Thursday 17 July 2014

চরমোনাই পীরের আসল চেহারা

চরমোনাই পীরের আসল চেহারা...



সংবিধিবদ্ধ সতর্ককীকরণঃ নিচের গল্পটাতে বেশ কয়েকটা শিরক ও কুফুরী কথা আছে। চরমোনাই পীরের ভ্রান্ত শিরকি কুফুরী কথা প্রকাশ করার জন্য তার কিতাব থেকে অসংখ্য বানোয়াট শিরকি কুফুরী কাহিনী থেকে এই গল্পটা তুলে দেওয়া হলো। তার আগে গল্পের মাঝে শিরকি কুফুরী কথাগুলোর ব্যপারে সতর্ক করে দেওয়া হলো।

যেই কথাগুলো শিরক/কুফুরী...

১. "কুম বি ইজনি" - আমার হুকুমে দাঁড়াও (জীবিত হও)।
জীবন মৃত্যু আল্লাহ দেন, কোনো মানুষ কাউকে জীবিত বা মৃত করতে পারেনা। এইজন্য আল্লাহর ইচ্ছায় ঈসা (আঃ) এর মুজিজা স্বরূপ যখন মৃত মানুষ জিন্দা হত তখন ঈসা (আঃ) বলতেন "বি ইজনিল্লাহ" - আল্লাহর হুকুমে। কিন্তু এই ভন্ডপীর দাবী করছে তার হুজুরের হুকুমে নাকি মৃত মানুষ জীবিত হয় - ডাইরেক্ট শিরকি কথা, নাউযুবিল্লাহ।

২. “আল্লাহর অলি আমাকে জিন্দা করেছেন”। (নাউজুবিল্লাহ) - শিরকি কথা।

৩. "মাবুদ! মাবুদের কাছে আবার কি জিজ্ঞেস করিব। তাহার আন্দাজ নাই (নাউজুবিল্লাহ)।
ডাইরেক্ট আল্লাহকে অপমান করা হয়েছে বেআন্তাজ বলে (নাউজুবিল্লাহ)।

৪. "আমি আল্লাহ পাকের দরবার থেকে জোরপূর্বক রুহ নিয়ে আসিয়াছি”!!! (নাউজুবিল্লাহ)
কতবড় মূর্খ এই পীর আল্লাহর কাছ থেকে জোর করে নাকি রুহ নিয়ে আসছে। আল্লাহর থেকে বড় ক্ষমতাবান দাবী করছে এই পীরে (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক)।

আরো কিছু বাতিল কথাবার্তা - হুজুরে কেবলা - আমাদের কেবলা হচ্ছে কাবা। বেদাতীদের হুজুরেরাও কেবলা।
সূর্যের কাহিনীটাতো হিন্দুদের রামায়নের গল্পের মতোই।

চরমোনাই পীরের লেখা "ভেদে মারেফত" বইয়ের ১৫ পৃষ্ঠায় মৃতকে জীবিত করার যে গল্পটা আছে তা নিম্নরূপঃ

শামসুদ্দীন তাব্রীজী নামের এক লোক ছিলেন। লোকেরা তাকে পীর সাহেব কেবলা বলত।
একদা হযরত পীর সাহেব কিবলা রোম শহরের দিকে রওয়ানা হইলেন। পথিমধ্যে ঝুপড়ির ভেতর এক অন্ধ বৃদ্ধকে লাশ সামনে নিয়া কাদঁতে দেখিলেন। হুজুর বৃদ্ধকে প্রশ্ন করিলে বৃদ্ধ উত্তর করিলেন, “হুজুর এই পৃথিবীতে আমার খোঁজ খবর করিবার আর কেউ নাই, একটি পুত্র ছিল সে আমার যথেষ্ট খেদমত করিত, তাহার ইন্তেকালের পর সে একটি নাতি রাখিয়া যায়। সেই ১২ বছরের নাতি একটা গাভী পালিয়া আমাকে দুগ্ধ খাওয়াইত এবং আমার খেদমত করিত, তার লাশ আমার সম্মুখে দেখিতেছেন। এখন উপায় না দেখিয়া কাঁদিতেছি।” হুজুর বলিলেন এ ঘটনা কি সত্য? বৃদ্ধ উত্তর করিলেন, এতে কোন সন্দেহ নেই।

