::::::::: আল্লাহকে পেতে মাধ্যম গ্রহণ :::::::::
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আমরা তাঁরই প্রশংসা করছি, তাঁর কাছেইসাহায্য চাচ্ছি। আর তার কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমাদের মন্দকৃতকর্ম, এবং আত্মার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আল্লাহর দরবারে আশ্রয় নিচ্ছি,আল্লাহ তা'আলা যাকে হিদায়াত করেন তাকে গোমরাহ করার কেউ নেই। আরযাকে গোমরাহ করেন তাকে হেদায়াত করার কেউ নেই, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছিযে, এক আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মাবুদ নেই, তার কোন শরীক নেই, আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দাও রাসূল।
স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে মাধ্যম মানার ব্যাপারটা অত্যন্ত বিপজ্জনক বিষয়।পরিতাপের বিষয় যে, অনেক মুসলমানই এ সম্পর্কে পরিষ্কার
কোন ধারণা রাখেনা। ফলে আমরা আল্লাহর সাহায্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিতহতে চলেছি, যে সাহায্য করার কথা তিনি কুরআনে তাঁর কাছে আশ্রয় কামনাএবং তাঁর শরীয়তের অনুসরণ করার শর্তে ঘোষণা করেছেন।
আল্লাহ বলেন :
“আর মু'মিনদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব”।
সূরা আর-রূম: ৪৭
“যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর তবে তিনিও তোমাদের সাহায্য করবেন,এবং তোমাদের পদযুগলে স্থিতি দিবেন”।
সূরা মুহাম্মাদ: ৭
“আল্লাহর জন্যই যাবতীয় সম্মান, আর তাঁর রাসূলের জন্য, এবং মু'মিনদেরজন্য”।
সূরা আল-মুনাফিকূন: ৮
“তোমরা দুর্বল হয়োনা, এবং তোমরা চিন্তা করোনা, তোমরাই বিজয়ী হবেযদি তোমরা ঈমানদার হও”।
সূরা আলে-ইমরান: ১৩৯
***সৃষ্টি ও স্রষ্টার মাঝে মাধ্যম বলতে কি বুঝায়, এ ব্যাপারে মানুষ তিনটিদলে বিভক্তঃ
*একঃ একদল হচ্ছে তারা যারা শরীয়ত প্রণেতা হিসাবে প্রেরিত একমাত্রমাধ্যম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কেও মানতে নারাজ, বরংতারা দাবী করছে, - আর কত জঘন্যই না তাদের এ দাবী - যে, শরীয়তশুধুমাত্র সাধারণ মানুষের জন্য, উপরন্ত তারা এ শরীয়ত কে "ইলমে জাহীর"বা প্রকাশ্য বিদ্যা হিসাবে নামকরণ করেছে, তারা তাদের ইবাদতের ক্ষেত্রেকতেক বাজে চিন্তা-ধারণা ও কুসংস্কারকে গ্রহণ করে "ইলমে বাতেন" বাগোপন বিদ্যা নামে চালু করেছে, আর এর দ্বারা যা অর্জিত হয় তার নামদিয়েছে (কাশফ)। মূলত তাদের এই কাশফ ইবলীশি কুমন্ত্রণা আর শয়তানীমাধ্যম ছাড়া কিছুই নয়, কারণ এটা ইসলামের সাধারণ মুলনীতির পরিপন্থী,এ ব্যাপারে তাদের দলগত শ্লোগান হলোঃ এ কথা (আমার মন আমার রবথেকে সরাসরি বর্ণনা করেছে)।
