Thursday 17 July 2014

রিজভী-বেরেলবী ফেরকার

৭২টা জাহান্নামী তরীকার একটা হলো রিজভী-বেরেলবী ফেরকাঃ
 ফেরকার নামঃ রিজভী-বেরেলবী।
এই তরীকার অন্তর্ভুক্ত পীরদের নামঃ আটরশি, ফুলতলী, মাইজভান্ডারী, দেওয়ানবাগী, কুতুববাগী, রাজারবাগ, চন্দ্রপূরী, পাকিস্থানের তাহের-উল-কাদরী।

আর শাহ জালাল, শাহ পরাণ, বায়েজীদ বোস্তামী, খান জাহান আলী, মিরপুর, মতিঝিল যতো মাজার আছে সমস্ত মাযারে এরা শিরকের ধান্দা বসিয়ে রেখেছে। অজ্ঞ মানুষদেরকে অলি আওলিয়ার নাম করে মুশরেক বানাচ্ছে।

ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্থানে সরাসরি কবর মাযার পূজারী হিসেবে বেশি পরিচিত যেই ফেরকাটি তার নাম হলো “রিজভী” বা অনেক এলাকায় তারা নিজেদের “বেরেলবী” বলেও পরিচয় দেয়। তারা সাধারণত নিজদের “সুন্নী” অথবা “আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআ’ত” বলেও দাবী করে এবং এটা নিয়ে তারা বেশ গর্ববোধ করে থাকে যদিও আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআ’তের আকীদা, অর্থাৎ কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী সমস্ত সাহাবীদের নির্ভেজাল আকীদাহর সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা নিজেদের “সুন্নী” বলে পরিচয় দেয় আর যারা তাদের প্রচারিত কবর মাযার পূজা ও অলি আওলিয়া বা পীর পূজাসহ ধর্মের নামে বিভিন্ন শিরক বেদাতের বিরোধীতা করে তাদেরকে তারা “ওহাবী” বলে গালি দেয়। যদিও তারা গালি হিসেবেই তাওহীদবাদী মুসলিমদেরকে “ওহাবী” বলে ডাকে, কিন্তু মূলত ওহাবী নামটা ভালো। “আল-ওহহাব” আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লার একটা নাম যার অর্থ হচ্ছে পরম দাতা/অত্যন্ত দয়ালু, এই নাম আপনারা সুরা আলে ইমরানের ৮ নাম্বার আয়াতে পাবেন। তাই কাউকে “ওহাবী” ডাকলে আসলে তাকে “আল্লাহওয়ালা” বলে উলটা প্রশংসাই করা হয়, ফা লিল্লহিল হা’মদ!!

রিজভী বেরেলবীদের ইমাম বা নেতার নাম হচ্ছে আহমাদ রেজা খান ব্রেলভী, যিনি ইংরেজদের সময়ে ভারতের “ব্রেলভী” শহরের লোক ছিলেন। এই ব্রেলভী শহরের নাম থেকেই এসেছে বেরেলবি ফেরকার নাম। মূলত ব্রিটিশরা আহমাদ রেজা খান ব্রেলভী ও গোলাম আহমাদ কাদিয়ানি – এই দুইজন শয়তানকে দাঁড় করায় তাওহীদবাদী মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভ্রান্ত সৃষ্টি করে মুসলমানদেরকে প্রতিহত করার জন্য। এই দুইজনই ফতোয়া দিয়েছিলো, ইংরেজদের বিপক্ষে জিহাদ করা হারাম...এতেই বোঝা যায় কেনো ইংরেজরা তখন তাদেরকে বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছিলো, তাদের ধর্ম মুসলমানদের মধ্যে প্রচার করে ইসলামকে ধ্বংস করার জন্য।

এদের শিরকি কুফুরী আকীদাহ বলে শেষ করা যাবেনা, আর এরা এতো মারাত্মক রকমের গোমড়াহ যে এরা প্রকাশ্যে দাবী করে এই সমস্ত শিরকি কুফুরী এবং এই আকীদাগুলোই নাকি ইসলাম??

