Friday 5 September 2014

“জামাতে ইসলামী” ও “তাবলিগ জামাত”




“জামাতে ইসলামী” ও “তাবলিগ জামাত” – এই দুইটি দলের মূল সমস্যাটা কোথায়?

মানুষের আমল, মুখের দাবী – এইগুলো দেখে ধোকায় পড়বেন না। কারণ, কারো আকীদা (ধর্মীয় বিশ্বাস) খারাপ হলে সে যতই আমল করুক, তার সমস্ত আমল বর্বাদ হয়ে যাবে। অথবা, কেউ আহলে সুন্নতের “মানহাজ” বা মূলনীতির বিরোধীতা করে অথবা বেদাতীদের মানহাজে চলে তাহলে সে ৭২টা বেদাতী, জাহান্নামী দলের মধ্যে গণ্য হবে। তাই, কোন ব্যক্তি বা দলকে বিচার করতে হলে সবার আগে তাদের “আকীদাহ” ও “মানহাজ” কি সেটা দেখতে হবে। তাদের আকীদাহ ও মানহাজ যদি কুরান, সুন্নাহ ও সাহাবাদের অনুরূপ হয় – তাহলে তারা নাজাতপ্রাপ্ত দলের মধ্যে গণ্য হবে। কিন্তু কুরান, সুন্নাহ ও সাহাবাদের আদর্শের বিপরীত হলে – তারা যতই দেখতে ধার্মিক আর আমল করনেওয়ালা মনে হোক – তারা ভ্রান্ত দলের লোক বলেই গণ্য হবে।

বহুল প্রচলিত দুইটি দল “জামাতে ইসলামী” ও “তাবলিগ জামাত” আর তাদের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে – মাওলানা মওদুদী ও মাওলানা ইলিয়াস সাহবে। তাদের ও তাদের প্রতিষ্ঠা করা দলের মানহাজে কি সমস্যা অত্যন্ত সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেছেন – শায়খ আব্দুর রাক্বীব, আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দিন – আমিন।
__________________________

#নীতি ভুল তো সব ভুলঃ

নীতি হল, ট্রেনের ইঞ্জিনের মত। যেদিকে ইঞ্জিন চলবে পিছনে পিছনে বাকি সব ট্রেন চলতে থাকবে।

উদাহারণ স্বরূপঃ নবী (সাঃ) এর দাওয়াত এর নীতি। তাঁর দাওয়াতের মূল বিষয় ছিলঃ “তাওহীদ।”
জগতের মানুষ আল্লাহকে বিশ্বাস করে যেন শুধু তাঁরই ইবাদত করে, অন্যের পূজা না করে। তাই মক্কার মুশরিকরা আল্লাহকে বিশ্বাস করলেও নবী (সাঃ) তাঁদের মাঝে ১৩ বছর তাওহীদের দাওয়াত দিতে থাকেন।

আল্লাহ সকল নবী প্রেরণের উদ্দেশ্য বর্ণনা করে বলেনঃ
“আমি তোমার পূর্বে যত রাসূল প্রেরণ করেছি, তাদের এ আদেশই দিয়েছি যে, আমি ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই, তাই তোমরা শুধুমাত্র আমারই ইবাদত করো।”
সূরা আম্বিয়াঃ ২৫।

=এবার কিছু চিন্তাবিদ?
তারা নবী রাসূলদের দুনিয়াতে পাঠানোর উদ্দেশ্য (তাওহীদ বাস্তবায়ন, অর্থাৎ মানুষ যাতে এক আল্লাহর ইবাদত করে এবং অন্য কারো পূজা না করে) না বুঝে, এর মূল উদ্দশ্যকে উপেক্ষা করে কিংবা ভুল ব্যখ্যা দাড় করিয়ে নবী (সাঃ) এর দাওয়াতের মুখ্য উদ্দেশ্যের অপব্যখ্যা করে বলেছেঃ

“নবী (সাঃ) এসেছিলেন ইসলামী দেশ গঠন করতে - ইকামতে দ্বীন করতে।”
-  সৈয়দ আবুল আলা মওদুদী, জামাতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা।

তাই সে এবং তার অনুসারীরা সকলে ইকামতে দ্বীন নাম দিয়ে “ইসলামী রাষ্ট্র গঠনকে” নিজের জীবনের উদ্দেশ্য করে নিয়েছেন।

প্রথম কথা হলো - তাদের নীতিটাই হচ্ছে ভুল। “ইকামতে দ্বীনের” যে অপব্যখ্যা মাওলানা মওদুদী দাড় করিয়েছেন – এটা সম্পূর্ণ তার মনগড়া অপব্যখ্যা। অতীত থেকে আজ পর্যন্ত কোন আলেম এইরকম ব্যখ্যা দাড় করান নি।
= অতঃপর কিভাবে সেই রাষ্ট্র গঠন করতে হবে?
এই যুগ তো ভোটের যুগ ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করে তারা, তাই তারাও বললঃ আমরাও নিরুপায় হয়ে এই নিয়মেই ইকামতে দ্বীন করবো, এই ভাবে মিশে গেল তাদের সাথেই, যাদেরকে সরিয়ে তারা ইসলামী দেশ তৈরি করতে চাচ্ছিল!

