আবু দরদা রাদিয়াল্লাহু আ'নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ "আমার প্রিয় বন্ধু (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে এমন তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন, যা আমি যতদিন বেঁচে থাকব, কখনোই ত্যাগ করব না। সেগুলো হচ্ছে, প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা পালন করা, চাশতের নামায পড়া এবং বিতির না পড়ে ঘুমাতে না যাওয়া।"
সহীহ মুসলিমঃ ৭২২, আবু দাউদঃ ১৪৩৩, আহমাদঃ ২৬৯৩৫।
সহীহ মুসলিমঃ ৭২২, আবু দাউদঃ ১৪৩৩, আহমাদঃ ২৬৯৩৫।
***প্রত্যেক মাসে তিনটি করে রোযা রাখার ফযীলতঃ
প্রত্যেক মাসে ৩টা করে রোযা রাখলে সারা বছর নফল রোযা রাখার সমান পাওয়া যায়, সুবহা'নাল্লাহ! কারণ, আল্লাহ যেকোনো ভালো কাজের প্রতিদান অন্তত ১০ থেকে ৭০০ গুণ, বা তাঁর রহমত অনুযায়ী চাইলে আরো অনেক বেশি দান করেন। ৩*১০=৩০, এইভাবে প্রত্যেক মাসে ৩টি রোযা রাখলে সারা বছরই নফল রোযা রাখার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে, ইন শা' আল্লাহ।
প্রত্যেক মাসে ৩টা করে রোযা রাখলে সারা বছর নফল রোযা রাখার সমান পাওয়া যায়, সুবহা'নাল্লাহ! কারণ, আল্লাহ যেকোনো ভালো কাজের প্রতিদান অন্তত ১০ থেকে ৭০০ গুণ, বা তাঁর রহমত অনুযায়ী চাইলে আরো অনেক বেশি দান করেন। ৩*১০=৩০, এইভাবে প্রত্যেক মাসে ৩টি রোযা রাখলে সারা বছরই নফল রোযা রাখার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে, ইন শা' আল্লাহ।
আ'ব্দুল্লাহ ইবনে আ'মর ইবনে আ'স রাদিয়াল্লাহু আ'নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখা, সারা বছর ধরে রোযা রাখার সমান।”
সহীহুল বুখারীঃ ১১৫৯, ১৯৭৫।
সহীহুল বুখারীঃ ১১৫৯, ১৯৭৫।
***কোন দিন এই রোযাগুলো রাখতে হবে?
এই ৩টা রোযা মাসের যেকোনো ৩ দিন রাখা যায়। মাসের শুরুতে, মাঝে বা শেষে, একসাথে বা ভেঙ্গে ভেঙ্গে আলাদা, যেভাবে ইচ্ছা সেইভাবেই রাখা যাবে। কোনো ধরা বাঁধা নিয়ম নেই।
এই ৩টা রোযা মাসের যেকোনো ৩ দিন রাখা যায়। মাসের শুরুতে, মাঝে বা শেষে, একসাথে বা ভেঙ্গে ভেঙ্গে আলাদা, যেভাবে ইচ্ছা সেইভাবেই রাখা যাবে। কোনো ধরা বাঁধা নিয়ম নেই।
মুআযাহ আদাবিয়্যাহ থেকে বর্ণিত। তিনি মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ "আল্লাহর রসুল কি প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, মাসের কোন কোন দিনে রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, মাসের যে কোন দিনে রোযা রাখতে তিনি পরোয়া করতেন না।"
সহীহ মুসলিমঃ ১১৬০, তিরমিযীঃ ৭৬৩, আবু দাউদঃ ৩৪৫৩, ইবনু মাজাহঃ ১৭০৯।
সহীহ মুসলিমঃ ১১৬০, তিরমিযীঃ ৭৬৩, আবু দাউদঃ ৩৪৫৩, ইবনু মাজাহঃ ১৭০৯।
এই হাদীস থেকে প্রমানিত হয়, কেউ চাইলে মাসের যেকোনো ৩দিনই এই রোযা রাখতে পারবেন।
***তবে “আইয়ামে বীযের” দিনগুলোতে রোযা রাখতে পারলে সবচেয়ে উত্তম।
প্রশ্নঃ আইয়ামে বীয কি?
