Sunday 2 November 2014

রিজিক এবং বিবাহ কি লাওহে মাহফুজে লিখিত আছে?


উত্তরঃ আল্লাহ তাআ’লা যেদিন কলম সৃষ্টি করেছেন, সেদিন থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যত মাখলুকাত সৃষ্টি হবে, সবই লাওহে মাহফূজে লিপিবদ্ধ আছে। আল্লাহ তাআ’লা কলম সৃষ্টি করে বললেন, লিখ। কলম বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমি কি লিখব? আল্লাহ তাআ’লা বললেন, কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবে সব লিখে ফেল। সে সময় কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু পৃথিবীর বুকে সংঘটিত হবে, কলম সব কিছুই লিখে ফেলল। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, ভ্রুন মাতৃগর্ভে চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আল্লাহ তাআ’লা একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন। ফেরেশতা তার মধ্যে রূহ ফুঁকে দেন এবং লিখে দেন তার রিজিক, বয়স এবং তার কাজ অর্থাৎ সৌভাগ্যবান হবে না দুর্ভাগা হবে। রিজিক লিখা আছে এবং কিভাবে অর্জন করবে, তাও লিখা আছে। রিজিক অন্বেষণের সাথ সাথে রিজিক অন্বেষণের উপকরণও লিপিবদ্ধ আছে। আল্লাহ বলেনঃ


)هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمْ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِنْ رِزْقِهِ وَإِلَيْهِ النُّشُورُ(

“তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে সুগম করেছেন, অতএব তোমরা তাতে বিচরণ কর এবং তার দেয়া রিজিক আহার কর। তাঁরই কাছে পুনরুজ্জীবন হবে।” (সূরা মুলকঃ ১৫) রিজিক পাওয়ার এবং তা বৃদ্ধি হওয়ার অন্যতম মাধ্যম হল, পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার করা এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ

)مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ فِي رِزْقِهِ أَوْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ(

“যে ব্যক্তি চায় যে, তার রিজিক বাড়িয়ে দেয়া হোক এবং বয়স বাড়িয়ে দেয়া হোক, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।” রিজিক বৃদ্ধির আরো মাধ্যম হল তাকওয়া বা আল্লাহর ভয়। আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ

)وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ(

“আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ বের করে দিবেন এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দান করবেন।” (সূরা তালাকঃ ২-৩) এমন বলা যাবে না যে, রিজিক যেহেতু নির্ধারিত আছে, সুতরাং আমি এর উপকরণ অনুসন্ধান করব না। এটা বোকামীর পরিচয়। বুদ্ধিমানের পরিচয় হল রিজিক এর জন্য এবং দ্বীন্তদুনিয়ার কল্যাণ অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালানো। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ

)الْكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ وَعَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ وَالْعَاجِزُ مَنْ أَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهَا وَتَمَنَّى عَلَى اللَّهِ(

“বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি, যে নিজের হিসাব নিল এবং পরকালের জন্য আমল করল। অক্ষম ও নির্বোধ সেই ব্যক্তি, যে নিজের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করল এবং আল্লাহর উপর ভরসা করে বসে থাকল।” রিজিক যেভাবে লিপিবদ্ধ আছে, বিবাহ করাও নির্ধারিত রয়েছে। এই পৃথিবীতে কে কার স্বামী বা স্ত্রী হবে, তাও নির্দিষ্ট রয়েছে। আসমানজমিনের কোন কিছুই আল্লাহর কাছে গোপন নয়।

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...