একটা মেয়ের ঘটনা। মুসলিম ঘরে জন্ম। এক খ্রিষ্টান ছেলেকে পছন্দ করে বিয়ে করেছে। প্রথমে আমার মনে হয়েছে যে, মেয়েটি যদি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ না করে থাকে তাহলে তো এ বিয়ে যায়েজই হয়নি। কিন্তু পরে ধীরে ধীরে বুঝলাম যে, সে খ্রিষ্টান হয়ে গেছে। এই মেয়েটি হয়তো বুঝতেই পারেনি যে সে তার দুনিয়া ও আখিরাত চিরতরে ধ্বংস করে ফেলেছে। রিদ্দার মত এত বড় গুনাহ করার পরও তার ভিতরে সামান্যতম অনুভূতি নেই। এর আসল কারণ হচ্ছে ছোট বেলা থেকে সে তার পরিবারে দ্বীনি কোনো শিক্ষাই পায়নি। যদি ইসলামের আকিদা সম্পর্কে কিছু পরিমাণও জানত তাহলে হয়তো এত বড় ভূল সে করত না। এজন্য তার বাবা-মাও সমান ভাবে অপরাধী।
আজ আমাদের সমাজে বেশীর ভাগ পরিবারই মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও তাদের ছেলে-মেয়েদের তেমন কোন দ্বীনি শিক্ষা দেয় না। তারা নিজেরাও কিছু জানে না। জানার চেষ্টাও কখনো করে না। নিজেদের চোখে মুখে শুধু দুনিয়া আর দুনিয়া। আখেরাত বলে চিন্তা চেতনায় কিছুই নেই। বাচ্চাদের ব্যাপারে একই অবস্থা। এরা বাচ্চাদের বড় বড় স্কুলে পড়ানোতে ব্যস্ত। এর পিছনে ব্যাপক টাকা-পয়সা খরচ করতেও পিছিয়ে নেই। কেউ কেউ বাড়িতে একজন হুজুর রেখে কোনো রকমে আলিফ-বা-তা-সা পড়িয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ মনে করে। আর কেউ যদি তার বাচ্চাকে মাদ্রাসায় পড়িয়ে দ্বীনি শিক্ষা দিতে চায় তাহলে বাকিরা ভ্রু কুচকে তাকায়। মনে করে, মাদ্রাসায় যারা পড়ে তারা তো খ্যাঁত। হুজুর হয়ে এরা ভবিষ্যতে করবেটা কী? আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যেসব বাচ্চারা বড় বড় স্কুলে পড়ে তাদের সবাই কি ভাল রেজাল্ট করে, সবাই কি ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হয়? এদের মধ্যে কয়জনে ভালো রোজগার করে? আর বাকিদের কী অবস্থা? তাছাড়া যারা ভালো আয়-রোজগার করে তাদের নৈতিকতারই বা কী অবস্থা? একটু মনোযোগ দিয়ে তাকালেই দেখা যায় দ্বীনি শিক্ষা না থাকার কারণে সমাজের বেশীর ভাগ ছেলেপেলেই নস্ট হয়ে যাচ্ছে। কার্টুন আর হিন্দি সিনেমা দেখে একেবারে বেহাল অবস্থা। এদেরইবা ভবিষ্যৎ কী?
আমি এটা বলতে চাচ্ছি না যে, সব বাচ্চাদের মাদ্রাসায়ই পড়াতে হবে। কিন্তু সাধারণ পড়ার পাশা-পাশি যদি বাবা-মা তাদের বাচ্চাদের ইসলামী আকিদা শিক্ষা দেয়, নবীদের জীবনী, সাহাবীদের জীবনী শিক্ষা দেয় তাহলে হয়তো এই বাচ্চারা কুফর-শির্ক এবং বড় বড় গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে। খুব সহজে বড় কোন ভুল করবে না। আমাদের নিজেদেরও উচিৎ যথা সম্ভব দ্বীন শিক্ষা গ্রহণ করা এবং ঘরে দ্বীনি পরিবেশ তৈরী করা। ঘরোয়া ভাবে আল্লাহ্র প্রতিটি হুকুম পালনে নিজেরা সচেষ্ট থাকা এবং বাচ্চাদের এসব ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া। নাহলে পরিনতি আমাদেরই ভোগ করতে হবে। আল্লাহ্ আমাদের এবং আমাদের বাচ্চাদের হিফাজত করুন। আমিন।
written by
Sister
Umm Hamza
Sister
Umm Hamza
No comments:
Post a Comment