উত্তরঃ চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫, এই দিনগুলোকে "আইয়ামে বীয" বা আলোকিত দিনসমূহ বলা হয়। কারণ এই দিনগুলোতে চাঁদ সবচাইতে বেশি আলোকিত থাকে।
উত্তরঃ চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫, এই দিনগুলোকে "আইয়ামে বীয" বা আলোকিত দিনসমূহ বলা হয়। কারণ এই দিনগুলোতে চাঁদ সবচাইতে বেশি আলোকিত থাকে।

উত্তরঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাসের এই তিনদিন নিয়মিত রোযা রাখতেন। তাই মাসের ৩টা রোযার জন্য এই ৩দিনকে বেছে নিলে ভালো।
আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "প্রত্যেক মাসে (নফল) রোযা পালন করলে (শুক্লপক্ষের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে পালন করো।”
তিরমিযীঃ ৭৬১, নাসায়ীঃ ২৪২৪, শায়খ আলবানীর মতে হাসান সহীহ, তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন।
তিরমিযীঃ ৭৬১, নাসায়ীঃ ২৪২৪, শায়খ আলবানীর মতে হাসান সহীহ, তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন।
ক্বাতাদাহ ইবনে মিলহান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ "রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে শুক্লপক্ষের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোযা রাখার জন্য আদেশ করতেন।"
আবূ দাউদঃ ২৪৪৯, নাসায়ীঃ ২৪৩২।
আবূ দাউদঃ ২৪৪৯, নাসায়ীঃ ২৪৩২।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
"রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাড়ীতে থাকাবস্থায় বা সফরে থাকাবস্থায়, কখনোই আইয়ামে বীযের রোযা ছাড়তেন না।"
নাসায়ী ২৩৪৫, শায়খ আলবানীর মতে হাসান সহীহ, তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন।
"রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাড়ীতে থাকাবস্থায় বা সফরে থাকাবস্থায়, কখনোই আইয়ামে বীযের রোযা ছাড়তেন না।"
নাসায়ী ২৩৪৫, শায়খ আলবানীর মতে হাসান সহীহ, তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন।
***তবে কোনো কারণে এই ৩ দিন রোযা রাখতে না পারলে, মাসের অন্য যেকোনো ৩ দিন রাখলেও হবে, যেমনটা আগের হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে***
***এছাড়া নফল রোযার ক্ষেত্রে, শুধু শুক্রবার বা শুধু শনিবার একদিন রোযা রাখা যায়নাঃ
শুক্রবার কেউ নফল রোযা রাখতে চাইলে বৃহস্পতিবার দিন রেখে এর পরদিন শুক্রবারে অথবা, শুক্রবার রোযা রেখে এর পরদিন শনিবারেও নফল রোযা রাখতে হবে। এর কারণ হলো যাতে করে কেউ মনে না করে যে, যেহেতু শুক্রবার মুসলিমদের জন্য বিশেষ একটা দিন তাই শুধু শুক্রবারে রোযা রাখলে বেশি সওয়াব বা এর আলাদা কোনো মর্যাদা আছে। কিন্তু আসলে শরীয়তে শুক্রবারে একদিন রোযা রাখার আলাদা তেমন কোনো মর্যাদা নাই, অন্যান্য দিনের সমান সওয়াব। আবার, শুধু শনিবারেও একদিন নফল রোযা রাখা যায়না। শুক্রবার দিন রোযা রেখে এর পরদিন শনিবারে রোযা রাখা যাবে। এর কারণ সম্পর্কে ইমাম তিরমিযী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ, শুধুমাত্র শনিবারের দিনকে রোযার জন্য নির্দিষ্ট করা। কেননা ইহুদীদের কাছে শনিবারের দিন বিশেষ মর্যাদার”। (তাই তাদের সাথে বিরোধীতা করার জন্য, বা তাদের বিপরীত করার জন্য, শুধু শনিবার নফল রোযা রাখা যাবেনা)
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "আগের দিন বা পরের দিন রোযা না রেখে তোমাদের কেউ যেন কেবল জুমুআর দিনে সিয়াম পালন না করে।"
বুখারীঃ ১৯৮৫, মুসলিমঃ ১১৪৪, তিরমিযীঃ ৭৪৪।
বুখারীঃ ১৯৮৫, মুসলিমঃ ১১৪৪, তিরমিযীঃ ৭৪৪।
ইমাম আহমাদ ও ইমাম ইসহাক বলেন, “জুমুয়ার আগের বা পরের দিন রোযা না রেখে জুমুয়ার দিনে রোযা রাখা মাকরুহ (নিষিদ্ধ)”।
তিরমিযীঃ সাওম অধ্যায়।
তিরমিযীঃ সাওম অধ্যায়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "ফরয রোযা ব্যতীত শনিবার তোমরা কোন সিয়াম পালন করবেনা। যদি তোমাদের কেউ আঙ্গুরের খোশা বা গাছের ডাল ছাড়া আর কিছুই না পায় তবে যেন সে তাই চিবিয়ে নেয় (অর্থাৎ অবশ্যই নফল রোযা ভেঙ্গে ফেলবে)।"
আবু দাউদঃ ২৪১৩, তিরমিযীঃ ৭৪৪, শায়খ আলবানীর মতে সহীহ, ইরওয়া গালীলঃ ৯৬০।
আবু দাউদঃ ২৪১৩, তিরমিযীঃ ৭৪৪, শায়খ আলবানীর মতে সহীহ, ইরওয়া গালীলঃ ৯৬০।
***বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রঃ
*ফরয বা কাজা রোযা শুক্র বা শনিবারে একদিন রাখা যাবে।
*আশুরা, আরাফাহ, শাওয়াল, ইত্যাদি সুন্নত রোযার ক্ষেত্রে শুক্র বা শনিবারে একদিন রাখা যাবে।
*যে একদিন পর পর রোযা রাখতে অভ্যস্ত, সে তার নির্ধারিত দিন শুক্র বা শনিবারে আসলে, ঐদিন সে রোযা রাখতে পারবে।
*ফরয বা কাজা রোযা শুক্র বা শনিবারে একদিন রাখা যাবে।
*আশুরা, আরাফাহ, শাওয়াল, ইত্যাদি সুন্নত রোযার ক্ষেত্রে শুক্র বা শনিবারে একদিন রাখা যাবে।
*যে একদিন পর পর রোযা রাখতে অভ্যস্ত, সে তার নির্ধারিত দিন শুক্র বা শনিবারে আসলে, ঐদিন সে রোযা রাখতে পারবে।
মূলঃ শায়খ উসাইমিনঃ মাজুম ফাতওয়া ওয়া রাসায়েল, ২০/৫৭।
No comments:
Post a Comment