তখন হুজুর বলিলেন"(কুম বি ইজনি)হে ছেলে আমার হুকুমে দাঁড়াও।" তো ছেলে উঠে দাঁড়াল এবং দাদুকে জড়াইয়া ধরিল, বৃদ্ধ তাকে জিজ্ঞেস করিল “তুমি কিরূপে জিন্দা হইলে।” ছেলে জবাব দিল, “আল্লাহর অলি আমাকে জিন্দা করেছেন”। (নাউজুবিল্লাহ)

তারপর ঐ অঞ্চলের বাদশাহ হুজুরের এই খবর পেয়ে উনাকে তলব করিলেন। উনাকে পরে জিজ্ঞেস করিলেন"আপনি কি বলিয়া ছেলেটিকে জিন্দা করিয়াছেন।" হুজুর বলিলেন আমি বলেছি “হে ছেলে আমার আদেশে জিন্দা হইয়া যাও।” অতঃপর বাদশাহ বলিলেন, “যদি আপনি বলিতেন আল্লাহর আদেশে।”
হুজুর বলিলেন "মাবুদ! মাবুদের কাছে আবার কি জিজ্ঞেস করিব। তাহার আন্দাজ নাই (নাউজুবিল্লাহ)।
এই বৃদ্ধের একটি মাত্র পুত্র ছিল তাহাও নিয়াছে, বাকী ছিল এই নাতিটি যে গাভী পালন করিয়া কোনরুপ জিন্দেগী গোজরান করিত, তাহাকেও নিয়া গেল।

তাই আমি আল্লাহ পাকের দরবার থেকে জোরপূর্বক রুহ নিয়ে আসিয়াছি”!!! (নাউজুবিল্লাহ)

এরপর বাদশাহ বলিলেন আপনি শরীয়াত মানেন কিনা? হুজুর বলিলেন “নিশ্চয়ই! শরীয়াত না মানিলে রাসূল (সাঃ) এর শাফায়াত পাইব না।” বাদশাহ বলিলেন, “আপনি শির্ক করিয়াছেন, সেই অপরাধে আপনার শরীরের সমস্ত চামড়া তুলে নেয়া হবে।”
এই কথা শুনিয়া আল্লাহর কুতুব নিজের হাতের অঙ্গুলি দ্বারা নিজের পায়েরতলা থেকে আরম্ভ করে পুরো শরীরের চামড়া ছাড়িয়ে নিলেন, তা বাদশাহর কাছে ফেলিয়া জঙ্গলে চলিয়া গেলেন। পরদিন ভোরবেলা যখন সূর্য উঠিল তার চর্মহীন গায়ে তাপ লাগিল তাই তিনি সূর্যকে লক্ষ করিয়া বলিলেন “হে সূর্য, আমি শরীয়াত মানিয়াছি, আমাকে কষ্ট দিওনা।” তখন ওই দেশের জন্য সূর্য অন্ধকার হইয়া গেল। দেশের মধ্যে শোরগোল পড়িয়া গেল। এই অবস্থা দেখিয়া বাদশাহ হুজুরকে খুঁজিতে লাগিলেন। জঙ্গলে গিয়া হুজুরের কাছে বলিলেনঃ শরীয়াত জারি করিতে গিয়া আমরা কি অন্যায় করিলাম, যাহার জন্য আমাদের উপর এমন মুসিবত আনিয়া দিলেন। তখন হুজুর সূর্য কে লক্ষ করিয়া বলিলেনঃ আমি তোমাকে বলিয়াছি আমাকে কষ্ট দিওনা, কিন্তু দেশবাসীকে কষ্ট দাও কেন? সূর্যকে বশ করা কি কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব? ইহা বলা মাত্র সূর্য্য আলোকিত হইয়া গেল। আল্লাহ্‌ পাক তাহার ওলীর শরীর ভাল করিয়া দিলেন।"

এভাবেই এসব ধর্মব্যবসায়ী মানুষকে গোমরাহ করছে।
আল্লাহ্‌ আমাদের এই সকল ভণ্ড পীরদের থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...