এতে করে তারা শরীয়তের আলেমদের সাথে ঠাট্টা করছে, এবং এ বলে দোষদিচ্ছে যে, তোমরা তোমাদের বিদ্যা অর্জন করছ ধারাবাহিকভাবে মৃতদেরথেকে আর তারা তাদের বিদ্যা সরাসরি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী রব এর কাছথেকে অর্জন করছে। এ সমস্ত কথা দ্বারা তারা অনেক সাধারন মানুষকেআকৃষ্ট করে তাদের পথভ্রষ্ট করছে। আর শরীয়ত নিষিদ্ধ অনেক কাজ তারাএভাবে জায়েয করেছে যার বিবরণ তাদের কুসংস্কারপূর্ণ বই গুলিতেবিশদভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ফলে এ ব্যবস্থার অবসান কল্পে আলেমগণতাদেরকে কাফের এবং ধর্ম বিচু্যতির কারণে তাদের হত্যা করার নির্দেশদিতে বাধ্য হয়েছিলেন। কারণ তারা জানতনা বা জেনেও না জানার ভানকরত যে, ইসলামের প্রথম মূলনীতি হলোঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর অবতীর্ণ পদ্ধতির বাইরে কেউ আল্লাহর ইবাদাত করলে সেকাফের হিসাবে গণ্য হবে; কেননা আল্লাহ বলেন:
"সুতরাং তারা যা বলছে তা নয় বরং আপনার রবের শপথ, তারা যতক্ষণপর্যন্ত আপনাকে তাদের মধ্যকার ঝগড়ার মাঝে বিচারক
মানবেনা অতঃপর তাদের অন্তরে আপনার ফয়সালার ব্যাপারে কোন প্রকারদ্বিধা দ্বন্দ্বের অস্তিত্ব থাকবেনা, এবং পরিপুর্ণভাবে তা মেনে নিবেনা ততক্ষণপর্যন্ত তারা ঈমানদার হতে পারবেনা"।
সূরা আন্-নিসা: ৬৫
আর এভাবেই শরীয়তের ইলমের বিরোধীতা ও তার আলোকে নির্বাপিত করারকাজ শয়তান তাদের মনে সৌন্দর্য মন্ডিত করে দেখায়। ফলে তারা নিশ্চিদ্রঅন্ধকারে ঘুরতে থাকে এবং তাদের খেয়াল খুশি মোতাবেক আল্লাহর ইবাদতকরতে থাকে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা তাদের যে চিত্র অংকনকরেছেন তা তাদের ক্ষেত্রে সঠিক বলে প্রতিয়মান হয়। আল্লাহ তা'আলা বলেন:
"বলুন: আমি কি তোমাদেরকে আমলের দিক থেকে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্তদেরসংবাদ দেব? (তারা হলো ঐ সব লোক) যাদের দুনিয়ার জীবনের সমস্তপ্রচেষ্টা পন্ড হয়ে গেছে, অথচ তারা মনে করত কত সুন্দর কাজই না তারাকরছে, তারাই সে সব লোক যারা তাদের রবের আয়াতসমূহ ও তার সাথেসাক্ষাৎকে অস্বীকার করেছে, ফলে তাদের সমস্ত আমল বিনষ্ট হয়ে গেছে,সুতরাং কিয়ামতের দিন তাদের জন্য কোন ওজন স্থাপন করবোনা"।
সূরা আল-কাহ্ফ: ১০৩-১০৫
এ গ্রুপ শতধা বিভক্ত হয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে লেগেছে, কারণ তারা সহজসরল পথ থেকে দূরে সরে গেছে, যে পথ ছিল আল্লাহর নেয়ামতপ্রাপ্তদের পথ,অভিশপ্ত বা পথহারাদের পথ নয়। তাদের সমস্ত গ্রুপই জাহান্নামে যাবে,কারণ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
"আমার উম্মত তিয়াত্তর ফেরকা বা গ্রুপে বিভক্ত হবে, বাহাত্তরটি জাহান্নামেআর একটি জান্নাতে যাবে - যারা আমি এবং আমার সাহাবাগণ যে পথেআছি, তার উপর থাকবে"।.
