দেওয়ানবাগী
নামঃ মাহবুব এ খোদা।
জন্মস্থান ব্রাক্ষনবাড়ীয়া জেলার আশুগঞ্জ থানাধীনবাহাদুরপুর গ্রামে। নিজ এলাকার তাল শহর কারিমীয়াআলীয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজেল পর্যন্ত পরাশুনা করেছাত্রজীবনের ইতি টানে। ১৯৭১ সালে দেওয়ানবাগীমুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। স্বাধীনতার পর তাঁর ৩ নংসেক্টরের কমান্ডার শফিউল্লাহ সাহেবের সুপারিশেসেনাবাহিনীর ১৫ নং বেঙ্গল রেজিমেন্টে ইমামতিরচাকুরী নেয়। ফরিদপুরের চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতাআবুল ফজল সুলতান আহমদ চন্দ্রপুরীর হাতে বাইয়াতগ্রহন করেন। পড়ে স্বীয় মুর্শিদের কন্যা হামিদা বেগমকেবিয়ে করেন। এ সুবাদে শশুরের কাছ থেকে খিলাফতলাভ করেন। এর কিছুদিন পর নারায়নগঞ্জেরদেওয়ানবাগ নামক স্থানে আস্তানা গঠন করেন এবংনিজেকে “সুফী সম্রাট” হিসেবে পরিচয় দিয়ে শোহরতলাভ করতে থাকেন। এরপর তিনি মতিঝিলের ১৪৭আরামবাগ ঢাকা-১০০০ তে “বাবে রহমত” নামেআরেকটি দরবান স্থাপন করেন। এখান থেকে তাঁরতত্ত্বাবধানে এবং নির্দেশে বাবে রহমত মূখপত্র “আত্মারবাণী” সহ বেশ কয়েকটি মাসিক পত্রিকা ও গ্রন্থ প্রকাশিতহয়।
এক নজরে দেওয়ানবাগীর কিছু আকিদা ও উক্তি সমূহঃ
“আমার অসংখ্য মুরিদান স্বপ্ন ও কাশফের মাধ্যমেআল্লাহর দীদার লাভ করেছে। আমার স্ত্রী হামিদা বেগম ওআমার কন্যা তাহমিনা এ খোদা স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহকেদাড়ী গোফ বিহীন যুবকের ন্যায় দেখতে পায়(নাউযুবিল্লাহ)।”
সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথেঃ ২৩।
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন “শুধু আমি নই, আমারস্ত্রী কন্যা সহ লক্ষ্ লক্ষ্ মুরিদানও আল্লাহকে দেখেছেন(নাউযুবিল্লাহ)।”
সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ।
“দেওয়ানবাগে আল্লাহ ও সমস্ত নবী রাসূল, ফেরেস্তারামিছিল করে এবং আল্লাহ নিজে শ্লোগান দেন(নাউযুবিল্লাহ)।”
সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ, মার্চ ১৯৯৯ ইং।
"দেওয়ানবাগী এবং তার মুরীদদের মাহফিলে স্বয়ংআল্লাহ্, সমস্ত নবী, রাসূল (সা), ফেরেস্তা, দেওয়ানবাগীও তার মুর্শিদচন্দ্রপাড়ার মৃত আবুল ফজলসহ সমস্ত ওলিআওলিয়া, এক বিশাল ময়দানে সমবেত হয়েসর্বসম্মতিক্রমে দেওয়ানবাগীকে মোহাম্মাদী ইসলামেরপ্রচারক নির্বাচিত করা হয়। অতঃপর আল্লাহ সবাইকেনিয়ে এক মিছিল বের করে। মোহাম্মাদী ইসলামের চারটিপতাকা চারজনের যথাক্রমে আল্লাহ, রাসূল (সাঃ),দেওয়ানবাগী এবং তার পীরের হাতে ছিল। আল্লাহ,দেওয়ানবাগী ও তার পীর প্রথম সারিতে ছিলেন। বাকিরাসবাই পিছনের সারিতে। আল্লাহ নিজেই স্লোগানদিয়েছিলেন ''মোহাম্মাদী ইসলামের আলো, ঘরে ঘরেজ্বালো।"
সূত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগী পত্রিকা- ১২/০৩/৯৯।
“আমি এক ভিন্নধর্মের লোককে ওজীফা ও আমল বাতলেদিলাম। ক’দিন পর ঐ বিধর্মী স্বপ্নযোগে মদিনায় গেল।নবিজীর হাতে হাত মিলালো। নিজের সর্বাঙ্গে জিকিরঅনুভব করতে লাগলো। তারপর থেকে ওই বিধর্মীপ্রত্যেক কাজেই অন্তরে আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে থাকে(নাউযুবিল্লাহ)।”
সুত্রঃ মানতের নির্দেশিকাঃ২৩, সূফী ফাউন্ডেশন, ১৪৭আরামবাগ, ঢাকা।
“কোন লোক যখন নফসীর মাকামে গিয়ে পৌঁছে, তখনতাঁর আর কোন ইবাদাত লাগেনা (নাউযুবিল্লাহ)।”
