Sunday 21 September 2014

নিয়ত কিভাবে করতে হবে?





নিয়ত কিভাবে করতে হবে?

নিয়ত অর্থ হচ্ছে কোন কাজ করতে ইচ্ছা করাবা সংকল্প করা

নিয়ত করতে হবে অন্তরে, মুখে উচ্চারণ করে দোয়া পড়েনা। এর জন্য কোনো দুয়া পড়তে হবেনা বা মুখে কোনো কিছু বলতে হবেনা।

নামায পড়ার জন্য  আপনি কোন ওয়াক্তের কত রাকাত কি নামায (ফরয/সুন্নত/নফল) পড়ছেন - অন্তরে শুধুমাত্র এই ধারণা বা ইচ্ছা থাকলেই নিয়ত করা হয়ে যাবে।
প্রত্যেক কাজের শুরুতে এইরকম অন্তরে নিয়ত করে নেওয়া “ফরয”।

যে কোনো আমলের পূর্বে নিয়ত না করলে, সেটা কবুল করা হয়না। কিন্তু মুখে নাওয়াইতু দোয়া পড়ে উচ্চারণ করে যে নিয়ত পড়া হয় সেটা হচ্ছে বেদাত – কারণ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এইভাবে দুয়া করতেন না। মনে রাখবেন, আমলের পূর্বে অন্তরে নিয়ত “করা” ফরয, কিন্তু মুখে উচ্চারণ করে নাওয়াইতু দুয়া “পড়া” নিয়ত করা বেদাত।

সর্বশেষঃ নিয়ত করা ফরয, নিয়ত পড়া বেদাত।

বুঝাতে না পারলে ক্ষমাপ্রার্থী।

নামায ও রোযার জন্য নিয়ত কিভাবে করতে হবে?

প্রত্যেক কাজের আগে নিয়ত করা ফরয। নিয়ত অর্থ হচ্ছে ইচ্ছা করা বা সংকল্প করা। নিয়ত ছাড়া কোনো ইবাদত আল্লাহ কবুল করেন না।

ধরুন কেউ একজনকে টাকা দান করলো – কিন্তু সে এর টাকা দেওয়ার আগে সে আল্লাহর কাছে কোনো সওয়াব বা প্রতিদানের আশা করলোনা তার মানে হলো সে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যনিয়ত” (ইচ্ছা) করে নাই। তাই আল্লাহ তাআলা তাকে কোনো সওয়াব দেবেন না। কিন্তু সে যদি টাকা পয়সা দান করা বা যেকোনো একটা নেক আমলের আগে শুধুমাত্র এক আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিয়ত করেতাহলেই কেবলমাত্র সে এর বিনিময়ে প্রতিদান পাবে।

নামাযের নিয়ত কিভাবে করতে হবে?
আপনি যখন ওযু করছেন তখন আপনার ইচ্ছা থাকে নামায পড়া। এইযে আপনি ইচ্ছা করলেন অথবা মনে মনে চিন্তা করলে নামায পড়ার জন্য এটাই হচ্ছে আপনার নিয়ত। 
আর যখন জায়নামাযে দাড়াবেন নামায পড়ার জন্যতখন শুধু আপনি মনে মনে ঠিক করে নেবেন – এটাকি সুন্নত নামায না ফরয নামায?যদি কোনো সুন্নত নামায পড়েন তাহলে – মনে মনে ঠিক করে নেবেন এটা সুন্নত নামায। এর পরে আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিয়ে হাত বাঁধবেন। আপনি এভাবেই নামায শুরু করবেন। এর পরে যদি ফরয নামায পড়তে চান তাহলে তার আগে মনে মনে ঠিক করে নেবেন – এটা আমার ফরয নামায।

আর বাগদাদী কায়দায় দেওয়া নাওয়াইতুয়ান উসা লিল্লাহি তাআলা...” – এইরকম দুয়া কুরআন হাদীসের কোথাও নাইরাসুলুল্লাহ (সাঃ) এইভাবে এই দুয়া পড়ে নিয়ত করতেন না। এটা আমাদের দেশীয় মাওলানা সাহেবরা বানিয়ে নিয়েছেনযা একটা বিদআত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাদেরকে তাঁর মতো নামায পড়তে আদেশ করেছেন (বুখারী)হুজুর মাওলানা সাহেবের বানানো তরীকায় নামায পড়তে বলেন নাই।

রোযার নিয়ত কিভাবে করতে হবে?
রমযান মাসে রোযা থাকা ফরয। রাতের বেলা আপনার যদি নিয়ত থাকে আগামী কাল আপনি রোযা থাকবেনঅথবা সাহরীর সময় উঠে খাওয়া দাওয়া করেন এবং মনে মনে চিন্তা করেন আগামী কাল রোযা থাকারতাহলেই আপনার নিয়ত করা হয়ে যাবে।

সাহরী ও ইফতারির ক্যালেন্ডার বা বিভিন্ন বই-পুস্তকে যে দুয়া নাওয়াইতুয়ান আসামু গাদামান...এইরকম দুয়া কুরআন হাদীসের কোথাও নাই,রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এইভাবে এই দুয়া পড়ে নিয়ত করতেন না। এটা আমাদের দেশীয় মাওলানা সাহেবরা বানিয়ে নিয়েছে যা একটা বিদআত। আর বিদআত মানেই হলো পরিত্যাজ্য।

আর রমযানের বাইরেআপনি যখন অন্য নফল,সুন্নত অথবা কাযা রোযা রাখবেন তখন আপনি রাতের বেলা বা ঘুম থেকে উঠে সাহরী খাওয়ার পরে মনে মনে ঠিক করে নেবেন – আমি আগামী কাল অমুক রোযা (বৃহস্পতিবারের সুন্নত রোযা/বিগত রমযানের অমুক কাযা রোযা/আরাফার সুন্নত রোযা) রাখবো।

উল্লেখ্যঃ নফল/সুন্নত রোযার জন্য কেউ যদি আগে থেকে নিয়ত করে না রাখেনআর ঘুম থেকে উঠে ফযরের ওয়াক্ত হয়ে যাওয়ার পরেও রোযা থাকার নিয়ত করতে পারবে। তবে যত সময় পরে করবেন– ঐ সময়টকুর জন্য নিয়ত না থাকায় ততটুকু অংশের সওয়াব মিস করবেন।  

আপনি এভাবেই নামায ও রোযার জন্য নিয়ত করবেন।

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...