এদের মধ্যে সবচাইতে বেশি যে শিরকগুলো দেখা যায়...
১. গায়রুল্লাহ বা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে দুয়া করা।
২. নবী-রাসুল এবং অলি আওলিয়াদেরকে আলেমুল গায়েব মনে করা।
৩. নবী রাসুল বা অলিরা যাকে ইচ্ছা তাকে জান্নাত বা জাহান্নামে দিতে পারে মনে করা।
৪. কবর, মাযার বা পীর বুজুর্গকে সিজদা করা।
৫. নবী রাসুল ও অলি আওলিয়ারা মানুষকে রিযিক, টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, সন্তান বা যা খুশি তাই দিতে পারে মনে করা।
৬. নবী রাসুল বা অলি আওলিয়ারা যখন খুশি তখন দুনিয়াতে আসতে পারে, যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। এমনকি চাইলে বিয়ে করে ছেলে মেয়েও হতে পারে!
৭. নবী রাসুলদের বা আওলিয়াদের কবরকে মাযার বানিয়ে সেখানে প্রতি বছর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ওরশ করতে হবে।
৮. মাযারে গিয়ে কিছু চাইলে পাওয়া যাবে।
৯. মাযারক পাকা করে, ফুল চাদড় চড়িয়ে তাকে তাওয়াফ করা, মাযারে সামনে রেখে নামায পড়া।
১০. গাওস, কুতুব, আবদাল ইত্যাদি নামে অলি আওলিয়ারা পৃথিবী নিয়ন্ত্রন করেন।
১১. অলিরা কবরে থেকে মানুষকে উদ্ধার করতে পারে।
১২. এরা নবী রাসুল ও অলি আওলিয়াদেরকে আল্লাহর অনেক নাম ও ক্ষমতার সমান মনে করে।
উপরে উল্লেখিত কাজগুলো সরাসরি আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লার রুবুবিয়্যাতের সাথে প্রকাশ্য বড় শিরক যার কারণে একজন মানুষ কাফের ও মুশরেক হয়ে মুর্তাদ হয়ে যায়।

তবে সমস্ত অলি আওলিয়াদের মাঝে আব্দুল কাদির জিলানী (রহঃ) কে তারা সবচেয়ে বেশী ক্ষমতার মালিক মনে করে। জিলানী সম্পর্কে বেরেলবীদের আকীদা ঠিক একেবারে হিন্দুদের তাদের দেব-দেবীদের সম্পর্কে আকীদার মতোই জঘন্য ও শিরকি আকীদাহ। আব্দুল কাদের জিলানীকে তারা গাউসুল আযম মনে করে, এবং এতো বাড়াবাড়ি রকমের কথাবার্তা বলে যে, শুনলে কেউ সন্দেহে পড়ে যাবে আসলে তাদের মাবূদ কে, আল্লাহ নাকি জিলানী?

এরা আব্দুল কাদের জিলানীর নামে অসংখ্য বানোয়াট কিচ্ছা কাহিনী প্রচার করে যা সরাসরি শিরক ও স্পষ্ট কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী। এইসমস্ত শিরক বেদাতের সাথে জিলানীর কোনো সম্পর্ক নেই।

গাউসুল আজম- গাউস শব্দের অর্থ ত্রাণকর্তা, রক্ষাকর্তা, পরিত্রাণদানকারী, উদ্ধার কারী ইত্যাদি। এবং আজম শব্দের অর্থ মহান, বড় বা সর্বশ্রেষ্ঠ। গাউসুল আজম শব্দের অর্থ হল সর্ব শ্রেষ্ঠ ত্রাণকর্তা। এ কথাটি আল্লাহ ছাড়া আর কারো ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে কি?

মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ কি সর্বশ্রেষ্ঠ ত্রাণকর্তা হতে পারেন? কোন মানুষকে এ নামে ডাকার অর্থ হল তাকে আল্লাহর গুণাবলীতে গুণান্বিত করা। কোন মানুষ কি নিজেকে গাউসুল আজম দাবি করেছেন? তাহলে কেন তাকে আমরা গাউসুল আজম ডাকব? কাউকে এ নামে ডাকলে তা হবে শিরকের নামান্তর।

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...