হাদিসটি আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ, তিরমিযি, হাদীস সহীহ।
**দুইঃ যারা মাধ্যম সাব্যস্ত করতে গিয়ে সীমালংঘন করেছে, আর মাধ্যমেরভুল ব্যাখ্যা করে এর উপর এমন কিছু জিনিস চাপিয়েছে, যা চাপানো কক্ষনোজায়েয নয়। তারা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং অন্যান্যনবী ও নেক্কার ব্যক্তিবর্গকে এমনভাবে মাধ্যম মানতে শুরু করেছে যে তাদেরবিশ্বাস আল্লাহ তা'আলা কারো কোন আমল এদের মাধ্যম হয়ে না আসলেকবুল করবেননা; কারণ এরাই হচ্ছে তার কাছে যাওয়ার অসীলা।(নাউজুবিল্লাহ)।. এতে করে তারা আল্লাহ তা'আলাকে এমন সব অত্যাচারীবাদশাহদের বিশেষণে বিশেষিত করেছে যারা তাদের প্রাসাদে প্রচুর দারোয়াননিযুক্ত করে রেখেছে যাতে করে কোন শক্তিশালী মাধ্যম ছাড়া তাদের কাছেপৌঁছা কক্ষনো সম্ভব হয়ে উঠেনা। অথচ আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনেবলেন:
"যখন আপনাকে আমার বান্দাগণ আমার সম্পর্কে প্রশ্ন করে তখন (বলুন)আমি নিকটে, আহবানকারী যখন আমাকে আহবান করে আমি তার ডাকেসাড়া দেই, সুতরাং তারা যেন আমার হুকুম মেনে নেয় এবং আমার উপরইঈমান আনে যাতে করে তারা সৎপথ লাভ করে"। আল্লাহ তা'আলার এবাণীর সাথে পূর্ব বর্ণিত লোকদের বিশ্বাসের সংগতি কতটুকু?
এ আয়াত ইঙ্গিত করছে যে, আল্লাহর কাছে পৌঁছার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে তারউপর সঠিকভাবে ঈমান আনা এবং তার প্রর্দশিত পথে ইবাদাত করা।দৃশ্যনীয় যে, এ আয়াতে ইবাদতের কথা ঈমানের পূর্বে উল্লেখ করে নেকআমল বা সৎকাজের গুরুত্ব সম্পর্কে সাবধান করা হয়েছে; কেননা আল্লাহরসন্তুষ্টি অর্জন ও তার জান্নাত হাসিলের জন্য এটা প্রধান শর্ত। আল্লাহতা'আলা কুরআনে অসীলা শব্দের উল্লেখ করেছেন এবং তা দ্বারা পূর্ণ আনুগত্যকরাকেই বুঝিয়েছেন কারণ এটা (অর্থাৎ আল্লাহ ও তার রাসূলের পূর্ণআনুগত্যই) একমাত্র মাধ্যম যা তাঁর নৈকট্য দিতে পারে এবং তার রহমতেরদরজা খুলতে ও জান্নাতে প্রবেশ করাতে সক্ষম। তাই বলছেনঃ
"হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং তার কাছে অসীলা (পূর্ণআনুগত্যের মাধ্যমে নৈকট্য) অন্বেষণ কর আর তার রাস্তায় জিহাদ কর যাতেকরে তোমরা সফলকাম হতে পার।"
সূরা আল-মায়িদাহ্: ৩৫
নেককার বান্দাদেরকে যারা অসীলা হিসাবে গ্রহণ করে এমন মুর্খ, চেতনাহীনলোকদেরকে আল্লাহ তা'আলা পরিহাস করেছেন কারণ তারা নেককারবান্দাদেরকে অসীলা বানাচ্ছে, অথচ নেককার বান্দারা নিজেরাই এই অসীলাতথা আল্লাহর আনুগত্য দ্বারা নৈকট্য হাসিলের অধিক মুখাপেক্ষী। আর এছাড়া আল্লাহর নৈকট্য লাভের দ্বিতীয় কোন পথ নেই,
যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেছেন:
"তারা যাদের আহবান করছে তারা নিজেরাই তাদের প্রভূর নৈকট্য লাভেরজন্য অসীলা খুঁজছে। তারা তার রহমতের আশা করছে, তার
শাস্তির ভয় করছে, নিশ্চয়ই আপনার প্রভুর শাস্তি ভীতিপ্রদ"।
সূরা আল-ইসরা: ৫৭
