামাত-শিবিরের ধর্মের অপব্যক্ষ্যা/হরতাল/ভাংচুরের বিরুদ্ধে বলেন – তাহলে আপনি নাস্তিক/আওয়ামীলীগ।
৩. সুফীবাদীদের পীর পূজা, মাজার পূজা, শিরক-বিদআ’ত, ধর্মীয় গোড়ামি ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বলেন – তাহলে আপনি আহলে হাদীস/ওহাবী/ইয়াহুদী-খ্রীস্টানদের দালাল।
৪. তাবলিগ জামাতের ফাযায়েল আমল নামের ভেজাল কিতাবের বিরুদ্ধে বলেন, তাদের বুজুর্গ আর মুরুব্বীদের ভুয়া মিথ্যা শিরকি কাহিনীর বিরুদ্ধে বলেন তাহলে আপনি জামাত শিবির/ইয়াহুদীদের দালাল।
৫. ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক, কাফের-মুশরেকদের সংকৃতি দিয়ে মুসলমানদের চরিত্র ও ঈমান নষ্টের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলেন তাহলে আপনি –ধর্মান্ধ/গোঁড়া/মৌলবাদী/সাম্প্রদায়িক।
৬. মানব (ইংরেজদের) রচিত আইন, কুফুরী শিরকি সংবিধান, ইসলাম বিরোধী মতবাদ গণতন্ত্র,সমাজতন্ত্র ইত্যাদির বিরুদ্ধে বললে পাকিস্থানি/জংগি/দেশোদ্রোহী।
এই জিনিসগুলো নতুন না। যুগে যুগে আল্লাহ তাআ’লা যখনই কোনো নবী বা রাসুল পাঠান তখন নবী-রাসুলদের দাওয়াতের বিরোধীতাকারীরা বিভিন্ন আজেবাজে ভাষায় গালি দিতো ও তাদেরকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতো। যুগে যুগে নবী-রাসুলদের যেই ভাষায় গালি দেওয়া হয়েছে তার কিছু নমুনা।
১. মাজনুন – পাগল
“তারা বললঃ সেতো ঐ ব্যক্তি, যার প্রতি কোরআন নাযিল হয়েছে, আপনি তো একজন উম্মাদ।
সুরা হিজরঃ ৬।
“কাফেররা যখন কোরআন শুনে, তখন তারা তাদের দৃষ্টি দ্বারা যেন আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিবে এবং তারা বলেঃ সে তো একজন পাগল।
সুরা আল-ক্বলমঃ ৫১।
২. শায়ের – কবি
“এবং (কাফেররা) বলত, আমরা কি এক উম্মাদ কবির কথায় আমাদের উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব।”
সুর সাফফাতঃ ৩৬।
“এছাড়া তারা আরও বলেঃ (কুরআন) অলীক স্বপ্ন; বরং এটা সে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে, নয়তো সে একজন কবি। অতএব সে আমাদের কাছে কোন নিদর্শন নিয়ে আসুক, যেমন নিদর্শন সহ আগমন করেছিলেন পূর্ববর্তীগন।
সুরা আল-আম্বিয়াঃ ৫।
৩. কাজ্জাব – মিথ্যাবাদী
“তারা বিস্ময়বোধ করে যে, তাদেরই কাছে তাদের মধ্যে থেকে একজন সতর্ককারী আগমন করেছেন। আর কাফেররা বলে এ-তো এক চরম মিথ্যাবাদী ও যাদুকর। সে কি বহু উপাস্যের পরিবর্তে এক উপাস্যের উপাসনা সাব্যস্ত করে দিয়েছে। নিশ্চয় এটা এক বিস্ময়কর ব্যাপার।”
সুরা সাদঃ ৪-৫।
“আর যদি তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তবে বল, আমার জন্য আমার কর্ম, আর তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম। তোমাদের দায়-দায়িত্ব নেই আমার কর্মের উপর এবং আমারও দায়-দায়িত্ব নেই তোমরা যা কর সেজন্য।”
৪. সাহির - যদুকর
“মানুষের কাছে কি আশ্চর্য লাগছে যে, আমি ওহী পাঠিয়েছি তাদেরই মধ্য থেকে একজনের কাছে যেন তিনি মানুষকে সতর্ক করেন এবং সুসংবাদ শুনিয়ে দেন ঈমনাদারগণকে যে, তাঁদের জন্য সত্য মর্যাদা রয়েছে তাঁদের পালনকর্তার কাছে। কাফেররা বলতে লাগল, নিঃসন্দেহে এ লোক প্রকাশ্য যাদুকর।”
সুরা ইউনুসঃ ২।
“যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ তেলাওয়াত করা হয়, তখন তারা বলে, তোমাদের বাপ-দাদারা যার এবাদত করত এ লোকটি যে তা থেকে তোমাদেরকে বাধা দিতে চায়। তারা আরও বলে, এটা মনগড়া মিথ্যা বৈ নয়। আর কাফেরদের কাছে যখন সত্য আগমন করে, তখন তারা বলে,এতো এক সুস্পষ্ট যাদু।”
সুরা সাবাঃ ৪৩।
৫. নবী-রাসুলদেরকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হতো।
“ওদের কাছে এমন কোন রসূল আসেননি, যাদের সাথে ওরা ঠাট্টাবিদ্রূপ করতে থাকেনি।”
সুরা আল-হিজরঃ ১১।
"তারা যখন আপনাকে দেখে, তখন আপনাকে কেবল ঠাট্টা-বিদ্রুপের পাত্র হিসেবে দ্যাখ, আর বলেঃ এ-ই কি সে যাকে আল্লাহ ‘রসূল’ করে পাঠিয়েছেন? সে তো আমাদেরকে আমাদের উপাস্যগণের কাছ থেকে সরিয়েই দিত, যদি আমরা তাদেরকে আঁকড়ে ধরে না থাকতাম। তারা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, তখন জানতে পারবে কে অধিক পথভ্রষ্ট।"
সুরা আল-ফুরক্বানঃ ৪১-৪২।
No comments:
Post a Comment