আল্লাহ কোন পথে,পৃঃ ৯০
“জিব্রাইল বলতে আর কেও নন, স্বয়ং আল্লাহ-ই জিব্রাইল(নাউযুবিল্লাহ)।”
সুত্রঃ মাসিক আত্মার বাণী, ৫ম বর্ষ, ১ম সঙ্খ্যাঃ২১
“সূর্যোদয় পর্যন্ত সাহরী খাওয়ার সময়। সুবহে সাদেক অর্থপ্রভাতকাল। হুজুরেরা ঘুমানোর জন্য তারাতারি আযানদিয়ে দেয়। আপনি কিন্তু খাওয়া বন্ধ করবেন না। আযানদিয়েছে নামাজের জন্য। খাবার বন্ধের জন্য আযান দেয়াহয়না।”
সুত্রঃ মাসিক আত্মার বাণী, সংখ্যাঃ নভেম্বরঃ ৯৯, পৃঃ ৯
“মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হায়াতে জিন্দেগী কেপুলসিরাত বলা হয় (নাউযুবিল্লাহ)।”
সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথে, তৃতীয় সংস্করনঃ ৬০
“আল্লাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে আত্মা এক বিচ্ছেদযাতনা ভোগ করতে থাকে। প্রভূর পরিচয় নিজের মাঝেনা পাওয়া অবস্থায় মৃত্যু হলে সে বেঈমান হয়ে কবরেযাবে। তখন তাঁর আত্মা এমন এক অবস্থায় আটকে পড়েযে, পুনরায় আল্লাহর সাথে মিলনের পথ খুঁজে পায়না।আর তা আত্তার জন্য কঠিন যন্ত্রনাদায়ক। আত্মার এরূপচিরস্থায়ী যন্ত্রনাদায়ক অবস্থাকেই জাহান্নাম বা দোযোখবলা হয় (নাউযুবিল্লাহ)।”
আল্লাহ কোন পথেঃ ৪৪
দেওয়ানবাগী নিজেকে ইমাম মাহদী দাবী করেন।অতঃপর দরুদে মাহদী রচনা করে্ন ।
দরুদে মাহদীঃ
“আল্লাহুম্মা ছাল্লী আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিউ ওয়ালাআ’লা ইমাম মাহদী রাহমাতাল্লিল আলামীন ওয়ালিহীওয়াছাল্লীম। ”
ময়লার স্তূপে অর্ধমৃত ও বিবস্ত্র অবস্থায় রাসুল (সাঃ) কেদেখেছি (নাউযুবিল্লাহ)।
দেওয়ানবাগী ১৯৮৯ সালে নাকি একটি ব্যতিক্রমধর্মীস্বপ্ন দেখে ফেলেন। এ স্বপ্ন সম্পর্কে তিনি বলেন, “ আমিদেখি ঢাকা ও ফরিদপুরের মধ্যবর্তী স্থান জুড়ে একবিশাল বাগান ফুলে-ফলে সুশোভিত। ওই বাগানে আমিএকা একা হেটে বেড়াচ্ছি। হঠাত বাগানের এক স্থানেএকটি ময়লার স্তূপ আমার চোখে পড়ে। আমি দেখতে পাইওই ময়লার স্তূপে রাসুল (সাঃ) এর প্রানহীন দেহ মোবারকপড়ে আছে। তাঁর মাথা মোবারক দক্ষিন দিকে আর পামোবারক উত্তর দিকে প্রসারিত। বাম পা মোবারকহাটুতে ভাজ হয়ে খারা অবস্থায় রয়েছে। আমি তাকেউদ্ধার করার জন্য পেরেশান হয়ে গেলাম। আমি এগিয়েগিয়ে তাঁর বাম পায়ের হাটুতে আমার ডান হাত দ্বারাস্পর্শ করলাম। সাথে সাথেই তাঁর দেহ মোবারকে প্রাণফিরে এল। তিনি চোখ মেলে আমার দিকে তাকালেন।মূহুর্তের মধ্যেই রাসূল (সাঃ) সুন্দর পোশাকে সুসজ্জিত হয়েগেলেন। তিনি উঠে বসে হাসি মুখে আমার দিকে তাকিয়েবললেন, হে ধর্ম পূনর্জীবন দানকারী! ইতমধ্যেই আমারধর্ম আরও পাঁচবার পূনর্জীবন লাভ করেছে। একথা বলেরাসূল(সাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে হেটে হেটে আমার সাথে চলেএলেন। এরপর আমার ঘুম ভেঙে গেল। ”
সুত্রঃ দেওয়ানবাগীর স্বরচিত গ্রন্থ “রাসূল স. সত্যিই কিগরীব ছিলেন?” ১১-১২ প্রকাশকালঃ জুন ১৯৯৯।
এত কুকর্মের পরেও বিনা বাধায় তাঁর কাজ সে করেচলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোন রকম বাধারসম্মুখীন না হওয়ায় দিন দিন তাঁর অপশক্তি ক্রমবর্ধমানভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটু খোঁজ নিলে এরকম আরওহাজার হাজার গাজাখুরী মতবাদ শুনতে পারবেন, যাতিনি প্রতিদিন বিনা দ্বিধায় বলে চলেছেন।
No comments:
Post a Comment