বড়ই পরিতাপের বিষয় যে, এ সমস্ত অমনযোগী লোকেরা যাদেরকে মাধ্যমহিসাবে গ্রহণ করেছে তাদের সত্তার উপর ভরসা করে থাকার ফলে নেক আমলকরা থেকে বিরত থাকছে, খারাপ কাজে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। যা মুসলমানদেরঅধঃপতনের কারণ হয়েছে। তারা ভুলে গেছে বা ভুলে থাকার ভান করছেযে, আল্লাহ তা'আলা তাঁর রাসূলকে - যিনি সমস্ত মানব সন্তানের নেতা -তাঁকে সম্বোধন করে বলেছেনঃ
"বলুনঃ আমি আমার নিজের কোন উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখিনা"।
সূরা আল-আ’রাফ: ১৮৮
অনুরুপভাবে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কলিজার টুকরাকন্যাকে সম্বোধন করে বলেছেনঃ
"হে ফাতিমা ! আমার কাছে যত সম্পদ আছে তার থেকে যা ইচ্ছা হয় চেয়েনাও, আমি আল্লাহর কাছে তোমার কোন কাজে আসবনা"।
বুখারী ও মুসলিম
তিনি আরো বলেন :
"যখন কোন মানুষ মারা যায় তখন তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়,কেবলমাত্র তিনটি আমল ব্যতীত..."।
মুসলিম
যদি নবীগণ ও নেক্কার লোকদের ব্যক্তিসত্তার অসীলা গ্রহণ জায়েয না হওয়ারব্যাপারে কোন দলীল না থাকত, বরং আমাদের সামনে উমর (রাদিয়াল্লাহুআন্হু) এর সেই ঘটনাটিই শুধু থাকত, যাতে তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) এর মৃতু্যর পর তাঁর অসীলা বাদ দিয়ে তার চাচা আব্বাসেরদুআ'র শরণাপন্ন হয়েছিলেন, তবে অসীলাবাদী এ দলের মুলোৎপাটনে তাইযথেষ্ট হত।
ইমাম আবু হানীফা (রাহমাতুল্লাহ আলাইহি) কতই না সুন্দর বলেছেন:
"আমি আল্লাহর কাছে আল্লাহ ব্যতীত অপর কিছুর মাধ্যমে কিছু চাওয়াকেহারাম মনে করি"
দুররে মুখতার ও হানাফীদের অন্যান্য কিতাবে তা ইমাম সাহেব থেকে বর্ণিতআছে।
যদি ব্যক্তি স্বত্বা দ্বারা অসীলা দেয়া জায়েজ হতো, তবে কুরআন ও হাদীসেরযাবতীয় দুআ' যার সংখ্যা অগণিত তা ব্যক্তি সত্তার অসীলা দিয়েই আসত।(কিন্তু তার একটিও সেভাবে আসেনি)।
***তিনঃ যারা স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে মাধ্যম বলতে বুঝেছেন সেই রিসালাতকেযার মানে হলো দ্বীন প্রচার, শিক্ষাদান ও দ্বীনের প্রশিক্ষণ। তারা এইরিসালাতের উচ্চ মর্যাদা এবং এর প্রতি মানব জাতির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধিকরেছেন। ফলে তারা শরয়ী বিধান লাভের উদ্দেশ্যে এবং ঐশী বাণী বা ওহীরআলোকে আলোকিত হওয়ার জন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কেবড় মাধ্যম এবং বৃহৎ অসীলা হিসাবে গ্রহণ করেছেন। যেমনিভাবে তারাকুরআন অধ্যয়ন করছেন তেমনিভাবে তারা রাসূলের পবিত্র জিবনী ও তারসুন্নাত অধ্যয়ন করছেন। এতে তাদের শ্লোগান হচ্ছে আল্লাহর বাণীঃ
"নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে আল্লাহর কাছ থেকে নূর এবং সুস্পষট গ্রন্থ এসেছে,এর দ্বারা যারা আল্লাহর সন্তুষটির পিছনে ধাবিত হয় আল্লাহ তাদেরকেহিদায়াত প্রদান করেন, আর তাদেরকে তাঁর ইচ্ছা মোতাবেক অন্ধকার থেকেআলোতে নিয়ে যান, এবং সরল সোজা পথে পরিচালিত করেন "।