আর এটা হল, তাদের নীতির দ্বিতীয় ভুল এবং এই ভুলের উপর থেকেই তারা সকলেই নিজেদেরকে হক্কপন্থী দাবী করতে থাকেন বা হক্বপন্থী মনে করেন। অনেক জনগনও তাদের হক্ক ভাবেন, কারণ তারা দাবী করে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে চায় কিন্তু তাদের গোড়াতেই যে গলদ হয়েছে, সেটা এখন কেউ ফিরে দেখতে চায়, না দেখার প্রয়োজন মনে করে!!

= অন্য দিকে আরেক চিন্তাবিদ(!) নবী (সাঃ) এর দাওয়াতের নীতি না বুঝে বা উপেক্ষা করে আরেক নীতি তৈরী করলো – “তাওহীদ” নয়, দাওয়াতের নীতি করতে হবে “ফযীলতের” বর্ণনা দিয়ে। তাতে সাধারণ মানুষ সহজেই আকৃষ্ট হবে এবং অনেক ঝামেলা থেকে বেঁচে যাবে। কারণ, লোকদেরকে প্রথমেই শির্ক থেকে নিষেধ করলে, বিদআত থেকে বাধা দিলে, গুনাহের কাজ থেকে বাধা দিলে তারা রেগে যায় (এর প্রমান হিসেবে দেখুন আমাদের পোস্টগুলোতে, শিরক বেদাতের সমালোচনা করলে মানুষ কি জঘন্য ভাষায় গালি দেয়), দূরে সরে যায় (পেইজ আনলাইল/ব্লক করে রিপোর্ট করে), কাছে আসে না। তাই ফযীলতের দাওয়াতই দেওয়াই নিরাপদ – মানুষ ফযীলতের লোভে দলে যোগ দিবে (সেটাই হচ্ছে বর্তমানে, দাওয়াত ও তাবলীগ নাম দিয়ে। শিরকি, বেদাতী আকীদার লোকদেরকে ফযীলতের ধোকা দিয়ে দাওয়াত দেওয়া হয় – ফযীলত দেখে যাকে দাওয়াত দেওয়া হয় সেও খুশি, শির্ক বিদাতের সংশোধন না করেই দাওয়াত কবুল করে মানুষ তাই মুবাল্লিগও খুশী তার দলের লোক বাড়ছে)।

-  তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস সাহেব ও তাদের লিখক মাওলানা জাকারিয়া সাহেব।

এটা ছিল আরো এক নীতিগত ভুল, নবী (সাঃ) তাওহীদের দাওয়াত ও শির্ক থেকে সাবধান করার সময় এই সহজ পদ্ধতি নিতে পারতেন কিন্তু নেন নি। ১৩ বছর ধরে দাওয়াতের কারণে খুবই সামান্য লোকই মেনে ছিলেন কিন্তু তাদের ফযীলতের লোভ দেখান নি, শির্ক থাকা সত্ত্বেও দল ভারী করার জন্য তাদের সাথে আপোস করেন নি বরং ঘোর শত্রু হয়ে শেষে নিজ জন্মভূমিও ছাড়তে হয়, তিনি কিন্তু শত্রুতার ভয় করেন নি।

= এবার এই প্রকার লোকেরা তাদের তৈরিকৃত এই নীতির সফলতা (দলে দলে লোক দিয়ে দল ভারী করা, যারা শিরকে বেদাতে লিপ্ত থাকবে কিন্তু মিথ্যা ফযীলতের ধোকায় পড়ে আসলে তারা বিভ্রান্ত!) দেখে মনে করছে আমরাই হক্বপন্থী কারণ আমাদের দাওয়াতে সকলেই সাড়া দিচ্ছে, সারা বিশ্বে ছড়াচ্ছে। তাই গোড়ার দিকে দেখার আর সুযোগ নেই, বা সেটা নিয়ে চিন্তা করার আর প্রয়োজনও তারা মনে করেনা। ঘায়ের উপর প্রলেপ লাগিয়ে এই প্রকার লোকেরা অনেক মানুষকে হয়তো চকচকে করে দিচ্ছে , কিন্তু ভিতরের পুঁজ তো থেকেই যাচ্ছে!! আর এসব হচ্ছে সেই নীতি ভুলের কারণে..আছে কেউ যে চিন্তা করবে? না গড্ডালিকায় গা ভাসিয়ে চলবে সবাই!
এখানে চকচকে বলতে অর্থ হচ্ছে –মিথ্যা ফযীলতের আশায় শিরক বিদাত মিশ্রিত অনেক আমল।
আর ভেতরের পূজ অর্থ – অন্তরের ভেতর শিরক বেদাতের সংশোধন না হওয়া, ফযীলত খুজতে খুজতে অজ্ঞতা ও কুসংস্কার নিয়েই পড়ে থাকা, কুরান হাদীস বাদ দিয়ে ভেজাল আমল নিয়ে পড়ে থাকা।


Collcted

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...