সূরা আল-মায়িদাহ্: ১৫, ১৬
এরাই হলো মুক্তি প্রাপ্ত দল যাদের কথা পূর্বোক্ত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, এবংতাদেরকেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়: এগ্রুপের পথ বিপদসংকুল, কন্টকাকীর্ণ। কেননা সত্যিকার ইসলাম আজঅপরিচিত হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ মুসলমান এর থেকে অনেক দুরে সরেগেছে। তারা এ দ্বীনকে বিদআ'ত ও মনগড়া রসম রেওয়াজে পরিবর্তনকরেছে। এই রোগ অতি পুরাতন, এ ব্যাপারে সংস্কারকদের ভুমিকা খুবভয়াবহ ও কষ্টসাধ্য।
উমর বিন আব্দুল আজীজ (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন
"আমরা এমন কাজ সংসকার করতে চেষ্টা করছি যাতে আল্লাহ ছাড়াআমাদের আর কোন সাহায্যকারী নেই, যে কাজ করতে গিয়ে বৃদ্ধরা তাদেরজীবন শেষ করেছে, আর ছোট ছোট ছেলেরা যুবক হতে চলেছে, বেদুঈনগণতাদের বাস্তু ত্যাগ করে চলে গেছে। তারা এটাকে দ্বীন (ধর্ম) মনে করেছেঅথচ এটা আল্লাহর কাছে দ্বীন বলে সাব্যস্ত নয়।"
অবশ্য এটা নতুন কিছু নয়, কারণ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)দ্বীনের এ করুণ দৃশ্যের কথা বর্ণনা করতে যেয়ে বলেছেন,
"ইসলাম অপরিচিত হিসাবে শুরু হয়েছে। যেভাবে তা শুরু হয়েছিল সেভাবেআবার (অপরিচিত) অবস্থায় ফিরে আসবে। সুতরাং গরীব (এই অপরিচিত)দের জন্যই সুসংবাদ) হাদীসটি মুসলিম শরীফে আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহুআন্হু) থেকে বর্ণিত।
অপর বর্ণনায় এসেছে,
"বলা হলঃ হে আল্লাহর রাসূল এই গরীব (অপরিচিত) রা কারা? বললেনঃবিভিন্ন গোত্র থেকে উত্থিত বিক্ষিপ্ত কতক ব্যক্তিবর্গ"।
আহমাদ, ইবনে মাজা।
তিরমিযির এক (হাছান) বর্ণনায় এসেছে,
"এই গরীবদের জন্য সুখবর যারা আমার সুন্নাতের যে অংশ মানুষ নষ্ট করেছেতা পূণঃ সংস্কার করে চালু করেছে"।
মুসনাদে আহমাদে অপর এক সহীহ বর্ণনায় এসেছে,
"এই গরীব (অপরিচিত) গণ হলোঃ অনেক খারাপ লোকের মাঝখানে এমনকিছু ভাল লোক, যাদের অনুসারীর চেয়ে বিরোধীরাই হবে বেশী"।
সুতরাং, এ গ্রুপকেই সংসকার কাজে এগিয়ে যেতে হবে, সংস্কারের আলোতেমুসলমানদের জাগিয়ে পুনরায় সঠিক ইসলামের দিকে ফিরিয়ে নিতে হবে।আর বিরোধীতা ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের আমরা তাই বলব যা আল্লাহতা'আলা তাদের পূর্বসুরীদেরকে বলেছেনঃ
"আমাদের কি হলো যে, আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করবনা অথচ তিনিআমাদেরকে যাবতীয় পথের দিশা দিয়েছেন? আর আমরা তোমাদের শতআঘাতের বিপরীতে ধৈর্য্য ধারণ করবো, ভরসাকারীগণ যেন শুধু আল্লাহরউপরই ভরসা করেন"।
সূরা ইব্রাহীম: ১২
লেখক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া,
সূত্র : ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদিআরব।
No comments:
Post a Comment